জাতীয়

এক দশক আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও সংস্থাটির পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (১৪) রায় পর্যবেক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি দূতাবাসের প্রতিনিধি, মানবাধিকার কর্মীসহ বিশিষ্টজনরা আদালতে হাজির হন।

রায়ের পর তাদের মধ্যে কেউ কেউ উদ্বেগও প্রকাশ করেন।

দুপুর ২টার দিকে রায় ঘোষণার জন্য আগেই সময় নির্ধারিত ছিল। বেলা পৌনে ২টায় দুই আসামি অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান তাদের আইনজীবীসহ আদালতে আসেন।

তার কিছুক্ষণ আগে আদালত এলাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধি।

এ সময় তারা একত্রে এজলাসে প্রবেশ করেন। দুপুর ২টা ১০ মিনিটে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। ইংরেজিতে লেখা ৫০ পৃষ্ঠার মূল রায়ের সারাংশ পড়ে শুনান ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে তিনি রায় পড়েন। এরপর আসামিদের দণ্ড ঘোষণা করেন৷ বিলুপ্ত তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সাজা দেওয়া হয়।

যদিও ৫৭(২) ধারা মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড ছিল। তবে পুরো বিচারকাজে উপস্থিত থাকা ও সহায়তা করায় তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

আদালতের এ রায়ে রাষ্ট্র বা আসামিপক্ষের কেউ সন্তুষ্ট নয়। দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরও এত কম সাজা দেওয়ায় রায় পর্যালোচনা আপিলের কথা জানান ওই আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়াও আপিল করবেন বলে জানান।

রায় শেষে জামিন বাতিল করে তাদের সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ বেষ্টনিতে যাওয়ার সময় আদিলুর সাংবাদিকদের বলেন, ন্যায়বিচার পাইনি, আপিল করব। পরে প্রিজনভ্যানে উঠানোর সময় পুলিশের সঙ্গে আদিলুরের কিছুটা বাগবিতণ্ডা হয়। হাত উঠিয়ে আদিলুর প্রতিবাদ করতে গেলে কয়েকজন পুলিশ তার হাত নামিয়ে দেন।

এ সময় উপস্থিত মানবাধিকার কর্মী ও বিশিষ্টজনরা পুলিশের এ আচরণের প্রতিবাদ জানান।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার, মানবাধিকার কর্মী ইজাজুর রহমান, আদিলুরের বোন তাসকিন রহমান, গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম, ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান অ্যাম্বাসির ফাস্ট সেক্রেটারি সাচা ব্লুমেনসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডিয়ান দূতাবাসের প্রতিনিধিরা।

রায়ের পর বিদেশে পর্যবেক্ষকরা কোনো মন্তব্য করেননি। তবে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মানবাধিকার কর্মী ও বিশিষ্টজনরা।

রায়ের পর মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে যে আইনটির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি, সেই আইনেই একজন মানবাধিকার কর্মীকে সাজা দেওয়া হলো, এটি আইন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। স্বাভাবিকভাবে একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন ও হতাশ।

রায়ের পর ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সিআর আবরার সাংবাদিকদের বলেন, নাগরিকদের ওপর যে চাপ এবং নাগরিকদের যে ভালনারেবল করে রাখা এবং সে যেন স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে না পারে, স্বাধীনভাবে তাদের কথাবার্তা বলতে না পারে, সেটি কিন্তু মোটামুটিভাবে আবার প্রতিষ্ঠিত হলো। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি, আমার মনে হয় আমরা সেখান থেকে অনেক বেশি পিছিয়ে যাচ্ছি।

এ মামলায় গত ২৪ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ওইদিনই আদালত রায়ের জন্য ৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন। তবে ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় রায়ের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করা হয়।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার।

ওই বছরের ১০ জুলাই নিহতের তালিকা চেয়ে অধিকারকে চিঠি দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংগঠনটি তালিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে একই বছর ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম। ওইদিনই গ্রেপ্তার হন অধিকার সম্পাদক। পরে ওই বছরের ৯ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান আদিলুর।

তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ২৮ জনকে সাক্ষী করে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র আমলে পলাতক আসামি এলানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এলানও ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান। এরপর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত আদেশের পর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চাইলে উচ্চ আদালতের আদেশে বিচারকাজ স্থগিত হয়ে যায়। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণকালে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের আদেশ দেন। এরপর তাদের বিরুদ্ধে একটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিচার চলাকালে আদালত মোট ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

জাতীয়

বিরোধী দলের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতী রোধ করতে না পারা এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারার অভিযোগে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘বাণিজ্য সংগঠন (সংশোধন) বিল’ পাসের জন্য উত্থাপন করা হলে বিরোধী দলের সদস্যরা তার সমালোচনা করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান গত বছরের সঙ্গে বর্তমানের দ্রব্যমূল্যের তুলনা চিত্র সংসদে তুলে ধরে বলেন, একবছর আগে চিনির দাম ছিল ৮৮-৯০ টাকা, এখন তা ১৩০-১৩৫ টাকা, ডিম ছিল ৪০-৪২ টাকা হালি, এখন তা ৪৮-৫২ টাকা, রসুনের দাম বেড়েছে ২২৯ শতাংশ। গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, রুই মাছ সবকিছুর দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী কেন সিন্ডিকেট ধরতে পারছে না, তা আমরা জানি না।

ই-কমার্সের মাধ্যমে মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বৈঠকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ ১১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এরা সারা দেশে প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছিল। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিলো না। বাণিজ্যমন্ত্রী ও টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রী এটা দেখলেন না।

একই দলের সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর দোষ দিয়ে লাভ হবে কী? উনি ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো বুঝেন। সিন্ডিকেটটা ভালো বুঝেন। সেই জন্য বলছেন, সিন্ডিকেটে হাত দিলে পুড়ে যাবেন। তাই বলি- সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া কঠিন, এরা শক্তিশালী মানুষ।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের একটা বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, যে মন্ত্রী যে কাজ করে, সে মন্ত্রণালয় তাকে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য বলছি, দ্রব্যমূল্য না কমলে মানুষ বাঁচবে না। কারণ আয় বাড়েনি, যে শ্রমিকের বেতন ৩০০ টাকা ছিল, এখন ৭০০ টাকা দিলেও তাদের পোষায় না। কারণ বাজারে গিয়ে জিনিসপত্র কিনতে পারেন না। তারা ইলিশ মাছ-গরুর মাংস খেতে পারে না। বেগুন খাবে, সেটাও হয় না। তাই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্য সংগঠন বিল না করে বাণিজ্য সিন্ডিকেট আইন করা হলে ভালো হতো। যখন আলু উঠলো ১০-১২ টাকায় বিক্রি হয় না, রাস্তায় ওপরে হাজার হাজার বস্তা পড়ে আছে। ওইসব আলু এখন গুদামজাত করে ৪০-৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। সিন্ডিকেট যতক্ষণ পর্যন্ত না ভাঙবেন ততক্ষণ পর্যন্ত বাণিজ্যমন্ত্রী বা দেশের প্রধানমন্ত্রীর দোষ দিয়ে লাভ নাই।

সিন্ডিকেট না ভাঙলে দ্রব্যমূল্য কমবে না বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজি, ভারতে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি। আমাদের সীমান্ত দিয়ে আগে গরু আসতো এখন গরুর মাংস আসছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার খবর দেখি, কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি ১৬০০-১৮০০ টাকা কেজি। কী কারণে? জবাব দেবে কে।

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ। সস্তা আমিষ যেগুলো ছিল, তার দাম অনেক বেড়ে গেছে। ২০২১ সালে পাঙ্গাসের দাম ছিল কেজি ১১১ টাকা, এখন সেটা ২০০-২৫০ টাকা। গরিবদের সুরক্ষার সময় এখন কিন্তু সেটার জন্য অর্থ এ মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে। এ মন্ত্রণালয় মানুষকে কম টাকায় জিনিস দিতে পারে। বাজারে ভারসাম্য সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে নিতে লাখ লাখ কোটি টাকা মানুষের পকেট থেকে আয় করে চলে যায়। মানুষ কষ্ট পায়।

জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, শুধু দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। মানুষ হইচই করে। আমরা অস্বস্তিতে পড়ি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বললেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চোখের সামনে চলে আসে। বাচ্চা কোলে নিয়ে মহিলারা টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। একটু কম দামের জন্য। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের লাভের জন্য দ্রব্যমূল্যের ক্ষতি করছে।

বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নাম আসলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়। দেশের মানুষ জানে- ঈদের আগে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আদার দাম কতগুণ বেড়েছিল। এটা বাড়ার কোনও কারণ ছিল না, এসব জিনিস রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে আসে না।

দেশে আলু পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত থাকার পরেও দাম অনেকটা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারণ একটাই এখানে সিন্ডিকেট। তারা এইভাবে এক একটা জিনিসকে টার্গেট করে এবং মানুষের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়ে যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালোই বুঝেন। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বহুবার সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করেছিলেন। মানুষ যখন বলতে শুরু করেছিল, বাণিজ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেটের হোতা, তখন সত্য কথা বলতে শুরু করলেন তিনি (বাণিজ্যমন্ত্রী), সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না।

মোকাব্বির খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কাঁচা মরিচ শুকিয়ে রাখা, ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিচ্ছেন। এ পরামর্শগুলো আমরা আগে পেলে খুবই উপকৃত হতাম। কারণ চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। তিনি এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন, এটি উল্লেখ করে বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের কথা বলেছিলাম। কিন্তু অন্তিম লগ্নে এসে আর পদত্যাগের দাবি করছি না। আমার মনে হয় মন্ত্রী যোগ্য। যোগ্যতা না থাকলে পাঁচ বছর থাকতে পারতেন না। বাংলার মানুষ যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিল, সত্তরের জনপ্রিয় স্লোগান ছিল, সাড়ে সাত কোটি মানুষের স্লোগান ছিল-জয় বাংলা, বাংলার জয়। আমার ভয় হচ্ছে, আগামীতে মানুষ বলা শুরু করে কিনা-জয় সিন্ডিকেটের জয়, সিন্ডিকেটের জয়।

বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এখানে জিনিসপত্রের দাম ও সিন্ডিকেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমি নিজে একজন সিন্ডিকেটের লিডার। আমি ব্যবসায়ী। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই সংসদে আমার অনেকবার বলতে হয়েছে যে, আমি ব্যবসায়ী হওয়ার অনেক আগে থেকেই রাজনীতি করি। আমি রাজনীতি শুরু করার ২০ বছর পরে ব্যবসা শুরু করেছি।

তিনি বলেন, ব্যবসা করাটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী। হয়তো ব্যবসা না করলে এদিক-সেদিক থেকে চাঁদা নিয়ে আমাকে বাঁচতে হতো। আমি যে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তা দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমি বিদেশে রপ্তানি করি।

বৈশ্বিক কারণে দাম বৃদ্ধি এবং কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে উৎপাদিত দ্রব্য কখনও কখনও বাড়ে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই— কখনও হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেয়। ডিমের কথা যদি বলি, এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৈরিও করে না, এর সঙ্গে সম্পৃক্তও না। এটি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দেশের হাজার হাজার মানুষ মুরগি পালন করে, সেই মুরগি ডিম দেয়। পারিবারিকভাবে ছোট আকারে মুরগি পালন হয়। আবার কিছু বড় ব্যবসায়ীও আছে। এই লাখ লাখ ডিম উৎপাদনকারীকে আমরা কন্ট্রোল করবো কীভাবে? মুক্তবাজার অর্থনীতি হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে পেঁয়াজ ও আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। সেটা আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি। তবে এটাও ঠিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সবকিছুর খোঁজখবর নিচ্ছেন। কৃচ্ছ্রতা সাধনের কথাও বলছেন। আমরা সংসদ সদস্যদেরও এ বিষয়ে সহযোগিতা চাই। আপনারা মানুষের কষ্ট বুঝেন বলেই কথাগুলো বলছেন। তবে বৈশ্বিক ও দেশের সার্বিক অবস্থাটা বিবেচনা করে আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমরা এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি, আপনাদের পরামর্শ শুনে যতদূর সম্ভব হয় চেষ্টা করব।

