খেলাধুলা

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নবম আসরের ফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। আজ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড ৫০ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

আগামী ৯ মার্চ দুবাইয়ে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত।

লাহোরে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ রানের সূচনা পায় নিউজিল্যান্ড। জুটিতে ২১ রান অবদান রেখে আউট হন ওপেনার উইল ইয়ং।

দ্বিতীয় উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন রাচিন-উইলিয়ামসন জুটি ১৫৪ বলে ১৬৪ রান যোগ করেন। জুটি গড়ার পথে ৯৩ বলে ওয়ানডেতে পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রাচিন। ক্যারিয়ারের সবগুলো ওয়ানডে শতক আইসিসি ইভেন্টে করেছেন তিনি। আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ সেঞ্চুরির মালিকও এখন রাচিন।

সেঞ্চুরির পর পেসার কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০১ বলে ১০৮ রানে আউট হন রাচিন।

এরপর ড্যারিল মিচেলের সাথে ৩৯ রান যোগ করার পথে ৯১ বলে ওয়ানডেতে ১৫তম সেঞ্চুরি করেন উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরপরই উইয়ান মুল্ডারের শিকার হন তিনি। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯৪ বলে ১০২ রান করেন উইলিয়ামসন।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একই ইনিংসে দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে এটি ষষ্ঠ ঘটনা।

দলীয় ২৫১ রানের মধ্যে রাচিন ও উইলিয়ামসন ফেরার পর নিউজিল্যান্ডকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। পঞ্চম উইকেটে মিচেলের সাথে ৩০ বলে ৫৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ব্রেসওয়েলকে নিয়ে ২২ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়েন ফিলিপস। ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৬২ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।

৪টি চার ও ১টি ছক্কায় মিচেল ৩৭ বলে ৪৯, ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ফিলিপস ২৭ বলে অপরাজিত ৪৯ এবং ১২ বলে ১৬ রান করেন ব্রেসওয়েল।

দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিডি ৩টি ও রাবাদা ২টি উইকেট নেন।

জবাবে ২০ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হবার পর দ্বিতীয় উইকেটে ১০৫ রান যোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার তেম্বা বাভুমা ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি করেন। বাভুমা ৫৬ ও ডুসেন ৬৯ রান করেন।

দলীয় ১৬১ রানের মধ্যে বাভুমা-ডুসেনের বিদায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একাই লড়াই করেন ডেভিড মিলার। সতীর্থরা সঙ্গ দিতে না পারায় ২৫৬ রানে নবম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এসময় অন্যপ্রান্তে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মিলার।

এরপর শেষ উইকেটে লুঙ্গিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর চার-ছক্কার ঝড় বইয়ে দেন মিলার। ইনিংসের ৪৯তম ওভার শেষে তার রান গিয়ে দাঁড়ায় ৮২।

পেসার কাইল জেমিসনের করা শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ১৬ রান তুলে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান মিলার। শেষ বলে ২ রান নিয়ে ওয়ানডেতে সপ্তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

লুঙ্গির সাথে ২৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রান যোগ করে দলের হার এড়াতে পারেননি মিলার। ৯ উইকেটে ৩১২ রান পর্যন্ত যেতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।

মিলার ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৭ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার ৩টি উইকেট নেন।

খেলাধুলা

ভারতকে আড়াইশর মধ্যে আটকে দিয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না নিউজিল্যান্ড। ব্যাটিং ব্যর্থতায় লক্ষ্য থেকে বেশ দূরেই থেমেছে তারা। বরুণ চক্রবর্তীর ঘূর্ণিতে কিউইদের ৪৪ রানে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে ভারত। আর এই হারের ফলে রানার্স আপ হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতের দেওয়া ২৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বেশিরভাগ কিউই ব্যাটার পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পাননি। শুধু অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসন-ই যা একটু লড়াই করেছেন। ১২০ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৮১ রান তুলতে পেরেছেন তিনি।

