জাতীয়

একটি ১০০ ওয়াটের এলইডি সড়ক বাতির দাম ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ৬৯০ টাকা (প্রায় ৭০ হাজার টাকা)। এছাড়া একেকটি ৪০ ওয়াটের লাইটের দাম ৩১ হাজার ৯৭১ টাকা, ৬০ ওয়াট ৫৫ হাজার ৩২১ টাকা এবং ৮০ ওয়াট লাইটের দাম ধরা হয়েছে ৬৬ হাজার ৬৯৭ টাকা।

এ দাম অস্বাভাবিক ধরা হয়েছে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। এজন্য সঠিক বাজার দর হিসাবে দাম প্রাক্কলনের জন্য তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে-এ কমিটিকে ক্রয় করতে যাওয়া বাতি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতির প্রাক্কলন এবং কারিগরি বর্ণনা প্রণয়ন করে (সিল ও স্বাক্ষরসহ) ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংযোজন করতে হবে।

‘কক্সবাজার পৌরসভার রাস্তাগুলোতে এলইডি সড়ক বাতি সরবরাহ ও স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের এমন অস্বাভাকি দামের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রকল্পটিতে রয়েছে গোড়ায় গলদ। অর্থাৎ যেনতেনভাবে দায়সারা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ মঙ্গলবার বলেন, প্রস্তাবিত মূল্য অবশ্যই বাজারের চেয়ে বেশি। এজন্যই আমরা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। সাধারণত কমিটি করা হয় না।

তাদেরকেই (প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের) ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ করতে বলা হয়। কিন্তু এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে শুধু কমিটিই নয়, এ কমিটি কোন উৎস থেকে দাম প্রস্তাব করবে সেটিও জানাতে বলা হয়েছে। এটা সংশ্লিষ্টদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। তাদের প্রস্তাবিত দাম যে কোনোভাবেই গ্রহণ করা হয়নি-সেটির প্রমাণই হচ্ছে কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত তাদের একাংশ সম্পদ বৃদ্ধির উপায় হিসাবে এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে পরবর্তীকালে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা যায়। তবে ভালো দিক হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন বিষয়টিতে আপত্তি দিয়েছে। কিন্তু যেসব কর্মকর্তা এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রবণতা অব্যাহত আছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে এমন অনিয়ম বন্ধ হবে না।

সূত্র জানায়, ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পটির প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং কক্সবাজার পৌরসভার।

৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্পটির পিইসির (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে-সড়ক বাতির যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে তার যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পিইসি সভায় জানানো হয়, এলজিইডির সিটি গভর্ন্যান্স প্রজেক্টের (সিজিপি) আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এলইডি সড়কবাতির দর এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে পরিকল্পনা কমিশন ওয়েস্টার্ন ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী এলইডি বাতির বর্তমান বাজার দর, বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য সমন্বয়ে ব্যয় প্রাক্কলনের জন্য সভায় একমত পোষণ করা হয়। এজন্যই কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন উইংয়ের মহাপরিচালক ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, প্রকল্প প্রস্তাবটি প্রথম পর্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে আসে। এখানে একটি বাছাই কমিটি রয়েছে। সেই কমিটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন করলে আমরা সেটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাই। এর মধ্যে অনেক প্রক্রিয়া রয়েছে। এলইডি লাইটের ক্ষেত্রে শুধু ওয়াট দেখে বিবেচনা করা ঠিক নয়। কেননা এর দাম নির্ভর করে স্পেসিফিকেশন এবং অরিজিনসহ আরও নানা বিষয়ের ওপর।

তবে যে প্রকল্পটির বিষয়ে বলছেন এ মুহূর্তে কাগজপত্র না দেখে সঠিক মন্তব্য করতে পারছি না। পিইসি সভার কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়েছে-প্রস্তাবিত প্রকল্পের ডিপিপিতে যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সংযুক্ত করা হয়েছে তা এনইসি-একনেক অনুবিভাগের ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি জারি করা ফরম্যাট অনুযায়ী হয়নি। সমীক্ষা প্রতিবেদনটিতে পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কিসের ভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সঙ্গে জড়িত সংস্থার মতামত গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ডিপিপিতে যে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে সেখানে আর্থিক ১ হাজার ২৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং অর্থনৈতিক ৩২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। এখানে আর্থিক খাতের এ হিসাব কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে প্রকৃতপক্ষে যে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সুবিধাদি পাওয়া যাবে তা বিবেচনায় নিয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ নতুনভাবে করা প্রয়োজন। আরও বলা হয়েছে-প্রস্তাবিত প্রকল্পে কোনো গাড়ি কেনার প্রস্তাব না থাকলেও পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।

জাতীয়

বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে ঘৃণিত, বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের একটি দিন ১৫ আগস্ট। এটি শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিনই ছিল না।

