জাতীয়

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের প্রতিবেদন ইসলামবিরোধী। তাই অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে। তিনি ইসলামী ব্যক্তিত্বদের দিয়ে নতুন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।

শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের প্রতিবেদন বাতিল এবং ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল কাদের বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তার ১০টির মতো প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে- যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী-পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করতে পারবে। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করারও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট- দেশের স্বার্থে, ইসলামের স্বার্থে এবং নারীদের স্বার্থে এই কমিশন বাতিল করতে হবে। কারণ, দেশের মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এই কমিশন দাঁড়িয়েছে। তারা পরিবার ও সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা করছে। পাশ্চাত্য জীবন দর্শনে প্রভাবিত কমিশনের এসব সদস্যরা বাংলাদেশের নারীদের সর্বসাধারণের আদৌ প্রতিনিধিত্ব করেন না। এরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাদের প্রস্তাবনাগুলো মেনে নিলে তা হবে ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের অস্তিত্বের ওপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। কমিশনের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই কমিশন বাতিল ঘোষণা করা পর্যন্ত সবাইকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে ওয়াকফ আইন সংস্কারের মাধ্যমে মুসলিমদের সম্পত্তি উচ্ছেদ ও বাজেয়াপ্ত করছে বিজেপি সরকার। কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর ফিলিস্তিনের গাজার মতো গণহত্যা চালানোর জন্য বিজেপি নেতারা উসকানি দিচ্ছে। আমরা ভারতীয় মুসলমানদের ওপর উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদের সব আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাই। ভারত সরকারকে তার নিজ দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানাই।’

খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার।

জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের অধীনে পরিচালিত ‘এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ইন পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স’ (ইএমপিজি) প্রোগ্রামের সামার সেশন-২০২৫ এর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রোগ্রামটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আমাদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আসিফ মাহমুদ নামে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। পরে আমরা জানতে পারি, তিনি মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আমাদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আসিফ মাহমুদ নামের একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। পরে আমরা জানতে পারি, তিনি মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা।

তিনি আরও জানান, আগামী এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। সেখানে যারা উত্তীর্ণ হবেন, তারাই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।

এর আগে দুপুরের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়ে এবং এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ইতিবাচক আলোচনা শুরু হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ পরিচালিত এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ইন পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (ইএমপিজি) একটি বিশেষায়িত মাস্টার্স প্রোগ্রাম। এটি নীতিনির্ধারক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উন্নয়নকর্মী ও গবেষকদের জন্য প্রস্তুতকৃত একটি শিক্ষা কার্যক্রম। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে পাবলিক পলিসি, প্রশাসনিক দক্ষতা, নেতৃত্ব এবং সুশাসন বিষয়ক সমন্বিত জ্ঞান প্রদান করা হয়।

প্রোগ্রামের আওতায় সরকারি নীতিনির্ধারণ ও বিশ্লেষণ (পাবলিক পলিসি অ্যানালাইসিস), শাসন ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠান বিষয়ক পাঠ, নীতিনির্ধারকদের জন্য অর্থনীতি, গবেষণা পদ্ধতি, জনপ্রশাসন ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব ও কৌশলগত ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয়ে পাঠদান করা হয়ে থাকে।

জাতীয়

‘নতুন বছর, নতুন বাংলাদেশ’ থিমে এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সর্ববৃহৎ ড্রোন শো প্রদর্শিত হয়েছে।

ঢাকার আকাশে দেখা গেল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো ‘আবু সাঈদ’, ‘পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধ’, ‘২৪-এর বীর’, ‘পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনার’ ছবি।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এ ড্রোন শো আয়োজন করা হয়।

জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ও গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও শোতে স্থান পেয়েছে প্রতীকীভাবে।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, এ ড্রোন শো কেবল বিনোদনের নয়, বরং এটি বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে গণআন্দোলন, মানবিক বিপর্যয় এবং আশা-ভবিষ্যতের ইঙ্গিত।

ড্রোন শোর আগে বেলা ৩টা থেকে শুরু হয় বৈশাখী কনসার্ট। কনসার্টের শুরুতেই পরিবেশনায় অংশ নেয় বান্দরবানের বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল। এরপর গারো ও আরএনআর ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ সংগীত পরিবেশন করে।

শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি। একক সংগীত পরিবেশন করেন মিঠুন চক্র ও পালাকার ইসলামউদ্দিন। রাকিব ও সাগর দেওয়ান পরিবেশন করেন দ্বৈত ও একক সংগীত, আরজ আলী ওস্তাদের সঙ্গে রাকিব পরিবেশন করেন আরও দুটি দ্বৈত গান।

আতিয়া আনিশা পরিবেশন করেন ‘চলো নীরালায়’ সহ তিনটি একক সংগীত, আহমেদ হাসান সানি গেয়েছেন ‘মাঝে মাঝে তুমি এলে’, ‘মানুষ কেন এরকম’ ও ‘গল্প না’। শেষে ‘জুলাই আন্দোলন’সহ তিনটি গান পরিবেশন করেন পারশা। অনুষ্ঠানের একদম শেষ পর‌্যায়ে মঞ্চ মাতান ‘অ্যাশেজ’ ব্যান্ড।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনসহ সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সোমবার এক ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

সেটি রেকর্ডের জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গাছের নিচে একটি সাধারণ টেবিলে দু-তিনটি গামছা দিয়ে মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। চটের ছালায় তুলির আঁচড় দেওয়া হয়, আর ঠিক সেই মুহূর্তে আশ্চর্যজনকভাবে কোকিলের কলরব বার্তাটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

ভাষণের মাঝে হঠাৎ করে কোকিলের গান কিভাবে আসল? সে বিষয়টি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে স্পষ্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ফেসবুকে লেখেন,‘ইউনূস স্যারের বাংলা নববর্ষের ভাষণ রেকর্ড করছিলাম।কাল (আজ) সকালে প্রচারিত হবে। রেকর্ডিংটা করার জন্য বেছে নিয়েছিলাম যমুনারই ছায়াঘেরা এক সবুজ লন। রেকর্ডিং শুরু করব—কোথা থেকে উড়ে এলো একটা কোকিল। কুহু সুরে গান গাইতে শুরু করল আমাদের মাথার ওপরের গাছে বসে। স্যার হাসিমুখে বললেন, ‘যাক, আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের আর দরকার হবে না! সাড়ে তিন মিনিট ধরে চলল স্যারের ভাষণ। আর সেই কোকিল পুরোটা সময় গান গেয়ে সঙ্গ দিল আমাদের।’

এদিকে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।’

জাতীয়

বাংলা নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে যে শোভাযাত্রা বের হয়, তার নাম বদলেছে। আগে এর নাম ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।

নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কাজী আজাহারুল ইসলাম শেখ এ কথা জানান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাপক এই আয়োজনের লক্ষ্যে শোভাযাত্রার নামকরণ করা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’, যার ছায়াতলে দেশের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটবে। প্রতিফলিত হবে বর্তমানের সব শ্রেণির মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং ফুটে উঠবে শোভাযাত্রার প্রকৃত আনন্দ।

তিনি বলেন, এবারের নববর্ষ উদযাপনে বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে এক নতুন এবং অগ্রসর দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। একই ভূখণ্ডে বসবাসরত সব ভাষা ও সংস্কৃতির অশীজনেরা একসঙ্গে ঐকতান করতে যাচ্ছেন। এবারের নববর্ষ বাংলাদেশি প্রতিটি মানুষের। এবারের প্রতিপাদ্য ‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

কাজী আজাহারুল ইসলাম শেখ বলেন, এ বছরের আয়োজনকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। বাক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা এবং মননের মুক্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে অন্ধকার কাল থেকে উত্তীর্ণ হবার বার্তা দিতে হবে।

তিনি বলেন, সংস্কৃতির লক্ষ্যই হচ্ছে মানবিক ও উদার একটি সমাজ বা রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণ করা। এবারের বৈশাখ হবে সবার। আমাদের ভূখণ্ডে বসবাসরত সব জাতিগোষ্ঠী এবারের বৈশাখ বরণের অংশীদারত্ব অর্জন করেছে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড় থেকে সমতল, সবাই একসঙ্গে বর্ষবরণ উদযাপন করব। এবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে একপেশে সংস্কৃতি চর্চার সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে আমরা বাংলাদেশের সংস্কৃতির উদার ও শুদ্ধ চর্চার দিকে অগ্রসর হতে পারব বলে আশা করছি।

