খেলাধুলা

ছোট্ট শহর অ্যাডিলেড। এখানকার আবহাওয়া নিয়ে শুরুতে বাংলাদেশ দলের মধ্যে নেতিবাচক আলোচনা ছিল। সেটাই এখন বাংলাদেশের কন্ডিশনে পরিণত হয়েছে। ঝকঝকে রোদ।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, অ্যাডিলেডে বাংলাদেশ দলকে এখন সবাই চেনে। জার্সি গায়ে কোনো দোকানে বা রাস্তার পাশ দিয়ে গেলে ছবি তোলার জন্য সবাই আবদার করে। এমন আবহাওয়ায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা স্বস্তি পেয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলা সাকিব-তাসকিনদের লক্ষ্য।

রোলটন ওভাল মাঠটি বিশাল বড়। সেখানে আগেরদিন দীর্ঘক্ষণ অনুশীলন করেছিলেন সাকিব আল হাসান। দলের বাকিরাও দীর্ঘসময় অনুশীলন করেন। কাল বিশাল মাঠে বড় বড় ছক্কায় নিজেদের ঝালিয়ে নিলেন নুরুল হাসান, সৌম্য সরকাররা। ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ইয়াসির আলীও। লিটন দাস কালও মাঠে যাননি।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, ‘আশা করি লিটনের খেলতে কোনো সমস্যা হবে না।’ প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরীও একই কথা বললেন। একাদশে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। শরীফুল ইসলামের পরিবর্তে সৌম্য, মিরাজ নাকি ইবাদত মাঠে নামবেন সেটাই এখন দেখার।

বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম জুম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখন আমার লক্ষ্য বিশ্বকাপ ভালোভাবে শেষ করা। বেশি দূরের কিছু নিয়ে ভাবিনি।’

ভারতের বিপক্ষে অ্যাডিলেডে বৃষ্টি-আইনে পাঁচ রানে হারের পর সমালোচনা হচ্ছে বিরাট কোহলির ‘ফেক ফিল্ডিং’ নিয়ে। পাকিস্তানের টপঅর্ডার রানখরায় ভুগছে। অধিনায়ক বাবর আজম টি ২০ বিশ্বকাপে নিষ্প্রভ।

এদিকে আর চার উইকেট পেলে মোস্তাফিজুর রহমানের একশ আন্তর্জাতিক টি ২০ উইকেট পূর্ণ হবে। একই মাইলফলকে পা দিতে শাদাব খানের লাগবে পাঁচ উইকেট। অ্যাডিলেডে পাকিস্তান পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ ও ১৯টি ওয়ানডে খেললেও এই প্রথম কোনো টি ২০ ম্যাচে মাঠে নামবে।

বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-২-এর শেষ তিনটি ম্যাচই হচ্ছে আজ। কোনো দলেরই শেষ চার নিশ্চিত হয়নি। একটু এদিক-ওদিক হলেই সমীকরণ বদলে যেতে পারে। কাল সংবাদ সম্মেলনে বাঁ-হাতি পাকিস্তানি ব্যাটার শান মাসুদ বলেন, ‘যা আমাদের হাতে আছে আমরা সেটির ওপর পুরো মনোযোগ দেব। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্ট চাই। এই ম্যাচ জিতে অন্য দলগুলোর কাজ কঠিন করে দিতে চাই। শেষ বল পর্যন্ত আমাদের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অবশ্যই আমাদের এই ম্যাচে ভালো সুযোগ রয়েছে।’

পাকিস্তানকে হারালে সেমিতে যেতে পারে বাংলাদেশ

পক্ষপাত আম্পায়ারিং আর বিরাট কোহলির অবৈধ সুবিধা নেওয়ার কারণে নিশ্চিত জয়ের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে ৫ রানের হারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলমান অষ্টম আসরের সেমিফাইনালে ওঠার পথ কঠিন হয়ে যায়। তবে এখনো সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ রয়েছে টাইগারদের।

রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে সাকিব আল হাসানরা। একই দিন সকাল ৬টায় তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা।

দিনের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা যদি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হেরে যায় এবং বাংলাদেশ নিজেদের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারে তাহলে পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৬। দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান হারলে তাদের পয়েন্ট পাঁচ ম্যাচে আগের মতো ৫ ও ৪-ই থাকবে। সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গী হয়ে সেমিফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ।

তবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ যদি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। তখন উভয় দল সমান ১ পয়েন্ট করে পাবে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা যদি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারে তখন দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পয়েন্ট সমান ৫ হবে। সেক্ষেত্রে রান রেটে এগিয়ে থাকা দল ভারতের সঙ্গে সেমিতে যাবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারায় আর দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি যদি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়, তখন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট সমান ৬ হবে। সেক্ষেত্রে রান রেটে এগিয়ে থাকা দলটি ভারতের সঙ্গে সেমিফাইনালে যাবে।

আবার শেষ ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল দল জিম্বাবুয়ে। ভারত যদি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারে তখন তাদের পয়েন্ট সেই ৬-ই থাকবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানকে হারাতে পারে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি যদি বৃষ্টিতে ভেসে যায়- তখন ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৬ হবে। তখন রান রেটে এগিয়ে থাকা দুটি দল সেমিতে যাবে।