মন্ত্রী বলেন, আমরা ডিমের ব্যাপারে একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি আজকে। যদি সেই দামে না পাই, তাহলে দুই একদিনের মধ্যে ডিম আমদানি করব। আমরা ভোক্তাদের দিকে লক্ষ্য রাখব।

জাতীয়

দেশীয় ৬৬টি বেসরকারি সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসাবে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এসব সংস্থাকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।

নিবন্ধন পাওয়ায় এই সংস্থাগুলো আগামী জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। বৃহস্পতিবার এই ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইসি।

এদিন নতুন করে আরও পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়ার লক্ষ্যে আবেদন চেয়ে পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ইসি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৮টি পর্যবেক্ষক সংস্থা ছিল। এবার ইসির বাছাইয়ে ৬৮টি সংস্থা টিকেছে। এর মধ্যে দুটি সংস্থার বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। বৃহস্পতিবার ওই দুই অভিযোগ নিয়ে শুনানি করে কমিশন। এই দুটি সংস্থার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।

ওই পর্যবেক্ষণ পূর্ণ হলে এ দুটিকে নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। বাকি ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে গতকাল নিবন্ধন দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিতর্কিত ইলেকশন মনিটরিং ফোরামসহ কয়েকটি সংস্থা এবার নিবন্ধন পায়নি। কয়েকটি নিবন্ধন চেয়ে আবারও আবেদন করেছে।

এছাড়া গত নির্বাচনের চেয়ে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক সংস্থা এবার নিবন্ধন পেয়েছে। ওইসব দিক বিবেচনায় নতুন করে পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন দেওয়ার লক্ষ্যে আবেদন চাইল কমিশন।

নিবন্ধন পাওয়া ৬৬টি সংস্থা হলো: মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (মওসুস); সেবা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন; অগ্রদূত সংস্থা (এএস); অ্যাক্টিভিটি ফর রিফরমেশন অব বেসিক নিডস (আরবান); হাইলাইট ফাউন্ডেশন; মুভ ফাউন্ডেশন; ডেমোক্রেসি ওয়াচ; জানিপপ-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ; ডিজঅ্যাবিলিটি ইনকুজিশন অ্যাক্টিভিটিস (দিয়া); আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা (আসাস); আব্দুল মমেন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন; এসডাপ; বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন; লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন (এলআরবি); সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস; যুব উন্নয়ন সংস্থা; শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র (এসপিবিকে); বঞ্চিতা সমাজকল্যাণ সংস্থা; কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি; এসকে কল্যাণী ফাউন্ডেশন; সোসাইটি ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অবক রুরাল পিপল (সার্প); সেতু রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এসআরডিএস); সোসাইটি ফর ট্রেনিং অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (স্টার); রুরাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (রাসা); ডেভেলপমেন্ট হেল্পিং কী (ডিএইচকে); তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন (টাইডা); স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশন (সেফ); বাঁচতে শেখা; ডপস ফাউন্ডেশন; অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ; ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি); ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (ভোসড); ক্রিয়েটিভ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি); জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি (জেমস); ডেপ (ডেভেলপমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড পিস); বেসিক; হিউম্যান রাইটস ভয়েস; সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এসপিকে); রাজবাড়ী উন্নয়ন সংস্থা (রাস); ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (ডিপি); গরীব উন্নয়ন সংস্থা (জিইউকে); সমাহার-মাল্টি ডিসিপ্লিনারি রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন; সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (সাস); হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি ফর বাংলাদেশ; ডেভেলপমেন্ট অব মহিলা সোসাইটি (ডিএমএস); সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডিও); সোশ্যাল ইকুয়ালিটি ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট (সিড); ইন্টিগ্রেটেড সোসাইটি ফর রেইজ অব হোপ (রিশ); সমন্বিত নারী উন্নয়ন সংস্থা (এস.এস.ইউ.এস); পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা (রুডো); শিল্ড-সোসাইটি ফর হিউম্যান ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট; সেঁজুতি হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সিডফ); এসো জাতি গড়ি (এজাগ); ওয়েসডা; সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (সাকো); ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এফএফডিএ); প্রকাশ গণকেন্দ্র; রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রাউডো); সার্ভিসেস ফর ইকুইটি অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (সিড); তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা; হিউম্যান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি-হিডস; রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ-র‌্যাক বাংলাদেশ; গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক); ইকো-কনসার্ন অ্যাসোসিয়েশন; গণউন্নয়ন কেন্দ্র (এটক) এবং এসো বাঁচতে শিখি (এবাস)।

