জাতীয়

ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ গৃহবধূ সুখী বেগমের পর তার স্বামী আল আমিনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার রাতে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরআগে গত সোমবার ভোরে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুখী বেগমের মৃত্যু হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের ডা. এসএম আইউব হোসেন জানান, আল-আমিনের শরীরের ৯৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী সুখী বেগমের শরিরের ৯৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় শাহানাজ বেগমের ভাড়া দেওয়া বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণে আল আমিন ও তার স্ত্রী সুখী দগ্ধ হন।

জাতীয়

প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার সংশোধিত ফল বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃত্তির ফল প্রকাশ করা হলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে তা স্থগিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (১ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা-২০২২ এর ফল প্রকাশ করা হয়। কারিগরি ত্রুটির কারণে ফলাফল পুনঃযাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় প্রকাশিত ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করা হয়। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা-২০২২ এর স্থগিতকরা ফল পুনঃযাচাইক্রমে প্রকাশ করা হলো।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা-২০২২ এর ফল প্রকাশ সম্পর্কিত অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

জাতীয়

গ্রাহক পর্যায়ে আবারও বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

এবার বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ছে। ১ মার্চ থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়বে। যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

এর আগে, সর্বশেষ গত ৩১ জানুয়ারি ৫ শতাংশ খুচরা এবং পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সরকার। তারও মাত্র ১৮ দিন আগে গত ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে ৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। এবার দাম বাড়ানো হলে গত দুই মাসের ব্যবধানের খুচরা পর্যায়ে তিন দফা বিদ্যুতের দাম বাড়বে।

এর আগে গেল ২৭ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, এখন থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। পর্যায়ক্রমে অল্প অল্প করে এই সমন্বয় করা হবে। তবে তা সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানি করে দাম বাড়ায়। কিন্তু গতবারের মতো এবারও বিইআরসিকে পাশ কাটিয়েই দাম বাড়ানো হচ্ছে।

জাতীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, ঢাকা শহরের মাত্র ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিবছর ঢাকার ড্যাপভুক্ত (ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান) এলাকায় ৯৫ হাজার ইমারত তৈরি হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার অনুমোদিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি প্রশমন ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাইম মো. শহিদউল্লাহসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। বক্তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় বাড়ানো, ভবন নির্মাণ নীতিমালা অনুসরণ এবং বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।

সভায় রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (অব.) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজউক থেকে সম্প্রতি ঢাকার ভবনগুলোর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। নমুনা হিসাবে ২৫২টি ভবন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ২০০ ভবনই হয় ভেঙে ফেলতে হবে নতুবা রেক্ট্রিফাইয়িং (সংস্কার) করতে হবে। এ হিসাবে ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, ৮.৩ থেকে ৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে সবাইকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সব বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত আছেন। সরকার ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন পরিস্থিতে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট কেনায় ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও একশ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠান শেষে বলেন, সাধারণ সাত মাত্রার ভূমিকম্পকে সামনে রেখে ভবনের সহনমাত্রা নিরূপণ করা হয়। সেই হিসাবে রাজউকের সমীক্ষা অনুযায়ী ৭৯ শতাংশ ভবন অতি, মাঝারি বা কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তুরস্কের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে জনগণের জানমাল রক্ষায় এখনই সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতীয়

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজের ছাত্রী না। এরপরও এখানে একটি অন্য ভালোবাসার টান অনুভব করি।

