জাতীয়

প্রায় ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বুধবার রাতে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে। মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফেসবুকে ডিএমটিসিএলের ভেরিফায়েড পেজেও এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, কারিগরি ত্র“টি সমাধানের পর রাত ৮টা ২৫ মিনিটে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। মেট্রোরেল চলাচলে যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

এর আগে বুধবার সকালে হঠাৎ মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৪৩০ নম্বর পিলারের হেড ও ভায়াডাক্টের মাঝখানের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ায় চলাচল বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

বিয়ারিং প্যাড ভূমিকম্প, ট্রেন চলাচলের কম্পন ও তাপে সম্প্রারিত পাতের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে জানান ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ। বিকালে তিনি জানান, মেট্রোরেল চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরপরই কারণ অনুসন্ধান করে মেরামতের কাজ শেষ পর্যায়ে। সন্ধ্যায় পুরোপুরি কাজ শেষ করে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে চলাচল শুরু হয়েছে।

দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, বুধবার দিনভর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করেছে। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল না যাওয়ায় যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েন। অনেককে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। কাউকে আবার বাসে ওঠার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। কেউবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও রিকশায়, ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন। মেট্রোরেলের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ভোগের পাশাপাশি যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনে যার যার গন্তব্যে যেতে হয়েছে।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার সকালে জানায়, অনিবার্য কারণবশত সকাল ৯টা ৪০ মিনিট হতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও অংশের ট্রেন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলে পুনরায় বার্তা দিয়ে জানানো হবে।

জাতীয়

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ জ্যাকসন হাইটস ইউনিট কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর কায়সারকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপের পর তার সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিকুর রহমানের একটি লিখিত আদেশে মো. তানভীর কায়সারকে বহিষ্কার করা হয়। উক্ত বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয় বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও তানভীর কায়সার দলের নীতি, আদর্শ, চেতনা ও মূল্যবোধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় তাকে দলীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রফিকুর রহমান জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপের পর তানভীর কায়সার সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হেয় করেছেন। একজন দলীয় কর্মী হয়ে এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির দলে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাই গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্তে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে তানভীরের ফেসবুক আইডি বন্ধ রয়েছে। ফোনালাপে তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওই নেতাদের সঙ্গে তিনি আন্দোলন করবেন। কিন্তু তিনি নিজেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের হাতে ‘নির্যাতিত’ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তানভীর কায়সার ২০১৯ সালের ৪ জুন লস অ্যাঞ্জেলেস হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন। তার ভিসাটি ছিল ভ্রমণ ভিসা। পরে ২০২০ সালের ৭ মে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন।

তবে কোন সূত্রে শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন, সেটি এখনো জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকেরই কথা বলার অডিও ফাঁস হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ বিষয়টিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেও মন্তব্য করছেন। তবে এসব কল রেকর্ড কীভাবে ফাঁস হচ্ছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তানভীরের ফোনালাপ কীভাবে ফাঁস হলো এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ প্রবাসীদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।

জাতীয়

আজ সোমবার ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ৫৭০ সালের এই দিনে মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীর সভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলোকিত করে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল সরকারি ছুটি।

এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এক সময় গোটা আরব সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তারা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃংখলা। এ সময়কে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ।

তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসুলুল্লাহকে (সা.) প্রেরণ করেন এই পৃথিবীতে।

মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন।

পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিবি খাদিজা নামের এক ধর্ণাঢ্য মহিলার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত প্রাপ্ত হন। আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করেন।

বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে থাকে।

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিস্তারিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

আজ বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেইটে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।

অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সেমিনার, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, ক্বিরাত মাহফিল, হামদ-না’ত, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, ইসলামী বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ।

এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮ টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

জাতীয়

ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সব জায়গায় সবার চেয়ে বেশি ভালো হতে হবে বলে জানিয়ে সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রশিবির কর্মী যিনি যে লেভেলে আছেন তার একাডেমিক রেজাল্ট সামনের দিনে অবশ্যই ভালো হতে হবে। যারা একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করতে পারবেন না তারা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দিন।

কারণ, ছাত্রশিবিরের কর্মীদের তার ক্যাম্পাসে, তার ক্লাসরুমে কিংবা তার শিক্ষকের কাছে সবচেয়ে ভালো হতে হবে।
আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের এক সাথী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এ আহ্বান জানান।

