জাতীয়

বাতিল করা হচ্ছে সারা দেশে ৩০টি সাইলো নির্মাণ প্রকল্প। চার বছর পেরিয়ে গেলেও বাস্তবায়ন অগ্রগতি নেই বললেই চলে। এখন নতুন করে সাইলোর সংখ্যা কমিয়ে প্রকল্পটি সংশোধনীর প্রস্তাব করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এতে সায় না দিয়ে প্রকল্পটি বাতিল করার পক্ষে সুপারিশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। শিগগিরই এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে।

এক্ষেত্রে বর্তমান আর্থিক সংকট এবং প্রকল্পের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করার কথা। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল খাদ্য অধিদপ্তরের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শন, উন্নয়ন ও কারিগরি সেবা বিভাগের পরিচালক (চ.দা.) মো. তাজল ইসলাম সোমবার  বলেন, হ্যাঁ, প্রকল্পটি বাতিলের সুপারিশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। তবে কী কারণে এটি বাতিল করা হচ্ছে, সেটি বলতে পারছি না। কেননা আমি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় উপস্থিত ছিলাম না। এছাড়া বাতিলের কোনো চিঠিপত্রও এখনো হাতে পাইনি। প্রকল্পটি বাতিল হচ্ছে, সেটি শুধু শুনেছি। এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৮ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক ধানের সাইলো নির্মাণ’ (প্রথম ৩০টি সাইলো নির্মাণ পাইলট প্রকল্প) প্রকল্পটি। কিন্তু নানা কারণে এটি বাস্তবায়নে গতি ছিল না। প্রায় চার বছরের মধ্যে এর আওতায় খরচ হয়েছে ৯ কোটি টাকার মতো। এ অর্থে ডিজাইন, ড্রইংসহ অনান্য কার্যক্রম করা হয়েছে। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করে সাইলো সংখ্যা কমিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পের মাধ্যমে একেকটি সাইলো নির্মাণে অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৪৫ কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধনী প্রস্তাবে প্রতিটি সাইলো নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০০ কোটি টাকা।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পিইসি সভায় বিষয়টি নজরে আসে পরিকল্পনা কমিশনের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এরপর সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্পটির অনুকূলে বরাদ্দ রয়েছে ২৪ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান মো. ছায়েদুজ্জামান বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রকল্প অনুমোদন ও সংশোধনের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। আমরা বিচারবিশ্লেষণ করে দেখেছি প্রকল্পটির পেছনে এখন পর্যন্ত যে সমান্য অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, এতে এ অবস্থায় এটি বাতিল করা হলে খুব বেশি ক্ষতি হবে না। এছাড়া যা খরচ হয়েছে, তা দিয়ে যে নকশা তৈরি বা অন্যান্য প্রাথমিক কার্যক্রম করা হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী সময়ে কাজে লাগানো যাবে। তাই এটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, কীটনাশক ছাড়া দীর্ঘসময় ধান সংরক্ষণের প্রকল্প ছিল এটি। প্রকল্পটি গ্রহণের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের মাধ্যমে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য দেওয়া, সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ১ দশমিক ৫০ লাখ টন ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির অভিযোজন, কীটনাশকবিহীন মজুতব্যবস্থার মাধ্যমে ২ থেকে ৩ বছর শস্যের পুষ্টিমান বজায় রাখা। আরও আছে, আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মজুত শস্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং নিরাপদ ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম ছিল, ধান ঝাড়াই, বাছাই, শুকানো, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রকব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ প্রতিটি ৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৩০টি ধানের সাইলো নির্মাণ করা। এছাড়া সাইলোতে ট্রাক ও বাল্ক ওজন যন্ত্র, কনভেয়িং, বাকেট এলিভেটর সিস্টেম সংযোজন করা, ৩০টি সাইলোর সিভিল ফাউন্ডেশন, মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ (প্রতিটি ১৮৫ দশমিক ৮৭ বর্গমিটার), ৩০টি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপন (মোট ৩০টি) এবং ৩০টি কেন্দ্রে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ (প্রতিটিতে ৩৫৫ দশমিক ০৮ মিটার) করা।

প্রকল্পটি গ্রহণের সময় সংশ্লিষ্টরা বলেছিলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩০টি ধানের সাইলো নির্মাণ করা হবে। সাইলোগুলো নির্মাণ হলে ৩ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৫০ লাখ টন ধান সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এসব সাইলো নির্মাণ করা হলে সারা বছর কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কৃষক সহজেই সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রয় করতে উৎসাহিত হবেন। উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