এসব সমীকরণ মাথায় রেখেই পাকিস্তান ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ বলেছেন, এই গ্রুপের বেশির ভাগ ম্যাচই কিন্তু ইন্টারেস্টিং হচ্ছে, এখনো কিন্তু যে কোনো কিছু হতে পারে। অলৌকিক কিছু হয়েও যেতে পারে।

খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড।

গ্রুপ-১এ আজ সুপার টুয়েলভে নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। ইংল্যান্ডের জয়ে সুপার টুয়েলভ থেকেই এবারের বিশ্বকাপ শেষ করতে হলো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে।

গ্রুপ-১এর সব খেলা শেষে সমান ৭ করে পয়েন্ট নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের

শীর্ষ দু’টি স্থান নিয়ে সেমিফাইনালে উঠলো নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের রান রেট ২.১১৩ ও ইংল্যান্ডের ০.৪৭৩। অস্ট্রেলিয়ার রান রেট -০.১৭৩।

এই গ্রুপে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা ৪, আয়ারল্যান্ড ৩ ও আফগানিস্তান ২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ^কাপ শেষ করলো।

জিতলেই সেমিফাইনাল, এমন সমীকরনে এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলংকা। শুরুতেই ইংল্যান্ডের বোলিংকে চাপে ফেলেন লংকার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। ৪ ওভারে ৩৯ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১৪ বলে ১৮ রান করা মেন্ডিসকে ফিরিয়ে  ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ক্রিস ওকস।

সতীর্থ ফিরলেও, পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে ১৩ রান তুলেন নিশাঙ্কা। এতে ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫২ রান পায় শ্রীলংকা।

পাওয়ার-প্লে শেষে রানের গতি কমে যাওয়ায় ১২ ওভার শেষে  লংকানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৯ রান।  নবম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে  ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাশিকার হন  ৯ স্যাম কারানের। ১১তম ওভারে চারিথা আসালঙ্কাকে বিদায় দেন বেন স্টোকস। ৮ রান করেন আসালঙ্কা।

মিডল-অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও অন্যপ্রান্তে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে একাই লড়েছেন নিশাঙ্কা। ১২তম ওভারের শেষ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লংকান এ ব্যাটার । এজন্য ৩৩ বল খেলেন নিশাঙ্কা।

১৬তম ওভারে ইংল্যান্ডের পথ কাটাকে সরিয়ে ফেলেন স্পিনার আদিল রশিদ। উইকেট সেট ব্যাটার নিশাঙ্কাকে থামান তিনি।

আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন নিশাঙ্কা। এই ইনিংস খেলার পথে টি-টোয়েন্টিতে ১হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি।

নিশাঙ্কার বিদায়ের পর শ্রীলংকার ব্যাটারদের চেপে ধরেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। মার্ক উডের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা। ভানুকা রাজাপাকসে ২২ ও চামিকা করুনারতেœ শূন্য রানে  উডের শিকার হন। রান আউট হন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুর পরও ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। ইংল্যান্ডের উড ৩ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ১৬ রানে ১ উইকেট নেন রশিদ।

সেমিফাইনাল  নিশ্চিতে ১৪২ রানের টার্গেট পাওয়া ইংল্যন্ডকে  দারুন সূচনা এনে দেন  দুই ওপেনার অধিনায়ক জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। পাওয়ার প্লেতে ৭০ রান তুলেন বাটলার ও হেলস। এসময় দু’জনে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। হেলস ১৯ বলে ৪২ ও বাটলার ১৮ বলে ২৫ রান করেন।পেসার কাসুন রাজিথার করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ২০ রান নেন হেলস।

অষ্টম ওভারে দলীয় ৭৫ রানে হেলস-বাটলার জুটি ভাঙ্গেন হাসারাঙ্গা। ডিপ মিড-উইকেটে বাটলারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন করুনারতেœ। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ রান করেন বাটলার।

১০ম ওভারে ইংল্যান্ড শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন হাসারাঙ্গা। এবার হেলসকে বিদায় করেন তিনি। ৩০ বল খেলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি সাজান হেলস।

দলীয় ৮২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল-অর্ডারে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে  ৫ উইকেটে ১১১ রানে পরিনত হয় ইংল্যান্ড।  হ্যারি ব্রুক-লিয়াম লিভিংস্টোন ৪ করে ও মঈন আলি ১ রানে আউট হন।

ষষ্ঠ উইকেটে কারানকে নিয়ে ২১ বলে ১৮ রান তুলে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রাখেন তিন নম্বরে নামা বেন স্টোকস। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে কারানকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন ইংল্যান্ডকে চিন্তায় ফেলে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। কারন শেষ ২ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ১৩ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের।

১৯তম ওভারে ৮ রান নেন স্টোকস ও ওকস। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাক-ওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করে দলকে সেমিতে তোলেন  ওকস।