ভারতীয় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী স্রেফ ৪২ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেছেন। আরেক স্পিনার কুলদীপ যাদব ঝুলিতে পুরেছেন ২ উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল না ভারত। ৩০ রানের মধ্যেই কোহলি, রোহিত ও শুবমান ধরেন সাজঘরের পথ। তবে চারে নেমে শ্রেয়াস আইয়ারের ৭৯, আর হার্দিক পান্ডিয়া (৪৫) ও অক্ষর প্যাটেলের (৪২) চল্লিশোর্ধ্ব দুই ইনিংসে সম্মানজনক স্কোর পায় ভারত। তাদের ব্যাটে চড়ে ৫০ ওভারে ভারত জমা করে ৯ উইকেটে ২৪৯ রান।

কিউই পেসার ম্যাট হেনরিও বরুণের সমান ৪২ রান খরচায় ঝুলিতে পোরেন ৫ উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত কিউইদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ঢাকা পড়ে গেছে হেনরির দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্য।

ভারত-নিউজিল্যান্ডের এই ম্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব। এবার সেমিফাইনালের পালা। আগামী ৪ মার্চ প্রথম সেমিফাইনালে গ্রুপ ‘বি’র রানার্স আপ অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে ভারত। পরদিন (৫ মার্চ) গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবিলা করবে নিউজিল্যান্ড।

এই দুই ম্যাচের জয়ী দল আগামী ৯ মার্চ মেগা ফাইনালে মুখোমুখি হবে।

খেলাধুলা

২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে প্রাইজমানি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল আইসিসি। ২০২৭ সালের আসরের তুলনায় যা ৫৩ শতাংশ বেশি।

সে হিসেবে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে থেকে আসর শেষ করা দুই দল পাবে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। তাদের চেয়ে সপ্তম ও অষ্টম স্থানে থাকা দুই দল প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার ডলার কম পাবে।

এবারের আসরে ইংল্যান্ড হেরেছে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই। তাতে বাংলাদেশের ষষ্ঠ স্থান নিশ্চিত হয়ে গেছে। এতে আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। প্রাইজমানি হিসেবে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ঢুকলো শান্তবাহিনীর পকেটে।

বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের দুটিতে হারের পর তৃতীয়টি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। আর তাতে সমান ১ পয়েন্ট পেলেও রানরেটে এগিয়ে থাকায় স্বাগতিক পাকিস্তানের উপরে ছিল বাংলাদেশ। এদিকে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে অষ্টম স্থানে নেমে গেছে ইংল্যান্ড। তাদের পয়েন্ট শূন্য। ১ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে সপ্তম স্থানে।

আইসিসির ঘোষণা অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়ায় ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার পেতো বাংলাদেশ। এর সঙ্গে সপ্তম হলে আরও ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার মিলতো। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ পেতো ২ লাখ ৬৫ হাজার ডলার বা প্রায় ৩ কোটি ২১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। কিন্তু এখন ষষ্ঠ হিসেবে আসর শেষ করার তারা পাচ্ছে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমান প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার বেশি।

এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর রানার্সআপ দল পাবে ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া দুই দল পাবে ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

খেলাধুলা

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে ভারত। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারায় ভারত।

তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিতে এক পা ভারতের। পাকিস্তান আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে। জবাবে কোহলির অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪২.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে জয় নিশ্চিত করে ভারত।
ভারতের যখন জিততে দরকার ২ রান, তখন সেঞ্চুরি করতে লাগে তার ৪ রান! হতাশ করেননি তিনি। ৪৩তম ওভারের তৃতীয় বলে খুশদিল শাহর ডেলিভারি ঠেলে দিলেন এক্সট্রা কাভার দিয়ে। বল চলে গেলো বাউন্ডারির বাইরে। ভারতের জয় নয়, পুরো মাঠে আনন্দ ছড়িয়ে দিলো কোহলির ৫১তম সেঞ্চুরি। এই হারে পাকিস্তান খাদের কিনারায়। তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচের দিকে। তবে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে হারালেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের।

সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেছেন সৌদ শাকিল। জবাবে খেলতে নেমে ৪২ ওভার ৩ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন বিরাট কোহলি। শচিন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৪ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে রেকর্ড সমৃদ্ধ করা ৫১তম সেঞ্চুরি উপহার দিলেন কোহলি। ৭ চারে ১১১ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা তিনিই।

৩১ রানে ওপেনিং জুটি ভেঙেছিল ভারতের। রোহিত শর্মাকে শুরুতে হারানোর প্রভাব এতটুকু পড়তে দেননি কোহলি ও শুবমান গিল। রোহিত শর্মা ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। তবে ১৫ বলে ২০ রানের বেশি করতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। আরেক ওপেনার শুবমান গিলও একই মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫২ বলে ৪৬ রান। তিনে নেমে এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন বিরাট কোহলি। পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ইনিংসের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি। ১১১ বল খেলে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তাছাড়া শ্রেয়াস আইয়ার করেছেন ৬৭ বলে ৫৬ রান।

এর আগে ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেন ভারতীয় বোলাররা। ছয়জন বোলার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করলেন রোহিত। তিনজন পেসার, বাকি তিনজন স্পিনার। মোহাম্মদ শামির পেসতোপ সামলে নিলেও পাকিস্তান পড়ে কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিপাকে। টিকে থাকার লড়াইয়ে আড়াইশরও কম রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।

খেলাধুলা

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হয়েছে আজ। সবকটি উইকেট খুইয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ২২৮ রানের পুঁজি।

তবে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এই ইনিংসে রেকর্ড গড়া হয়েছে ৬টি। বাংলাদেশ আর ভারত দুই দলই ভাগাভাগি করেছে এই রেকর্ডগুলো।

সে রেকর্ডগুলো এক নজরে দেখে আসা যাক চলুন–

৫১২৬

ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ২০০ উইকেট শিকারি বনে গেছেন মোহাম্মদ শামি। মাত্র ৫১২৬ বল খরচ করে তিনি এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন, যা আগের রেকর্ডধারী মিচেল স্টার্কের চেয়ে কম, তিনি এই রেকর্ড গড়েছিলেন ৫২৪০ বলে।

ম্যাচের হিসেবে অবশ্য স্টার্ককে পেছনে ফেলতে পারেননি শামি। ১০৪তম ওয়ানডেতে এই কীর্তি গড়েছেন, যা তাকে সাকলাইন মুশতাকের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রেখেছে। স্টার্ক ১০২তম ম্যাচে এই রেকর্ড গড়েছিলেন।

১৫৬

ভারতীয় দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ফিল্ডার বিরাট কোহলি ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৫৬টি ক্যাচ নিয়ে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের রেকর্ড ছুঁয়েছেন। ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার তালিকায় তারা এখন যৌথভাবে শীর্ষে। বিশ্ব ক্রিকেটে কেবল মাহেলা জয়াবর্ধনে (২১৮) ও রিকি পন্টিং (১৬০) ওয়ানডেতে তার চেয়ে বেশি ক্যাচ নিয়েছেন।

৫৪৭৬

কুলদীপ যাদব ১০৮ ম্যাচ খেলার পর প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ফ্রন্ট-ফুট নো বল করেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে তার প্রথম ওভারেই এই ঘটনা ঘটে। এর আগে ৫৪৭৬ বল করে তিনি কখনও ফ্রন্ট-ফুট নো বল করেননি।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা মিডল ওভারে (১১-৪০) পর্যায়ে দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ২০০২ সালের পর এটি মাত্র পঞ্চমবারের মতো ঘটনা, যখন ভারত এই ৩০ ওভারে কোনো উইকেট নিতে পারেনি। বাংলাদেশও মাত্র পঞ্চমবারের মতো এই পর্যায় পার করেছে উইকেট না হারিয়ে। তবে ভারত এই ওভারে বাংলাদেশকে মাত্র ১২৬ রানে আটকে রেখেছে।

