জাতীয়

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে দীর্ঘদিন বন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। জেল সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পাপিয়াকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জামিনের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কারামুক্ত করা হয় তাকে।

এর আগে, কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন পাপিয়া। সেখানে এক নারী বন্দির ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের ৩ জুলাই তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন এবং অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চার জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর তাদের কাছ থেকে ৭টি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার এবং ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়।

এই ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা, বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে (জাল টাকার) মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন।

জাতীয়

সেনাবাহিনীর জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের নিকট হতে আজ দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।

পরবর্তীতে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধানকে ‘জেনারেল র‌্যাঙ্ক ব্যাজ’ পরিয়ে দেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।

পরে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় রাষ্ট্রপতি নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধানকে দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন জানান এবং তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ জুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ২৩ জুন অপরাহ্ন থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে ‘জেনারেল’ পদে পদোন্নতি প্রদানপূবক পরবর্তী তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়।

নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।

জাতীয়
পুলিশে বড় ধরনের রদবদল করেছে সরকার। তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারের ৪০ জন কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে ১৫ জন পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ও একজন পুলিশ পরিদর্শককে (সশস্ত্র) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি সুপার নিউমারারি) কৃষ্ণ পদ রায়কে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে পদায়ন করা হয়েছে। বদলি হওয়া অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯ জন উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), ১৫ জন অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১৫ জন পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ডিআইজি ইলিয়াছ শরিফকে বরিশাল রেঞ্জে, মেট্রো রেলের ডিআইজি সাইফুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পুলিশ কমিশনার, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার খুলনার কমান্ড্যান্ট নিশারুল আরিফকে পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। একই আদেশে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুহা. আশরাফুজ্জামানকে পুলিশ সদর দপ্তরে, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহীল বাকীকে পুলিশ সদর দপ্তরে, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মাহবুবুর রহমানকে মেট্রো রেলের ডিআইজি, পুলিশ সদর দপ্তরের এস এম মোস্তাক আহমেদ খানকে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি জামিল হাসানকে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি ও এপিবিএনের ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলামকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

১৫ অতিরিক্ত ডিআইজির দপ্তর বদল : আরেকটি প্রজ্ঞাপনে সিএমপির উপকমিশনার আব্দুল ওয়ারিশকে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার, টাঙ্গাইল জেলা এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সারকে এসবির অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেনকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, কুষ্টিয়া জেলার এসপি এ এইচ এম আব্দুর রকিবকে এসবির অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপির উপকমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমানকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, ডিএমপির উপকমিশনার এ বি এম মাসুদ হোসেনকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, ডিএমপির উপকমিশনার শহীদুল্লাহকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, নৌ পুলিশ খুলনা অঞ্চলের এসপি মোহাম্মদ শরিফুর রহমানকে অতিরিক্ত ডিআইজি ময়মনসিংহ রেঞ্জ, সিএমপির উপকমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে, বগুড়ার এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তীকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, যশোরের এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপির উপকমিশনার আসমা সিদ্দিকা মিলিকে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, পাবনা জেলা এসপি আকবর আলী মুন্সীকে গাজীপুর মহানগরীর উপপুলিশ কমিশনার, রংপুর জেলা এসপি ফেরদৌস আলী চৌধুরীকে সিএমপির উপকমিশনার ও সুনামগঞ্জ জেলা এসপি মোহাম্মদ এহসান শাহকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার পদে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। তাঁরা সবাই অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত।

১৫ এসপিকে বদলি : ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাহজাহানকে রংপুর জেলার এসপি, ডিএমপির ডিসি মুহাম্মদ আলমগীর হোসেনকে কুষ্টিয়া জেলার এসপি, কুমিল্লার এসপি আব্দুল মান্নানকে সিলেট জেলার এসপি পদে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের এসপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে ডিএমপির উপকমিশনার, পটুয়াখালী জেলার এসপি সাইদুল ইসলামকে কুমিল্লা জেলার এসপি, বরগুনার এসপি আব্দুস সালামকে পটুয়াখালী জেলার এসপি, পিবিআইয়ের এসপি রাফিউল আলমকে বরগুনা জেলার এসপি, ফেনীর এসপি জাকির হাসানকে বগুড়া জেলার এসপি, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে ফেনী জেলার এসপি, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার আ. আহাদকে পাবনা জেলার এসপি এবং নীলফামারীর এসপি গোলাম সবুরকে টাঙ্গাইল জেলার এসপি করা হয়েছে।

