জাতীয়

নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না-বাণিজ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি এমনটা বলে থাকলে তাকে ধরা হবে। এ প্রসঙ্গে আজ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমি তো এ বিষয়ে কিছু জানি না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী কী মিন করে বলেছেন, কোন পরিস্থিতিতে বলেছেন, আমি জানি না।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার্সের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর তাকে ধরার প্রসঙ্গে নিজেকে ডিফেন্ড করবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন,‌ কি মিন‌ (বোঝাতে) করেছেন সেটা তিনি ভালো জানেন। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। বাজারে সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙব এ ধরনের কোনো কথা তো আমি বলিনি। বলেছি যে, আমাদের যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, আমরা চেষ্টা করি, কখনো কখনো আমাদের লোকবল কম থাকার কারণে এমন হয়। আমি জানি না কালকের প্রশ্ন কী ছিল। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী মিন করে বলেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গতকালের মিটিংয়ের পরে তো আমি উনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিলাম। এ বিষয়ে উনার সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি।

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, প্রশ্নটা ছিল এ রকম যে, আপনি বলেছিলেন যখন ক্রাইসিস তৈরি হয় তখন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও ক্রাইসিস তৈরি হয়। এ কথাটি আপনি বলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যে কথাটা আমি বলেছিলাম যে জেল জুলুমের ব্যবস্থা নিলে তারা…আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাই। হঠাৎ করে জেল দিলে ভোগান্তিটা বাড়বে।
ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমি বলেছিলাম, প্রয়োজন হলে ডিম আমদানি করব।

কোনোভাবেই তো বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না, আজকে একটা বাড়লে কালকে আরেকটার দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। শ্রীলংকার মূল্যস্ফীতি অনেকটা এগিয়েছে, আমরা সে তুলনায় পিছিয়ে আছি- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলংকা আর আমাদের অবস্থাটা ভিন্ন। শ্রীলংকার বড় যে আয় সেটা হলো পর্যটন খাত। সেটা তারা রিভাইভ করেছে বলে তারা উন্নতি করছে। পাশাপাশি ছোট দেশ, সেজন্য তারা উতরে গেছে। আমাদের তো বিশাল বড় একটা দেশ। আমাদের চেষ্টা চলছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের একটু কৃচ্ছ্র সাধন করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে।’

আপনি বলেছেন, একটা শ্রেণির কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যখন ক্রাইসিস শুরু হয় তখন ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও বেশি ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে। সে কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় সংসদেও আপনি এটি বলেছে। এখন তাহলে কি বলছেন সিন্ডিকেট বলতে কোনো কিছু নেই বাজারে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের একটি বিশাল অর্থ বিশাল ব্যাপার। আজ বলেন সিন্ডিকেটের অল্প কিছু, এই যে ডিম দেখেন, গ্রামে গ্রামে লাখ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। সেখানে সিন্ডিকেটের কথা বলব কেমন করে। একজন দুজন তো ডিমের ব্যবসা করছে না। এই যে বিশাল জায়গায় দাম বাড়াচ্ছে তারা। সেটা তো বুঝতে পারি। সব জায়গায় তো সিন্ডিকেটের কথা বলি না। কিন্তু সুযোগ যে তারা নেয় না তা নয়। আমরাও চেষ্টা করি যে দামটা হওয়া উচিত, সেটার কথা চিন্তা করি।

এ বিষয়ে তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার কোনো হয়নি?-এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি উনার সঙ্গেই ছিলাম। হয়তো সময়ের স্বল্পতার কারণে উনি আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেননি। আর অ্যাকচুয়ালি কী কথা উনি আমাকে বলবেন আমি সেটি জানি না। আপনার মুখ থেকে শুনলাম বা কাগজে দেখলাম। একটা প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উনি এ কথাটা বলেছেন।

ভারতের বাজার আর আমাদের বাজারের তারতম্য অনেক– এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ভারতের সঙ্গে সব বিষয়ে তুলনা করা সম্ভব নয়। আজ ভারতে চিনির দাম কম, কারণ তাদের উৎপাদন যেটা হয় চাহিদা মেটানোর পরও রপ্তানি করে। আর আমাদের ৯৯.৯ শতাংশ বাইরে থেকে আনতে হয়। সব জিনিস একরকম হবে তা কিন্তু নয়। কখনো কখনো কোনো কোনো জিনিস একরকম হয়। পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল, তখন ভারতে রেশনিং চালু করেছিল। যখন কাঁচা মরিচের দাম বাড়ল তখন ৩৫০ রূপিতে বিক্রি হয়েছে। এই মুহূর্তে দেখেন পেঁয়াজের ওপর ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে কাজ করে। আমরা বিকল্প সোর্স থেকে আনার চেষ্টা করি। সব কিছু একরকম নয়। তবে হেবিটটা একরকম পাশাপাশি দেশ বলে।

শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি অনেকটা এগিয়েছে, আমরা সে তুলনায় পিছিয়ে আছি– এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা আর আমাদের অবস্থাটা ভিন্ন। শ্রীলঙ্কার বড় যে আয় সেটা হলো পর্যটন খাত। সেটা তারা রিভাইভ করেছে বলে তারা উন্নতি করছে। পাশাপাশি ছোট দেশ, সেজন্য তারা উতরে গেছে। আমাদের তো বিশাল বড় একটা দেশ। আমাদের চেষ্টা চলছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের একটু কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে।

ডিমের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সেদিনও বলেছি, ডিমের কি দাম হওয়া উচিত সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দাম নিদিষ্ট করে দিয়েছে, এরকম দাম হওয়া উচিত। আমরা চেষ্টা করছি তারা যে দামটা নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেটা যেন বাজারে থাকে।

সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, গ্লোবাল অবস্থাটা দেখেন, আপনারা যখন দেখেন ইংল্যান্ডের দোকানেও যখন তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না, সে বিষয়ে রেস্ট্রিকশন দিয়ে দেয়। জার্মানিও দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। আমাদের এখানেও নিশ্চয়ই প্রভাব পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হবে তেমন তো নয়, তবে আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যেও যেন আমরা ঠিক থাকতে পারি।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম প্রশ্ন করেন, সারা বিশ্বেই অর্থনৈতিক ধকল যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে লক্ষ্য করছি, নিত্যপণ্যের ব্যাপারে মৌসুমী ব্যবসা পরিচালিত হয়। মজুত আছে, সরবরাহ আছে, তারপরেও হঠাৎ করে জিনিসের দাম বেড়ে যায়। পেঁয়াজ, ডাবের ক্ষেত্রে দেখলাম। রাতারাতি পেঁয়াজ কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। কাঁচামরিচের কেজি ১ হাজার টাকা দেখলাম। অনেক পণ্যের ব্যাপারে সিন্ডিকেট করে বাংলাদেশে ব্যবসা করে মানুষের পকেট থেকে অনেক টাকা নেওয়া হচ্ছে।

সাইফুল আলম তার প্রশ্নে বলেন, সিন্ডিকেটের কথা দায়িত্বশীল মন্ত্রীরাও বলেন। তারা বলেন, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যায় না। সেখানে হাত দিতে গেলে বিপদ আছে। আমরা মনে করি, সরকার অত্যন্ত শক্তিশালী। সরকার দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে। এ নিত্যপণ্যের মৌসুমী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে কী না তা প্রধানমন্তীর কাছে জানতে চান তিনি।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‌‌বিপদ আছে কে বলেছে, আমি ঠিক জানি না। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।

তখন যুগান্তর সম্পাদক বলেন, দুজন মন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন? বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব তো। তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য নিয়ে কয়েকটা হাউস ব্যবসা করে। যখনই তারা দাম বাড়ায় আমরা আমদানি করি, বিকল্প ব্যবস্থা করি। যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই। কাজেই সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা না। কত শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি জানি না, আমি দেখব কী ব্যবস্থা করা যায়।

উল্লেখ গত ১১ আগস্ট রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ডিমের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে বলেন, ডিমের দাম আমরা ঠিক করতে পারি না। এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখে না। আমাদের জানার দরকার-ডিমের সঠিক দামটা কত? সেটা জানতে মন্ত্রণালয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে মাঠে নামাতে পারে। তবে আমরা সিন্ডিকেট বন্ধ করে দিলাম, তারা (সিন্ডিকেট চক্র) বাজারে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিল। তখন ভোক্তারা পণ্য পেল না। এজন্য আমাদের সবদিকে খেয়াল রাখতে হয়।

এর আগেও বাণিজ্যমন্ত্রী নিত্যপণ্য নিয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তারা পণ্যের সরবরাহ কমিয়ে দেবে। তখন ভোক্তা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ২৬ জুন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তোপের মুখে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ করে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে সংসদে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। কোনো কোনো সংসদ সদস্য তো সরাসরি বলেই ফেলেন যে, বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর যোগসাজশ রয়েছে।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। এটা ঠিক বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। চাইলে জেল-জরিমানাসহ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। তবে আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার— আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম; সেটা হয়তো করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে ক্রাইসিসটা তৈরি হবে, সেটাও তো সইতে আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি।