১৫৪

বাংলাদেশের হয়ে তৌহিদ হৃদয় ও জাকের আলীর ব্যাট থেকে আসে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তারা ১৫৪ রান যোগ করেন, যা ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ। পাশাপাশি এটি বাংলাদেশের ইতিহাসেরও সর্বোচ্চ ষষ্ঠ উইকেট পার্টনারশিপ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসেও ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি।

১০

রোহিত শর্মার ক্যাচ হাতছাড়ার সংখ্যাও আছে আলোচনার কেন্দ্রে। ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ১০টি ক্যাচ ফেলেছেন, যা টম ল্যাথামের (১১) পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই সময়ে রোহিত ২২টি ক্যাচিং সুযোগ পেয়েছেন, যার মধ্যে তিনি ১২টি ক্যাচ নিতে পেরেছেন, সফলতা ৫৪.৫৫%। এটি ২০২৩ সাল থেকে ২০ বা তার বেশি ক্যাচের সুযোগ পাওয়া ২৬ জন ফিল্ডারের মধ্যে সর্বনিম্ন সফলতার হার।

খেলাধুলা

বরিশালে বিপিএলের শিরোপা উদযাপন অনুষ্ঠানে ভাঙচুর-হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) নগরের বেলস পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই মঞ্চের সামনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন বিশৃঙ্খলাকারীরা। এ সময় তাদের কারণে দর্শকদের পাশাপাশি কয়েকজন সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নির্ধারিত সময়ের আগেই ট্রফি প্রদর্শনী দেখতে ভিড় করতে থাকেন বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিকেল ৪টার দিকে বিশৃঙ্খলাকারীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মঞ্চের কাছাকাছি চলে যান।

মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদসহ খেলোয়াড়েরা মঞ্চে উঠলে তারা আরও কাছে যেতে চান। এতে হুড়োহুড়ির দৃশ্য দেখা যায়।

এ সময় বিশৃঙ্খলাকারীদের কারণে সাংবাদিকদের ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি হয়। কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত মঞ্চ ছাড়েন সবাই।

মাই টিভির বরিশাল প্রতি‌নি‌ধি পারভেজ রাসেল জানান, তার বুম ছিনতাই হয়েছে এবং ট্রাইপড ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি মারধরের শিকার হই। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় ‍আছি। নিরাপত্তা ছাড়া ‍এমন অনুষ্ঠান ‍এর ‍আগে বরিশালে দেখিনি।

এখন টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক ‍আমিনুল ‍ইসলাম বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙে গেছে। আমি ও রিপোর্টার অমিত হাসান কোনোমতে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি। জানি না হয়তো ‍আরেকটু হলে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।

এখন টেলিভিশনের রিপোর্টার অমিত হাসান বলেন, ‍আমি হাতে-পায়ে গুরুতর ‍আঘাত পেয়েছি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে ‍এমন ‍আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুঃখজনক।

দেশ টিভির ফটো সাংবাদিক শাহীন সুমন বলেন, কোনোমতে জীবন নিয়ে ফিরেছি। ‍আর ‍একট‍ু হলেই হাত ভেঙে যেত। নিরাপত্তার বিষয়টি লক্ষ রাখা জরুরি ছিল।

যমুনা টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন বলেন, ট্রাইপড ও ক্যামেরা বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি পড়ে যাই। ‍‍একটুর জন্য গুরুতর ‍আহত হইনি। নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

চ্যানেল ২৪ ‍এর ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙেছে। ক্যামের‍া সেভ করতে গিয়ে ‍আহত হয়েছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

