জাতীয়

আগামী সোমবারের মধ্যে ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থানে’ শহিদদের তালিকা তৈরি করে পরবর্তী ক্যাবিনেটে পাঠানো হবে। তবে এ তালিকা সর্বশেষ তালিকা নয়। এখনো তথ্য যাচাই-বাছাই ভেরিফিকেশনের কাজ চলছে। পরবর্তীতে আরও শহিদদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেলে সেটাও তালিকায় এনে ক্যাবিনেটে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা ও শহিদের পরিবারের পুনর্বাসন বিষয়ে সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা খন্দকার জহিরুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ৮৫৯ জন শহিদের ভেরিফায়েড তথ্য আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট থেকে পেয়েছি। এটা যদিও চূড়ান্ত নয়। এ ব্যাপারে কাজ অব্যাহত আছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান জানান, হাসপাতালে আহত রোগীদের খাবারের মানোন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধির ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি, বরাদ্দ বৃদ্ধিতে খাবারের মানে দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাবে। এ ছাড়া সব হাসপাতালে পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনো অবস্থাতেই রোগীদের যেন নিজের টাকা খরচ করে চিকিৎসার জন্য কিছু কিনতে না হয়।

সভায় অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা, শহিদ ও আহতদের তালিকা চূড়ান্তকরণ, শহিদের পরিবার ও আহত রোগীদের পুনর্বাসন, পুনর্বাসনের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম জানান, এ পর্যন্ত ৫২৫ শহিদ পরিবার এবং ১ হাজার ৪১০ জন আহতকে ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. সারোয়ার বারী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. নাজমুল হোসেন প্রমুখ।

জাতীয়

তিন কিশোর খেলনা পিস্তল নিয়ে কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংক লুট করতে এলেও তাদের আচরণ ছিল পেশাদার ডাকাতের মতো। ব্যাংকের ভেতরে থাকা লোকজন আসল পিস্তল ভেবে প্রাণভয়ে কেউ প্রতিরোধে এগিয়ে আসেননি।

আত্মসমর্পণের পর ওরা অস্ত্রগুলো পুলিশের হাতে জমা দেওয়ার পর খেলনা পিস্তলের বিষয়টি জানাজানি হয়।

বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংক ডাকাতির সময় ভেতরে ডাকাতদের হাতে ৬ জন গ্রাহক, এক শিশু ও ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় পৌনে চার ঘণ্টা জিম্মি অবস্থায় ছিলেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ডাকাতরা আত্মসমর্পণ করলে মুক্তি পান জিম্মিরা।

জিম্মি থাকা গ্রাহকদের একজন চুনকুটিয়ার বাসিন্দা বাবুল খান। পেশায় তিনি বাড়িঘর নির্মাণের কন্ট্রাকটরের কাজ করেন। শুক্রবার বিকালে তিনি জিম্মি অবস্থার বর্ণনা দেন এই প্রতিবেদকের কাছে।

তিনি বলেন, বেলা পৌনে ২টার দিকে এক লাখ টাকা জমা করতে ব্যাংকে যাই। দুপুরের দিকে তেমন ভিড় ছিল না। আমিসহ মাত্র ৬ জন গ্রাহক। একজনের সঙ্গে ছোট একটা বাচ্চা। টাকাগুলো ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিয়েছি, এমন সময় তিনজন লোক ব্যাংকে ঢুকে পড়ে। সবার মুখমণ্ডল ঢাকা। এ সময় ভেতরে থাকা ব্যাংকের একজন গার্ড পা পিছলে মেঝেতে পড়ে যান। একজন তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। সবাইকে চুপচাপ থাকতে বলে। এলার্ম বাজাতে নিষেধ করে।

বাবুল খান বলেন, এ সময় ভয় আর আতঙ্কে সবাই অস্থির হয়ে পড়েন। অনেকেই কান্নাকাটি করতে থাকেন। এরপর সবাইকে এক জায়গায় এনে ফ্লোরে বসিয়ে দেয়। সবার মোবাইল নিয়ে নেয়। এর পর সঙ্গে করে আনা ৩টি ব্যাগে ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৫০ লাখ টাকার মতো ভরে কাঁধে ঝুলিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে এসব ঘটে যায়।

