জাতীয়

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, আমরা গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা চাই, অপতথ্যকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই। আমরা দিন শেষে চাই গুজব বা রিউমারমুক্ত গণমাধ্যম। যেখানে তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকবে এবং সরকার বা অথোরিটিকে অবশ্যই প্রশ্ন করা হবে। উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে এবং সমালোচনার জায়গা থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন ওনার্স এসোসিয়েশন-এটকো’র সাথে এক সভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রথম কেবিনেট মিটিংয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনা হবে, কিছু কিছু সমালোচনা হবে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে, সেগুলো জেনে সুধরে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তিনি চান সমালোচনা হোক সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার বা সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কাজ নিয়ে যদি কোনো বিচ্যুতি বা ব্যর্থতা থাকে অবশ্যই সমালোচনা হবে এবং সেটা যদি প্রথম পাতায় প্রিন্ট মিডিয়া বা ইলেক্টনিক মিডিয়াতে হেডলাইনে থাকে তাহলে সরকারের সেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা ব্যক্তিবর্গ যে জবাব দিবেন সেই জবাবগুলো যাতে একইভাবে গুরুত্বসহকারে মিডিয়াতে আসে; যেন জনগণ একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। কারণ,
গণতন্ত্রে কিন্তু মানুষকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং ইনফর্ম ডিসিশন নিতে হয়।

এ আরাফাত বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এক ধরণের অপচেষ্টা চলে। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের যে বিস্তৃতি ঘটেছে সেখানে কীভাবে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো যায় এবং শৃঙ্খলা আনা যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রথমেই সতর্ক থাকতে হবে, আমরা যেমন মিসইনফরমেশনকে নির্মূল করতে চাই, অপতথ্যকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই কিন্তু সেটি করতে যেয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সেখানে যেন ওভারস্টেপ না হয়। তবে দেশ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, মুক্তিযুদ্ধ এবং ত্রিশ লক্ষ শহিদদের নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতে পারে না। এগুলো দেশবিরোধী কর্মকান্ড।

তিনি মনে করেন আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে সমালোচনার স্পেজ রেখে কীভাবে একসাথে কাজ করা যায় সেই চেষ্টা থাকবে।

বৈঠকে অ্যাটকো নেতৃবৃন্দ ইলেক্ট্রোনক মিডিয়ার সম্প্রসারণ ও উন্নতির জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করলে প্রতিমন্ত্রী এ লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।

ডিবিসি চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের মতো ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি পৃথক প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক টিভির পরিচালক নাবিদুল হক, বৈশাখী টিভির উপ-ব্যবস্থাপক টিটু আলম মিলন, এনটিভির পরিচালক মো. আশফাক উদ্দিন আহমেদ।

জাতীয়

রাজধানীর উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াড এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ একজন তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই বিদেশিকে অবৈধ মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ এবং ডিএনসির একটি যৌথ আভিযানিক দল উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইনে অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সাথে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াডও অংশ নেয়।

হোটেলটির দোতলায় ১০২ নাম্বার রুমের অধিবাসী হিসেবে ছিলেন তাঞ্জানিয়ার অধিবাসী মোহাম্মেদি আলি (৫৫)। আভিযানিক দল প্রথমেই তাকে আটক করে। এরপর তাকে মাদকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ সময় সাথে থাকা এপিবিএনের ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় আলির কক্ষটিতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি চলাকালে এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের ডগ অলি বিদেশি মোহাম্মেদির সাথে থাকা কালো একটি ব্যাগে মাদক রয়েছে বলে তার হ্যান্ডলারকে সতর্ক করে। পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি ব্যাগটি সার্চ করলে তার ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।

গত ২০ জানুয়ারি তিনি আদ্দিস আবাবা-দোহা হয়ে ঢাকায় আসেন এবং হোটেল এফোর্ড ইনের ১০২ নাম্বার রুমে ওঠেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আরও জানান, ২০১৭ সালে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন শুরু করে। শুরুতে ৮টি ডগ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে ২২টি ডগ রয়েছে এপিবিএনের। এ সকল ডগ বিস্ফোরক এবং মাদক উদ্ধারে পারদর্শী। আজকের অভিযানে ডগ অলি এবং তার হ্যান্ডলার সুনেত্রার সহযোগিতায় মাদকের ব্যাগটি শনাক্ত করা হয়।