ছাত্রশিবিরের সাথী ভাইদের সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরি করতে হবে জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছর ফ্যাসিজম কায়েমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে যেটি বেশি ভূমিকা রেখেছে সেটি ছিল ট্যাগিংয়ের রাজনীতি। আর কথায় কথায় রাজাকার! তার বাবারই জন্ম হয়নি ৭১ সালে, অথচ সে সন্তানকে আপনি রাজাকার বলেন? আর কথায় কথায় শিবির! কেমন শিবির? নামাজ পড়লে শিবির। সে দাঁড়ি রেখেছে এজন্য সে শিবির। সে টাকনুর ওপরে প্যান্ট পড়ে এজন্য সে শিবির। সে মেয়েদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করে না এজন্য সে শিবির। সে মাদকাসক্ত হয় না এজন্য সে শিবির। কতই না নির্মম ছিল এই রাষ্ট্র!

তিনি হুঁশিয়ার দেন, আমরা কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। কেউ যদি আমাদের প্রতিপক্ষ বানায় তবে তাদের প্রতি আমাদের মেসেজ হলো, আদর্শকে আদর্শ দিয়ে মোকাবিলা করুন। আদর্শকে কোনো ধরনের ট্যাগিং প্রোপাগান্ডা দিয়ে মোকাবিলা করতে আসবেন না। কারণ, আমরা যে আদর্শকে লালন করি এটি কোনো ওয়ার্কশপ করে বানানো আদর্শ নয়। আল্লাহর কাছ থেকে পাঠানো আদর্শ মেনে চলি আমরা। আপনি দুনিয়ার আদর্শ দিয়ে আমাকে মোকাবিলা করবেন? আপনাকে ওয়েলকাম। কিন্তু কোনো ধরনের ট্যাগিং, প্রোপাগাণ্ডা বা মিথ্যাচার দিয়ে মোকাবিলা করতে এলে ভবিষ্যতে তাদের এই ফ্যাসিজমের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

এ সময় সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে ছাত্রশিবির সেক্রেটারি বলেন, এই আন্দোলনের ক্রেডিটকে দলীয় ও ব্যক্তি পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা চলছে। প্রকৃত অর্থে এই আন্দোলন সবার। কারণ, এই আন্দোলন ছিল জালিমের বিপক্ষে। এজন্য অদূর ভবিষ্যতে দেশে যেন কোনো জালিমের সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই সাথী সমাবেশে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি সিফাত-উল-আলম সভাপতিত্ব করেন। এতে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. কেরামত আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন, রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন, গোলাম মর্তুজা, তৌহিদুর রহমান সুইট, জসিম উদ্দিন সরকার, হাফেজ খাইরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আব্দুল মোহাইমিনসহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

জাতীয়

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা‌ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টায় বেইলি রোডের নওরতন কলোনি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আসাদুজ্জামান নূর মিরপুর থানার একটি মামলার এজাহার নামীয় আসামি।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ১২ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

এবার সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী গ্রেপ্তার

২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার রাতে ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ওবায়দুর রহমান এক বার্তায় জানান, যাত্রাবাড়ী থানায় করা একটি মামলায় মাহবুবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের পাশাপাশি স্ত্রী ও পরিবারের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে।

হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি নির্মূলে কাজ করা সংস্থাটি।

গত ৫ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম আকতারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মত হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মাহবুব আলী। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফের জয় পেলে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কাছে প্রায় এক লাখ ভোটে হেরে যান মাহবুব আলী।

গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট দেশে ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তিন দিন পর গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।

এদের মধ্যে আছেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

শনিবার রাতে ঢাকার ইস্কাটনে গ্রেপ্তার হন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

সাবেক মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ অন্তত ২৬ জন এখন কারাগারে।

জাতীয়

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে রোববারও সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে। কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। জরুরি না হলে মানুষ ঘর থেকে বের হননি। সড়কে যানবাহন চলাচলও ছিল তুলনামূলক কম। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। টানা বৃষ্টির কারণে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা। বরিশাল, শরীয়তপুর, যশোর ও বাগেরহাট শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।

কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এসব নগরের বাসিন্দারা। লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ঝড়ো বাতাসে বৈদ্যুতিক লাইন-খুঁটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ভোলা ও হাতিয়ায় সাগরে মাছ ধরার ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হওয়া ৭০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে আরও এক লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লাশটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ জেলের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্টি হওয়া স্থল নিম্নচাপ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সীমানা ছাড়ছে। ফলে সোমবার থেকে বৃষ্টি অনেকটা কমে যেতে পারে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বরিশাল: নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ প্রধান সড়ক ও অলিগলি তলিয়ে যাওয়ায় পথচারীসহ যানচালকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর কলেজ অ্যাভিনিউ, নবগ্রাম রোড, রূপাতলী হাউজিং, বেলতলা, বৌবাজার, রসুলপুর, মোহাম্মদপুর, চরআবদানীসহ বরিশাল সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া বগুড়া রোড, পলাশপুর, হাটখোলা সড়ক, অক্সফোর্ড মিশন রোড, বিএম স্কুল লেন, কাউনিয়া হাউজিং সংলগ্ন সড়ক ও থানার গলি, শ্রীনাথ চ্যাটার্জী লেন, টিয়াখালি সড়ক, প্যারারা রোড, নিউ সার্কুলার রোড, সাগরদী জিয়ানগরসহ বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল ও সড়কে পানি উঠেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন।

শরীয়তপুর: জেলা শহরের নিরালা আবাসিক এলাকা, শান্তি নগর, হরিসভা, কলেজসংলগ্ন এলাকা, বাঘিয়া, বাসস্ট্যান্ড, দার্সাত্তা এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পালং উত্তর বাজার, কোতোয়াল বাড়ি এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিতে অনেকের মাছের ঘের ভেসে গেছে। শুক্রবার গভীর রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সিভিল সার্জন অফিস এলাকা, শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, শরীয়তপুর পৌরসভার পেছনে, সাবনুর মাকের্ট, চরপালং এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতেও পানি উঠেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। শহরের রিকশাচালক বাবুল বেপারী বলেন, ৩ দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। রাস্তায় গর্ত হয়ে গেছে। পানিতে পাকা সড়কে গর্ত দেখা যায় না। তারপরও পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।

চাটখিল (নোয়াখালী): চাটখিল উপজেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। ১৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার অধিকাংশ বানভাসি মানুষ নিজ নিজ বাড়ি-ঘরে চলে যায়। টানা বৃষ্টির কারণে শনিবার বিকালে অনেক পরিবারকে আবারও আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানান, রোববার সকাল পর্যন্ত ৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন করে ১১২০ জন ভানবাসি আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার পানিতে গ্রামীন রাস্তা-ঘাটের ৯০ ভাগই পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বাগেরহাট: ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাগেরহাট পৌর শহরের বেশিরভাগ এলাকার অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশে, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। টানা বৃষ্টিতে জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও কচুয়ার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। অনেকের মাছের ঘের ভেসে গেছে। এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর): কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা আবারও পানিতে তলিয়ে গেছে। কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের বাদামতলির মো. আফজল হোসেন বলেন, বন্যার পানি কিছুটা নামলেও বৃষ্টির কারণে চরকাদিরা ইউনিয়নে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের আজাননগর এলাকার নুরুল ইসলাম বলেন, প্রায় দুমাস আমরা পানিবন্দি। পানি কিছুটা কমলেও তিন দিনের বৃষ্টিতে ফের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে।

যশোর: দুদিনে জেলায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর জলাশয়। মাঠের পর মাঠ ফসল পানির নিচে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৩০টি সড়ক। এর মধ্যে শংকরপুর, বেজপাড়া, খড়কি, কারবালা, রেলগেট পশ্চিমপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়ার অনেক বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার ড্রেন ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি সড়ক পার হয়ে ঘরের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাব্বির হোসাইন বলেন, টানা ভারি বর্ষণে উপজেলার প্রায় এক হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। একই সাথে ৪০০ হেক্টর জমির সবজি ও মরিচের ক্ষতি হয়েছে।

বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী): জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফের বাড়িতে পানি উঠায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে মানুষ। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো বাতাসে ভেঙে পড়েছে গাছ-পালা। কয়েকটি স্থানে ঘর ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া গেছে। বিদ্যুতের লাইনে গাছ ভেঙে পড়ায় এবং খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলায় বিদ্যুৎহীন প্রায় ৫০ ভাগ মানুষ। একটানা বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয়। সরেজমিন দেখা গেছে, কবিরহাট, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় স্থায়ী হয়েছে জলাবদ্ধতা। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এসব উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়ির উঠান ও সড়কে হাঁটু পরিমান পানি ছিল।

