জাতীয়

সদ্য বিদায়ী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডা ও দুবাই ঢুকতে না পেরে দেশে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তিনি দুবাই থেকে দেশে ফিরছেন।

সব কিছু ঠিক থাকলে দুবাই থেকে আগামীকাল রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবেন। একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রে জানা যায়, ডা. মুরাদ হাসান কানাডার বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি ঢুকতে দেয়নি। শুক্রবার দুপুর দেড়টায় মুরাদ টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাকে জানানো হয়, তার সেদেশে প্রবেশে অনেক কানাডিয়ান নাগরিক আপত্তি তুলেছেন। তারপর তাকে ফেরত পাঠানো হয়। পরে তাকে দুবাইগামী একটি প্লেনে তুলে দেওয়া হয়।

ডা. মুরাদ হাসান দুবাই ফিরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে ভিসা না থাকায় তিনি আরব আমিরাতে ঢুকতে পারেননি। পরে তিনি ঢাকায় আসার উদ্দেশে প্লেনের একটি  টিকিট কেটেছেন।

ডা. মুরাদ হাসান ৭ ডিসেম্বর প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৯ ডিসেম্বর রাতে কানাডার উদ্দেশে তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্টে ঢাকা ত্যাগ করেন৷

জানা যায়, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও কয়েকটি অডিও ক্লিপ ফাঁসের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ডা. মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপস তৈরি করতে আইসিটি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। যার ফলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে।

তিনি শুক্রবার সকালে মাদারীপুর মুক্তি দিবস উপলক্ষে সদর উপজেলার সমাদ্দার এলাকায় শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদে নিজ নিজ ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম-ঠিকানা খোদাই করে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। একইভাবে প্রত্যেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ওই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জেলার সব মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা লেখা থাকবে। এটা নিয়ে যেন কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন নাম-পরিচয় দেওয়া হবে, তেমনটি একাত্তর সালের রাজাকার, আলবদর, আল শামসদেরও নামের তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে। যেন আগামী প্রজন্ম তাদের কুকৃর্তির কথা জানতে পারে। এতে তারাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, তারা কোন পথে চলবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান প্রমুখ।

জাতীয়

মৃত্যুপথযাত্রী বাবার সামনেই পায়ের জুতা খুলে দিয়ে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে নিজের গালে আঘাত করার নির্দেশ দিয়ে ফেঁসে গেলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ। এ ঘটনায় পদ হারাতে হচ্ছে তাকে।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ।

তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তি মুর্মূষু বাবার বেডের পাশে বসে পায়ের জুতা খুলে দিয়ে হোসাইন নামের এক কর্মীকে নিজের গালে আঘাত করার দৃশ্য ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। এ কারণে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে পা ধরে মাফ চাচ্ছেন হোসাইন নামের ওই কর্মী। কথোপকথনের একপর্যায়ে পা থেকে জুতা খুলে দেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি। হোসাইনকে নিজের গালে সেই জুতা দিয়ে আঘাত করার নিদের্শ দেন তিনি। নির্দেশ পালনে কয়েকবার নিজের গালে আঘাত করেন হোসাইন।

মৃত্যুপথযাত্রী বাবার চোখের সামনেই ঘটনাটি ঘটে গেল। সেখানে মা ফাতেমা খাতুন বোবা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কিছুই করার ছিল না তার। ছেলেকে জুতাপেটা করতে দেখে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা।

অমানবিক এ ঘটনটি ঘটেছে ৭ ডিসেম্বর রাত অনুমান ১২টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে যশোর হাসপাতালে মৃত্যু হয় হোসাইনের বাবার।

এলাকায় আওয়ামী লীগের নিবেদিত এক কর্মী হিসেবে এসএম সরকার ওরফে হোসাইন পরিচিত। তার বাড়ি উপজেলার যাদবপুর গ্রামে। ঢাকায় ছোটখাটো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। এক ছেলে এক মেয়ের জনক তিনি। বাবা গিয়াস উদ্দিন সরকার অসুস্থ। দুই ছেলে এক মেয়ের পিতা তিনি। বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন সবাই।

হোসাইনের ভগিনীপতি মোমিন জানান, মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ পা থেকে জুতা খুলে দিয়ে হোসাইনকে নিজের গালে আঘাত করার নিদের্শ দেন। নিরুপায় হয়ে কাজটি করেন হোসাইন। এর আগে পা ধরে মাফ চায়।