পিবিআইয়ের এসপি মকবুল হোসেনকে নীলফামারী জেলার এসপি, মাদারীপুরের এসপি মাসুদ আলমকে যশোর জেলার এসপি, পুলিশের বিশেষ শাখার এসপি মোহাম্মদ শফিউর রহমানকে মাদারীপুর জেলার এসপি এবং পুলিশ সদর দপ্তরের (প্রেষণে এনটিএমসি ঢাকায় কর্মরত) এসপি এম এন মোর্শেদকে সুনামগঞ্জ জেলার এসপি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

১৬ এএসপি : ১৬ পুলিশ পরিদর্শককে এএসপি পদে পদোন্নতি দেওয়ার পর পুলিশ অধিদপ্তরে ন্যস্ত করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবর পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগদানপত্র পাঠাবেন।

জাতীয়

বরগুনার আমতলীতে ব্রিজ ভেঙে কনেযাত্রীবাহী মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৯ জন নিহতের ঘটনায় ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

দুর্ঘটনার পরপর ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদারের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ২০০৮-০৯ অর্ধ বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চাওড়া নদীর উপর হলদিয়া হাট এলাকায় আয়রণ ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করে। ওই ব্রিজের নির্মাণ কাজ পায় তৎকালিন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম মৃধা।

অভিযোগ রয়েছে, ব্রিজ নির্মাণকালে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করেছে। নির্মাণের পাঁচ বছরের মাথায় ব্রিজের মাঝের ভিম ভেঙে যায়। গত ১০ বছর ধরে ওই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন ও চাওড়াসহ উপজেলার অর্ধ লাখ মানুষ চলাচল করে আসছে।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ব্রিজ নির্মাণকালে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা কাজ করেছে। ফলে নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই ব্রিজের মাখঝানের ভিম ভেঙে গেছে। ওই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে অন্তত অর্ধলাখ মানুষ চলাচল করতো।

তিনি আরও বলেন, এই ভাঙা ব্রিজ মেরামতের জন্য আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বহুবার জানিয়েছি। তিনি আমলে নেননি। যার ফলে শনিবার ৯ জনের প্রাণ গেল। ঠিকাদার দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করায় এবং উপজেলা প্রকৌশলী ব্রিজ সংস্কার না করায় তাদের শাস্তি দাবি করছি।

অভিযুক্ত ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমি যথাযথভাবেই ব্রিজ নির্মাণ করেছি। কাজে কোনো অনিয়ম করিনি।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমতলীতে আমার যোগদানের আগে এ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। উদ্ধার কাজের তদারকি করছি।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনা-১ আসনের সংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, নিহতের স্বজনদের হাসপাতালে সমবেদনা জানিয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।

জাতীয়

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে স্রোতের বেগে ঢাকায় ফিরছে কর্মমুখী ও ঢাকায় বসবাসরত মানুষ।

শনিবার গাবতলী, সায়েদবাদ বাস টার্মিনাল, যাত্রাবাড়ী মোর, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত বাস স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।

বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহরের একেকটা বাস এসে থামছে আর শতশত মানুষ বাস থেকে নামছেন। যাত্রীদের কারও কোলে শিশু, কারও হাতে ব্যাগ, কারও মাথায় বস্তা। এসব ব্যাগ বা বস্তা ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

সিলেট, কুমিল্লা, বরিশালের ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মাওয়া সড়কের একাধিক যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার থেকে তারা কর্মস্থলে যোগদান করবেন। সেজন্য বাধ্য হয়েই শনিবার তাদের ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। কিন্তু পথে পথে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

বাসা থেকে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ডে যেতেই ৫০ টাকার রিকশা ভাড়া ১০০ টাকা। ২০০ টাকার সিএনজি ভাড়া ৫০০ টাকা দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে যেতে হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও বাসের সিট পাওয়া যায়নি। সিট পেলেও ২০০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা। ৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০ টাকা দিতে হয়েছে।

