জাতীয়

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে রেল যোগাযোগ আধুনিকতায় এগিয়ে নিতে তিনি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে যমুনায় দেশের দ্বিতীয় ডুয়েল গেজ রেল সেতু নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। আগামী ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এতে নির্মাণ ব্যয় হবে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। যার ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা জাপানের সহযোগিতা সংস্থা জাইকা দিচ্ছে। বাকিটা সরকার অর্থায়ন করছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে কাজ শেষ হলে তা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে।

রবিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে সেতুটির প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর পাশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ হলে দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে বড়ো ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এখন যে গতিতে ট্রেন চলছে তা কিছুটা মন্থর। তবে ডুয়েল লেনের রেল সেতুটি তৈরি হলে ঘণ্টায় একশ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া দেশের সর্ব উত্তরের জেলা গুলোর সঙ্গে ঢাকার রেল পথ যোগাযোগ আরও সহজ করতে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত আলাদা রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা শেষ পর্যায়ে। দ্রুতই এই কাজ শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন: খুলনায় জুট মিলে আগুন, নেভাতে গিয়ে দগ্ধ ৪

এসময় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবীবে মিল্লাত মুন্না, সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, মহাপরিচালক মো. শামচুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জাতীয়

মানহীন ও চাহিদার অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি করে বেকায়দার দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে পেঁয়াজের মজুদ গড়ে উঠেছে।

আগের মতো চাহিদা না থাকায় বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে। পচা পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে কর্ণফুলীতে। প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ৫০ টাকার বেশি পড়লেও পাইকারি বাজারে সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না।

দিনের পর দিন পড়ে থাকার কারণে মানহীন পেঁয়াজে গজাচ্ছে অঙ্কুর। ফলে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এদিকে জানুয়ারিতে টিসিবি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে নেবে।

শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান খাতুন চাক্তাই পরিদর্শনে এলে ব্যবসায়ীদের এ আশ্বাস দেন।

চাক্তাই-খাতুনঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, পেঁয়াজের সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে গত কয়েক মাসে হাজার হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে চীন, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকে।

চায়না থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ পেঁয়াজই নিম্নমানের। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত আমদানির ফলে গুদাম এবং আড়তে হাজার হাজার বস্তা পেঁয়াজের মজুদ গড়ে ওঠে। তাছাড় মানহীন পচা পেঁয়াজও আমদানি হয়ে এসেছে জাহাজ ভর্তি হয়ে।

এর ফলে নষ্ট পেঁয়াজে এখন বাজার সয়লাব। দেশীয় ভালোমানের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হলেও আমদানিকৃত মানহীন পেঁয়াজের মূল্য ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বলছেন, গত ৪ মাসে মিয়ানমার, চীন, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ৩৯ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে আরও অন্তত ১০ হাজার টন পেঁয়াজ। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে ১ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়।

এর ফলে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ জাহাজের কনটেইনারেই নষ্ট হয়ে যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে আমদানি করা পেঁয়াজ অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ডগা গজিয়ে যায়। আবার সাধারণ কনটেইনারে আমদানি করা পেঁয়াজ পচে যায়।

উভয় সংকটের কারণে এবার পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বড় অঙ্কের লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রতিদিনই পচা পেঁয়াজ এখন খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ের আড়ত থেকে বের হচ্ছে।

সরেজমিন কর্ণফুলী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চাক্তাই খালের পাড়ে এবং কর্ণফুলীর তীরে রাতের অন্ধকারে কে বা কারা বস্তা বস্তা পচা পেঁয়াজ ফেলে দিয়ে গেছে।

পেঁয়াজগুলো আকারে ছোট। ফেলে দেয়া পচা পেঁয়াজের বস্তা থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ খাওয়ার উপযোগী পেঁয়াজ বেছে নিচ্ছেন। আবার অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ নষ্ট ও নিম্নমানের পেঁয়াজগুলো ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন বাজার ও রাস্তাঘাটে বিক্রি করছেন।

