জাতীয়

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ’ শুক্রবারের মধ্যে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

বুধবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। ফলে এখনকার পরিস্থিতিটা হচ্ছে, গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, যেটা নিশ্চিত করে যে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তিনি বলেন, গত দিনের আলোচনায় যে অগ্রগতি হয়েছে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এক জায়গায় আসতে পেরেছি একটি ধাপ হিসেবে। মনে করি, আজকের আলোচনার মধ্যে বাকি যে অংশগুলো আছে সেগুলো আমরা নিষ্পত্তি করতে পারব। গোটা দেশ অপেক্ষা করছে, আমরা সকলে মিলে এমন একটি ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছতে পারব, যাতে করে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের পথরেখাটা নির্ধারিত হয়।”

আলী রিয়াজ বলেন, বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কোনো প্রস্তাব যদি আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে। কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক। সকলের প্রচেষ্টায় অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে, গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমতে আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় আমরা যদি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছার ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া… গণভোটের জায়গায় যেতে হলে যে আইনি প্রক্রিয়া লাগবে, যাতে করে আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি, গণভোটটা অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং কী কী বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেটার একটা ধারণা এসেছে।

আলী রীয়াজ বলেন, যেহেতু কিছু নোট অফ ডিসেন্ট আছে সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। সবগুলো একভাবে বিবেচনা করা যাবে, তা আমরা মনে করছি না। কারণ হচ্ছে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন, তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন। ফলে আমাদেরকে দেখতে হবে যে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনে শুনেই সম্মতি নিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে যেটা জুলাই সনদে বিস্তৃতভাবে বলা হচ্ছে, কী কী কারণে কোন জায়গায় তাদের আপত্তি জায়গাটা আছে।

গণভোট অনুষ্ঠানের একটি সময়সীমা যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করতে পারে, কমিশনের কাজ তাতে সহজ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, আজকে এই জায়গায় আমরা চূড়ান্ত করতে পারব। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, আরো একদিন, বড় জোর দুদিন এজন্য ব্যয় করতে পারব। কিন্তু ১০ তারিখের মধ্যে আমরা এটা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে চাই। আমরা আশা করছি সেটা দিতে পারব।

‘আমরা চাই, আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের একটা অনুষ্ঠান করতে পারি। সেটা আমাদের লক্ষ্য, সেই সহযোগিতা করবেন,’ যোগ করেন তিনি।

জাতীয়

অবরোধের কারণে তিন দিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পরেছে সাধারণ মানুষ।

মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনার জের ধরে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে জেলা সদর, সদর উপজেলা পৌর এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় টানা তৃতীয় দিনের মত ১৪৪ ধারা চলছে।

রোববার সহিংসতায় তিনজনের মৃত্যুর ঘটনার পর সোমবার সকাল থেকে নতুন করে গোলযোগের কোনো খবর না এলেও গুইমারা উপজেলায় বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।

সোমবার দুপুর থেকে অবরোধ শিথিল হওয়ায় খাগড়াছড়ি জেলার সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পথে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

তবে জুম্ম ছাত্র জনতার ডাকা অবরোধে রাঙামাটির সঙ্গে যান চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙাসহ নয় উপজেলার সঙ্গেও জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। এসব পথে জরুরি সেবা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।

অবরোধের কারণে তিন দিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পরেছে সাধারণ মানুষ। সাজেকে আটকে পরা ৫১৮ জন পর্যটককে সেনা নিরাপত্তা সাজেক থেকে খাগড়াছড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সোমবার দুপুরে তারা খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছান।

খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী স্কয়ার, শাপলা চত্বর, কলেজ গেইট, স্বনির্ভর, জিরো মাইলে চেকপোস্ট বসিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ১৪৪ ধারার মধ্যে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়িতে চলমান এ উত্তেজনা শুরু হয় বুধবার; আগের দিন রাতে ‘অচেতন অবস্থায়’ ক্ষেত থেকে এক মারমা কিশোরীকে উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

মঙ্গলবার রাতেই ওই কিশোরীর বাবা ধর্ষণের অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন ভোরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর মধ্যে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় খাগড়াছড়িতে। এই আন্দোলন এক সময় সহিংস হয়ে ওঠে।