বাস থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, শনিরআখড়া নামার পর বাসায় যেতে রিকশা, সিএনজিতেও নির্ধারিত ভাড়ার ২ থেকে ৩ গুন বৃদ্ধিতে ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। সবমিলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে এবং ভোগান্তির মধ্যেই গ্রাম থেকে ফিরতে হয়েছে রাজধানীতে।

তারা আরও বলেন, বাড়তি ভাড়ায় সড়কে নৈরাজ্য চললেও দেখার যেন কেউ নেই। পরিবহণে যে যার মতো করে নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা এবার লঞ্চে বেশ স্বস্তিতেই রাজধানীতে ফিরছেন। শনিবার সদরঘাটে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীর কর্মস্থলমুখী যাত্রীরা ফিরেছেন। স্বাভাবিক সময়ের মতোই লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে এসেছে এবং ছেড়ে গেছে।

তবে ঘাটে অতিরিক্ত যাত্রী চাপ লক্ষ্য করা যায়নি। লঞ্চের ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার ও অতিরিক্ত দাম নেয়াসহ ঘাটে নেমে গন্তব্যে যেতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক ট্রাফিক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতোই নির্ধারিত গন্তব্যের লঞ্চ গুলো আসা-যাওয়া করেছে। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করেছে। তবে ক্যান্টিনের খাবারের দামের বিষয়ে জানা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে রাজধানীর গাবতলীতে ৩ দিন ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ চোখে না পড়লেও শনিবার সকাল থেকেই যাত্রী চাপ ছিল লক্ষণীয়।

সরেজমিন গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে যাত্রী বোঝাই বিভিন্ন গণপরিবহণ গাবতলীতে ঢুকছে। গাড়ির চাপ বেশি থাকায় আমিন বাজার ব্রিজ থেকে টেকনিক্যাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় যানজটে আটকা পড়েছে অনেক পরিবহণ।

রাজশাহীর সদর থেকে গাবতলীতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জীবন বলেন, ‘আগামীকাল অফিস খোলা। এ জন্য ভোরে রওয়ানা দিয়েছি। রাস্তায় যানজট তেমন একটা নেই। ঠিক সময়ে গাবতলীতে পৌঁছেছি। তবে এখানে এসে যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে।’

গাবতলীর ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আনছার বলেন, ২-৩ দিন লোকজন না এলেও আজ সকাল থেকেই ঢাকামুখী যাত্রীচাপ বেড়েছে গাবতলীতে। আগামী ২-৩ দিন আরও লোক ঢাকায় ঢুকবে।
ফেরি ও লঞ্চঘাটে মানুষের উপচেপড়া ভিড়: রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তের ফেরি ও লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে যাত্রীসহ দূরপাল্লার পরিবহণ এবং প্রাইভেটকারের চাপ বেড়েছে। তবে এই নৌপথে পর্যাপ্ত ফেরি চলাচল করায় যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, আমাদের বহরে থাকা ১৮টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার চলছে। তবে ঘাট এলাকায় অল্প সংখ্যক যানবাহনের সিরিয়াল থাকলেও যাত্রীরা স্বস্তিতে নদী পারাপার হচ্ছে।

জাতীয়

ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছেন খোদ সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, এতে করে বৈধ করদাতাদের মনে অনীহা তৈরি হবে।

শনিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের একাধিক সংসদ সদস্য এ কথা বলেন। অবশ্য কেউ কেউ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার পক্ষেও বক্তব্য দেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ডা. গোপাল দত্ত বলেন, বাজেটে সাদা ও কালোটাকা নিয়ে কথা হয়েছে। একজন করদাতা হিসাবে আমার ৩০ লাখ টাকা থাকলে ৩০ শতাংশের বেশি কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু যিনি গত বছর টাকা দেখাননি, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সেই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করে নিচ্ছেন। এতে করে সঠিক করদাতারা কর দিতে অনেচ্ছা পোষণ করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবসময় কালো ও সাদা টাকা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু ইনফরমাল গ্রে-মানি (কর ফাঁকি সম্পর্কিত) অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি, যার ট্যাক্স দেওয়া হয় না, যাকে কোনো অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না- সেটা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছু বলেননি। একে সংকুচিত না করলে অর্থপাচার বন্ধ করা যাবে না।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ঢালাওভাবে দেওয়া ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচার বন্ধ করতে পারলে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের আর প্রয়োজন পড়বে না।

