খেলাধুলা

শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) ওপর সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সরিয়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

মঙ্গলবার আইসিসির বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০২৪ সালের যুব বিশ্বকাপ শ্রীলংকার পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় যুব বিশ্বকাপ হওয়ার কথা।

গত ১০ নভেম্বর শ্রীলংকান ক্রিকেটকে নিষেধাজ্ঞা দেয় আইসিসি। আজকের বৈঠকেও বহাল রাখা হয়েছে সেই নিষেধাজ্ঞা।

শ্রীলংকা ক্রিকেটের (এসএলসি) প্রধান শাম্মি সিলভা আজকের বোর্ড সভায় অংশ নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে আইসিসি বোর্ডকে অনুরোধ করেছিলাম। বোর্ড সদস্যরা আমাদের অনুরোধ রেখেছেন।’ সিলভা একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছেন যে শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে।

শ্রীলংকার পরিবর্তে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথা ভাবা হচ্ছিল। তবে ১৪ দলের ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে তিনটা ভেন্যু দরকার। ওমানে মাত্র একটা ভেন্যু রয়েছে। তাছাড়া আসা-যাওয়ায় বাড়তি খরচ এড়াতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেছে নেওয়া হয়।

খেলাধুলা

কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের জোড়া রেকর্ড ভেঙে ম্যাচটি নিজের করে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নজর কেড়েছেন শ্রেয়াস আইয়ারও।

তবে কম যান না মোহাম্মদ শামিও। বল হাতে একাই ৭ উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দিলেন এই ডানহাতি পেসার। আর দারুণ জয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল স্বাগতিক ভারত।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আজ আসরের প্রথম সেমিফাইনালে কিউইদের ৭০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। আগে ব্যাট করে কোহলি ও আইয়ারের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত। জবাবে ৩২৭ রান তুলতেই সব উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি কিউইরা। দলীয় ৩৯ রানেই দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রের উইকেট হারিয়ে বসে তারা। দুজনেই ব্যক্তিগত ১৩ রান করে বিদায় নেন শামির শিকার হয়ে। তবে এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল প্রতিরোধ গড়েছিলেন। ১৮১ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে খেলায় রাখেন এই দুই ব্যাটার।

এই জুটি ভাঙতে যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন ভারতীয় বোলাররা, তখন ত্রাতা হয়ে আসেন শামি। উইলিয়ামসনকে (৬৯) ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পর টম লাথ্যামকে (০) ফেরান খালি হাতে। আর তাতেই বিশ্বকাপে দ্রুততম সময়ে ৫০তম উইকেটের দেখা পেয়ে যান তিনি।   মাত্র ১৭ ইনিংসে ৫০ উইকেটের মালিক হয়েছেন তিনি। এর আগে ১৯ ইনিংসে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করে রেকর্ডের মালিক হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক। একইসঙ্গে স্টার্ককে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে বেশিবার (৪) পাঁচ উইকেট তুলে নেওয়ার কীর্তিও গড়েছেন শামি।

একদিকে শামির বলে টপাটপ উইকেট পড়ছিল, অন্যদিকে একপ্রান্তে লড়াই জারি রেখে সেঞ্চুরি তুলে নেন কিউই ব্যাটার  ডেরিল মিচেল। এরপরও দলকে ম্যাচে রেখেছিলেন মিচেল, কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে সহায়তা পাননি তিনি। যা একটু চেষ্টা করেছিলেন গ্লেন ফিলিপস (৪১)। কিন্তু তাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ভারতীয় পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। ৪৫তম ওভারে এসে মিচেলকে (১৩৪) বিদায় করে বাকি কাজ সেরে নেন শামি। এরপর ৪৯তম ওভারে আর ২ উইকেট তুলে নিয়ে গুঁটিয়ে দেন কিউইদের ইনিংস।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের উড়ন্ত শুরুর পর রোহিত যখন ফিফটির তিন রান দূরে, ঠিক তখনই বিদায় নিতে হয় তাকে। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে টিম সাউথির স্লোয়ার উড়িয়ে মারেন ভারতীয় অধিনায়ক। মিড অফে দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে তাকে বিদায় করেন কেন উইলিয়ামসন। ২৯ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৭ রান করে নেন বিদায়।