জাতীয়

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বহুল আলোচিত-সমালোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কারিগরি স্বত্ব এখনো বুঝে পায়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ইভিএম সংগ্রহ চুক্তিতেও অস্পষ্টতা রয়েছে। এসব কারণে দেড় লাখ ইভিএম, এসব মেশিনের কারিগরি ডকুমেন্টস এবং প্রকল্পের আওতায় কেনা মালামাল বুঝে পেতে জটিলতার মধ্যে পড়েছে কমিশন সচিবালয়।

ইভিএম’র সফটওয়্যারের আনএনক্রিপটেড সোর্সকোড ও আর্কিটেকচার, ডাটাবেজ আর্কিটেকচার, ডকুমেন্টেশনসহ কারিগরি সবকিছুই বুঝিয়ে দিতে সম্প্রতি প্রকল্প ও সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। পাশাপাশি ওইসব মালামাল বুঝে নেওয়ার জন্য ব্যয় না বাড়িয়ে শুধু মেয়াদ বাড়াতে পরিকল্পনা কমিশনকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে ইসি। অবশ্য প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, দেড় লাখ ইভিএম যেখানে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। তবে কারিগরি স্বত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব শফিউল আজিম বলেন, প্রকল্পের আওতায় কেনা দেড় লাখ ইভিএম, ইভিএমে ব্যবহার করা টেকনোলজি, গাড়িসহ অন্যান্য সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়বে বাড়বে এমন আশায় এসব কিছুই বুঝে নেওয়া হয়নি। এখন আমরা এসব জিনিস বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে টেকনোলজি ট্রান্সফার নিয়ে। ওই প্রযুক্তির সঙ্গে ইসির জনবল যুক্ত ছিল না। আমাদের দক্ষ জনবল নেই। আমাদের জনবলকে প্রশিক্ষণ দিতে যারা ইভিএম তৈরি করেছে তাদের দরকার হবে। এসব বিষয় সমাধানে আলোচনা চলছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এক বছর বাড়ানো হয়। বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মধ্যেই ওই প্রকল্পের আওতায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়। ওই নির্বাচনে মাত্র ছয়টি আসনে এ মেশিনে ভোটগ্রহণ হয়। পরে এক হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। নির্বাচন কমিশন ও প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের দাবি, ইভিএমে কারচুপি হয়েছে এমন অনেক অভিযোগ আছে কিন্তু তা কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইভিএমের কারিগরি স্বত্ব বুঝে নেওয়া এবং এ মেশিন দিয়ে নির্বাচনে পরিচালনা করতে পারবেন-নির্বাচন কমিশনের এমন পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মকর্তা তৈরি হয়নি। প্রকল্পে ইসির যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তারাও এদিকে মনোযোগ দেননি। সম্প্রতি ইভিএম কাস্টমাইজ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ৪০ জন কর্মকর্তাকে প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ওই প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর ইভিএমে নির্বাচন না হওয়ায় তারা কতটা পারদর্শী হয়েছেন তা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারা আরও জানান, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা না করলে এসব ইভিএম আর কোনো নির্বাচনে ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় কেনা দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে ৬২ হাজার ৬৪৭টি, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) ৮৬ হাজার ৫৭৮টি ও নির্বাচন ভবনে কাস্টমাইজেশন সেন্টারে ৬১৮টি রাখা হয়েছে। আর আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়েছে ১৫৭টি। যদিও ইসির আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে মাঠ পর্যায়ে ৬১ হাজার ২২০টি ইভিএম রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই হিসাবে এক হাজার ৪২৭টি ইভিএমের খোঁজ নেই।