এটি ছিল সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র ও জাতির অগ্রযাত্রাকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের দিন।

১৯৭৫ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও পরাজিত দেশি-বিদেশি শক্তি এবং ঘাতকচক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এই দিনটি বাঙালির জাতীয় শোক দিবস।

আজ রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে জাতি শোকাতুর হৃদয়ে শ্রদ্ধাভরে জাতীর জনককে স্মরণ করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন, সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।

ঔপনিবেশিক শাসনসহ নানা জাতি, গোষ্ঠী দ্বারা হাজার বছরের নির্যাতিত নিপিড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভ করে। পর্বতসম সাহস আর সাগরের মতো হৃদয়ের অধিকারী শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঙালিকে পাকিস্তানের শাসন-নির্যাতন থেকে মুক্ত করেছিলেন। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও পথ প্রদর্শক হিসেবেই আজ বঙ্গবন্ধু জাতির হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

১৯৪৭ সালে ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক অসম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বৃটিশ শাসনের অবসান হলেও স্বাধীন সত্তা নিয়ে সেদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতি ও তাদের ভূখন্ডকে করা হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের অধীনস্থ। বাঙালির ওপর চেপে বসে পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপিড়ন।

সেই নির্যাতিত বাঙালিকে সংগঠিত করে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে ধাবিত করেন শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে। এই আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অনেক অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেন।

স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী পদক্ষেপে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে। দীর্ঘদিনের শোষিত-বঞ্চিত এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই সময়ও তিনি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হন। সব ষড়যন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর এই সফলতা ও দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার গতি বুঝতে পেরেই স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি দল হানা দেয়। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুসহ বাড়িতে থাকা পরিবারের সবাইকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর শিশু পুত্র শেখ রাসেলও সেদিন ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পাননি। বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি-ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতিয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়। জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশে সামরিক অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান, হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। একের পর এক সামরিক স্বৈরশাসনের পালা বদল হতে থাকে। সেই সঙ্গে সামরিক স্বৈরশাসকদের ছত্রছায়ায় দেশে স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত গোষ্ঠী, উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে। রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয় চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীরা।
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির স্বাধীনতা, স্বাধীকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তার অতুলনীয় গণমুখী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম ও ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৯ এর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৭০- এর নির্বাচনে বিজয়, এরপর ১৯৭১-এ এসে উপনীত হয়। ২৬ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৪ বছরের মাথায় তাকে হত্যা করা হয়।

১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ দেশবরেণ্য সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তার মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ শিশুপুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুলাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৯৮৮ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৮৫ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ১২ হাজার ২১৮ জন। মৃত ১৭৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১০৯ জন ও ৬৯ জন নারী।

শনিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ৮০৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৮১ হাজার ৩২৭ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭০৯টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩৩টি, জিন এক্সপার্ট ৫৩টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৫২৩টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩২ হাজার ৮১০টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৩০টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫২০টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৬ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ শতাংশ ৭৩ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৭৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৪ জন, খুলনা বিভাগে ২৩ জন, বরিশাল বিভাগে সাত জন, সিলেট বিভাগে ১১ জন, রংপুর বিভাগে ছয় জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচ জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৩৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন এবং বাড়িতে চার জন মারা যান।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের এক জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এক জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চার জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬০ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩২ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে দুইজন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন এক হাজার ৫৬২ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৯৯৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন তিন লাখ ৪১ হাজার ৩৩ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন দুই লাখ ৫৯ হাজার ১৬৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৮১ হাজার ৮৭০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

জঙ্গিদের বিষয়ে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, জঙ্গিরা থেমে নেই এটা বলা যায়।

আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে।

শনিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতনরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও স্মৃতি জাদুঘর এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সারা পৃথিবী এখন সাইবার ওয়ার্ল্ডে বন্দি। জঙ্গিরাও একই মিডিয়ায় তাদের রিক্রুট এবং উদ্বুদ্ধ করছে। সম্প্রতি তালেবানরা আফগানিস্তানে যুদ্ধে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু মানুষ ঘর ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন আর কিছু পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত পরশু জঙ্গি সংগঠনের লিডিং পর্যায়ের একজনকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি। যিনি বোমা বিশেষজ্ঞ ও অনলাইনে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিতো। তারা ধাপে ধাপে উন্নতি করছিল, এই পুরো গ্যাংটাকে আমরা গ্রেফতার করতে পেরেছি।

জঙ্গিদের প্রধান টার্গেট আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এজন্য ১৫ আগস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠানস্থল না হলেও ২ কিলোমিটারের মধ্যেও যদি কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে তাহলে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে। আমরা মনে করি না এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে।

তবে কোনো ধরনের আশঙ্কা আমরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে যেকোনো ধরনের ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

