জাতীয়

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত করোনার কারণে বারবার ফিছিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। আর তাই ‌‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রোগ্রাম (কর্মসূচি) ঠিক করছে’ বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আজকেও কথা হয়েছে। তারা প্রোগ্রাম ঠিক করছে- কীভাবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়। তারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) এ বিষয়ে ব্রিফিংয়ে বসবে। পাবলিকলি বলে দেবে কবে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে।

এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে হবে। ২টি বিষয় হলো- করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি সুবিধাজনক অবস্থায় আসা এবং টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা।

এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বলেছেন, করোনা সংক্রমণের হার যে পর্যায়ে এলে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে সে সময় এলেই খুলে দেওয়া হবে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ৩৯৯ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭১৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭১৫ জন। মৃত ১১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৫৩ জন ও ৬৪ জন নারী।

সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আট হাজার ৯৮২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৬ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৩৩টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩৩টি, জিন এক্সপার্ট ৫৪টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৫৪৬টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩৭ হাজার ৩১৭টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৭৮৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৬টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৩ শতাংশ ৫৪ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১১৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৪০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ১১ জন, বরিশাল বিভাগে এক জন, সিলেট বিভাগে ১৩ জন, রংপুর বিভাগে নয় জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে চার জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৯৭ জন,বেসরকারি হাসপাতালে ১৭ জন এবং বাড়িতে তিন জন মারা যান।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে নয় জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয় জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৪১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ২১ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে নয় জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে তিন জন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন এক হাজার ৬২০ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮০৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন তিন লাখ ৫৫ হাজার ৮১৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুই লাখ ৮৮ হাজার জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৬৭ হাজার ৮১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে রাজধানীতে জরিপ চালিয়ে এইডিস মশার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে গোড়ান ও বাসাবো এলাকায়। কোনো এলাকায় এইডিস মশার ঘনত্ব পরিমাপের একক ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি হলেই তাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবো ও গোড়ান এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৭৩ দশমিক ৩। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এইডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ২৯ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন ধরে জরিপ চলে। রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এইডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপব্যবস্থাপক ডা. আফসানা আলমগীর খান।

চলতি আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৮৩ জন। যা আগের সাত মাসের মোট রোগীর দ্বিগুণেরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯১ জন। তার মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫৯ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২ জন। ঢাকা শিশু হাসপাতালে শুক্রবার ৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল। চলতি বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে জুলাই মাসে ১২ জন আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডের ১৯টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ এর বেশি পাওয়া গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ৫৬টি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ বা তার বেশি। জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, ব্রুটো ইনডেক্স ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ৬৬ দশমিক ৭, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরকে মিশন রোড ও টিকাটুলিতে ৫০, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বনশ্রীতে ৪০ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিন্টো রোড ও বেইলি রোডে ৪০। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ৫৬ দশমিক ৭ পাওয়া গেছে। এই ওয়ার্ডে রয়েছে মগবাজার, নিউ ইস্কাটন এলাকা। এছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও নিকুঞ্জ নিয়ে গড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ৪৮ দশমিক ৪, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর ও দারুস সালাম এলাকায় ৪৬ দশমিক ৭, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়ায় ৪৩ দশমিক ৩ এবং মহাখালী ও নিকেতন এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০। উত্তর সিটি করপোরেশনের আফতাবনগর ও মেরুল বাড্ডা এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বংশালের ব্রুটো ইনডেক্স শূন্য পাওয়া গেছে জরিপে, অর্থাৎ এসব এলাকায় মশার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানে জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৪১টি এবং দক্ষিণের ৫৯টি। জরিপের সময় এসব এলাকার ৩ হাজারটি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। ২ হাজার ৪১২টি বাড়ি ও স্থাপনায় এইডিস মশা পাওয়া যায়নি। ৫৮৮টি স্থানে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মোট পরিদর্শন করা বাড়ির ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। জরিপে যতগুলো বাড়ি পরিদর্শন করে মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে শতকরা ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বাড়ির মধ্যে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর মশার উপস্থিতি বেশি। এ বছর ডিএসসিসির ৩০টি এবং ডিএনসিসির ২৬টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি পাওয়া গেছে। ২০২০ সালের জরিপে ডিএসসিসির ১৭টি এবং ডিএনসিসির ৯টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি পাওয়া গিয়েছিল। অধিদফতরের চলতি বছরের হিসাব থেকে জানা যায়, জানুয়ারিতে শনাক্ত হয়েছেন ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন আর জুলাইয়ে শনাক্ত হয়েছিলেন দুই হাজার ২৮৬ জন। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে মোট শনাক্ত হয়েছিলেন দুই হাজার ৬৫৮ জন। আর ১ থেকে ২২ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৮৩ জন।