তবে বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বরিশালের বিপিএল ট্রফি ও খেলোয়াড়দের দেখতে পেরে খুশি ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাদের দাবি, আগামীতে যেন বিপিএলের ম্যাচ বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়।

সাব্বির নামে ‍এক দর্শক বলেন, বড় অনুষ্ঠানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। নারী দর্শকদের হেনস্তা করা হয়েছে। ‍আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‍আরও কঠোর হওয়া ‍উচিত ছিল।

নাবিলা নামে এক নারী দর্শক জানান, যা হয়েছে তা দুঃখজনক। তবে আগামীতে বিপিএল খেলা যেন বরিশালের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, সেই দাবি থাকবে।

ফরচুর বরিশালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান জানান, জাতীয় দল, বিদেশি খেলোয়াড়সহ ২২ জন এবং টিম ম্যানেজার, কোচসহ আরও ৪০ জনের একটি দল বরিশালে এসেছে।

তবে বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে কল কেটে দেন তিনি। পরে ‍আবারও কল দিলে আর ধরেননি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রত‌্যাশার চেয়ে দর্শক বে‌শি হয়েছে এবং দর্শকদের উৎসাহে আমাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। পু‌লিশের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভা‌বিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, তারপরও কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।

খেলাধুলা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের পর্দা নামছে আগামীকাল। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ফাইনাল ম্যাচটি। এবারের ফাইনালে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

অতীতের তুলনায় এবার প্রাইজমানি ২ কোটি টাকারও বেশি বাড়ছে। গত বছর চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল পেয়েছে দুই ও এক কোটি টাকা করে। এবার পাবে আড়াই ও দেড় কোটি টাকা করে।

আগামীকালকের ফাইনালের সেরা ক্রিকেটার পাবেন ৫ লাখ টাকা। টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের জন্য থাকবে ১০ লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার। টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তারকা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

গতবারের মতো এবারও আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পাবেন ৫ লাখ টাকা। এক সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে ৫১১ রান করা নাঈম শেখ অনেক এগিয়ে আছেন ফাইনালে ওঠা দুই দলের ব্যাটসম্যানদের চেয়ে।

প্রথম পর্বে বাদ পড়া দুর্বার রাজশাহীর হয়ে ২৫ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়ে তিনিই সেরা বোলার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে।

টুর্নামেন্টের সেরা ফিল্ডার পাবেন ৩ লাখ টাকা। ১২ ম্যাচে ১৩ ক্যাচ নিয়ে এই পুরস্কারে এগিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক আরিফুল হক।

এবারই প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ইমার্জিং ক্রিকেটার অব দা টুর্নামেন্ট পুরস্কার। যার জন্য থাকছে ৩ লাখ টাকা।

খেলাধুলা

ভোরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল। তবে প্রতিশোধ নিতে খুব বেশি সময় নেয়নি ছোটরা।

নারীদের অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে ক্যারিবীয় মেয়েদের রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বৃষ্টির কারণে ৭ ওভার কমে যাওয়া এই ম্যাচে তারা কেবল ৫৪ রান করতে পারে; ৬ উইকেট হারিয়ে। এই রান তাড়া করতে নেমে ৮.৫ ওভার লাগে বাংলাদেশের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ব্যাট হাতে বেশিক্ষণ অবশ্য লড়তে পারেননি কেউই। নিশিতা আক্তার নিশি ও আনিসা আক্তার সোবার দারুণ বোলিংয়ে দ্রুতই উইকেট হারাতে থাকে তারা। ৬ উইকেটের মধ্যে স্রেফ তিন জন স্পর্শ করেছেন দুই অঙ্ক। আম্রিতা রামতাহাল ১৬, নাইজান্নি কাম্বারব্যাচ ১৩ ও আসাবি ক্যালেন্ডার করেন ১১ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন নিশি। সমান ওভারে ১৩ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন সোবা। ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে এক উইকেট নেন জান্নাতুল মাওয়া।