বাবুল খান আরও বলেন, এদিকে ব্যাংক ডাকাতির বিষয়টি বাইরে জানাজানি হয়ে গেলে মাইকে ঘোষণা করা হয়। এলাকাবাসী ব্যাংক ঘিরে ফেলে বাইরে থেকে ব্যাংকের গেট তালাবদ্ধ করে দেন। এতে ডাকাতরা ব্যাংকের ভেতর আটকা পড়ে। তবে এ সময় ওদের বিচলিত হতে দেখা যায়নি। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত হলেও ওরা নির্বিঘ্ন ছিল। ওরা বলছিল পুলিশ আমাদের কিছুই করতে পারবে না। তবে যখন সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়, তখন ওরা মনোবল হারিয়ে ফেলে। কাঁধ থেকে টাকার ব্যাগ নামিয়ে মেঝেতে রাখে।

তিনি বলেন, এ সময় ওরা অস্থির হয়ে পড়ে। এদিকে ব্যাংকের একজন অফিসারের মোবাইলে ফোন এলে সেই ফোন দিয়ে ওরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে। এভাবে কয়েক ঘণ্টা কেটে যায়। এ সময় দুজন গ্রাহক টয়লেট ব্যবহার করতে চাইলে ওরা অস্ত্রের মুখে তাদের অনুমতি দিয়েছে। একজন নারী কর্মকর্তা অনেক কান্নাকাটি করছিল। তাকেও তারা ক্ষতি করবে না বলে আশ্বস্ত করে কান্না থামাতে বলে। একপর্যায়ে একটি ব্যাগে ১৫ লাখ টাকা ভরে সেটা নিয়ে ওরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

বাবুল খান বলেন, আমরা ওদের চেহারা দেখতে পারিনি। তবে কণ্ঠস্বর ও শারীরিক গঠন দেখে বুঝতে পারছিলাম এরা কিশোর বয়সের।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলছেন, এ ঘটনায় আমরা জিম্মি লোকজনের সেফটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অভিযান চালিয়েছি। আটকে পড়ার পর মোবাইলে ওদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়। আমরা সময় নিয়েছি, নানাভাবে বুঝিয়ে ওদের কনভিন্স করেছি। ওদের দাবি আমরা জানতে চেয়েছি। ওরা ১৫ লাখ টাকা ও নিরাপদ প্রস্থান দাবি করে। আমরা রাজি হই। ওরা ১৫ লাখ টাকা ব্যাগে ভরে সঙ্গে নিয়ে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় ওই টাকা ও ওদের প্যান্টের পকেট থেকে আরও ৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। আত্মসমর্পণের পর তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এসপি বলেন, ব্যাংক লুটের বিষয়টি পরিকল্পিত ছিল। গ্রেফতার ৩ জনের মধ্যে দুজনের বয়স ১৬। একজনের ২২। ওদের কাছ থেকে উদ্ধার করা পিস্তলগুলো ফেক (খেলনা) ছিল। এদের দুজন ব্যাংকের আশপাশেই বসবাস করে। কাছাকাছি হওয়ায় ওরা এই ব্যাংকে টার্গেট করে।

তিনি বলেন, কিশোর অ্যাডভেঞ্চার ও ফ্যান্টাসি থেকে তারা এমনটা করেছে। এ ঘটনার আগে তারা বিভিন্ন মুভি ও অনলাইনে ভিডিও দেখেছে। জিজ্ঞাসাবাদে ওরা জানিয়েছে- একজন রোগীকে সাহায্য করতে ও আইফোন কিনতে তারা ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা করে। রোগীকে সহায়তা করার বিষয়টি আমরা এখনো যাচাই করতে পারিনি।

