জাতীয়

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসহাক আলী খান পান্না ভারতে পালানোর সময় দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনী- বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

শনিবার সকালে ভারতের মেঘালয় সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

ইসহাক আলী খান পান্নার ভাগনে কাউখালী উপজেলার চিড়াপাড়া পার সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লাইকুজ্জামান তালুকদার মিন্টু দাবি করেন, আমার মামা পান্না শনিবার সকালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে একটি পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

তবে তিনি কবে, কখন, কীভাবে শিলং গিয়েছিলেন সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তালুকদার মিন্টু।

পান্নার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর এক সদস্যের সঙ্গে তিনি সিলেট সীমান্তের কানাইঘাট উপজেলার একটি নির্জন এলাকা দিয়ে স্থানীয় চোরা কারবারিদের সহায়তায় সীমানা অতিক্রম করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা চালান। রাত ৩টার দিকে তারা দোনা সীমান্ত পেরিয়ে একটি নির্জন পাহাড়ি এলাকা দিয়ে হাটার সময় বিএসএফের গুলির মুখে পড়েন। তখন হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পাহাড় থেকে নিচে পড়ে ইসহাক আলী মারা যান।

জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাশঙ্কায় দেশ ছাড়ছিলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি অনেকেই শেয়ার দিয়ে সেটি ইসহাক আলী পান্নার বলে দাবি করছেন। ওই ছবিতে পান্নাকে কালো টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার পা থেকে রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। পিঠের কাছে রক্তের ছোপও দেখা গেছে।

ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের সম্মেলনের পর ইসহাক আলী খান পান্না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক হন।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিন পিরোজপুরে পান্নার ব্যয়বহুল বাড়িতে ছাত্র-জনতা হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।

জাতীয়

ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মিলেমিশে মহালুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শেষ মুহূর্তে সোলার খাতে ২৭টি বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিলেও সেগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে যেতে পারেনি বিগত সরকার। বর্তমানে এ সংক্রান্ত ফাইলগুলো সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য আছে। একই সঙ্গে অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়নি আরও ৫টি উচ্চ জ্বালানির রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর প্রকল্প। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ খাতের এ প্রকল্পগুলো বাতিলের চিন্তাভাবনা করছে। এদিকে শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে আরও ৫-৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার জন্য কাল পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বর্তমান পিডিবি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের হাত দিয়ে বিগত সরকারের আমলে অধিকাংশ প্রকল্প আলোর মুখ দেখেছে। ইতোমধ্যে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে পিডিবিতে। এই অবস্থায় নতুন করে পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করলেও নতুন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অনিশ্চিত।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এত বছর সরকারি-বেসরকারি খাতের লোকজন মিলেমিশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লুটপাট করেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও কয়েকটি রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত ছিল। প্রকল্পগুলোর অধিকাংশের মালিকানার সঙ্গে বিগত ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তারাই মূলত উদ্যোগটি নিয়েছিল। কিন্তু সময়ের কারণে পেরে ওঠেনি।

গত সাড়ে ১৫ বছরে কোনো দরপত্র ছাড়াই বেসরকারি খাতে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই কোনো কাজে আসেনি। সরকারি হিসাবে উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট বলা হলেও লোডশেডিং থেকে মুক্তি মেলেনি। এমনকি দেশে বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা কত, তারও সঠিক কোনো হিসাব নেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে। সবার জন্য সরবরাহ নিশ্চিত না করে শুধু সংযোগ দিয়েই শতভাগ বিদ্যুতায়নের কৃতিত্ব জাহির করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভাগ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ আমলের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার বিবেচনায় (১ ডলার সমান ১১৮ টাকা) বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। একই সময় শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লুটপাট হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে শুধু সক্ষমতা দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ এই টাকা নিয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এসব কেন্দ্রের বেশির ভাগের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা কিংবা তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং ভূমি অধিগ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণেও চরম অনিয়ম এবং লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) দুই কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাড়ে ১৫ বছর ধরে এই মন্ত্রণালয় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ছিল। এর মধ্যে শেষ দুই মেয়াদে তার প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন আবাসন ব্যবসায়ী নসরুল হামিদ বিপু। সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগ্যতা বিবেচনা না করেই তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকে বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, পিডিবি চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করা হলে এ খাতের বড় বড় অনিয়ম ও দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ ও আহমদ কায়কাউসও বড় বড় অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই দুজনই পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন।