রোহিতের বিদায়ের পর দলকে টেনেছেন শুভমান গিল। সেঞ্চুরির পথে এগোলেও শেষ পর্যন্ত ইনজুরির কারণে পারলেন না, ছাড়তে হয়েছে মাঠ। রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার আগে নিজের ৬৫ বলে ৭৯ ইনিংসটি সাজান ৮ চার ও ৩ ছক্কায়। তবে লড়াই চালিয়ে যান কোহলি। ৫৯ বলে তুলে নেন ৭২তম ওয়ানডে ফিফটি, বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যেটি প্রথম।

৮০তম রান নেওয়ার সময় তিনি ছাড়িয়ে যান শচীন টেন্ডুলকারকে। ২০০৩ সালের আসরে ১১ ইনিংসে ৬৭৩ রান করেছিলেন টেন্ডুলকার। ২০ বছর পর এক ইনিংস কম খেলেই তাকে টপকে গেলেন কোহলি। এরপর ১০৬ বলে পান সেঞ্চুরির দেখা। একইসঙ্গে শচীনকে তিনি ছাড়িয়ে যান আবারও। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০টি শতক এখন কেবল তার দখলে।

১২৮ বলে ১৬৩ রানের জুটি গড়ার পর সাউথির বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিদায় নেন কোহলি। ১১৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১১৭ রানের ইনিংস খেলে তিনি ফেরেন সাজঘরে। তবে লড়াই চালিয়ে যান শ্রেয়াস। মাত্র ৩৫ বলে প্রথম ফিফটি ছুঁয়ে পরের ফিফটি পূর্ণ করেন ৩২ বলে। সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর আর ৫ রান যোগ করে তিনি বিদায় নেন বোল্টের বলে।

শেষদিকে আবারও ব্যাট করতে নেমেন ইনজুরিতে মাঠ ছাড়া গিল। তবে এই যাত্রায় তার ব্যাট থেকে আসে কেবল এক রান। আর লোকেশ রাহুলের ২০ বলে ৩৯ রানের ক্যামিওতে বিশাল সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা।

ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের মোহাম্মদ শামি।

খেলাধুলা

ভারতের অধিকাংশ শহরে শীতের পদধ্বনি পড়লেও ব্যতিক্রম মুম্বাই। আরব সাগরের মৃদুমন্দ বাতাস, মেরিন ড্রাইভের প্রশস্ত পথ-মনকে প্রশান্তি দেবে। এদিকে বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের রথ ছুটছে। লিগপর্বে নয়ে নয় জয়ে সেমিফাইনালে রোহিত শর্মারা। টিকিটের চাহিদায় যিনি নিজের ফোন বন্ধ রাখছেন! এভাবে জিতে সেমিফাইনালে উঠলে তো আত্মবিশ্বাস আকাশ ছোঁবেই। তবুও কি স্বস্তিতে ভারত? প্রতিপক্ষ যে নিউজিল্যান্ড। ভারতের কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, চার বছর আগের ওল্ড ট্রাফোর্ডের ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে মুম্বাইয়ে! ভারতের প্রতিশোধের ম্যাচ? নাকি নিউজিল্যান্ডের আরেকটি নিঃশব্দ বিষাক্ত ছোবল! শচীন টেন্ডুলকারের ওয়াংখেড়েতে আজ ফাইনালের আগে ভারত-নিউজিল্যান্ডের যুদ্ধ!