কারণ, আমার মা এই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। আর নিজের চাইতেও মায়ের জিনিস অনেক প্রিয় হয়। সে সূত্রে নিশ্চয়ই এই কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির সঙ্গে আমার টান এবং যোগাযোগ আছে। এই কলেজের ৭৫ বছরের পথ পরিক্রমায় একেবারে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্নভাবে জড়িত, তাদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে ‘চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫বছর পূর্তি উৎসব ও পুনর্মিলনী’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘ঐতিহ্যের উৎকর্ষে উল্লাসের ৭৫ বছর’ স্লোগানে কলেজটির ৭৫বছর পূর্তি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজকের এই উৎসবে অনেকেই স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে বক্তব্যে কেউ কেউ বলেছেন, এমপির কাছে কৃতজ্ঞ ও চাঁদপুরের মানুষের ঋণ আছে, কথাটা একদম সত্য নয়, বরং উল্টো। আমার অনেক ঋণ এই চাঁদপুর ও মানুষের কাছে। এর কারণ আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন এবং সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। যে কারণে আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজের অবকাঠামগত উন্নয়নমূলক কাজে শরিক হবার সুযোগ হয়েছে। আমি চাঁদপুরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের ঋণ কখনও শোধ করতে পারব না।

অনুষ্ঠানে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও দেশবরেণ্য গুনী ব্যক্তিরা উপস্থিত হওয়ায় মন্ত্রী সবাইকে অভিনন্দন জানান এবং সাবেক সচিব ও শিশু সাহিত্যক ফারুক হোসেনের একটি কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।

এর আগে সকাল ৮টায় উৎসব উপলক্ষে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শহরে আনন্দ শোভা যাত্রা বের হয়ে স্টেডিয়ামের সামনে এসে শেষ হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ৭৫জন নবীন ও প্রবীণ শিল্পীর অংশগ্রহনে জাতীয় সংগীত পরিবেশন হয়। একই সাথে একটি মনোমুগ্ধকর নিত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। উৎসব উপলক্ষে গীতিকার কবির বকুলের লেখা ‘থিম সং’ উপভোগ করেন উপস্থিত সুধীজন।

বক্তব্য পূর্বে ৭৫বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরণিকা ও তথ্যপঞ্জির মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রীসহ অতিথিবৃন্দ। সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর অসিত বরণ দাশ।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মো. জিল্লুর রহমান এবং সাবেক শিক্ষার্থী সাব্বির আজমের যৌথ সঞ্চালনায় সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএলএফ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবেদ মনসুর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল, সাবেক সিনিয়র সচিব ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান, একুশে পদক প্রাপ্ত অনুজ বিজ্ঞানি ড. সমীর কুমার সাহা, সাবেক সচিব ও শিশু সাহিত্যিক ফারুক হোসেন, বুয়েটের ভিসি সত্য প্রসাদ মজুমদার, প্রবীন রাজনীতিবীদ শফিউদ্দিন আহমেদ এবং চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান।

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এনএম খান মুরাদ, শাহাবুদ্দিন অনু, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট গীতিকার কবির বকুল, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উৎসবের অন্যান্য পর্বের মধ্যে ছিল কলেজেরসাবেক শিক্ষার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, কলেজ নিয়ে সাবেক শিক্ষার্থীদের ভাবনা এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রতিভা উপস্থাপন, স্মৃতিচারণ, র‌্যাফেল ড্র ও বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সর্বশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

রাতে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াছমিন, দিনাত জাহান মুন্নী ও অন্যান্য শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর ব্যাপক আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে আতশবাজি ফোটানো হয়।

জাতীয়

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শিবপুর থানা সংলগ্ন নিজ বাড়ির গেটে তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এদিকে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের ওপর হামলায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সুশীল সমাজের লোকজন।

এ ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবপুর থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার।

পুলিশ জানায়, শিবপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান শনিবার ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে মসজিদে যান। সেখান থেকে নামাজ আদায় করে শিবপুর বাজারস্থ বাড়িতে এলে তিনজন লোক মসজিদের অনুদানের ব্যাপারে কথা বলতে তার কাছে আসেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি তার অফিসে প্রবেশ করতে গেলে এ সময় পেছন থেকে তাকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি করে। এতে তিনি পিঠে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমম্পক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিল বলেন, হামলাটি রাজনৈতিক না কি অন্য কোনো কারণে তা আমরা প্রশাসনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছি। এ হামলার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আর চেয়ারম্যান সাহেব যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন তার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।

গুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, মুখোশধারী তিন দুর্বৃত্ত চেয়ারম্যান সাহেবকে পেছন থেকে গুলি করেছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। এবং ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে।

জাতীয়

যাত্রাবাড়ীর হোটেলে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে ব্যবস্থা না নিলে বইমেলায় বোমা হামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শাহবাগ থানায় জিডি করে।

তবে এসব হুমকি-আতঙ্কের প্রভাব পড়েনি মেলায়। বইপ্রেমী দর্শনার্থীরা মেলায় এসেছেন আগের মতোই। মেলা ছিল জমজমাট। এদিকে যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন হওয়ায় পূর্বের মতো শিশু প্রহরের জন্য মেলার প্রবেশপথ উন্মুক্ত করা হয় বেলা ১১ টায়। নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডগ স্কোয়াড় দিয়ে তল্লাশি করা হয়। দর্শনার্থীদের প্রবেশ পথে কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে দায়িত্বপালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। ব্যাগ নিয়ে আগতদের চেক করে মেলায় ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। এতে বিরক্ত হননি কেউ। তারা জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। কারণ বইমেলাকে টার্গেট করে বিভিন্ন সময় হামলা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকালে জমজমাট শিশুপ্রহরে সিসিমপুরের চরিত্রের সঙ্গে সময় কাটায় শিশুরা। বিকেল গড়াতেই দর্শনার্থীরা আসা শুরু করেছে। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে পুলিশ কন্ট্রোল রুমের বিপরীতে স্থাপিত মঞ্চে শিশুরা চমৎকারভাবে আবৃত্তি করছে। সেই সুন্দর দৃশ্য অভিভাবকরা ভিডিও করছেন আর সন্তানের প্রতিভার প্রতিফলন পর্যবেক্ষণ করছেন। অনেকে বাবা মায়ের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত। বাবা-মায়েরাও তাদের সন্তানদের একটি সুন্দর স্মৃতি উপহার দেওয়া চেষ্টা করছেন। এরপাশেই একপ্রান্তে একদল আর্টিস্ট ছবি আঁকায় ব্যস্ত ছিলেন।

মেলারে শেষ সময় চলে আসায় ভিড় বাড়ছে। কেউ আসছেন বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে, আবার কেউবা প্রিয়জনের হাত ধরে। তারা এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন।

বিক্রেতারা জানান, মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসছে, বিক্রিও বাড়ছে। শিশু-কিশোর-তরুণদের মতো প্রবীনদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

মেলায় আসা ষাটোর্দ্ধ ইমদাদুল হক জানান, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষদিক থেকেই প্রতিবছর তিনি মেলায় আসেন। অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, সারা বছরজুড়ে অপেক্ষায় থাকি কখন ফেব্রুয়ারি আসবে। আক্ষেপের সুরে আরও বলেন, মেলায় সেই আগের জৌলুস নেই। মানহীন লেখকের ভিড়ে ভালো বই পাওয়া দায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলায় আজ পুলিশ সদস্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে বিভিন্ন সংস্থার লোকজন দায়িত্ব পালন করছেন। ওয়াচ টাওয়ারগুলো থেকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকায় সেটি মনিটরিংও জোরদার করা হচ্ছে।

মেলায় দায়িত্ব পালনকারী একজন সহাকারী পুলিশ সুপার বলেন, দর্শনার্থীদের আতঙ্কের কিছু নেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। সবাই নির্বিঘ্নে বইমেলায় আসতে পারেন।

অপরদিকে এসব আতঙ্কের প্রভাব মেলায় পড়েনি বলে জানিয়েছেন প্রকাশনীগুলো। কাকলী প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আছাদুজ্জামান বলেন, হুমকির বিষয়ে আমরা সেভাবে জানি না। আমাদের বিক্রি অন্য দিনের চেয়ে ভালো হচ্ছে।