গ্রেফতার আলির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উল্লেখ্য, গতকালও এয়ারপোর্ট এপিবিএন এবং ডিএনসির যৌথ অভিযানে মালাউয়ের এক নারীকে ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেনসহ গ্রেফতার করা হয়।

জাতীয়

সপ্তাহের ব্যবধানে রোজায় ব্যবহৃত পণ্য- ছোলা, ভোজ্যতেল, ডাল, পেঁয়াজের দাম আরেক দফা বেড়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের মসলা পণ্যের দামও বাড়তি। এছাড়া প্রতি কেজি আলু কিনতে ক্রেতা সাধারণের ফের ৫ টাকা বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) বলছে, খুচরা বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে টিসিবি জানায়, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ছোলার দাম ৫.৪১ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মুগ ডালের দাম বেড়েছে ১৩.৪৬ শতাংশ, প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েল ১.৯৬ শতাংশ, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩.৩৩ শতাংশ, রসুন ১২.৫০ শতাংশ, হলুদ ৩.১৭ শতাংশ, দারুচিনি ৩ শতাংশ, এলাচ ১.০৫ শতাংশ ও প্রতি কেজি আলু ৫.৫৬ শতাংশ দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। যা ৭ দিন আগে ৯৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ১৬০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। যা সপ্তাহ আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। যা ৭ দিন আগে ১৩০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আলু গত সপ্তাহে ৪০ টাকায় কেনা গেলেও বৃহস্পতিবার ৪৫ টাকায় কিনতে হয়েছে।

রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. আবু হুসাইন বলেন, বাজারে দেখা যাচ্ছে প্রতি সপ্তাহেই একটু একটু করে রোজার পণ্যের দাম বাড়ছে। কারও যেন কোনো মাথাব্যথা নেই। তদারকি সংস্থাও এক প্রকার নীরব ভূমিকা পালন করছে। আর এ সুযোগে অসাধু বিক্রেতারা পাল্লা দিয়ে দফায় দফায় রোজার পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে। মনে হচ্ছে প্রতিবছরের মতো এবারও রোজায় বাড়তি দরে পণ্য কিনতে হবে। আর অতি মুনাফা করবে শক্তিশালী সেই সিন্ডিকেট।

একই বাজারে মুদি পণ্য বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, পাইকারি আড়তে দুই মাস আগ থেকেই রোজার পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। যে কারণে বাড়তি দরে এনে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এখনই তদারকি না করা হলে দাম সামনে আরও বাড়বে।

রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি ছোট দানার এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ২৩০০ টাকা ছিল।

রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা সোহেল বলেন, বাজারে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়ে আর আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতার ঘুম হারাম হয়। যারা এসব বিষয়ে দেখবে তারা যেন নির্বিকার। মন্ত্রীরা শুধু কথার মাধ্যমে মিডিয়া গরম করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেন না। সবকিছুই কথায়, কাজে কিছুই হয় না। আমাদের মতো ক্রেতাদের বাড়ে ভোগান্তি। আর এ ভোগান্তি কখনো শেষ হয় না।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটু সদয় নজর দিতে হবে। একের পর এক পণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। বিশেষ করে রোজার পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু বাজারে দৃশ্যমান নজরদারি দেখা যাচ্ছে না। তাই সরকার সংশ্লিষ্টদের উচিত কঠোরভাবে বাজারে তদারকি করা। কোনো অনিয়ম পেলে অসাধুদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া।

বৃহস্পতিবার বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রোজা ঘিরে তদারকি চলমান রয়েছে। শুধু ভোক্তা অধিদপ্তরই নয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য অধিদপ্তরও বাজারে তদারকিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইতোমধ্যে কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আবার কিছু পণ্যের দাম কেন বেড়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ সময় কোনো অনিয়ম পেলে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয়

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনের উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক সরকার। এটাকে শিশুবান্ধব করে গড়ে তোলা হবে।

