জাতীয়

রাজধানীর কাঁটাবনে একটি দোকানে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দোকানটিতে আগুন লাগে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন।

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।

খালেদা ইয়াসমিন জানান, সন্ধ্যার পর কাঁটাবনের একটি দোকানে আগুন লাগার খবর পাই। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর বিস্তারিত জানানো হবে।

জাতীয়

হাজার বছরের সংগ্রামমুখর বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।

দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের এই দিনে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীন বাংলাদেশ এবার ৫২ বছরে পা দিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর জেঁকে বসে নতুন জান্তা। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করে পাকিস্তান নামের যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়; ভৌগলিক বিছিন্নতা, ভাষা ও সংস্কৃতির কোনো মিল না থাকা সত্ত্বেও পূর্ব বাংলাকে তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বাঙালির ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই রাষ্ট্রটির যাত্রার শুরুতেই পূর্ব বাংলার মানুষ অত্যাচার, শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন দিক থেকে বৈষমের স্বীকার হয়। তবে এই পরিস্থিতি তখন থেকেই মেনে নেয়নি এ ভূখণ্ডের মানুষ। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলার ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদে নামে, আন্দোলন গড়ে তুলতে থাকে। দ্রুতই এই আন্দোলন সংগ্রামগুলো একত্রিত হয়ে জাতীয় সংগ্রামে রূপ নিতে থাকে, যা স্বাধীন ও মুক্তিসংগ্রামে পরিণত হয়ে রক্ষক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যমে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর বাঙালির এই আন্দোলন-সংগ্রামকে সংগঠিত ও নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

পাকিস্তানের শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতি শুরু থেকেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামে। পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে ওঠে। মহান ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুন্থান, ’৭০-এর নির্বাচনসহ দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতি ১৯৭১ সালে এসে উপনীত হয়। পাকিস্তানের সামরিক, স্বৈরশাসন, অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়। আর বাঙালির এ আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের এক পর্যায়ে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স) বক্তব্যে বাঙালির মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে স্বাধীনতা অর্জনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মরণপণ সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ ও গণহত্যা শুরু করে। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। তাৎক্ষণিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। ….চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। ’

বঙ্গবন্ধু এই ঘোষণা প্রথমে ইপিআর-এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির কাছে পরাজিত পাকিস্তানি বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মহানস্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শেণিপেশার মানুষ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে।

জাতীয়

২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিচালিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’কে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি চেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

শনিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের কবল থেকে মুক্তি চেয়েছিল বাঙালি জাতি, তাদের স্বপ্ন ছিল নিজেদের মতো সুন্দর জীবন যাপন করা। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ২৫ মার্চের কালরাতে। ইয়াহিয়া খান আর বিশ্বস্ত কসাই টিক্কা খানকে দায়িত্ব দেন বাঙালি জাতিকে নিধন করার। তারা এর নাম দেয় ‘অপারেশন সার্চলাইট’। এই এক রাতেই তারা শুধু ঢাকা শহরে ৭ হাজারের ওপর মানুষকে মেরে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হয়, আর পাকিস্তানি ঘাতকদের কাছে সম্ভ্রম হারান দুই লাখেরও বেশি মা-বোন।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ তখন হারিয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের ওই ৯ মাসেই। ভারতে শরণার্থী হয় প্রায় ১ কোটি মানুষ। অথচ আজ পর্যন্ত এই গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, কারণ তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন বাদে সব পরাশক্তিই ছিল পাকিস্তানি হত্যাকারীদের পক্ষে।

তাই আজ আমরা দাবি জানাই, পাকিস্তানি ঘাতকদের হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সব মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা মায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি’।

জাতীয়

একাত্তরের কালরাতের স্মরণে গণহত্যা দিবসের রাতে সারা দেশে পালিত হয়েছে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল সেই ‘কালরাত’ স্মরণে এ ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করল দেশ।

শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় সব আলো নিভিয়ে প্রতীকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচির মাধ্যমে ঘুমন্ত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে গণহত্যার ঘটনাকে স্মরণ করা হয়।

বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এই দিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল।

এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।

২৫ মার্চ দিবাগত রাতে সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

জাতীয়

আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত। ১৯৭১ সালের এ রাতেই বাংলার বুকে নেমে এসেছিল মৃত্যুর ঘনতমসা। পৃথিবীর ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের একটি ঘটেছিল আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিতে।

রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হিংস্র হায়েনার মতো বর্বর শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামী বাঙালি জনগণের ওপর। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্ণ সামরিক সম্ভার নিয়ে রাত ১০টার পর সারা দেশে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা শুরু করে তারা।

সামরিক ভাষায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিত ছিল পাক-হানাদারদের এ হত্যা-অভিযান। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথেই এগিয়েছিল। অত্যাচার, উৎপীড়ন, পাশবিকতা, নৃশংসতা আর হিংস্রতার কালো থাবায় বিভীষিকা ছড়িয়ে দিয়েছিল পুরো ঢাকা শহরে।

বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটি ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে। কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই নৃশংস ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। দিনটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারীদের প্রতি তারা গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

এ বর্বরোচিত হামলায় বিশ্ববাসী হতবাক হয়ে দেখেছিল উন্মত্ত পাক বাহিনীর গণহত্যাকাণ্ড। মধ্যযুগীয় কায়দায় হানাদাররা রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ, করে অগ্নিসংযোগ। এই রাতেই গ্রেফতার করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। ২৫ মার্চের কালরাতের বেদনাদায়ক ঘটনা সমগ্র জাতিকে শিহরিত করে। নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি চালিয়ে হত্যা করে সেদিন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায়নি। ভয়াবহ সেই কালরাতের হত্যাযজ্ঞ বাঙালিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জোগায়।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের এই দিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। রাত পৌনে ৮টায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙালির ওপর কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে। পাক হানাদার বাহিনী জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে জল্লাদের মতো বাংলার নিরপরাধ জনগণের ওপর মেশিনগান, মর্টার আর ট্যাংক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।

রাত ১টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টারে ১৮ জন বাঙালি গার্ড থাকলেও তারা পালটা আক্রমণের সুযোগ পাননি। পিলখানা আক্রমণের পাশাপাশি রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারী বাজারসহ ঢাকাজুড়েই শুরু হয় প্রচণ্ড আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকাতে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ করে চলে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী।

মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে ট্যাংক, সঙ্গে সেনা বোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতা। শহিদ হন কয়েকশ ছাত্রছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।

হানাদাররা চলার পথে রাস্তার দুই পাশে গুলি ছুড়ে মেরে ফেলে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুড়ে হত্যা করা হয় অজস্র মানুষকে। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই। ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়্যারলেস বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। সম্মিলিতভাবে শত্রুর মোকাবিলা করুন। এই হয়তো আপনাদের প্রতি আমার শেষ বাণী হতে পারে। আপনারা শেষ শত্রুটি দেশ থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যান।’

এর আগে সকালে প্রেসিডেন্ট ভবনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া এবং ইয়াহিয়া ও পিপলস পার্টির উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগের খবর সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে ছিল। রাত ৯টার পর বঙ্গবন্ধু তার বাসভবনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট অখণ্ড পাকিস্তানের সমাপ্তি টানতে চলেছেন।

পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এ বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এ বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন। রাত ১টায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের অদূরে শুক্রাবাদে ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। এখানে প্রতিরোধ ব্যুহ ভেঙে হানাদাররা রাত দেড়টায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে আসে। হানাদার বাহিনী এলাপাতাড়ি গুলি চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে প্রবেশ করে। বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় তার বাসভবন থেকে বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুকে সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুকে আটক রাখা হয়।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের রাতে ১ মিনিট ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত অন্ধকারে থাকবে দেশ। তবে কেপিআই ও জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এদিকে স্বাধীনতা ও গণহত্যার ৫৩তম দিবসে আগামীকাল রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ৫৩টি মশাল প্রজ্বালন ও আলোর মিছিলের আয়োজন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আলোর মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের শীর্ষ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যরা।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : আজ দুপুর ২টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জাতীয়

“আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক তার নিচে শুকতারা। মনে হচ্ছে মেয়েদের কানের দুল!”