ভ্যানগাড়িতে পেঁয়াজ বিক্রেতারা বস্তা প্রতি ২০০-৩০০ টাকায় কিনে বিক্রি করছেন। একটি পচা পেঁয়াজের বস্তা থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি মোটামুটি খাবার উপযোগী পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।

১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদফতর পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়ে চিঠি ইস্যু করে। চিঠিতে বলা হয়, কাটা, টুকরা ও গুঁড়া সব ধরনের পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ এবং এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এরপর পর হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এর আগে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। সেই সময় দুই দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়ে যায়।

পরে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা মিয়ানমার, চীন, মিসর, পাকিস্তান, তুরস্কের মতো দেশগুলো থেকে পেঁয়াজ এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন।

খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্যাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজ আমদানিতে কেজিতে খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মান নষ্ট ও পচে যাওয়ায় সেসব পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি করতে হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।

চাহিদার অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ৪ মাসে মিয়ানমার, চীন, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ৩৯ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

আরও পেঁয়াজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। অধিক মুনাফার আশায় গণহারে পেঁয়াজ আমদানি করায় সবাই এখন বিপাকে পড়েছেন।

জাতীয়

দেশে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাবস্টেশনে) আগুন দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিশেষ সমস্যা ছাড়া স্বাভাবিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ এ কাঠামোতে আগুন লাগা দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অস্বাভাবিক। অথচ গত আট মাসে দেশে স্বাভাবিক সময়ে অন্তত চারটি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটি উপকেন্দ্রে আগুন দুর্ঘটনা হয়েছে। এর ফলে বহুমুখী ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় জনগণ। রক্ষণাবেক্ষণে দুর্বলতা, দায়িত্বে অবহেলা, আর্থিক দুর্নীতি এবং ট্রান্সফরমারসহ উপকেন্দ্রের অন্যান্য কেনাকাটায় সঠিক মান বজায় না রাখা—এ দুর্ঘটনার পেছনের কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র জানায়, গত আট মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত পাঁচবার বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। আগুনে পুড়ে যায় বিদ্যুতৎ সঞ্চালন-বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র ট্রান্সফরমারসহ নানা সরঞ্জাম। ফলে দীর্ঘসময় বিদ্যুৎহীন থাকে ঐ কেন্দ্রগুলোর আওতাধীন এলাকা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সকালে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুত্ উপকেন্দ্রে আগুন লাগে। অন্ধকারে থাকে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা। সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালীতে আগুনে পুড়ে ট্রান্সফরমার। দুই দিন পরে ১০ সেপ্টেম্বর ঐ একই উপকেন্দ্রে আরেক দফা আগুন লাগে। ফলে প্রায় এক সপ্তাহ ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় বিদ্যুেসবা বিঘ্নিত হয়। গত ১১ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর রামপুরার উলন গ্রিডে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল। গত ২০ মে কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারা সাবস্টেশনে আগুন লাগে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ঐ দুর্ঘটনা হয় বলে জানিয়েছে পিজিসিবি। এছাড়া গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জে নির্মাণাধীন উপকেন্দ্রে আগুন লাগে। ২০১৮ সালের ৩০ মে রাজধানীর পরিবাগে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লোকাল গ্রিড উপকেন্দ্র অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়।

সিলেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তিনটি কমিটির তদন্ত এখনো চলছে। চলতি সপ্তাহের শেষ বা আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা পড়তে পারে। এ উপকেন্দ্রটি ১৯৬৭ সালের। এর বাণিজ্যিক সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। পরে নানাভাবে সংস্কার ও বর্ধিত করা হয়। তাই কিছু কারিগরি অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে। গ্রিড ও পিডিবির লাইনের সংযোগস্থলে এ দুর্ঘটনার সূত্রপাত। অন্য ঘটনাগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন বা সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনটি উপকেন্দ্রে অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। দুইটি উপকেন্দ্রে ট্রান্সফরমারের ওপরের অংশে থাকা বুশিং থেকে আগুন লাগে। সব দুর্ঘটনার সময়ই দেখা যায় সার্কিট ব্রেকার ঠিকভাবে কাজ করেনি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া উপকেন্দ্রে বড় ধরনের আগুন লাগা সম্পর্কে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক প্রকৌশলী বলেন, বৈদ্যুতিক অবকাঠামোগুলোর মধ্যে গ্রিড সাবস্টেশন খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এর যন্ত্রপাতি মানসম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। সব উপকেন্দ্রেই সার্কিট ব্রেকারসহ কিছু সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা থাকে। অর্থাৎ কেন্দ্রের কোথাও সমস্যা-ত্রুটি দেখা দিলে তা যেন প্রকট না হয় অথবা না ছড়িয়ে পড়ে তা রোধ করতে সার্কিট ব্রেকার স্থাপন করা হয়। বিদ্যুত্ লাইনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ব্রেকারগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সিংহভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়নি। এগুলো কাজ করেনি। তার মানে এগুলো আগে থেকেই নিম্নমানের বা ত্রুটিপূর্ণ ছিল, নয়তো পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে অকেজো হয়ে যায়।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রিড সাবস্টেশন নির্মাণের পর সেগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের নিয়ম রয়েছে। এ জন্য সরকার প্রতিবছর অর্থ বরাদ্দও দেয়। পিজিসিবিসহ অন্য কোম্পানিগুলো তা ব্যয়ও করে। কিন্তু ঐ ব্যয়ের টাকা কোথায় হয় তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেননা বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যয় করা হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত না।

এ প্রসঙ্গে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী জানান, কারিগরি ত্রুটি-দুর্বলতার কারণে এ আগুন দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। এ ত্রুটিগুলোর কারণ আবার কয়েকটি। এক. পুরোনো সাবস্টেশন। দুই. সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। এক্ষেত্রে অনেকসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্বে অবহেলা করেন। কোম্পানির চেয়ে বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপের প্রতি তারা দায়বদ্ধ থাকার ফলে ঠিকভাবে কাজ করেন না। আবার বিদ্যুৎ চাহিদার কারণে উপকেন্দ্র পুরোদমে বন্ধ করে রক্ষণাবেক্ষণ করাও কঠিন। একই এলাকার জন্য দুটি উপকেন্দ্র থাকলে সেভাবে সংস্কার-রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হতো। তিন. সাবস্টেশনগুলোর সিংহভাগই বিদেশি ঋণ সহায়তায় নির্মিত। তাদের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময় সর্বোচ্চ মানদণ্ড রক্ষা করা যায় না। এক্ষেত্রে একটি ইউনিফরম ব্যবস্থা থাকা দরকার। তিনি বলেন, সিলেটের উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের শীর্ষ পর্যায়সহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ ও সমাধানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এখন সেভাবেই কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।

বুয়েটের অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে আগুন লাগা কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার বন্ধ এবং রক্ষণাবেক্ষণে যত্নশীল না হলে এমন অগ্নিকাণ্ড বন্ধ হবে না।

তড়িৎ প্রকৌশলী এবং কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ঠিকাদারদের নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহের সুযোগ দিচ্ছে অনেকে। পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণ কাজে গাফিলতি রয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুত্ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা রক্ষার উপায় নির্ধারণে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। ঐ কমিটির সদস্য এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনাগুলো সরকার সিরিয়াসলি গ্রহণ করেছে। কারণ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দোষীদেরও শনাক্ত করা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে যেন এমন দুর্ঘটনা না হয় সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিরীক্ষণ ও মূল্যায়নে প্রতি মাসে বৈঠকও করবে কমিটি।

জাতীয়

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হবেই বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বহু স্থানে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ভাস্কর্য রয়েছে।

