জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হজরত মুহাম্মদের (সা.) সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ অনুসরণের মাধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।

তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বুধবার এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বিশ্ববাসী বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হযরত মুহাম্মদকে (সা.) বিশ্বজগতের হেদায়েত ও নাজাতের জন্য ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। নবী করিম (সা.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে নবী, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য কেবল রহমতরূপে প্রেরণ করেছি’ (সুরা আল-আম্বিয়া, আয়াত ১০৭)। মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি।

বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানা দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। তার অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, হুদায়বিয়ার চুক্তির মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর ঘর কাবা শরিফ জিয়ারত করার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানবী (সা.)-এর শান্তিপূর্ণ ‘মক্কা বিজয়’ মানব ইতিহাসের আর এক চমকপ্রদ অধ্যায়। কার্যত তিনি বিনা যুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে ও বিনা ধ্বংসে মক্কা জয় করেন। শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.) কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি অতুলনীয় ক্ষমা প্রদর্শন করে এবং তাদের প্রতি উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্ত্বের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ।

মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারী হিসেবে পথ দেখাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, তার সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, ‘আমি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে মহানবী (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন- আমিন।’

জাতীয়

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে পর্যটন নগর কক্সবাজার পর্যন্ত নবনির্মিত রেলপথ দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলতে যাচ্ছে আগামী ১৫ অক্টোবর। এ জন্য চট্টগ্রামের পটিয়া রেলস্টেশনে ট্রায়ালের জন্য রাখা হয়েছে ছয়টি বগির একটি ট্রেন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের বিদায়ী পরিচালক মফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী ২৮ অক্টোবর এ রেলপথ উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের পটিয়া রেলস্টেশনে ট্রায়াল ট্রেন এসে পৌঁছেছে গত ৬ আগস্ট। ছয়টি বগির এই ট্রেনের প্রতি বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, আগামী বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালানোর জন্য তার আগেই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই লাইনে ট্রেন চালু হবে। নতুন এই রেলপথ চালু হলে চট্টগ্রাম থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পর্যটন নগর কক্সবাজারে পৌঁছানো যাবে।

প্রকল্পের সর্বমোট অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে মোট প্রকল্পের কাজ ৮৯ শতাংশ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া এলাকার দিকে প্রায় চার কিলোমিটার কাজ বাকি আছে। তা চলতি মাসেই শেষ হবে।

দোহাজারী-কক্সবাজার প্রকল্পের রেলপথের কাজ অধিকাংশ সম্পন্ন হলেও চলমান রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী অংশের মধ্যকার কর্ণফুলী সেতুর কাজ। এ সেতুতে ভারী ইঞ্জিন বহনের সক্ষমতা না থাকায় চলছে সংস্কার কাজ। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে।

জাতীয়

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৭ বছরে পা দিচ্ছেন আজ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশের দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী তিনি। টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরবও তার। ১৯৮১ সাল থেকে দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন। ৭৬ বছরের জীবনে অনেক সংকট, চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন। দেখেছেন সাফল্যের চূড়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও লম্বা সময় দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা তার। তার শৈশব কেটেছে চিরায়ত গ্রামীণ পরিবেশে, দাদা-দাদির কোলেপিঠে। ’৫৪-এর নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। বর্তমানে শুধু জাতীয় নেতাই নন, তিনি আজ তৃতীয় বিশ্বের একজন বিচক্ষণ বিশ্বনেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। সংগ্রামী জীবনে তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ১০ বার তাকে জেল-গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। মৃত্যুভয়কে পরোয়া না করে তিনি ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেশমাতৃকার জন্য। তার নেতৃত্বে অসংখ্য কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরের ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএনজিএ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের পার্শ্ব ও দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। এবারও তার জন্মদিন কাটছে ওয়াশিংটনে। তবে তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে দিনটিতে উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচি উদযাপন করবে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

জাতীয়

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয়, এ রকম কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নেবে না বলে প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে আগামীতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আগেও বলেছি, ভিসানীতি নিয়ে মানুষ যেন ভুল না বোঝে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে।বিশেষ করে, আমরা গণমাধ্যম সম্পৃক্ততার একটা কথা শুনেছি। যেটা মনে হয় না খুব একটা রাইট চয়েস। সেখানে নিশ্চয়ই আপনাদেরও (গণমাধ্যমকর্মীদের) একটা বক্তব্য আছে। সে দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) রাষ্ট্রদূত কেন এটা বললেন, এটা নিশ্চয়ই সেই দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) খতিয়ে দেখবে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আশা করব, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ করে বা সীমিত করে দেয়, এরকম কোনো পদক্ষেপ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নেবে না।

এ বছরের মে মাসের শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দেশটির ভিসা দেওয়া হবে না। ওই ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, তার দেশ ভিসানীতির প্রয়োগ শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়।

