জাতীয়

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনে ৫৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ছয়জন, বগুড়া-৪ আসনে ৯ জন, বগুড়া-৬ আসনে ১৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের ৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ৬ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ১৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঞা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার এসব আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। রাতে নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতার এসব তথ্য জানিয়েছে।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন। বাকি দুই আসনে সরকারি দলের কোনো প্রার্থী নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঞা প্রার্থী হলেও সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেই। তবে জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল হামিদ এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এসব আসনে ভোটগ্রহণ হবে। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও): ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল) আসনের উপ-নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির অধ্যাপক ইয়াসিন আলী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর সিরাজুল ইসলাম এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরে পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জাকের পার্টির এমদাদ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) সাফি আল আসাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনে ১৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আশুগঞ্জে ৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ (স্বতন্ত্র), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন (স্বতন্ত্র), বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব শাহজাহান আলম সাজু (স্বতন্ত্র) ও জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল।

সরাইলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত সরাইলে মোট ৮ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- জাতীয় সংসদ থেকে সদ্য পদত্যাগকারী পাঁচবারের সাবেক সংসদ-সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া (স্বতন্ত্র), জাতীয় পার্টি থেকে দুবারের সাবেক সংসদ-সদস্য জিয়াউল হক মৃধা (স্বতন্ত্র), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী (স্বতন্ত্র), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী, যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু (স্বতন্ত্র) ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী মো. রাজ্জাক হোসেন, সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম (স্বতন্ত্র) ও সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মো. মোহন মিয়া (স্বতন্ত্র)। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আশুগঞ্জ দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) শাহ মফিজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) আসনে ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে বুধবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিয়াউর রহমান মনোনয়ন জমা দেন। গোমস্তাপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আওয়ামী লীগ নেতা রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার ও গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বাচ্চু, জাতীয় পার্টির আ. রাজ্জাক, বিএনএফের নবীউল ইসলাম ও জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

জাতীয়

ইন্টারন্যাশনাল পারস্পেকটিভ অন ওয়াটার রিসোর্সেস অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের (আইপিডব্লিউই) একাদশতম সম্মেলনের ৪-৬ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার সন্ধ‌্যায় বুয়েটের কাউন্সিল ভবনে আইপিডব্লিউই-২০২৩ এর এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এ তথ‌্য জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

এতে জানা‌নো হয়, বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নবনির্মিত পদ্মা সেতু।

আগামী ৪ থেকে ৬ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ ও পরিবেশ সম্মেলনে (আইপিডব্লিউই-২০২৩) পদ্মা সেতুকে এ স্বীকৃতি দেবে বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকৌশল সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই)।

ঢাকার সঙ্গে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের রেস্টনে আইপিডব্লিউই-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে বিশ্বের ১৩‌টি দেশের পানি বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের সম্মিলন ঘটবে।

এএসসিইর সভাপতি মারিয়া লেহমান সম্মেলনে উপস্থিত থেকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এনিয়ে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনের আয়োজক ও আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ ড. সুফিয়ান খন্দকার জানান, ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দি‌তে বাংলা‌দে‌শে এ‌সে‌ছেন, এএসসিইর সভাপতি মারিয়া লেহমান। এছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য এ স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে এএসসিইর পরিচালনা পর্ষদ।

তিনি জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে বহু বাধা এসেছে। তবে এটা কোনো রাজনৈতিক বাধা নয়। এটা ছিল পদ্মা নদীর পানির স্রোতের বাধা। এজন্য নদী শাসন করতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে হিমশিম খেতে হয়েছে। বিশ্বের আর কোনো সেতু এমন বাধার সম্মুখীন হয়নি।

ড. সুফিয়ান খন্দকার জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে এ পর্যন্ত যত প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা বিশ্বের কোনো সেতুতে হয়নি।এসব কারণে বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে পদ্মা সেতুকে স্বীকৃতি দেবে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই)।

ড. সুফিয়ান খন্দকার বলেন, পদ্মা সেতুর এই স্বীকৃতি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুন করে পরিচিত করে তুলবে। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সমৃদ্ধ হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ নানাভাবে উপকৃত হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকৌশল সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের (এএসসিই) এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ইডব্লিউআরআই) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বাংলাদেশ সরকারের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন কর‌ছে।