পাঞ্জেরি প্রকাশনীর তাছলিমুর রহমান অন্তু বলেন, ছুটির দিন হিসেবে বিক্রি বেড়েছে। সময় গড়ালে আরও বাড়বে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আজকে যে উপচে পড়া ভিড়, মনে হয় না মানুষ আতঙ্কিত। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। ব্যাপক তল্লাশি করে সবাইকে মেলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয়

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে পদযাত্রা করেছে ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ’র নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।

শহীদদের স্মরণে এই পদযাত্রায় অংশ নেন দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নয়াপল্টনে ইস্টার্ন ভিউ এলাকায় দলীয় কার্যালয় থেকে পদযাত্রা বের করে দলটি।

পরে বিজয়নগর মোড়, পল্টন মোড়, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয় এ পদযাত্রা।

এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য ওয়াশিকুর রহমান অঞ্জন, ইমন, ফারহান আহমেদ, মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউথ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ, যুব সংহতি’র সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ, সদস্য সচিব খলিলুর রহমান প্রমুখ।

মিছিল শুরুর আগে মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউথ বলেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মিছিল ও র‌্যালি করছি। এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি হলেও শহীদদের স্মরণে আমরা এই মিছিল করছি। আমাদের লক্ষ্য দেশে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি। ভালো ও মেধাবী লোকেরা রাজনীতিতে আসুক।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে ইস্টার্ন ভিউ’র সামনে জড়ো হন দলটির নেতাকর্মীরা। মাতৃভাষা দিবসের ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। এতে দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, বিজেপি ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে থাকলেও এখন এককভাবে রাজনীতির মাঠে রয়েছে। তবে  মাঠের কর্মসূচিতে দীর্ঘদিন পর  দেখা গেল বিজেপিকে।

জাতীয়

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বাসভবনে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার বাদ আসর এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, তার পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয় স্বজন ও‌ শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

নিরাপত্তা জনিত কারণে তিনি শহিদ মিনারে যেতে না পারায় গুলশানে নিজ বাসভবনে মিলাদের আয়োজন করেন।

এর আগে ভাষা শহিদ ও বঙ্গবন্ধু এবং তার শহিদ পরিবারবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কুরআন খতম করা হয়। মিলাদ মাহফিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন‌ স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল কালাম।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি ভাষা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। তাদের অবদান বাঙালি জাতির ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

মোনাজাতের মাধ্যমে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। দেশের কল্যাণ কামনা করা হয়। দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী সব শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত হন দুদকের সাবেক কমিশনার ও সাবেক সিনিয়র জেলা জজ মো. সাহাবুদ্দিন। এ পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাকে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

জাতীয়

২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর পদটি লাভজনক বলে প্রশ্ন তোলাকে অবান্তর উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সম্পূর্ণভাবে বৈধ, কোনো প্রশ্ন করা উচিত না। আমার মতে, যে প্রশ্ন করা হচ্ছে, সেটা অবান্তর।

নিজ কার্যালয়ে বুধবার রাষ্ট্রপতির নিয়োগ যথাযথ হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা।

১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক দুর্নীতি দমন কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন সিইসি। দুদক আইনে কমিশনার কর্মাবসানের পর প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ পাবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ নিয়েই বিভিন্ন মহল থেকে মো. সাহাবুদ্দিনের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ যখন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তখন এটাকে লাভজনক পদ উল্লেখ করে রিট করেছিলেন একজন আইনজীবী। সেই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট স্পষ্ট কতগুলো ঘোষণা দিয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম- এটা প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তা নন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, সংবিধানের ৪৮, ৬৬ ও ১৪৭ অনুচ্ছেদ মিলিয়ে পড়লে দেখা যাবে- এটা কোনোভাবেই লাভজনক পদের মধ্যে পড়ে না। রাষ্ট্রপতি কেনোভাবেই সরকারের কর্মে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি নন।