এসব ভাস্কর্য আমাদের সংস্কৃতির অংশ। বর্তমান সরকার অত্যন্ত সক্ষম সরকার। কারো বিরোধিতায় ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ হবে না।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এম ভি ইকরাম জাহাজ পরিদর্শন শেষে ধোলাইখালে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে একটি গোষ্ঠীর বিরোধিতা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

রাজধানীতে মৌলবাদী শক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করছে- এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, অনেকেই অনেক কিছু বলে। এগুলো আমলে নেওয়ার মতো না। রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে কারো কোনো কথা আমলে নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হবেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কীভাবে আত্মসমর্পণ করেছে সেটা নির্মিত হবে। সারাদেশেই অসংখ্য ভাস্কর্য রয়েছে। এটাতো নতুন কিছু না।

এম ভি ইকরাম সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, নৌ-কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের সাক্ষ্য এম ভি ইকরাম জাহাজকে আন্তর্জাতিকমানের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। এজন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ ও ডিজাইন করার জন্য কারিগরি টিম গঠন করা হচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি স্মৃতিচিহ্ন সরকার সংরক্ষণ করবে।

যুদ্ধ জাহাজ পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি বিজড়িত জাহাজটি সংস্কার করে ভালো একটি স্থানে রাখা হবে। এই জাহাজটি আমাদের একটি নির্দশন। জাহাজটি সংরক্ষণের জন্য দু’টি জায়গা পছন্দ করা হয়েছে। একটি হলো মাদারীপুরের এসপিটিআই প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও অপরটি চাঁদপুরের নদীবন্দরের পাশে। যুদ্ধজাহাজটি এমনভাবে সংরক্ষণ করা হবে যাতে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নেভাল কমান্ডোর ইতিহাস সারা বিশ্বের মানুষ জানতে পারে।

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অনেক ভাস্কর্য রয়েছে কিন্তু সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন না তুলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তি করাটা প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা বাঙালিরা একটু আবেগী। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বন্ধ করার যে দাবি তারা তুলেছে সেটার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক কাজী ওয়াকিল নওয়াজ, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল, উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন, নারায়ণগঞ্জ নৌ-থানার ওসি শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

জাতীয়

বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতিটি স্তরে বহু-অংশীজন ভিত্তিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সমুদ্র-তলদেশ কর্তৃপক্ষ প্রণীত সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার খসড়া কর্ম-পরিকল্পনার উপর আয়োজিত উচ্চ-পর্যায়ের এক ভার্চুয়াল সভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা এ আহবান জানান।

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘সুনীল অর্থনীতি থেকে উদ্ভূত সম্ভাবনার পূর্ণ সুফল ঘরে তুলতে সমুদ্র সম্পদে বিশেষ করে জাতীয় সমুদ্র সীমানার বাইরে এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র-তলদেশ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব প্রয়োজন।’

রাবাব ফাতিমা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং জাতিসংঘের সমুদ্র বিজ্ঞান দশককে এগিয়ে নিতে এই কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।

বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত রূপকল্প-২০৪১ এর উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, দেশের সমুদ্র সম্পদের কার্যকর ব্যবহার ও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বিনির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে, যাতে রূপকল্প-২০৪১ এর অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পর সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য অংশীজনদের সাথে গভীর সমুদ্র এলাকায় যৌথভাবে গবেষণা পরিচালনা করার বিষয়ে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

গভীর সমুদ্র তলদেশে গবেষণা এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষ গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগসমূহকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। গভীর সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর জোর দেন তিনি।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশসমূহে সক্ষমতা বিনির্মাণ ও কারিগরী ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করা; সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতিটি স্তরে বহু-অংশীজন ভিত্তিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা; পর্যাপ্ত, সম্ভাব্য ও উদ্ভাবনী অর্থায়ন নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি সমুদ্র-পরিবেশ ও এর জীব বৈচিত্র অক্ষুণ্ণ রাখা।