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর): ঝড়ো বাতাসে বৈদ্যুতিক লাইন ও খুঁটি বিধ্বস্ত হওয়ায় রায়পুরসহ জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ফলে অন্ধকারে রয়েছে অন্তত পাঁচ উপজেলার চার লাখ গ্রাহক। রায়পুর পৌরসভার কাঞ্চনপুরের গৃহবধূ তাসলিমা খানম জানান, তিনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক। গত দুদিন ধরে তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এতে খাবার ও পর্যাপ্ত পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

বাগাতিপাড়া (নাটোর): টানা দুদিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তারা কাজে বের হতে পারছেন না। কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে বের হলেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাচ্ছেন না। এদিকে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শনিবার সকাল ৭টা থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে পুরো উপজেলা। কোথাও কোথাও সন্ধ্যা ৬টায় সংযোগ পেলেও উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিল।

কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র উপক‚লে আরও একজনের লাশ ভেসে এসেছে। রোববার সকালে শহরের পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়া সমুদ্র উপকূলে লাশটি ভেসে আসে। ধারণা করা হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলেদের একজনের লাশ এটি।

টেকেরহাট (মাদারীপুর): শহরের ফুড অফিসের মোড়, নিরাময় হাসপাতাল রোড, কালিবাড়ি সড়ক, ইউআই স্কুল সড়ক, বাতামতলা রোড, শহীদ মানিক সড়ক, শহীদ বাচ্চু সড়ক, পাবলিক লাইব্রেরি রোড, তরমুগরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

হাতিয়া (নোয়াখালী): হাতিয়ায় ঝড়ো হাওয়ায় ডুবে যাওয়া মাছ ধরার ট্রলারের ২২ জেলেকে রোববার জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। জাহাজমারা আমতলী ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী ও বোট মালিক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভোলা, চরফ্যাশন ও মনপুরা: দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার সাগর মোহনায় ডুবে যাওয়া ৫টি ফিশিংবোটের নিখোঁজ ৪৯ জেলে রোববার ভোরে বাড়ি ফিরেছে। তাদের অপরাপর জেলে নৌকার সাহায্যে উদ্ধার করা হয়।

জাতীয়

আমাদের খুব তাড়া। সকালে উঠেই শুরু হয় সারা দিনের কর্মযুদ্ধ।

আর তাই সারা দিনের কর্মশক্তিও পুঁজি করে নিতে হবে সকালেই। প্র্রাণ শক্তিতে ভরা ও সুস্থ থাকতে প্রতিদিন সকালে পরিবারের সবাই রাতে ভিজিয়ে রাখা মাত্র পাঁচটি যেকোনো বাদাম খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন।

কারণ:

• বাদামে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে, যা দেহ গঠনে ও মাংসপেশি তৈরিতে সাহায্য করে

• নিয়মিত বাদাম খেলে দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখে

• ফাইবার রয়েছে, যা পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজমশক্তি বাড়ায়

• কাজুবাদাম আমাদের হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে

• দাঁতও দাঁতের মাড়ি মজবুত করে

• ত্বক ও চুল উজ্জ্বল, মসৃণ করে

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

• আখরোট খেলে হাড় মজবুত হয় মস্তিস্ক বিকাশে সহায়তা করে

• পেস্তা বাদাম রক্ত পরিষ্কার করে আমাদের লিভার ও কিডনি ভালো রাখে

• আলমন্ডকে বাদামের রাজা বলা হয়। এতে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক এসিড ও ভিটামিন-ই রয়েছে এটি শ্বাসকষ্ট ও ত্বকের নানা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে

• কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

জাতীয়

দিন যত যাচ্ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রকোপ ততই বাড়ছে। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ক্রমেই ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বাড়ছে। সরকারি হিসাবে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশের হাসপাতালে আরও ১৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪১ জনে। তবে গত একদিনে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছেন ১০৩ জন।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন, প্রকৃতিতে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার কারণে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা না থাকায় মশা নিধন কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। নিয়মিতভাবে কাজ করছেন না মশক নিধন কর্মীরা। অভিযান পরিচালনা কার্যক্রম থেমে গেছে। এছাড়াও লার্ভিসাইড স্প্রে এবং ফগিংসহ সিটি করপোরেশনের নিয়মিত মশাবিরোধী ব্যবস্থাগুলোও উলে­খযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে ডেঙ্গুর মৌসুম হওয়ায় রাজধানীসহ সারা দেশে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বাড়তে থাকলে এডিস মশার বংশবিস্তার আরও বাড়বে। ফলে সেপ্টেম্বরের শেষে এবং সামনের মাসগুলোতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু সংক্রমণবিষয়ক সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৭ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সাতজন এবং রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) দুজন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে মোট ১৬ হাজার ১৯৩ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ মহিলা রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন, যাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিলে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। মে-তে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুনে ৭৯৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের, জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এছাড়া আগস্টে মৃত্যু হয়েছিল ২৭ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬ হাজার ৫২১ জন। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২০০ জন এবং মারা গেছেন ২০ জন।

