জাতীয়

আগামীকাল রবিবার থেকে সারাদেশে একযোগে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। দেশের এক হাজারের বেশি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে।

প্রথম দিন টিকা নেবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।

রবিবার যারা টিকা পাবেন তাদের মোবাইল ফোনে আজ এসএমএস যাবে। টিকা নিতে তিন লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন। টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ২ হাজার ৪০২টি দল। নিবন্ধন না করলেও কেন্দ্রে এসে টিকা নিতে পারেন এমন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। আগে নিবন্ধন না করা টিকাগ্রহীতার সব তথ্য রেখে দেওয়া হবে, স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে তা ডেটাবেইজে তুলে দেবেন।

এর আগে ২৭ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি উপস্থিতিতে বাংলাদেশে প্রথম টিকা নিয়েছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এর পর থেকে মন্ত্রী, চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন।

ক্রয়চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এই টিকা আনা হচ্ছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে। বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আনছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এর আগে ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ করোনা টিকা উপহার দেয় ভারত।

জাতীয়

করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩০৫ জন।

শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতর এক বুলেটিনে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৩০৫ জনকে নিয়ে দেশে আক্রান্তে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭০ জন। আরও আটজনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার ১৯০ হয়েছে।

গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪১৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৪১ জন হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। সে হিসাবে কোভিড-১৯ শনাক্তের ৩১১তম দিন পার করছে বাংলাদেশ।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। এটি বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ মার্চ কোভিড ১৯-কে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

জাতীয়

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ফেডারেল সরকার পর্যায় থেকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে চিঠি দিয়েছেন এমপি ডলি বেগম। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ডলি ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফেসবুকে কানাডার নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ডলি বেগম জানান, একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশিদের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন নয়, বরং বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় একুশে এক বিশাল প্রেরণা। ১৯৫২ তে বাংলাদেশের মানুষ বুকের রক্তে যে ইতিহাস রচনা করেছেন, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন, সে ইতিহাসেরই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। পুরো কানাডা জুড়ে বাংলাদেশিসহ নানান ভাষার মানুষ স্মৃতিকথা, কবিতা, গান, নাচসহ শিল্প আর সাহিত্যের নানান উপাদানের সমন্বয়ে এ দিনটি উদযাপন করেন।

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ফেডারেল সরকার পর্যায় থেকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে একটি অনুরোধপত্র পাঠিয়েছি। আমি ফেডারেল মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার এবং নাথানিয়েল আরস্কিন-স্মিথের কাছেও আমার এ অনুরোধের প্রতি সমর্থন চেয়ে চিঠি দিয়েছি। ২০১৪ সালে তৎকালীন এমপি ম্যাথিউ কেলওয়ে ফেডারেল পর্যায় থেকে একুশের এ স্বীকৃতি চেয়ে অটোয়া পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব এনেছিলেন। আমি আশাবাদী যে এ বছর কানাডা সরকার এ গুরুত্বপূর্ণ দিনটিকে কানাডাজুড়ে স্বীকৃতি দেবেন।

জাতীয়

মানব ও অর্থপাচারের দায়ে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি শহীদ ইসলাম পাপুলের সাজা নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে সরকার। পাপুলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও সাজার বিষয়ে বারবার কুয়েত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো দেশটি কোনো তথ্য দেয়নি।

সে কারণে বাংলাদেশ সরকারকে শুধু গণমাধ্যমের তথ্যের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে।

এমপি শহীদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতারের পরেই তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কুয়েত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কুয়েতে বাংলাদেশের দূতাবাস ও ঢাকার কুয়েত দূতাবাসের মাধ্যমে পাপুলের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া এমপি পাপুলের সাজা হওয়ার পর কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেশটির সরকারের কাছে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। তবে এখনো কুয়েত সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য মেলেনি।