পিডিবির তথ্যানুযায়ী, গত ১৪ বছরে বেসরকারি খাতে প্রায় ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। সব কেন্দ্রই দরপত্র ছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসংক্রান্ত বিশেষ আইনে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১০ সাল থেকে অনুমোদন দেওয়া ছোট-বড় এসব কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উলটো দায়মুক্তি আইন পাশ করে বিচারের পথ রুদ্ধ করেছে সরকার। ওই আইনটি এখন বহাল রয়েছে।

এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে। বিশেষ আইনের কারণে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা হয়নি। বিশেষ করে এই খাতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তা নতুন কিছু নয়। আমরা সবাই জানি, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার হতে হবে। নতুন সরকার এসেছে। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। ফলে এই খাতে নীতি ও কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে। আর না হলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলো একাধিকবার সরকারের কাছে বিক্রি করেছে মালিকরা। সেই সঙ্গে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে গুটিকয়েক কোম্পানি।

জানা গেছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে ১৪ বছরে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে দেওয়া হয়েছে ৮৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ১৪ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে সরকার ৯০ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দিয়েছে। পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব যোগ করলে তা ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

পিডিবির তথ্য বলছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জের পরিমাণ ছিল ১৫০৭ কোটি টাকা। এই অঙ্ক ২০০৯-১০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৭৯০ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে ২৭৮৪ কোটি এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছর তা বেড়ে দাঁড়ায় পৌনে ৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছর এ খাতে ব্যয় এক লাফে ২৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়। ওই বছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে ১৭ হাজার ১৫৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অথচ এ সময় বেসরকারি তথা রেন্টাল ও আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার ব্যবহার কমেছে। পরের দুই অর্থবছরে প্রায় একই পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই সময়ে সরকার-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সামিটকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের প্রায় ১২ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল। কোম্পানিটিকে দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা। ৭ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে চীনা কোম্পানি এরদা পাওয়ার হোল্ডিংস। চতুর্থ স্থানে দেশি কোম্পানি ইউনাইটেড গ্রুপকে দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। পঞ্চম স্থানে থাকা রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে (আরপিসিএল) দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বাংলা ক্যাট গ্রুপ নিয়েছে ৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। মাত্র তিন বছর আগে উৎপাদন শুরু হওয়া বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে গড়ে ওঠা পায়রা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। অপর একটি গ্রুপকে ৪ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা এবং খুলনা পাওয়ার কোম্পানিকে (কেপিসিএল) ৪ হাজার ৫৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানির ৩৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সামিট গ্রুপের কাছে ও ৩৫ শতাংশ ইউনাইটেড গ্রুপের কাছে। বাকি ৩০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। ফলে খুলনা পাওয়ারের ক্যাপাসিটি চার্জের বড় অংশই গেছে সামিট ও ইউনাইটেডের কাছে।

দেশীয় কোম্পানি হোসাফ গ্রুপ ২ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা, মোহাম্মদী গ্রুপ ২ হাজার ৫৪৪ কোটি, ডরিন গ্রুপ ২ হাজার ১৮৩ কোটি ও ম্যাক্স গ্রুপকে ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এপিআর এনার্জিকে ২ হাজার ৮৭ কোটি এবং সিঙ্গাপুরের সেম্বকর্পকে ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। শাহজিবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা, এস গ্রুপ ১ হাজার ৮৪২ কোটি ও কনফিডেন্স গ্রুপকে ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইংল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির এনইপিসি কনসোর্টিয়ামের হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপরীতে ১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা পেয়েছে। শ্রীলংকান কোম্পানি লক্ষধনভি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে ১ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, সিনহা গ্রুপকে ১ হাজার ৩৯১ কোটি, আনলিমা গ্রুপকে ১ হাজার ২৭৪ কোটি, বারাকা গ্রুপকে ১ হাজার ২৪৭ কোটি, রিজেন্ট গ্রুপকে ১ হাজার ৩৭ কোটি এবং এনার্জিপ্যাককে ১ হাজার ২৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় আরও কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, যাদের ক্যাপাসিটি চার্জ আদায়ের পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার কম।