এছাড়া গভীর সমুদ্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্ব প্রদান করেন তিনি।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষের মহাসচিব মাইকেল ডব্লিউ লজ। এছাড়া কোরিয়ার সমুদ্র ও মৎস্যসম্পদ মন্ত্রী, নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি এবং জাতিসংঘ সদস্য দেশসমূহের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিগণ সভাটিতে অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমুদ্র তলদেশ কর্তৃপক্ষ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।

জাতীয়

ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ৯টি স্থানে বাস পোড়ানোর একাধিক মামলায় ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী। বুধবার সকালে এ সব মামলায় হাইকোর্টের কাছে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চাইলে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজউদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

গত ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন। এ দিন বিকালে রাজধানীর ৯টি স্থানে বাসে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ১৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৭০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

জাতীয়

সিলেট জেলায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ নেই। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সকালে নগরীর পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁও ১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন লেগে বিদ্যুতের দুটি গ্রিড পুড়ে যায়। এর পর থেকে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

আগুন লাগার দুই ঘণ্টা পর বেলা পৌনে ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।

বুধবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে প্রায় ৪০০ কর্মী কাজ করছেন। বুধবার দুপুরের আগে মেরামত করা কিছু পিলার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

আগুন লাগার পরপর সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে সাড়ে ৪ লক্ষাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয় সুনামগঞ্জে।

এদিকে ভুক্তভোগীরা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরে পানি সরবরাহ করতে পারছে না। বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। কল-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে দোকানপাট ও বিপণিবিতান। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে গেছে।

এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের জয়ন্ত কুমার নামের এক সদস্য আহত হয়েছেন। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জাতীয়

‘অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে এলেই বিএনপির রাজনীতি টিকবে, অন্যথায় বিএনপি নিজেদের আগুনে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানী আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল এবং তাদের নেতারা নানা কথা বলছেন। ২০১৩-১৪-১৫ সালে তারা যেভাবে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর খেলায় মেতেছিল, এখনও যদি আগুন নিয়ে খেলে, তারাই সে আগুনে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে।’

‘বিএনপির অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য, রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য কি বাস পোড়াতে হবে’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘অনেকে যখন প্রশ্ন করছে- বিএনপি আজকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে কি না, তখন আমি বলবো, বিএনপি দাঁড়িয়ে আছে, তবে পা এবং হাঁটু খুব নড়বড়ে। আমরা দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল চাই। আমরা আশা করবো, বিএনপি হাঁটু কাঁপুনি ছাড়া দাঁড়াতে পারবে এবং তারা এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে। তাহলেই বিএনপির রাজনীতি টিকবে, অন্যথায় তারা নিজেদের আগুনেই পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বিএনপি করোনা ভাইরাসে উদ্বিগ্ন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে বরং বাসে আগুন দিচ্ছে, অতীতের মতো মানুষ পোড়ানোর নোংরা খেলায় মেতেছে এবং এটি করার পর এমনভাবে অস্বীকার করছে, অবলীলায় মিথ্যা বলছে, যে আমাকে আবারও বলতে হচ্ছে, মিথ্যা বলায় পুরস্কার থাকলে বিএনপি নেতারা প্রথম পুরস্কার পেতেন। এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, তারা এখন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, অতীতেও ঘটিয়েছে।’

‘আজকে বিএনপির বড় বড় নেতাদের অনেকেই মওলানা ভাসানীর অনুসারী ছিলেন, যারা সবাই ক্ষমতার লোভে জিয়াউর রহমানের বিতরণকৃত ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিতে মওলানা ভাসানীর আদর্শচ্যুত হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেছিলেন’ বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক।

‘দলছুট, রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া, আদর্শচ্যুত রাজনীতিবিদরা আসলে কোনো দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না, সেটিই আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি’ বলেন ড. হাছান।

