প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটিতে আসা ৩২২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট ব্যক্তি, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ এসব নাম প্রস্তাব করেছে।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো- সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভিসি) আব্দুল মান্নান চৌধুরী, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুফিয়া রহমান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
ঢাবির সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাবেক সচিব কামরুন নাহার ও মো. নুরুল ইসলাম।
অ্যাডকমের গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া।
চিত্রনায়ক ও নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সচিব মিকাইল শিপার।
সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও মোহাম্মদ আব্দুল করিম, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছিন হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন ও ড. আতিউর রহমান, আইনজীবী শাহদীন মালিক, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা, সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে নাম জমা দেওয়ার সময় ছিল সোমবার বিকেল ৫টা।
গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটি বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বসে মতামত নিয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আট বিশিষ্ট সাংবাদিকের মতামত নেওয়ার কথা রয়েছে।
সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়ার কাজে যুক্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে স্থান পেতে নির্ধারিত সময়ে ৩২৯ জনের নাম পেয়েছে তারা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করেছে সরকার।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হলো।
সোমবারই কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইন অনুযায়ী, নতুন ইসি গঠনের জন্য সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মনোনীত করার পর রাষ্ট্রপতি তা চূড়ান্ত করেন। তবে এবার নতুন আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২’ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আইন অনুযায়ী, আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে তারা ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই ৫ জনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।