সূত্র জানায়, এমপি পাপুলের গ্রেফতার ও সাজা নিয়ে শুধু গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকেই তথ্য জানতে পেরেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে সেই তথ্যের উপর নির্ভর করেই পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোনো এমপি ফৌজদারি আদালত থেকে দুই বছর সাজাপ্রাপ্ত হলে তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। এমপি পাপুল কুয়েতের ফৌজদারি আদালত থেকে চার বছর সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সে অনুযায়ী তারও সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। এখন কুয়েত সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতের রায়ের কপি পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এমপি শহীদ ইসলাম পাপুলের বিষয়ে কুয়েত সরকারের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পাওয়া গেলে সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেই তথ্য জাতীয় সংসদে পাঠানো হবে। সংসদই তখন পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এমপি পাপুলের বিষয়ে কুয়েত সরকারের কাছ থেকে আমরা এখনো অফিসিয়াল কোনো তথ্য পাইনি। তাদের কাছ থেকে অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া গেলে সেটা আমরা আমাদের পার্লামেন্টকে দেবো, আমাদের সরকারকে জানাবো। তখন যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সেখানে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য বলেছি। তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

এমপি পাপুলের বিষয়ে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এ বিষয়ে আমরা তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। কুয়েতে আমি নিজেও কথা বলেছি। দেখা যাক।

২৮ জানুয়ারি কুয়েতের ফৌজদারি আদালত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি শহীদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। একই সঙ্গে তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল (৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা) জরিমানা করা হয়। কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল ওথমান পাপুলের সঙ্গে সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা মাজেন আল জারাহকেও চার বছরের কারাদণ্ড ও ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল জরিমানা করেন।

মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে গত বছর ৬ জুন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি শহীদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। তিনি তারপর থেকেই সে দেশের কারাগারে আটক ছিলেন। ছয় মাস বিচার প্রক্রিয়া শেষে তাকে ওই সাজা দেয়া হয়।

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাসের ধাক্কায় তিন পথচারী নিহত হয়েছে। দুই বাসের মধ্যে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতার এক পর্যায়ে একটি বাসের ধাক্কায় তারা প্রাণ হারান।

শুক্রবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- কাঁচপুর রায়েরচেক এলাকার ফজল করিমের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (২০), রংপুরের কোতয়ালী থানার শ্যামপুর গ্রামের প্রয়াত মুকুলের ছেলে ওহিদুল (৩২) ও চাঁদপুরের উত্তর মতলব থানার উদমদি গ্রামের প্রয়াত নকুল সরকারের ছেলে সজীব সরকার (২৮)। ওহিদুল ও সজীব সরকার কাঁচপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেনে শুক্রবার সকালে আগে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় বোরাক পরিবহন ও হোমনা সুপার সার্ভিসের দুটি বাস। এক পর্যায়ে বোরাক পরিবহনের বাসটি কাঁচপুর ওভারব্রিজের ঢালুতে থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছিল। এ সময় হঠাৎ হোমনা সুপার সার্ভিসের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বোরাক পরিবহনের বাসের পেছন দিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তা পারাপারের জন্য বোরাক পরিবহনের বাসটির পেছনে থাকা তিন পথচারী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এলাকাবাসী বাস দুটিকে আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, বাস দুটি আটক করা হয়েছে। চালক ও হেলপার পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ হাজার ১৮২ জন। নতুন করে ৪৩৫ জন শনাক্তসহ দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৫ জন।

শুক্রবার দুপুরে করোনা ভাইরাসের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫০৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৮২ হাজার ৪২৪ জন।

এর আগের দিনে বৃহস্পতিবার দেশে আরও ৪৮৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান ১৩ জন। সেই তুলনায় আজ করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে কয়েক ধাপ বাড়ানোর পর ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ছিল। সেই ছুটি ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

জাতীয়

লঞ্চ দুর্ঘটনা থেমে নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চালকদের অচেতনতায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারপরেও মাঝ নদীতে থেমে নেই তাদের ভয়ঙ্কর এ প্রতিযোগিতা। সম্প্রতি হাজারো যাত্রী নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিযোগিতায় নামে দুটি লঞ্চ। এ যেন এক মরণ খেলা।

ভোলা থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসার পথে পোস্তগোলা সেতুর কাছে নদীতে এম ভি ইয়াদ ও এমভি শ্রীনগর লঞ্চ দুটি কে কার আগে যাবে তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেখে বিকট শব্দে নারী ও শিশু যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটলেও নৌ পুলিশ দেখেও কখনও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ।

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীসহ দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের ১৭টি নদীতে লঞ্চ চালকরা এ ধরনের প্রতিযোগিতা করেন বলে অনেক লঞ্চ যাত্রীরা অভিযোগ।