বিরাট কোহলি বনাম ট্রেন্ট বোল্ট, জাসপ্রিত বুমরা বনাম কেইন উইলিয়ামসন ক্রিকেটীয় দ্বৈরথে মুম্বাইয়ে আজ আলাদা উৎসবের রূপ নেবে নিশ্চিত। তবে ক্রিকেটের বাইরে ফুটবলের আরেকজনকে ঘিরে ঔজ্জ্বল্য ছড়ানোর প্রত্যাশা। ফুটবলের সেই তারকা ডেভিড বেকহ্যাম। সব ঠিক থাকলে মুম্বাইয়ে তিনি আজ দর্শক হয়ে সেমিফাইনালে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করবেন। চার বছর আগে ওল্ড ট্রাফোর্ডে দুদিনের সেই সেমিফাইনাল এখনো ভারতীয়দের যন্ত্রণাক্লিষ্ট করে।

হাতছোঁয়া দূরত্বে থেকে ম্যানচেস্টার ম্যাচে এমএস ধোনির পতন হয়। এরপর গত চার বছরে ভারত ৫০ ক্রিকেটারকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলিয়েছে ৬৬ ম্যাচে। সেখান থেকেই স্বপ্নের ১৫। কাকে বাদ দিয়ে কাকে নেবেন এমন চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল অবশেষে রাহুল দ্রাবিড়ের ১৫ জনকে নিশ্চিত করেছে। ২০ বছর আগের খেলোয়াড় রাহুল দ্রাবিড় সেদিন ফাইনালে গিয়েও ছুঁতে পারেননি স্বপ্নময় ট্রফি। এবার শিষ্যদের দিয়ে সেই ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে মরিয়া। তার আগে সেরা ম্যাচটা জিতে আত্মবিশ্বাসের চাপটাও হালকা করতে চান।

মঙ্গলবার দুপুরের পর অনুশীলন করে থামল নিউজিল্যান্ড। প্রেসবক্স থেকে ডান পাশের দুই উইকেটে ছিল অনুশীলন। উইকেটে বল পড়লেই ধুলো উড়ে যাচ্ছিল। যেন লাঙ্গল দেওয়া খেত! সন্ধ্যার আগে সেখানে বাঁ-পাশের দুই উইকেটে স্বাগতিকরা নিজেদের ঝালিয়ে নেন। আজ খেলা হবে ঠিক এই দুয়ের মাঝে। এই বাইশগজ যে মেরিন ড্রাইভের আবহাওয়া খুব জ্বালাচ্ছে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের তাণ্ডব বাদ দিলে পরে ব্যাট করে যে এখানে কেউ জিততে পারেনি! ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা সবাই উড়ে গেছে! বলা হচ্ছে ফ্লাডলাইটের আলোয় ওয়াংখেড়েতে ব্যাট করা ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিনতম কাজের একটি! তাহলে আজ কি টসই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেবে! যেখানে প্রথম ব্যাট করা দলের গড় ৩৫৭। আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, জাসপ্রিত বুমরা, ইশান কিষান খেলেন। ২২ গজে কি আছে তাদের চেয়ে ভালো তো কিউরেটরেরও জানার কথা নয়। অনেকের ট্রফি করে হোক আর অবিশ্বাস্য বোলিং দেখে হোক উড়ো খবর বেরিয়েছিল ভারতের বোলিংয়ের সময় বল পালটে দিচ্ছে আইসিসি! বুমরা-মোহাম্মদ শামি-রবীন্দ জাদেজা প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের নিয়ে যেভাবে ছেলেখেলা খেলছেন, তাতে এমনটা বলাই স্বাভাবিক। যতই ঘরের বারান্দা হোক না কেন, রোহিত শর্মা জানালেন চাপ সবখানেই আছে। তিনি বলেন, ‘লিগপর্ব থেকে সেমিফাইনাল সব ম্যাচেই চাপ থাকবেই।’ তবে উইকেট নিয়ে যাদের সবচেয়ে ভালো ধারণা, তারা জানিয়ে দিয়েছেন সেমিফাইনালের উইকেট অন্য ম্যাচগুলোর মতো হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্রশ্ন, একটু ইতিহাসে ঢুঁ মারতে চাই। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে’র ঘটনা। ৭০ বছর আগের কথা! এটুকু বলতেই মাইক হাতে উইলিয়ামসন বলেন, ‘আমার মনে আছে!’ তাৎক্ষণিক এই প্রতিক্রিয়ায় প্রেসবক্সে হাসির রোল ওঠে। এরপর আরেক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এখানে যা দেখলেন তাতে যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। আর দুটো ভালো মানের দল মুখোমুখি হলে তো প্রভাব পড়েই। শেষ পর্যায়ে আছি। নিজেদের সতেজ রেখে ভালো ক্রিকেট খেলতে চাইব, স্নায়ু ধরে রেখে যারা এগোতে পারবে তাদের মুখেই হাসি ফুটবে।’

নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয়েছিল টানা চার জয়ে। এরপর টানা চার হার। নবম ম্যাচে তারা শ্রীলংকাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। ভারতের কোনো হার নেই। হারের স্বাদ কেমন সেটা এখন তারা পায়নি। ওয়াংখেড়েতে নিউজিল্যান্ড কোনো ম্যাচ খেলেনি এর আগে। ভারত এবার নয় ভেন্যুতে নয়টি ম্যাচ খেলেছে। ওয়াংখেড়ে যতই ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের তীর্থস্থান হোক না কেন, এখানে ভয়ংকর সব দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে স্বাগতিকরা। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে গ্রাহাম গুচদের সুইপ আঘাতে ইন্দ পতন, নেহরু কাপে ভিভ রিচার্ডসের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার, ২০১৬ টি ২০ বিশ্বকাপে আন্দে রাসেলদের কাছে আত্মসমর্পণ। আরও একটি সেমিফাইনাল সেই ওয়াংখেড়েতে। সেই সঙ্গে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। ভারতের শাপমোচনের সব সুযোগই কি এক পরীক্ষায়!

খেলাধুলা

শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের সদস্যপদ স্থগিত করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

১৯৮১ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পায় শ্রীলংকা। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। কিন্তু বিশ্বকাপের চলতি আসরে ৯ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে হেরে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নেয় দ্বীপ রাষ্ট্রটি।

দলের এমন বাজে পারফরম্যান্স, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে সদস্যপদ স্থগিত করেছে আইসিসি।

এসএলসির বর্তমান অবস্থা নিয়ে লংকান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক প্রমোদ বিক্রমাসিংহে মঙ্গলবার এক বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস শ্রীলংকা ক্রিকেটের বর্তমান এই দুর্দশা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্তরে চলা বহু ষড়যন্ত্রের ফল। শ্রীলংকা ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা এসেছে এসব কারণেই। এসব ষড়যন্ত্রের পেছনে আমি ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা লক্ষ্য করেছি। যারা এসব করছে তারা খেলা বাঁচানোর ভান করে আবার অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত।’

বিক্রমাসিংহে আরও বলেছেন, ‘এসব ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত পরিণতি হলো নির্বাচক কমিটির পেশাদারির প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করা।’

খেলাধুলা

বিশ্বকাপের মাঝপথে দেশে ফেরায় সাকিবের ওপর ক্ষেপেছিলেন অনেকেই। এবার একই ঘটনা ঘটলো লিটন দাসের ক্ষেত্রে।

এই নিয়ে দুইবার দেশে ফিরেছেন তিনি। যে কারণে তার দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।  

আসরের শুরু থেকে ব্যাট হাতে তেমন কোনো রান পাচ্ছিলেন না সাকিব আল হাসান। পরবর্তীতে নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতির জন্য দেশে ফিরেছেন তিনি। অনুশীলনও করতে দেখা গেছে টাইগার এই অধিনায়ককে। তারপর সমালোচনা কম হয়নি তার। দর্শকদের থেকে শুনতে হয়েছে দুয়ো। যদিও বিসিবি তাকে অনুমতি দিয়েছিল দেশে ফেরার।

একইভাবে দেশে ফিরেছেন লিটন দাস। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর কলকাতা থেকে দেশে ফেরেন তিনি, একদিন পর ভারতে গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেন। এবার আরও এক দফায় তিনি দেশে ফিরেছেন। বিসিবি তাকে কালকের মধ্যে পুনেতে ফিরে দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিতে বলেছে অবশ্য।

বিসিবি থেকে অনুমতি দেওয়া হলেও দ্বিতীয়বার দেশে ফেরার ব্যাপারটি স্বাভাবিকভাবে নেওয়া হয়নি। টিম ম্যানেজম্যান্টের সদস্যদের কেউ কেউ তার এই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশে ফেরার জন্য প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে ছুটি চান লিটন। লঙ্কান কোচ জানান, তার আপত্তি নেই; তবে দেশে ফিরতে হলে তাকে বিসিবির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

দলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনকে ছুটি চাওয়ার বিষয়টি জানান লিটন। বিসিবির এই পরিচালক যোগাযোগ করেন দেশে। আলোচনা করে সবুজ সংকেত মেলায় লিটনকে ছুটি দেন খালেদ মাহমুদ। যদিও এই আলোচনা স্বাভাবিক ছিল না। লিটন দ্বিতীয়বার দেশে ফিরতে ছুটি চাইলে বিসিবি থেকে আপত্তি তোলা হয়, না করে দেওয়া হয়। খালেদ মাহমুদ বিষয়টি নিজের মতো সামলে তাকে ছুটির ব্যবস্থা করে দেন।

নিয়ম মেনেই সব হয়েছে, কিন্তু ক’দিনের মাথায় দুইবার দেশে ফেরায় লিটনের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবির অনেকেই। দলের খারাপ সময়ে এভাবে বারবার দেশে ফেরার ব্যাপারটিকে তার ‘অজ্ঞতা’ মনে করেন কেউ কেউ। এ কারণে তাকে বারবার করে বলে দেওয়া হয়েছে কালকের মধ্যেই পুনেতে গিয়ে অনুশীলনে যোগ দিতে।

নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী ১১ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মোকাবেলা করতে হবে বাংলাদেশকে। এই ম্যাচের আগে নির্দেশনা মতো অনুশীলনে যোগ না দিলে লিটনের ব্যাপারে কঠোরও হতে পারে বিসিবি।

খেলাধুলা

দারুন এক ইনিংসের মাধ্যমে গতকাল বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ান অল রাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল রূপকথার এক গল্প রচনা করেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস ক্রিকেট ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। একইসাথে ম্যাক্সওলের নিজেও এই ইনিংসের মাধ্যমে পুরো ক্রিকেট বিশে^র কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বিশে^র যে কয়টি দুর্দান্ত ইনিংসের কথা রচিত হয়েছে তার মধ্যে ম্যাক্সওয়েলের এই ইনিংসটি নি:সন্দেহে এখনো পর্যন্ত সর্বকালের সেরা ইনিংসের তকমা পেতে শুরু করেছে।

১২৮ বলে ২১টি বাউন্ডারি ও ১০টি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় তিনি অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলেছেন।  স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫৭’র ওপর। বর্ণাঢ্য ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে নতুন এই মাইলফল রচনায় ম্যাক্সওয়েল যত রেকর্ড গড়েছেন : -এটি অস্ট্রেলিয়ার কোন ব্যাটারের ওয়ানডেতে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, সব মিলিয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচে ১১তম। ২০১১ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেন ওয়াটসন ১৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন, ম্যাক্সওয়েল সেই ইনিংসকে ছাড়িয়ে গেলেন।

ওয়ানডেতে রান তাড়া করার দিক থেকে এটি ব্যকিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ২০২১ সালে পাকিস্তানী ফখর জামান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরে ব্যাট করে ১৯৩ রান করেছিলেন।

ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতিহাসে ওপেনারের বাইরে কোন ব্যাটারের এটি সর্বোচ্চ রান। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের চার্লস কভেন্টি ১৯৪ রান করেছিলেন যা এতদিন সর্বোচ্চ ছিল।

ওয়ানডে বিশ^কাপের ইতিহাসে ম্যাক্সওয়েলের ২০১* রানের ইনিংসটি তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ২১৫ ও ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল ২৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।

ওয়ানডেতে সপ্তম কিংবা তার নীচের উইকেটে ম্যাক্সওয়েল ও প্যাট কামিন্সের ২০১ রানের পার্টনারশীপ সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে সপ্তম উইকেটে ইংল্যান্ডের জস বাটলার ও আদিল রশিদ মিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৭ রানের জুটি গড়েছিলেন।

১২৮ বলে ম্যাক্সওয়েল ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। ওয়ানডেতে দ্বিতীয়  দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি এটি।  গত বছর ভারতীয় ব্যাটার ইশান কিশান বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন।