জাতীয়

দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ-অবতরণের পর চাঁদের দেশ থেকে প্রথমবারের মতো এই বিস্ময়কর বৈজ্ঞানিক তথ্য পাঠাল চন্দ্রযান-৩। রোববার এক বিবৃতিতে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা কেমন তা জানাতে শুরু করেছে বিক্রম। পাঠানো তথ্য মোতাবেক চাঁদের মাটির উপরে এবং নিচে বিভিন্ন গভীরতায় তাপমাত্রার ভিন্নাবস্থার একটি গ্রাফও প্রকাশ করেছে ইসরো।

তাতে দেখা যাচ্ছে, দিনের বেলায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ‘ল্যান্ডার’। পৃথিবীর হিসাবে এই তাপমাত্রা যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি মরু অঞ্চলের উত্তাপ ছাড়িয়ে গেছে। আর চাঁদের মাটির নিচে মাত্র ২০ মিলিমিটার গভীরে পৌঁছলেই তাপমাত্রা শরৎকালের মতো। ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে পারদ। ইসরোর ভাষায়, এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রার এতটা স্পষ্ট একটি গ্রাফ পাওয়া গেল। খবর এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা।

বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদে অবতরণ করেছে বিক্রম। তার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই চাঁদের মাটিতে শুরু হয়েছে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। ইতোমধ্যেই বিক্রমের ভেতরে থাকা চন্দ্র অভিযাত্রী যান বা রোভার প্রজ্ঞান গুটি গুটি পায়ে হাঁটছে চাঁদের মাটিতে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮ মিটার পথ অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। অন্য দিকে, বিক্রমের ভেতরে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রও কাজ শুরু করেছে। এসব যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম ‘চাস্তে’। চাঁদের মাটির গভীরে ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষমতা রয়েছে এই যন্ত্রের। একই সঙ্গে চাঁদের মাটির উপরের এবং গভীরের তাপমাত্রাও মাপবে চাস্তে। ইতোমধ্যেই চাঁদের মাটির ৮০ মিলিমিটার গভীরে পৌঁছতে পেরেছে যন্ত্রটি। সেই সঙ্গে রেকর্ড করেছে বিভিন্ন স্তরের তাপমাত্রাও। যার তথ্য বিক্রম পাঠিয়েছে ইসরোর দপ্তরে। সেই তথ্যই একটি গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে ইসরো।

বিক্রম জানিয়েছে, দক্ষিণ মেরুতে দিনের বেলায় চাঁদের পৃষ্ঠে প্রায় ৫০ ডিগ্রির সমান তাপমাত্রা। এই ‘দিন’ অবশ্য পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিনে বিস্তৃত। বিজ্ঞানীদের দেওয়া হিসাব বলছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত হতে পৃথিবীর হিসাবে লাগে ১৪ দিন। আবার সূর্য ঢললে রাতও নামে পৃথিবীর হিসাব অনুযায়ী ১৪ দিনের জন্য। চাঁদের কুমেরুতে এই রাত যখন নামে তখন চন্দ্রপৃষ্ঠে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত নামে তাপমাত্রা। তবে সূর্য আকাশে থাকলে চন্দ্রপৃষ্ঠের এই অংশের মাত্র ৩০ মিলিমিটার গভীরে গেলেও তাপমাত্রা থাকে ওই ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ঘরেই। বিক্রমের পাঠানো গ্রাফ অনুযায়ী আরও নিচে অর্থাৎ ৭০ মিলিমিটার গভীরে চাঁদের তাপমাত্রা অবশ্য হিমাঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে। আরও ১০ মিলিমিটার গভীরে গেলে মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তাপমাত্রা। এই গ্রাফে স্পষ্ট চাঁদের মাটির নিচে খুব দ্রুত নামতে থাকে তাপমাত্রা। মাটির মাত্র চার গাঁট গভীরেই অনেকটা নেমে যায় পারদ।

জাতীয়

সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ বাংলাদেশি কর্মী। রোববার রাতে তারা মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

ওইদিন বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে বিএমইটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেওয়া হয়। পরে তারা বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ‘স্বল্পব্যয় ও বিনা খরচে প্রবাসে কর্মী প্রেরণ’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল।

মালেশিয়ার রেডউড ফার্নিচার এসটিডি কোম্পানির সম্পূর্ণ খরচে ওই শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ১৯ জুন প্রথমবার ২০ কর্মী নিয়োগ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বত্তৃদ্ধতায় বিএমইটির মহাপরিচালক শহিদুল আলম বলেন, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমাদের জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে। ওইসব দেশে বাংলাদেশের কর্মীরা কর্মদক্ষতা দিয়ে প্রশংসা অর্জন করছেন। শ্রমিক ভাইদের মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও বেশি করে শ্রম দিতে হবে। তাহলে তারা নিজ খরচে বাংলাদেশি কর্মী নিতে আগ্রহী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে কেথারসিস গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিনসহ বিএমইটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের সংখ্যা বাড়ছে। ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে ছোট-বড় ও নতুন-পুরাতন মিলে ৩২টি প্রকল্প। এটি চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