এদিকে রূপালী ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মাহমুদ বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, আসামিদের মধ্যে দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। শুক্রবার তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের গাজীপুরে কিশোর সংশোধনালয়ে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি প্রাপ্তবয়স্ক (২২ বছর)। তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ব্যাংকের ম্যানেজার শেখর মণ্ডল বলেন, ব্যাংকের সব টাকা গুনে দেখা হয়েছে। এক টাকাও খোয়া যায়নি। রোববার থেকে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।

জাতীয়

শীত মৌসুমে বাজারে সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এতে কমতে শুরু করেছে দাম। তবে এ রাজধানীর খুচরা বাজার দু-একটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা হলেও বেশিরভাগ সবজি ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু সবজির দাম এখনো ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। এতে সবজি কিনতে এখনো অস্বস্তিতে রয়েছে ক্রেতা। তবে সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। কেজিপ্রতি করলা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি পিস ফুলকপি ৩০-৪০ ও বাঁধাকপি ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর প্রতি কেজি নতুন টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, মুলা ৩০ টাকায়, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, গাজরের কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬৫-৭০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পটোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, আর কাঁচা টমেটো বাজারভেদে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, শিম (বিচিওয়ালা) প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শিম (বিচি ছাড়া) প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, শীত এলে সবজির দাম অনেক কম থাকে। গত সপ্তাহের তুলনায় মূল্য কিছুটা কমলেও এখনো বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সরবরাহ থাকলেও বিক্রেতারা বাড়তি দর হাঁকাচ্ছেন।

একই বাজারে সবজি বিক্রেতা মো. আমিন বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবজি আসতে শুরু করেছে। দিন যত যাবে সবজির দাম তত কমবে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা কমেছে। তবে পাইকারি আড়তে দাম এখনো বেশি। যে কারণে খুচরায় বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে।

এছাড়া রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মান ও আকারভেদে ৮০-১২০ টাকা। যা একদিন আগেও ৯০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু ৫ টাকা কমে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের বিক্রেতা সোনাই আলী বলেন, নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজেরও জোগান বেড়েছে। যে কারণে দামও কমতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসবে।

অন্যদিকে খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগি প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ৪৮-৫০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা। তবে মালিবাগ কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি ২১০ টাকা পর্যন্ত ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে। সঙ্গে প্রতি পিস কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৬০ টাকা, কাতল ৩৬০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, চিংড়ি (আকার অনুযায়ী) ৭৫০-৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, কই মাছ প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ২৮০-৩০০ টাকা, চাপিলা মাছ প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয়

মহান বিজয় দিবসে বিএনপি নেতাদের দাওয়াত না দেওয়ায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সাতবাড়ীয়া উত্তর ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহেরকে পিটিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভেড়ামারা-দৌলতপুর সড়ক অবরোধ করে ট্রায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল ৮টায় বিএনপির ফরিদা ইয়াসমিন গ্রুপের নেতা মোস্তাক আহমেদ মিন্টুর নেতৃত্বে কর্মীরা বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে চলে যান।

এরপর সকাল ৯টায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যান বিএনপির মূলধারার নেতা ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রবিউল ইসলাম সরকার ও তার লোকজন। ফুল দেওয়ার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের তাদের অফিস কক্ষে নিয়ে আপ্যায়ন করান।

এ খবর পেয়ে ফরিদা ইয়াসমিন গ্রুপের মোস্তাক আহমেদ মিন্টু, সোহেল, সুজনসহ একটি দল প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে তাদের কেন দাওয়াত দেওয়া হয়নি জানতে চান। একপর্যায়ে মারধর করে ও ওই কক্ষেই আটকে রেখে চলে আসেন।

খবর পেয়ে শিক্ষার্থী এবং বিএনপির নেতারা প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

জাতীয়

বৈষম্যহীন নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার বিজয়ের ৫৩তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।

১৯৭১ সালের পর ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যহীন দেশ গড়ার আহবান এবং জাতীয় ঐক্যের শ্লোগান জাতিকে ইতোমধ্যে উদ্দীপ্ত করে তুলেছে। ফলে এবারের বিজয় দিবস উদযাপন হয়ে ওঠে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার বিজয় দিবস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্য ও সামাজিক মুল্যবোধের বাংলাদেশ গড়ার বিজয় দিবস।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে জাতি নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্ত শপথে এবারের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।

বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে থাকা স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে শেখ হাসিনার সরকার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের রাজপথে জন বিস্ফোরণের মধ্যদিয়ে উৎখাত হন। ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন, গুলি চালিয়ে আন্দোলন দমন, গুম খুনসহ নির্যতনের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ ও ক্ষুব্ধ জনতার রাজনৈতিক রোষানলের পড়ে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে পালিয়ে যান।

হাসিনা সরকারের পতনের পর, বাংলাদেশের নবযাত্রায় জাতি নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনা নিয়ে এই প্রথম দিনটি পালন করেছে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর অধিকাংশ দেশবাসী এ সময়টাকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলেও অভিহিত করছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ ভাষণ দিয়েছেন।

সকালে ঢাকা পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় (তেজগাঁও) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের প্রতি গান-স্যালুট প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহিদদের প্রতি দোয়া এবং মোনাজাতে অংশ নেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। রোববার দিবাগত রাত ১২টা এক মিনিটে তারা মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। এরপর তারা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ ও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন। এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখপাত্র সামান্তা শারমীনসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আজ সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সকাল ৭টা ১২ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তার সঙ্গে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তাও ছিলেন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধে সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। দেশের জন্য আত্মদানকারী বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি বেতার/টিভি চ্যানেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জল ইতিহাস ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে-সঙ্গে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় বার্তা সংস্থা-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় গতকাল রাত থেকেই আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা করে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহে বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহকৃত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং মিলনায়তনে ও উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

বিজয় দিবসটি উপলক্ষে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের সংগ্রামের ইতিহাস ও বিজয় স্মরণে র‌্যালি করেছেন ছাত্র-জনতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ র‌্যালির আয়োজন করে। দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-শাহবাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আবার শহিদ মিনারে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে র‌্যালিটি শেষ হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা আসলেও সেই স্বাধীনতা ছিল অরক্ষিত। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বিজয় আমাদের স্বাধীনতাকে পূর্ণতা দিয়েছে।

দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪-এর বিজয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশে জনগণ প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ অনুভব করছে।

মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ফ্যাসিজম ও আধিপত্যবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের পক্ষ থেকে সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্যদিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল ও খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধনের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ আখাউড়া-আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে আইএসপিআর জানায়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৮টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পুলিশ স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ স্মৃতিসৌধে শহিদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।

দিবসটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সকালে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে কোরআনখানি ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএসএমএমইউ ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর দোয়া-মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও জাতীয় এই দিবস উপলক্ষে আজ রোগীদের ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হয়ে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

জাতীয়

পৌষের আগেই শীতের দাপটে কাবু দেশের মানুষ। উত্তরের হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। অনুভূত হচ্ছে কনকনে শরীর কাঁপানো শীত। তীব্র ঠান্ডায় গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। হাসপাতাল এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে রোগীদের লম্বা লাইনও চোখে পড়ছে। ৭ ঘণ্টা পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ঢাকা: বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানীর আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কমলেও বিকাল থেকেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। রাজধানীতে এতটা কুয়াশা এই প্রথম। এটাই শেষ নয়- আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের ভাষ্য, সময় যত বাড়বে, কুয়াশার পরিমাণও বাড়তে পারে। আজও কুয়াশা থাকবে। রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি। কুয়াশা ও শীতের এমন দাপট আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, যেভাবে শীত হানা দিচ্ছে, তাতে শিশু এবং বৃদ্ধরা খুব সহজেই কাবু হচ্ছে। নবজাতক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।

কুড়িগ্রাম ও রৌমারী: কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বুধবারের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গত তিন দিন ধরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় দেখা মেলেনি সূর্যের। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিনের ঠান্ডায় এখানকার চরের মানুষজন ভীষণ কষ্টে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র পাইনি।