গতকাল ১০টি ওভার বাউন্ডারিসহ এ পর্যন্ত বিশ^কাপ ক্যারিয়ারে ম্যাক্সওয়েল ৩৩টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। বিশ^কাপে সর্বোচ্চ ছক্কার তালিকায় এটি তৃতীয়। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৪৫ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক তারকা ক্রিস গেইল মেরেছেন সর্বোচ্চ ৪৯টি।

খেলাধুলা

শনিবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪০২ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় বৃষ্টি আইনে ২১ রাসে জয় পায় পাকিস্তান। বাবর আজমদের এই ঐতিহাসিক জয়ে সুবিধা হলো দক্ষিণ আফ্রিকার। তারা ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ভারতের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।

৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের পথেই রয়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট করে নিয়ে সেমির পথে রয়েছে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান।

এখনও ১২ পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ রয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের। নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের কেবল একটি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে।

আগামীকাল রোববার কলকাতায় ভারতের মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০ নভেম্বর লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে মোকাবিলা করবে প্রোটিয়ারা।

খেলাধুলা

কাকতালীয়! ভারতের ইনিংসের প্রথম বলে রোহিত শর্মা চার মারার পর দ্বিতীয় বলে বোল্ড। শ্রীলংকার ইনিংসের প্রথম বলে পাথুম নিশাঙ্কা এলবিডব্ল–। রোহিতের ঘাতক মাদুশাঙ্কা। নিশাঙ্কার শিকারি বুমরা।

বৃহস্পতিবারের ওয়াংখেড়েতে দুদলের শুরুর মিলটুকু ছাড়া আর সবকিছুতেই অমিল। ভারতের ইনিংসে ছুটল রানের ফোয়ারা। শ্রীলংকার ইনিংসে উইকেট-বৃষ্টি। এ বছর সপ্তমবার ৩৫০-এর বেশি রান মজুদ করল ভারত তিন তিনটি সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে।

আর শ্রীলংকা তিন রানে চার এবং ১৪ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে এশিয়া কাপ ফাইনালের দুঃস্বপ্ন ফিরিয়ে আনল। কলম্বোয় ৫০ রানে অলআউট হয়ে ১০ উইকেটে ভারতের কাছে হেরেছিল শ্রীলংকা। মুম্বাইয়ে মেন্ডিসরা মুখ থুবড়ে পড়লেন ৫৫ রানে। ৩০২ রানের রেকর্ডরাঙা জয়ে সবার আগে ভারত পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।

প্রথম সাত ম্যাচের সাতটিই জিতল স্বাগতিকরা। বিশ্বকাপে রানের হিসাবে এটি দ্বিতীয় বড় জয়। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে এরচেয়ে বড় জয় আছে মাত্র তিনটি। বিপরীতে শ্রীলংকার ৫৫ রান বিশ্বকাপে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। বিশ্বকাপে এরচেয়ে কম রানে অলআউট হয়েছে শুধু কানাডা ও নামিবিয়া।

মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজের যুগল তাণ্ডবে ২৯ রানে আট উইকেট হারিয়ে কানাডার ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার বিব্রতকর রেকর্ডকেও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল লংকানরা। মহেশ তিকশানা (১২) ও কাসুন রাজিতার (১৪) ব্যাটে সেই লজ্জা এড়াতে পারলেও ১৯.৪ ওভারেই গুটিয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

শামি ১৮ রানে পাঁচটি ও সিরাজ ১৬ রানে নেন তিন উইকেট। এবারের আসরে মাত্র তিন ম্যাচ খেলেই ১৪ উইকেট হয়ে গেল শামির। সবমিলিয়ে ১৪ ম্যাচে ৪৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন শামি। বিশ্বকাপে মিচেল স্টার্কের সর্বোচ্চ তিনবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডও ছুঁয়েছেন ভারতের এই অভিজ্ঞ পেসার।