এগুলোর মধ্যে একনেকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে ২০টি প্রকল্প। এছাড়া ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া শুধু মেয়াদ বাড়ানোর জন্য উপস্থাপন করা হবে পাঁচটি এবং আগেই পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন এমন সাতটি প্রকল্প (৫০ কোটি টাকার নিচে ব্যয়) অবগতির জন্য তোলা হবে।

এর আগে গত পাঁচটি একনেক বৈঠক মিলে অনুমোদন পায় ৭১টি প্রকল্প। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান শনিবার যুগান্তরকে বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। কেননা গত প্রায় দেড় মাস ধরে একনেক বৈঠক হয় না। নিয়মিত অনুষ্ঠিত হলে ৫টি বৈঠক হয়ে যেত। তাহলে এত প্রকল্প জমা হতো না। এখন তো সামনে নির্বাচন। আপনার (সাংবাদিকরা) যদি বলেন, নির্বাচনের কারণে এত প্রকল্প তাহলে তো কিছু করার নেই।

তিনি আরও বলেন, আমি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করি না। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রক্রিয়াকরণের পর যে সুপারিশ পাঠায়, সেগুলোই একনেকে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

সূত্র জানায়, ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় একনেক বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই একনেকে অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রকল্প রয়েছে ছয়টি। এছাড়া ভৌত অবকাঠামো বিভাগের পাঁচটি, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের পাঁচটি এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের চারটি প্রকল্প রয়েছে।

মেয়াদ বৃদ্ধির তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পাঁচটিই ভৌত অবকাঠামো বিভাগের। সেইসঙ্গে একনেকে অবগতির জন্য যেসব প্রকল্প রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রকল্প রয়েছে চারটি এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের প্রকল্প আছে তিনটি।

গত কয়েকটি একনেক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রকল্প অনুমোদনের সংখ্যা বাড়ছে। ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৫টি প্রকল্প। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। এছাড়া ২০ জুন অনুমোদন দেওয়া হয় ১৬টি প্রকল্প।

এগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর আগে ৬ জুন অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয় ১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এছাড়া ১১ এপ্রিল অনুমোদন দেওয়া হয় ১১ট উন্নয়ন প্রকল্প, এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

৪ এপ্রিল অনুমোদন দেওয়া হয় ১১টি প্রকল্প, এগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

এদিকে ২৯ আগস্ট একনেক উঠতে যাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে, স্মল হোল্ডার অ্যাগ্রিকালচার কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি)। এছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়। ক্লাইমেট অ্যান্ড ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স স্মল স্কেল ওয়াটার রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট।

মেঘনা নদীর ভাঙন হতে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার নলের চরে নির্মিত অবকাঠামো রক্ষার্থে প্রতিরক্ষামূলক কাজ। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন এবং খালের উভয় পারের উন্নয়ন ও সুরক্ষা (প্রথম পর্যায়)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম নির্মাণ। বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু পার্ক আধুনিকীকরণ। পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক হতে মাদানী এভিনিউ পর্যন্ত সংযোগকারী দুটি সড়ক উন্নয়ন। সিলেট সড়ক বিভাগাধীন সিলেট (তেলিখাল)-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়কে বড় ভাঙা সেতু নির্মাণ। মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতায় রামেরকান্দা-লাকিরচর সংযোগ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও আছে এস্টাবলিস্টমেন্ট অব ৫০০ বেডেড হসপিটাল ও এন্সিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ। শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট-২) : দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং লিভিং নো অব বিহাইন্ড : ইমপ্রুভিং স্কিল অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচ্যুনেটিস ফর দ্য ইউমেন অ্যান্ড ইয়ুথ ইন কক্সবাজার প্রজেক্ট।

ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী এর আগে যুগান্তরকে বলেন, হঠাৎ করে এত প্রকল্প অনুমোদন এবং গ্রামীণ অবকাঠামোয় বিশেষ নজর দেওয়াটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বলা যায়। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এসব প্রকল্প রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয় বলে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। এজন্য পরে অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি তৈরি হয়।

বিশেষ করে বাস্তবায়ন পর্যায়ে নানা কারণে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত সুফলও পাওয়া যায় না।

জাতীয়

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন পাকিস্তানি শাসনের মধ্য দিয়ে বাঙালির কাঙ্খিত মুক্তি অর্জন সম্ভব নয় তখন তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত করেন। হাজার বছরের পরাধীন বাঙ্গালীকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৫৪ এর নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং সর্বশেষ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তিনি আমাদেরকে তৈরি করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠনের কাজে হাত দিয়ে জাতির পিতা যখন দেশের রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সকল অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে দেশকে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। আজকে বঙ্গবন্ধু হত্যার যথোপযুক্ত জবাব যদি আমরা দিতে চাই তাহলে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে সেটি সম্ভব।