এসময় বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর হাফিজের ‘ভোটের মাধ্যমে নয়, গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতন ঘটাতে হবে’ বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত: বিএনপি তো ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। দ্বিতীয়ত: রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে, এই কথা গত প্রায় ১২ বছর ধরে তারা বলে আসছে। তারা আসলে ভোটে যেমন বিশ্বাস করে না, রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে কখনো যে সরকারের পতন হবে না, সেটিও তারা বোঝে। আসলে তারা অতীতে যেমন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল, এখনও নানা ষড়যন্ত্র আঁটছে, ষড়যন্ত্র নিয়েই ব্যস্ত আছে।’

মওলানা ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘তিনি কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি, ক্ষমতার সাথে আপোষ করেননি। মুসলিম লীগের ড্রইং রুম কেন্দ্রিক রাজনীতিকে জনগণের কাতারে আনার জন্য মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত করতে গঠিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।’

ন্যাপ ভাসানী চেয়ারম্যান এম এ ভাসানীর সভাপতিত্বে সভায় সংসদ সদস্য এডভোকেট নূরুল আমীন রুহুল, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন মো. গণি মিয়া বাবুল, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. আজগর আলী প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

জাতীয়

করোনা ভাইরাসে দেশে ফের মৃত্যু ও আক্রান্ত বেড়েছে। গত এক দিনেই আরো ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এছাড়া একই সময়ে আরো ২ হাজার ২১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা গত ৭৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

মঙ্গলবার বিকালে এক বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সব মিলিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ হাজার ২৫৪ জন। আর শনাক্ত বেড়ে দাঁড়াল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নতুন করে আরো ১ হাজার ৭৪৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৫ জন হয়েছে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ৬০২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৫২টি।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, তখন বাংলাদেশেও বেড়েছে সংক্রমণ। কিন্তু এ নিয়ে মানুষের মাঝে কমে এসেছে সচেতনতা। ফলে মাস্ক পরার বিষয়ে কঠোর হতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য অভিযানে নামতে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জাতীয়

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার আদালত চলাকালে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতের স্টোর রুমে এ আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পৌনে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে দায়রা জজ আদালতের জামিন আবেদনের নথি ও একাধিক মামলার নিষ্পত্তি হওয়া ফাইল পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর জজ আদালতে আগুনে কাগজপত্র পুড়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি। আদালতের আগুন লাগায় পানির ব্যবহার করা হয়নি। তাই আগুন নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সময় লেগেছে। কীভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো.ফরিদ আহমেদ জানান, আদালত কক্ষের নিষ্পত্তিকৃত নথি রাখার ডিসপোজাল শেলফে আগুন লাগে। পৌনে ৫টার দিকে যখন আগুন লাগে, তখন আদালতে শুনানি চলছিল।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ আল মামুন বলেন, আদালতের কার্যক্রম শেষে হঠাৎ একটি বিকট শব্দ হয়। আমরা ধারণা করছি, বিদ্যুতের শট সার্কিট বা এসি বিস্ফোরণের ফলে এই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

আদালতের এজলাসে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, আদালত চলাকালীন এজলাসের পেছন দিক থেকে কিছু ধোঁয়া আসছিল। এরপর বিচারক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বলেন, দেখেন তো কীসের ধোঁয়া আসছে। এরপর দেখা যায়, এজলাসের পেছনেই মামলার নথি রাখার স্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এসি বিস্ফোরণের ফলে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) তাপস কুমার পাল বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এজলাসে মামলার শুনানি গ্রহণ করছিলেন মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। তখন তিনি তার আদালত কক্ষে ধোঁয়া দেখতে পান। এরপর আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধোঁয়ার উৎস খোঁজেন। তখন তারা দেখেন যে বিচারকের এজলাসের পেছনের বারান্দায় একটি স্টোর রুম রয়েছে, যেখানে নিষ্পত্তিকৃত মামলার ফাইল ছিল। সেখানেই আগুন লাগে।

তিনি বলেন, যেসব ফাইল পুড়ে গেছে- সেগুলো অপ্রয়োজনীয়। তবে আদালত কক্ষের ভিতরে যেসব ফাইল ছিল, সেগুলো তাৎক্ষনিক সরিয়ে নেন কর্মচারীরা।