আন্তর্জাতিক

২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে সৌদি আরব। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে ১৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে রাষ্ট্রটি। শনিবার (২৩ অক্টোবর) এখবর জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব জানিয়েছেন খোদ সৌদি আরবের যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি জানান, আরও কয়েক দশক ধরে তেল উৎপাদন চালিয়ে যাবে এই দেশ।

আর কিছুদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে কপ-২৬ জলবায়ু পরিবর্তন সামিট। সম্মেলনের আগেই কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর ঘোষণা দিলো সৌদি। তারা এখন ১০০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে যারা শূন্য নির্গমনে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আন্তর্জাতিক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সসহ দশটি দেশের রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের সেদেশ থেকে বহিষ্কার করতে যাচ্ছেন। তিনি তাদের কূটনৈতিক মর্যাদা ও অধিকার প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।

এই দশজনের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, (তুরস্কে জন-হিতৈষীকর কাজের জন্য সুপরিচিত) মানবাধিকার কর্মী ওসমান কাভালার মুক্তি দাবি করে তারা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এটি তুরস্কের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সামিল। রাষ্ট্রদূতরা চাকরি করতে এসে তাদেরকে ‘নির্দেশ’ জারির সাহস দেখাতে পারেন না বলে এরদোয়ান উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে বিনা বিচারে কাভালাকে আটকের বিরুদ্ধে যৌথভাবে এই বিবৃতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি নেদারল্যান্ডস. নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূতরা। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরপর তাদেরকে তলব করে বিবৃতির বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ‘সরকার বিরোধী বিক্ষোভে’ অর্থ জোগানো এবং ২০১৬ সালে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার অভিযোগে কাভালা ২০১৭ সাল থেকে কারাগারে আছেন। তবে তিনি দোষী সাব্যস্ত হননি।

আন্তর্জাতিক

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা বন্ধ করতে প্রয়োজনে গুলি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার তাগিদ দেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ছুড়তে হবে।

শুক্রবার দুপুরে সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ক্যাম্পের বাইরে আইনশৃঙ্খলা আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, সে নিয়ে একটা বড় সভা গতকাল করেছি।

‘এটা তো খুবই আতংকের বিষয়। অনেক লোক (মিয়ানমারে) ফেরত যেতে চায় না, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে। তারা হয়তো এসব অঘটন ঘটাচ্ছে। আমি ঠিক জানি না, জানতে হবে।’

মুহিবুল্লাহ হত্যা এবং আজকের ঘটনার পেছনে যোগসাজশ আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্নজন বলছে, ওখানে ড্রাগের ব্যবসা হয়…আবার কেউ কেউ তথ্য দিয়েছেন কিছু উইপেন, কিছু বন্দুক-টন্দুকও আনা হয়। আমরা এসব নিয়ে কাল আলোচনা করেছি। আমার প্রস্তাব হলো, এই ড্রাগ ও অস্ত্র পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনে গুলি ছুড়তে হবে।’

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) এখবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইন আছে যার জন্য তাইওয়ানকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করতেই হবে মার্কিনীদের। বাইডেনের মন্তব্য প্রসঙ্গে এখনো নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি চীন।

অবশ্য তাইওয়ানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে চীন। তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান।

তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চীন বার বার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দ্বীপটি।

আন্তর্জাতিক

জান্তাবিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অন্তত ৩০ সদস্য নিহত হয়েছে। গত সোমবার (১১ অক্টোবর) দেশটির সাগাইং অঞ্চলে জান্তা সেনাদের অভিযান শুরুর পর সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই।

দেশটির সামরিক জান্তাবিরোধী গ্রুপ পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) এক সদস্যের বরাত দিয়ে আরেকটি সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, সোমবার সকালে পেল শহরের বাইরে অভিযান চালাতে আসা সামরিক বাহিনীর একটি কনভয় ল্যান্ডমাইনের কবলে পড়ে। এ বিস্ফোরণে একজন কমান্ডারসহ অন্তত ৩০ সেনা সদস্য নিহত হন।

পিডিএফের ওই সদস্য আরও জানান, রবিবার থেকেই ওই কনভয় আসার অপেক্ষায় ছিল পিডিএফ যোদ্ধারা। কনভয়ে একজন সিনিয়র কমান্ডার থাকবেন বলেওও তাদের কাছে তথ্য ছিল।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটি মারাত্মক গোলযোগের মধ্যে পড়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরিজীবীরা রেকর্ড গতিতে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। দেশটির শ্রম বিভাগের সর্বশেষ জরিপে এমন চিত্রই দেখা গেছে। তারা জানিয়েছে, গত আগস্টে ৪৩ লাখ কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মোট চাকরিজীবীর দুই দশমিক ৯ ভাগ হচ্ছে এই সংখ্যা। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) এসব জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে এক কোটি তিন লাখ। উচ্চ চাকরি ত্যাগের হার ইঙ্গিত দেয়, আমেরিকান কর্মীরা তাদের চাকরির সম্ভাবনা সম্পর্কে কতটা আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু তথ্যের গভীরে গেলে বোঝা যায়, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়েই সরে যাচ্ছেন তারা।

চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষ এবং শূন্যপদের সংখ্যা দেশটির অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনার পথে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মীদের আকর্ষণ করতে কোম্পানিগুলো জয়েনিং বোনাস এবং বেতন বৃদ্ধির মতো প্রণোদনা প্রদান করে আসছে। প্রায় ৪২ শতাংশ ছোট ব্যবসার মালিক বলেছেন, তারা গতমাসে খরচ বাড়িয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

নেপালের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় মুগু জেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, বাসটিতে মোট ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। ৩২ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনায় আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মুগু জেলায় এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে নেপালের গণমাধ্যমগুলো। মঙ্গলবার দেশটির মুগু জেলায় একটি বাসে করে ভ্রমণ করছিলেন বহু যাত্রী। পাহাড়ি পথে চলার সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং প্রায় ১ হাজার ফুট (৩০০ মিটার) নিচে পড়ে যায়। এতেই ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দুপুরের ঠিক পরপরই এই দুর্ঘটনা ঘটে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

স্থানীয়রা জানান, রাস্তা থেকে বাসটি ৩০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায় বলে। পুলিশের ধারণা, ব্রেক কাজ না করায় এবং চাকা পাঙচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খাদে পড়ে যায়।

রম বাহাদুর মাহাত আরও জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

তিনি বলেন, দুর্গম এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, যার কারণে প্রাণহানি বেশি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, ব্রেক কাজ না করার কারণে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে বিস্তারিত জানতে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মুগু জেলা পুলিশ কার্যালয় জানায়, বাসটিতে ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে ২৪ জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে চারজনের মৃত্যু হয়।

আহত ১২ জনেরও বেশি যাত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে হেলিকপ্টারে করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩১টি দেশ ও অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাজ্য।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারি সংক্রান্ত ব্রিটেনের জনস্বাস্থ্যবিধির হালনাগাদ তথ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রুজ এ বিষয়ে বলেন, এই পরিবর্তনগুলো ভ্রমণকে আরও সহজ করে তুলবে। ব্যবসায় হবে অগ্রগতি। তাছাড়া পরিবার, প্রিয়জন ও বন্ধুদের সঙ্গে সহজেই দেখা করা সম্ভব হবে। আমরা মানুষকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছি। কারণ এটিই আমাদের অগ্রাধিকার।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা সহজেই ভ্রমণ করতে পারবেন। নতুন এই সিদ্ধান্তের কারণে ব্রিটেনের মানুষ আরও সহজেই অধিক সংখ্যক গন্তব্যে ভ্রমণ করতে পারবে।

বিধি-নিষেধে পরিবর্তনের আগে পর্যন্ত এফসিডিও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের ১১৭টি দেশ ও অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বুধবার যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) দেশটির আগের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ‌দেশগুলোর ‘রেড লিস্ট’ হালনাগাদ করেছে।

বাংলাদেশ এবং অন্যান্য ৩১টি দেশ ও অঞ্চলের সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মূল্যায়নের পর এসব দেশের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এফসিডিও।

যেসব দেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে সেগুলো হলো- বাংলাদেশ, টোকেলাউ ও নিউ, জিবুতি, গিনি, ফিজি, গাম্বিয়া, গায়ানা, কাজাখস্তান, কিরিবতী, কসোভো, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া, সাউ তোমি ও প্রিন্সিপে, সেনেগাল, সলোমন আইল্যান্ডস, টোগো, টোঙ্গা, আর্মেনিয়া, বেলারুশ, বেনিন, কমোরোস, মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, টুভালু, ভানুয়াতু, কঙ্গো, আমেরিকা সামোয়া, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া ও ঘানা।

আন্তর্জাতিক

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ, যার দরদি ভাষার দ্ব্যর্থহীন লেখায় ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থী জীবনের বেদনার আখ্যান।

বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১১৮তম লেখক হিসেবে আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

৭৩ বছর বয়সী গুরনাহর মোট দশটি উপন্যাস এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে, যার একটি হল প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন।

১৯৯৪ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসের কাহিনী বিকশিত হয়েছে ২০ শতকের গোড়ার দিকে তানজানিয়ায় বেড়ে ওঠা এক বালকের গল্পকে কেন্দ্র করে।

মূলত প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন বুকার জেতার পরই ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহর নাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়াতে শুরু করে।

নোবেল জয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, এত বড় একটি পুরস্কার, অসাধারণ সব লেখকদের পাশে তার নাম, এ তার বিশ্বাসই হতে চাইছিল না।

“আমি এতটাই বিস্মিত যে বিশ্বাস করার আগে নিজে কানে ওই ঘোষণা শোনা পর্যন্ত আমি সত্যি সত্যি অপেক্ষা করেছি।”

রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি বলেছে, সত্যের প্রতি আবদুলরাজাক গুরনাহর যে নিষ্ঠা, ঘটনার অতিসরলীকরণে তার যে ঘোর আপত্তি, পাঠককে তা নাড়া দেয়।

