জাতীয়

রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে এক র‌্যাব সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার প্রথম প্রহরে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া।

মধ্যরাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ির গতিরোধ করে র‍্যাব পরিচয়ে দুই ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকারে জনতা এবং ওই পথে যাওয়া একজন পুলিশ সদস্য এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় তারা। হাতেনাতে আটক করা হয় চক্রের এক সদস্যকে। উদ্ধার করা হয় একটি অস্ত্র।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের গাড়িচালককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি উপস্থিত পুলিশ সদস্যকেও উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চক্রটি।

শুক্রবার দিনগত রাত সোয়া দুইটায় ঘটে এ ঘটনা। রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর থেমে ছিল কয়েকটি গাড়ি। ওই পথ দিয়ে যাওয়া যমুনা টেলিভিশনের গাড়ি দেখেই থামার আহ্বান জানায় জটলা করে থাকা কিছু সংখ্যক মানুষ। সেখানেই দেখা মেলে হ্যান্ডকাফ পরিহিত দুই ব্যক্তির। একজনের নাম শহীদুল ইসলাম, অপরজনের রিয়াজ। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগনে।

তাদের অভিযোগ, বিমানবন্দর এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছিলেন তারা। ফ্লাইওভারে উঠতেই তাদের গাড়ির গতিরোধ করে পেছন থেকে আসা আরেকটি গাড়ি। আরোহী চার ব্যক্তি র‍্যাব পরিচয়ে অস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তাদের। এক পর্যায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে করে মারধর। সন্দেহ হওয়ায় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগীরা।

ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শহীদুল ইসলাম বলেন, ওরা আমাদের গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে পিস্তল ধরে। গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বলে আমরা সোনা চোরাচালানকারী। আমরা বলি আমাদের চেক করে দেখেন। তখন আমাদের মারধর শুরু করে এবং বলে, গুলি করে মেরে ফেলব। তারপর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। এ সময় আমরা চিৎকার শুরু করি।

তাদের চিৎকার শুনে গাড়ি থামান এক ব্যক্তি। তিনি জানান, আমি দেখলাম র‍্যাব লেখা কোট পরে ৩-৪ জন এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে টানাহেঁচড়া করছে। তাদের কোমরে অস্ত্র। আমি এগিয়ে গেলে তারা সরে যেতে বলে। তখন আমি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে বিষয়টি জানাই।

এ সময় গুলশান ডিপ্লোমেটিক জোনের ডিউটি শেষে সে পথেই মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন সাকিব নামে এক পুলিশ সদস্য। ভুক্তভোগীদের আকুতি শুনে তিনিও এগিয়ে আসেন সহায়তায়।

যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ সদস্য সাকিব বলেন- আমি এগিয়ে গেলে র‍্যাবের কোট পরিহিত ব্যক্তিরা আইডি কার্ড দেখায়। আইডি কার্ডের মেয়াদ ছিল না। তখন আমার সন্দেহ হয়। পরে আমাকেও তারা গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে চায়। একপর্যায়ে অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। সে সময় আমরা তাদের সঙ্গে থাকা একজনকে ধরে ফেলি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ভুক্তোভোগীদের ভাড়া করা গাড়ির চালককে নিয়ে যায়। তবে পালিয়ে যাওয়ার সময় চক্রের এক সদস্যকে জনতা ধরে ফেলে।

আটক ব্যক্তি জানান, তার নাম জয়। বাড়ি দিনাজপুর। তিনি টঙ্গীতে একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করেন। তার দাবি, মমিন নামে এক র‍্যাব সদস্যের সঙ্গে মাদক সংক্রান্ত কিছু কাজে করতে গিয়ে তার পরিচয় হয়। পরে মমিন তাকে দিয়ে আরও কিছু কাজ করায়। ঘটনার দিন একটি অপারেশনের কথা বলে মহাখালী ফ্লাইওভারে নিয়ে আসেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জয় নামের ব্যক্তিটিও তাদের মারধর করেছে।

ঘটনাস্থল থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরে বনানী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। তাদের চাবিতে হ্যান্ডকাফ থেকে মুক্তি মেলে ভুক্তভোগীদের। সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।