২টি চারে ৩৬ বলে অনবদ্য ৪২ রান করে দলের জয়ে অবদান রাখেন স্টোকস। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওকস। ২টি করে উইকেট নেন কুমারা-হাসারাঙ্গা ও ধনাঞ্জয়া। ম্যাচ সেরা হন রশিদ।

সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১এর পয়েন্ট টেবিল :

দল                  ম্যাচ    জয়    হার    টাই    পরিত্যক্ত    পয়েন্ট    রান রেট
নিউজিল্যান্ড    ৫     ৩      ১        ০           ১               ৭          ২.১১৩
ইংল্যান্ড            ৫     ৩       ১       ০            ১              ৭          ০.৪৭৩
অস্ট্রেলিয়া          ৫     ৩        ১        ০            ১               ৭           -০.১৭৩
শ্রীলংকা              ৫     ২       ৩        ০            ০               ৪           -০.৪২২
আয়ারল্যান্ড       ৫      ১       ৩         ০            ১              ৩            -১.৬১৫
আফগানিস্তান    ৫     ০       ৩         ০            ২              ২            -০.৫৭১

খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪ রানে হেরেছে আফগানিস্তান। আফগানদের হারিয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকল অস্ট্রেলিয়া।

গ্রুপ ওয়ানে এরই মধ্যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড। শনিবারের ম্যাচে ইংল্যান্ড শ্রীলংকাকে হারাতে পারলে জস বাটলারের দলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর ইংলিশরা হেরে গেলে কপাল খুলবে অজিদের।

অ্যাডিলেডে প্রথমে ব্যাট করে আফগানদের ১৬৯ রানের টার্গেট দিয়েছিল অ্যারন ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া। মাঝারি টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল আফগানরা। তবে জশ হ্যাজলউড আর অ্যাডাম জাম্পার বোলিং তোপে মাঝপথে খেই হারায় আফগানরা।

শেষদিকে ব্যাটে ঝড় তোলেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান। ২৩ বলে রশিদ করেন ৪৮ রান। তার স্কোরে ভর করেই ১৬৪ রানে থামে আফগানদের ইনিংস।

খেলাধুলা

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর নানা নাটকীয়তায় ভরপুর ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ।

নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর তাসকিনের দুর্দান্ত বলে ৩ রানে জিতল বাংলাদেশ।

ব্রিসবেনের গ্যাবায়ে টসে জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তোলেন টাইগাররা।

জবাবে তাসকিন-মোস্তাফিজের বোলিং তোপে ৮ উইকেটে ১৪৭ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ে।

শেষ ওভারটি ছিল টান টান উত্তেজনার। সেখানে জয় হয়েছে বাংলাদেশের।

শেষ ওভারটি মোসাদ্দেকের হাতে তুলে দিলেন সাকিব।

দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ইভান্স (২ রান)। ৪ বলে দরকার ১৫ রান। স্ট্রাইকে নামলেন গারাভা। এ মুহূর্তে লেগবাই থেকে এলো বাউন্ডারি। পরের বলে বিশাল ছক্কা হাঁকান গারাভা। পরের বলে গারাভাকে স্টাম্পিং করে দিলেন সোহান। শেষ বলে দরকার ৫ রান।

সেই বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি ব্যাটার মুজারাবানি।

শেষ বলে জমে সবচেয়ে বড় নাটকীয়তা। ব্লেসিং মুজারাবানিও উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় হয়ে যান স্টাম্পড।

জয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ। দুই দল মাঠ ছেড়েও চলে যায়। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় স্টাম্পের আগেই বল ধরেছেন কিপার নুরুল হাসান সোহান। ‘নো’ বল!

তাতে আবার দুই দলকে নামতে হয় মাঠে।

জয়ের জন্য প্রয়োজন ১ বলে ৪ রান। সেই বলেও রান নিতে পারেননি মুজারাবানি। উচ্ছ্বাস বয়ে উঠে গ্যালারির বাংলাদেশ সমর্থকদের মধ্যে।

এর আগে একের পর এক উইকেট হারিয়েও রানের চাকা সচল রাখে জিম্বাবুয়ে। যে কারণে ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়ের আশা জিইয়ে রাখে আরভিনের দল।

১৬তম ওভারে দলীয় সংগ্রহ ১০০ ছুঁয়ে ফেলে আফ্রিকার দলটি। প্রথম ৫০ আসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫০ বলে। দ্বিতীয় ৫০ আসে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৩ বলে।

দলকে এ পর্যায়ে একাই নিয়ে আসেন শন উইলিয়ামস। রেগিস চাকাভার সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।

তাসকিন সে জুটি ভাঙলে রায়ান বার্লকে সঙ্গে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামস।

জয়ের জন্য শেষ তিন ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৪০ রান। তাসকিন ও মোস্তাফিজের ৪ ওভারে কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন সাকিব।

সেই ওভারে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন শন উইলিয়ামসন। ৩৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫০ রান করেন এ মিডলঅর্ডার।

ওই ওভার থেকে ১৪ রান দিলেন হাসান। ফলে ১২ বলে প্রয়োজন পড়ে ২৬ রানের। দলকে জেতাতে বল নিজের হাতেই তুলে নেন সাকিব।