২০১১ সালের ২ এপ্রিল এ মাঠেই মুত্তিয়াহ মুরালিধরনের শ্রীলংকাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জিতেছিল শচীন টেন্ডুলকারের ভারত। উত্তরসূরিদের লড়াই দেখতে কালও মাঠে ছিলেন দুই কিংবদন্তি। শচীন ফিরেছেন আরেকটি সুখস্মৃতি নিয়ে, মুরালির সঙ্গী নতুন দুঃস্বপ্ন।

শামি-সিরাজদের তাণ্ডবের আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আট উইকেটে ৩৫৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। যা বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিবিহীন সর্বোচ্চ ইনিংস। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও শুবমান গিল ৯২, বিরাট কোহলি ৮৮, ও শ্রেয়াস আয়ার ৮২ রানে আউট হন। তিনজনকেই ফেরান ৮০ রানে পাঁচ উইকেট নেওয়া মাদুশাঙ্কা।

শচীনের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছোঁয়ার অপেক্ষা বাড়লেও কোহলি কাল গড়েছেন এক পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি আটবার এক হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ সাতবার এই কীর্তি ছিল শচীনের। প্রথম ওভারে রোহিতের বিদায়ের পর জীবন পেয়ে ১৮৯ রানের জুটি গড়েন গিল ও কোহলি।

মাত্র আট রানের জন্য বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি মিস করেন গিল। তিন রানের ব্যবধানে একই আক্ষেপে পোড়েন কোহলি। এর পর শ্রেয়াসের ৫৬ বলে ৮২ রানের টর্নেডো ইনিংসে সাড়ে তিনশ ছাড়িয়ে যায় ভারতের স্কোর।

খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮৯ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় তীরে গিয়ে তরী ডুবাল নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারে ১৯ রান করতে না পরায় বিশ্ব রেকর্ড গড়া হয়নি কিউইদের। হারলেও তারা বিশাল টার্গেট তারায় লড়াই করেছে।

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৫ রানের জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বিশ্বকাপের রেকর্ড পাঁচ আসরের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।

শনিবার ভারতের ধর্মশালায় বিশ্বকাপের চলমান ১৩তম আসরের ২৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বিশ্বকাপের হট ফেভারিট নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া।

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। উদ্বোধনীতে ১৯.১ ওভারে ১৭৫ রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার। ৬৫ বলে ৫টি চার আর ৬টি ছক্কায় ৮১ রান করে ফেরেন ওয়ার্নার।

ট্রাভিস হেড মাত্র ৬৭ বলে ১০টি চার আর ৭টি ছক্কায় ১০৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন। মাত্র ২৪ বলে ৫টি চার আর এক ছক্কায় ৪১ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১৪ বলে ৪টি ছক্কার আর দুটি চারের সাহায্যে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এমন ব্যাটিং তাণ্ডবে ৪৯.২ ওভারে ৩৮৮ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বকাপের চলতি আসরে শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪৫ রানের টার্গেট তাড়ায় জয়ের রেকর্ড গড়েছে পাকিস্তান। তাদের সেই রেকর্ড ভাঙতে হলে আজ নিউজিল্যান্ডকে করতে হতো ৩০০ বলে ৩৮৯ রান।

এমন বিশাল টার্গেট তাড়ায় দুর্দান্ত ব্যাটিং করে জয়ের দুয়ারে গিয়ে হোচট খায় নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবিন্দ্রর সেঞ্চুরি ৮৯ বলে ৯টি চার আর ৫টি ছক্কায় সর্বোচ্চ ১১৬ রান করেন। ড্যারেল মিচেল ৫১ বলে ৬টি চার আর এক ছক্কায় ৫৪ রান করেন। জেমস নিশাম ৩৯ বলে তিন চার আর সমান ছক্কায় ৫৮ রান করেন। শেষ ওভারে ১৯ রান করতে না পারায় কাঙ্কিত জয় পায়নি নিউজিল্যান্ড।

খেলাধুলা

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবিশ্বাস্য সুন্দর ব্যাটিংয়ের পরও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৮৩ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় টাইগাররা হেরে যায় ১৪৯ রানে।