শুক্রবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় এমনই এক ক্যাপশন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঁদের ছবি শেয়ার করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা মাশায়েল অমি।

অবশ্য তিনি একা নন, চাঁদের ঠিক নিচে ‘তারার মতো’ কিছু একটা দেখে মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে দেশজুড়েই। অনেকেই ছবি তুলে তা শেয়ারও করেছেন সামাজিক মাধ্যমসহ প্রিয়জনদের সঙ্গে।

খবর পাওয়া গেছে, শুধু বাংলাদেশেই না, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি দেখার পর কৌতূহলী মানুষ এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। কেউ কেউ দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণও করেছেন।

এ বিষয়ে কথা হলে মাশায়েল অমি বলেন, চাঁদের নিচে এমনভাবে শুকতারা জীবনে এই প্রথম দেখলাম। বিভিন্ন মৌসুমে চাঁদের ভিন্ন ভিন্ন রূপ আমরা দেখি। আজকের চাঁদটা একদমই অন্যরকম। আবার কবে শুকতারা এমনভাবে ঝুলবে সেটা অজানা। দৃশ্যটা মন ভরে উপভোগ করেছি।

সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, আকাশে চাঁদ দেখেছি, তারাও দেখেছি; কিন্তু এমনভাবে চাঁদের নিচে এতো উজ্জল তারকা কখনও দেখিনি। সন্ধ্যায় বিষয়টি দেখার পর আমার কাছে বেশ ভালোই লাগে। তাই সবার সঙ্গে শেয়ার করতেই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করি।

দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর চাঁদ যত নিচে নেমেছে, ‘তারা সদৃশ’ বস্তুটিও নিচে নামছিল।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের নেটিজেনরাও জানিয়েছেন, তারাও ‘চাঁদের নিচে তারা’ এভাবে এর আগে কখনো দেখেননি। আর এটি নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে।

সূর্যাস্তের পরই দেখা যায়, একফালি চাঁদের ঠিক নিচে জ্বলজ্বল করছে একটি আলোকবিন্দু। সন্ধ্যা যত গড়িয়েছে ততই ছড়িয়েছে আলোচনা। চাঁদের (Moon) ঠিক নিচে ওটা কী? উজ্জ্বল এই আলোকবিন্দুকে ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। সঙ্গে চলছে আলোচনা- আসলে কী ওটা? কোনো তারা? কোনো গ্রহ? নাকি অন্য কিছু!

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন জানান, এই বিরল দৃশ্য বা গ্রহণ চাঁদে-সূর্যে নয়, বরং চাঁদে আর শুক্রে। এটা খুবই স্বাভাবিক নিয়মিত ঘটনা। পৃথিবীর কোনো জায়গা থেকে দৃষ্টিরেখা বরাবর যদি একই সরলরেখায় চাঁদ ও শুক্র এসে পড়ে, তাহলে চাঁদের আড়ালে শুক্রকে ঢাকা পড়তে দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, চাঁদের এরকম অন্য মহাজাগতিক বস্তুকে ঢেকে দেওয়াকে বলা হয় চাঁদের আড়াল।

শুক্র যখন চাঁদের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে, তখন বাংলাদেশ সময় ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা, খালি চোখেই তা দেখা গেছে।

বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহমুদুর রহমান জানান, আসলে শুক্রগ্রহের আলোক ছটাতেই তৈরি হয়েছে ওই আলোর বিন্দু।

এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে একই বিষয়।

জাতীয়

সিয়াম সাধনার মাস রমজান। সারাদিন রোজা শেষে সবাই চান ভালো কিছু খেতে। তবে এ সময় ভালো খাবারের নামে মুখরোচক খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতাই দেখা যায়। এ ধরনের খাবারের বিখ্যাত জায়গা হলো চকের ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার।