ওই ওভারে বাউন্ডারি হজম করলেও দুর্দান্ত এক রানআউটে শন উইলিয়ামসকে ফেরালেন সাকিব। ৪২ বলে ৬৪ রানে ফিরলেন উইলিয়ামস।

সাকিবের ওভার থেকে আসে ৯ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান। স্ট্রাইকে রায়ান বার্ল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি জিম্বাবুয়ের।

এ জয়ের পর গ্রুপ বিতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন। ১৫ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ। কোনো উইকেট না পেলেও ৩৪ রান দেন সাকিব। ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন মোসাদ্দেক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫০/৬ (শান্ত ৭১, সৌম্য ০, লিটন ১৪, সাকিব ২৩, আফিফ ২৯*, মোসাদ্দেক ৭, সোহান ১, ইয়াসির ১; এনগারাভা ৪-০-২৪-১, মুজারাবানি ২-০-১৩-২, চাটারা ৩-০-১৮-০, রাজা ৪-০-৩৫-১, ইভান্স ৩-০-৩২-০, মাধেভেরে ২-০-১৮-০, উইলিয়ামস ২-০-১০-১)

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৭/৮ (মাধেভেরে ৪, আরভিন ৮, শুম্বা ৮, উইলিয়ামস ৬৪, রাজা ০, চাকাভা ১৫, বার্ল ২৭*, ইভান্স ২, এনগারাভা ৬, মুজারাবানি ০*; তাসকিন ৪-১-১৯-৩, হাসান ৪-০-৩৬-০, মোসাদ্দেক ৪-০-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৪-০-১৫-২, সাকিব ৪-০-৩৪-০)

খেলাধুলা

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘটছে নানা অঘটন। গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারতের হেরেছে। এর ফলে পাকিস্তানের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা কঠিন হয়ে গেল।

চিরশত্রুদের বিপদ বাড়াতেই ভারত ইচ্ছে করে হেরেছে, এমন দাবি করেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার। খেলা চলার মাঝে পাকিস্তানের এই কিংবদন্তি পেসারের কথায় তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

পার্থে রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ভারত। সেই ম্যাচ জিতলে ভারতের সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা যেমন সহজ হত, তেমনই আশা বাড়ত পাকিস্তানেরও। কিন্তু ভারত হেরে যাওয়ায় রোহিতরা নিজেদের বিপদ যেমন বাড়িয়েছেন, তেমনই চিন্তায় ফেলে দিয়েছেন বাবর আজমদের।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক উইকেট হারাতে শুরু করে ভারত। লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা রান পাননি। একা সূর্যকুমার যাদব লড়াই করে যান। ভারতের একের পর এক ব্যাটার যখন আউট হচ্ছেন সেই সময় শোয়েব একটি ভিডিও টুইট করেন।

তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম পাকিস্তানের জন্য ভারতের জেতা উচিত। এরা তো পাকিস্তানকে শেষ করে দিচ্ছে। চার ব্যাটার আউট হয়ে গেল! দেখা যাক কী হয়।

ম্যাচের শেষটা পাকিস্তানের জন্যও ভাল হল না। ভারত শেষ পর্যন্ত হেরেই যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ১৩৪ রানের লক্ষ্য রেখেছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু সেই রানের মধ্যে প্রোটিয়াবাহিনীকে আটকাতে ভারতের যে বোলিং এবং ফিল্ডিং প্রয়োজন ছিল, তা করতে পারলেন না রোহিতরা।

ম্যাচে বিরাট কোহলি ক্যাচ ফেলেছেন, রোহিত নিজে রান আউটের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। এছাড়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন। ফিল্ডিং সম্পর্কে ম্যাচ শেষে রোহিত বলেন, কোনো অজুহাত দেব না। সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছি। এরকম ঠাণ্ডাতে আগেও খেলেছি আমরা। রান আউটের সুযোগ হাত ছাড়া হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যাওয়ায় পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে ভারত। ৩টি ম্যাচে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ৪। তাদের নেট রানরেট +০.৮৪৪। পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ। ৩টি ম্যাচ খেলে টাইগারদের পয়েন্টও ৪। ভারতের সমান পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটে পিছিয়ে বাংলাদেশ (-১.৫৩৩)।

নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান জিতলেও পয়েন্ট তালিকায় তাদের জায়গার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ পাঁচ নম্বরেই রয়েছেন বাবর আজমরা। ৩টি ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের পয়েন্ট ২। তাদের নেট রানরেট +০.৭৬৫।

খেলাধুলা

চোখের পলকে ম্যাচের রঙ বদলে দেওয়ার পথে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

এক প্রান্তে ধুঁকছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়ছিল নিয়মিত। বাড়ছিল বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান। জেঁকে বসছিল আরেকটি হারের শঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মার্কাস স্টয়নিস এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিলেন সব দুশ্চিন্তা। গড়লেন দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।

পার্থে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রলিয়া। শ্রীলঙ্কার ১৫৭ ছাড়িয়ে গেছে ২১ বলে।