মোমিন আরও জানান, যখন ঘটনাটি ঘটে তখন হোসাইনের বাবা গিয়াস উদ্দিন সরকার মৃত্যুশয্যায়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার।

৬ ডিসেম্বর বিকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে ৮ ডিসেম্বর মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তার লাশ।

মোমিনের দেওয়া তথ্যমতে, ফেসবুকে লেখালেখির সূত্র ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বিপাশের সঙ্গে হোসাইনের বিরোধ চলে আসছিল। সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের সর্মথক তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পিতা গিয়াস সরকারের বেডের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন হোসাইন। পরে সেখানে আসেন মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশসহ কয়েকজন। হোসাইনকে সহজেই বাগে পেয়ে যান তারা। শাস্তি হিসেবে জুতাপেটা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হোসাইন নিজের গালে জুতা দিয়ে আঘাত করছেন। সেই দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েও দিলেন আরিফুজ্জামান বিপাশের লোকজন। শেষ পর্যন্ত পদ হারাতে হচ্ছে তাকে। বিপাশের বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।

জাতীয়

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৭ জনে।

শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৬৯ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮১৯ জনে।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় চলতি বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

চলতি বছরের গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে।

২০২০ সালের এপ্রিলের পর চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুহীন দিন পার করে বাংলাদেশ।সর্বশেষ দ্বিতীয়বারের মতো গেল বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) মৃত্যুশূন্য দিন পার করেছে দেশ।

জাতীয়

রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে আরেকটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প’।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) ভিত্তিতে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সরকার। ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সরকারের সেতু বিভাগ।

বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রকল্পটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থনৈতিক বিষয় এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের বালিয়াপুর থেকে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত হবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রায় ১৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৩৯ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে।

সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আতিরিক্ত সচিব মো.সামসুল আরেফিন।

কবে নাগাদ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন টেন্ডারে দেওয়া হবে।’

টেন্ডারে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে শামসুল আরেফিন বলেন, বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। সে জন্য টেন্ডার দেওয়া হবে।

জাতীয়

কান্না চেপে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। এ কান্না ছেলের মৃত্যু শোকের সঙ্গে একরকম আনন্দেরও। কারণ ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলো। বুধবার দুপুরে এমন দৃশ্য দেখা যায় পুরান ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণে। ওই সময় বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১।

রায়ে ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর আসামি ও তাদের স্বজনদের অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়। অন্যদিকে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন মামলার বাদী আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। তার চোখ দিয়ে ঝরছিল জল।

তিনি প্রায় দুই বছর আদালত প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সূদুর কুষ্টিয়া থেকে ভোরে ঢাকায় আসতেন-যেতন মধ্যরাতে। খেয়ে না খেয়ে ছেলে হত্যার বিচার চেয়েছেন। রায় শেষে অসহায় এ বাবার সঙ্গে যুগান্তরের এই প্রতিবেদক কথা বলেছেন। তারই মোবাইলে গ্রামে (কুষ্টিয়ায়) থাকা আবরারের মায়ের সঙ্গেও কথা হয় ৫ মিনিট ৩ সেকেন্ড। বলছিলেন- রায় এসেছে-হয়তো সেটি কার্যকরও হবে। কিন্তু আমাদের বুকের ধন কি কখনো ফিরে আসবে। আমাদের শূন্য বুক-শূন্যস্থান কী কখনো পূরণ হবে?

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ছিল একটি কালো অধ্যায়। ওই দিন বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ছেলের মৃত্যুশোক আজও মা-বাবাকে স্তব্ধ করে। বুধবার ভোরেই আদালতে হাজির ছিলেন বাবা। সঙ্গে আসা ছোটভাই মনিরুল ইসলাম বললেন, এখনো (দুপুর ১টা ৩৩ মিনিট) ভাই এখনও কিছু খায়নি। অনেক বলেছি-কিছু খেতে, ওই সময় বোবার মতো একপলকে চেয়ে থাকে। চোখের পানি গাল বেয়ে গড়ায়। রায় শেষে সাংবাদিকরা ভাইকে ঘিরে ধরেছিল প্রতিক্রিয়া জানতে। মিডিয়া কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছিলেন।