পঞ্চগড়: বুধ ও বৃহস্পতিবার সারা দিনই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। দিনের বেলাতেও গরম কাপড় পরে বের হতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। শীতার্ত মানুষেরা সামর্থ্য অনুযায়ী এসব দোকান থেকে গরম কাপড় কিনছেন। গ্রামীণ জনপদের অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ: বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। বুধবার রাত ৩টা থেকে নদীতে কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে গেলে রাতেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাঝ নদীতে ছোট বড় মিলে দুটি ফেরি আটকা পড়ে। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফের ফেরি চলাচল শুরু করা হয়। ফেরি বন্ধ থাকায়   গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ১ কিলোমিটার ক্যানেল ঘাট এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কে ট্রাকের সারি আটকে থাকে। পরে আস্তে আস্তে সেগুলো পারাপার করা হয়।

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ): চা বাগান ও পাহাড়বেষ্টিত চুনারুঘাট উপজেলা কাঁপছে শীতে। বিশেষ করে চা বাগান এলাকাগুলোতে বেড়েছে শীত। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৯ ডিগ্রি। দিনে সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রয়োজনের বাইরে কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শীতজনিত নানা রোগে বিভিন্ন বয়সিরা হাসপাতালে আসছেন।’

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): জেলার চা বাগান ও টিলা অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলা। উপজেলায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শেরপুর: জেলা শেরপুরে গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে শীত ও ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছ। রাতে এবং সকালে বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। শীতের দাপটে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও মহাসড়কে ধীরগতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।

আগৈলঝাড়া (বরিশাল): বুধবার রাত থেকে প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। এখন পর্যন্ত উপজেলায় শীতার্তদের জন্য সরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র আসেনি।

হাজীগঞ্জ ( চাঁদপুর): কনকনে শীত। সূর্যের দেখা নেই। প্রচণ্ড শীতে কাঁপছিল মানুষ। স্থবিরতা এসেছে কাজকর্মে। এই ছিল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার চিত্র। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছিল কুয়াশা।

জাতীয়

২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন বা সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিল বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এই পরীক্ষা শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি এই রুটিন প্রকাশ করে।

রুটিন অনুযায়ী, প্রতিটি লিখিত পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে একই বছরের ৮ মে। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।

এর আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ করা হয়। বুধবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ওয়েবসাইটে কেন্দ্র ও কেন্দ্রওয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এদিকে ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফি পরিশোধ করা যাবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন:

জাতীয়

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের পর এবার আখাউড়া সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন বিজেপি সমর্থকরা। এ কর্মসূচি ঘিরে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করায় সীমান্তে উভয় দেশ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এদিকে, আগরতলায় বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে আগরতলায় কোনো বাংলাদেশি যাত্রীকে হোটেল ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। হোটেল থেকে তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

হয়রানি ও মারধরের অভিযোগও করেছেন দেশে আসা যাত্রীরা। মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়ে তারা উলটো হয়রানির শিকার হন। দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

আখাউড়া সীমান্তের ওপারে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন ও ভারতীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ব্যানার-প্ল্যাকার্ডসহ মিছিল নিয়ে মিছিলকারীরা আগরতলা-আখাউড়া সড়ক হয়ে আগরতলা ইমিগ্রেশন সীমান্তে সমাবেশ করার কথা থাকলেও তারা তা করতে পারেনি। আগরতলা রবীন্দ্র ভবনের সামনে বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করলেও সীমান্তে আসতে দেওয়া হয়নি। আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দুই কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি বাঁশের বেড়া দিয়ে তারা তাদের বাধা দেয়। ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের জরুরি সভায় রাজ্যের সব হোটেল বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশেনের সচিব সৈকত ব্যানার্জি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন এবং বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে রাজ্যের সব হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশিদের পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের কোনো ধরনের পরিষেবা দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে ভারত থেকে আসা কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রী যুগান্তরকে জানান, যারা আগরতলায় গেছেন তাদের শহরের ভেতরে কোনো হোটেল ভাড়া দেওয়া হয়নি। অনেকেই বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে গিয়ে স্বজনদের বাড়িতে উঠেছেন। মার্কেটে কেনাকাটা করতে গেলেও বাংলাদেশি পরিচয় পেলে কিছু বিক্রি করা হচ্ছে না, উলটো হয়রানি করা হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ভ্রমণরত বাংলাদেশিরা। এছাড়া আগরতলা ইমিগ্রেশনেও বাংলাদেশি যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, আগরতলা ও শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে তিনি জামদানি শাড়ির স্টল দিয়েছিলেন। সোমবার রাতে একদল যুবক আগরতলার মেলায় তার দোকানে ঢুকে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে দোকান ভাঙচুর করে এবং ক্যাশ লুট করে। এরপর দোকান কর্মচারীদের মেলা থেকে বের করে দেয়। এরপর দোকান কর্মচারীদের নিয়ে তিনি হোটেলে চলে আসেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের হোটেল থেকেও বের দেওয়া হয়। বলা হয় হোটেলে থাকলে আমাদের মেরে ফেলবে। তোমরা চলে যাও। এরপর হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে সারা রাত পার করি।

সোমবার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় যান কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ফরিদ মিয়া। তিনি জানান, সেখানে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন। বাংলাদেশি ও মুসলিম হওয়ায় হোটেল ভাড়া নেওয়ার এক ঘণ্টা পরই তাকে হোটেল থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হোটেল থেকে বের করে দিলেও ফেরত দেওয়া হয়নি ভাড়ার টাকা। তিনি জানান, পরে বাধ্য হয়ে শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়ে দিনভর চেষ্টার পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরে আসেন।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাইরুল আলম জানান, ভারত ফেরত যাত্রীদের অভিযোগ তাদের হোটেল ভাড়া দেওয়া হয়নি এবং ইমিগ্রেশনেও হয়রানি করা হয়েছে। এসব কারণে মঙ্গলবার যাত্রী পারাপার সীমিত ছিল। বিষয়গুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এএম জাবের বিন জব্বার জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতে সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে সর্তকাবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

জাতীয়

জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে এক দল থেকে আরেক দলে ডিগবাজির পথ বন্ধের সুপারিশের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’। সেখানে দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেতে হলে ওই দলের অন্তত তিন বছর সদস্যপদ থাকার বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সুপারিশও থাকতে হবে। এজন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) এর ১২ ধারা সংশোধনীর সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে এ কমিশনের। এ বিধান যুক্ত হলে নির্বাচনে এক দলের মনোনয়ন না পেয়ে আরেক দলে যোগ দিয়েই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে। এতে মনোনয়ন কেনাবেচায় টাকার খেলাও কমবে। কমিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

আরও জানা গেছে, নির্বাচন এলেই দল ভাঙাগড়ার খেলা শুরু হয়। এজন্য চলে টাকার খেলাও। এই খেলায় যুক্ত হন রাজনীতিক, সরকারি আমলা ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল। ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ মুহূর্তে বিএনপি থেকে হঠাৎ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠী-১ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। ওই নির্বাচনে তিনি জয়ীও হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা এ ধরনের খেলা বন্ধের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।

সূত্র জানায়, নির্বাচন ব্যবস্থায় অন্তত ১৫-১৬টি বিষয়ের ওপর সংস্কার প্রস্তাব করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কমিশন। বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে ওইসব বিষয়ের ওপর মতামতও নিচ্ছে। এসব বিষয়ের অন্যতম হচ্ছে-নির্বাচনে অটোপাশ বন্ধ করা। বর্তমানে কত শতাংশ ভোট পড়লে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে-তার কোনো মান নির্ধারণ করা নেই। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির সময়ে অনুষ্ঠিত ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে মাত্র সোয়া ৫ শতাংশ ভোট পড়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন মাত্র ১৫ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ভোটারের অংশবিহীন এমন নির্বাচন বন্ধে সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য ভোট পড়ার ন্যূনতম একটি হার নির্ধারণ করে এর কম ভোট পড়লে তা বাতিলের সুপারিশ করবে। ওই হার ৫০ শতাংশ হবে নাকি আরও কম হবে-তা চূড়ান্ত হয়নি।