থানায় যায় যমুনা নিউজের আরেকটি টিম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি পুলিশ।

তবে আজ (শনিবার) বনানী থানার ওসি জয়সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতারের কথা জানান। এদের একজন র‌্যাব সদস্য বলে তিনি স্বীকার করলেও বিস্তারিত আর কিছু বলতে চাননি।

জাতীয়

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি আগেই জানানো হয়েছিল।এবার আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।

শনিবার রাতে মেয়র জাহাঙ্গীর নিজেই যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

আপনার বিরুদ্ধে আনিত সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

এমতাবস্থায়, গত ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭(৬) এবং ৪৭(২) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার প্রেরিত লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।

উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’

এ বিষয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি যেন গাজীপুরবাসীর স্বপ্নপূরণে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও কাজ করতে পারি সেজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি। নগরবাসীর পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার স্বপ্নপূরণে কাজ করতে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ।

২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও দলে ফিরতে কেন্দ্রে আবেদন করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। সেই প্রেক্ষিতে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দলে ফিরিয়ে নিল আওয়ামী লীগ।

জাতীয়

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় নুরুন্নবী নামে এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে। তিনি সদ্যঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার বিকালে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। পেটানোর এই দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি টিভি ক্যামরায়। পরে উপস্থিত লোকজন আহতাবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করেন।

ওই রাত ৮টার দিকে প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামানসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযাগ করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজসহ উপজেলাজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।

নির্যাতিত নুরুন্নবী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

নির্যাতিত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী অভিযোগ করে জানান, তার সঙ্গে বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকন ও আসাদুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যান তিনি। কাজ শেষে অফিসের দোতলা থেকে নেমে উপজেলা চত্বরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা রোকন ও তার সঙ্গীয় লোকজন জোরপূর্বক তাকে (প্রধান শিক্ষক) তুলে নিয়ে প্রথমে পলি বাস কাউন্টারে আটকে রাখেন।

এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে মোটরসাইকেলে করে ওই প্রধান শিক্ষককে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রার বিদ্যালয় অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে ওই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ঘটনা খুলে বলতে থাকেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা রোকন ক্ষিপ্ত হয়ে দুই হাত দিয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের গালে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। একপর্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ার থেকে উঠে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে থামান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে আহত ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিয়োগ করেন ওই প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষককে পেটানোর বিষয়টি স্বীকার করে রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, নিয়াগ সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে ওই প্রধান শিক্ষক আমাকে দালাল বলেছেন। এ সময় আমি নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে তাকে দুইটা থাপ্পড় মেরেছি।

রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, আওয়ামী লীগ নেতা রোকন ওই প্রধান শিক্ষককে আমার অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন। ওই প্রধান শিক্ষক কথা বলার সময় হঠাৎ তাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুসি মারতে থাকেন রোকন।

তিনি বলেন, রোকন এটা মোটেও ঠিক করেননি। বড়মাপের অন্যায় করেছেন তিনি।

তার বিরুদ্ধ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৪১৬ জনে।

একই সময়ে করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। সবশেষ ১১ জানুয়ারি দেশে করোনায় ১ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। তারপর টানা ৯ দিন ধরে করোনায় মৃত্যুহীন বাংলাদেশ।ফলে মোট মৃত্যু ২৯ হাজার ৪৪১ জনেই অপরিবর্তিত রয়েছে।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৪৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৯৪৮টি নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ০ দশমিক ৪১ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

এতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৭১ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৯০ হাজার ৫৬৭ জন।

জাতীয়

নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে লেখা সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে ইন্টারনেট থেকে হুবহু কপি করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার দায় স্বীকার করেছেন বইটির রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।

এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, সারা দেশে ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক ছাপা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটির ব্যাপারে একটি অভিযোগ তাদের নজরে এসেছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এই বইয়ের কোনো কোনো অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা হয়েছে। বইয়ের এই নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির একই লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, একই পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন, যাদের শ্রম ও নিষ্ঠার ফলাফল হিসেবে বইটি প্রকাশিত হয়। বিশেষত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে এই সব লেখকের কাছ থেকেই একধরনের দায়িত্বশীলতা আশা করা হয়। সেখানে কোনো একজন লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়। ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে আমরা দুজন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি। অবশ্যই পরবর্তী সংস্করণে বইটির প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ বছর বইটির পরীক্ষামূলক সংস্করণ চালু হয়েছে এবং সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে এতে যথেষ্ট পরিমার্জন ও সম্পাদনার সুযোগ রয়েছে। কাজেই উল্লিখিত অভিযোগের বাইরেও যেকোনো যৌক্তিক মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হবে।

প্রসঙ্গত, সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. হাসিনা খান, ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব, রনি বসাক। আর সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

জাতীয়

জামিনে মুক্তি পেয়েছেন পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম। মঙ্গলবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার সেলিম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দুপুর ১টায় সেলিমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি টিম হাজি সেলিমের জামিনের কাগজপত্র নিয়ে বিএসএমএমইউতে প্রবেশ করেন। পরে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে বুঝিয়ে দেন। সরিয়ে নেওয়া হয় কারা পুলিশের নিরাপত্তা।

তবে এখনো হাসপাতাল ছাড়েননি হাজি সেলিম। তিনি বিএসএমএমইউয়ের ৬১১ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন।

গত ৬ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দেন। একই সঙ্গে ১০ বছর দণ্ডের বিরুদ্ধে হাজি সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজি সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

সে অনুসারে শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।

জাতীয়

‘১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়’-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার রেশ এখনও কাটেনি। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, আমানের ‘অপরিপক্ক’ এই বক্তব্যের মূল্য দিতে হয়েছে দলকে।

তার এই বক্তব্যের পর ১০ ডিসেম্বর বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সরকার বিরোধী দলের ওপর চড়াও হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার হন। ১০ ডিসেম্বর স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করা হবে-বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও সরকার সেটি বিশ্বাস করেনি। প্রশাসনের ধরপাকড়ে আন্দোলন স্তিমিত হয়।

আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্য ও সাম্প্রতিক ভূমিকা নিয়ে বিএনপিতে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছে। তাকে মহানগর কমিটিতে না রাখার বিষয়েও মত দিয়েছেন অনেকে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও দলের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা, সন্দেহসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানকে নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। বৈঠকে গুলশান কার্যালয়ে ১৫ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ও আন্দোলন নিয়ে ‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের পেছনে তার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থায়ী কমিটির নেতারা। এছাড়া নয়াপল্টনে চার শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হলেও প্রথমেই আমানের জামিন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা।

স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে নেতারা জানান, ক্ষমতাসীনদের নানা বাধার পরও গত কয়েক মাসে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সফল করেছে বিএনপি। এতে সারাদেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকদের মাঝে চূড়ান্ত আন্দোলনের মানসিকতা তৈরি হয়েছে। বিগত দিনের মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগের বিভাগীয় গণসমাবেশ এবং ১১ জানুয়ারি গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকার প্রস্তুতি মনোপূত হয়নি। আগামী দিনে কী কর্মসূচি নেওয়া যায়, সে বিষয়টিও ওঠে বৈঠকে। ঢাকাকে প্রস্তুত করে সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে মত দেন নেতারা। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে আমানউল্লাহ আমানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা হলেও তারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

সূত্রমতে, বৈঠকে গত ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের আগে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজন নেতার বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। এক অনুষ্ঠানে আমান বলেছিলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়’। ওই বক্তব্যের পর সরকার ভয় পেয়ে যান বলে মনে করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। যদিও এ বক্তব্যের পর আমান উল্লাহ আমানকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডেকে সতর্ক করেছিলেন।

আবারও সেই বিষয়টি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উঠে আসে। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে এক নেতা বলেন, গ্রেফতার হয়েছি কিনা তখনও জানতাম না। কিন্তু ডিবি অফিসে তার কাছে গল্পের ছলে জানতে চাওয়া হয়, আমরা বসে যাব কিনা? যতবারই বলেছি, তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেই। থাকলে আমি জানতাম। অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতোই এটা একটি গণসমাবেশ। কিন্তু ডিবি পুলিশ কোনো অবস্থায় তা বিশ্বাস করতে চায়নি।