জাতীয়

দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও করোনার কারণে সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এবং শিক্ষামন্ত্রীও দ্রুতই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আশা প্রকাশ করেছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে দুটি বিষয় বিবেচনার কথা বলছেন শেখ হাসিনা। তা হলো- করোনা পরিস্থিতি সুবিধাজনক অবস্থায় আসা এবং টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এই দুটি বিষয় বিবেচনা করে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগ পর্যন্ত অনলাইন ও অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের হার যে পর্যায়ে এলে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে সে সময় এলেই খুলে দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কীভাবে এবং কত দ্রুত শিক্ষপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সংকটের প্রথম থেকেই আমাদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ২৩ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৯৩ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ২০৩ জন। মৃত ১৪৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৭৭ জন ও ৬৮ জন নারী।

শুক্রবার (২০ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫৭৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৫ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭২৪টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে।  এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩৩টি, জিন এক্সপার্ট ৫৩টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ৫৩৮টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ হাজার ৯২৭টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮৯২টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৯৪৬টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯১ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ শতাংশ ৭৪ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৪৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, রাজশাহী বিভাগে পাঁচ জন, খুলনা বিভাগে ১৫ জন, বরিশাল বিভাগে চার জন, সিলেট বিভাগে সাত জন, রংপুর বিভাগে সাত জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে সাত জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১০৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩০ জন এবং বাড়িতে ছয় জন মারা যান।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এক জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে নয় জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ২৮ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ছয় জন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন এক হাজার ৬৬৮ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৯২৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন তিন লাখ ৫১ হাজার ৮৪৩ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুই লাখ ৮০ হাজার ৫৫৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৭১ হাজার ২৯০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

আজ শুক্রবার (২০ আগস্ট) ১০ মহররম পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।
ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় ও সংক্ষিপ্ত কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র আশুরা পালিত হবে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল বন্ধ থাকবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইতোপূর্বে আরোপিত বিধি-নিষেধ বহাল থাকবে। একইসঙ্গে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। তবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করে আবশ্যক সব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে।

জাতীয়

এখন থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরাও করোনার টিকা নিতে পারবেন। করোনার টিকা নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাতে সুরক্ষা অ্যাপে দেখা যাচ্ছে ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা নিবন্ধনের অপশন চালু করা হয়েছে।

এর আগে টিকা নেয়ার জন্য সর্বনিম্ন বয়সসীমা ২৫ বছর নির্ধারণ করেছিল সরকার।

জাতীয়

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১১ আগস্ট থেকে ৩৬ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন নিয়ে শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) আরও ১২ জোড়া আন্তঃনগর ও ২৪ জোড়া কমিউটার, লোকাল ও ডেমু ট্রেন চলাচল করবে।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লকডাউন শিথিল হওয়ার পর গত ১১ আগস্ট থেকে ৩৬ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আরও ১২ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হবে। সেই সঙ্গে যুক্ত হবে ২৪ জোড়া কমিউটার, লোকাল ও ডেমু ট্রেন।

১১ আগস্ট থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ও ১৯ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন দিয়ে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সেসময় রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিটি ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। নন কম্পিউটারাইজড স্টেশনের টিকিট ওই স্টেশন কাউন্টার থেকে কিনতে হবে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১ জুলাই দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হলে অন্যসব যাত্রীবাহী গণপরিবহনের মতো ট্রেন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। কোরবানি ঈদ ঘিরে ১৫ থেকে ২২ জুলাই ‘লকডাউন’ শিথিল করা হলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ও ট্রেন চালু করে।

