ইন্টারন্যাশনাল পারস্পেকটিভ অন ওয়াটার রিসোর্সেস অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের (আইপিডব্লিউই) একাদশতম সম্মেলনের ৪-৬ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুয়েটের কাউন্সিল ভবনে আইপিডব্লিউই-২০২৩ এর এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়, বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নবনির্মিত পদ্মা সেতু।
আগামী ৪ থেকে ৬ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ ও পরিবেশ সম্মেলনে (আইপিডব্লিউই-২০২৩) পদ্মা সেতুকে এ স্বীকৃতি দেবে বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকৌশল সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই)।
ঢাকার সঙ্গে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের রেস্টনে আইপিডব্লিউই-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে বিশ্বের ১৩টি দেশের পানি বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের সম্মিলন ঘটবে।
এএসসিইর সভাপতি মারিয়া লেহমান সম্মেলনে উপস্থিত থেকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এনিয়ে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের আয়োজক ও আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ ড. সুফিয়ান খন্দকার জানান, ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন, এএসসিইর সভাপতি মারিয়া লেহমান। এছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য এ স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে এএসসিইর পরিচালনা পর্ষদ।
তিনি জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে বহু বাধা এসেছে। তবে এটা কোনো রাজনৈতিক বাধা নয়। এটা ছিল পদ্মা নদীর পানির স্রোতের বাধা। এজন্য নদী শাসন করতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে হিমশিম খেতে হয়েছে। বিশ্বের আর কোনো সেতু এমন বাধার সম্মুখীন হয়নি।
ড. সুফিয়ান খন্দকার জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে এ পর্যন্ত যত প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা বিশ্বের কোনো সেতুতে হয়নি।এসব কারণে বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে পদ্মা সেতুকে স্বীকৃতি দেবে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই)।
ড. সুফিয়ান খন্দকার বলেন, পদ্মা সেতুর এই স্বীকৃতি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুন করে পরিচিত করে তুলবে। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সমৃদ্ধ হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ নানাভাবে উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকৌশল সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের (এএসসিই) এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ইডব্লিউআরআই) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বাংলাদেশ সরকারের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।
২০০৬ সাল থেকে আইপিডব্লিউই কনফারেন্স সিরিজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই বছর প্রথম সম্মেলনটি হয়েছে ভারতের দিল্লিতে। এরপর ২০০৯ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, ২০১০ সালে ভারতের চেন্নাই, ২০১১ সালে সিঙ্গাপুর, ২০১২ সালে মরক্কোর মারাকাশ, ২০১৩ সালে তুরস্কের ইজমির, ২০১৪ সালে ইকুয়েডরের কুইটো, ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কার কলম্বো, ২০১৭ সালে চীনের উহান এবং ২০১৮ সালে কলম্বিয়ার কার্টাজেনায় অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন।
প্রতিটি দেশই সম্মেলন থেকে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছে। ঢাকায় প্রথমবারের মত আইপিডব্লিউই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই) বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা স্থাপনাগুলোর স্বীকৃতি দেয়। স্থাপত্যশেলী বিভাগে বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্য নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি।
এবারের থিম থিম হল ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সময়ে ঝুঁকি এবং স্থিতিস্থাপকতা’। ১৩ টি দেশের অংশগ্রহণকারীরা ২৪টি প্রযুক্তিগত অধিবেশনে সম্মেলনে মোট ১৪৫টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন।
এ বছর ঢাকার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার রেস্টনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি হাইব্রিড সম্মেলন।