১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি অতিরিক্ত সেনা ও বিজিবি মোতায়েনের পরও পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে।

রোববার ১৪৪ ধারার মধ্যেই গুইমারায় ব্যাপক সহিংসতা হয়। সেখানে গুলিতে নিহত হয় তিনজন।

তারা হলেন— গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের রামসু বাজার এলাকার আলাকাই মারমার ছেলে তৈইচিং মারমা (২০), আমতলী পাড়ার থুহলাঅং মারমার ছেলে আথুইপ্রু মারমা (২১) ও চেং গুলি পাড়ার হাসু মারমার ছেলে আখ্রাউ মারমা (২২)।

রোববারের সংঘাতে সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ ১৬ সদস্য এবং গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন আহত হন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবীব পলাশ বলেছেন, নিহতদের ময়নাতদন্ত ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, “গতকাল রোববার থেকে আজ সকাল পর্যন্ত ১৪ জনকে নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে গতকাল রাতে চট্টগ্রামে রেফার করা হয়েছে। বর্তমানে ১৩ জন চিকিৎসাধীন আছেন।”

গুইমারা থানার ওসি মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, সোমবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইন-আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল চলছে।

“পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোথাও পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি।”

জাতীয়

জুলাই আন্দোলন দমাতে ফোনে হাজারো নির্দেশনা দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বছরের ৫ আগস্ট পালিয়ে যখন ভারতের দিল্লিতে তিনি, তখন ঢাকায় তার সেসব কল রেকর্ড মুছে ফেলতে ব্যস্ত ছিলেন এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এসব তথ্য জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর জোহা।

তিনি জানান, লোক পাঠিয়ে সেদিন (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় এনটিএমসির সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া হয় শেখ হাসিনার চারটি নাম্বারের মালিকানার তথ্যসহ প্রায় এক হাজার কল রেকর্ড। তবে তা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

তানভীর জোহা আরও জানান, একইসঙ্গে মুছে ফেলা হয় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সাবেক এক পরিকল্পনা মন্ত্রীর কল রেকর্ডও।

জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় মোট চারটি ফোন নাম্বারে কথা বলতেন শেখ হাসিনা। যদিও এসব ফোনের মালিকানার তথ্য মুছে ফেলা হয় ৫ আগস্ট সন্ধ্যায়।

এনটিএমসির তৎকালীন মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নির্দেশে ওপেন সোর্সের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া এক ব্যক্তি এই তথ্য মোছার কাজ করেন।

এ বিষয়ে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর জোহা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে শনাক্ত চারটি নম্বরই শেখ হাসিনার। এই নম্বরগুলোর মুছে ফেলা ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধারে কাজ চলছে। ’

জাতীয়
জাতীয়

শরতে ঘরে যদি থাকে কাশফুলের আভা তবে শীতে থাকতে পারে উষ্ণ আলোর ছোঁয়া।

শরৎকাল মানেই উজ্জ্বল আকাশ, আকাশে সাদা মেঘের খেলা আর কাশফুলের মেলা।

অন্যদিকে শীত কিছুটা শুষ্ক তবে ঘর সাজানোর জন্য নানান উপকরণ মেলে এ সময়ে। গ্রীষ্মের গরমেরও আছে রং।

আর বসন্তে-তো সবই নতুন। আছে রং, উজ্জ্বলতা আর উৎসব।

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘরের সাজেও তাই আনা যায় নতুনত্ব।

অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরিন বলেন, “গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, বসন্ত, শীত সব সময় ঘরে উষ্ণতা, আরাম ও নান্দনিকতার সমন্বয় ঘটানোই মূল লক্ষ্য। সব মৌসুমেই কয়েকটি ছোটখাটো সজ্জা উপকরণই ঘরের চেহারা পাল্টে দিতে পারে।”

তারহীন আলো

যে কোনো সময়েই ঘরের উষ্ণতা ফুটিয়ে তোলার জন্য তারহীন ল্যাম্প বেশ কার্যকর। এসব ল্যাম্প যে কোনো জায়গায় রাখা যায়— সাইড টেবিলে, বুকশেলফে, এমনকি বারান্দা বা বাগানেও।