আরও জানা গেছে, ইভিএম’র কারিগরি স্বত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জোরালো আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিএমটিএফ ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ইভিএম’র আপডেট সফটওয়্যার ইসিকে দেওয়া হয়নি। ওই সফটওয়্যার সোর্সকোডসহ ইসিকে বুঝিয়ে দিতে হবে। ইভিএমে ইন্সটল করা সফটওয়্যার কখনোই হস্তান্তর করা হয়নি। সফটওয়্যারগুলো যাতে নতুন কোনো ডিভাইসে ইন্সটল করা যায়-সেই সক্ষমতা ইসির প্রতিনিধিদের বুঝিয়ে দিতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। বৈঠকে ইভিএম ইন্সটল থাকা সফটওয়্যার, কাস্টমাইজেশন সফটওয়্যার এবং এসডি কার্ড, অডিট কার্ড এবং পোলিং কার্ড প্রক্রিয়াকরণ ও মুদ্রণের জন্য সফটওয়্যারের সোর্সকোড বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে এসব সফটওয়্যার বুঝে নেওয়ার জন্য ইসির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা বৈঠকে বলেন, সোর্সকোডের বিষয়ে কারিগরি দল ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে চুক্তি এবং সোর্সকোড সংরক্ষণের ইসির কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়েও আলোচনা হয়।

ওই বৈঠকে বিএমটিএফ’র কর্মকর্তারা ইভিএম ও প্রকল্পের মালামাল সংরক্ষণের জন্য ইসি ভাড়া পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ করেন। তারা ইসিকে বলেন, ইভিএম যেখানে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় হিসাব মিলিয়ে দেওয়া হবে। হার্ডওয়্যার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে। এসডি কার্ড, অডিট কার্ড এবং পোলিং কার্ড প্রক্রিয়াকরণ ও মুদ্রণের বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, সরবরাহের পরপরই ইসির কমিটির দেড় লাখ ইভিএম রিসিভ করেছেন। প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে এসে এখন ইসির মাঠ কার্যালয়, নির্বাচন ভবনে থাকা কাস্টমাইজেশন সেন্টার ও বিএমটিএফে থাকা ইভিএম এবং র‌্যাক ইসিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গত মার্চ-এপ্রিলে মাত্র ৪৫ হাজার ইভিএম সচল থাকার কথা প্রকল্প থেকে জানানো হয়। এখন কতগুলো ইভিএম সচল, কতগুলো পুরোপুরি অচল এবং কতগুলো মেরামতযোগ্য তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। এজন্য একটি সফটওয়্যারও তৈরি করা হয়েছে। তবে সেখানে সব ইভিএম’র বর্তমান অবস্থার তথ্য নেই। তারা বলেন, প্রকল্পে ইভিএম সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে আছে ইসি সচিবালয়। ইসির সর্বশেষ সমন্বয় সভায় ইসি সচিব শফিউল আজিম ১০ আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে ওয়্যারহাউজের জন্য জমি খোঁজার পরামর্শ দেন। সেখানে ইভিএম ছাড়াও নির্বাচনি সামগ্রী মজুত করা হবে বলে ওই বৈঠকে জানানো হয়।

জাতীয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহানগর ও জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষের (২০২৫) জন্য প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

এ উপলক্ষ্যে আগামী ১২ নভেম্বর থেকে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে। লটারি অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বর।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভায় আবেদন গ্রহণের এ সময় নির্ধারণ করা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে। এরপর ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে ভর্তির লটারি।

এ প্রক্রিয়ায় ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে শূন্য আসনের তথ্য চেয়েছে মাউশি। ৩০ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে এসব তথ্য দিতে হবে। কোনো শ্রেণি শাখার জন্য শিক্ষার্থীর চাহিদাসংখ্যা কোনোভাবেই ৫৫ জনের বেশি দেওয়া যাবে না। তথ্য ফরমে ঢাকা মহানগরীর প্রতিষ্ঠানপ্রধানেরা প্রতিষ্ঠান–সংলগ্ন সর্বোচ্চ তিনটি থানাকে (পুলিশ স্টেশন) ‘ক্যাচমেন্ট’ এলাকা হিসেবে নির্ধারণ করবেন।

প্রতিবারই বছরের শেষ সময়ে এসে পরবর্তী বছরের ভর্তির প্রক্রিয়া চলে। ভর্তি শেষে জানুয়ারিতে ক্লাস শুরু হয়। আগে কেবল প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির কাজটি হতো লটারির মাধ্যমে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর পর থেকে একই প্রক্রিয়ায় ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হচ্ছে।

এবার কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন এতদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল।

তবে নতুন সিদ্ধান্ত হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। না পাওয়া গেলে এই আসনে মেধাতালিকা থেকে ভর্তি করতে হবে।