অন্যান্য বিবেচনাধীন সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করা, ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা, নির্বাচন এবং প্রার্থিতা বাতিলে ইসির ক্ষমতা বাড়ানো, পোস্টাল ব্যালট কার্যকর করা এবং সংসদীয় নারী আসনের সংখ্যা বাড়ানো ও নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা। আরও রয়েছে-রাজনৈতিক দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা, প্রার্থী, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের নির্বাচনি অপরাধের সাজা সুনির্দিষ্ট করা, নির্বাচনি ব্যয়ের রিটার্ন অডিট করা, হলফনামার তথ্য যাচাই করা, নির্বাচনি অভিযোগ দাখিল ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া, নির্বাচনি মামলা নিষ্পত্তিতে সময় বেঁধে দেওয়া ও ইসির ভূমিকা, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত বিধিবিধান সংস্কার করা।

জানতে চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা অনেক বিষয়ে সংস্কারের জন্য সুপারিশ করার লক্ষ্যে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। তবে কোনো বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পর বিষয়গুলো চূড়ান্ত করব। তবে যেসব বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি তার মধ্যে প্রার্থী হতে দলের ৩ বছর সদস্যপদ থাকা, না ভোট যুক্ত করা, সংসদের উচ্চকক্ষের প্রবর্তন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আমাদের সংলাপে যেসব মতামত আসছে, সেগুলোর ভিত্তিতে সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে। আমাদের নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই একটি ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। জানা গেছে, এই কমিশন গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩০টি বৈঠক করেছে। এর মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, নারী প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকও রয়েছে। বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও চার কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। নির্বাচন ও আইন বিশেষজ্ঞ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে কমিশনের। চলতি মাসেই সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের পর নির্বাচন ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে। ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন নির্বাচনি আইন ও বিধিমালায় ব্যাপক সংশোধনী এনেছিল। ওই আইনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংস্কারের অনেক কিছুই বাদ দিয়ে আরপিও পাশ করে। সর্বশেষ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন অনিয়ম বা ক্ষমতা প্রভাব বিস্তারের কারণে যেকোনো সময়ে নির্বাচন বাতিলে ইসির যে ক্ষমতা আরপিওর ৯১এ ধারায় ছিল তা বাতিলের সুপারিশ করেছিল। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বাদ পড়া ওইসব বিধান আবারও ফিরিয়ে আনতে চায়। আরও জানা গেছে, সংবিধানের ১১৮-১২৬ ধারা নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। সেখানেও কিছু সংস্কারের সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে সহায়তা করার সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য অংশে সংশোধনীর প্রস্তাব করা হবে। সেখানে নির্বাহী বিভাগ কি কি সহায়তা করবে তা সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করার বিষয়ে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া একজন পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে যাতে থাকতে না পারেন-সেই বিষয়ে সুপারিশ আসতে পারে।

জাতীয় সংসদের আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনে সংশোধনীর সুপারিশ করবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। ওই আইনে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের যুক্তের প্রস্তাব করা হতে পারে। প্রবাসীদের ভোটার করা এবং তাদের ভোট প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে এই কমিশন। এক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী, ভোটগ্রহণে নিয়োজিত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকসহ জরুরি পেশার মানুষদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করবে নির্বাচন সংস্কার কমিশন।

কমিশনের একাধিক সদস্য জানান, নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান চালু হলে নির্বাচনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার অংশগ্রহণ বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে এ বিধান চালুর ক্ষেত্রে সদস্যরা নীতিগত একমত হয়েছেন। ‘না’ ভোট চালু হলে একক প্রার্থী হিসাবে জয়ী হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ ওই প্রার্থীর চেয়ে ‘না’ ভোট বেশি পড়লে সেখানে আবারও নির্বাচন হবে। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের প্রার্থী দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। আওয়ামী লীগ যেভাবে ইচ্ছামতো বিভিন্ন ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী করে জয়ী করে এনেছে, সেই সুযোগ বন্ধ হবে।