এ ছাড়া ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে গিয়ে গত ৯ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ১৫ কোটি টাকা। দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয় ২০১৩-১৪ অর্থবছর। সে বছর ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল প্রায় ৫০১ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছর আমদানি বাড়ায় ক্যাপাসিটি চার্জ বেড়ে দাঁড়ায় ৯২২ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছর কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৮৪০ কোটি টাকা। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছর বিদ্যুৎ আমদানি কিছুটা বাড়ায় বেড়েছে ক্যাপাসিটি চার্জও। ওই অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় ১ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছর ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি আরও বৃদ্ধিতে চুক্তি হয়। এতে ক্যাপাসিটি চার্জ এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছর ১ হাজার ৮০৫ কোটি এবং ২০২১-২২ অর্থবছর ১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। আর ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছর মিলে আমদানির বিপরীতে ৪ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে।

অন্যদিকে শুরুতে তিন বছর মেয়াদে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলেও দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে মেয়াদ। আবার একই কেন্দ্র সরকারের কাছে একাধিকবার বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, এসব কেন্দ্রের মোট বিনিয়োগের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বিনিয়োগকারী দেয়, বাকিটা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে মেটানো হয়। পিডিবি তথা সরকার সুদসহ সেই ঋণ (চুক্তি অনুযায়ী) ৩ বছরে শোধ করে দেয়। পাশাপাশি ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্টের ওপর দেওয়া হয় মুনাফা (রিটার্ন অব ইকুইটি)। সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় শোধ করে দিলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রটা ওই কোম্পানিরই রয়ে যায়। পরে মেয়াদ বাড়ানো হলেও একই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপরীতে ফের নির্মাণ ব্যয় পরিশোধ করা হয়। তা আগের চেয়ে কিছুটা কম হয়। এভাবে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের মাধ্যমে লুটপাট করা হয়েছে।

গত বছর প্রকাশিত আইএমইডির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে বলা হয়েছে, ‘লুটপাট’ সরকারের গোচরেই হচ্ছে। আর ক্যাপাসিটি চার্জ হচ্ছে ‘লুটেরা মডেল’। ক্যাপাসিটি চার্জ না থাকলে বিনিয়োগ আসবে না বিদ্যুৎ খাতে এমন মিথ্যাচার বন্ধ করতে হবে।

জাতীয়

বাহ্যিক সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে চোখের ওপর। আর চোখের সাজ নির্ভর করে ভ্রু-দ্বয়ের ওপর। চেহারার সঙ্গে ভ্রু’র আকৃতি ঠিকঠাক না হলে মুখের ধরনই বদলে যায়।

ভ্রু প্লাক করাতে অনেকে পার্লারে যান, আবার অনেকে বাড়িতে নিজেই করে নেন। তবে আগে জানতে হবে আপনার মুখের আকৃতির সঙ্গে কী ধরনের ভ্রু ভালো লাগবে। সব মুখে সরু বা পাতলা ভ্রু মানায় না। অনেকেই আছেন যারা পাতলা ভ্রু নিয়ে চিন্তিত। তবে রাতে ঘুমোনোর আগে একটু যত্ন নিলেই কিন্তু সুন্দর এক জোড়া ভ্রু পেতে পারেন আপনি। ভ্রু সুন্দর করার পদ্ধতি সম্পর্কে চলুন জেনে নিই—