এরপর ২৩ জুলাই থেকে আবার ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হলে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। সেই বিধিনিষেধের সময়সীমা ১০ আগস্ট শেষ হয়। ১১ আগস্ট থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রেলওয়ের ৩৬২টি ট্রেনের মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে ১০৪টি আন্তঃনগর ট্রেন এবং বাকিগুলো লোকাল, কমিউটার ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।

জাতীয়

একটি ১০০ ওয়াটের এলইডি সড়ক বাতির দাম ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ৬৯০ টাকা (প্রায় ৭০ হাজার টাকা)। এছাড়া একেকটি ৪০ ওয়াটের লাইটের দাম ৩১ হাজার ৯৭১ টাকা, ৬০ ওয়াট ৫৫ হাজার ৩২১ টাকা এবং ৮০ ওয়াট লাইটের দাম ধরা হয়েছে ৬৬ হাজার ৬৯৭ টাকা।

এ দাম অস্বাভাবিক ধরা হয়েছে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। এজন্য সঠিক বাজার দর হিসাবে দাম প্রাক্কলনের জন্য তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে-এ কমিটিকে ক্রয় করতে যাওয়া বাতি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির প্রাক্কলন এবং কারিগরি বর্ণনা প্রণয়ন করে (সিল ও স্বাক্ষরসহ) ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংযোজন করতে হবে।

‘কক্সবাজার পৌরসভার রাস্তাগুলোতে এলইডি সড়ক বাতি সরবরাহ ও স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের এমন অস্বাভাকি দামের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রকল্পটিতে রয়েছে গোড়ায় গলদ। অর্থাৎ যেনতেনভাবে দায়সারা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ মঙ্গলবার বলেন, প্রস্তাবিত মূল্য অবশ্যই বাজারের চেয়ে বেশি। এজন্যই আমরা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। সাধারণত কমিটি করা হয় না।

তাদেরকেই (প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের) ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ করতে বলা হয়। কিন্তু এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে শুধু কমিটিই নয়, এ কমিটি কোন উৎস থেকে দাম প্রস্তাব করবে সেটিও জানাতে বলা হয়েছে। এটা সংশ্লিষ্টদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। তাদের প্রস্তাবিত দাম যে কোনোভাবেই গ্রহণ করা হয়নি-সেটির প্রমাণই হচ্ছে কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত তাদের একাংশ সম্পদ বৃদ্ধির উপায় হিসাবে এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে পরবর্তীকালে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা যায়। তবে ভালো দিক হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন বিষয়টিতে আপত্তি দিয়েছে। কিন্তু যেসব কর্মকর্তা এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রবণতা অব্যাহত আছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে এমন অনিয়ম বন্ধ হবে না।

সূত্র জানায়, ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পটির প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং কক্সবাজার পৌরসভার।

৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্পটির পিইসির (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে-সড়ক বাতির যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে তার যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পিইসি সভায় জানানো হয়, এলজিইডির সিটি গভর্ন্যান্স প্রজেক্টের (সিজিপি) আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এলইডি সড়কবাতির দর এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে পরিকল্পনা কমিশন ওয়েস্টার্ন ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী এলইডি বাতির বর্তমান বাজার দর, বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য সমন্বয়ে ব্যয় প্রাক্কলনের জন্য সভায় একমত পোষণ করা হয়। এজন্যই কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন উইংয়ের মহাপরিচালক ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, প্রকল্প প্রস্তাবটি প্রথম পর্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে আসে। এখানে একটি বাছাই কমিটি রয়েছে। সেই কমিটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন করলে আমরা সেটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাই। এর মধ্যে অনেক প্রক্রিয়া রয়েছে। এলইডি লাইটের ক্ষেত্রে শুধু ওয়াট দেখে বিবেচনা করা ঠিক নয়। কেননা এর দাম নির্ভর করে স্পেসিফিকেশন এবং অরিজিনসহ আরও নানা বিষয়ের ওপর।