তিনি আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফজলুল হক হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনার সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মোঃ মাসুম। ফজলুল হক হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বেঈমান অকৃতজ্ঞ ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তার সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু না থাকলেও আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ করে পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের সঠিক জবাব দিতে পারি।

বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে যখন তিনি শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন তখন বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৯৪ ডলার মাথাপিছু আয় থেকে মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা আমাদেরকে ২৭৭ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশে পরিণত করেছিলেন। অথচ ২১ বছরে সামরিক শাসক এবং তাদের দলের শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছিল মাত্র ৫২ ডলার।

মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে যেরকম আওয়ামী লীগের অর্জন নিয়ে বিতর্ক এবং ষড়যন্ত্র করা হয় ঠিক একইভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাসন আমল নিয়ে বিতর্ক এবং ইতিহাস বিকৃতি করা হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীকে এসব ষড়যন্ত্র এবং গুজব প্রতিরোধে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, একটি শিক্ষিত ও তরুণ ছাত্রসমাজই পারে সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন ২০০৯ সালে শাসনভার গ্রহণ করে তখন বাংলাদেশের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ৭০০ ডলার আজ ১৫ বছরের মাথায় তা ২,৮২৪ ডলারের উন্নীত হয়েছে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনও সম্পূর্ণ করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ হওয়া।

স্বাধীনতার মত আমাদের মহান অর্জনকে নিয়েও বিএনপি বিতর্ক সৃষ্টি করে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, জিয়াউর রহমান কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হয়? বাংলাদেশের মানুষ কি স্বাধীনতার প্রশ্নে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছিল? বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা একজন অচেনা মানুষের কোন একদিনের ঘোষণাতে অর্জিত হতে পারেনা। স্বাধীনতার মত মহান অর্জন এতটা সহজলভ্য কোনভাবেই নয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত করার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। বিশেষ করে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী বিএনপি’র প্রচারণা যথোপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।

জাতীয়

বিদ্যুৎ সেক্টরের সমন্বিত গ্রাহক সেবার লক্ষ্যে হটলাইন ১৬৯৯৯ চালু করা হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ গ্রাহক সরাসরি হটলাইন নম্বর ১৬৯৯৯, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ এবং চ্যাট বট— এ তিন উপায়ে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যাবতীয় গ্রাহক সেবা নিতে পারবেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ সেবার উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিদ্যুৎ খাতের ৬টি বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির বিপিডিবি, আরইবি, ডেসকো, ডিপিডিসি, ওজোপাডিকো এবং নেসকো গ্রাহকরা এ সেবা পাবেন।

যেভাবে গ্রাহকরা সেবা পাবেন
১. কেন্দ্রীয় হটলাইন নম্বর ১৬৯৯৯-এ কল করার মাধ্যমে।
২. অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।
৩. বিদ্যুৎ বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া পেজের চ্যাট বট অপশনের মাধ্যমে।

১৬৯৯৯-এর সেবা প্রক্রিয়া
১৬৯৯৯ নম্বরে কল করার পর বিপিডিবির জন্য ১, বিআরইবির জন্য ২, ডেসকোর জন্য ৩, ডিপিডিসির জন্য ৪, নেসকোর জন্য ৫ এবং ওজোপাডিকোর জন্য ৬ ডায়াল করে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত কল সেন্টার অপারেটরের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে গ্রাহক তার অভিযোগ জানাতে পারবেন।

কল সেন্টার অপারেটর ওই নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)- এ গ্রাহকের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্যগুলো পূরণ করলেই তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অভিযোগটি সম্পর্কে অবগত হয়ে যাবেন।

একই সঙ্গে তথ্যটি বিদ্যুৎ বিভাগের সেন্ট্রাল কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে আপডেট হয়ে যাবে। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ৬টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অথরিটির ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে অভিযোগের ধরন, সর্বমোট অভিযোগ, অভিযোগের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপের সেবা প্রক্রিয়া
গ্রাহক অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারবেন। পাওয়ার ডিভিশনের অ্যাপটিতে প্রবেশের পর মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাপের হোম পেজে চলে যেতে পারবেন। হোম পেজের নিচে ‘এড একাউন্ট’ বাটনে ক্লিক করে গ্রাহক তার বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবেন। এরপর গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টের ধরন অনুযায়ী প্রিপেইড বা পোস্টপেইড নির্বাচন করবেন।