রান তাড়ায় নামা বাংলাদেশ ব্যাট হাতেও দেখায় দক্ষতা। উদ্বোধনী জুটিতেই তারা নিশ্চিত করে ফেলে জয়। যদিও তাড়াটা হয় ধীরগতির। ২৮ বলে ৩ চারে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন জুরাইয়া ফেরদৌস। ২৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন ফাfcহমিদা ছোঁয়া।

খেলাধুলা

এক সময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মতো তারকা ক্রিকেটারকে ছাড়িয়ে গেলেন তাসকিন আহমেদ।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের নতুন রেকর্ড গড়ার পথে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যান তাসকিন।

সাকিবের রেকর্ড ছুঁতে তাসকিনের আজ প্রয়োজন ছিল স্রেফ একটি উইকেট। সাকিবের রেকর্ড নিজের করে নিতে তাসকিনের প্রয়োজন ছিল ২ উইকেট। প্রথমটি করতে তাসকিন আহমেদের লাগল কেবল চারটি ডেলিভারি।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে জায়গা করে নিলেন তাসকিন। ম্যাচের শেষ দিকে ছাড়িয়ে গেলেন সাকিবকে। বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড এখন দুর্বার রাজশাহীর পেসারের।

রোববার মিরপুরে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে স্টিভেন টেইলরের উইকেট নিয়ে সাকিবের রেকর্ডটি স্পর্শ করেন তাসকিন। পরে রকিবুল হাসানকে এলবিডব্লিউ করে সাকিবকে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছান তাসকিন। এবারের বিপিএলে তার উইকেট এখন ২৪টি।

২০১৯ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। তাকে ছাড়িয়ে যেতে তাসকিনের লাগল কেবল ১১ ম্যাচ।

এক আসরে ২২ উইকেট নেওয়ার নজির আছে ছয়টি। সেখানে আছেন তাসকিনও। ২০১৯ বিপিএলে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি সিলেট সিক্সার্সের হয়ে।

এই কৃতিত্ব প্রথম দেখিয়েছিলেন কেভন কুপার। ক্যারিবিয়ান এই পেসার ২০১৫ বিপিএলে বরিশাল বুলসের হয়ে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ৯ ম্যাচ খেলেই।

পরে ২০১৭ বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট নেন সাকিব, ২০১৯ আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ২২টি নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, একই আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের রুবেল হোসেন ২২ উইকেট নেন ১৫ ম্যাচে। সবশেষ গত বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেটের দেখা পান শরিফুল ইসলাম।

দেশি ম্যাজিকে রাজশাহীর জয়

বিদেশিবিহীন দল নিয়ে খেলতে নেমে টেবিল টপার রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। মিরপুরে দুই দলের লো স্কোরিং ম্যাচ উত্তাপ ছড়িয়েছে। রাজশাহীর দেওয়া ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে ব্যাট করা রংপুরকে শেষ ওভারে ২৫ রান তুলতে হত। কিন্তু সে ওভারে তিন ছক্কা হাঁকিয়েও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ২ রানের জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে রাজশাহী।

বিপিএলে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ১২০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই থরহরি কম্প অবস্থা রংপুরের। দলীয় রান ৫০ ছোঁয়ার আগেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে দলটি। তবে শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বীরত্বে লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয় তারা।

অবশ্য শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫২ রানের লড়াকু এক ইনিংস খেলেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি সাইফ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১১৭ রানেই থামতে হয় তার দলকে।

রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ৪ ওভার বল করে এক মেডেনসহ ১৮ রান খরচায় ৪ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ ও মোহর শেখ।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহীকেও ভুগতে হয়েছে। রংপুরের দুই স্পিনার খুশদিল শাহ এবং রাকিবুল হাসানের ঘূর্ণিতে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৯ রানে আটকে যায় তারা। প্রথম সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে স্পিনার সানজামুল ইসলামের ব্যাটে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই রান তুলতে গিয়েই নাভিশ্বাস ছুটেছে রংপুরের।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে রাজশাহী। ১১ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ১০। আর ১০ ম্যাচ থেকে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শীর্ষেই আছে টানা আট জয়ের পর ব্যাক-টু-ব্যাক হারের মুখ দেখা রংপুর।