১) ঘুমোনোর আগে অবশ্যই মেকআপ তুলে ভালো করে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। অনেক সময়ই ভ্রুর অংশটি বাদ পড়ে যায়। তাই ভালো করে ভ্রুর অংশটি পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।

২) নিয়মিত ভ্রুর যত্ন নিতে হবে। গোসল করার আগে হালকা কোনো তেল লাগাতে পারেন। তা হলে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে। ক্যাস্টার অয়েল মালিশ করলে ভ্রুর ঘনত্ব বাড়ে। তবে রাতারাতি কাজ হবে না, ধৈর্য ধরতে হবে।

৩) চুল আঁচড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভ্রু ব্রাশ করে নিতে পারেন।

৪) চোখের মেকআপ শুরুর আগে হবে ভ্রুর মেকআপ। প্রথমেই ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নেবেন। মিনিট পাঁচেক পরে নিজের চুলের রঙ অনুযায়ী আইশ্যাডো আই ব্রো ব্রাশে নিয়ে ভ্রুতে বুলিয়ে ভ্রুর শেপ ঠিক করতে হবে। সময় না থাকলে আই ব্রো জেল ব্যবহার করতে পারেন।

৫) ভ্রুর ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে মাঝেমধ্যেই দুই আঙুল দিয়ে ভ্রু জোড়া মালিশ করতে হবে। দিনে দুই থেকে তিন বার করতে পারলে ওই অংশে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়, ফলে ভ্রুর ঘনত্বও বাড়ে।

জাতীয়

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করেছেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর হাতে থাকা ট্র্যাজেডির সব তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ, তদন্ত কমিশন গঠন ও ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহিদ সেনা দিবস ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে মহাখালী রাওয়া ক্লাবের স্কাইলাইন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিলখানায় শহিদ ৫৭ অফিসার ও ১৭ সাধারণ নাগরিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিলখানা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া।তিনি বলেন, পিলখানা হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আমি নাটক সাজানোর নামে রহস্যশালা আর চাই না।

রাকিন আহমেদ বলেন, আমরা সেসব দেশপ্রেমিক অফিসারের অবদান ভুলব না। আমরা চাই নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করা হোক। ক্ষতিগ্রস্ত সেনা অফিসারদের পরিবারকে যেন যথাযথ সম্মান ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। আমরা শহিদ পরিবার মনে করি-যেসব নির্দোষ, দেশপ্রেমিক বিডিআর সৈনিক জেল খাটছেন, সুষ্ঠু তদন্তে যেন তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ট্রায়াল বা তদন্তকে আমরা মানি না। কারণ প্রধান যে হত্যাকারী, নির্দেশদাতা তিনি তখন ক্ষমতায় ছিলেন। খুনি কি তার নিজের বিচার করবে?

রাকিন আহমেদ বলেন, এক আওয়ামী লীগ নেতা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, ওনার নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমার বাবা-মাকে জবাই দিয়েছেন। যদি বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহলে বাবা-মার মতো আমাকেও জবাই দিয়ে দেবে।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিকের ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, দুটো তদন্ত কমিটি হয়েছিল। বাহিনীর পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর। যিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমরা খুব করে চাইব অন্তত তার তদন্ত কমিটির রিপোর্টটা পাব। কারণ আমরা খুব কাটছাঁট অংশ গণমাধ্যমে জেনেছি। আমরা পুরোটাই দেখতে চাই।

এর আগে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-১. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সত্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে আগে যেসব তদন্ত হয়েছে, সেসব তদন্তের রিপোর্ট পাবলিক করতে হবে।

২. হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় মোতাবেক তিনজন জজ যে তদন্ত কমিশনের কথা বলেছেন, অবিলম্বে সেই তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। এতে পর্দার আড়ালে রয়ে যাওয়া ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বেরিয়ে আসবে।

৩. অফিসিয়াল গ্যাজেট করে ২৫ ফেব্র“য়ারিকে শহিদ সেনা দিবস হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। গ্যাজেটে শাহাদতবরণকারী সবাইকে শহিদের মর্যাদা দিতে হবে।