আগামী বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ

 ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে আগামী বছর ২ মার্চের পর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবে। ওই বছরের ২ মার্চ হালনাগাদ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।

তবে এর আগে চলতি বছরের হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে আগামী ২ মার্চ।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন গঠনের পর এটাই প্রথম বৈঠক। এতে চার কমিশনার, ইসি সচিব শফিউল আজিমসহ ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। বৈঠকে সিইসি কর্মকর্তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার যন্ত্রপাতি ও ফরম মুদ্রণে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রমে অনিয়ম পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আরও জানা গেছে, সভায় ইসি সচিবালয় ১৮ বছরের কম বয়সিদের আগাম তথ্য সংগ্রহের একটি প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনাররা বলেন, হালনাগাদ কার্যক্রম এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যেন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসি সময়ক্ষেপণ করছে এমন ধারণা তৈরি না হয়। ইসির কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাস তৈরি না হয়, সেদিকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সতর্ক করেন তিনি। সভায় চার কমিশনারের নেতৃত্বে চারটি কমিটি গঠন করা হয়।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, নতুন ভোটার হিসাবে যুক্ত হওয়ার জন্য ইসির কাছে ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহে রয়েছে। ২০২৫ সালের ২ মার্চ যে চূড়ান্ত হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেখানে তারা যুক্ত হবেন। এই ১৭ লাখ নাগরিকের মধ্যে ১৩ লাখের তথ্য নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিল। বাকি নাগরিকরা নিজেরা ইসির কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধিত হয়েছেন। তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছর ৪৫ লাখের মতো নাগরিকের নতুন ভোটার হিসাবে যুক্ত হওয়ার কথা। সে হিসাবে ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিক এ বছর এখনো ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হননি। এই বাস্তবতায় কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশের পর শুনানি, দাবি-আপত্তির পর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ইসি চায়, যারা বাদ পড়েছেন, তারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হোক। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বাদ পড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের তথ্যও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হবে। তিনি জানান, একই সঙ্গে যেসব ভোটার মারা গেছেন, তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করার জন্য তথ্য নেওয়া হবে। এ ছাড়া দ্বৈত ভোটার বা অন্য কোনো জটিলতা আছে কি না, সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় থেকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। তবে তারা আশা করছেন, আগামী ২ মার্চের পর এই কাজ শুরু করতে পারবেন।

মো. সানাউল্লাহ বলেন, কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখনই কোনো একটি নির্বাচন সামনে আসবে, চেষ্টা থাকবে তফশিল ঘোষণার আগে একটা সময় পর্যন্ত যেন ভোটার হওয়ার যোগ্যদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইসির বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

চার কমিটি গঠন : বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদের নেতৃত্বে আইন ও বিধি সংস্কার কমিটি, বেগম তাহমিদা আহমদের নেতৃত্বে নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটি, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, জাতীয় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতি ও তদারকি কমিটি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহের নেতৃত্বে জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনা তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জাতীয়

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি পদ শূন্য রয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরির এই শূন্য পদগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আজ সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনার চিঠি সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান ২০২৩ অনুযায়ী বর্তমানে সরকারের অনুমোদিত শূন্য পদের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি। সম্প্রতি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) ৪৭তম বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৮৮টি শূন্যপদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।’

বিপিএসসি শুধু ১ম শ্রেণি নন-ক্যাডার এবং সীমিত পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ করে থাকে। সরকার থেকে অনুমোদিত অন্যান্য পদগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধীন দপ্তর/সংস্থা/করপোরেশন/ কোম্পানি থেকে পূরণ করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব লাঘবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে বিপুলসংখ্যক শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও তা পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

চিঠিতে মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধীন দপ্তর/সংস্থা এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে অনুমোদিত শূন্য পদগুলো বিধি মোতাবেক পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

এছাড়াও শূন্যপদ পূরণে কি কি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, সে সকল তথ্যাদি ওয়ার্ড ফাইলসহ পত্র প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।