তবে যে প্রকল্পটির বিষয়ে বলছেন এ মুহূর্তে কাগজপত্র না দেখে সঠিক মন্তব্য করতে পারছি না। পিইসি সভার কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়েছে-প্রস্তাবিত প্রকল্পের ডিপিপিতে যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সংযুক্ত করা হয়েছে তা এনইসি-একনেক অনুবিভাগের ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি জারি করা ফরম্যাট অনুযায়ী হয়নি। সমীক্ষা প্রতিবেদনটিতে পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কিসের ভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সঙ্গে জড়িত সংস্থার মতামত গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ডিপিপিতে যে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে সেখানে আর্থিক ১ হাজার ২৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং অর্থনৈতিক ৩২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। এখানে আর্থিক খাতের এ হিসাব কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে প্রকৃতপক্ষে যে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সুবিধাদি পাওয়া যাবে তা বিবেচনায় নিয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ নতুনভাবে করা প্রয়োজন। আরও বলা হয়েছে-প্রস্তাবিত প্রকল্পে কোনো গাড়ি কেনার প্রস্তাব না থাকলেও পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।

জাতীয়

বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে ঘৃণিত, বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের একটি দিন ১৫ আগস্ট। এটি শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিনই ছিল না।

এটি ছিল সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র ও জাতির অগ্রযাত্রাকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের দিন।

১৯৭৫ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও পরাজিত দেশি-বিদেশি শক্তি এবং ঘাতকচক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এই দিনটি বাঙালির জাতীয় শোক দিবস।

আজ রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে জাতি শোকাতুর হৃদয়ে শ্রদ্ধাভরে জাতীর জনককে স্মরণ করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন, সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।

ঔপনিবেশিক শাসনসহ নানা জাতি, গোষ্ঠী দ্বারা হাজার বছরের নির্যাতিত নিপিড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভ করে। পর্বতসম সাহস আর সাগরের মতো হৃদয়ের অধিকারী শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঙালিকে পাকিস্তানের শাসন-নির্যাতন থেকে মুক্ত করেছিলেন। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও পথ প্রদর্শক হিসেবেই আজ বঙ্গবন্ধু জাতির হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

১৯৪৭ সালে ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক অসম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বৃটিশ শাসনের অবসান হলেও স্বাধীন সত্তা নিয়ে সেদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতি ও তাদের ভূখন্ডকে করা হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের অধীনস্থ। বাঙালির ওপর চেপে বসে পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপিড়ন।

সেই নির্যাতিত বাঙালিকে সংগঠিত করে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে ধাবিত করেন শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে। এই আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অনেক অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেন।

স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী পদক্ষেপে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে। দীর্ঘদিনের শোষিত-বঞ্চিত এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই সময়ও তিনি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হন। সব ষড়যন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর এই সফলতা ও দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার গতি বুঝতে পেরেই স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি দল হানা দেয়। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুসহ বাড়িতে থাকা পরিবারের সবাইকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর শিশু পুত্র শেখ রাসেলও সেদিন ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পাননি। বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি-ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতিয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়। জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশে সামরিক অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান, হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। একের পর এক সামরিক স্বৈরশাসনের পালা বদল হতে থাকে। সেই সঙ্গে সামরিক স্বৈরশাসকদের ছত্রছায়ায় দেশে স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত গোষ্ঠী, উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে। রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয় চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীরা।
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির স্বাধীনতা, স্বাধীকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তার অতুলনীয় গণমুখী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম ও ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৯ এর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৭০- এর নির্বাচনে বিজয়, এরপর ১৯৭১-এ এসে উপনীত হয়। ২৬ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৪ বছরের মাথায় তাকে হত্যা করা হয়।

১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ দেশবরেণ্য সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তার মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ শিশুপুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুলাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ।