খেলাধুলা

কত রেকর্ড গড়েছেন, উপহার দিয়েছেন কত জাদুকরী মুহূর্ত। সেই সবই এখন অতীত। চোখে জল, বুকে ব্যথা নিয়ে ছাড়ছেন প্রিয় কাম্প নউ। নজর এখন নতুন চ্যালেঞ্জে। আবারও বিজয়ীর বেশে হাজির হওয়ার প্রত্যয় লিওনেল মেসির কণ্ঠে।

আর বার্সেলোনাকে নিয়ে আশা, তাকে ছাড়াও ঠিক এগিয়ে যাবে তার প্রিয় দল।

স্প্যানিশ ক্লাবটির সঙ্গে নতুন চুক্তির দুয়ারে ছিলেন মেসি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বার্সেলোনা জানিয়ে দেয়, লা লিগার ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের নিয়মের বাধার জন্য এই চুক্তি সম্ভব নয়। বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর রোববার সংবাদ সম্মেলনে এসে মেসি জানালেন, প্রিয় ক্লাব ছাড়ার অর্থ কী এখনও যেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।

“এই জায়গা, এই ক্লাব যেখানে আমার জীবন পুরোপুরি বদলে গেছে সেটা ছেড়ে যাওয়ার অর্থ আজও আমি বুঝতে পারছি না। প্রথম স্কোয়াডে ছিলাম ১৬ বছর। এখন আবার আমাকে নতুন করে শুরু করতে হবে।”

“আমার পরিবারের জন্য এটা হবে কঠিন এক পরিবর্তন। কারণ, আমি জানি এই শহরে তারা কেমন অনুভব করে। কিন্তু আমি জানি, আমরা মানিতে নিতে পারব এবং ভালো থাকব। আমাদের এটা মেনে নিতে হবে এবং মানিয়ে নিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে।”

কিছু দিন আগেও জীবনের সেরা সময় কাটাচ্ছিলেন মেসি। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে দেশের হয়ে জিতেছিলেন প্রথম বড় কোনো শিরোপা। এরপর ছুটি কাটিয়ে বার্সেলোনায় ফিরেছিলেন নতুন চুক্তির লক্ষ্য নিয়ে।

কিন্তু নানা সমস্যায় সেই চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। মেসির জন্য এটা ছিল সবচেয়ে বড় আঘাত।

“এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটাই ছিল সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত। অনেক কঠিন সময়, পরাজয় এসেছে, কিন্তু এটা আর কখনও ফিরবে না। এই ক্লাবে এটাই শেষ, অন্য কোথায় নতুন গল্পের শুরু।”

“ব্যথা, অনেক বেশি ব্যথা। কারণ, আমি আমার ভালোবাসার ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছি। এমনটা প্রত্যাশা করিনি। আমি সব সময়ই সত্যিটা বলেছি। গত বছর আমি ছাড়তে চেয়েছিলাম, এই বছর নয়। ব্যথাটা এ কারণেই।”

কোনো কিছুই থেমে থাকবে না, ভালো করেই জানেন মেসি। নিজে শুরু করবেন নতুন কোথাও। নিজেদের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়াই এগিয়ে যাবে বার্সেলোনা।

“বার্সেলোনায় খেলোয়াড়দের আসা অব্যাহত থাকবে। যে কারোর চেয়ে ক্লাব বড়। মানুষ একটা সময় অভ্যস্ত হয়ে যাবে। প্রথম দিকে এটা অদ্ভূত লাগবে। গ্রেট ফুটবলাররা আসবে আর তাদের গ্রেট একটা স্কোয়াড আছে।”

খেলাধুলা

চার ওভারে নেই কোনো উইকেট। তবুও তিনিই নায়ক, মুস্তাফিজুর রহমান। তার অসাধারণ ওভারগুলোই গড়ে দিল ব্যবধান। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচের কাঁটা ঘুরিয়ে দিলেন বাংলাদেশের দিকে। নখকামড়ানো উত্তেজনার ম্যাচে জিতে দল পেল অনির্বচনীয় স্বাদ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়!

খেলাধুলা

প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে টানা জয়ের পর সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের মিশনে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাইগার দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

এর মধ্য দিয়ে টানা ৫ ম্যাচ টসে হারার পর অবশেষে জয়ের দেখা পেলেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। দলে কোনো পরিবর্তন নেই। প্রথম দুই ম্যাচের একাদশ আজও থাকছে।

অন্যদিকে, সিরিজে লড়াইয়ে ফেরার জন্য একাদশে তিন পরিবর্তন এনেছে অজিরা। ফিরেছেন বেন ম্যাকডারমট ও ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। অভিষেক হচ্ছে পেসার ন্যাথান এলিসের। বাদ পড়েছেন জশ ফিলিপে, অ্যান্ড্রু টাই ও মিচেল স্টার্ক।

বাংলাদেশ একাদশ

মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম, সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), আফিফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান, শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ

অ্যালেক্স ক্যারি, বেন ম্যাকডারমট, মিচেল মার্শ, ময়জেস হেনরিকেস, ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), ন্যাথান এলিস, অ্যাডাম জাম্পা, অ্যাশটন টার্নার, অ্যাশটন অ্যাগার, ড্যান ক্রিশ্চিয়ান, জশ হ্যাজলউড।

খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের। এবার প্রথম ম্যাচে তা ধরা দিল। তাদের বিপক্ষে কোনো ফরম্যাটেই একাধিক জয় ছিল না। দ্বিতীয় ম্যাচে সেটাও হয়ে গেল। হাতছানি এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো সংস্করণেই প্রথম সিরিজ জয়ের। সেই চাওয়াকে পাওয়ায় রূপ দেওয়ার অভিযানে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নামবে বাংলাদেশ।

এক দিনের ছোট্ট বিরতির পর আবার শুরু বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি লড়াই। ২-০তে এগিয়ে থাকা থাকা বাংলাদেশ শুক্রবার মাঠে নামবে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয়টি শুরু যথারীতি সন্ধ্যায় ৬টায়।

সিরিজ জয়ের জন্য ম্যাচ বাকি এখনও তিনটি। তবে অস্ট্রেলিয়াকে বাগে পেয়ে সুযোগটি কাজে না লাগানোর কারণ নেই। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষার ঝুঁকিই বা কেন নেওয়া হবে! দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ের নায়ক আফিফ হোসেন যেমন সরাসরিই বলে দিয়েছেন, এই ম্যাচেই সিরিজ জয় তাদের লক্ষ্য।

“অবশ্যই আমাদের প্রত্যেকটি ম্যাচ নিয়ে চিন্তা থাকে। আপাতত আমাদের চিন্তা থাকবে সামনের ম্যাচটা যেন ভালো খেলে জিততে পারি। জিততে পারলে সিরিজটি তো আমাদের পক্ষেই আসবে। চেষ্টা করব সামনের ম্যাচ জেতার।”

অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসানের প্রতিক্রিয়া একটু সাবধানী। তিনি বললেন, দল এগোতে চায় একটি করে পদক্ষেপে। তবে লক্ষ্য ওই একই, সিরিজ জয়।

“সবারই চিন্তা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোনোর। দলের সবারই ভাবনা এটি। যেহেতু এটা গোল বল, যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। সবার মনোযোগ এখন তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে। তার পর একটার পর একটা এগোব। আশা করি, সিরিজটা জিতব এবং পুরো সিরিজ ভালোভাবে শেষ করতে পারলে ভালো লাগবে দিনশেষে।”

অস্ট্রেলিয়া খুঁজছে মিরপুরের উইকেটে রান করার পথ। ছবি: বিসিবি।অস্ট্রেলিয়া খুঁজছে মিরপুরের উইকেটে রান করার পথ। ছবি: বিসিবি।বাংলাদেশ যখন সিরিজ জয় নিয়ে স্বপ্নাতুর, অস্ট্রেলিয়া তখন হাতড়ে ফিরছে সিরিজ বাঁচানোর পথ। আপাতত তাদের সামনে কেবলই আঁধার। প্রথম দুই ম্যাচ যে ধরনের পিচে হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার অনভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন আপ সেখানে খাবি খেয়েছে প্রবলভাবে। তৃতীয় ম্যাচেও ভিন্ন কোনো উইকেট বেছে নেওয়ার কারণ নেই। অস্ট্রেলিয়ানদের সেখানে রাতারাতি নাটকীয় উন্নতির সম্ভাবনাও সামান্য।
এই উইকেট কতটা কঠিন, সেটা গত ম্যাচের পর ব্যাখ্যা করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান মোইজেস হেনরিকেস। আইপিএলে ভারতে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও পাশের দেশেই এমন উইকেট তার কাছে মনে হচ্ছে যেন ভিন্ন এক গ্রহে খেলা।

“আইপিএলে আমি ৬০টি ম্যাচ খেলেছি, কিন্তু এখানকার উইকেটে খেলে…আমার অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে প্রতিকূল ও বিরুদ্ধ। অদ্ভুত একটা কোমলতা আছে এই উইকেটের। পাওয়ার প্লেতে প্রায় ৬ ওভারই ওরা স্পিন দিয়ে চালিয়েছে এটা জেনেই যে বছরের এই সময়টায় উইকেট কেমন থাকে, কতটা ভেজা থাকে। উইকেটের আচরণ জানার সুবিধা তারা পেয়েছে। আমরা ভাবতেও পারিনি, উইকেট এরকম হবে।”

“এখানে মানিয়ে নেওয়া আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার এবং আরেকটু দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে আমাদের,এটা নিশ্চিত। অজুহাতের কিছু নেই এখানে। এই পরীক্ষায় পড়াটা আমাদের জন্য দারুণ, কারণ আমার মনে হয় না, দেশের বাইরে এর চেয়ে ভিন্ন বা উল্টো কন্ডিশন আমরা আর পাব।”

উইকেটে ধাঁধাঁ আর অস্ট্রেলিয়ানদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় পেরিয়ে যাক অন্তত আরেকটি ম্যাচ, বাংলাদেশ চাইবে সেটিই।

বৃষ্টিতে মিরপুরে টস হতে দেরি

খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচ মিলিয়ে পাওয়ার প্লের ১২ ওভারের ১০টিই করেছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। এর চারটিতে হাত ঘুরিয়েছেন মেহেদি হাসান। নিয়েছেন দুটি উইকেট। শুরুর আঁটসাঁট বোলিংয়ে দুই ম্যাচেই বেঁধে দিয়েছেন সুর। তরুণ এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার জানালেন, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নতুন বলে বোলিং পছন্দ করেন তিনি। উপভোগ করেন ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার চ্যালেঞ্জ।

খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অবশেষে জয় পেল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে এই প্রথম অসিদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এই জয়ে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রান করে বাংলাদেশ।

সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে নাসুম আহমেদের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ১০৮ রানে অলআউট হয় অসিরা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩২ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মেহেদী হাসানের স্পিন বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার অ্যালেক্স কেরি।

দলীয় ১০ রানে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন অন্য ওপেনার জশ পিলিপি। মেহেদির মতো সাকিব আল হাসানও প্রথম বলে সাফল্য পান। এ বাঁ-হাতি স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ময়েস হেনরিক্স।

২.১ ওভার তথা ১৩ বলে দলীয় ১১ রানে ৩ উইকেট পতনের পর অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মিসেল মার্শ।

চতুর্থ উইকেটে ৩৮ রানের জুটি গড়ে নাসুম আহমেদের দ্বিতীয় শিকার হন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ওয়েড। তিনি ২৩ বলে মাত্র ১৩ রান করে ফেরেন।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

৩.৩ ওভারে দলীয় ১৫ রানে জশ হ্যাজলউডের গতির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সৌম্য। ৯ বলে মাত্র ২ রান করে ফেরেন এ ওপেনার।

দলকে খেলায় ফেরানোর আগেই বিপদে পড়েন অন্য ওপেনার নাঈমও। দলীয় ৩৭ রানে ২৯ বলে দুই চার ও দুই ছক্কায় ৩০ রান করে অ্যাডাম জাম্পার স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ফেরেন টাইগার এ ওপেনার।

জশ হ্যাজলউডের করা আগের বলেটি ডিপ ব্যাকওয়ার্ স্কয়ারের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

ঠিক পরের বলে লং অপের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে হেনরিকসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রিয়াদ। ১২.২ ওভারে দলীয় ৭৩ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক (২০)।
ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ বলে ৩ রান করা নুরুল হাসান সোহান ফেরেন ৪ বলে ৩ রান করে।

১৬.৬ ওভারে দলীয় ১০৪ রানে হ্যাজলউডের তৃতীয় শিকারে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব আল হাসান। তার আগে ৩৩ বলে তিন চারে ৩৬ রান করেন সাবেক এ অধিনায়ক।

সাকিব আউট হওয়ার পর ছয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শামিম হোসেন। ৩ বলে ৪ রান করে মিসেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন তিনি।

ব্যাটসম্যানদের এই আসা-যাওয়ার মিছিলে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন আফিফ হোসেন। তার আগে ১৭ বলে তিন বাউন্ডারিতে করেন ২৩ রান।

খেলাধুলা

আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দল কেমন হবে তা আগেই জানা ছিল। বাকি ছিলো শুধু আনুষ্ঠানিকতা। রবিবার (১ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানালো অজিদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য সুযোগ পাওয়া ১৭ সদস্যের নাম। জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করে এসে যারা জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করেছেন, ঘোষিত দলে আছেন তারাই।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিসিবি জানিয়েছে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে কারা খেলবেন আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে।

জিম্বাবুয়ে সফর থেকে এসে তিনদিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ করে রবিবার ১ আগস্ট অনুশীলনে ফিরেছে টাইগাররা। এদিন বাংলাদেশ দলের ১৬ সদস্য অনুশীলনে উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এই অলরাউন্ডারের নামও স্থান পেয়েছে ঘোষিত স্কোয়াডে।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া শর্ত অনুযায়ী জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের অন্তত সিরিজ শুরুর ১০ দিন আগে বলয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। সে মারপ্যাঁচে অজিদের বিপক্ষে খেলতে পারছেন না মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। চোটের কারণে নেই তামিম ইকবাল।

এক নজরে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ স্কোয়াড

 মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, আফিফ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ, শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন ও রুবেল হোসেন।
খেলাধুলা

আঙিনায় অস্ট্রেলিয়া, অপেক্ষায় পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তাদের বিপক্ষে আগে চারটি টি-টোয়েন্টি খেলে একবারও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার কি পারবে ?  আলাপচারিতায় সেটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, জাতীয় নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার এবং আরেক নির্বাচক ও সাবেক স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই দলই এখন টিম হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছে। কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়ার সাপেক্ষে রোববার থেকে অনুশীলন করতে পারবে দুই দলই। সিরিজ শুরু মঙ্গলবার।

মুমিনুল, হাবিবুল ও রাজ্জাক, তিনজনেরই বিশ্বাস, অস্ট্রেলিয়ারকে হারানোর বড় সুযোগ এবার। অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্যও এই সিরিজটিকে গুরুত্বপূর্ণ মানছেন তারা।

মুমিনুল হক

বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক

“জিততে হলে আমাদের দেখাতে হবে দলগত পারফরম্যান্স। এটার বিকল্প নেই। তিন ফরম্যাটেই আমাদের জয়ের রেসিপি এটাই।”

“বলতে পারেন, টি-টোয়েন্টিতে দুই-একজনই খেলার ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। সেটা বেশির ভাগ দলের ক্ষেত্রে সত্যি। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা ভিন্ন। এই সংস্করণেও তো আমাদের অনেক বড় ম্যাচ উইনার নেই! সাকিব হ্যাঁ, সাকিব ভাইয়ের মতা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আছেন, মুস্তাফিজের মতো বোলার আছে। তবু জিততে হলে আমাদের সম্মিলিত অবদানই লাগে। এবার জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও এটা দেখা গেছে।”

“ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, সবকিছুতে ভালো করতে হবে, এটা কমন কথা। তবে এই সিরিজে আমাদের ব্যাটিংটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে। কারণ, ওদের বোলিং শক্তিশালী। কিন্তু আমরা নিজেদের সবাইকে পাচ্ছি না। ওপেনিংয়ে তামিম ভাইয়ের মতো অভিজ্ঞ একজন নাই, লিটন দাসের মতো ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান নাই। মিডল অর্ডারে মুশফিক ভাই তো সম্ভবত গত দুই-তিন বছরে এই সংস্করণে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। তাকে না পাওয়া অনেক বড় শূন্যতা। অন্যদের তাই বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। বিশেষ করে টপ অর্ডারে সৌম্য, পরে সাকিব ভাই, রিয়াদ ভাইদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে।”

মিরপুরের উইকেট বরাবরের মতো থাকলে বাংলাদেশ ৪-১ ব্যবধানেও জিততে পারে বলে মনে করেন মুমিনুল।মিরপুরের উইকেট বরাবরের মতো থাকলে বাংলাদেশ ৪-১ ব্যবধানেও জিততে পারে বলে মনে করেন মুমিনুল।“যদি মিরপুরের টিপিক্যাল ধীরগতির উইকেট হয়, আমাদের ম্যাচ পরিকল্পনা সেরকমই হওয়া উচিত। টি-টোয়েন্টিতে বেশির ভাগ সময় হয়তো প্রথম ৬ ওভারে আপনি ৫৫-৬০ রান চাইবেন। কিন্তু মিরপুরের উইকেটে সেটা কঠিন। এখানে উইকেট হাতে রেখে রানটা যতটুকু বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। ভালো ব্যাটিং উইকেট থাকলে অবশ্য অন্য কথা।”
“বোলিংয়ে আমার মনে হয় সাকিব ভাই ও মুস্তাফিজের পারফরম্যান্স বেশি জরুরি। তারা দুজনই অভিজ্ঞ, অনেক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এবং পরিস্থিতি বুঝে বল করার ব্যাপারটা খুব ভালো বোঝেন। মিরপুরের উইকেটের ব্যবহার তাদের চেয়ে ভালো আর কে করতে পারবে!”

“অস্ট্রেলিয়ার বোলিং খুবই ভালো। ব্যাটিংয়ে যদিও কোনো বড় নাম নেই। তবে টি-টোয়েন্টিতে দুই-একজন দাঁড়িয়ে গেলেই খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে।”

“তারপরও অবশ্য আমি মনে করি, এবার আমাদের সুযোগ আছে। অনেক বড় সুযোগ। যদি মিরপুরের টিপিক্যাল উইকেট হয়, তাহলে পাঁচ ম্যাচের চারটি আমরা জিততে পারব বলে আশা করি। তাই বলে ওদেরকে হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। দলে যারাই খেলুক, দলটা অস্ট্রেলিয়া। ওদের পেশাদারীত্ব অন্যরকম।”

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দুই পাশে অন্য দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও আব্দুর রাজ্জাক।

হাবিবুল বাশার

জাতীয় নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক

“অস্ট্রেলিয়াকে আমরা টি-টোয়েন্টিতে কখনও হারাতে পারিনি। এবার হারাতে চাই। শুধু সিরিজ জয়ের জন্যই নয়, জিততে চাই সামনের বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়েও। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে আমাদের আত্মবিশ্বাসের জন্য দারুণ হবে।”

“অস্ট্রেলিয়াকে কিন্তু আমি মোটেও খর্বশক্তির মনে করছি না। হ্যাঁ, ব্যাটিংয়ে তাদের বেশ কজন নাই। কিন্তু যারা আছে, বিগ ব্যাশে তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। আর বোলিং তো খুবই শক্তিশালী। ম্যাচ জেতায় বোলাররাই। অস্ট্রেলিয়ার আসল জায়গাটা তাই ঠিকই আছে। মনে রাখতে হবে, আমরাও আমাদের শীর্ষ ক্রিকেটারদের কয়েকজনকে পাচ্ছি না।”

“জিততে হলে কন্ডিশন যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে আমাদের এবং নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। কন্ডিশন ভালো ব্যবহার বলতে বোঝাচ্ছি, উইকেট ও পারিপার্শ্বিকতা, সব মিলিয়েই। অস্ট্রেলিয়ানরা এমনিতেই এই কন্ডিশনে অভ্যস্ত নয়। তার ওপর এই দলে অনভিজ্ঞ অনেকেই আছে। তাদের জন্য এখানে মানিয়ে নেওয়া সহজ হওয়ার কথা নয়। আমাদের কাজ হবে, ওদের কাজটা আরও কঠিন করে তোলা।”

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দুই পাশে অন্য দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও আব্দুর রাজ্জাক।প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দুই পাশে অন্য দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও আব্দুর রাজ্জাক।“ওদের বোলারদের আমরা কীভাবে সামলাব, সেটা হবে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজের ক্ষেত্রে তো বটেই, সামগ্রিকভাবেও। স্টার্ক-হেইজেলউড-জ্যাম্পা-অ্যাগার-মার্শ, এই মানের বোলিং আক্রমণ খেলতে পারলে, বিশ্বকাপের জন্য অনেক ভালো হবে। সবসময় তো এই ধরনের বোলার খেলার সুযোগ হয় না আমাদের। বিশ্বকাপে তো এরকম বোলারদেরই খেলতে হবে, বিশেষ করে যদি প্রথম ধাপ উতরাতে পারি। বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল হবে এটা।”
“সেরা বোলারদের খেললে অনেক সময় নিজের সেরাটা বেরিয়ে আসে। আশা করি, এবারও তেমন হবে। যদি ব্যাটিংটা আমরা ভালো করতে পারি, আমার ধারণা আমরা জিততে পারব।”

“সিরিজ নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী আমি করব না। টি-টোয়েন্টি নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা কঠিন। তবে যেটা বললাম, এবার কিছু ম্যাচ জিততে চাই।”

আব্দুর রাজ্জাক

জাতীয় নির্বাচক ও সাবেক স্পিনার

“হারাতে হলে কী করতে হবে, এটার আগে আমার একটা অনুরোধ মিডিয়া, ক্রিকেট অনুসারী সবার কাছে। এই সিরিজে যারা নেই, তাদের নিয়ে আলোচনা যেন আমরা যতটা সম্ভব কম করি।”

“অবশ্যই তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। তাদের অভাব অনুভূত হতেই পারে। কিন্তু ওদেরকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে দলে যারা আছে, তাদের যেন আড়ালে ঠেলে দেওয়া না হয়। যারা দলে আছে, ওরাই সেরা। এই বিশ্বাসটা ওদেরকে দিতে হবে। নইলে ওদের মনোবল কমে যেতে পারে, দায়িত্ব কম অনুভব করতে পারে, নিজেদের নিয়ে সংশয়ে ভুগতে পারে। বাংলাদেশের হয়ে যারা খেলছে, তারাই সেরা দল। এখানে টিম ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়কেরও দায়িত্ব আছে। আশা করি, তারা করবে।”

“মাঠের ক্রিকেটের কথা বললে, সবকিছুর আগে জরুরি সঠিক মানসিকতা। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এই মানসিকতার বিকল্প নেই।”

“আরেকটা ব্যাপার হলো, বিশ্বাস। যা কিছুই হোক, অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারব আমরা, এই বিশ্বাস রাখতে হবে। ধরুন, প্রথম ম্যাচে যদি আমরা হেরে যাই, বা দুই ম্যাচে হেরে যাই, তারপরও বিশ্বাস রাখতে হবে যে সিরিজ জিতব।”

“মাঠের ক্রিকেটের কথা যদি বলি, প্রথম ৬ ওভার হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা ব্যাটিং-বোলিং দুই দিকেই, সর্বোচ্চ ফায়দা নিতে হবে।”

“পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর ব্যাপারটা অনেকটা নির্ভর করবে উইকেটের ওপর। ভালো ব্যাটিং উইকেট হলে ৬ ওভারে তো ৬০-৭০, এমনকি ৮০ রান ছাড়িয়েও যায়। কিন্তু মিরপুরে যে ধরনের উইকেট আমরা দেখি, সেরকম উইকেটই থাকলে প্রথম ৬ ওভারে উইকেট হারানো চলবে না। উইকেট রেখে রান যতটা করা যায়।”

“বোলিংয়ে করতে হবে ঠিক উল্টোটা। দ্রুত ব্রেক থ্রু দিতে হবে, যত বেশি সম্ভব উইকেট নিয়ে ওদের চাপে ফেলা যায়। অন্তত ২-৩ উইকেট নিতে হবে পাওয়ার প্লেতে। তাহলে ওরা চাপে পড়বে। সেখান থেকে বিল্ড আপ করতে হবে। বোলিং আমাদের এমনিতেই ভালো হচ্ছে এখন। সেটা ধরে রাখতে হবে।”

“অনেক ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের। পরিস্থিতি দ্রুত পড়ে সেই অনুযায়ী সাড়া দিতে হবে। দেশের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলা বেশ কজন আছে আমাদের। সাকিব-মুস্তাফিজ-রিয়াদ, এমনকি আফিফ, মোসাদ্দেকরাও টুকটাক খেলেছে। ওদের তাই এসব বুঝতে পারার কথা।”

“অস্ট্রেলিয়ার যদিও অনেকে নাই, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সবার থাকা সবসময় জরুরিও না। ওদের বেশ কজন ক্রিকেটার আছেন, যারা বড় বড় টুর্নামেন্ট বা সিরিজে অনেক খেলেছেন। টেম্পারামেন্ট তাই অন্যরকম।”

“তারপরও যদি সব মিলিয়ে হিসাব-নিকাশ করি, আমি মনে করি আমাদের সিরিজ জয় করা উচিত। সেটা ৩-২ ব্যবধান হোক, সমস্যা নেই। সিরিজ জিততে চাই।”

খেলাধুলা

জিম্বাবুয়ে সিরিজে একের পর এক রেকর্ড করছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

এবার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ও দারুন একটি রেকর্ড করেছেন তিনি। ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২ হাজার রান এবং ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিবের অলরাউন্ডার পারফরমেন্স সেই ম্যাচে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে দুটি উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রান করে। আর এতেই বিশ্ব রেকর্ড করেছেন সাকিব আল হাসান।

বিশ্বের দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২ হাজার রান এবং ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব আল হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসের থেকে ৭২ ম্যাচ কম খেলে এই রেকর্ড গড়েছেন তিনি। তিনি শহীদ আফ্রিদি সহ সকল অল-রাউন্ডারকে পিছনে ফেলে এই রেকর্ড গড়লেন।

খেলাধুলা

ফরম্যাটের সঙ্গে ভাগ্যও বদলে গেল শ্রীলঙ্কার। শেষ ম্যাচে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ওয়ানিন্দু হাছরাঙ্গা ও দাসুন শনাকার মারাত্মক বোলিংয়ে মাত্র ৮১ রান পুঁজি পায় ভারত। ওই রান ১৪.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ছাড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ৮১ রান তুলে ভারত। যা টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের তৃতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে গোল্ডেন ডাকের শিকার হন শিখর ধাওয়ান। দলীয় ৫ রানে ধাওয়ানকে শিকার করেন দুশমান্থা চামিরা। তারপর ৩৬ রানের ভেতরেই ৫টি উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় ভারত।

ষষ্ঠ উইকেটে ভুবনেশ্বর কুমার ও কুলদীপ যাদব গড়েন ১৯ রানের জুটি। হাসারাঙ্গার বলে দাসুন শানাকার দুর্দান্ত এক ক্যাচে ভুবনেশ্বর ফেরেন ৩২ বলে ১৬ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন কুলদীপ। তার ২৮ বলে অপরাজিত ২৩ রানে ভয় করে ভারত পায় ৮ উইকেটে ৮১ রানের সংগ্রহ। টি-টোয়েন্টিতে এটি ভারতের তৃতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ।

ভারতকে এই মামুলী সংগ্রহে বেঁধে ফেলতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা হাসারাঙ্গার। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন তিনি। শানাকা শিকার করেন ২টি উইকেট। অকিলা ধনঞ্জয়া ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করেও কোনো উইকেট পাননি।

সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ধীরগতিতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। রাহুল চাহারের দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দলীয় অর্ধশতক পূরণ করতে ৬৮টি বল খেলে শ্রীলঙ্কা। রাহুলের ৪ ওভারেই হিমশিম খায় লঙ্কানরা। ১২ ওভারের ভেতর ৪ ওভার বোলিং করে ১৫ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন রাহুল।

রাহুলের আক্রমণে ১২ ওভারে ৫৬ রানে ৩টি উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তারপরে হাসারাঙ্গা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দ্রুত রান তুলতে থাকেন। হাসারাঙ্গা ৯ বলে ১৪ রানে ও ধনঞ্জয়া ২০ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থেকে শ্রীলঙ্কার জয় নিশ্চিত করেন।