জাতীয়

বর্তমান সরকারের পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্য দেওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইমরান আহমেদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে ইমরান আহমেদকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পদে বদলি করা হয়েছে।

পৃথক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. শফিউর রহমানকে জামালপুরের ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

উল্লেখ্য, সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে মাদারগঞ্জে নবনির্মিত পৌর ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষে ভোট চান জামালপুরের নবনিযুক্ত ডিসি ইমরান আহমেদ। তার এ বক্তব্যের ভিডিও ও অডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল চন্দ্র ধরের নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্য দেওয়ার এক মাস না যেতেই একই এলাকার জেলা প্রশাসকের একই ধরনের বক্তব্যে জেলাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

ওই অনুষ্ঠানে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ বলেন, আমাদের একটা জিনিস মনে রাখতে হবে। আমাদের অনেক কষ্টের অর্জিত এই স্বাধীনতা। আমাদের এই স্বাধীনতার সুফল হলো আজকের যোগাযোগ ও উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ‘যে সরকার এই উন্নয়ন করেছে, এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে সেই সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনতে হবে; এটা হবে আমাদের অঙ্গীকার।’ তিনি উপস্থিত লোকজনকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা এই সরকারের প্রতি অসহযোগিতা করবেন না।

জাতীয়

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। তবে ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন। এমন বিধান রেখে মঙ্গলবার বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩ পাশ করা হয়েছে জাতীয় সংসদে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি সংসদে পাশের জন্য উত্থাপন করেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাশ হয়।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না, যদি তা উর্বর কৃষি জমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয় বা কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি হলে বা পরিবেশ প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হয় বা ড্রেজারের মাধ্যমে বা যদি অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়। যাতে এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, তবে কোনো ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন।

বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, চাঁদপুরের হাইমচরের সেলিম চেয়ারম্যান বালু তোলা নিয়ে ২০১৫ সালে একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালে সেই মামলার রায় হয়। তিনি বালু তোলার অনুমতি পান। গত সপ্তাহে সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করে। এটা যদি হয় বালু ব্যবস্থাপনার অবস্থা। সেলিম চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে কত বালু তুলেছেন মন্ত্রী তা জানেন কিনা, জানাবেন।

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, তড়িঘড়ি করে সংসদে ভূমির তিনটি আইন আনা হয়েছে। এই বিলগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যরা পর্যালোচনারও সুযোগ পাননি। সরকার ইচ্ছা করে জনগণ থেকে আড়াল করে আইন করছে। বিভিন্ন পত্রিকার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন মাসোহারা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও দায়-দায়িত্ব আছে।

জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে কাজ করছি। এই আইন কঠোরহস্তে প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে। বালু নিয়ে অনেক সমস্যা। সে কারণে এই আইনে ফাঁকফোকড় ছিল। প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নিতে পারত না। এই ফাঁকফোকড় বন্ধ করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসন কঠোর হাতে মাটি ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে কাজ করতে পারবে। উদ্দেশ্য কৃষি জমির সুরক্ষা। ইটভাটা টপ সয়েল নষ্ট করে দিচ্ছে। এই আইন হলে মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে।

জাতীয়

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।

আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন। কিন্তু সে সময় সুপ্রিমকোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১ আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার ৬৭ বছর পূর্ণ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে ওইদিন তিনি অবসরে যাবেন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও দুই হাজার ৯৯৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দুই হাজার ৯৯৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা ৯৯৪ ও সারা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এক হাজার ৯৯৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এর মধ্যে ঢাকায় আট; অন্যান্য অঞ্চলে ৬ জন।

এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৫২১; সারা দেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ২০৯ জন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট তিন হাজার ৩০৬ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। ঢাকার হাসপাতালগুলো থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন এক হাজার ১০০ জন। অন্যান্য অঞ্চল থেকে দুই হাজার ২০৬ জন।

চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট এক লাখ ৪৮ হাজার ৩২৮ জন। ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ হাজার ৬৯ জন। বাকি ৮১ হাজার ২৬৯ জন অন্যান্য অঞ্চলগুলোয়। ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি আছেন চার হাজার ২৯৭ জন। অন্যান্য অঞ্চলগুলোর হাসপাতালে রয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৭৪ রোগী। হাসপাতালে ভর্তি থাকার হার ৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ।

জাতীয়

‘সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিলটি উত্থাপন করেন। এরপর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঁচ দিন সময় বেঁধে দিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে সেটি পাঠানো হয়। বিলে জাতীয় পার্টির একজন সদস্য আপত্তি জানিয়েছেন।

বিলটি উত্থাপনের শুরুতে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়ে বলেন, এ বিলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন অংশীজনরা। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। প্রস্তাবিত আইনকে টিআইবি কালো আইন হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম হলো- মতপ্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধের উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল। সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায়ও রাখা হয়েছে। তাই অনেকে এ খসড়া আইনকে নিবর্তনমূলক বলে মনে করছেন।

জবাবে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার জগতে ঝুঁকিও বাড়ছে। সাইবার অপরাধগুলো এত বেশি মারাত্মক এবং এত বেশি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণের জন্য এটা বেশি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যেগুলো অজামিনযোগ্য ছিল সেগুলো নতুন আইনে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। তবে শুধু চারটি ধারা অজামিনযোগ্য হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনটিকে উদার ও ভবিষ্যৎমুখী বলেও উল্লে­খ করেন পলক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিচার চলবে : এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করে। শুরু থেকে এ আইন নিয়ে সাংবাদিকদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে। সমালোচনার মুখে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে। যদিও ডিজিটাল আইনের বেশির ভাগ ধারা অনেকটা অবিকৃত রেখে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত হলেও এ আইনে করা মামলাগুলোর বিচার নতুন আইনে হবে না, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই চলবে।

জাতীয়

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমস হাউজের গুদামের ভল্ট থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে হস্তান্তর করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকালে বিমানবন্দর থানা থেকে মামলাটি ডিবির উত্তরা বিভাগে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। মামলার সর্বশেষ তদন্তের বিষয়ে জানান, এখন পর্যন্ত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সূত্র জানায়, স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রোববার।

বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য যুগ্ম কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে কাস্টমস হাউজ।

এজাহারে শনিবার দিনগত রাত সোয়া ১২টা থেকে পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কে বা কারা গুদামের আলমারির লকার ভেঙে স্বর্ণগুলো নিয়ে গেছে।