এখানকার বৃক্ষরাজি, জলাশয় ইত্যাদি সংরক্ষণে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে কাজ করা হবে।
মন্ত্রী সোমবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার অফিস কক্ষে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ইত্যাদি বাস্তবায়নেও ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে আমরা আগ্রহী।

হাইকমিশনার বলেন, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করবে।

বৈঠকে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, উদ্ভাবন ও গবেষণা, নবায়নযোগ্য শক্তি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, জলবায়ু অংশীদারিত্ব, সক্ষমতা বৃদ্ধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য, জলবায়ু অভিবাসীদের পুনর্বাসনসহ দুই পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয়।

জাতীয়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমা আমাদের জন্য একটা গর্বের বিষয়। টঙ্গীর ইজতেমা সারাবিশ্বের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আপনাদের মনোভাব এক করতে পারি নাই, সেজন্য আমরা কষ্ট পাই।

তিনি বলেন, আপনারা সবাই মিলেমিশে (মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম) যদি আবার এক প্লেটে খেতে পারতেন, আমরা দেখে যেতে পারতাম তাহলে খুশি হতাম।

সোমবার বিকালে ইজতেমা ময়দানসংলগ্ন বাটা রোডে বিশ্ব ইজতেমা প্রস্তুতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ফলোআপ সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রথম পর্বের আয়োজকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের (মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী) দাবির প্রেক্ষিতেই প্রতি বছর প্রথমেই আপনাদের সুযোগ করে দেই। সে দাবি রক্ষা করে সম্মানের সঙ্গে মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। যাতে কোনো প্রকার ভাঙচুর না হয়, কেউ যাতে কোনো অভিযোগ না করে, এটা আমার অনুরোধ। আমরা গতবারও শুনেছি ভাঙচুর হয়েছে, কিছু জিনিস খোয়া গেছে, নানা ধরনের কথাবার্তা শুনেছি। আমরা চাই সুন্দরভাবে মাঠটা বুঝিয়ে দেবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে আমরা যারা এসেছি সবাই চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্য এই ইজতেমার সুনাম যাতে অক্ষুন্ন থাকে। গতকাল থেকে কিছু ঘটনা ঘটছে, যা দুঃখজনক। সবার কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ রইলো এসব ঘটনা আর ঘটাবেন না, সবাই মিলেমিশে থাকবেন। মসজিদে গিয়ে, আল্লাহর ঘরে গিয়ে দখল-বেদখল করেন- এমন কিছু আমাদের জন্য লজ্জার। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকল এসব কাজ থেকে আপনারা বিরত থাকবেন, মিলেমিশে চলবেন। আমাদের সে শিক্ষাটাই দেবেন। আল্লাহর দাওয়াতের শিক্ষাটা যেমন দিচ্ছেন, তেমনি মিলেমিশে থাকার শিক্ষাটাও দেবেন।

তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আগত মুসল্লিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ময়দানের চারপাশে নিয়োজিত থাকবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজক কমিটির কাছে ময়দান বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ব্যবস্থা নেবেন; যাতে দুপুর না গড়িয়ে সকালের মধ্যে দ্বিতীয় পক্ষের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন গাজীপুর।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম, ইজতেমার মুরুব্বি প্রকোশলী খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।

এ সময় পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ডেসকো, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, সরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, টঙ্গীতে আগামী ২-৪ ফেব্রুয়ারি ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব এবং ৯-১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্বে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব।

মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সা’দ অনুসারীরা অংশ নেবেন। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমা।

জাতীয়

দেশে শীত কমার আপাতত কোনো সুখবর নেই। মঙ্গলবার তাপমাত্রা আরও এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। এদিকে তীব্র শীতের মধ্যেই এবার চার বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে-এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার ঢাকা, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েক জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। মঙ্গলবার কোথাও কোথাও কমতে পারে তাপমাত্রা। তীব্র শীতের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

কুয়াশার কারণেই অস্বস্তিকর অবস্থা চলছে। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। উত্তর-পশ্চিমের বাতাসের কারণে দেশের কোথাও কোথাও বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে দেশের যেসব অঞ্চলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকবে, ওই অঞ্চলে স্কুল বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু সব জায়গায় সেটি মানা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানাতে দেরি হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা সকালে স্কুলে চলে এসেছে। পরে জানতে পেরেছে বন্ধের খবর।