৪. ২৫ ফেব্রুয়ারি শহিদ সেনা ও শোক দিবস ঘিরে দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। ৫. পিলখানা ট্র্যাজেডিকে স্কুলের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে, কী ছিল এই শহিদদের ত্যাগ।

৬. যেসব সেনা কর্মকর্তা এ ঘটনাকে ঘিরে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

৭. নির্দোষ কোনো বিডিআর সদস্যকে যেন কোনোভাবেই সাজা না দেওয়া হয়।

জাতীয়

অবসরপ্রাপ্ত ৫ অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে চুক্তিতে সচিব নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শনিবার (১৭ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে তাদের এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

চুক্তিতে সচিব পদে নিয়োগ পাওয়ারা হলেন- ড. শেখ আব্দুর রশিদ, মো. এহছানুল হক, ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, নাসিমুল গনি ও এম এ আকমল হোসেন আজাদ।

অতিরিক্ত সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে; মো. এহছানুল হককে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে; ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনকে জননিরাপত্তা বিভাগে; নাসিমুল গনিকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগে ও এম এ আকমল হোসেন আজাদকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী পাঁচ অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো। এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রস্তাবিত মেয়াদ হবে যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী দুই বছর।

জাতীয়

বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ কোটির বেশি টাকা পাওয়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামালকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি পুলিশ।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে রাজধানীর মহাখালীতে ডিওএইচএসের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ওবায়দুর রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গতকাল ১৬ আগস্ট সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামালের বাবর রোডের বাসায় ডিএমপির একটি অভিযানে ৩ কোটি ১ লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় আজ ১৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর মহাখালী হতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি অভিযানে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

শাহ কামালের নিজ জেলা চাঁদপুরে একটি পাঁচতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। চাঁদপুর শহরের বন বিভাগ সড়কের খলিশাডুলি গ্রামে ১০ ইউনিটের পাঁচতলা ভবনসহ তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ।

এর আগে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তার দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণের দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ওই দুটি বাসা থেকে ৩ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ১৬৬ টাকা, ১০ লাখ ৩ হাজার ৩৬৬ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। বিদেশি মুদ্রার মধ্যে রয়েছে ইউএস ডলার- ৩০০০, মালোয়শিয়া রিংগিত- ১০০০, সৌদি রিয়াল- ২৯৬৯, সিঙ্গাপুরী ডলার- ৪১১২, অট্রেলিয়ান ডলার- ১,৯১৫, কোরিয়ান ইয়াং- ২৫০০০, চাইনিজ ইয়াং-১৯৯।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদপুরের ওই বাসাটি ৬ তলা। বাসার দ্বিতীয় তলায় সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল থাকেন পরিবার নিয়ে। পরে স্থানীয়রা জানতে পারেন বাসাটিতে বিপুল পরিমাণের টাকা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এরপর স্থানীয় জনতা ওই ভবনটি ঘিরে ফেলে। ভবন ঘিরে তারা এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের খবর দেন। স্থানীয় জনতা থেকে খবর পেয়ে বাসাটিতে ডিএমপির একাধিক টিম যায়। পরে ডিএমপির অভিযান বাসাটি থেকে বিপুল পরিমাণে দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।

জাতীয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, পুলিশের পোশাক-লোগো পরিবর্তন করা হবে। কারণ হচ্ছে, কর্মবিরতিতে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা আর এ পোশাকে ফিরতে চান না। অর্থাৎ নতুন পোশাক ও লোগো নিয়ে কর্মে ফিরতে চান। আশা করছি, খুব শিগগিরই এ বাহিনীর পোশাক ও লোগোর পরিবর্তন করা হবে।

রোববার দুপুরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, যেসব পুলিশ অনিয়মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে রংপুরে আবু সাঈদের নিহতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। শুধু তাই নয়, যারা হুকুমদাতা তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুলিশ কমিশন নীতি গঠন করা হবে। কোনো পলিটিক্যাল পার্টি যেন পুলিশকে মিসইউজ করতে না পারে, এটিই হচ্ছে মোদ্দাকথা।