রান তাড়ায় ত্রয়োদশ ওভারে ৮৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। সেখান থেকে ঝড়ো ফিফটিতে দলকে আসরে প্রথম জয় এনে দিলেন স্টয়নিস।

১৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম ও বিশ্বকাপ ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এখন তার। ১৮ বলে ৫৯ রানের খুনে ইনিংস খেলার পথে ৬ ছক্কার সঙ্গে মারেন চারটি চার।

এতদিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ছিল যৌথভাবে ডেভিড ওয়ার্নার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। তারা পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন ১৮ বলে। ওয়ার্নার করেছিলেন ২০১০ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরে ম্যাক্সওয়েল ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই রেকর্ড স্পর্শ করেন। পরে ২০১৬ সালে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবার ফিফটি করেন তিনি ১৮ বলে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার যুবরাজ সিংয়ের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আসরেই ১২ বলে ফিফটি করেছিলেন তিনি। সেদিন স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে হাঁকান ছয় ছক্কা।

বাংলাদেশে হওয়া ২০১৪ সালের আসরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭ বলে ফিফটি করেছিলেন স্টেফান মাইবার্গ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসের এই ওপেনারের পাশেই বসলেন স্টয়নিস।

স্টয়নিস ব্যাটিংয়ে নামার সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৪৬ বলে ৬৯ রান। স্টয়নিসের তাণ্ডবে স্রেফ ২৫ বলেই এ রান করে ফেলেছে স্বাগতিকরা! যেখানে তার একার অবদান ৫৯ রান। আরেক প্রান্তে থাকা অধিনায়ক ফিঞ্চের এ জুটিতে অবদান স্রেফ ৭ রান।

মুখোমুখি তৃতীয় বলেই প্রথম বাউন্ডারি মারেন স্টয়নিস। দাসুন শানাকার করা পরের ওভারে হাঁকান আরও দুইটি চার। বাজে দিন কাটানো ভানিন্দু হাসারাঙ্গাকে দুই ছক্কায় ওড়ান তিনি। সেই ওভারে একটি চারও মারেন স্টয়নিস। তাকে থামাতে তখন পর্যন্ত ম্যাচের সেরা বোলার মাহিশ থিকসানাকে ডাকেন লঙ্কান অধিনায়ক।

স্টয়নিস তাতে দমে যাননি। উল্টো থিকশানাকে তিন ছক্কায় উড়িয়ে মাত্র ১৭ বলেই তুলে নেন নিজের ফিফটি। পরে ছন্দে থাকা পেসার লাহিরু কুমারা বোলিংয়ে এলে তাকেও ছক্কায় ভাসান স্টয়নিস।

খেলাধুলা

ক্রিকেটের খুদে ফরম্যাটে অনুজ্জ্বল বাংলাদেশ কেমন খেলবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ – এ নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না। এশিয়া কাপের মতোই ভরাডুবি হবে না তো? সুপার টুয়েলভ থেকে কি শূন্য হাতে ফিরবে?

প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানের হারের পর সেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ আরও ঘনীভূত হয়।

কিন্তু প্রথম ম্যাচে জয় লাভ করে সেই দুশ্চিন্তার মেঘ অনেকটা কাটিয়ে দিয়েছে সাকিব বাহিনী।

সোমবার হোবার্টে নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনটা জয় দিয়ে শুরু করেছে টাইগাররা।

যে কারণে দলের সবার মেজাজ এখন ফুরফুরে, মানসিকভাবে চাঙা। আগামী ২৭ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিডনিতে হবে বাংলাদেশ দলের দ্বিতীয় লড়াই। ইতোমধ্যে শিষ্যদের নিয়ে ব্রেট লি এবং গ্লেন ম্যাকগ্রার শহর সিডনিতে পৌঁছে গেছেন শ্রীধরন শ্রীরাম।

আর সেখানে পৌঁছেই শহরের বিখ্যাত অপেরা হাউস দেখতে গিয়েছেন টাইগার ক্রিকেটারদের কয়েকজন।

ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা গেছে নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির রাব্বি, লিটন দাস এবং মোসাদ্দেক হোসেনকে একসঙ্গে সিডনি শহরের সেই অপেরা হাউসের সামনে খোলামেলা বাতাসে বসে আছেন। তাকিয়ে আছেন ক্যামেরার লেন্সে।

ছবির ক্যাপশনে মোসাদ্দেক লিখেছেন ‘ডে অফ’।

ছুটির দিনই বটে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় সিডনির হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে ওঠেন টাইগাররা। কোনো অনুশীলন নেই বলে বিশ্রাম আর ঘোরাঘুরি। তাই অপেরা হাউজ না দেখে এলে যে সিডনি ভ্রমণ পূর্ণতা পায় না।

চার তারকার এই ঘোরাঘুরি দেশের ক্রিকেটসমর্থকদের অনেকের ভালো লেগেছে। তারা দ্বিতীয় ম্যাচের সাফল্যের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন

বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায়।

খেলাধুলা

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে ফিফা বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের পর কাতারের আমির শেখ তামিম ইবনে হামাদ আল থানি ঢাকা সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া আলী মাহদি সাঈদ আল কাহতানি আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কাতারের রাষ্ট্রদূত বৈঠকের সময় কাতারের আমিরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ গ্রহণের চিঠিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, কাতারের আমির বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে খুবই আগ্রহী।

ড. মোমেন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা, জনশক্তি ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি গত মাসে দোহায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) আয়োজনের জন্য কাতারকে ধন্যবাদ জানান।

এফওসি জনশক্তি নিয়োগ, এলএনজি সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে কাতারের আরও বিনিয়োগের মতো বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচনার জন্য গ্রহন করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশংসা ব্যক্ত করেন।

কাতারের রাষ্ট্রদূত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দোহা এফওসি এর ফলাফলে সন্তুষ্ট এবং উভয় পক্ষই দুই দেশের নেতৃত্বের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের লক্ষ্যে কাজ করছে।

কাতারে এবং কাতারের নেতৃত্বের সঙ্গে তার পুরানো স্মৃতি স্মরণ করে ড. মোমেন গত দুই দশকে একটি আধুনিক, উন্নত এবং অগ্রগামী দেশে রূপান্তরিত করার জন্য কাতারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

দুই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন এমন বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিককে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য মন্ত্রী কাতারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছে যেখানে কাতারের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারে এবং রাষ্ট্রদূতকে এলএনজি এবং বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ খোজার আহ্বান জানান।

জবাবে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্ষম ও সাহসী নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শান্তি অন্বেষণের প্রশংসা করেন।

আগামী নভেম্বরে দোহায় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট আয়োজনে দেশটির যুগোপযোগী প্রস্তুতির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ফিফা বিশ্বকাপের একটি রেপ্লিকা হস্তান্তর করেন ।

খেলাধুলা

ব্যাট হাতে শুভ সূচনার পর পথ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। একের পর এক উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করতে পারল সাকিবের দল।

পরে বল হাতেও দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। ফিল্ডিংও করেছে অসাধারণ।

তাসকিন-হাসানে ধরাশায়ী হয়ে ১৩৫ রানে গুটিয়ে গেছে নেদারল্যান্ডস।

ফলে বিশ্বকাপ মিশনে নেমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৯ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, হাসান পেয়েছেন ১৫ রান দিয়ে দুটি।

হোবার্টের বেলেরিভ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৫ রানের টার্গেট ছুড়ে দেন টাইগাররা।

সে লক্ষ্য তাড়ায় একমাত্র কলিন একারম্যান ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশি বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি।

বোলিংয়ের শুরুতে প্রথম ওভারেই পর পর দুই বলে নেদারল্যান্ডসের ২ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। এর পর সাকিবের ওভারে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে দুটি রানআউট উপহার পান টাইগাররা।

পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডস করতে পারে কেবল ৩২ রান।

চতুর্থ ওভারে আক্রমণে আসা সাকিবকে ছক্কা হাঁকান ডাচ ওপেনার ও’ডাউড।

পরের বলটি মিডউইকেটে ঠেলে দুটি রান নিতে গিয়েই ধরা খেলেন ও’ডাউড। দৌড়ে ক্রিজের মাঝখানে চলে আসেন তিনি কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেন কলিন একারম্যান। এর মাঝে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাউন্ডারি লাইন থেকে ছুটে এসে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থ্রো করেন আফিফ হোসেন। বল ধরে স্টাম্প ভেঙে উল্লাসে মাতেন সাকিব।

১ ছক্কায় ৮ বলে ৮ রান করে ফেরেন ও’ডাউড।

এক বল পর রান আউট হন কুপার। তিন রান নেওয়ার চেষ্টায় ফেরেন তিনি ‘ডায়মন্ড ডাকের’ তেতো স্বাদ নিয়ে।

সাকিবের বলটি কাভারে পাঠান একারম্যান। বলের পিছু ছুটেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাউন্ডারি থামিয়ে স্ট্রাইক প্রান্তে বল থ্রো করেন তিনি। তাতে বিদায় কুপারের।

১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়া নেদারল্যান্ডসের হয়ে প্রতিরোধ গড়েন একারম্যান ও স্কট এডওয়ার্ডস। জমে যাওয়া এই জুটি ভাঙলেন সাকিব।

১২তম ওভারে সাকিবের ডেলিভারিটি রিভার্স সুইপ করেন এডওয়ার্ডস। সরাসরি চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা হাসান মাহমুদের কাছে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি তিনি। ১ চারে ২৪ বলে ১৬ রান দিয়ে বিদায় নেন নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক।

১২ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ডাচদের রান ৬৬। এ সময়েও খেলার মধ্যেই ছিল দুই দলই। কারণ জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল ৪৮ বলে ৭৯ রান। ক্রিজে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন একারম্যান।

পরের ওভারেই ৪র্থ বলে টিম প্রিঙ্গেলর স্টাম্প ভেঙে দিলেন হাসান মাহমুদ। ৬ বল খেলে প্রিঙ্গল করেন ১ রান।

