জাতীয়

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৮৯ আস‌নে মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা ক‌রে‌ছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা শুরু করেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

জাতীয়

আসন্ন সংসদ নির্বাচনের তফশিল বাতিলে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা যে বিবৃতি দিয়েছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৩৮৫ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজন।

শুক্রবার গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফশিল বাতিলের দাবিতে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বিবৃতিটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিবৃতির বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠ নয়। এবং যেসব তথ্য উল্লে­খ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। কমিশন এই তফশিল ঘোষণার পূর্বে কমিশনের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কমিশনের এই আহ্বানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও সমমনা দলগুলো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি। এমনকি তাদেরকে কমিশন থেকে পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা সে আলোচনায় সাড়া দেয়নি। যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা, কর্তব্যরত পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হাসপাতালসহ অন্যান্য স্থাপনায় হামলা করা হয়েছে। এই একই মহল নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য ২০১৪ সালেও একইভাবে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সড়কপথে বৃক্ষ কর্তন, নির্বাচন অফিসগুলোয় অগ্নিসংযোগ, ভোটারদের নির্মমভাবে প্রহার-এমনকি কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসারকে ব্যালট বাক্সের উপরে কুপিয়ে হত্যা করার মতো নৃশংস ও বর্বরোচিত ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এখনো সেই একই মহল নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর তাকে একতরফা নির্বাচন তফশিল বলে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি করছে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের বিধিসম্মত তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে- যেখানে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণের উন্মুক্ত সুযোগ বিদ্যমান, তাকে ‘একতরফা তফশিল’ বলার কোনো অবকাশ আছে বলে আমরা মনে করি না।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা ও হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, সাবেক অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমএ মান্নান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক প্রমুখ।

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হোক। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড ছেড়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।

শুক্রবার দুপুরে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া খরমপুর কেল্লা সৈয়দ আহাম্মেদ গেছু দারাজ প্রকাশ্যে শহীদের মাজার জিয়ারতকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা, কসবা-আখাউড়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বাহার মালদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক আরো বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কিছু বলার থাকলে তারা ইলেকশন কমিশনকে বলুক। কমিশন সেটি বিবেচনা করবে।

মন্ত্রী বলেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় আমরা তাদের সব সময় অভিনন্দন জানাই। ধ্বংসাত্মক কাজ ছেড়ে সাংবিধানিক পথে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা থাকবে।

জাতীয়

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার হয়ে লড়তে চান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এ লক্ষ্যে এবার দুই নেতাই চারটি আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের মনোনয়ন বুথের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা বিভাগের বুথের দায়িত্বে থাকা নেতারা জানান, ঢাকা-১৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। আর মাদারীপুর-২ ও মাদারীপুর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বাহাউদ্দিন নাছিম।

অন্যদিকে বরিশাল বুথের দায়িত্বে থাকা এক নেতা জানান, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পক্ষ থেকে বরিশাল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকা-১৩ আসন থেকে টানা দুইবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে তৎকালীন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানকে নৌকার টিকিট দেয় আওয়ামী লীগ।

আর বাহাউদ্দিন নাছিম মাদারীপুর-৩ আসন থেকে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপকে টিকিট দেওয়া হয়।

জাতীয়

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধনের আওতায় আনতে নতুন আইন করা হবে। আগামী সংসদে এ আইন হবে, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে।

সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরে মঙ্গলবার গুজব প্রতিরোধ সেল এবং ফ্যাক্টস চেকিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

গুজব প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সঙ্গে সরকার আলোচনা করছে কিনা- সেই প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে সেটাও একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারত আইন করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব সার্ভিস প্রোভাইডারদের সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইন করেছে, সেখানে নিবন্ধিত হতে হয়। যুক্তরাজ্য আইন করেছে, সেখানে নিবন্ধিত হতে হয়। অন্যান্য দেশ আইন করেছে, আমাদের দেশে এখনো আইনটি হয়নি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কর্তৃপক্ষ) সঙ্গে আলোচনা করছি এবং বারবার তাগাদা দিচ্ছি। এখানে অফিস করার জন্য বলছি এবং বাংলাদেশের আইনে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য বলছি। তাদের এখানে নিবন্ধিত হতেই হবে সেই বাধ্যবাধকতা আরোপ করার আইনটি এখনো করা হয়নি। সেটি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধনের আওতায় আনতে নতুন আইন করার বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশ থেকে গুজব ছড়ানো হয়, সেটির ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল, তবে আগের তুলনায় কমেছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এই গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি এবং জামায়াত তাদের নিয়মিত পয়সা দেয়। পয়সা না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বা কম দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, সেই অডিও ভাইরাল হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে যখন কেউ গুজব রটায়, তখন তার বিরদ্ধে মামলা হয়। মামলা যদি আইসিটি অ্যাক্টে হয়, তখন আবার পত্রিকায় প্রশ্ন করে কেন মামলা হলো।