পিরোজপুর জেলার কাউখালী এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা জর্জ কোটের সিনিয়র আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, তিনি প্রায়ই অবসরে বাড়িতে যান। যাওয়া-আসার সময় লঞ্চে এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেখে লঞ্চের মাষ্টারদের অনুরোধে জানিয়েও কোনো ফল পাননি।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীসহ দেশের সকল নদী এখন পুলিশের অধীনস্থ। তাই থানা পুলিশের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওই ধরনের চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল নৌ পুলিশের অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোরশেদ তালুকদার জানান, যাত্রী ও এলাকাবাসী একাধিক অভিযোগ করেছে। নৌ পুলিশ সদরঘাট টার্মিনাল প্রায়ই চালদের মাইকিং করে সর্তক করলেও চালকরা বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না।

তিনি জানান, এ ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে গত ২৫ জানুয়ারি টার্মিনাল ট্রাফিক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ লঞ্চ মালিক সমিতির যাত্রী কল্যাণ সমিতির নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনেরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে যদি লঞ্চ চালকরা সতর্ক না হয় তখন নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ অভিযুক্ত চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

জাতীয়

১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শুধু ঢাকার স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাক থেকে জানা যায়, সেদিন প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল-কলেজের ছাত্ররা ঐ কর্মসূচি পালন করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রগণ এই প্রদেশের বর্ণভাষার আত্মনিয়ন্ত্রণের ওপর খাজা নাজিমুদ্দিনের স্বেচ্ছাচারী আক্রমণের প্রতিবাদে শুধু একটা ছাত্র-হরতালের মহড়ার আহ্বান করিয়াছিল। সেই মহড়াই প্রদেশের সর্বত্র শোভাযাত্রা ও সংগঠনে রূপান্তরিত হইয়াছে।’

৪ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলছিল ২১ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদ-দিবস পালনের প্রস্তুতি। অলি আহাদের এক লেখা থেকে জানা যায়, ৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির অফিস ১৫০ মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এই সভা অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজনে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১২ ফেব্রুয়ারি কোনো কর্মসূচি না থাকলেও টানা তিন দিন ধরেই চলে এ কর্মসূচি। এতে টাকা খুব বেশি সংগ্রহ না হলেও পতাকা দিবসকে সামনে রেখে আরো নতুন নতুন কর্মী এসে যুক্ত হতে থাকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে। সে সময় ৫০০ পোস্টার লেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নাদিরা বেগম ও ডা. সাফিয়াকে। তারা তাদের বান্ধবী ও অন্যান্য ছাত্রীদের নিয়ে পোস্টার লেখার ব্যবস্থা করেন।

২১ ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভের প্রস্তুতি কেবল ঢাকা শহরে নয়, সমগ্র পূর্ব বাংলায় চলতে থাকে। ৫ ফেব্রুয়ারি নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের জরুরি অধিবেশন হয়। এতে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আপসহীন সংগ্রাম পরিচালনার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আবেদন জানানো হয়।

১৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে সভা, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠানের সংবাদ দেওয়া হয়েছে। বেশকিছু স্থানে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ টানাটানি চলে এই ধর্মঘট পালন নিয়ে। মাদারীপুরের ছাত্রছাত্রীরা ধর্মঘট ও মিছিল করে।

বরিশালের রাজাপুর নিজামিয়া হাইস্কুলের ছাত্ররা কেন্দ্রীয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের আহ্বানে এ হামিদের সভাপতিত্বে সভা করে। নীলফামারীতে হরতাল পালিত হয়। সাধারণ জনগণ ও ছাত্ররা রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে শহরে মিছিল করে। খয়রাত হোসেন, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, জবানউদ্দিন আহমদ মিছিলের পুরো ভাগে ছিলেন। ছাত্র জাকিউল আলমের সভাপতিত্বে বিরাট জনসভা হয়। খয়রাত হোসেন ছাড়াও ছাত্রনেতা সুফিয়ার, এনায়েতুর রহমান, আনোয়ার, সুফিয়া, ফিরোজা বেগম ও রাহেলা বক্তৃতা করেন।

 

জাতীয়

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিককে এবছর একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (অনুষ্ঠান) অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ২১ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।