সমালোচনার জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, কালোটাকা আমাদের মার্কেটে আছে। এ টাকা কীভাবে ব্যবহার করবেন, সেই উপায় কেউ বাতলায় না, সমালোচনা করে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমালোচনা করে বলছেন- এতে নাকি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু উনি বলেন না, ২০০৭ (২০০৬ হবে) সালে ওনার নেত্রী খালেদা জিয়া ৫ শতাংশ কর দিয়ে ১ কোটি ৩৩ লাখ ১৪ হাজার ৭১০ টাকা সাদা করেছেন।
জাতীয় পার্টির নুরুন নাহার বেগম বলেন, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকল। এ সুযোগ নিয়ে অনেক অপরাধী দেশের বাইরে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি দেশে কালোটাকা সাদা করতে পারবে।

জাতীয়

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো. মতিউর রহমানের চাকরি ও পারিবারিক জীবন অনেকটা সিনেমার কাহিনির মতো। নির্দিষ্ট বেতনের চাকরি করলেও আয় করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। নিজের নামে তেমন সম্পদ না করলেও দুই স্ত্রী, ৫ সন্তান, দুই ভাই, শ্যালক-শ্যালিকাদের দিয়েছেন দুহাত ভরে। বড় স্ত্রী লায়লা কানিজের জন্য নরসিংদীতে করেছেন নজরকাড়া বাড়ি। ছোট স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলীর গ্রামের বাড়ি ফেনীতে তৈরি করে দিয়েছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স। দুই পরিবারের ব্যবহারের জন্য মার্সিডিস, বিএমডব্লিউ, প্রাডো, মিতসুবিশিসহ বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের নয়টি গাড়ি কিনেছেন।

এরপরও করোনাক্রান্ত হয়ে মতিউর যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন অভাবী চেহারায় স্বামীর শয্যা পাশে হাজির হন ছোট স্ত্রী। স্বামীর অবর্তমানে তিন সন্তান নিয়ে শিভলীর কি হবে এই আকুতিতে একাধিক ব্ল্যাঙ্ক (ফাঁকা) চেকে সই করে দেন মতিউর। এসব চেক ব্যবহার করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা নগদায়ন করে নেন শাম্মী।

৫০ কোটি টাকার একটি চেক নগদায়ন করে দেওয়ার প্রত্যক্ষদর্শী শাম্মীর এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্বামীর কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর জানার পর প্রথম পক্ষের স্ত্রী লায়লা কানিজ চরম ক্ষুব্ধ হন। পারিবারিক একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মতিউর ও তার দুই স্ত্রীর মোবাইলে কল করলে তারা কেউই রিসিভ করেননি। মতিউর ও তার প্রথম স্ত্রীর মোবাইল নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে বক্তব্য জানতে চেয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও তারা জবাব দেননি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাকরি জীবনে বিপুল টাকা আয় করতে ঘুসের পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা তৈরি করতে থাকেন।

এরপর শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করে বিপুল সম্পদের মালিক হন। এছাড়া শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িয়েও তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এই টাকায় তিনি স্থাবর-অস্থাবর বিপুল সম্পদ গড়েছেন।

টাকার জোরে মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজকে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক থেকে বানিয়েছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। এরপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সেখানে তিনি জায়গা-জমি দখল করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। সেখানে লায়লা কানিজের জন্য বিশাল বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন। লায়লা কানিজ একেক সময় একেক ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে চলাচল করেন। কম যান না দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতারও।

জানা গেছে, লায়লা কানিজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্বামীর কাছ থেকে সম্পদ বাগিয়ে নিয়েছেন শাম্মী। নিজের বাবার বাড়ি ফেনীতে তৈরি করে নিয়েছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মতিউরের শ্বশুরবাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুরে।