জাতীয়

বরাবরের মতো বর্ষবরণ আয়োজন করবে ছায়ানট। এবারের আয়োজনটি হবে ২ ঘণ্টার। এই সময় মুক্তির গান গাইবেন তারা। শুক্রবার বিকালে ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা।

ভোরবেলা ভৈরবীতে রাগালাপ দিয়ে হবে ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বরণের সূচনা। এবারের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আÍবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। সব মিলিয়ে বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান থাকবে পুরো আয়োজনে।

ছায়ানট এবার ৫৮তম বর্ষবরণের এই আয়োজন করছে। ১৯৬৭ সালে নগরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছর ছাড়া প্রতিটি পহেলা বৈশাখেই সে অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে এবারই প্রথমবার নিজেদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সনজীদা খাতুনকে ছাড়া বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে ছায়ানট।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, সহসভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা, যুগ্ম সম্পাদক পার্থ তানভীর নভেদ্ ও জয়ন্ত রায়। এ সময় জানানো হয়, পহেলা বৈশাখ নতুন বছরের প্রথম দিন ভোর সোয়া ৬টায় আয়োজন শুরু হবে। ছায়ানটের এবারের আয়োজনের বার্তা, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়।’

লিখিত বক্তব্যে লাইসা আহমদ লিসা বলেন, বিশ্বব্যাপী যেমন ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, তেমনি এ দেশেও ক্রমান্বয়ে অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের। তবুও আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সকলে একসঙ্গে মিলবার, চলবার। বাঙালি জাগবেই, সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফিরবেই। সার্থক হবেই হবে, মানুষ-দেশ, এ পৃথিবীকে ভালোবেসে চলবার মন্ত্র।

তিনি জানান, এবারের অনুষ্ঠানটি ৯টি সম্মেলক, ১২টি একক গান এবং ৩টি পাঠ দিয়ে সাজানো হয়েছে। সবমিলিয়ে দেড়শতাধিক শিল্পী এ আয়োজনে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

রমনা উদ্যান থেকে এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এছাড়া নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ছায়ানট তাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকেও অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক জানান, বরাবরের মতোই নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এই আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে অক্লান্ত সেবা দিয়ে চলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণপূর্ত অধিদপ্তর।

ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, এই প্রথম ছায়ানট বর্ষবরণ আয়োজন করছে, যখন সনজীদা খাতুন নেই। তার যে চিন্তা, আমরা যেন ছড়িয়ে দিতে পারি। আয়োজনটি সুষ্ঠুভাবে করতে পারা এবং বর্ষবরণের মর্মবাণী সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারাটাই হবে সনজীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানানো।

জাতীয়

গাজীপুরে রাকিব মোল্লা নামে এক কৃষক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখান এলাকায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে।

নিহত রাকিব মোল্লা (৩২) মহানগরের ৩১নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ইব্রাহিম মোল্লার ছেলে। তিনি পতিত স্বৈরাচার সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হকের প্রতিবেশী ও ৩১নং ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এবং সদর মেট্রো থানা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আলমাস মোল্লার ভাতিজা।

রাকিব মোল্লা গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই কমিটির সদস্য সচিব খান মো. জাহিদুল ইসলাম।

নিহতের ভাতিজা রোপণ জানান, তার চাচা রাকিব মোল্লাকে পূর্ব শত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে মাথায়, ঘারে, কাঁধে ও পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। তাকে অন্তত ২০টি আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করেছে দুর্বৃত্তরা।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান জানান, মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তার মৃত্যু হতে পারে।

জাতীয়

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি দিয়েছে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। দলমত নির্বিশেষে শেষে কর্মসূচিতে বিপুল লোকসমাগমের আভাস মিলছে।