জাতীয়

এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কি না, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীরও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ওই প্রশ্নের উত্তরে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে সরকারের কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে কোনো আপডেট নেই। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে আমাদের উপদেষ্টারা বলেছেন, সরকার যথোপযুক্ত সময়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

রাষ্ট্রপতি বিষয়ে সরকারের সর্বশেষ অবস্থান কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর কেউ কেউ কথা বলছেন। আমাদের আগের একটি অবস্থান আছে। উপদেষ্টা সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি কনসালটেশন হবে। এই কনসালটেশনে কি সিদ্ধান্ত হয়, সেটা আপনারা (সাংবাদিক) পরবর্তীতে জানবেন। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে৷ এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে আসার চেষ্টা চলছে। ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আশা করছি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উৎখাত হওয়া প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনার অডিও রেকর্ড ফাঁসের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিবকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অডিও রেকর্ডের ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন না দেখে আমরা বলতে পারবো না। অনেক সময় হয় যে হুবহু কণ্ঠ নকল করা যায়। সেই জায়গায় এটা যে একটি অথেনটিক অডিও সেটি বোঝা কঠিন। সেটা না হলে আমরা এই বিষয়ে বলতে পারছি না।

এর আগে উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আজকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টা গণভবন পরিদর্শন করেছেন। এটা প্রধান উপদেষ্টার প্রথম গণভবন পরিদর্শন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছেন, কীভাবে গণভবনকে জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ড বা বিপ্লব বা তার পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের স্মৃতি হিসেবে জাদুঘরে পরিণত করা যায় এবং কত দ্রুত কাজটি শেষ করা যায়।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, আর্কিটেক্ট বা প্রকৌশলীদের কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আয়না ঘরের একটি রেপ্লিকা যাতে সেখানে রাখা হয়- সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আয়না ঘরে বন্দীদের কি ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে সেটি মানুষ গণভবন পরিদর্শন করলে জানতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আজ প্রধান উপদেষ্টা দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছেন। একজন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ সমাজের স্কিল কীভাবে উন্নত করা যায় এবং এই স্কিল উন্নত করার ফলে দুই দেশই উপকৃত হবে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া সৌদি আরবের বাদশা ও প্রিন্সের দুটি চিঠি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

এ সময় রাষ্ট্রদূত সৌদি এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান বলেছেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার জন্য সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টাও সৌদি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, এটাই ‘আসল’ বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার উপযুক্ত সময়।

আয়না ঘর ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) বিষয়ে এক প্রশ্নের প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি, আমাদের রাষ্ট্রের অনেক নাগরিককে গোপন বন্দীশালায় রাখা হয়েছিল এবং নির্যাতন করা হয়েছিল। এই নির্যাতনের সঙ্গে অনেকে জড়িত। কারা এর সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে জড়িত সেটি তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন আছে। সেই কমিশন এটি তদন্ত করে দেখবে। এখানে কোনো বাহিনীকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং এককভাবে দায়ী করা হয়নি। এর জন্য কেউ ব্যক্তিগত বা সামষ্ঠিকভাবে দায়ী হলে তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে, এই অঙ্গীকার অনেক আগেই বর্তমান সরকার জানিয়েছে। সেই আঙ্গিকেই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

৫ আগস্টের পর অনেকে আয়না ঘর থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তারপরও অনেকে এখনও গুম আছে, অনেকের খোঁজ এখন পরিবার পায়নি। তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে কি না? জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা পুরোদমে কাজ করছে৷ সারাদিন এমনকি বন্ধের দিনেও তারা কাজ করছেন। যে লোকগুলো নিখোঁজ হয়েছে বলে এতদিন আমরা জানতাম, এখন তার থেকে বেশি মানুষ নিখোঁজের তথ্য জানা যাচ্ছে। কমিশন এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখছে। দেশে কতগুলো আয়না ঘর ছিল, এটা নিয়েও কাজ করছে। প্যানেল যখন পুরো প্রতিবেদন দেবে, আপনারা জানতে পারবেন।

আয়না ঘর থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে সরকারের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আয়না ঘরের বিষয়ে কমিশন কাজ করছে। তারা তাদের কাজ শেষ সুপারিশ দেবে৷ তখন সরকার সেই সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেবে।