খেলাধুলা

লড়াইটা ছিল পয়েন্ট টেবিলের ছয় আর একের মাঝে। যদিও ৩১তম ম্যাচে এসে প্রথমবার মুখোমুখি হয় দুদল। আর তাতেই জয়রথে ছোটা রংপুর রাইডার্সের লাগাম টেনে থামিয়ে দিল দুর্বার রাজশাহী। তাসকিন আহমেদদের বিপক্ষে ২৪ রানে হেরে টানা ৮ ম্যাচ পর প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেল নুরুল হাসান ব্রিগেড।

ঢাকার পর সিলেট হয়ে এখন চট্টগ্রাম— সবখানেই চলছিল রংপুরের জয়রথ। বিপিএলে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচের সবকটিতে জিতেছে রাইডার্সরা। প্লে অফও নিশ্চিত করে বসেছে। অন্যদিকে শেষ চারের আশা বাঁচানোর লড়াই ছিল টেবিলের ৬ নম্বরে থাকা রাজশাহীর।

বৃহস্পতিবার ৯ উইকেট হারিয়ে তারা তুলেছে ১৭০ রান। তাতে টানা নবম জয় পেতে তাসকিনদের বিপক্ষে ওভারপ্রতি ৯-এর কাছাকাছি রান তুলতে হবে রাইডার্সদের।

টস হেরে এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী অবশ্য ভালো শুরু পায়নি। তাদের ২৪ রানের জুটি ভাঙেন স্পিনার রকিবুল হাসান। এরপর সাব্বির হোসেন ও ইয়াসির আলী রাব্বির সঙ্গে দুটি ভালো জুটি গড়েন নেতৃত্ব হারানো এনামুল হক বিজয়।

এর মধ্যে সাব্বির ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে মাত্র ১৯ বলে ৩৯ করে আউট হলেও ঝোড়ো ফিফটি তুলে নেন পাঁচে নামা ইয়াসির আলী রাব্বি। সাব্বিরের তাণ্ডব ফুরানোর পর ইয়াসির আলী খেলেন ছয় ছ্ক্কার ইনিংস। ৩২ বলে ৬ ছক্কা ও ২ চারে ইয়াসির করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬০ রান।

আর এ দুজনের সঙ্গে যথাক্রমে ৫২ ও ৭৫ রানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়া এনামুল হক করেন ৩১ বলে ৩৪। তবে বাকি সবাই ধুঁকেছেন। ইয়াসির-সাব্বির-এনামুলের ব্যাটেই মূলত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান জমা করে রাজশাহী।

রংপুরের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন খুশদিল শাহ ও আকিভ জাভেদ। একটি করে শিকার রকিবুল ও নাহিদ রানার।

এদিকে টানা নবম জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নুরুল হক সোহানের রংপুর রাইডার্স। তাসকিন-মেহরব-বার্লদের বোলিংয়ের সামনে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে দলটি শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে সাইফ হাসানের ব্যাট থেকে। এছাড়া অধিনায়ক সোহান করেন ২৬ বলে ৪১ রান। তবে তাতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে রংপুর।

রাজশাহীর হয়ে এদিন তাসকিন ও মেহরব শুরুটা করে দিলেও শেষটা করেন রায়ান বার্ল। ব্যাট হাতে এদিন শুন্যতে ফিরলেও বল হাতে মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। তাতেই মূলত ৪ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে গেছে প্রতাপশালী রংপুর।

অন্যদিকে ২৪ রানে জিতে ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে উঠে বসল এনামুল-তাসকিনের দল।