এগুলো সহজেই সরানো যায় এবং মেজাজ অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করা যায়।

বিশেষ করে যেসব ল্যাম্পে আলো নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা রয়েছে, সেগুলো সব ঋতুর জন্য আদর্শ।

নানান গাছ, ফুলের শাখা

ঋতুর পরিবর্তনের সাথে আগের ঋতুর ফুল ও গাছের ডাল-পালা বদলে ফেলা যায়। লাল, বেগুনি ও বাদামি রং শরতের আবহের সাথে সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়।

ফুলদানি ভরে ডাইনিং টেবিল বা সেন্টার টেবিলে রাখলে ঘরে আনবে প্রাকৃতিক ছোঁয়া।

একটি শাখা রাখলে হবে ‘মিনিমাল লুক’, আর একাধিক শাখা মিলিয়ে সাজালে ঘরে আসবে জমকালো আমেজ।

ছোট ফ্রেমের শিল্পকর্ম

ছোট আকারের ফ্রেম ঘরের সাজে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। কাঠ বা রং করা ফ্রেম ঘরে উষ্ণতার আবহ আনে।

প্রকৃতি-প্রাণিত চিত্রকর্ম বা আলোকচিত্র ঘরের সাজের জন্য আদর্শ। কারণ এগুলো মাটির আভা ও প্রাকৃতিক রংয়ের সাথে মানিয়ে যায়।

ঝালর ও শোভাযুক্ত নকশা

ঘরের সাজে ঝালর, ট্যাসল বা পশম-অনুপ্রাণিত নকশা বেশ জনপ্রিয়। এগুলো ঘরে আনে গ্ল্যামার ও বৈচিত্র্য।

গুলশান নাসরিনের মতে, “ভারী ও আরামদায়ক উপাদানের সাথে এসব শোভা মিশিয়ে নিলে তৈরি হয় নতুন ধরনের সৌন্দর্য, যা আধুনিক অথচ ক্লাসিক ধাঁচের।”

স্টেটমেন্ট বাটি

খাবার ঘর বা রান্নাঘর সাজানোর জন্য বড় বাটি বা পেডেস্টাল বা স্ট্যান্ড বাটি এখন বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এতে রাখা যায় ফলমূল বা স্বাস্থ্যকর নাস্তা।

গোলাকার আকৃতির দুটি বাটি পাশাপাশি রাখলে ঘরে দৃশ্য ভারসাম্য তৈরি হয়। সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী এই উপকরণ ঘরের সাজে যোগ করবে অনন্য মাত্রা।

ভেলভেট কাপড়

ভেলভেট কাপড় আসবাবপত্রে এখনও ব্যবহার হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী ফুলেল নকশা বা চেক ডিজাইনের সাথে এই কাপড় মিশিয়ে ব্যবহার করলে ঘরে আসে সমকালীন ও চিরায়ত সৌন্দর্য।

গাঢ় সোনালি বা উজ্জ্বল রংয়ে তৈরি সোফা বা চেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘরের সাজকে উন্নত করে তোলে।

প্রাচীন ও সংগ্রহশালা উপকরণ

ঘরের সাজে প্রাচীন ও সংগ্রহশালা জিনিসপত্র অপরিহার্য। পুরানো টেবিল, ব্যবহৃত পুরানো চেয়ার বা পুরানো শিল্পকর্ম ঘরে আনে উষ্ণতা ও ইতিহাসের ছোঁয়া।

পরিষ্কার লাইনযুক্ত আধুনিক সোফার পাশে একটি কাঠের সাইড টেবিল বা পুরানো ট্রাঙ্ককে পার্শ্ব টেবিল বানালে তৈরি হয় ভিন্নরকম পরিবেশ, যা সব আবহে একেবারে মানানসই।

জাতীয়

প্রকাশকেরা প্রস্তুতির জন্য কম সময় পেলেও ‘অপেক্ষাকৃত বেশি গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো’ এবার মেলায় প্রকাশ পাবে বলে আশা মাজহারুল ইসলামের।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের রীতি থাকলেও নির্বাচন আর রোজার কারণে এবার তা এগিয়ে আনা হয়েছে ডিসেম্বর মাসে; এর জন্য কতটা প্রস্তুত প্রকাশক ও ছাপাখানা সংশ্লিষ্টরা?