এর মধ্যেই ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ভিসানীতি ঘোষণায় যা বলা হয়েছে, এখানে সাধারণ মানুষের তো চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি যারা করেন, তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেন, সুতরাং এটা তাদের জন্য কোনো বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় তাদের জন্য যারা বিদেশে গিয়ে আবাস খোঁজেন এবং সুনির্দিষ্টভাবে ওই দেশে যদি কারও কোনো পরিকল্পনা থাকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিসা পলিসি তাদের ইন্টারনাল প্রসেস। আমরা এটাকে গ্রহণ করেছি। কিন্তু আমরা আবারও বলব, এটা যেন আরবিট্রেশন না হয়। আশা করি, আমরা জানতে পারব যখন সেই ইন্ডিভিজুয়ালদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আমরা সেই বিষয়গুলো গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করব কাদের জন্য এ নীতিটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এবং সেখানে যদি কোনো ব্যত্যয় দেখি, অবশ্যই আমরা মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে জানাব।

শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে কী পরিমাণ বাংলাদেশি মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন, সেই ডেটাতে বলে কোভিড সময়ের যে নিষেধাজ্ঞা সেই সময় কমে এলেও অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় এ বছরের আগস্টের শেষ দিন পর্যন্ত বেশি বাংলাদেশি মানুষ যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন।

জাতীয়

রাজশাহীর কুইক রেন্টাল ‘নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন’ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে (পাওয়ার প্ল্যান্ট) অলস বসিয়ে রেখেও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ৬৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ১০ বছরে কেন্দ্রটির ৪৩৮ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা থাকলেও উৎপাদন করেছে ১৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ইউনিট। ১০ বছরের মধ্যে ৭ বছরই (২ হাজার ৬৪৯ দিন) উৎপাদন বন্ধ ছিল। নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় স্থাপিত নর্দার্ন পাওয়ারের মালিক রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ-সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। এটি নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১-১২ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর প্রায় ১০ বছর নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন ১৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২ হাজার ২১৬ কোটি টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে প্রথম বছরে গড়ে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ ১৫ দশমিক ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পরের ৪ বছর প্রতি ইউনিটের খরচ কিছুটা বেশি হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নর্দার্ন পাওয়ারের বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল প্রতি ইউনিট ১০ দশমিক ৫০ টাকা। তবে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট উৎপাদন খরচ বেড়ে ২৫ দশমিক ৪১ টাকা হয়। যা আগের ১০ বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বেসরকারি পাওয়ার প্ল্যান্ট অলস বসিয়ে রাখলে চুক্তি অনুযায়ী ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে থাকে সরকার। এ হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে অলস বসে থাকা ২৪৭ দিনের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে সরকার নর্দার্ন পাওয়ারকে ৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নর্দার্ন পাওয়ার লিমিটেড ২৪ কোটি ৪০ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যা ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে ৩০৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা খরচ হয়। প্রতি ইউনিট খরচ পড়ে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নর্দার্ন পাওয়ার বছরে ৩০৩ দিন চালু রাখার কথা। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে চালু ছিল মাত্র ৫৫ দিন। এ ৫৫ দিনে উৎপাদন করে মাত্র ৬ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ বাবদ সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ৮৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির রক্ষণাবেক্ষণে পেয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নর্দার্ন পাওয়ারকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৭৩ কোটি ৬৩ লাখ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭২ কোটি ৬ লাখ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭২ কোটি ৯২ লাখ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭১ কোটি ৫৩ লাখ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৯ কোটি ১৫ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ৫২ লাখ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ৪৮ লাখ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬৬ কোটি ৯৭ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ কোটি ৬৮ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অপরদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭৮ দিন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৭৫ দিন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২৪৬ দিন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৩৬ দিন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৪০ দিন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২১০ দিন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৬২ দিন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৩৬ দিন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩০৮ দিন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪৮ দিন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩১০ দিন বন্ধ ছিল। ১০ বছরে নর্দার্ন পাওয়ার ২ হাজার ৬৪৯ দিন অলস বসে ছিল। অলস বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ৬৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পেয়েছে।

পিডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, কুইক রেন্টালগুলো বসিয়ে রাখলেই বেশি ক্ষতি। উৎপাদন বেশি হলে ইউনিট উৎপাদন খরচ কম হয়। কিন্তু এসব পাওয়ার প্ল্যান্টকে পুরোপুরি উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়নি। এ কারণে খরচও বেশি হচ্ছে। পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, কুইক রেন্টালের মূল সমস্যা হলো বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। এ কারণে বিদ্যুৎ খাতের ক্ষতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