জনপ্রশাসন সচিবের অনিয়মের বিষয়ে যে তদন্ত চলছে সেটার বিষয়ে জনতে চাইলে তিনি বলেন, এটার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমরা এখনো পাইনি। এখানে কিছু ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন আছে। যে সমস্ত প্রমাণের কথা আসছে, সেগুলো সত্য কিনা সেটি যাটাই করার বিষয় আছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আমরা আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানাবো।

জাতীয়

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সব ধরনের সেবা পেতে এখন থেকে নির্বাচন কমিশনের হটলাইন নম্বর ১০৫-এ টোল ফ্রি কথা বলা যাবে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক শরীফুল ইসলাম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ সেবা মিলবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন ভোটার নিবন্ধন, এনআইডি সংশোধন, ভোটার ঠিকানা পরিবর্তনসহ নাগরিক সেবায় জেলা, উপজেলা ও থানা অফিসে যোগাযোগ করা যাবে।

সেই সঙ্গে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন হটলাইন ১০৫-এ টোল ফ্রি সেবা নেয়ার অনুরোধ জানায় ইসি।

জাতীয়

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব সরকার ও শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খাদিজা আক্তার ঊর্মিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছিলেন মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব সরকার। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তা জানাননি ডিএমপির এ কর্মকর্তা।

মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আরও বলেন, পৃথক অভিযানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খাদিজা আক্তার ঊর্মিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি শাহবাগ থানায় দায়ের করা এজাহারনামীয় আসামি।

জাতীয়

বহুল কাঙ্ক্ষিত বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের স্বাক্ষরের পর রোববার প্রস্তাবটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে- মামলার সংখ্যা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম, অধস্তন আদালতের বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মপরিধি ব্যাপক হারে বেড়েছে। এসব বিবেচনায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপন জরুরি। শুধু পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই অধস্তন আদালতের বিচারকগণের শৃঙ্খলা, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি ও অন্যান্য বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিচার বিভাগ পৃথককরণসংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আংশিক বাস্তবায়ন করা হয় ২০০৭ সালে। ওই বছর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এক অধ্যাদেশ জারি করে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক করা হয়। কিন্তু গত ১৭ বছরেও বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দায়িত্ব নেওয়ার পরই প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা নেন। সে লক্ষ্যে ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেন। সেখানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অ্যাটর্নি-জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বিচারপতি তার অভিভাষণে দেশের বিচার বিভাগের জন্য রোডম্যাপ তুলে ধরেন, যাতে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। অভিভাষণে তিনি উল্লে­খ করেছিলেন যে, বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের জন্য তিনি শিগগিরই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের মতামত গ্রহণপূর্বক বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবনা রোববার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রস্তাবে যা বলা হয়েছে : আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ কার্যকররূপে বাস্তবায়িত না হলে রাষ্ট্রে সংবিধানের সুসংহত চর্চা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এর ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার শুদ্ধ ভারসাম্য বজায় রাখার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা একদিকে যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ একটি সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ করে, দীর্ঘদিন ধরে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব প্রয়োগের প্রবণতার যে চর্চা অব্যাহত রয়েছে তা রোধ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, এর ফলে স্বাধীনতার পর হতে অদ্যাবধি আমাদের দেশে আইনের শাসন ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা চর্চার সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ, আমাদের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নিশ্চিতকরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

একথা অনস্বীকার্য যে, এমন একটি প্রেক্ষাপট সত্ত্বেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের ৭৯/১৯৯৯ নম্বর সিভিল আপিল মামলার রায়ে (যা মাসদার হোসেন মামলা নামেই অধিক সমাদৃত) নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের পূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরার মাধ্যমে আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির বাস্তবায়নের পথকে সুগম করে দিয়েছে।

ওই রায়ে ক্ষমতার পৃথকীকরণের যে রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে তার অন্যতম মৌলিক ভিত্তি হলো দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের সর্বোত্তম কার্যকর উপায় স্বাধীন বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা। এ কারণে ওই মামলার রায়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বর্তমানে প্রচলিত দ্বৈত-শাসন কাঠামো তথা অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, শৃঙ্খলা প্রভৃতি বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের যে যৌথ এখতিয়ার রয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বিলোপ করে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাকে ক্ষমতার পৃথকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসাবে বিবেচনা করেছে।
বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকারের অনীহার কারণে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ সম্ভবপর হয়নি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বর্তমান সময় হচ্ছে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের শ্রেষ্ঠ সময়। এ প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে নির্বাহী বিভাগ হতে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা। কেননা, শুধু পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আমাদের দেশে দক্ষ, নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন বিচার কাজের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