পুলিশ বলছে, শনিবার (১২ এপ্রিল) একটি বড় সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এই সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। সজাগ রয়েছেন গোয়েন্দারাও।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাংলানিউজকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি পৃথক ট্রাফিক পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে ঘিরে গোয়েন্দারা সজাগ রয়েছেন। পাশাপাশি কর্মসূচির নিরাপত্তার জন্য অলরেডি আমাদের সাইবার টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়া ডিবির ৪২টি টিম কাজ করছে। সুন্দরভাবে যেন এই কর্মসূচি সফল হতে পারে সেজন্য যতরকম গোয়েন্দা নজরদারি আছে সব জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। ওই গণজমায়েতে উপস্থিত থাকবেন ইসলামিক স্কলার শায়েখ আহমাদুল্লাহ। তিনি সবার উদ্দেশ্যে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব নির্দেশনা দেন তিনি।

মার্চ ফর গাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি নির্দেশিকা জানিয়ে ওই পোস্টে আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ‘সকল শ্রেণিপেশা-দল-মতের মানুষের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের ইতিহাসে আক্ষরিক অর্থেই অভূতপূর্ব এক গণজমায়েতের দ্বারপ্রান্তে আমরা। এই উদ্যোগকে সাফল্যমণ্ডিত করতে কিছু নির্দেশনা আমরা সবাই অনুসরণের চেষ্টা করব বলে অঙ্গীকার করতে চাই। ’

নির্দেশনার বিষয়ে আহমাদুল্লাহ বলেন-

১.সহযোগিতাপূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব রাখব। অনুষ্ঠানটা আমার, একে সফল করার দায়িত্বও আমিই পালন করব—এই সংকল্প নিয়েই ঘর থেকে বের হব।

২. আসার পথ কিংবা মার্চ শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশস্থল আমরা নিজ দায়িত্বে পরিচ্ছন্ন রাখব। পানি, ছাতা, মাস্কসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে রাখব। মেডিক্যাল ইমার্জেন্সিতে উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে মেডিক্যাল টিম এবং অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতা নেব।

৩. যেকোনো পরিস্থিতিতে উত্তেজনা পরিহার করব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট হব, অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

৪. শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এমন কোনো প্রদর্শনী করব না যা দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের কারণ হতে পারে। কোনো দল বা গোষ্ঠীর প্রতীক এড়িয়ে সৃজনশীল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড এবং কেবলমাত্র বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহন করার মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করব।

৫. জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধনকে যারা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদেরকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করব। দুষ্কৃতিকারীদেরকে প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেব। আর মনে রাখব, জুলুমের প্রতিবাদ আরেক জুলুম দিয়ে করা যায় না।

শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের ডাকা এ কর্মসূচি।

জাতীয়

চাষ করতে হয় না, নেই উৎপাদন খরচও। তারপরও কয়েক বছর ধরে নাগালের বাইরে ইলিশের দাম। আর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ‘পহেলা বৈশাখ’ এলেই ব্যবসায়ের উপলক্ষ্য হয় এই মাছ। বিক্রেতারা বাড়তি মুনাফা করতে নেমে পড়ে প্রতিযোগিতায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নববর্ষের দুই দিন আগেই খুচরা বাজারে ইচ্ছামতো দাম হাঁকানো হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন- বড় আকারের প্রতি কেজি ইলিশ সর্বোচ্চ ৩৫০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এতে পান্তার সঙ্গে ইলিশ খেতে উচ্চবিত্তরা শখ করে কিনলেও মধ্য ও নিম্নআয়ের মানুষের পাতে তোলা যেন বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ও শান্তিনগর কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২৪০০ টাকায়। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৬০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৩০০-১৫০০ টাকা। এছাড়া দেড় কেজি ওজন ও তারও বেশি ওজনের ইলিশ ২৭০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ১ কেজি ৩০০ গ্রামের ইলিশ ২৫০০-২৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে ‘রুপালি ইলিশের’ দাম আকাশচুম্বী। খুচরা ব্যবসায়ীরা আধাকেজি ওজনের ইলিশের দাম হাঁকাচ্ছেন কেজিপ্রতি ২০০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর এক কেজি বা তারও বড় আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকার ওপরে।

রাজধানীর কাওরান বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. শুক্কুর আলী বলেন, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ এলেই ইলিশের চাহিদা বাড়ে। বাজারে বেশির ভাগ বড় আকারের ইলিশ হিমাগারে মজুত ছিল। সেগুলো এখন বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ছোট আকারের যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা সাগরের ধরা মাছ।