দুপুর পৌনে ২টার দিকে আবরারের বাবাকে এই প্রতিবেদক অনুরোধ করেন যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত কথা বলার। আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি উম্মুক্ত জায়গায় কথা হয় অসহায় এ বাবার সঙ্গে। অশ্রুভেজা কণ্ঠে বললেন, অনেক তো বলছি- প্রায় দুই বছর ধরে বলেই আসছি। বিচারের জন্য গ্রাম থেকে রাজধানীতে আসি ভোরে-আবার মধ্যরাতে গ্রামে ফিরি। আজ রায় হয়েছে। এ রায়ের জন্য খেয়ে না খেয়ে কতবার যে আদালতে ঘুরেছি, এ হিসাব নেই। এখন আর কাঁদতে পারি না। বুকে ব্যথা হয়। শ্বাস ফেলতে কষ্ট হয়। অনেক কষ্ট করেই বড় ছেলে আবরারকে পড়িয়ে ছিলাম।

সন্তানহারা বাবার আর্জি, খুনিরা আমার বুকের ধনকে হত্যা করেছে। আমি জানি, আমার বাবা কত ভালো মানুষ ছিল। মাথা নিচু করে হাঁটতেন। এমন কোনো কাজ করতেন না, যার জন্য মানুষ তাকে মন্দ বলবে। পড়াশোনা শেষে দেশের বাহিরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। উচ্চশিক্ষা করে দেশে ফিরে-দেশের উন্নয়ন করবে। কিন্তু, কি নির্মম-আমার সেই ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে বারবার পানি খেতে চেয়েছিল-দেওয়া হয়নি। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এ বাবা।

আবরারের বাবার সঙ্গে এই প্রতিবেদক যখন কথা বলছিলেন, ওই সময় আদালত ভবনের নিচে, প্রিজনভ্যান ঘিরে আসামি, আসামিদের স্বজনরা কান্না করছিল। আসামিরা সূর-চিৎকার করছিল। এমনটা দেখে আবরারের বাবা বলছিলেন, আমার বাবা হয়তো কান্নাও করতে পারেনি। বুকের ওপর লাফিয়ে লাফিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আজ তারা কাঁদছে, স্বজনরা কাঁদছে। আর আমরা দীর্ঘ দুই বছর ধরে কেঁদে যাচ্ছি। ফাঁসির রায় কার্যকর হলে-তাদের অভিভাবকরাও বুঝবে, শূন্য বুক কীভাবে হাহাকার করে। সন্তান হারানোর ব্যথা কি। কেমন লাগে। আমি জানি, সন্তান হারানোর যন্ত্রণার সঙ্গে ক্ষতিপূরণ কিংবা আসামিদের ফাঁসির কোনো অঙ্কই যে মেলে না। যাদের ফাঁসি হবে, তাদের অভিভাবকরাও আমাদের মতো কাঁদবে-যন্ত্রণায় ভুগবে।

আর যেন কোন সন্তান খুন না হয়-খুনের দায়ে কারও ফাঁসি না হয়- এমন আকুতি জানিয়ে বরকত উল্লাহ বললেন, এ রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। রায় কার্যকর হলেই আমার বাবা (আবরার) শান্তি পাবে। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড ঘটাতে কেউ সাহস পাবে না। রাজনৈতিক দল প্রধান-নেতাদের কাছে অনুরোধ, শিক্ষার্থীদের হত্যাকারী বানাবেন না। হিংস্র-বর্বর হতে সহযোগিতা করবেন না। নতুন করে সন্তান হারানোর তালিকায় আর যেন কোন মা-বাবার নাম না উঠে। ফের আরেকবার যন্ত্রণাবিদ্ধ মুখে তিনি বললেন- সন্তানের লাশ বাবার কাঁধে; এ মৃত্যুশোকের যন্ত্রণা প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়ায়।