জাতীয়

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীর সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ জুন অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের জন্য আজ আদালতে আবেদন করে দুদক। বিচারক মো. রবিউল আলম আবেদন গ্রহণ করেছেন বলে দুদকের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এর আগে বুধবার ড. ইউনূসকে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলা থেকে খালাস দেন আদালত।

দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করেন। পরে বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতীয়

পাহাড়িদের একটি অংশের বিরোধিতার মুখেই আজ শপথ নিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুপ্রদীপ চাকমাকে উপদেষ্টা করায় চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের সহধর্মিণী রানি য়েন য়েন রায়ের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীসহ পাহাড়িদের একটি অংশ বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছে।

তারা সুপ্রদীপকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ আখ্যায়িত করে তাকে সরানোর দাবিতে শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করেছেন।

এ সময় অবিলম্বে সুপ্রদীপকে সরিয়ে তাদের সঙ্গে বসে অন্য একজনকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি জানান তারা।

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে দাবিটি জোরালো করা হচ্ছে। এসব স্ট্যাটাসে সুপ্রদীপ চাকমাকে সরিয়ে রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, সাবেক রাঙামাটি জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান ও অধ্যাপক মংসানু মারমা-এ তিনজনের মধ্যে যে কোনো একজনকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে।

মানববন্ধনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সহসভাপতি রেং ইয়ং ম্রো বলেন, আদিবাসীদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করেই তাদের প্রতিনিধি ঠিক করা আদিবাসীদের সঙ্গে এক ধরনের মশকরা। আমরা এতদিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে দেশকে নতুন করে স্বাধীন করেছি। কিন্তু নতুন সরকার এসেই আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক একটা আচরণ করেছে।

রাঙামাটির চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা রানি য়েন য়েন বলেন, ৯ আগস্ট আদিবাসী দিবস আমাদের কাছে মহৎ একটা দিন। কিন্তু এদিনেই আমাদের সঙ্গে নতুন সরকার মশকরা করছে। যেই ব্যক্তিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি করা হয়েছে, তিনি সব সময় ‘জি স্যার’ করার লোক। তিনি কখনোই আমাদের হয়ে কিছুই করতে পারবেন না। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা করতে পারবেন না। তাই আমরা চাই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমাদের প্রতিনিধি ঠিক করা হোক।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, তারা কী কারণে আমার বিরোধিতা করছেন তা আমার জানা নেই। সেটা তাদের বিষয়। আমি তো উপদেষ্টা হতে চাইনি। আমাকে যে উপদেষ্টা করা হয়েছে, তাও জানা ছিল না। পরে তা আমাকে জানানো হলে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাতে সম্মতি প্রকাশ করেছি।

তিনি জানান, আজ তিনিসহ তিন উপদেষ্টাকে শপথ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৫ সালে সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি।

চাকরি জীবনে সচিব পর্যায়সহ দেশে-বিদেশে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।

এছাড়াও তিনি রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা ও কলম্বোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদ থেকে ২০২১ সালে অবসর নেন তিনি।

জাতীয়

আপনার মোবাইল ফোন অ্যান্ড্রয়েডে কোনোভাবেই ইন্টারনেট কাজ করছে না? সম্ভবত সেটিংয়ে কোনো হেরফের হওয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। কী কারণে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইন্টারনেট কাজ করছে না, তা দেখে নেওয়া যাক।

আপনার ফোনটি ডুয়াল সিম বা দুটি সিম সমর্থন করলে নিশ্চিত করুন, আপনার মোবাইল ডেটার জন্য সঠিক সিম ব্যবহার করছেন কিনা। কোন সিমের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান, তা নির্বাচন করে সেটে সংযোগ দিন। কারণ অনেক সময় দেখা যায়, আপনার মোবাইল ডেটা নেই, এমন সিম সিলেক্ট করা থাকতে পারে সেটিংয়ে।