ওই নেতা বলেন, ইলিয়াস আলী গুমের ঘটনায় মুখ ফসকে একটি বক্তব্য দিয়েছিলাম, সেই ঘটনায় আমার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। তাহলে আমানের কাছে কেন ব্যাখ্যা চাওয়া হবে না? এরপর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিষয়টি মহাসচিবকে দেখতে বলেন। বৈঠকে ওই নেতা আরও বলেন, সরকারের লোকজন সঙ্গে নিয়ে তো আর সরকার বিরোধী আন্দোলন করা যাবে না। যার কথাকে কেন্দ্র করে সবাই গ্রেফতার হয়েছেন, তাকেই আবার কারাগারে নেওয়ার আগে ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার।

সূত্রমতে, স্থায়ী কমিটির এ বৈঠকের আগে বুধবার নয়াপল্টনে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান সভাপতিত্ব করেননি। আগের দিন বিএনপি থেকে জানানো হয়েছিল গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের সঙ্গে পরিচালনায় থাকবেন আমানউল্লাহ আমান। এরপর থেকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তা আরো জোরালো হয়, গণ-অবস্থানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতাকর্মী উপস্থিতি দেখতে চান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সে অনুযায়ী বিশেষ অতিথি হিসেবে মির্জা আব্বাস যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন দলের কেন্দ্রীয় একজন নেতা লাইভে বিস্তারিত দেখান। তখন ঢাকা মহানগরের উত্তরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

সূত্র আরও জানায়, ১৫ সংগঠন নিয়ে জোট করল কে? এ প্রশ্নও ওঠে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেওয়া, আবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৫ সংগঠনের সমন্বয়ে জোট করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্দেশে স্থায়ী কমিটির একজন নেতা জানতে চান, এটা কেমন হলো, আমরা জোট ভেঙে দিলাম, আবার গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবমুখী ১৫ সংগঠন নিয়ে একটি জোট গঠন করলাম-এটা কেমন বার্তা গেল? এ সময় স্থায়ী কমিটির আরেক নেতা বলেন, একটি বিষয়ে ফোকাস করা দরকার। ছোট ছোট দল নিয়ে গুলশান অফিসে একটি জোট হয়েছে। আসলে এগুলো কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এ জন্যই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৫৪ দলের ৫৪টি ঘোড়ার ডিম পাড়ার মতো মন্তব্য করার সুযোগ পেয়েছেন। এটা কারা করছে, কীভাবে করছে? এর একটা বিহিত হওয়া প্রয়োজন। এ জোট আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু থাকলেও তিনি এ বিষয়ে জানতেন না। আমান উল্লাহ আমানের তত্ত্বাবধানে হয়েছে। একজন নেতা জানতে চান, আমানকে দলের অথরিটি কে দিয়েছে? এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বলেন, তাকেও এ জোট গঠনের বিষয়ে অবহিত করা হয়নি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকা মহানগরের সমস্যা সমাধান এবং দলের সন্দেহভাজন নেতাদের দূরে রেখে আন্দোলনের পরিকল্পনা করলেই সফলতা আসবে। ২০১৪ সালের আন্দোলন ঢাকার নেতাদের জন্য ব্যর্থ হয়েছে। এবার সেই ঢাকাকে ঠিক করেই আন্দোলনে যেতে হবে।

জাতীয়

টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আগামীকাল (রোববার) ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত হওয়ার কথা রয়েছে। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষ্যে গাজীপুর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।

তিনি শনিবার দুপুরে টেশিস শিল্প সংস্থার মাঠে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা জানান।

কমিশনার বলেন, আখেরি মোনাজাতে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন। শনিবার রাত ১২টা থেকে টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগরা বাইপাস পর্যন্ত এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়াও ময়মনসিংহ ও গাজীপুরগামী যানবাহনগুলোকে গাবতলী দিয়ে কোনাবাড়ি হয়ে এবং ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগরা বাইপাস দিয়ে তিনশ ফিট রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের তিনটি সড়কে যান চলাচল সীমিত রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস থেকে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড পর্যন্ত এবং কামারপাড়া থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত। এসব সড়ক হয়ে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে যাত্রীবাহী ও ইজতেমাগামী সব ধরনের যান চলাচল করেছে।