মন্ত্রী বলেন, গুজবটাতো অনলাইনেই ছড়ানো হয় বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সেটি তো ডিজিটাল মাধ্যম। ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ালে তো ডিজিটাল আইনেই মামলা হবে; কিন্তু সে মামলা করলে তখন আবার অনেকে বলে, আবার কেউ কেউ চেঁচামেচি করে কেন মামলা হল, এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

গ্রেপ্তার করলে তো সেটি নিয়ে আরও বেশি কথাবার্তা হয়, সে কি করেছে সেটি তখন ঢাকা পড়ে যায়। বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা আছে, সে কথাও হাছান মাহমুদ বলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ করতে ১২ বছর লেগেছে। যে কোনো মামলা ৫-৭ বছরের আগে শেষ হয় না। দ্রুতবিচার আইনে মামলা করলেও এক-দুই বছর লাগে। আমি আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে অনুরোধ জানাব, কেউ যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ করে থাকে, সেটি যদি আমিও হই, সেটা যদি একজন সাংবাদিকও হয়, যদি অপরাধ করে থাকে, তার তো বিচার হতে হবে। না হলে তো এই অপরাধ কোনো দিন বন্ধ করা যাবে না, কমানো যাবে না।

জাতীয়

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে রাইদা পরিবহণের একটি একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাস থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে চার যাত্রী আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিন্ত্রন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, রাইদা পরিবহণের বাসটি যাত্রী নিয়ে পোস্তগোলার দিকে যাচ্ছিল। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে আসার পর দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দেয়। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ৪/৫ জন আহত হন।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, রাত পৌনে ৯টার দিকে বাসটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মফিজুল আলম বলেন, রাইদা পরিবহণের বাসটি যাত্রী নিয়ে পোস্তগোলার দিকে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তফসিল ঘোষণার পর উচ্ছ্বসিত।

তারা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে দল আবারও জয়ী হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা তফসিল ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ ও হতাশ। তারা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা জয়লাভের জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে।

তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে সিলেটে আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল

সিলেট থেকে জানিয়েছেন- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে সিলেটে আনন্দ মিছিল করেছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আনন্দ মিছিল বের করা হয়। এরপর সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় আনন্দ মিছিলের শুরুতে ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। সমগ্র জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার। কাঙ্ক্ষিত সেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে জাতি এখন মুখিয়ে রয়েছে।

ফেনীতেও আনন্দ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা

তফসিল ঘোষণায় ফেনীতে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। রাত ৮টার দিকে শহরের ফেনী পৌরসভা প্রাঙ্গণে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি শহরের ট্রাংক রোড়, প্রেসক্লাব, বড় মসজিদ প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতাকর্মীরা বিএনপি জামায়াতের সহিংসতার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনারকে অভিনন্দন জানান।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও ফেনী সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহীদ খোন্দকার, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব চৌধুরী, সহ-সভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

টাঙ্গাইলে বিএনপির মশাল মিছিল

তফসিল ঘোষণাকে অবৈধ দাবি করে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন জায়গায় মশাল মিছিল করেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়ক, ময়মনসিংহ রোড ও জেলা সদর রোডে এ মশাল মিছিল করে তারা। টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাদিউজ্জামান বলেন, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নির্দেশে সদর থানা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে এ মশাল মিছিল হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার জন্য সকল প্রকার আন্দোলনে মাঠে থাকবে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন বলেন, টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে ও টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ রোডে মশাল মিছিল করেছে জেলা বিএনপির নেতাকর্মী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। অবরোধ সফল করার জন্য এই মশাল মিছিল করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম মিয়া বলেন, আইন বহির্ভূত কোনো ঘটনা থাকলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিরাজগঞ্জে আ.লীগের আনন্দ, বিএনপির মশাল মিছিল, সিএনজি ভাংচুর

সিরাজগঞ্জেও আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করে মশাল মিছিল করে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভেঙেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের রেলগেইট এলাকায় ঝটিকা মশাল মিছিল নিয়ে কয়েকটি অটোরিকশা ভাংচুর করে বিএনপি সমর্থকরা। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা।

সদর থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ১০/১২ জন জামায়াত-শিবিরের লোক ঝটিকা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় আসে। তারা টায়ার জ্বালানোর চেষ্টা করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পরে সেখান থেকে পালিয়েও যায়।

ময়মনসিংহে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ-আনন্দ মিছিল

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে। ঘোষিত তফসিলকে ফরমায়েশি দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সাটে ৮টা পর্যন্ত নগরেরর গাঙ্গিনাপাড়, নতুন বাজার ও আলীয়া মাদরাসা সড়কসহ বিভিন্ন স্পটে এসব পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হয়। এর মধ্যে নগরীর গাঙ্গিনাপাড় এলাকায় তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মোহিত উর রহমান শান্তর সমর্থকরা। পৃথক আয়োজনে আনন্দ মিছিল করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এহতেশামুল আলমসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও অনেকে।