কাওরান বাজারে ইলিশ কিনতে আসা আরমান বলেন, নববর্ষে পান্তা-ইলিশ খাওয়া এক ধরনের নিয়মে পরিণত হয়েছে। তাই পরিবারের জন্য দেড় কেজি ওজনের দুটি ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরছি। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি।

একই বাজারে মাছ কিনতে এসেছেন মো. জসিম। তিনি বলেন, বিক্রেতাদের কারসাজিতে কয়েক বছর ধরে ইলিশের দাম বাড়ছে। মূল্য বাড়িয়ে বিক্রেতারা ইচ্ছা করে ইলিশ উচ্চবিত্তের খাবারে পরিণত করেছে। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই ইলিশ কিনতে পারছি না। আর পহেলা বৈশাখ ঘিরে একটি মাছ কিনতে এসে দেখি দাম আকাশচুম্বী। এজন্য ইলিশ না নিয়েই বাড়ি ফিরছি।

এদিকে পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার চর্চা ‘বাঙালি সংস্কৃতির অংশ নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে ইলিশ খায় কেমন করে, পহেলা বৈশাখে তো ইলিশ পাওয়ার কথা নয়। আসলে পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। তবুও ঢাকায় এটা চালু করা হয়েছে।

অন্যদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে একাধিক সবজি কেজিপ্রতি ফের ৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। কিছু সবজির কেজি ১০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, করলার কেজি ৮০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি টমেটো ৪০-৫০ টাকা, কচুরলতি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৯০ টাকা, পেঁপে ও শিম ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, শসা ৬০ এবং শজিনে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাড়তি বিভিন্ন মাছের দামও। শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি চিংড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৮০০-১০০০ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৭০০-৮৫০ টাকা ছিল। চাষের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭৫০ টাকা। প্রতি কেজি টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি শিং বিক্রি হচ্ছে ৮৫০-৯০০ টাকা, শোল ৮০০-৮৫০ টাকা, পুঁটি ৬০০-৮০০ টাকা। বড় আকারের রুই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, পাঙাশ ও তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা।

জাতীয়

বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের সভাপতিত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে। এর লক্ষ্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে আঞ্চলিক সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বৃদ্ধি করা। কারণ, এই ব্লকটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে বৃহত্তর সংহতকরণের চেষ্টা করছে।

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চলমান ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের শেষে এই হস্তান্তরটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে সাত সদস্যের আঞ্চলিক ব্লক: বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডের নেতারা ‘সমৃদ্ধ, স্থিতিস্থাপক এবং উন্মুক্ত বিমসটেক’ থিমের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে একত্রিত হয়েছেন।

যারা এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছে, বাংলাদেশ সেই থাইল্যান্ডের কাছ থেকে সভাপতিত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

এই স্থানান্তর অনুষ্ঠানটি একটি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে। সেখানে থাই প্রধানমন্ত্রী তার সমাপনী বক্তব্য রাখবেন এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তার মেয়াদকালে ব্লকের জন্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।

বিমসটেকের সনদ অনুসারে, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চেয়ারম্যানের পদ বর্ণানুক্রমিকভাবে আবর্তিত হয়।

আজ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয় অংশগ্রহণকারী নেতাদের একটি প্রতীকী গ্রুপ ছবির মাধ্যমে। এরপর থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, বিদায়ী বিমসটেক সভাপতি স্বাগত ভাষণ দেন।

মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্যান্য বিমসটেক নেতারা আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে তাদের দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বিবৃতি প্রদান করেন।

সকালে, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস থাই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রাতঃরাশের বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে বিমসটেক কাঠামোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিমসটেক আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ করে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, জ্বালানি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ঢাকার বিআইএমএসআরইসি সচিবালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ নেতৃত্বের দায়িত্বে থাকায়, দেশটি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সুবিধা, অবকাঠামোগত সংযোগ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির ওপর মনোনিবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন বিমসটেক চেয়ার এখন সংগঠনের এজেন্ডা পরিচালনার জন্য কাজ শুরু করবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, আঞ্চলিক ব্লকটি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে কৌশলগত ভূমিকা পালন করে চলেছে।