তারপর গ্রাহক তার মিটার নম্বর অথবা অ্যাকাউন্ট নম্বর প্রবেশ করানোর পর, অ্যাকাউন্ট নম্বরে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সে তার অ্যাকাউন্টের বিবরণ দেখতে পারবেন এবং এই অ্যাকাউন্টের জন্য গ্রাহক যদি কোনো অভিযোগ করতে চান তা হলে ‘কারেন্ট কমপ্লেন’-এ ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা ফর্মটিতে যাবতীয় তথ্য পূরণ করে অভিযোগ জানাবেন।

এ ছাড়া ‘কমপ্লেন হিস্টোরি’-তে গিয়েও গ্রাহক আগের অভিযোগের সব তথ্য এবং তার অভিযোগগুলো কোন পর্যায়ে আছে তা দেখতে পারবেন। অ্যাপ ব্যবহারের সময় যদি গ্রাহকের কল সেন্টারের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তা হলে অ্যাপে থাকা ‘হেল্প’ বাটনে ক্লিক করে সরাসরি কল সেন্টারে যোগাযোগ করতে পারবেন।

অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রথমত সেন্ট্রাল কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তথ্য ভাণ্ডারে যুক্ত হবে। এর পর সেখান থেকে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কমপ্লাইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে সমাধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এ সম্পর্কে অবহিত হবেন।

চ্যাট বটের সেবা প্রক্রিয়া
গ্রাহকরা পাওয়ার ডিভিশনের আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে চ্যাট বট অপশনটি পাবেন। ‘চ্যাট বট অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে গ্রাহক তার সাধারণ জিজ্ঞাসাগুলোর তাৎক্ষণিক উত্তর পেয়ে যাবেন। কোনো জিজ্ঞাসার উত্তর তাৎক্ষণিক দেওয়া সম্ভব না হলে সেখানে থাকা কল সেন্টার অপারেটরের সঙ্গে ‘কথা বলুন’ বাটনে চাপ দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহক হটলাইনে কল করে তার জিজ্ঞাসাটি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

জাতীয়

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের এক নারী কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে গ্যারেজে আটকে নির্যাতন এবং অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার সাবেক গাড়িচালক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

গত শুক্রবারের ওই ঘটনায় অপহরণ ও নির্যাতনের একটি মামলা হয়েছে রমনা মডেল থানায়। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি আবুল হাসান।

নির্যাতনের শিকার মাসুমা খাতুন এনবিআরের যুগ্ম কমিশনারের (ট্যাক্স) কর অঞ্চল-২-এ কর্মরত আছেন। গ্রিন রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, গত ১৮ আগস্ট রাত ৮টার দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মাসুমা ও তার গাড়িচালককে মারধর করে কয়েকজন। এর পর সেখান থেকে মাসুমাকে তুলে নিয়ে সবুজবাগ থানা এলাকার একটি গ্যারেজে ১৮ ঘণ্টা আটকে রাখে তারা। সেই সময় নির্যাতনে এ কর্মকর্তার পা ভেঙে যায়। তার চোখও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মাসুমার করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই দিন বড় মগবাজার থেকে নিজের গাড়িতে করে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ফিরছিলেন এই কর কর্মকর্তা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পৌঁছালে তাদের গাড়িতে ধাক্কা দেয় একটি মোটরসাইকেল। চালক গাড়ি থেকে নামলে সংঘবদ্ধ কয়েকজন চাবি কেড়ে নিয়ে গাড়িচালক আনোয়ার ও মাসুমাকে মারধর শুরু করে।

এর পর আনোয়ারকে রেখে মাসুমা ও তার গাড়ি সবুজবাগের একটি গ্যারেজে নিয়ে যান অপহরকারীরা। মাসুমার মুখ টেপ দিয়ে আটকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। পর দিন দুপুর ২টা পর্যন্ত তাকে আটকে রেখে নির্যাতন চলে।

ওসি আবুল হাসান বলেন, দুপুর ২টার পর দুর্বৃত্তরা তাদের চক্রের দুই-তিনজনকে গাড়ি পাহারায় রেখে খাবার কিনতে যায়। ওই সুযোগে মাসুমা খাতুন গাড়ি থেকে নেমে চিৎকার শুরু করেন। এর পর আশপাশের লোকজন এগিয়ে তাকে উদ্ধার করে। অপহরণকারীদের তিন সদস্যকে আটক করে শাহবাগ থানায় খবর দেয় তারা। পরে সবুজবাগ থানার পুলিশ মাসুমাকে উদ্ধার করে এবং ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে।

মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে মাসুমার সাবেক গাড়িচালক মো. মাসুদের পরিকল্পনায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান রমনা থানার ওসি।

মাসুদকে ‘সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, মাসুদই পরিকল্পনা করে তাদের বাহিনীর সদস্যদের তথ্য দেয়। মাসুমা খাতুনকে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগীদের নিয়ে মাসুদ এ ঘটনা ঘটায়।