বিশেষ করে দিনাজপুর, বগুড়া, পঞ্চগড়, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে এমনটি ঘটেছে। যশোরে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি থাকলেও সোমবার খোলা ছিল সব স্কুল। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। আবার কোথাও কোথাও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসহ প্রায় ১৫টি জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকায় বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এদিকে শীতের কারণে নিম্নবিত্তদের আয়ে প্রভাব পড়ছে। বাড়ছে শীতকালীন রোগবালাই। তবে ঢাকায় গরম কাপড় বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এছাড়াও উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিত অংশ পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। এসবের প্রভাবে বাংলাদেশে তাপমাত্রা কমছে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

কুয়াশার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মঙ্গলবার মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তা দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোথাও অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলা; রংপুর বিভাগের ৮ জেলা এবং রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলাসহ ২২ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজও তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুর ও বদলগাছীতে ৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রয়েছে এমন স্থানগুলো হলো রাজারহাট ৮.৪, সৈয়দুপুর ৮.৮, ডিমলা ৮.৮, টাঙ্গাইল ৮.৯, বগুড়া ৯.১, ঈশ্বরদী ৯.২, চুয়াডাঙ্গা ৯.৫, যশোর ও কুমারখালী ৯.৮, মাদারীপুর ৯.৯ এবং রাজশাহী ও নিকলি ১০। আর সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান ৫ ডিগ্রির নিচে থাকলে তীব্র শীত অনুভূত হয়। ইতোমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কিছু এলাকা যা ৫ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে। এসব এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তীব্র এবং ৪ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে।

ছয় ঋতুর এ দেশে পৌষ ও মাঘকে শীতকাল বলা হয়। এ দুই মাসে বেশি শীত পড়ে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছরে তাতে ছন্দপতন হয়েছে। এ বছর ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর ২৩ অগ্রহায়ণ থেকে ঢাকায় কিছুটা শীত অনুভূত হয়। এরপর তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলেও পৌষের দিকে শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। এখনো অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ারির শেষের দিকে শীত আরও বাড়তে পারে।

জাতীয়

২০২৬ সালের মধ্যে দেশে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

নসরুল হামিদ বলেন, আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের একটা টাইম লাইন ঠিক করে ফেলেছি। ২০২৬ সালের মধ্যে দেশে

নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকবে। যেভাবে আমরা বিদ্যুতের বিষয়ে বলেছি, এত তারিখের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে, সেভাবেই গ্যাস নিয়ে আমরা কাজ করছি।

তিনি বলেন, এখন আমরা মাত্র ২০ শতাংশ গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করি। ৮০ শতাংশ আমরা নিজস্ব গ্যাস থেকে ব্যবহার করছি। আমরা এ ইমপোর্ট গ্যাস খুব বেশি বাড়াতে চাই না। আমরা আশাবাদী ভোলাতে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, পরে গভীর সমুদ্রে যদি গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে খুব ভালো একটা অবস্থানে জ্বালানি বিভাগ থাকবে। এ বিষয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের বিষয়ে টাকা একটি বড় বিষয়। টাকা জোগানের বিষয়ে আমরা একটা পরিকল্পনা করে রেখেছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে বসবো, কথা বলবো। টাকার জোগান যদি নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পারি, তাহলে অবশ্যই নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ দিতে পারবো।

জাতীয়

সরিষা ক্ষেতের হলুদের সমারোহে এখন কৃষি ও খাদ্যসমৃদ্ধ অঞ্চল শেরপুরের মাঠ । ক্ষেতের পর ক্ষেত ছেয়ে গেছে হলুদে। মধু আহরণে বেড়েছে মৌমাছির আনাগোনা। ছড়িয়েছে চারদিক সুবাস। পরিবেশকে করে তুলেছে মোহনীয়। আবাদও হয়েছে বাম্পার। অন্যদিকে সেই মোহনীয় পরিবেশ ও হলদে আভার পরশ নিতে ক্ষেতে ছুটছেন উৎসুক অনেকেই। আবাদি এলাকায় ঘুরে মিলেছে এমন চিত্রই।