ভাষা আন্দোলনে অবদান থেকে শুরু করে সঙ্গীত, অভিনয়, আলোকচিত্র, চারুকলা, মুক্তিযুদ্ধ, গবেষণা, শিক্ষা, ভাষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক এই পদক যারা পাচ্ছেন, তারা হলেন: ভাষা আন্দোলনের জন্য মরহুম মোতাহার হোসেন তালুকদার (মোতাহার মাস্টার) (মরণোত্তর), মরহুম শামছুল হক (মরণোত্তর), মরহুম আফসার উদ্দীন আহমেদ (মরণোত্তর), সংগীতে বেগম পাপিয়া সারোয়ার, অভিনয়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ ও সালমা বেগম সুজাতা (সুজাতা আজিম), নাটকে আহমেদ ইকবাল হায়দার, চলচ্চিত্রে সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী, আবৃত্তিতে ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, আলোকচিত্রে পাভেল রহমান, মুক্তিযুদ্ধে গোলাম হাসনায়েন, ফজলুর রহমান খান ফারুক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুমা সৈয়দা ইসাবেলা (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় অজয় দাশগুপ্ত, গবেষণায় অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা, শিক্ষায় বেগম মাহফুজা খানম, অর্থনীতিতে ড. মির্জা আবদুল জলিল, সমাজসেবায় প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান এবং ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী রোজী, বুলবুল চৌধুরী ও গোলাম মুরশিদ।

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে আগামী ১৭ মার্চ ২৬তম ঢাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২১ উদ্বোধনের জন্য একটি প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই ১৭ মার্চ পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে উদ্বোধন হবে এক মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

ইপিবি সূত্র জানায়, প্রতিবছর ইংরেজি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হয়। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ আসায় এবারের মেলা মার্চে শুরুর প্রস্তাব এসেছে। সবকিছু বিবেচনা করে আগামী মার্চে পূর্বাচলে স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনলাইনে এবং শারীরিক উপস্থিতি- উভয় পদ্ধতিতে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ইপিবি এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনার জন্য এবার আমরা জানুয়ারিতে মেলা আয়োজন করতে পারছি না। তবে আনন্দের কথা হলো বাণিজ্যমেলার নিজস্ব কমপ্লেক্স বা বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজন করতে পারবো। আমাদের মেলা স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ মেলা উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়ে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আমরা সে লক্ষ্য সামনে নিয়ে মেলার কাজ করে যাচ্ছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তিনি সিদ্ধান্ত দিলে ১৭ মার্চ ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা উদ্বোধন করা হবে।

এছাড়া এবছর করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাণিজ্যমেলা সীমিত পরিসরে অনলাইন ও শারীরিক উপস্থিতি- উভয় পদ্ধতিতেই আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়ালি হস্তান্তর এখনো হয়নি, তবে আনঅফিসিয়ালি হস্তান্তর হয়ে গেছে। আমাদের সবকিছু রেডি। কীভাবে হস্তান্তর করবে সে বিষয়ে চায়না দূতাবাস একটি প্রস্তাব দিয়েছে। সেটা বিবেচনা করছি।

এখন বাণিজ্যমন্ত্রী যেদিন সময় দেবেন সেদিন আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর করা হবে। আশা করছি শিগগিরই হস্তান্তর হয়ে যাবে।

ইপিবি সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পরিবর্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণখালীর বাগরাইয়াটে (পূর্বাচলে) ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’-এ মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে।

পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে বাণিজ্যমেলা করার জন্য সরকারের কাছে ৩৮ একর জমি চেয়েছিল ইপিবি। তারমধ্যে মাত্র ২৬ একর জমি দেওয়া হয়েছে। আরো ১২ একর জমি শিগগিরই দেওয়া হবে। ২০ জমির উপর এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণকাজ শেষ। আর ৬ একর জমিতে ওয়্যারহাউজ, পাওয়ার প্ল্যান্ট, স্থায়ী ফুড সেন্টার ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাসহ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা যায়, চীনের অনুদানে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ এবং সরকারি তহবিলের ১৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। পরে বাস্তবতার নিরিখে অতিরিক্ত ১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সেন্টারের পরিসর বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে ১৭০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার বুঝে পাওয়ার কথা ছিল। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরও চায়না প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকতার জন্য এখনও সেটি বুঝে পায়নি সরকার। তবে ২০০৯ সালে নেওয়া এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সময় গিয়ে দাঁড়ায় ১২ বছরে।

গত ২৫ বছরে ধরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অস্থায়ী জায়গায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী এ মেলা উদ্বোধন করেন। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের জন্য মেলা দুই মাস পিছিয়ে মার্চে উদ্বোধন করা হতে পারে বলে জানা যায়।