এজাহারে মাসুদসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করেছেন এনবিআরের ওই কর্মকর্তা। ঘটনার সময় গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে সাব্বির ও ইয়াছিন আরাফাত রাজু নামের তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মাসুদসহ এই চক্রে চারজন রয়েছে এবং তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে ওসি আবুল হাসান বলেন, অপহরণের রাতে যুগ্ম কমিশনার মাসুমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় চক্রটি। তাকে অপহরণ করতে পারলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা যাবে, এমন আশ্বাস মাসুদ দিয়েছিলেন তার সহযোগীদের।

জাতীয়

সৌদি আরবের সঙ্গে আকাশপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এখন থেকে দেশের যেকোনো বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের যেকোনো বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো। দুদেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বুধবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

২০১২ সালের সৌদির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম ও মদিনা বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করা যেত।

বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ পক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সৌদি আরবের পক্ষে সৌদি জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল আজিজ আল দুয়াইলেজ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

নতুন স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে পরিচালিত ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রতি সপ্তাহে ৪৯টি যাত্রীবাহী এবং কার্গো ফ্লাইট পরিচালিত হতো। নতুন চুক্তিতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে ৭০ করা হয়েছে।

বিমান প্রতিমন্ত্রী চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় দেশের এভিয়েশন শিল্প বিকশিত হয়ে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হচ্ছে। গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে সারা দেশে বিমান পরিবহণ অবকাঠামোর যুগোপযোগী উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি, কারিগরি ও জন দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের এভিয়েশন খাত উন্নত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে অন্যতম এভিয়েশন হবে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ফলে দুই দেশের এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বৃদ্ধি পাবে। এটি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সহযোগিতার সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশের পর্যটনের পরিকল্পিত উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে দুই দেশের সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাউজান আল রাবিয়াহ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুলাইহান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানসহ দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জাতীয়

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের ঘনিচা গ্রামের নেকবর আলীর পুত্রবধূ সাবিকুন নাহার গত ৪ দিন ধরে নলকূপের পাইপের নির্গত গ্যাস দিয়ে করছেন রান্নার কাজ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নেকবর আলীর বাড়িতে বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।

বুধবার সকালে নেকবর আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর আগে নেকবর আলী ০.২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে ছোট একটি পুকুর খনন এবং বাড়িঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। দুই বছর আগে বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি অগভীর নলকূপ বসানো হয়। দুই মাস পর ওই নলকূপ দিয়ে আর পানি ওঠে না। একপর্যায়ে নলকূপটি অকেজো হয়ে পড়ে। প্রায় ছয় মাস আগে বাড়ির উত্তর-পূর্বদিকে আরেকটি অগভীর নলকূপ বসানো হয়।

সম্প্রতি ওই নলকূপটি থেকেও পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। গত পাঁচ দিন আগে মেরামতের জন্য নলকূপের ওপরের মাথা খোলা হলে শোঁ শোঁ শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। পরে আগুন জ্বালিয়ে সেটি পরীক্ষা করতে গেলে গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এরপর থেকে নলকূপ দিয়ে ওঠা গ্যাসেই চলছে ওই পরিবারের রান্নার কাজ।

নেকবর আলীর ছেলে সাইকুল ইসলাম জানান, গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর সেখানে রান্না করার ব্যবস্থা করে দেই। গত চার দিন ধরে আমার স্ত্রী সাবিকুন নাহার সেখানেই রান্নার কাজ করছেন। তাছাড়া দুই বছর আগে বাড়ির দক্ষিণ পাশের জমিতে স্থাপন করা নলকূপ থেকেও বুদবুদ আকারে গ্যাস বের হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসকে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

জাতীয়

হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছে খুচরা ফল বিক্রেতা সিন্ডিকেট। পাইকারি আড়ত থেকে কম মূল্যে ফল কিনলেও খুচরা পর্যায়ে প্রায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।

তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এ পণ্যটি বাদ দিচ্ছেন। এছাড়া খুব প্রয়োজনে খরচ সমন্বয় করতে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। ফলে একদিকে ভোক্তার পকেট কাটা যাচ্ছে। অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার ফল কিনতে পারছে না।

এদিকে দেশে ডলার সংকট হওয়ায় গত বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরে ফল আমদানিতে ঋণ সুবিধাও বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই কেউ যদি ফল আমদানি করতে চায়, তাহলে যে পরিমাণে ফল আমদানি করবে ওই পরিমাণ নগদ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীকে।