এর পরও ডাচ সমর্থকদের মাঝে আশা জাগিয়ে রাখেন একারম্যান।

মোসাদ্দেক হোসেনের ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পর ওই ওভারে ৩৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করলেন এ ব্যাটার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার পঞ্চাশের স্বাদ পেলেন তিনি।

উইকেটের আশায় পরের ওভার করতে হাসানের মাহমুদের হাতে বল তুলে দিলেন সাকিব। নিজের শেষ ওভারে সফল হলেন এ তরুণ পেসার। এ পেসারের বাউন্সারে পুল করেন ফন বিক লোগান ফন বিক। সীমানায় ক্যাচ লুফে নেন আরেক পেসার তাসকিন। ৫ বলে ফন বিক করেছেন মাত্র ২।

১৫ ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৮৬ রান। তবু জয়ের আশায় মাঠে তাকিয়ে থাকেন গ্যালারির ডাচ সমর্থকরা। কারণ ক্রিজে রয়েছেন কলিন একারম্যান।

তবে তাসকিনের ফের জোড়া আঘাতে সেই আশায় গুঁড়েবালি।

১৭৩ম ওভারে এসে তাসকিন সাজঘরে ফিরিয়ে দিলেন দলের একমাত্র ভরসা একারম্যানকে। তার আগে দ্বিতীয় বলে থার্ডম্যানে শারিজ আহমাদকে হাসান মাহমুদের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। শারিজের ব্যাট থেকে এসেছে ৮ বলে ৯ রান।

তাসকিন তার পঞ্চম ডেলিভারিতে ফিরিয়ে দিলেন এক প্রান্ত আগলে রাখা কলিন একারম্যানকেও। পুল করে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েছেন এ ব্যাটার। ৪৮ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৬২ রান করেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার।

একারম্যানের আউটের ১৭ ওভারে নেদারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১০৫ রান। অর্থাৎ শেষ ৩ ওভারে ডাচদের প্রয়োজন পড়ে ১৮ বলে ৪০ রান।

এ সময় উইকেটের আশায় অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকারের হাতে বল তুলে দিলেন সাকিব। উইকেট না পেলেও ৮ রান দিলেন সৌম্য। ফলে জয়ের জন্য ১২ বলে প্রয়োজন পড়ে ৩২ রানের।

১৯তম ওভারটি করতে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। পর পর দুটি ওয়াইডসহ ৭ রান দেন মোস্তাফিজ।

অর্থাৎ ৬ বলে ২৫ রান দরকার পড়ে নেদারল্যান্ডসের। সেই রান ঠেকাতে দায়িত্ব পড়ে সৌম্য সরকারের কাঁধে। কারণ তাসকিন, হাসান ও সাকিব যার যার কোটা পূরণ করে ফেলেছেন।

সাকিবের আস্থার প্রতিদান দেন সৌম্য। ৪র্থ বলে দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকালেন ভ্যান মেকেরেন। ২ বলে দরকার ১২ রানের।

সে বলে ২ রান নেন মেকেরেন। তাতেই উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে গ্যালারির বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে। শেষ বলে ছক্কার আশায় উড়িয়ে মারেন মেকেরেন। কিন্তু বাউন্ডারিতে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১৩৫ রানে থামল ডাচরা। ১৪ বলে ২৪ রান নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মেকেরেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (শান্ত ২৫, সৌম্য ১৪, লিটন ৯, সাকিব ৭, আফিফ ৩৮, ইয়াসির ৩, সোহান ১৩, মোসাদ্দেক ২০*, তাসকিন ০, হাসান ০*; ক্লাসেন ৪-০-৩৩-১, একারম্যান ১-০-৪-০, ফন মেকেরেন ৪-০-২১-২, ডি লেডে ৩-০-২৯-২, প্রিঙ্গল ২-০-১০-১, শারিজ ৩-০-২৭-১, ফন বিক ৩-০-১২-১)

নেদারল্যান্ডস : ২০ ওভারে ১৩৫ (বিক্রমজিত ০, ও’ডাউড ৮, ডি লেডে ০, একারম্যান ৬২, কুপার ০, এডওয়ার্ডস ১৬, প্রিঙ্গল ১, ফন বিক ২, শারিজ ৯, ক্লাসেন ৭*, মেকেরেন ২৪; তাসকিন ৪-০-২৫-৪, হাসান ৪-১-১৫-২, সাকিব ৪-০-৩২-১, মোস্তাফিজ ৪-০-২০-০, সৌম্য ৩-০-২৯-১, মোসাদ্দেক ১-০-১৪-০)

খেলাধুলা

অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভ পর্বের প্রথম ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলো নিউজিল্যান্ড। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই হেরেছিলো নিউজিল্যান্ড।

আজ ৮৯ রানের বড় জয়ে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। রান বিবেচনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ষষ্ঠ বড় জয় এটি। আর নিজেদের টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ বড় ব্যবধানে জয় পেল নিউজিল্যান্ড।

সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ফিন অ্যালেনকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন ডেভন কনওয়ে। অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের প্রথম ওভার থেকে ১৪ রান তুলেন অ্যালেন। ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। পরের ওভারে জশ হ্যাজেলউডকেও পাত্তা দেননি অ্যালেন ও কনওয়ে। কনওয়ে ২টি চার ও অ্যালেন ১টি বাউন্ডারিতে ১৫ রান তুলেন।

স্টার্ক-হ্যাজেলউডের করা প্রথম দুই ওভার থেকে ২৯ রান তোলেন  অ্যালেন ও কনওয়ে। এমন অবস্থায়  বাধ্য হয়ে তৃতীয় ওভারে প্যাট কামিন্সকে আক্রমনে আনেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এই ওভার থেকেও ১৭ রান আসে। অ্যালেন ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। অবশ্য ওভারের দ্বিতীয় বলে  শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান অ্যালেন।

স্টয়নিসের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে নিউজিল্যান্ডের রান পঞ্চাশে  পৌঁছে দেন অ্যালেন। তাতে ৪ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড রান গিয়ে দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫৬ রানে।

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত বোলিং আক্রমনে এসেই সাফল্য পান হ্যাজেলউড। ভয়ংকর রুপে থাকা অ্যালেনকে বোল্ড করেন হ্যাজেলউড। ২৬২ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ১৬ বল খেলে ৪২ রান করেন অ্যালেন। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো। উদ্বোধনী জুটিতে ২৫ বলে ৫৬ রান করেন অ্যালেন ও কনওয়ে।

অ্যালেনের বিদায়ে ক্রিজে এসেই বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। অ্যালেন ঝড়ে পাওয়ার-প্লেতে ১ উইকেটে ৬৫ রান পায়  নিউজিল্যান্ড।

পাওয়ার-প্লে শেষ হবার পর নিউজিল্যান্ডের রানের গতি ধরে রাখেন কনওয়ে ও উইলিয়ামসন। ১১তম ওভারের প্রথম বলে উইলিয়ামসনের ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের স্কোর ১শ পৌঁছায়।

অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পার করা ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন কনওয়ে। এজন্য ৩৬ বল খেলেন তিনি।

একই ওভারে শেষ বলে উইলিয়ামসনকে শিকার করে অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন জাম্পা। ১টি করে চার-ছক্কায় ২৩ বলে ২৩ রান করেন উইলিয়ামসন। কনওয়ের সাথে ৫৩ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক।

উইলিয়ামসন যখন ফিরেন, তখন ইনিংসের ৭ ওভার বাকী ছিলো। তৃতীয় উইকেটে গ্লেন ফিলিপসের সাথে ১৮ বলে ২৭ রান তুলেন কনওয়ে।

চতুর্থ উইকেটে জেমস নিশামকে নিয়ে  ঝড় তোলেন কনওয়ে। শেষ ২৪ বলে ২শ স্ট্রাইক রেটে ৪৮ রান যোগ করেছেন তারা। এসময় নিশাম ২টি ছক্কা ও কনওয়ে ২টি চার মারেন। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মারেন  নিশাম।

শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০০ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। এবারের আসরে এটিই প্রথম ২শ ও সর্বোচ্চ দলীয় রান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থবারের মত ২শ রান করলো নিউজিল্যান্ড।

৫৮ বল খেলে সাত বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারিতে  ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে।  ২টি ছক্কায় ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন নিশাম।

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার হ্যাজেলউড ৪ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ৩৯ রানে ১ উইকেট নেন জাম্পা।
২০১ রানের বিরাট টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নারকে ৫ রানে বিদায় করেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি।

ওয়ার্নারের পর পাওয়ার-প্লেতে আরও ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ১৩ রানে স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও মিচেল মার্শকে ১৬ রানে বিদায় করেন সাউদি।

৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। এই পরিস্থিতিতে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন স্টয়নিস ও টিম ডেভিড। কিন্তু পরপর দু’ওভারে স্টয়নিস ও ডেভিডকে তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারের মুখে ঠেলে দেন স্যান্টনার। ৬৮ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় অসিরা।

এরপর ১৩তম ওভারে ম্যাথু ওয়েড ও ১৪তম ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ওয়েড ২ ও ম্যাক্সি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন কামিন্স। শেষদিকে ট্রেন্ট বোল্টের তোপে ১৭ দশমিক ১ ওভারে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

সাউদি ৬ রানে ও স্যান্টনার ৩১ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। বোল্ট ২৪ রানে ২টি শিকার করেন। ম্যাচ সেরা হন কনওয়ে।
আগামী ২৫ অক্টোবর শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। ২৬ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নামবে নিউজিল্যান্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড :

নিউজিল্যান্ড : ২০০/৩, ২০ ওভার (কনওয়ে ৯২*, অ্যালেন ৪২, হ্যাজেলউড ২/৪১)।

অস্ট্রেলিয়া : ১১১/১০, ১৭.১ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ২৮, কামিন্স ২১, সাউদি ৩/৬)।

ফল : নিউজিল্যান্ড ৮৯ রানে জয়ী। 

ম্যাচ সেরা : ডেভন কনওয়ে (নিউজিল্যান্ড)।