এলাকাবাসী মতিউরের শ্বশুরবাড়িকে মিয়া বাড়ি হিসাবেই চেনেন। বিলাসবহুল বাড়িটি জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি দেখাশোনা করেন। জসিম জানান, দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন।

সবশেষ দুই মাস আগেও এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান, স্ত্রী শাম্মী আখতার, ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ও শাশুড়ি বাড়িতে এসেছিলেন। দু-একদিন থাকার পর আবার ঢাকায় ফিরে যান। মতিউর রহমানের শাশুড়ি বর্তমানে ঢাকায় মেয়েদের বাসায় ও বাড়িতে আসা-যাওয়ার ওপর থাকেন। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘গত বছর কুরবানির ঈদে মতিউরের ছেলে ইফাত কোটি টাকা ব্যয় করে ১৪টি গরু-ছাগল কিনেছিলেন। এর মধ্যে আটটি গরু ও দুটি ছাগল ঢাকায় কুরবানি দিয়েছেন। বাকি চারটি গরু নানার বাড়িতে নিজে এসে জবাই করে আত্মীয়স্বজন ও গরিবদের মধ্যে বিতরণ করেন।’

স্থানীয়রা জানান, মতিউর রহমান ও তার শ্যালক নকিবের নামে ফেনী ও সোনাগাজীতেও অনেক জমিজমা রয়েছে। যা মতিউরের স্ত্রী শাম্মী আখতারের চাচাতো ভাই মো. আরিফুর রহমান তাদের কিনে দিয়েছেন। তিনি এই সম্পত্তির দেখাশোনা করেন। এছাড়া চাঁদপুরে ১০০ বিঘার একটি খামারও রয়েছে।

জানতে চাইলে আরিফুর রহমান বলেন, ‘এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান আমার চাচাতো বোনের স্বামী। ইফাত তার সন্তান। শাম্মী আখতারের এক বোন ও এক ভাই আছে। ২৫ বছর আগে মতিউরের সঙ্গে শাম্মী আখতারের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মিল্লাত মিয়া মারা যান। এরপর শাম্মীর অনুরোধে মতিউর শাশুড়ি, শ্যালিকা বুবলী ও শ্যালক মো. নকিবকে ঢাকায় নিয়ে যান। বুবলী এখন চট্টগ্রামে থাকেন। তার স্বামী থাকেন আমেরিকা। শ্যালক নকিব সম্প্রতি চীন থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে ব্যবসা ও চাকরি শুরু করেছেন। বর্তমানে তারা রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় নিজস্ব বাসায় থাকেন।

তিনি বলেন, মতিউর হঠাৎ করে একটি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ায় নিজেকে নির্দোষ ও আড়াল করতে স্ত্রী-সন্তানদের অস্বীকার করছেন। তবে এটা অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে।

শাম্মী আখতারের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নকিব ঢাকা, চীন ও দুবাইতে মতিউরের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আনুষঙ্গিক কাজকর্ম দেখাশোনা করেন। আত্মীয় সোহাগের কাছেও বিপুল অঙ্কের টাকা ছিল মতিউরের। প্রায় এক বছর আগে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দুবাইতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেখানে বিশাল একটি মার্কেট কেনা হয়েছে। করোনার শেষের দিকে ওই মার্কেট চালু করা হয়।

জাতীয়

হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। তাকে চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিট সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।

তিনি জানান, খালেদা জিয়ার হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খবর দেওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্স এলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেগম জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিট সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১ মে সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে তাকে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর ২ মে রাত ৯টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করছেন।

জাতীয়

দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ রোববার। জন্মলগ্ন থেকে জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন তথা শত সংকট মোকাবিলা এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ অতিক্রম করে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে দলটি। এই দলের নেতৃত্বাধীন সরকারের হাত ধরে উন্নয়ন-অর্জনে বাংলাদেশ আজ অনন্য উচ্চতায়। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় এখন বাংলাদেশ। এই দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণীয় করতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো রাজধানী। এতে দলটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য পাশাপাশি এই দলের নেতৃত্বাধীন সরকারের বড় বড় মেগা প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্লাটিনামজয়ন্তী নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উন্নয়ন অর্জনে পরিপূর্ণ আওয়ামী লীগের সাফল্য একদিনে আসেনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে-পরে শত চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে আসতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে গুম, খুন, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও নির্যাতন।

জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ আজকের অবস্থানে আসেনি। এই দলকে নানামুখী সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, গুম, খুন ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা আওয়ামী লীগ কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বেরিয়ে আসেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য নিয়েই এই দল কাজ করে চলেছে। আওয়ামী লীগের হাত ধরেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে, যা দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারেনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল। এই দলটি শুধু নতুন একটি দেশ উপহার দেয়নি, দলটি এখন দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে। এই দল স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল না। তারপরও দেশের বড় অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরেই।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের আগে-পড়ে সব থেকে বেশি নির্যাতন, নিপীড়ন ও জেল-জুলুম সহ্য করা দল আওয়ামী লীগ। এত নির্যাতনের পরও তৃণমূলে সব সময় শক্তিশালী ছিল এই দল। নির্যাতনে শিকার হলেও আওয়ামী লীগ কখনো রাজনীতি থেকে হারিয়ে যায়নি। শত নির্যাতনের মুখে এই দল টিকে ছিল এবং টিকে থাকবে।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম। এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ করতে প্লাটিনামজয়ন্তী হিসাবে পালন করা হচ্ছে। বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা, সমাবেশ, সেমিনার, চিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণসহ নানা কর্মসূচিতে থাকছে ভিন্নতা। প্লাটিনামজয়ন্তী সফল করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রধান প্রধান সড়ক ছেয়ে গেছে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে। ব্যানার-ফেস্টুনে স্থান পেয়েছে সরকারের বড় বড় মেগা প্রকল্প ও দলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। তুলে ধরা হয়েছে দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গল্প। শুধু রাজধানী নয়, জেলা-উপজেলা পর্যায়েও প্লাটিনামজয়ন্তী সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ শুক্রবার বিকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা মধ্য দিয়ে প্লাটিনামজয়ন্তীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে থেকে ‘বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও শোভাযাত্রা’ বের হয়। এতে ব্যান্ডপার্টি, ঢোল, কৃষকের সাজ, বেলুনসহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে অংশ নেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। ‘বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও শোভাযাত্রা’ ধানমন্ডি ৩২ নম্বর গিয়ে শেষ হয়।

টানা চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকা দলটির হাত ধরেই উন্নয়ন-অর্জনে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ। নিজ অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, থার্ড টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বড় বড় মেগা প্রকল্প দৃশ্যমান হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। বিনামূল্যে ভূমি ও গৃহহীনদের ঘরবাড়ি তৈরি, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট সংযোগ। স্কুলের পড়াশোনায় যোগ হয়েছে ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায়। সমুদ্র জয় থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে মহাকাশ বিজয় ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হয়েছে। দলটির লক্ষ্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, কর্মসংস্থান ও বিশ্বের বুকে নতুন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃত অর্জনে অভাবনীয় সাফল্যও এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই।

দেশের সবচেয়ে পুরাতন, ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের হাত ধরেই বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন হয়েছে। ছিটমহল সমস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক সমঝোতা ও সীমান্ত মীমাংসা আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

তবে স্বাধীনতার আগে-পরে গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে সব থেকে বেশি নির্যাতনের শিকার আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাকর্মীরা। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর গুম, খুন, জেল-জুলুমসহ নানামুখী নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ জন্ম থেকেই স্বৈরাচারী শাসকদের অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট গঠন, ৬ দফা ও ১১ দফা দাবি, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান-এ সবই ছিল স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের চপেটাঘাত। আর এ কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশেও দলটি স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসকদের বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে।

জাতীয়

দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য এসএম জাহাঙ্গীর আলম সিরাজী ও শেখ রিয়াদ মাহমুদ। বিএনপির পক্ষে আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

এ তথ্য নিশ্চিত করে আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, বিএনপির সিনিয়র ছয় নেতাকে দাওয়াত কার্ডের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।