এতে বছরের তুলনায় বিদেশি ফলের আমদানি কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। আমদানি কমায় দামও বেড়েছে। আর এই অজুহাত দেখিয়ে খুচরা বিক্রেতা সিন্ডিকেট সব ধরনের ফলের দাম পাইকারির তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে বিক্রি করছে। রাজধানীর বাদামতলীতে পাইকারি ফলের আড়ত ঘুরে ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার প্রতি কেজি লাল আপেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। যা খুচরা বাজারে ২৮০-৩৭০ টাকা। পাশাপাশি আড়তে প্রতি কেজি সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, যা খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা।

পাইকারি পর্যায়ে লাল আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, খুচরায় এই আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকা। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা। যা খুচরা বাজারে বিক্রেতারা ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি করছে। আড়তে আকার ভেদে প্রতি কেজি আনার বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা, যা খুচরা বাজারে ৩০০-৪০০ টাকা।

পাশাপাশি আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা, যা ক্রেতার ৭০-৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতি কেজি আমড়া পাইকারি পর্যায় থেকে ৩০-৩৫ টাকায় এনে খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন ৬০-৭০ টাকা। আনারস প্রতি পিস আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। যা বাজারে প্রতি পিস ৭০-১০০ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে। আর প্রতি পিস ডাব আড়তে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হলেও রাজধানীর খুচরা বাজার কিংবা এলাকার গলিতে ভ্যানে ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রোববার নয়াপল্টনে ফলের দোকানে ফল কিনতে আসেন মো. আবু নোমান। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এক সময় সপ্তাহে দুই দিন পরিবারের জন্য ফল কিনে বাড়ি ফিরতাম। অসহনীয় দামের কারণে এখন আর কেনা হয় না। নিত্যপণ্য মূল্যসহ সংসারের অন্যান্য খরচ বেড়েছে। তাই খুব দরকারে একটি-দুটি করে ফল নিয়ে ওজন মেপে যে টাকা হয় সেভাবে ফল কিনতে হচ্ছে।

দোকানি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা আপেলের দাম চাচ্ছে। তাই দুটি আপেল কিনেছেন। এখন দুটি মাল্টা ওজন দিচ্ছি। ওজনে যে দাম হবে সেটা দিতে হবে। তিনি জানান, ফলের কোনো সংকট নেই। তারপরও বিক্রেতারা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তারা বলছে যে ফলের যে দাম চাওয়া হচ্ছে সেই দামেই কিনতে হবে। তা না হয় চলে যান।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিদেশি ফলকে ‘বিলাসপণ্য’ দেখিয়ে অতিরিক্ত এলসি মার্জিন ও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে গত বছর ঠিক একই সময়ের তুলনায় সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এর মধ্যে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট অতি মুনাফার লোভে দাম আরও বাড়াচ্ছে। কারণ পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে হবে।

রোববার ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্র জানায়, সরকার ফল আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের পর থেকে ব্যাংকগুলো ঋণপত্র খোলা বন্ধ করে দিয়েছিল। এতে গত অর্থবছর থেকে ফল আমদানি কমতে থাকে। এ ছাড়া ডলারের বাড়তি দামের কারণেও ফলের দাম বেশি।

যে কারণে আমদানি ও পাইকারি পর্যায়ে ফলের দাম তুলনামূলক বেশি। তবে দেখা গেছে, আড়ত থেকে খুচরা বিক্রেতারা কম দামে ফল নিলেও খুচরা পর্যায়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। এ সিন্ডিকেট না ভাঙলে ক্রেতারা রোজায় ফল কিনতে স্বস্তি পাবে না। তাই তদারকি করা প্রয়োজন।

রামপুরা বাজারের ফল বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, পাইকারি বাজার থেকে আমরা যে দরে ফল আনি, কিছু লাভে তা বিক্রি করি। আমাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। পাইকারি পর্যায় থেকে ফল আনতে কিছু ফল নষ্ট হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়।

জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে প্রতিদিন রাজধানীসহ দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে নিয়ম অনুযায়ী বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। একই সময় বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

ফলের বাজারেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। অনিয়ম পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। অনিয়ম পেলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশে ডলার সংকট শুরু হলে গত বছর এপ্রিল মাসে ফলসহ অন্যান্য বিলাসী পণ্যে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর একই বছরে ১০ মে ফল আমদানিতে ৫০ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়। এতেও ডলার সাশ্রয় না হওয়ায় ৪ জুলাই ফল আমদানিতে ১০০ ভাগ এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়।

এছাড়া এনবিআরের তথ্যমতে, গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) দেশে বিদেশি ফল এসেছে ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪ টন। এর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) বিদেশি ফল আমদানি হয়েছিল ৮ লাখ ৯ হাজার ৭৯৬ টন। অর্থাৎ, সর্বশেষ অর্থবছরে দেশে ফল আমদানি কমেছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫২ টন বা ২৭.৬৩ শতাংশ।