দুপুর ২টা ৩ মিনিটে আবরারের মা রোকেয়া বেগমের (৫৭) সঙ্গে মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। কলটি রিসিভ করলেই কানে ভেসে আসে কান্না। নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতেই বললেন, আমার বাবাকে আমি ভুলি না, চোখের সামনে ভেসে আসে সব। এখন নিজেকে অপরাধীও মনে হয়- বাবাকে যদি ঢাকায় না পাঠাতাম হয়তো বেঁচে যেত। আমি নিজ হাতে বাবাকে বুয়েটে ভর্তি করিয়েছি। দিনের পর দিন বাবার সঙ্গে ঢাকায় ঘুরেছি। তার বাবা গ্রামে থাকতো, ছেলেদের পড়াশোনার সব দায়িত্ব যেন আমার কাঁধে। আসামিদের ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন দণ্ডের যায় হয়ে-দ্রুত হয়তো দ্রুত কার্যকর হবে। আমি ভাবছি, যাদের ফাঁসি হবে, তাদের অভিভাবকদের কথা। কোনো বাবাই চায় না সন্তান সস্ত্রাসী হোক-কাউকে খুন করুক। কেউ না কেউ তাদের সস্ত্রাসী বানায়-খুন করতে সাহস দেয়। তারা কারা?

রোকেয়া বেগম বললেন, ১৯৯৩ সালে তিনি মাস্টার্স করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ঢাকায় বহু সময় ছিলেন। ছেলেদের (ছোট ছেলেসহ) ভর্তি করাতেও ঢাকায় থাকতে হয়েছে। কিন্তু যে দিন আবরারের লাশ গ্রামের বাড়িতে এলো-সেই দিন থেকে আর কোনো দিন ঢাকায় যাইনি। আবরারের বয়স যখন ১৩ দিন, তখন বিসিএস পরীক্ষা ছিল। ছেলেকে কার কাছে রেখে যাব, তার বাবা ব্যাংকে চাকরি করতেন। পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। কিছুদিন পর সিলেটে একটি ভালো চাকরি হয়। কিন্তু ছেলের জন্য চাকরিতেও যোগদান করিনি। আমার বয়স যখন ৩ বছর ৭ মাস তখন আমরা বাবা মারা যান। বাবার মুখ আমি স্মরণ করতে পারিনি। যখন আবরার আমার কূলজুড়ে এলো-সেই দিন থেকেই মনে হয়েছে-আবার বাবা আমার কাছে ফিরে এসেছে। বাবা বলেই তাকে ডাকতাম। সেই বাবাকেও খুন করা হয়েছে-আমার পূর্ণ বুক শূন্য করে দেওয়া হয়েছে। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই মা।

কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত শাহ হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও মোবাইলের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সমস্ত পরিকল্পনা করেছে। তার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। কীভাবে মৃত্যুদণ্ড থেকে ৫ জনের নাম বাদ গেল-আমি চাই, অমিত শাহসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া সবার ফাঁসি হোক। এখন ছোট ছেলেকে নিয়েও ভয় হয়। আমি আর কাউকে হারাতে চাই না। কেউ কি আমার বেঁচে থাকা ছেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কেউ কি নিশ্চিত করে বলবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর কারও সন্তান খুন হবে না। কারও মায়ের বুক খালি হবে না। শিক্ষার পরিবেশ, ছাত্র রাজনীতি, হিংস্র শিক্ষার্থীদের অপদার্থতাকেই কাঠগড়ায় তুলে ছেলেহারা মায়ের কান্নাভেজা গলায় এ প্রশ্নটাই ছুড়ে দিলেন মা রোকেয়া বেগম।

এদিকে বিকাল সাড়ে ৩টা পযর্ন্ত আবরারের বাবা আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় হাঁটছিলেন। তার সঙ্গে তার ভাই, শ্যালক ও বোনের মেয়ে ছিলেন। চাচা মনিরুল ইসলাম বললেন, আবরারকে তিনি স্কুলে নিয়ে যেতেন। কূলে-পিঠে করে বড় করেছিলেন। মামা মোফাজ্জেল হোসেন বললেন- সে ছিল আমাদের আলোকরশ্মি। যেমন মেধাবী-তেমনি ভদ্র। সেই প্রিয় ভাগ্নেকেই নির্মমভাবে খুন করা হলো। ফুফুতো বোন আফরিদা তানজীনার ভাষ্য- আবরার তার চেয়ে কয়েক বছরের ছোট। একসঙ্গে খেলা করতেন। তাদের বোন নেই-আপন বোন হিসেবেই দেখতেন-মানতেন। সেই ভাইটাকে কেড়ে নিল সন্ত্রাসীরা।