২০০৬ সাল থেকে আইপিডব্লিউই কনফারেন্স সিরিজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই বছর প্রথম সম্মেলনটি হয়েছে ভারতের দিল্লিতে। এরপর ২০০৯ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, ২০১০ সালে ভারতের চেন্নাই, ২০১১ সালে সিঙ্গাপুর, ২০১২ সালে মরক্কোর মারাকাশ, ২০১৩ সালে তুরস্কের ইজমির, ২০১৪ সালে ইকুয়েডরের কুইটো, ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কার কলম্বো, ২০১৭ সালে চীনের উহান এবং ২০১৮ সালে কলম্বিয়ার কার্টাজেনায় অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন।

প্রতিটি দেশই সম্মেলন থেকে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছে। ঢাকায় প্রথমবারের মত আইপিডব্লিউই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই) বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা স্থাপনাগুলোর স্বীকৃতি দেয়। স্থাপত্যশেলী বিভাগে বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্য নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি।

এবা‌রের থিম থিম হল ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সময়ে ঝুঁকি এবং স্থিতিস্থাপকতা’। ১৩ টি দেশের অংশগ্রহণকারীরা ২৪টি প্রযুক্তিগত অধিবেশনে সম্মেলনে মোট ১৪৫টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন।

এ বছর ঢাকার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার রেস্টনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি হাইব্রিড সম্মেলন।

জাতীয়

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তিনি বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

কবির বিন আনোয়ার সরকারি চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ শেষে আজ (মঙ্গলবার) থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে যাচ্ছেন। ফলে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই পদে নতুন নিয়োগ হলো।

বেসামরিক প্রশাসনের এই শীর্ষ পদে নিয়োগ পেয়ে মো. মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেছেন, তিনি চাকরিজীবনে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন, যে জ্ঞান অর্জন করেছেন সেগুলো প্রয়োগ করে তার কাছে সরকারের যে প্রত্যাশা তা পূরণ করার চেষ্টা করবেন।

তিনি বলেন, আমি সুদীর্ঘ চাকরি জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি। আজ সকালেই আমি আদেশ পেয়েছি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে। সরকার আমাকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। আমি এজন্য সরকারের প্রতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এ সময় সাংবাদিকরা নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে জানতে চান- সামনে নির্বাচন, কী চ্যালেঞ্জ মনে করছেন?

জবাবে সচিব বলেন, আমি কাল (বুধবার) থেকে হয়ত এগুলো নিয়ে চিন্তা করব। এখন পর্যন্ত আমি এই মন্ত্রণালয়ের (জ্বালানি) সচিব। কাল যখন বসব তখন চ্যালেঞ্জ কী কী তা বলতে পারব।

উল্লেখ্য, মাহবুব হোসেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।

বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার গত ১০ ডিসেম্বর এই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তিনি সদ্য সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। খন্দকার আনোয়ারুল গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন।

জাতীয়

বিমানকে এশিয়ার টপ টেন এয়ারলাইন্সের তালিকায় নিয়ে যেতে চান প্রতিষ্ঠানটির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিম। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর স্মার্ট বাংলাদেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে স্মার্ট এয়ারলাইন করতে চান তিনি।

মঙ্গলবার বিমানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মো. ছিদ্দিকুর রহমান, চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাকশন) এ আর এম কায়সার জামান, মহাব্যবস্থাপক (পাবলিক রিলেশনস) তাহেরা খন্দকার প্রমুখ।

বিমানের এমডি শফিউল আজিম বলেন, ‘এ মুহূর্তে ২০টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে যাচ্ছে বিমান। আমাদের কর্ম পরিকল্পনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ভিশনের সঙ্গে। আমাদের স্লোগান হবে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট এয়ারলাইন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আমরা অঙ্গীকার করছি, স্মার্ট বাংলাদেশে যেন বিমান স্মার্ট এয়ারলাইন হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আরেকটি ভিশন হচ্ছে এশিয়ার টপ ১০ এয়ারলাইনের তালিকায় যাব। পরবর্তীতে টপ ৩ এ যাবো। আমরা প্রতি মুহূর্তে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দিক নির্দেশনা নিচ্ছি এবং সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।’