নগরের আলীয়া মাদরাসা এলাকায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জিএস. মাহাবুবের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা। নগরের খাগডহর এলাকায় বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছে যুবদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে যুবদল নেতা টুটু, সুজা, এজিএস রাসেল, নাহিদ, কৃষকদলের নাজিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের রিপনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এছাড়াও পাটগুদাম ব্রিজমোড় এলাকায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জোবায়েদ হোসেন শাকিলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছে যুবদল।

যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নগরজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানাসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।

বরিশালে একদিকে আনন্দ, অন্যদিক প্রতিবাদ মিছিল

তফসিল ঘোষণার পরপরই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিবাদ ও অভিনন্দনের পাল্টাপাল্টি মিছিল করেছে বিএনপি-আওয়ামী লীগ ও বাম গণতান্ত্রিক জোট।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার খবরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্বে নগরে আনন্দ মিছিল করা হয়। এটি নগরের সোহেল চত্ত্বরের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাকলীর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। একই সময়ে সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের নির্দেশে আনন্দ মিছিল করা হয়। নগরের সার্কিট হাউজের সামনে থেকে বের হওয়া মিছিলে সিটি করপোরেশনের বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলররাসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এই আনন্দ মিছিলও নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সার্কিট হাউজের সামনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

অপরদিকে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) জাহিদুর রহমান রিপন জানিয়েছেন, অবৈধ তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে নগরে মিছিল করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তফসিল ঘোষণার পরপরই নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে প্রতিবাদ মিছিলটি বের করে মহানগর বিএনপির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা। মিছিলে মহানগর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন না। দলের কর্মী-সমর্থকদের দাবি, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলসহ কয়েকটি ওয়ার্ডের শীর্ষ পদের নেতারা গ্রেপ্তারের পর থেকেই রাজপথে মহানগর বিএনপির শীর্ষ পদে থাকা বাকি নেতারা নেই। যুবদল, ছাত্রদল ও সেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা বরিশালে রাজপথে দলের কর্মসূচি পালন করছে।

রাতে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সুমনের নেতৃত্বে নগরের বান্দরোডে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ও ১৬ নভেম্বর হরতালের সমর্থনে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট বরিশাল জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেত্রী ও জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী জানান, মিছিলটি নিয়ে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সদররোডে প্রতিবাদ সমাবেশও করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, একতরফা নির্বাচনের গণবিরোধী তফসিল জনগণ মানে না। অবিলম্বে ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ সময় বক্তারা একতরফা নির্বাচনের গণবিরোধী তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) অর্ধদিবস হরতাল পালনে সবাইকে আহ্বান জানান।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এ তারিখ ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে। এই ভাষণে সিইসি তফসিল ঘোষণা করেন।

সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরের পাঁচ বছর। সেই হিসাবে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি।

এ ছাড়া জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। আর ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে। বাড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্য সংখ্যাও। এবার ভোটের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।

সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র অনলাইনেও দাখিল করতে পারবেন। এজন্য অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম তৈরি করেছে ইসি। এ ছাড়া ভোটের তথ্য দিতে তৈরি করা হয়েছে স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি নামে একটি অ্যাপ, যা ইতোমধ্যে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।

এ অ্যাপের মাধ্যমে একজন ভোটার ঘরে বসে তার ভোটার নম্বর জানতে পারবেন। পাশাপাশি তার ভোটার এলাকা বা নির্বাচনী আসন, ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারবেন এবং ভোটকেন্দ্রের ছবি, ভোটকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থান (ম্যাপসহ) দেখতে পাবেন।

এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে বিভাগওয়ারি বিভিন্ন আসনের তথ্য, যেমন- মোট ভোটার, মোট আসন, আসনের প্রার্থী, প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য (হলফনামা, আয়কর সম্পর্কিত তথ্য, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী) জানতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের তথ্য জানা যাবে এবং সমসাময়িক তথ্যাবলি ‘নোটিশ’ আকারে প্রদর্শিত হবে।

প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য থাকায় একদিকে তিনি যেমন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন, অন্যদিকে ভোটাররাও তথ্য বিশ্লেষণ করে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।

প্রার্থী হতে করণীয়

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীকে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পদাধিকারীর সইযুক্ত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইযুক্ত তালিকা। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা জমা দিতে হবে না।

সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে ২০ হাজার টাকা এবং ছবিছাড়া ভোটার তালিকা সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) কিনতে হবে ৫০০ টাকায়। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা জমা দিতে হবে, যেখানে থাকবে আটটি সুনির্দিষ্ট তথ্য। এ ছাড়া আয়ের উৎস, দায়-দেনা, সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি তার অনুলিপি ইসিকেও দিতে হবে।