এদিকে আসামিদের কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির বড়ভাই বললেন- তার ভাই সোজা-সাপ্টা মানুষ ছিল। বুয়েটে ভর্তির আগেও কোনো রাজনীতি করত না। রাজনীতির নামে কারা তাদের ক্ষমতাবান করে তুলে। কারা তাদের ব্যবহার করে। ফাঁসির আরেক আসামির বৃদ্ধা মা ছেলের দিকে তাকিয়ে কাঁদছিলেন। নাম জানতে চাইলে, পাশে থাকা এক যুবক প্রতিনিধিকে ধাক্কা দেন। প্রিজন ভ্যানে থাকা ওই আসামি চিৎকার দিয়ে বলছিলেন- তার কোনো অপরাধ নেই। সে অপরাধে সম্পৃক্ত নয়। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ইসতিয়াক হোসেনের মা কুলসুমা বেগম ছেলের জন্য কাঁদছিলেন। তিনি জানালেন, তার ছেলে ভালো মানুষ; কিন্তু ছেলে কেন ফাঁসল। কে তাদের হিংস্র করল— মিডিয়া কর্মীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন এই মা।

জাতীয়

প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মঙ্গলবার রাতে (০৭ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এ পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

বিতর্কিত ও অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মঙ্গলবার সকালেই প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান।

পরে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

এর আগে মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি-না প্রশ্নে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি দলের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আলোচনা করা হবে।

সংসদ সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি-না প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা পরের ব্যাপার। এটা স্পিকারের বিষয়। আপাতত তাকে পদত্যাগ করতে হলো, সরে যেতে হলো। এমপির বিষয়ে সে রকম গুরুতর অভিযোগ এলে স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।

জাতীয়

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতাদের একহাত নিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

২০ দলীয় জোটের নেতাদের আন্দোলনের কথা শুনলে হাসি পায় মন্তব্য করে ভিপি নুর বলেন, ‘আপনারা সবাই বলেন আন্দোলন দরকার, রাস্তায় নামা দরকার। এ ধরনের কথাবার্তা শুনলে হাসি পায়। অনেকদিন ধরেই এই আলোচনা শুনছি। শুধু প্ল্যান আর প্ল্যান, কোনো একশন তো দেখি না।’

মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

২০ দলীয় নেতাদের উদ্দেশে ভিপি নুর বলেন, ‘মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, তাদের বোধ শক্তিকে জাগ্রত করতে হবে। তারা একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে। মিছিল করতে হবে রাস্তায়-মহল্লায়-পাড়ায়। মিছিল দেখে মানুষ মিছিলে যুক্ত হবে। দিনক্ষণ ঠিক করে এই সরকারের পতন আপনারা ঘটাতে পারবেন না।’

সিনিয়র রাজনীতিবিদরা শুধু নিজেদের সুবিধার বিষয় নিয়ে ভাবেন- এমন মন্তব্য করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি আরও বলেন, ‘এত জনসম্পৃক্ত ইস্যু রয়েছে। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা আছে। কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে রাস্তায় নামছেন না। আপনারা শুধু আপনাদের সুবিধাজনক বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন। এই প্রেস ক্লাবে ইনডোর বক্তব্য দিয়ে হবে না।’

এ সময় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান নুরুল হক নুর।

জাতীয়

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১০ জনে।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ২৯১ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ১১ জনে।

এই সময়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩০৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৯০৮ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৮৬৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২০ হাজার ১৪টি। পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় চলতি বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

চলতি বছরের গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে।

২০২০ সালের এপ্রিলের পর চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুহীন দিন পার করেছে বাংলাদেশ।

জাতীয়

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী সম্পর্ক রাখলে ব্যবস্থা তদন্ত সাপেক্ষে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে মহানগর কমিটির বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর এ প্রথম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওসমান আলীকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

সভায় গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডলসহ কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অংশগ্রহণ করেন। .

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কারো কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই, তার সঙ্গে কেউ কোনো সম্পর্ক রাখতে পারবে না। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, বর্ধিত সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে দলীয় কোনো কোনো নেতাকর্মীর যোগাযোগ রাখছে এবং বিগত সময়ে দলের সঙ্গে কোন নেতার কী ভূমিকা ছিল সে বিষয়ে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ কমিটি দুই ভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। একটি হলো জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করার পর বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীদের কার কী ভূমিকা ছিল- সেটি নির্ধারণ করবে। অপরটি জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কারের পর তার সঙ্গে সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর যোগাযোগ আছে কিনা বা কার কী ভূমিকা ছিল সেটি অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে।

তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী সভায় তা নিয়ে আলোচনা করে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।