“তার উপন্যাস গতানুগতিক ধারাবর্ণনার রীতি থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের দৃষ্টির সামনে মেলে ধরে সাংস্কৃতি বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এক পূর্ব আফ্রিকাকে, যার সঙ্গে পৃথিবীর অনেক অঞ্চলের কোনো মিল নেই।

“তার চরিত্ররা নিজেদের আবিস্কার করে সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতি, মহাদেশ থেকে মহাদেশের মাঝে কোনো এক শূন্য রেখায়; যে জীবন তাদের ছিল, আর যে জীবন তাদের সামনে ভাঁজ খুলতে শুরু করেছে, তার মাঝে এক অবলম্বনহীন অস্তিত্বে তারা নিজেদের খুঁজে পায়; এই অনিশ্চয়তার কোনো নিদান হয় না।”

আবদুলরাজাক গুরনাহর জন্ম ১৯৪৮ সালে, তানজানিয়ার জানজিবারে, যে দেশ পর্তুগিজ, ওমান ও ব্রিটিশ শাসনে ছিল সাড়ে সাড়শ বছর। তার গল্পের অনেক চরিত্রের মত তিনি নিজেও একজন শরণার্থী হয়ে ১৯৬০ এর দশকে ইংল্যান্ডে পা রাখেন।
তার পরের জীবনের বড় একটা সময় তার কেটেছে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে তিনি ইংরেজি আর পোস্ট কলোনিয়াল সাহিত্য পড়িয়েছেন।

১৯৮৬ সালে ওলে সোয়েনকার পর গুরনাহই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান, যিনি সাহিত্যে নোবেল পেলেন।

এই লেখকের আশা, তার এই পুরস্কারপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে হয়ত শরণার্থী সঙ্কট আর ঔপনিবেশিকতাবাদের দুষ্ট ক্ষত হয়ত আলোচনায় আসবে।

“এমন কিছু বিষয় থাকে, যার মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রতিদিন যেতে হয়। বিশ্বের অনেক জায়গায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছে, অনেকে আঘাত পাচ্ছে, এ ধরনের বিষয়গুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি মানবিকভাবে দেখা দরকার।”

আবদুলরাজাক গুরনাহ বলেন, যখন তিনি ইংল্যান্ডে আসেন, ‘আশ্রয়প্রার্থী’ বা এরকম শব্দগুলোর মানে তখন আজকের মত ছিল না। সেসব দিনে বহু মানুষ নিজের দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিল, এক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছিল।

“কিন্তু ১৯৬০ এর সেই সব দিনের চেয়ে আজকের পৃথিবীতে সহিংসতা অনেক বেশি। ফলে যেসব দেশে জীবন নিরাপদ বলে মনে করা হয়, তাদের ওপর চাপও অনেক বেশি। অবধারিতভাবে অনেক বেশি মানুষ এখন সেসব দেশে যাচ্ছে আশ্রয়ের আশায়।”

২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে গুরনাহর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি নিজেকে একজন উত্তর ঔপনিবেশিক লেখক বলবেন, না বিশ্ব সাহিত্যের লেখক?

তার উত্তর ছিল: “এরকম কোনো অভিধাই আমি নিতে চাই না। অমুক লেখক বা অমুক ঘরানার লেখক- এরকম বর্ণনা আমি নিজেকে নিয়ে করতে চাই না।

“আসলে নিজের নামের বাইরে আমার পরিচয় দিতে আলাদা করে বলার মত কিছু আছে কি না, সে বিষয়েও আমি নিশ্চিত নই।”

সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুসারে গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। গতবছর সাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লিক।

বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। পরের দুই দিনে ঘোষণা করা হয় পদার্থবিদ্যা আর রসায়নের নোবেল।

শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

এমনিতে প্রতিবছর স্টকহোমে অনুষ্ঠান করে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। সেখানে তারা বক্তৃতাও দেন।

তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছরের মত এবারও পুরস্কার বিতরণের রাজকীয় সেই আয়োজন থাকছে না।

তারপরও নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের অনুপস্থিতিতেই এ বছর স্বল্প পরিসরে স্থানীয়ভাবে নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজনের আশা প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন।

সে অনুষ্ঠান টেলিভিশন এবং নোবেল প্রাইজের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলেও নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে তাদের প্রচেষ্টাগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের ওপর সৃষ্ট নৃশংসতম অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরূপণ করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয় সময় সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে এবং তা ক্রমশ বেড়েই চলছে মর্মে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে- এমনকি ভ্যাকসিনের উপযোগী সব রোহিঙ্গার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি এ সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে নিজভূমি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর।

সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বিষয়সমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। রোহিঙ্গা সংকট ছাড়াও তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশ যেসব বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করবে তা হলো- ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ, শিক্ষাসহ শিশুদের সব অধিকারের সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও অধিকারের সুরক্ষা এবং জাতীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মানবাধিকার সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখা।

নাজুক পরিস্থিতিতে নিপতিত মানুষের ওপর কোভিড-১৯ যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সামগ্রিক ও টেকসই পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেন এবং এক্ষত্রে বৃহত্তর একতা, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের আহ্বান জানান।

এর আগে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রথম কমিটি ও পঞ্চম কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদান করেন।