ইফতার পণ্য নিতে এখানে ছুটে আসেন রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এবার রমজানের প্রথম দিন জুমার নামাজের পরই জমে ওঠে চকের ইফতার বাজার। বেচাকেনা হয় খোলা আকাশের নিচে। অসংখ্য ক্রেতাসমাবেশ হওয়ায় এদিন এ বাজারে হাঁটাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি ইফতার বাজার ঘুরে দেখা যায়, মূল্য বৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে তাল মেলাতে পারছেন না। মাংসের পদগুলোর দাম গত বছরের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। অনেক জায়গায় পেঁয়াজু, চপ বা বেগুনির দাম ঠিক থাকলেও আকারে ছোট ও চ্যাপ্টা।

চকের ইফতার বাজারে দুটি বিশাল আকৃতি ডেকচিতে গরুর মাংসের তেহারি নিয়ে আসেন মো. ইয়াসিন। ১০০, ২০০ ও ৩০০ টাকা প্যাকেটে তেহারি বিক্রি করেন তিনি। জানতে চাইলে ইয়াসিন কাগজের ছোট্ট একটি প্যাকেট বের করে বলেন, ‘প্যাকেটে সামান্য তেহারি থাকলেও অনেকে এইটুকু খেয়েই তৃপ্তি পান।’

চকের ইফতারি বাজারের সবচেয়ে মুখরোচক খাবার গরুর মাংসের সুতিকাবাব। বিশেষ করে আমানিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের পাশের সুতিকাবাব। এবার এখানকার সুতিকাবাবের দাম রাখা হয়েছে প্রতিকেজি ১৪০০ টাকা। শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, লাইনে দাঁড়িয়ে সুতিকাবাব কিনছেন ক্রেতারা।

চকের আরেক খাবার বড়বাপের বড় পোলায় খায় ঠোঙায় ভইরা নিয়ে যায়। মূলত মুড়ি বানানোর এই ভর্তা এবার বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৮০০ টাকায়।

আলুচপ, পেঁয়াজু, বেগুনি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায়। বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, আমরা এখানে সারা বছরই এই খাবার বিক্রি করি। সবকিছুর দাম বাড়ার পরও আমরা প্রতি পিস ৫ টাকাই রাখছি।

চকের ইফতারি বাজারের অন্য খাবারগুলোর মধ্যে কিমা পরোটা ৭০ টাকা, টানা পরোটা ৫০ টাকা, জালি কাবাব ৩০ টাকা, কাঠি কাবাব ৪০ টাকা, ডিম চপ ৪০ টাকা, দইবড়া ৪ পিস ১২০, ৮ পিস ২৪০ টাকা, ফালুদা আধা কেজি ১০০ টাকা, পেস্তা বাদাম শরবত ২২০ টাকা লিটার, মুরগির ললিপপ ৩০ টাকা, সাসলিক ৮০ টাকা, চিকেন ফিংগার ৪০ টাকা, চিংড়ি বল ৮০ টাকা, আস্ত মুরগি ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আর খাসির লেগ রোস্ট ৮০০ টাকা এবং কোয়েল রোস্ট ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চিকেন বল বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা, চিকেন টিক্কা ২০০ টাকায়। মোটা ও বড় আকারের শাহী জিলাপি পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫০ টাকায়।

চকের ইফতারি বাজারে প্রবেশ করার মুখেই বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এবার একটি মনিটরিং বুথ স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কথা বলার মতো কাউকে এদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর এ বুথের সামনেই খোলা আকাশের নিচে ঐতিহ্যবাহী এসব খাবার বিক্রি হচ্ছে।

তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের পার্থক্য হলো বেশিরভাগ দোকানি ও বিক্রেতার হাতে গ্লাভস রয়েছে।

চকে ইফতার কিনতে আসা রমজান আলী বলেন, এখানকার সুতিকাবারের জুড়ি নেই। আর রোজার এ সময়টাতেই অনেক যত্ন করে এই খাবারটা বানানো হয়। তাই দাম বাড়ার পরও আধা কেজি কিনেছি পরিবারের সবাই মিলে খাব বলে।

জাতীয়

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি গোডাউন থেকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে থানা পুলিশের একটি টহল টিম তেঘরিয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম রাস্তার পূর্ব পাশের একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে এসব পণ্য জব্দ করে।

এ সময় অবৈধভাবে সরকারি পণ্য রাখার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বরিশাল জেলার কাজীরহাট থানাধীন আম্বার মানিক গ্রামের ঝিনু মল্লিকের পুত্র রাজিব মল্লিক (১৭) ও একই থানাধীন চর সন্তোষপুর গ্রামের মৃত সেন্টু বেপারীর পুত্র খায়রুল ইসলাম (১৬)।