জাতীয়

বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে।

এদিন টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ। নামাজে ইমামতি করেন তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বী মাওলানা জুবায়ের।

গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছে। এছাড়াও তাদের সঙ্গে দেশের বৃহত্তম জুম্মার নামাজে অংশ নিতে ভোর থেকে হাজার হাজার মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে ছুটে আসেন। মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে জুমার নামাজে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানের আশপাশের বিভিন্ন সড়ক, ফুটপাত ও খালি জায়গায় অবস্থান নিয়ে নামাজ পড়েন হাজার হাজার মুসল্লি। অনেকেই বাড়ির ছাদ, নৌকা, গাড়ির ছাদে পাটি, পলিথিন, চট ও পত্রিকা বিছিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন।

এদিকে অনেকেই জুমার নামাজ আদায় করতে ইজতেমার ময়দান এলাকায় আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিলেন। ভোর থেকে নামাজের আগ পর্যন্ত ইজতেমামুখী মুসুল্লিদের ঢল নামে। বিভিন্ন যানবাহন, নৌকা ও হেঁটেই মুসল্লিরা ছুটে আসেন তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে।

এর আগে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ ফজর বাংলাদেশের মাওলানা জিয়াউল হকের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। চলবে রোববার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত। ওইদিন আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

বাদ জুমা ইজতেমায় বয়ান করবেন মাওলানা ইসমাইল, বাদ আছর মাওলানা জুবায়ের এবং বাদ মাগরিব মাওলানা আহামদ ও ওমর ফারুক।

এবার বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশ নিয়েছেন মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিসহ বিদেশি মুসল্লিরাও এতে অংশ নিচ্ছেন। এরপর আগামী শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। দেশের ৬৪ জেলার মাওলানা সাদ অনুসারী মুসল্লিরা এতে অংশ নেবেন। এছাড়াও থাকবেন বিদেশি মুসল্লিরা। একইভাবে ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের (২০২৩) বিশ্ব ইজতেমা।

জাতীয়

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার শিশুপুত্র শেখ রাসেলের হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থী। একই সঙ্গে বিশ্ববাসীর কাছে শিশু হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই শিশু অধিকারকর্মী।

শুক্রবার সকালে ঢাকায় সফররত নোবেল জয়ী কৈলাস সত্যার্থী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করে এ আহ্বান জানান। এ সময় তিনি পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

নোবেলজয়ী সত্যার্থী ১৫ আগস্টের খুনিদের শাস্তিদানের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

এর আগে সকালে বিমানে ঢাকায় পৌঁছান কৈলাস সত্যার্থী। ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন তিনি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কৈলাস সত্যার্থীকে স্বাগত জানান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।

শনিবার বিকালে বাংলা একাডেমিতে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হবে। পরে অনুষ্ঠিত হবে বাউল গান। তার আগে বাংলা একাডেমি চত্বরে শিশুদের জন্য থাকবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।

আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবারের বর্ষপূর্তির আলোচনার প্রতিপাদ্য ‘উইল ফর চিলন্ড্রেন’। যেখান থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিশুপুত্র শেখ রাসেলের হত্যাকারীদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর ও শিশুদের ওপর নিপীড়ন বন্ধেরও দাবি জানানো হবে।

২০১৪ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেন কৈলাস সত্যার্থী। ১৯৫৪ সালের ১১ জানুয়ারি ভারতের মধ্যপ্রদেশে জন্ম নেন তিনি।

১৯৮০-এর দশকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে পুরোদমে শিশু অধিকারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন কৈলাস। গড়ে তোলেন ‘বাচপান বাঁচাও’ আন্দোলন, যে সংগঠনটি সারা ভারতে এ পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি শিশুকে শ্রমের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে। এসব শিশুর পুনর্বাসন আর শিক্ষাও নিশ্চিত করেছে ‘বাচপান বাঁচাও’। দুই দশক ধরে শিশুদের জন্য কাজ করা মানুষটি নোবেল পুরস্কারও উৎসর্গ করেছিলেন শিশুদের জন্য।