জেলা খামারবাড়ী সূত্র জানা যায়, সরকার গত কয়েক বছর ধরে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে দেশে আমদানি নির্ভর ভোজ্য তেলের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকায় দেশীয় সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা ও প্রদর্শনী মাঠ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। ফলে গত ৫ বছরে জেলায় সরিষার আবাদ দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে হলেও এর উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। জেলায় এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই সরিষার ফলন ঘরে উঠে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে, এতে ফলন হয়েছিল ৭ হাজার ১৪৪ মেট্রিক টন। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে ৮ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৭৪০ মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ২৯ মেট্রিক টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে ১৭ হাজার ২১ মেট্রিক টন এবং চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ১৮২ হেক্টর জমিতে ও ফলন আশা করা হচ্ছে ২৫ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন। তবে চলতি বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষার আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২৫ হাজার ৯৮৫ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক জানান, আমন ধান কেটে এবার ৫ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। কৃষি বিভাগ এক কেজি বীজ ও ২০ কেজি সার দিয়েছে। ভালো আবাদ হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। আরেক কৃষক তোজাম্মেল হক জানান, তিনি সরকারি প্রণোদনায় দেড় একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। আমন ধানের পর স্বল্প সময়ে সরিষার আবাদ হওয়ায় তিনি বছরে ৩টি ফসল আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানান, সরকার দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা ও তেলজাতীয় ফসল আবাদের ওপর জোর দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে জেলার ৩০ হাজার কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গত এক বছরেই দ্বিগুণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনসংখ্যা অনুপাত হিসেবে ৬০ ভাগ সরিষার চাহিদা পূরণ হয়েছে। তবে আগামী বছর যদি ফলন ২৬ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত করা যায় তবে জেলার শতভাগ চাহিদা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও অনুরোধ করছি আপনারা সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করবেন।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) নির্বাচনের আগের দিন জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ২৮ দল, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নয়:

সিইসি বলেন, সবার সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়ে থাকে। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়। কিন্তু নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মত-বিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। নির্বাচনী সার্বজনীনতা প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তারপরও ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সর্বমোট ১৯৭১ জন (১৯৬৯ জন) প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।

অনিয়ম, দায়িত্বহীনতায় কঠোর ব্যবস্থা:

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন কেবল ভোট গ্রহণ শুরুর অপেক্ষা। নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তাকেও আইন ও বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুধাবন, প্রতিপালন ও প্রয়োগ করে সততা ও নিষ্ঠার সাথে নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক বিষয়ে আরোপিত দায়িত্বপালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, শৈথিল্য, অসততা ও ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না।

কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশীশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিক বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান:

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় নাশকতা ও সহিংসতা একেবারেই হচ্ছে না তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান ও অবসান প্রয়োজন। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে। আজকে না হলেও ভবিষ্যতের জন্য।

নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহ সহিংস পন্থা পরিহার করে কেবল শান্তিপূর্ণ পন্থায় জনগণকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাবে মর্মে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এতে জনমনে আস্থা সঞ্চারিত হয়েছিল। ঘোষিত হরতাল অবরোধের মধ্যে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে।

ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান:

সিইসি আরও বলেন, নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও অলঙ্ঘনীয় সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে জনগণকে অনুরোধ করছি আপনারা সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মূল্যবান নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।

গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা কামনা:

সরকারের সাবেক এই সিনিয়র সচিব বলেন, দৃশ্যমানতার মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ফুটিয়ে তোলা গেলে নির্বাচনের বিশুদ্ধতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নে জনমনে আস্থা সৃষ্টিতে তা সহায়ক হয়। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা প্রণিধানযোগ্য। তাই দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা আমরা একান্তভাবে কামনা করছি।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় ২৩ হাজার দেশি ও প্রায় ২০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক কাজ করবেন। পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশি ও বিদেশি সংবাদকর্মীও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং চিত্র ও তথ্য সংগ্রহে মাঠে অবস্থান করবেন।

ধারণ করা ভাষণটি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হয়।

জাতীয়

বিএনপিসহ ১৬টি দলের ভোট বর্জনের মধ্যে দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (৭ জানুয়ারি)। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এতে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতীকের প্রার্থীদের ভোটের লড়াই করতে হবে ঈগল ও ট্রাক প্রতীকের দলটিরই স্বতন্ত্র ও ‘ডামি’ প্রার্থীদের সঙ্গে।

নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ভোটের সকালে ৩৯ হাজার ৬১টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে ভোটের দিন সকালে। আর শনিবার দিন ২ হাজার ৯৬৪ বা ৭ শতাংশ কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, স্মার্ট ম্যানেজমেন্ট বিডি নামে অ্যাপে দুই ঘণ্টা পর পর ভোট পড়ার হার জানানো হবে। এছাড়া অ্যাপটিতে ভোটাররা জানতে পারবেন ভোটার নম্বর, কেন্দ্রের নাম ও লোকেশনসহ নানা তুলনামূলক চিত্র।

নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দল ১ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪৩৭ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ঈগল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৮০ জন, আর ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩৩ জন, যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা।

নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) ও গণতন্ত্রী পার্টি। এই মোট ২৮টি দল ১ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী দিয়েছে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। হাইকোর্ট থেকে তিনজন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় দলটির নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৫ জন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ২৬৪ জন, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের ৯৬ জন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নোঙর প্রতীকের ৫৬ জন।

নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের দুইজনসহ ৯৮ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর ৬৭ জন এবং স্বতন্ত্র থেকে ২৯ জন প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে, ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম জানান, ২৯৯ আসনের নির্বাচনে ৪২ হাজার ২৪টি কেন্দ্রের ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৫৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৯ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন।

নির্বাচনে ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার ১৫৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৫ লাখ ৯২ হাজার ১৬৯ জন, আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ১৪০ জন। হিজড়া ভোটার রয়েছে ৮৪৮ জন।

ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ লাখের বেশি সদস্য। তারা ভোটের এলাকায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবে।

নির্বাচনে ৬৪ জন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও দুইজন বিভাগীয় কমিশনার রিটার্নিং কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটের অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার করতে দায়িত্ব পালন করছেন ৬৫৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। আর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ২ হাজার ৭৬ জন। এছাড়া ৩০০ আসনের জন্য নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে দায়িত্ব পালন করছেন ৩০০ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল শনিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে সিইসি বলেছেন, কোনো রকম অনিয়ম, কারচুপি, দায়িত্বে অবহেলা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে বাতিল করা হতে পারে পুরো আসনের নির্বাচনও।

ইসি ইতোমধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে নৌকার এক প্রার্থীকে ১ লাখ টাকা ও আরেক প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়াও ১০ প্রার্থীসহ ৫০ জনের বেশি প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে মামলা করেছে। আবার নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিও ৭৪০টির বেশি শোকজ তলব করেছে। এছাড়া ১ হাজার ৫১ জনকে বিভিন্ন অপরাধে ৩৩ লাখ ১৫ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ লক্ষ্মীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবনের প্রার্থিতাও বাতিল করে ইসি। যদিও পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

নির্বাচনে ২০ হাজার ৭৭৩ জন দেশি পর্যবেক্ষক ও ১৭৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া রয়টার্স, এএফপি, বিবিসিসহ বিভিন্ন দেশের ৭৬ জন বিদেশি সাংবাদিক ভোটের খবর পরিবেশন করবেন। দেশি কয়েক হাজার সাংবাদিকও থাকবেন ভোটের মাঠে।

এদিকে ইসি তাদের পর্যবেক্ষক ও প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। তারা ও জেলা পর্যায়ে গঠিত মনিটরিং সেল, নির্বাচন ভবনের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলে তথ্য দেবে। কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল মাঠের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

গত ১৫ নভেম্বর সিইসি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনের তফসিল ঘোষণা করেন। এর মধ্যে এক বৈধ প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় নওগাঁও-২ আসনের নির্বাচন বাতিল করে ইসি। তাই ০৭ জানুয়ারি ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।