এদিকে শুক্রবার বিকালে এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহে থানায় গিয়ে পুলিশের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক সামসুল ইসলাম সনেট। শামসুল ইসলামের অভিযোগ, টিসিবির জব্দ করা পণ্যের ছবি তুললে পুলিশের কয়েকজন সদস্য ক্ষেপে যান। এ সময় এসআই নির্মল তার ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে সব ছবি মুছে দেয়। পরে সেখানে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান উপস্থিত হলে তাকে বিষয়টি অবগতি করি। কিন্তু উল্টো তিনি বলেন, পুলিশের অনুমতি না নিয়ে ছবি তোলা ঠিক হয়নি।

এ সময় পরিদর্শক মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ওই জমির মালিক (যে গোডাউনে টিসিবির পণ্য পাওয়া গেছে) একজন অতিরিক্ত আইজিপি। কাজেই এই নিউজ করা যাবে না।

এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, সাংবাদিকের কাজে বাধা দেওয়া ঠিক হয়নি। আমি ওদের বলে দেব, যাতে ভবিষ্যতে এমন না হয়।

টিসিবির পণ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওসি জানান, বিপুল পরিমাণ টিসিবির পণ্য জব্দ করা হয়েছে। গণনা চলছে তাই সঠিক কত বস্তা পণ্য সেটা বলতে পারছি না। এসব বস্তায় চাল, ডাল, চিনি রয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিভাবে এখানে এসব পণ্য এসেছে? কারা জড়িত এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, আনুমানিক ১১শ থেকে ১২শ বস্তা টিসিবির পণ্য জব্দ করা হয়েছে।

জাতীয়

হজ নিবন্ধনের সময় পঞ্চম দফায় বাড়িয়ে আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। বেসরকারি নিবন্ধনের সংখ্যা আস্তে-ধীরে বাড়লেও সরকারি নিবন্ধনের সংখ্যা নিতান্তই কম। গত এক সপ্তাহে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১৬৪ জন হজযাত্রী।

হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। সেই হিসাবে সরকারিভাবে হজ করার কথা রয়েছে ১৫ হাজার। এখনো ফাঁকা রয়েছে ৫ হাজার ১৫২ জনের কোটা; যা সরকারি মোট কোটার ৩৪ শতাংশ আসন খালি রয়েছে।

হজ নিবন্ধনের সরকারি পোর্টাল অনুযায়ী তৃতীয় দফার শেষ সময় গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত মোট নিবন্ধিত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ১০ জন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৬৮৪ জন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১ হাজার ৩২৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার শেষ সময় পর্যন্ত হজের সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৭১ জন। এর মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৯ হাজার ৮৪৮ এবং বেসরকারিতে নিবন্ধনের করেছেন ১ লাখ ৬ হাজার ১২৩ জন।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ সপ্তাহে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১৬৪ জন। বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৭৯৭ জন।

চলতি মৌসুমে হজ প্যাকেজের খরচ মাত্রারিক্ত বাড়ানো নিয়ে দেশে সব মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে হজের প্যাকেজের মূল্য ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দিলেও হজযাত্রীদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

এবার হজ করতে আগ্রহী প্রাক-নিবন্ধন করেছেন প্রায় আড়াই লাখ মুসলমান। কিন্তু এখন চূড়ান্ত নিবন্ধনে এসে হজযাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এবার সরকারি-বেসরকারি নিবন্ধনের সময় গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। পঞ্চম দফায় সময় বৃদ্ধি করে প্রায় আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও প্রত্যাশিত হজের যাত্রী মিলছে না।

জাতীয়

দীর্ঘদিন পর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে দুই ঘণ্টা অফিস করেছেন সরকারপ্রধান।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন তিনি। সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের (২০ তলা ভবন) ১৩ তলায় প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি অফিস করেন।

এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে সচিবালয় ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। সে হিসাবে তিন বছরেরও বেশি সময় পর আজ সচিবালয়ে গেলেন তিনি।