বিমানের আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে শফিউল আজিম বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি ওয়েব পেজ টিকেটিং সিস্টেমে যাবো এবং মার্কেটিং আরও উন্নত করা হবে। জাতির পিতার হাত ধরে বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল। বিমানের ৫১ বছরপূর্তি হলো। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা বিমানের নবযাত্রা শুরু করেছি। ১৮টি নিজস্ব নতুন উড়োজাহাজ দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমাদের ড্রিমলাইনার, ৭৭৭, ৭৩৭ উড়োজাহাজ আছে। উড়োজাহাজগুলার বয়সও কম। বাংলাদেশের পাইলটদের সুনাম সারা বিশ্বে।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিমানের সব বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) দিক নির্দেশনার প্রতিফলনের জন্য দরকার বিমানের আধুনিকায়ন। একইসঙ্গে বিমান যারা পরিচালনা করবেন, তাদের মধ্যে সুসাশন নিশ্চিত করা। বিমানে আমরা যারাই কাজ করি, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা, কোনো ধরনের ব্যত্যয় হলে বিচার করা।’

সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরানোর বিষয়ে বিমানের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘এটা পারস্পরিক দায়িত্ববোধের বিষয়। বিমানের ক্ষতিকে নিজের ও রাষ্ট্রের ক্ষতি ভাবতে হবে। লাভ মানে আমার লাভ। এটাতে বিমান কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকবে না। বিমান শতভাগ অঙ্গীকার পূরন করবে। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হবে।’

যাত্রীসেবা প্রসঙ্গে বিমানের এমডি বলেন, ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি করলে তা সংশোধনের চেষ্টা করছি। গত বছর আমাদের যাত্রী পরিবহণের টার্গেট ছিল ৭১ শতাংশ, সেখানে আমরা ৩ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৭৪ শতাংশ যাত্রী পরিবহণ করেছি। চাইলেই ১০০ সিটে ১০০ জনকে নেওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কিছু সায়েন্টিফিক বিষয় রয়েছে।’

পাইলট নিয়োগ প্রসঙ্গে শফিউল আজিম বলেন, ‘গত সপ্তাহে পাইলট নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করেছি। কেউ অসুস্থ বা অন্য কারণে ফ্লাই করতে না পারলেও সমস্যা হবে না। আমাদের এখন পর্যাপ্ত পাইলট থাকবে। চলতি বছরে নতুনভাবে বিমানকে দেখা যাবে।’

নতুন রুট চালুর বিষয়ে বিমানের এমডি বলেন, ‘জাপানের নারিতায় ফ্লাইট শিগগিরই শুরু হবে। প্রায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জিএসও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, হজ মৌসুমের পরপরই নারিতায় ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। নিয়ইউয়র্ক ফ্লাইট চালানোর কাজ শুরু করেছি, টরেন্টোতে ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোর কাজ চলছে।’

অভ্যন্তরীণ রুটে ডায়নামিক রিশিডিউল করা হচ্ছে বলে জানান বিমানের এমডি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাপাবিলিটি বাড়ানোর জন্য বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কেবিন ক্রু, পাইলট থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড সার্ভিস আমরা বাড়াচ্ছি। উড়োজাহাজের আন্ডার ইউটিলাইজ থাকার সুযোগ নেই।’

জাতীয়

বেনাপোলের পুটখালি সীমান্তে পৃথক অভিযানে মোটরসাইকেলের মধ্যে থেকে ১ কেজি ৯৮৩ গ্রাম ওজনের ১৭ পিস স্বর্ণের বারসহ দুইজনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। এসময় আরও দুইজন কৌশলে পালিয়ে যায়।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালি সীমান্ত এলাকা থেকে এ স্বর্ণের চালান আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালি গ্রামের মৃত আজিজুরের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩৪) ও একই এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে মেহেদী হাসান (২১)।

পলাতক আসামিরা হলেন- পুটখালি গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল মান্নান (৩২) ও একই এলাকার জহির উদ্দীনের ছেলে নাঈম উদ্দীন (২৮)।

খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন পুটখালি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের একটি চালান ভারতে পাচারের উদ্দেশে নিয়ে যাবে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুটখালি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন দুই মোটরসাইকেল আরোহীর থামতে বলা হয়। এসময় তারা মোটরসাইকেলের না থামিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় তাদের ধাওয়া করলে তারা কাছে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। সেই ব্যাগের ভেতর থেকে ১৫ পিস স্বর্ণ জব্দ করা হয়। পরে একই জায়গায় কিছু সময় পর একই দলের আরও দুই মোটরসাইকেল আরোহীর গতিরোধ করা হয়। এসময় তাদের মোটরসাইকেল থেকে দুটি স্বর্ণের বারসহ তাদের আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, জব্দকৃত ১৭ পিস স্বর্ণের বার ও মোটরসাইকেলের আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। আটক আসামিদের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান আইনে মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া পলাতক দুইজনের নামেও মামলা দেওয়া হবে এবং তাদের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