কারণ নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ছাপাখানায় ডায়েরি, ক্যালেন্ডার এবং বিভিন্ন পাঠ্যবই ছাপার ব্যস্ততা থাকে, তার মধ্যে সৃজনশীল বই ছাপা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তার কথাই বলেছেন তারা।

প্রকাশক ও ছাপাখানা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডায়েরি-ক্যালেন্ডার ছাপার কাজের মধ্যে সৃজনশীল বইয়ের কাজ ‘দ্বিগুণ চাপ’ হয়ে যাবে। তবে বই ছাপায় কাগজের কোনো ঘাটতি হবে না বলে মনে করছেন কাগজ ব্যবসায়ীরা।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রোজা শুরু হবে। তার আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ দুটো বিষয় মাথায় রেখেই একুশে বইমেলার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বললেন।

তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে যেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা এবং মানুষের আগ্রহ বইমেলাকে ঘিরে কতটা থাকবে, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

“আর ঈদের ছুটিতে তো ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যাবে। এখন ঈদের ছুটির পর মেলা করতে চাইলে সেটা এপ্রিলে চলে যাবে। এপ্রিল মাসে ঝড়-বৃষ্টির একটা ব্যাপার থাকে। সে সময় বইমেলা আয়োজন করা খুব একটা বাস্তবসম্মতও হবে না। বইমেলা সংক্রান্ত সভায় আমরা ডিসেম্বরে মেলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির ফটকে চট বিছিয়ে প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা যে বই বিক্রি শুরু করেছিলেন, তা পরে একুশে বইমেলায় রূপ নেয়।

১৯৮৩ সালে এরশাদের সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কারণে একবার বইমেলা বন্ধ হয়েছিল। এছাড়া বইমেলা বন্ধ থাকার নজির নেই। তবে কোভিড মহামারীর সময় ২০২১, ২০২২, ২০২৩ সালে বইমেলার সময় পরিবর্তন করে মার্চ মাসে নেওয়া হয়েছিল।

ছাপাখানায় ‘দ্বিগুণ চাপ’

সাধারণত অক্টোবরের শেষের দিকে বইমেলার বই ছাপার কাজ শুরু হয়। এ বছর সেভাবেই কাজ এগোচ্ছে। বইমেলাকে সামনে রেখে পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করার কাজ করছেন প্রকাশকরা। তারপর ছাপার জন্য তা প্রস্তুত করে পাঠানো হবে ছাপাখানায়।

অপর দিকে নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে সাধারণত ছাপাখানাগুলো নতুন বছরের জন্য ডায়েরি, ক্যালেন্ডার ছাপা হয়। এ সময় পাঠ্যপুস্তক ছাপার ব্যস্ততাও থাকে। এজন্য সৃজনশীল বই ছাপা ও বাঁধাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা হবে বলে মনে করছেন বই বিপণনকেন্দ্র ও প্রকাশনা সংস্থা বাতিঘরের কর্ণধার দীপঙ্কর দাশ।

তিনি বলেছেন, “নভেম্বর মাসে ছাপাখানাগুলোতে ডায়েরি, ক্যালেন্ডার কিংবা পাঠ্যপুস্তক ছাপার জন্য কিছু চাপ থাকবে, তাতে সৃজনশীল বই ছাপার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা হবে।”

‘আধুনিক আলিফ বুক বাইন্ডিং’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মাহিন মিয়া বলেন, “আমাদের কাছে যেসব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে বই বাঁধাইয়ের জন্য আসে, তাদেরকে বলছি- এবার একটু আগে পাঠাইয়েন।

“কারণ ওই সময় তো ডায়েরি-ক্যালেন্ডারের কাজের চাপ থাকে। ফলে বইমেলার কাজটা ডাবল চাপ হয়ে যাবে।”

বই ছাপতে কাগজের সংকট হবে কি না, জানতে চাইলে নয়াবাজারের ‘সুইস করপোরেশন’ এর স্বত্ত্বাধিকারী অসীম আচার্য্য বলেছেন, “বাজারে পর্যাপ্ত কাগজ আছে। আর বাজারে কাগজের দামও এখন অন্য সময়ের তুলনায় কম আছে। ১০০ গ্রাম কাগজ প্রতি রিম ৩৮০০ টাকা এবং ৮০ গ্রাম কাগজ প্রতি রিম ৩১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”

এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, “বইমেলায় সাধারণত যে সৃজনশীল বই ছাপা হয়, আমাদের কাছে যে কাগজ থাকে–তা দিয়েই হয়ে যায়। বিদেশ থেকে আমদানি করা লাগে না। আর সৃজনশীল বই তো ছাপাও খুব বেশি হয় না।”

“ডায়েরি বা অন্যান্য পাঠ্যবই যেমন লাখ লাখ কপি ছাপা হয়, সৃজনশীল বই তো এত বেশি ছাপা হয় না। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত কাগজ আছে। বইমেলাকেন্দ্রিক যে কাগজ বিক্রি, তা এখনো বিক্রি তেমন শুরু হয়নি।”

কাঁটাবনের ‘এস আর এল প্রিন্টিং প্রেস’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ শাহীন মিয়া বলেন, “নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে তো ক্যালেন্ডার ছাপার কাজ বেশি থাকে। সৃজনশীল বই তো ছাপা হয় কম। লাভও কম হয়।

“বইমেলা যদি জানুয়ারিতেও করা হইত, আমাদের চাপটা কমত। এখন চাপ বেশি হয়ে যাবে।”

লেখক, প্রকাশকেরা কী বলছেন

বইমেলা ডিসেম্বরে এগিয়ে আনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চলছে নানামুখি আলোচনা। কেউ মেলা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন; আবার কেউ মনে করছেন ফেব্রুয়ারি মাসের ‘একুশে বইমেলা’ ডিসেম্বরে আয়োজন করা হলে মেলার ঐহিত্য ও চেতনা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকটমকে বলেন, “মেলা না হওয়ার চেয়ে ‘অসময়েই’ মেলা হওয়াটা তো ভালো। আমরা জানি নির্বাচনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হলে দলগুলো হুড়মুড় করে পথে নেমে যাবে। নির্বাচনের আগে কমপক্ষে চার সপ্তাহ মাঠ খুব গরম থাকবে। মেলাটি তার আগেই শেষ হয়ে যাওয়া ভালো।”

এবারের মেলাতেও ‘মব’ আতঙ্ক থাকা নিয়ে শঙ্কার কথা বললেন মহিউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “মেলায় ভবঘুরে আর বখাটেদের উৎপাত কীভাবে ঠেকানো যায় ভাবতে হবে, যার সাম্প্রতিক রূপ হচ্ছে ‘মব’। গত বছর এ কারণে মেলার আবহ নষ্ট হয়েছিল। লেখক ও প্রকাশকরা অনেক ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন। এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়।”

প্রকাশকদের একটি বড় অংশই মনে করছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনি আবহে বইমেলা জমবে না। আর মেলা যদি ফেব্রুয়ারি মাসের পরে করা হয়, তাতেও আমেজ থাকবে না। এজন্য মেলা এগিয়ে আনাটাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত।

বইমেলা ফেব্রুয়ারির আগে আয়োজনের প্রস্তাব করে গত ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি লিখিত আকারে তিনটি সম্ভাব্য তারিখের কথা বলেছিল। তাদের প্রস্তাবে ১৫ ডিসেম্বর হতে ১৫ জানুয়ারি, ১ জানুয়ারি হতে ৩১ জানুয়ারি এবং ৫ জানুয়ারি হতে ৫ ফেব্রুয়ারির যে কোনো একটি সময়ে মেলা হতে পারে বলা হয়েছিল।

বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক সভায় ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত বইমেলার তারিখ নির্ধারণ করে।

পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচালক ও বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক আবুল বাশার ফিরোজ শেখ বলেছেন, “এবার বাস্তবতার কারণেই বইমেলা এগিয়ে আনা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সমিতির বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলা এগিয়ে আনার। আমরা এ প্রস্তাব লিখিত আকারে মেলা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলামও।”

প্রকাশন প্রতিষ্ঠান অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামও বলেছেন, বাস্তবতা মেনে এবার মেলা ডিসেম্বরে আয়োজনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একাডেমি, তা ইতিবাচক।

তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে মেলায় নিরাপত্তা এবং নানান রকম সংকট তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরে মেলা হওয়াটা ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমার মনে হয় ডিসেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পরীক্ষা শেষ হবে। শীতের আমেজ থাকবে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বরে মেলা বেশ জমজমাটই হবে।”

প্রকাশকেরা প্রস্তুতির জন্য কম সময় পেলেও ‘অপেক্ষাকৃত বেশি গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো’ এবার মেলায় প্রকাশ পাবে বলে আশা মাজহারুল ইসলামের।

বাতিঘরের দীপঙ্কর দাশ বলছেন, ‘মেলা ফেব্রুয়ারির আগে আয়োজন করাটা বাস্তবতা মেনে সঠিক সিদ্ধান্তই হয়েছে। তবে একটু বেশি এগিয়ে আনা হয়েছে। এখন যে প্রশ্নটা উঠেছে, ২৬ সালের মেলা কেন ২৫ সালে হচ্ছে। মেলা যদি জানুয়ারি মাসে আয়োজন করা হতো। তবে এই প্রশ্নটা উঠত না।”

মাসব্যাপী না করে মেলা ১৫ দিন আয়োজন করার প্রস্তাবও দীপঙ্করের। তিনি বলেন, “জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৫ দিন মেলা হলে ভালো হতো।”

জাতীয়

‎নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাঁচ বস্তা এনআইডি কার্ড এবং বিপুল সংখ্যক পোলিং অফিসারের কার্ড ও সিল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লা স্টেডিয়াম এলাকা থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

এসব এনআইডি কার্ড এবং পোলিং অফিসারদের কার্ড ও সিল সবই গাজীপুর সদর এলাকার।
বর্তমানে উদ্ধারকৃত এনআইডি কার্ড ও সরঞ্জামাদি নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন কমিশনের অফিসে রয়েছে।

প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে একটি সাদা গাড়িতে করে কিছু লোক এসে স্টেডিয়ামের সামনে ময়লার ভাগাড়ে কয়েকটি বস্তা ফেলে যায়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

প্রথমে ময়লার বস্তা ভাবা হলেও পরিষ্কার বস্তা দেখে তাদের সন্দেহ হয়। এ সময় বস্তাগুলো খুলতেই বেরিয়ে আসে এনআইডি কার্ডসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সিলসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নাজমুল হাসান বাবু জানান, স্টেডিয়াম এলাকায় আমি একটি স’মিল করছি। সেটির কাজ চলছিল। আমি এখানে ময়লা না ফেলার জন্য বেশ কয়েকদিন যাবত প্রচারণা চালিয়ে আসছি। সন্ধ্যার দিকে কিছু লোক এখানে সাদা একটি গাড়িতে এসে কয়েকটি বস্তা ফেলে যায়। এ সময় তারা ময়লা ফেলছে সন্দেহ হলে আমার লোকজন সেখানে গিয়ে বস্তাভর্তি এনআইডি কার্ড দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসে এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা কার্ডগুলো উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কার্ডগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার রাকিবুজ্জামান জানান, উদ্ধার কার্ডগুলো আমাদের এলাকার না। এ কার্ডগুলো গাজীপুরের। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে কার্ডগুলো পরিত্যক্ত মনে হয়েছে। এগুলো স্মার্টকার্ড নয়, পুরনো কার্ড।

জাতীয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের ২ কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাদের একজন হলেন মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও অপরজন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন।

রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এই দুই কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত পদে প্রেষণে নিয়োগের জন্য তাদের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।

এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। তবে এই দুজনকে কোন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠানো হবে- তা জানানো হয়নি প্রজ্ঞাপনে।

জাতীয়

নিত্যপণ্যের দৈনন্দিন দাম জানতে ‘বাজারদর’ নামে নতুন একটি অ্যাপ চালু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অ্যাপটির মাধ্যমে শতাধিক পণ্যের দাম প্রতিদিন হালনাগাদ করে ব্যবহারকারীদের সহজে জানানো হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রচারণায় ভিডিও বার্তায় অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঠিক দাম জানার ক্ষেত্রে যদি দ্বিধা থাকে, তা আর থাকবে না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এনেছে ‘বাজারদর’ অ্যাপ। গুগল প্লে-স্টোর থেকে এটি ডাউনলোড করে প্রতিদিনের বাজারদর জানতে পারবেন এবং সচেতন হবেন।’