বিশ্বকাপের চলতি আসরে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৩৪৫ রানের টার্গেট তাড়ায় জয়ের ইতিহাস গড়ে পাকিস্তান। তাদের সেই রেকর্ড ভাঙতে হলে বাংলাদেশকে আজ ৩৮৩ রান করতে হতো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় টাইগাররা।

দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও অবিশ্বাস্য সুন্দর ব্যাটিং করেছেন সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২৩৩ রানে অলআউট হয়ে ব্যবধান কমালেও পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।

টাইগারদের বিপক্ষে ১৪৯ রানের বিশাল জয়ে নিউজিল্যান্ডকে হটিয়ে ৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় পজিশনে উঠে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা।

মঙ্গলবার ভারতের মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে ১৪০ বলে ১৭৪ রান করেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। ৪৯ বলে ৯০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হেনরি ক্লেসেন। ৬৯ বলে ৬০ রানে ফেরেন অধিনায়ক এইডেন মার্করাম।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এদিন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৮২ রান করে প্রোটিয়ারা। এর আগে ২০১৭ সালে ইস্ট লন্ডনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে সর্বোচ্চ ৩৬৯ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৬ রানে ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় উইকেটে এইডেন মার্করামের সঙ্গে ১৩৭ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। ৬৯ বলে ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৬০ রান করে ফেরেন অধিনায়ক মার্করাম।

এরপর চতুর্থ উইকেটে হেনরি ক্লেসের সঙ্গে রীতিমতো তাণ্ডব চালান ডি কক। এই জুটিতে তারা মাত্র ৮৭ বল মোকাবেলা করে ১৪২ রানের জুটি গড়েন। ইনিংস ওপেন করতে নেমে ৪৫.১ ওভারে দলীয় ৩০৯ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ডি কক। তার আগে চলতি বিশ্বকাপে নিজের পঞ্চম ম্যাচে তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান।

হাসান মাহমুদের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১৪০ বলে ১৫টি চার আর ৭টি ছক্কার সাহায্যে ১৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ডি কক। ডি কক আউট হওয়ার পর ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন হেনরি ক্লেসেন ও ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ২৫ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন তারা।

একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন হেনরি ক্লেসেন। নার্ভাস নাইনটিতে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে দুটি চার আর ৯টি ছক্কার সাহায্যে খেলেন ৯০ রানের ঝলমলে ইনিংস। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে ডেভিড মিলার ১৫ বলে এক চার আর ৪টি ছক্কায় ৩৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থামে ৫ উইকেটে ৩৮২ রানে।

বাংলাদেশ দলের হয়ে ৯ ওভারে ৭৬ রান খরচ করে কোনো উইকেট পাননি মোস্তাফিজুর রহমান। ৯ ওভারে ৭৬ রানে ১ উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। মাত্র ৬ ওভারে ৬৭ রানে ২ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ। ৯ ওভারে ৪৪ রানে ১ উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫ ওভারে ২৭ রানে কোনো উইকেট পাননি নাসুম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩ ওভারে ২০ রানে কোনো সাফল্য পাননি।

৩৮৩ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩০ রান করে বাংলাদেশ। এরপর মাত্র ১ রানের ব্যবধানে হারায় ৩ উইকেট। একের পর এক সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম, ওয়ানডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

৩ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩১ রান। এরপর ২৭ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় আরও ২ উইকেট। ১৭ বলে ৮ রান আর ৪৪ বলে ২২ রানে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। দলীয় ৮১ রানে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি ১৯ বলে ১১ রানে ফেরেন।

৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় বাংলাদেশ। দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে কঠিন চাপের মধ্যে অবিশ্বাস্য সুন্দর ব্যাটিং করে ১০৪ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রিয়াদ। ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ২২৫তম ম্যাচে এটা তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান রিয়াদ। দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

মাহমুদউল্লাহর অবিশ্বাস্য সুন্দর ব্যাটিংয়ের পরও ৪৬.৪ ওভারে ২৩৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে রিয়াদ একাই করেন ১১১ বলে ১১টি চার আর ৪টি ছক্কায় ১১১ রান। এছাড়া ৪৪ বলে ২২ রান করেন ওপেনার লিটন দাস। ১৯ বলে ১৯ রান করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।