জাতীয়

সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

তিনি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।

আগামীকাল (২৫ ডিসেম্বর) শুভ ‘বড়দিন’। এ উপলক্ষ্যে দেশের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা সারাবিশ্বে মহামতি যীশুখ্রিস্টের শুভ জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।

তিনি বলেন, খ্রিস্ট ধর্মানুসারে যীশুখ্রিস্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানব জাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারি। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি বহু ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও শান্তির বাণী প্রচার করেন। পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আসার আহ্বান জানান। মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দেন।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ- এ কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমি একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।’

রাষ্ট্রপতি কামনা করেন, ‘শুভ বড়দিন’ খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীসহ সবার জন্য বয়ে আনুক অশেষ আনন্দ ও কল্যাণ, সবার জীবন ভরে উঠুক সুখ ও সমৃদ্ধিতে।

জাতীয়

মাদারীপুর পৌরসভা অফিস সংলগ্ন বটতলা এলাকার সড়কের পাশে ময়লার স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি নবজাতক। সাত লাখ টাকার সঙ্গে বাবা-মা ও নতুন ঠিকানা পেল সেই নবজাতক!

বৃহস্পতিবার বিকালে সাত লাখ টাকা শিশুর নামে ব্যাংক জামানতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর সরকারি চাকরিজীবী নিঃসন্তান দম্পতিকে আদালতের মাধ্যমে দত্তক দেয়া হয়।

জানা যায়, ময়লার স্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতককে দত্তক নিতে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন আগ্রহী ১৯ জন দম্পতি। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদের এজলাসে শুনানিতে অংশ নেন আবেদনকারীরা। তিন ঘণ্টা ধরে চলে শুনানি।

প্রথম পর্যায়ে ১৫ জন বাদ পড়লে বাকি ৪ জনের যোগ্যতা অনুসারে আবারো চলে শুনানি। পরে ৭ লাখ টাকা ব্যাংক জামানতে রাজবাড়ী জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মরত মরিয়ম আক্তার ও আজিবর হাওলাদার নিঃসন্তান দম্পতিকে নবজাতক দত্তক দেন মাদারীপুরের আদালত। ওই দম্পতির ১৩ বছরের সংসার জীবনে নেই কোনো সন্তান।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, মেয়েটির সব দায়িত্ব ওই দম্পতিকে দিয়েছেন আদালত। পরিচয়হীন শিশুটি নতুন ঠিকানা পাওয়ায় সবাই খুশি। সাতদিনের মাথায় নবজাতকের নামকরণ করা হবে। আর এখন থেকে বাবা ও মায়ের পুরো দায়িত্ব পালন করবেন দত্তক নেওয়া ওই দম্পতি।

দত্তক নেয়া মরিয়ম আক্তার বলেন, আমাদের কোনো সন্তান নেই। আদালতের সিদ্ধান্ত মতে আমরা মেয়েটিকে মানুষ করে তুলবো। আমাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনের যা সম্পত্তি আছে, সবকিছুই এই মেয়ের নামে লিখে দিব।

মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী রুবিনা আক্তার বলেন, ১৯ জনের মধ্যে আদালত মরিয়ম ও আজিবর দম্পতিকে বেছে নিয়েছেন। তাদের যোগ্যতা অনুসারে আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন। আশা করছি, মেয়েটি নতুন মা-বাবার পরিচয়ে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার মাদারীপুর শহরের পৌরসভা অফিস সংলগ্ন বটতলা এলাকার সড়কের পাশ থেকে কম্বলে পেঁচানো এক ফুটফুটে নবজাতক উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। মেয়েটি এখনো জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। শুক্রবার সন্ধ্যায় সপরিবারে গণভবনে যান তিনি। সাক্ষাতের পর কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাকে ডেকেছিলেন। তিনি সন্ধ্যা ৬টার দিকে গিয়েছিলেন, দেড় ঘণ্টা মতো আলাপ-আলোচনা হয়েছে।

কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, অনেক কথা হয়েছে, গল্প হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাও নানা বিষয়ে গল্প করেছেন। শেখ হাসিনাকে তিনি শ্রদ্ধা করেন বলেও জানান।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঘা সিদ্দিকী নামে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাকে বঙ্গবীর নামেও ডাকা হয়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বাহিনী কাদেরিয়া বাহিনী তার নেতৃত্বে গঠিত ও পরিচালিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও ১৯৯৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেন এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

জাতীয়

বাংলাদেশে ডেঙ্গির প্রকোপ এবার ‘এন্ডেমিকের’ (মহামারী সাধারণ রোগে রূপান্তর) পর্যায়ে চলে গেছে। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে মশাবাহিত এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এবার বর্ষা চলে যাওয়ার পরও এই প্রকোপ কমেনি। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্চ তাপমাত্রা পরিস্থিতি, বৃষ্টি এবং নানা কারণে সৃষ্ট জলজট আর অপরিকল্পিত নগরায়ণ এর জন্য দায়ী। অন্যদিকে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার এই প্রকোপ কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দেখা দিয়েছে। এটা এমন পর্যায়ে চলে গেছে, গত ছয় দশক (১৯৫১-১৯৬০) আগের তুলনায় বিগত এক দশকে (২০১২-২০২১) বিশ্বে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর বর্ধিত পরিস্থিতির দায় কেবল জলবায়ু পরিবর্তন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের গবেষণায় ডেঙ্গি আর ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে উল্লিখিত বৈশ্বিক চিত্র বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া একই গবেষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানবজীবনের বিভিন্ন দিকে আর কী প্রভাব পড়ছে, তাও তুলে আনা হয়েছে।

জানা যায়, বিশ্বের ৯৯ জন গবেষক ওই গবেষণাকর্মটি চালিয়েছেন। ‘দ্য ল্যানসেট কাউন্টডাউন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ’ (জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যের ওপর ল্যানসেট কাউন্টডাউন) শীর্ষক এই গবেষণার ফল আজ বৈশ্বিকভাবে প্রকাশ করবে ল্যানসেট। এ উপলক্ষ্যে লন্ডন সময় সকাল ৯টা আর বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবার বাংলাদেশেও একই সঙ্গে গবেষণা ফল প্রকাশ করা হবে। এ উপলক্ষ্যে বিকালে ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে গবেষণাসংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের অংশ তুলে ধরবেন ওই গবেষণা দলের একমাত্র বাংলাদেশি গবেষক ড. সৌর দাশগুপ্ত। এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাজউদ্দিন সিকদার প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।

ল্যানসেট গবেষক ড. সৌর দাশগুপ্ত মূলত ইউরো-মেডিটেরানিয়ান সেন্টার অন ক্লাইমেট চেঞ্জের একজন পরিবেশ অর্থনীতিবিদ। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানবজীবনে কী কী ক্ষতি হচ্ছে বা হতে পারে, এমন ৪৩টি নির্দেশকের (ইনডিকেটর) ওপর গবেষণাকর্মটি পরিচালিত হয়। ৯৯ জন গবেষক বিভিন্ন ইনডিকেটর ভাগ করে নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা এবং সমুদ্রস্তর বৃদ্ধিসংক্রান্ত দুটি বিষয়ে এই গবেষণায় অবদান রেখেছেন। তিনি জানান, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধির পেছনে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের দায় পেয়েছেন। বাংলাদেশে এবারে ডেঙ্গির প্রকোপ এন্ডেমিক পর্যায়ে চলে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বৃষ্টি থেকে জলাবদ্ধতা আর অপরিকল্পিত নগরায়ণ ঢাকায় এই ডেঙ্গি প্রকোপের জন্য দায়ী।