আমাদের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদে হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। বর্তমানে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রি অধস্তন আদালতের বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট তথা হাইকোর্ট বিভাগকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগের এই তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ নয়। কেননা বিদ্যমান কাঠামোতে আইন মন্ত্রণালয় হতে অধস্তন আদালতসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব আসার পর হাইকোর্ট বিভাগ তার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের মর্ম অনুসারে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ হাইকোর্ট বিভাগের একচ্ছত্র অধিকার। তাই সাংবিধানিক এই বাধ্যবাধকতা সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় সারা দেশে এক হাজার ২৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রোববার (২৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২০৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৭৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৬৭ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) চারজন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১৯৫ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে ৫২ হাজার ৫৬০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।

চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫৬ হাজার ৯১১ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক দুই শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক আট শতাংশ নারী রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৭৭ জন।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

জাতীয়

অনলাইনে পোস্ট করা বিষয়গুলোর পেছনের উদ্দেশ্য মূল্যায়ন করে আসল মতলব বোঝা সম্ভব হয়।

গবেষণা করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের ‘লাফবরাহ ইউনিভার্সিটি’র দুই গবেষক অ্যান্ড্রু চ্যাডউইক এবং ক্রিস্টিয়ান স্টেট দেখতে পান- বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা প্রতিনিয়ত ভুল ও অসত্য তথ্যের শিকার হন।

এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে গেলে জীবনের একটি অংশ হয়ে গেছে। তবে এটা ঠিক যে, সত্য সংবাদের উৎস হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভর করা যায় না। তাই ‘অসত্য খবর’ চিহ্নিত করার পন্থাগুলো জানা থাকা প্রয়োজন।

সাধারণত দুই ধরনের অসত্য খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

এই দুই গবেষক ব্যাখ্যা করেন, “একটা হলে ‘মিসইনফরমেইশন’ বা ভুল তথ্য অন্যটি হল ‘ডিসইনফরমেইশন’ বা রটনা বা গুজব।”

কোনো ব্যক্তি বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নির্দিষ্ট কোনো পেইজ থেকে ‘মিসইনফরমেইশন’ বা ভুল তথ্য প্রকাশ করার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য থাকে। সাধারণত প্রতারণা ষড়যন্ত্র মূলক তথ্য, বানোয়াট প্রতিবেদন বা ব্যাঙ্গাত্মত তথ্য দিয়ে এটা করা হয়।

সাধারণত কোনো জনমত গড়ার উদ্দেশ্যে এই ধরনের ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়।

অন্যদিকে ‘ডিসইনফরমেইশন’ বা গুজব ছড়ানোর প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে ঠকানো। আর সাধারণত ভুল তথ্য ছড়ানোর কৌশলগুলোই এই ক্ষেত্রে ফলানো হয়।

যে কোনো ধরনের অসত্য খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা মানে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। কারণ অনেক মানুষই তথ্য যাচাই বাছাই না করে ‘শেয়ার’ করা শুরু করেন।

তাই এই গবেষকদ্বয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য যাচাই করার ক্ষেত্রে কয়েকটি নজর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন।

ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট

যদি ‘ফলো’ করা কোনো ব্যক্তির দেওয়া তথ্য নিয়ে সন্দেহ জাগে তবে তাকে প্রশ্ন করা এবং সেই হিসেবে যাচাই করা যেতেই পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাধারণত মানুষের ব্যবহারের পরিধির ওপর নির্ভর করে চলে, এখানে ভুল তথ্য বা গুজব গননা করা সম্ভব নয়। তাই অসত্য খবর চিহ্নিত করতে কিছু প্রশ্ন সাহায্য করতে পারে।

যিনি তথ্যটি ‘শেয়ার’ করছেন সেটা কি ব্যক্তিগত আবেগ নাকি পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গী থেকে করছেন?

‘কনটেন্ট’টি কোনো বিষয়ের দিকে নজর দিচ্ছে।

তথ্যগুলো কি যুক্তিসঙ্গত?

খবরে বিশ্বাসযোগ্য কোনো উৎসের কথা বলা আছে কি-না?