এরপর ফোনের সেটিংসঅ্যাপ চালু করুন। পরে ‘কানেকশনস’ অপশনটি বেছে নিন। ‘সিম ম্যানেজার’ অপশনে গিয়ে চাপ দিয়ে ‘মোবাইল ডেটা’ অপশনটি নির্বাচন করুন। এরপর আপনি যে সিমে ইন্টারনেট প্যাক কেনা রয়েছে, সেটি নির্বাচন করুন।

তারপর মোবাইল ডেটা আছে কিনা, সেটি পরীক্ষা করে দেখুন। সিমে কী ধরনের ইন্টারনেট প্যাক রয়েছে, তার ওপর ইন্টারনেট সংযোগনির্ভর করে। কিছু কিছু কোম্পানি মেয়াদ শেষ হলেই ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। তাই ইন্টারনেট প্যাকে মেয়াদ আছে কিনা, তা যাচাই করে দেখুন। সব কিছু ঠিক থাকলে ওয়াইফাই বন্ধ আছে কিনা তা যাচাই করে দেখুন।

কারণ ফোনে ওয়াইফাই চালু করা থাকলে এর সংযোগ বন্ধ করে দেখুন সেলুলার বা সিম কার্ডে ইন্টারনেট সংযোগ আছে কিনা। কারণ অনেক সময়ই সেরা ইন্টারনেট রুট খুঁজতে ওয়াইফাই ও মোবাইল ডেটার মধ্যে অদলবদল হতে পারে।

আবার মোবাইল ডেটা বন্ধ করে নতুন করে চালু করুন। মোবাইল ডেটা বন্ধ করে চালু করলে কখনো কখনো ছোটখাটো সমস্যা সমাধান করা যায়, যার ফলে নতুন করে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের সুযোগ মেলে।

প্রথমে সেটিংসঅ্যাপ চালু করুন। এর পর ‘কানেকশনস’ অপশনে চাপুন। ডেটা সম্পর্কিত অপশনের জন্য ‘ডেটা ইউজেস’ চাপুন। এর পর স্ক্রিনে দেখতে পাওয়া ‘মোবাইল ডেটা’ বন্ধ করুন। এবার ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন এবং পুনরায় মোবাইল ডেটা চালু করুন।

যদি এতেও কোনো সমস্যা সমাধান না হয়, তবে এয়ারপ্লেন মোড চালু আছে কিনা দেখুন। এয়ারপ্লেন মোড চালু থাকলে ওয়াইফাই ও মোবাইল ডেটাসহ ফোনের সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ফোনকলের সমস্যা বা ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যার ক্ষেত্রে এটি একটি দ্রুত সমাধান হতে পারে, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কার্যকর।

এবার ফোনের স্ক্রিনের ওপর থেকে নিচে সোয়াইপ করুন ও ‘ফ্লাইট’ আইকনে আলতো করে চাপ দিন। এতে ফোনের এয়ারপ্লেন মোড চালু হবে। পাঁচ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন এবং একই ফ্লাইট আইকনে আবার চাপুন। এতে ফোনটি আবার সব সংযোগ ফিরে পাবে। এবার চেষ্টা করে দেখুন মোবাইল ডেটা চলছে কিনা।

যদি ওপরের কোনো পদ্ধতি কাজ না করে, সে ক্ষেত্রে ফোনের নেটওয়ার্ক সেটিং রিসেট করুন। এরপর সেটিং পরিবর্তন করলে সমস্যাটি সমাধান করা যাবে। নেটওয়ার্ক সেটিংস রিসেট করার জন্য, ‘সেটিংস’ অ্যাপ চালু করুন, ‘জেনারেল ম্যানেজমেন্ট’ অপশনে যান এবং ‘রিসেট’ অপশনটি বেছে নিন। পরের পৃষ্ঠায়, রিসেট নেটওয়ার্ক সেটিংস’ অপশন চাপুন এবং ‘রিসেট সেটিংস’ অপশনটি বেছে নিন।