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৬৮ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। তবে সবচেয়ে বেশি ৫৯ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, এ বছর তার হাসপাতালে ১২৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বর্তমানে ৫৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। গত ২ সপ্তাহ ধরে রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ডেঙ্গু হলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল ও খাবার খেতে হবে। জ্বর বেশি হলে গামছা বা টাওয়েল ভিজিয়ে বারবার রোগীর শরীর মুছে দিতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন এবং ডেঙ্গু এনএস-১ ও এন্টিজেন টেস্ট করতে হবে। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত¡বিদ ড. আবু ফয়েজ আসলাম বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে শুধু ওষুধ ছিটালেই হবে না। একইভাবে বর্ষা মৌসুম নয়, বরং মশা নিধনে বছরজুড়েই সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারকে জোরালো ভ‚মিকা নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, বিগত কয়েক বছরের পর্যালোচনায় দেখা গেছে-বর্ষার মূল মৌসুমের পরে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। ডেঙ্গু শুধু এখন ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, বরং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কারিগরিভাবে সঠিক ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি কর্মকৌশল দ্রুত প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে পড়ছে।

দেশে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড। যা আগে কখন দেখা যায়নি।

জাতীয়

গোপালগঞ্জে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর গাড়িবহরে আওয়ামী লীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার নিহত হয়েছেন। হামলায় এসএম জিলানীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন। এছাড়া অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আহতদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, রাজু বিশ্বাস, মাহাবুব খান মুরাদ, লিন্টু মন্সী, গোপালগঞ্জের সালমান সিকদার, সুজন সিকদার, সবুজ সিকদার, ঢাকার মতিঝিল এলাকার নাসির আহমেদ মোল্লা, বাদশা মোল্লা, নিশান, হাসান, মাতুয়াইলের আলাউদ্দিনসহ ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও তিনজনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্যরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীসহ কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার বেদগ্রাম মোড়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির একটি পথসভা শেষে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে তারা রওনা হন। সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় পৌঁছলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২০০ থেকে ৩০০ নেতাকর্মী মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন বলেন, আমরা বেদগ্রামের মোড়ে শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলাম। ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছলে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিন মোল্লা, গোবরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জিকরুল ফকির, স্থানীয় আওয়ামী নেতা আলিমুজ্জামান ও হাসান মোল্লার নেতৃত্বে গাড়িবহরে হামলা করা হয়।

গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান বলেন, বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় ঘোনাপাড়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। তাদের বাধা দিলে আমাদের ওপর হামলা করেন। এতে আমি নিজেই আহত হয়েছি।

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টায় আহতাবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও তার স্ত্রী রওশন আরা রত্নাসহ ১৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের অধিকাংশের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের কোপ রয়েছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন। কেন এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে কেউ কেউ বলছেন সেখানে ব্যানার টানাটানি নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল থেকে অদূরে পাথালিয়া বাংলালিংক টাওয়ারের পাশ থেকে শওকত আলী দিদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

জাতীয়

গত ১৫ বছরে পতিত স্বৈরশাসক নিজে ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে ও চূড়ান্ত কর্তৃত্বপরায়ন হয়ে উঠতে সংবিধানকে কাঁটাছেড়া করে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে এসেছিল যে, একজন নাগরিক চাইলেও সংবিধানটি সঠিকভাবে অনুসরণ করে চলতে পারবেন না। সংবিধান নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে ‘তিনটি অপশন’ খোলা।তিন পদ্ধতিতে সংবিধান পুনরায় প্রণয়ন করা যেতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব পেশ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সোসাইটি ফর ডেমক্রেটিক রাইটস (এসডিআর)।

সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটনের উপস্থাপনায় এতে আরও বক্তৃতা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ইকবাল হোসেন, ইংল্যান্ডভিত্তিক পেশাজীবী নেতা নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাইমুল আহসান খান ও সাংবাদিক ওয়ালি উল্লাহ নোমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা নেওয়াটা সংবিধানের কোনো বিধান প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন করে না। তারাও দৃশ্যত: সংবিধানের কিছু অংশ মানছেন বা মানতে পারছেন, আবার অন্য অংশ কিংবা বহু অংশ মানছেন না বা মানতে পারছেন না।

সংবিধান যে কী আজগুবি অবস্থায় আছে- তা কয়েকটি উদাহরণ দিলে পরিষ্কার হবে। প্রথমত- ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদ না ভেঙে নির্বাচন করা যাবে, যা সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে বিরল ও নজীরবিহীন এবং একসঙ্গে ৩০০+৩০০ মোট ৬০০ এমপি স্বল্পসময়ের জন্য হলেও নির্বাচিত থাকেন। এই বিধানের প্র্যাকটিস পতিত সরকার করেছেও। দ্বিতীয়ত- ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল, রদ, ষড়যন্ত্র ও সর্বোচ্চ শাস্তির কথা এমনভাবে লিখে সন্নিবেশিত করা হয়েছে যে, পতিত সরকার বা তাদের কোনো দোসর যদি কোনোভাবে ক্ষমতায় আসতে পারে, তাহলে বর্তমান সরকারের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পারবে। তৃতীয়ত- ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতে স্পিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু স্পিকার যদি অসমর্থ বা অনুপস্থিত হন তাহলে কে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন, এই বিষয়টি সংবিধান অনুধাবন করেনি। চতুর্থত- ৪৭ অনুচ্ছেদে অনেক বিধান আছে, যা সরাসরি মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানের অন্যান্য অনুচ্ছেদের সরাসরি বিপরীত ও সাংঘর্ষিক। পঞ্চমত- সংবিধানের ৭খ অনুচ্ছেদ সংবিধানের সিংহভাগ সংশোধন, সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন বা রহিতকরণ অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শতাব্দির সবচেয়ে বড় ও শ্রেষ্ঠ গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেয়া বর্তমান সরকারকে সংবিধান নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে। আশার কথা যে, সরকার এ সম্পর্কে গতকাল (বুধবার) ড. শাহদীন মালিককে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করেছে। আমরা এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই। সংবিধান নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে তিনটি অপশন খোলা।

প্রথম অপশন- গত ১৫ বছরে কাঁটাছেড়া করা সংবিধান ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন একটি সংবিধান জাতিকে উপহার দেওয়া। নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ আসনে নির্বাচন করে সাংবিধানিক পরিষদ গঠন করা। এটির একমাত্র ও কেবলমাত্র কাজ হবে সংবিধান রচনা ও গৃহীত করা। এর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ, স্থায়িত্ব ও চলমান কাজের বৈধতার জন্য একসঙ্গে গণভোটের আয়োজনও করা যেতে পারে।

দ্বিতীয় অপশন- ৫০/৬০ জন বিশেষজ্ঞ (সংখ্যা কমবেশী হতে পারে) নিয়ে সংবিধান প্রণয়ন কমিটি বা কমিশন গঠন করা। যাদের একমাত্র দায়িত্ব হবে নতুন একটি সংবিধান ড্রাফট করা। এই নতুন সংবিধান সুষ্ঠু, অবাদ ও সত্যিকার অংশগ্রহণমূলক গণভোটের মাধ্যমে গৃহীত হবে। একই সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ, স্থায়িত্ব ও চলমান কাজের বৈধতার জন্য গণভোটের আয়োজনও করা যেতে পারে, যেভাবে বৃটেনে একদিনে একাধিক নির্বাচন হয়।

তৃতীয় অপশন- ১/১১ সরকারের মতো এই সরকার পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর নির্ভর করবে। অর্থাৎ ১/১১ সরকারের মতো যতদিন থাকবে, থেকে যাবার পর পরবর্তী সরকার এসে তাদের মেয়াদ, চলমান কার্যাবলী ও সংবিধান পরিবর্তনের বৈধতা দিবে।

বক্তারা বলেন, প্রথম অপশন বা দ্বিতীয় অপশনে যাওয়া হবে উত্তম। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর সফল গণঅভূত্থানের মাধ্যমে আসা জাতির জন্য এমন সুযোগ আর নাও আসতে পারে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জাতিকে নতুন একটি সংবিধান উপহার দেওয়া সময়ের দাবি।