যে অ্যাকাউন্ট থেকে ‘শেয়ার’ করা হচ্ছে, তার জন্য সেটা কতটা গুরু্ত্বপূর্ণ?

ব্যবসায়িক বা পেশাদার অ্যাকাউন্টস

বর্তমানে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য সফল করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা নতুন কিছু নয়। আর এটা প্রচরণার একটা কৌশল হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে অনেকে সময় সর্বসাধারণকে অনেক সময় নির্দিষ্ট ক্রেতা শ্রেণিকে চিহ্নিত করে তথ্য প্রচার করা হয়।

তাই কোনো বিষয়ে প্রচারণামূলক তথ্য সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমে ঘোরাঘুরি করলে জানার চেষ্টা করতে হবে, সেটা আপনার প্রয়োজন? বাজারে কি এরকম পণ্য আরও আছে? সেগুলোর সাথে এগুলোর কার্যকারিতায় পার্থক্য কোথায়? সেবা বা পণ্য প্রদান করতে গিয়ে, ক্রেতার ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হচ্ছে কি-না?

এক্ষেত্রে জনস হপকিন্স ইনফরমেইশন সোসাইটি ইন্সটিটিউট’য়ের নিরাপত্তা বিষয়ক জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী জোয়ি ক্যারিগান বলেন, “বিশ্বস্ত ও আস্থাযোগ্য মিডিয়ার উৎসের তালিকা করে রাখা উচিত।”

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “খবর-প্রতিবেদন এবং ব্যক্তিগত অভিমতের পার্থক্য করতে হবে। সংবাদপত্রগুলো অনেক সময় নানান মানুষের মতামত প্রকাশ করে। যে কোনো পেশাদান উন্নতমানের সংবাদ সংস্থা তাদের প্রতিবেদন ও অন্যদের মতামত আলাদাভাবে প্রকাশ করে। এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।”

‘ফ্যাক্ট চেকিং টুলস’ ব্যবহার করেও তথ্য যাচাই করা সম্ভব। যেমন- Snopes, PolitiFact, factcheck.org এবং Leadstories.com

ক্যারগান বলেন, “এই ধরনের ‘টুলস’গুলো মিথ্য খবর চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। তবে মনে রাখতে হবে- এই সময়ে চোখের দেখা মানেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

‘এআই’ নির্ভর ছবি, ‘ডিপ ফেইক’ করা ভিডিও ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচার করা এই সময়ে সহজ বিষয় হয়ে গেছে।

তাই ক্যারিগান বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাই আসুক সবই তীক্ষ্ণ নজরে সন্দেহ নিয়েই দেখতে হবে। যে কোনো খবর দেখেই ঝাপায় পড়ে বিশ্বাস করা যাবে না। আবার এটাও মনে রাখতে হবে- জনজীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা যখন অধিকাংশ সাধারণ মানুষ সরাসরি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার বা শেয়ার করা শুরু করে সেগুলোর ক্ষেত্রে তথ্য ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমই থাকে।”

জাতীয়

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম এনডিসি পুলিশি কার্যক্রম আরও বেগবান করার জন্য পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ লাইনসের ড্রিল শেডে পঞ্চগড় জেলা পুলিশের অফিসার ও ফোর্সের সাথে এক বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ নির্দেশনা দেন।

সভায় রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মজিদ আলী, পঞ্চগড় জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী, ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম এবং পঞ্চগড় জেলার পুলিশ অফিসার ও ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।

আইজিপি বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন আমাদের জন্য দেশ গড়ার এক নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি; নতুন সমাজ বিনির্মাণের সুযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা বাংলাদেশ পুলিশকেও গড়ে তুলতে চাই। আমরা নিজেরা অন্যায় করবো না; অন্যকেও অন্যায় করার সুযোগ দিবো না।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি টিম। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুলিশ বাহিনীকে গড়ে তুলতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে পুলিশ প্রধান বলেন, জনগণের সাথে পেশাদার আচরণ করতে হবে। তাদের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

ফোর্সের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করে আইজিপি বলেন, কল্যাণের পাশাপাশি ফোর্সের শৃঙ্খলা কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে।

তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। আইজিপি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

পরে তিনি পঞ্চগড় সদর সার্কেলের নবনির্মিত অফিস ভবন উদ্বোধন করেন।