অ্যাপে ‘খাদ্যসামগ্রী’ ও ‘অন্যান্য’ নামে দুটি বিভাগ রয়েছে। ‘খাদ্যসামগ্রী’ বিভাগে চাল, আটা/ময়দা, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ, ডাল, আলু, মসলা, মাছ ও মাংস, দুধ, ডিম, শাকসবজি এবং ফলের দাম প্রতিদিন হালনাগাদ করা হবে। চালের ক্ষেত্রে পাঁচটি ধরন—সরু (নাজির/মিনিকেট), মাঝারি (পাইজাম/আটাশ), মোটা (স্বর্ণা/চায়না ইরি), সুগন্ধি ও কাটারিভোগ—প্রতিদিনের দাম জানা যাবে। আটা/ময়দা ও চিনি-লবণের জন্য খোলা এবং প্যাকেটজাত আলাদা দাম দেওয়া হয়েছে। ডালের মধ্যে মশুর, মুগ এবং এ্যাংকর ডালের বিভিন্ন ধরনের দাম এখানে হালনাগাদ করা হবে।

আলুর ক্ষেত্রে ডায়মন্ড, লাল, হল্যান্ড ও মিষ্টি আলুর দাম পাওয়া যাবে। মসলার মধ্যে দেশি পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, হলুদ, আদা, জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনিয়া ও তেজপাতার দাম প্রতিদিন হালনাগাদ থাকবে। মাছ ও মাংসের মধ্যে রুই, কাতল, চিতল, বোয়াল, আইড়, ইলিশ, চিংড়ি, মাগুর, কই, টেংরা, মুরগী, হাঁস, কবুতর, কোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ও পাখির দাম জানা যাবে।

দুধ, ডিম এবং শাক-সবজি ও ফলের ক্ষেত্রেও প্রতিদিনের দাম আপডেট করা হয়। শাকের মধ্যে পুঁইশাক, লালশাক, পালং, কচু শাক, বেগুন, পটল, টমেটো, লাউ, করলা, গাজর, ঢেড়স, লেবু, ধনিয়া পাতা, শশা, কচুর মুখি ইত্যাদির দাম এবং ফলের মধ্যে পেয়ারা, কাঁঠাল, আনারস, জাম্বুরা, আম, আপেল, কমলা, ড্রাগন ফল, কলা, আঙ্গুর সহ বিভিন্ন ফলের দাম জানা যাবে।

‘অন্যান্য’ বিভাগে জ্বালানি পণ্যের দাম হালনাগাদ করা হয়। এখানে ১২ কেজি, ৩০ কেজি ও অন্যান্য ওজনের এলপিজি গ্যাস, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের দাম জানা যাবে।

অ্যাপটি ব্যবহার করতে গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড ও ইনস্টল করে ব্যবহারকারীর বিভাগ ও জেলা নিবন্ধন করতে হবে। এরপর ‘খাদ্যসামগ্রী’ বা ‘অন্যান্য’ অপশন থেকে নির্দিষ্ট পণ্য নির্বাচন করে প্রতিদিনের দাম জানা যাবে। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে চলবে এবং অফলাইনে ব্যবহারের সুবিধাও রয়েছে।

জাতীয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ১৯২ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে এই ইলিশ রপ্তানি করা হয়।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকার যে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় এরই অংশ হিসেবে আখাউড়া দিয়ে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে ইলিশ। এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৯০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রপ্তানিকারক সূত্র জানায়, ১২.৫ ডলার হিসেবে প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়েছে প্রায় ১৫২৫ টাকা। একেকটি ইলিশ প্রায় এক কেজির মতো ওজন। ইলিশ রপ্তানি করছে মাহতাব এন্টারপ্রাইজ। সিএন্ডএফ ছিল কনস্ট্রাকশন।

আরো একাধিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫ অক্টোবরের মধ্যে বাকি ইলিশ রপ্তানি হবে।

আখাউড়া উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, মাছের তাপমাত্রাসহ অন্যান্য বিষয় তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন। মাছ রপ্তানিযোগ্য অনুযায়ী ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রক্রিয়া বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করবেন।