নির্বাচনের প্রার্থীর ব্যয়সীমা হলো ২৫ লাখ টাকা। প্রার্থী বা তার এজেন্টকে একটি তফসিলি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ব্যয় করতে হবে।

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। ইসি আয়োজিত সর্বশেষ সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১৮টি দল। তাদের অনেকেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।

আগের ১১ সংসদ নির্বাচন

প্রথম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৭ মার্চ। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ। ভোটগ্রহণ হয়েছিল একই বছরের ৭ মে।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সপ্তম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ওই বছর ১২ জুন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ২০০১ সালের ১৯ আগস্ট। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১ অক্টোবর।

নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর।

জাতীয়

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব জাহাংগীর আলম বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কখন, কিভাবে ঘোষণা করা হবে তা আজ সকাল ১০টায় ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর চিঠি তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। চিঠিটি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে কি না, সেটাও কমিশন অবহিত নয়।

কারণ, চিঠি কমিশনের কাছে আসেনি। কমিশন সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার আলোকে ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী এগিয়ে যাবে।’

ইসি সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আগামীকাল বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। আগামীকাল বিকেল ৫টায় কমিশনের বৈঠকের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

এদিকে, তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগারগাঁওয়ে কমিশন ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কমিশন ভবনে এনআইডি সংশোধনের জন্য ব্যক্তিগত শুনানি মঙ্গলবার থেকে বন্ধ রয়েছে।

জাতীয়

এক মাসের মধ্যে আবারও মুঠোফোনের ইন্টারনেটের প্যাকেজের দামে পরিবর্তন আনলো বেসরকারি তিন অপারেটর। শুক্রবার রাতে ডাটা প্যাকেজ পুনর্বিন্যাস করে নতুন প্যাকেজ গ্রাহকদের অফার করছে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক।

এর মধ্যে তিন দিনের দামেই সাত দিন মেয়াদি প্যাকেজ দিচ্ছে রবি। আগের তিন দিনের দামের চেয়ে দুই টাকা বাড়িয়ে দাম পুনর্বিন্যাস করেছে গ্রামীণফোন। আর দাম না কমিয়ে সাত দিনের প্যাকেজে বোনাস হিসেবে ডাটা বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলালিংক ও রবির সঙ্গে একীভূত হওয়া এয়ারটেল।

তিনটি অপারেটরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নতুন প্যাকেজ থেকে জানা গেছে, ১৫ অক্টোবরের আগে ৪৮ টাকায় দেওয়া তিন দিন মেয়াদের এক জিবি ডাটা প্যাকেজে এখন মেয়াদ দেওয়া হচ্ছে সাত দিন। অবশ্য ১৫ অক্টোবর থেকে সাত দিন মেয়াদে একই পরিমাণ ডাটা কিনতে গ্রাহকের খরচ হচ্ছিল ৬৮ টাকা। অর্থাৎ খরচ কমে এলো সপ্তাহে ২০ টাকা।

অন্যদিকে গ্রামীণফোনের তিন দিনের এক জিবির ডাটা প্যাকেজের দাম শুরুতে ৪৬ টাকা থাকলেও ১৫ অক্টোবর থেকে একই ডাটার সাত দিনের প্যাকেজ কিনতে খরচ হচ্ছিল ৬৯ টাকা। শুক্রবার রাত থেকে সেটা আবার ৪৮ টাকায় নামিয়েছে অপারেটরটি।

প্রথমে তিন দিনের দেড় জিবি ডাটা প্যাকেজ বাংলালিংক ৪২ টাকায় দিত। ১৫ অক্টোবর থেকে সাত দিন মেয়াদি সেই ডাটা প্যাকেজ ৬৯ টাকায় বিক্রি করছিল অপারেটরটি। ২৫ দিনের মাথায় পুনর্বিন্যাস করা প্যাকেজে দাম না কমিয়ে ৫০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করে ৬৯ টাকায় দুই জিবি ইন্টারনেট দিচ্ছে বাংলালিংক।

একইভাবে আগে তিন দিনের জন্য ৪২ টাকায় এক জিবি এবং ৪৯ টাকায় দেড় জিবি ডাটা দেওয়া এয়ারটেল ১৫ অক্টোবর থেকে ৬৮ টাকায় দেড় জিবি ডাটা প্যাকেজ অফার করছিল সাত দিন মেয়াদে। শুক্রবার থেকে একই দামে তারা দুই জিবি ইন্টারনেট ডাটা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) বিবৃতিতে বলেছে, ১৫ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশাবলি অনুযায়ী— প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অপারেটররা তাদের ইন্টারনেট প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও আপডেট করে। দুর্ভাগ্যবশত মাত্র ১৫ দিন পর আবারও প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও পরিবর্তন করতে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়।