নর্দার্ন পাওয়ারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, আমরা তো বসিয়ে রাখতে চাই না। জ্বালানি ঘাটতির কারণে অর্ধেক সময় প্ল্যান্টটি বন্ধ রাখতে হয়। সরকার জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে না। আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি -জ্বালানি সরবরাহ অটুট রাখতে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। নর্দার্ন পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক জামিল আক্তার খান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল জ্বালানি ফার্নেস অয়েল। পিডিবির ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের নির্দেশনা পেলেই আমরা উৎপাদনে যাই। আমাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ন্যাশনাল গ্রিডে যুক্ত হয়। অনেক সময় জ্বালানি না পেলে নির্দেশনা আসার পরও উৎপাদনে যেতে পারি না।

জাতীয়

রাজধানীতে শিশু-কিশোরদের জন্য বসতে যাচ্ছে শিক্ষা ও বিনোদনমূলক এক আসর। চার দিনব্যাপী ‘স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভ্যাল’ অনুষ্ঠিত হবে শিল্পকলা একাডেমিতে।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় এ কার্নিভ্যালের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সংবাদ সম্মেলনে পলক বলেন, ‘স্মার্ট চিলড্রেন কার্নিভ্যাল’ শুধু একটি অনুষ্ঠানই নয়; এটা আমাদের সন্তানদের সীমাহীন সম্ভাবনা এবং কল্পনার জগতকে প্রসারিত করার একটি বড় উদ্যোগ। এ কার্নিভ্যাল শিশু-কিশোরদের সহজাত প্রতিভা, কৌতূহল এবং তারা যে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠন করতে চায় তার প্রাথমিক আভাস। এই শিশু ও তরুণদের মনে তৈরি হবে আশাবাদে পরিপূর্ণ ও বিশ্ব মানবতাকে জাগ্রত করার অনন্ত প্রয়াস। প্রকৃতপক্ষে শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যত। তাদের সম্ভাবনাকে লালন-পালন ও প্রতিভার যথাযথ বিকাশ ঘটাতে এবং তাদের সফল হওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, আইসিটির ক্ষেত্রে আমরা অভূতপূর্ব পরিবর্তনের যুগে আমরা প্রবেশ করেছি। প্রযুক্তি শুধু একটি হাতিয়ার নয়, এটি একটি গেম-চেঞ্জার। যা সীমানা অতিক্রম করে এবং আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করার সহায়তা দেয়। আজ আমরা দেখতে পাই যে আমাদের তরুণরা স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। যা সত্যিই অসাধারণ। তারা হলো ডিজিটাল নেটিভ, যারা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আমাদের ডিজিটাল যুগে নিয়ে যাবে।

কার্নিভ্যালে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিজিটাল অ্যানিমেটেড চিত্রাঙ্কন প্রদর্শন, গেমিং জোন ও কুইজ প্রতিযোগিতা, গল্প উপস্থাপন, রিডিং জোন, ভিডিও ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে অ্যানিমেটেড জায়ান্ট বই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও পারফরমেন্স, রণপা, জায়ান্ট গেম, রাইডিং জোন, ইমার্সিভ ডিজিটাল এনভায়রনমেন্টের আয়োজন করা হয়েছে।

কার্নিভ্যালের চতুর্থ দিন ৩০ সেপ্টেম্বর ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। যে কোনো নির্বাচনে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে। দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে বিজিবি সর্বদা প্রস্তুত।

রোববার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবির ফোর্স সাপোর্ট উইংয়ের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান এসব কথা বলেন।

নাজমুল হাসান আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করব। আমরা যতটুকু জানি, আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে বিজিবির ওপর অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব সব সময় পালন করে।

বিজিবি মহাপরিচালক নাজমুল বলেন, ২২৮ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যে লালিত ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বিজিবি। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এ বাহিনীর রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই বিজিবি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সীমান্ত সুরক্ষার সুমহান দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান আমাদের দায়িত্ব। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং দেশ গঠন ও জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির অনবদ্য ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।

জাতীয়

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় এই সংলাপে নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই আলোচনায় ১২ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সিনিয়র সাংবাদিকও রয়েছেন। তবে এ তালিকায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আয়োজনকারী কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এবং কেএম নুরুল হুদার নাম নেই।

সংলাপ আয়োজনের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি জানান, বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি রোধে প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টের ভূমিকা কী হতে পারে; পোলিং এজেন্ট তার প্রার্থীর পক্ষে আইন ও বিধি অনুযায়ী কীভাবে দায়িত্ব পালন করে পোলিংকে স্বচ্ছতার রূপ দিয়ে নির্বাচন কীভাবে প্রভাবমুক্ত রাখতে পারেন; নির্বাচনের ফলাফলে জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটিয়ে কীভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করিয়ে আনতে পারেন; প্রার্থী কী ধরনের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করবেন এবং কীভাবে তাকে দায়বদ্ধ করবেন।

মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ভোট ভালো হলো কি খারাপ হলো এই দায়ভারটা নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। কিন্তু আসলে কি তাই? নির্বাচন হচ্ছে একটা টিমওয়ার্ক। যে টিমের মধ্যে অনেকেই আছেন। তার মধ্যে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটার, পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আছেন। নির্বাচনে সবারই একটা দায়িত্ব থাকে। তিনি বলেন, প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসাবে একজন পোলিং এজেন্ট থাকেন। পোলিং এজেন্ট যদি সেখানে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে কি সেখানে কোনো অনিয়ম হতে পারে? পোলিং অফিসাররা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে কিন্তু কেউ অনিয়ম করতে সাহস পায় না। এ রকম সবাই যদি সহযোগিতা করে তাহলে কিন্তু একটি অবাধ, স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা সংলাপ থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি এবং ইমপ্লিমেন্ট করেছি। অভিযোগ করা হয়, আগে যে সংলাপগুলো করেছিলাম, সেই সংলাপের এক পারসেন্টও নাকি বাস্তবায়ন করিনি। আমি বলতে পারি, ৬০ পার্সেন্টের বেশি আমরা বাস্তবায়ন করেছি।

জানা গেছে, সংলাপে আলোচক হিসাবে ১২ জনকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তারা হলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামছুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ ও বেগম কবিতা খানম। ইসির সাবেক তিনজন কর্মকর্তা জেসমিন টুলী, মো. নুরুজ্জামান তালুকদার ও খোন্দকার মিজানুর রহমান। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, গ্লোবাল টিভির সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও একুশে টেলিভিশনের সিইও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা আলোচক হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর সুধীজনদের নিয়ে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করেছিল ইসি।

জাতীয়

ঢাকার রাস্তায় এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের (৫২) শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিনি ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে আছেন। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ভুবন চিকিৎসায় কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।

রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভুবনের শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চিকিৎসায় ভুবন সাড়া দিচ্ছেন না। যে কোনো দুঃসংবাদের জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

পলাশ বলেন, এ কথা শোনার পর তার বোন (ভুবনের স্ত্রী) রত্না চন্দ্র শীল অনবরত কেঁদে চলেছেন। তিনি তার স্বামীর জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

রত্না শীল তার একমাত্র মেয়ে ভূমিকা চন্দ্র শীল ও দুই ভাইকে নিয়ে চার-পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালেই রয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ৯টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ভুবনের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার চলে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে কি না, তা ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করার পর জানানো হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন। তবে আজ বেলা ১১টা থেকে ভুবনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় মোটরসাইকেলে করে ওই পথ দিয়ে নিজ বাসায় ফেরার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ভুবন।

জাতীয়

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ‌রিয়ার আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধের আওতায় বি‌রোধী দ‌লের কারো কারো নাম থাক‌তে পা‌রে। ত‌বে নতুন করে কোনো ঘটনা ঘটেনি, যাতে নতুন করে স্যাংশন আসতে পারে। এছাড়া নি‌ষেধাজ্ঞায় পড়াদের সংখ্যার বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। এটুকু বলতে পারি সেই সংখ্যাটা খুব বড় নয়, ছোট। এ ব্যাপারে আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।

শুক্রবার রাতে গুলশা‌নে নিজ বাসভব‌নে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা।

শাহ‌রিয়া‌র আলম ব‌লেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের ভালো বৈঠক হয়েছে। তাদের কনসার্নের জায়গাগুলো নিয়ে যে আমরা কাজ করছি, সেটা দৃশ্যমান। তারাও বলেছে যে, আমরা উন্নতি করছি। প্রত্যাশা যে, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তারা নিশ্চয় তথ্য যাচাই করে তা করছে।

তি‌নি আরও ব‌লেন, বিরোধী দলের ভেতরেও পরিবর্তন লক্ষণীয়। সেটি ভিসানীতির কারণে হতে পারে। কাজের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা তৈরি করলে, আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করবো। তারা যদি না বলেন, তাহলে তো জানা কঠিন। তবে নিষেধাজ্ঞার তালিকা খুব বড় নয়।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ব‌লে‌ন, কোনো দে‌শের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে কারো কোনো হস্তক্ষেপ আমরা দেখতে চাই না। আমরা এটাকে গুড স্পিরিট হিসেবে দেখছি। কিন্তু মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করছে বিরোধী দল। তারা নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করছে। স্যাংশনের তালিকায় বিএনপি-জামায়াতের নামই বেশি থাকার কথা। নির্বাচনের আগে বিরোধী দলকে যে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, এটাই প্রমাণ করে সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিক। কেউ যদি কোনো নাশকতা করে, তবে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

বিএনপি চাপে আছে উল্লেখ ক‌রে তি‌নি ব‌লেন, আমাদের কিছু হারানোর নেই। আমরা মোটেও দুশ্চিন্তা করছি না।