শুল্ক বিভাগ জানায়, চুরি হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের গুদামের লকার থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির মামলায় ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোজাফফর হোসেন জানান, সোমবার মামলার এজাহার আদালতে আসে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তা গ্রহণ করে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত রোববার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে উদ্ধার হওয়া ৪৮টি ডিএম বার যার ওজন ৮.০২ কেজি ও ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে বিভিন্ন সময়ে আটক ৩৮৯টি ডিএম বার যার মোট ওজন ৪৭.৪৯ কেজি স্বর্ণ আলমারির লকার ভেঙে চুরি হয়েছে।

গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কে বা কারা ৫৫ কেজি স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি করেছে; যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪৫ কোটি টাকার বেশি।

সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণের বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এ গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত স্বর্ণের হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

জাতীয়

পোড়া বঙ্গবাজারে উঠছে ৩৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল ভবন। নতুন নামে এই ভবনে দোকান থাকবে ৩ হাজার ৪২টি। থাকবে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে মার্কেট নির্মাণের সময়ে কোথায় বসে ব্যবসা করবেন এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১০ তলাবিশিষ্ট এই মার্কেটটির নাম হবে ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণি বিতান’। এরই মধ্যে মার্কেটের নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসের মধ্যে নকশা অনুমোদন হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরই ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে।

বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে গত ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন এই মার্কেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেট (একাংশ), মহানগর শপিং কমপ্লেক্স (একাংশ), বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও মার্কেটে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের আর্থিক ক্ষতি ৩০৩ কোটি টাকা।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণি বিতান নির্মাণের নকশা তৈরির কাজ হচ্ছে। নকশা তৈরি করছে আলাদা তিনটি প্রতিষ্ঠান। নকশা চূড়ান্ত হলে নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যেই ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গার ওপর ১০ তলা এই বিপণি বিতানে বেজমেন্ট, গ্রাউন্ড ফ্লোরসহ আটটি ফ্লোর থাকবে। গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত দোকান থাকবে তিন হাজার ৪২টি। এর মধ্যে গ্রাউন্ড ফ্লোরে ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি, সপ্তম তলায় ৩১৩টি। অষ্টম তলায় দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী, নিরাপত্তাকর্মীদের আবাস ও অন্য কক্ষ রাখা হয়েছে।

এছাড়া প্রস্তাবিত নকশায় রাখা হয়েছে ২২টি খাবারের দোকানের জায়গা। এর বাইরে আরও ৮১টি দোকান বেশি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ বর্গফুট। বিপণি বিতানটিতে লিফট থাকবে আটটি। এর মধ্যে ক্রেতাদের জন্য চারটি ও মালামাল ওঠানো-নামানোর জন্য কার্গো লিফট থাকবে চারটি। থাকবে ১১টি সিঁড়ি। ছয়টি ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি। এছাড়া প্রতি ফ্লোরে চারটি করে টয়লেট থাকবে। পার্কিংয়ে একসঙ্গে ১৮৩টি গাড়ি পার্কিং ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫শ বর্গফুট আয়তনের এ ভবনটি তৈরি করতে প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করছে সৃজনী উপদেষ্টা লিমিটেড।
বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এখন অস্থায়ী চৌকিতে শামিয়ানা টানিয়ে ব্যবসা করছেন। এখানে অধিকাংশই জামাকাপড়ের দোকান। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।

বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বহুতল ভবন নির্মাণ করে দেবে- এ উদ্যোগে আমরা অনেক খুশি। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো মার্কেটটি নির্মাণ করে দোকান হস্তান্তর করতে অন্তত তিন বছর সময় লেগে যেতে পারে। এই সময়ে আমরা কোথায় যাব? কীভাবে ব্যবসা করব। কীভাবে টিকে থাকব। সিরাজুলের মতো ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ব্যবসায়ীরাও বলছেন, সিটি করপোরেশন যদি তাদের অস্থায়ীভাবে বসার জায়গার ব্যবস্থা করে দেয় তবে তারা ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন।

বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূূর তাপস ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর রাখছেন। তার উদ্যোগেই এখন ১০ তলা ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। নকশা তৈরির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিকবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়েই নকশা প্রণয়ন করা হচ্ছে।