এদিকে গবেষণা প্রতিবেদনটি আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হলেও ২৬ অক্টোবর এটি ল্যানসেটের বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদন থেকে মোটা দাগে ১৫টি দিক গুরুত্ব দেওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষ দেখছে যে বর্ধিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, তীব্র দাবদাহ, খরা, দাবানল, সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবের উচ্চতর ঝুঁকি এবং জীবন হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়া চরম আবহাওয়ার ঘটনাও (বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি) ক্রমবর্ধমান। এ কারণে ২০২০ সালে ১০৩টি দেশের ৯ কোটি ৮০ লাখ মানুষ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পরিস্থিতি আরও নাজুক করেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি এমনই জীবননাশের পর্যায়ে চলে গেছে, ১৯৮৬-২০০৫ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ৩৭০ কোটির বেশি মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন। দিনদিন তাপের তীব্র ঝুঁকি, হিট স্ট্রোক এবং অন্যান্য প্রতিকূল শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রকাশ বাড়ছে। তাপমাত্রা ও তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ৪৭০ বিলিয়ন কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির মূল কারণ কার্বন। এটা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকেই প্রধানত সৃষ্টি হয়। এছাড়া আরও কিছু কারণ আছে। কিন্তু এমন বাস্তবতা সত্ত্বেও উচ্চ এবং নিম্ন-আয়ের উভয় দেশের সরকারগুলো বছরে শত বিলিয়ন ডলার জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিয়ে চলেছে। এটা ওইসব দেশের মোট স্বাস্থ্য বাজেটের সঙ্গে তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি। ২০২০ সালে স্বল্প আয়ের দেশের নাগরিকদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ গ্যাস-বিদ্যুতের মতো ক্লিন এনার্জির মাধ্যমে রান্নার সুযোগ পেয়েছে। বিপরীতদিকে উচ্চ মানব উন্নয়ন সূচকের দেশগুলোয় এই সুযোগ পেয়েছে ৯৮ শতাংশ নাগরিক।

এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিপূরণ হিসাবে সংশ্লিষ্ট খাতে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর ২০২০ সালের মধ্যে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার করে ছাড় করার কথা, যা দিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রয়োজন মোকাবিলা করবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। এই অবস্থা একটি ন্যায্য রূপান্তরকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হয়েছে সেটা থেকে বেরিয়ে যদি স্বাস্থ্যকর বায়ু নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বিশ্বে প্রতিবছর ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু প্রতিরোধ করা যাবে। উল্লেখ্য, বায়ুদূষণে বাংলাদেশে প্রতিবছর এক লাখ লোক মারা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ২০২১ সালে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, এর ৮০ শতাংশ কার্বন উৎপাদনের জন্য দায়ী। তবে আশার দিক হচ্ছে, বিশ্বনেতাদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত ঝুঁকি ও বিপদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ২০২১ সালে বিশ্বের ৬০ শতাংশ দেশ জাতিসংঘের সাধারণ বিতর্কে এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণমূলক আলোচনায় অংশ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারগুলোর সচেতনতা আর পদক্ষেপের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন বিপদে (ঝড়-বন্যা প্রভৃতি) ১৯৮০ সালের তুলনায় কমেছে। সংখ্যার হিসাবে এটা ১৯৮০-১৯৮৯ সালে যেখানে ৮৩৭ জন ছিল, তা ২০১২-২০২১ সালে ৪৬ জনে নেমে এসেছে।

জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাব ফেলছে এবং কোভিড-১৯ মহামারিসহ অন্যান্য একই ধরনের (কো-এক্সিস্টিং) সংকটের প্রভাব এবং এনার্জি (তেল-গ্যাস), খাদ্য এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে।

জাতীয়

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোনো চাপ নেই, যথাসময়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবে কমিশন, ইভিএমের বরাদ্দ না পেলে ব্যালটে নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের মন্তব্যে নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো চাপ নেই, এটা সরকারের বিষয়, তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে কথা বলবে।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে কমিশন আয়োজিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কমিশন সাংবিধানিক নিয়মে নির্বাচন আয়োজন করব, নির্বাচনে আসতে কোনো দলকে বাধ্য করা হচ্ছে না, বরং আহবান জানানো হয়েছে। আমরা সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুন্দর নির্বাচন চাই। বিরোধী দল হিসেবে (বিএনপি) একটি বড় দল, যদি তারা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে, তবে নির্বাচন আরও অংশ গ্রহণমূলক হবে। আমরা আশাবাদী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান ইভিএম দিয়ে ৫০-৬০টি আসনে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব। সব আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে প্রপোজাল দিতে আমাদেরও একটু সময় লেগেছে, বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশন এটাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। তারপরও সব আসনে ইভিএমের জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করা সময়সাপেক্ষর বিষয়। তবে বাজেট পেলে চিন্তাভাবনা করা হবে, একেবারে সম্ভব না হলে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবির, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলামসহ জেলার বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয় ভোটাররা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজ পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে অবস্থান করবেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে পটুয়াখালী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ ও কুয়াকাটা আঞ্চলিক নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন শেষে সস্ত্রীক কুয়াকাটা রাতযাপন শেষে শুক্রবার ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা করবেন বলে জানা গেছে। এ সফরে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তার সফরসঙ্গী হয়েছেন।