জাতীয়

পদ্মা সেতুতে বারবার ফেরির ধাক্কার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতুতে ফেরি বার বার ধাক্কা দিচ্ছে। এতে হালকা আঘাত লাগলেও আমরা এটাকে হালকাভাবে দেখছি না। আমরা এতে বিব্রত হচ্ছি।

শুক্রবার সকালে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট,  শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট এবং শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দিঘাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

পদ্মা সেতুতে আঘাত লাগলে সেই আঘাত ‘হৃদয়ে লাগে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের কিছু নির্দেশনা ছিল। এই নির্দেশনা পালনের ক্ষেত্রে আমরা কিছু উদাসীনতা লক্ষ্য করেছি। এগুলো কেন হচ্ছে, এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় আমরা উচ্চ পর্যায়ে দায়িত্বশীলদের নিয়ে একটা সভা করব। সেই সভাতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের  শিমুলিয়ায় যাওয়ার পথে পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দিয়েছে ফেরি ‘‘কাকলি’’। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকাল পৌনে ৭টার দিকে সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরিটি। ফেরিচালক মো. বাদল হোসেনে এ তথ্য জানিয়েছে ।

শুক্রবার সকালে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শিমুলিয়া ঘাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রণালয়ে সভা হয়েছে। কিছু নির্দেশনা ছিল সে নির্দেশনা পালনের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।  এগুলো কেন হচ্ছে সে বিষয় নিয়ে আজ সন্ধায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত জানা যাবে। মন্ত্রী আরো বলেন আজ মাঝিকান্দি ঘাট পরিদর্শন করেছি।  পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হওয়ার পর বাংলাবাজার ঘাটটি আর ব্যবহার করা যাবে না সেতুর সার্বিক নিরাপত্তার কারণে। সে ক্ষেত্রে মাঝিকান্দি ঘাটটি ব্যবহারের কথা চিন্তা করবেন।

এর আগে গত সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। এ সময় ২০ জন যাত্রী আহত হন।

গত ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর সাত নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায় রো রো ফেরি শাহ জালাল। এতেও প্রায় ২০ জন যাত্রী আহত হন। সবগুলো ফেরিই বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া যাওয়ার পথে এ ধাক্কার ঘটনা ঘটে।

জাতীয়

করোনায় দেশে টানা ১৮ দিন পর মৃত্যুর সংখ্যা ২শর নিচে নামল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৮১০ জনে। একই সময়ে দেশে করোনায় নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৬৫ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট শনাক্তের সংখ্যা হলো ১৪ লাখ ৫ হাজার ৩৩৩ জন।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ২১৫ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ১২৬ জন।

জাতীয়

পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে আবারও ফেরির ধাক্কা লেগেছে। শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে কাকলি নামে একটি ফেরি পিলারে ধাক্কা দেয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের। তবে পিলারের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে তিনি জানান।

এর আগে চারদিন আগে (৯ আগস্ট) একই পিলারে আরেকটি ফেরির ধাক্কা লেগেছিল। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘আমরা ২ থেকে ৬ নম্বর পিলারের মাঝখান দিয়ে ব্যবহার করার কথা বলা হলেও তা ব্যবহার না করে বিআইডব্লিউটিসি বেশী স্রোতের স্থান দিয়ে অন্য পিলারের মাঝ দিয়ে ফেরি চালাতে গিয়ে পিলারে বারবার ধাক্কা লাগছে।’

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আজ বসবে পদ্মা সেতুর ৩৩তম স্প্যান

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, সেতুর ১১-১২ পিলারের মধ্য দিয়ে ফেরিটি আসার কথা থাকলেও নদীর প্রচণ্ড স্রোতে ও বাতাসের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির একপাশে ফাটল ধরলেও পানির স্তরের ওপরে হওয়ায় ফেরিতে পানিও ওঠেনি এবং কেউ আহত হয়নি এবং ফেরিটি নিয়ে নিরাপদে শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও তিনবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসার পথে পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগে। গত ২০ ও ২৩ জুলাই ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারে এবং ৯ আগস্ট ১০ নম্বর পিলারে আঘাত লাগে। এ ঘটনায় থানায় জিডি, তদন্ত কমিটি গঠন ও ফেরি চালকদের সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।

জাতীয়

দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘন্টায় ২১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২২ জন কম মারা গেছেন। গতকাল ২৩৭ জন মারা গিয়েছিল। আজ মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১০৭ ও নারী ১০৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৬১৩ জনে। এদিকে আজ নতুন আক্রান্ত ১০ হাজার ১২৬ জন।

আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গতকালও  মৃত্যুর হার একই ছিল। এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১৫ হাজার ৬২৫ জন, ৬৬ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং নারী ৭ হাজার ৯৮৮ জন, ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

গত ২৪ ঘন্টায় মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী ২ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৫৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৬৩ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী ৩৬ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী ৯ জন এবং ১০০ বছরের অধিক বয়সী ১ জন। মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৮ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ জন, সিলেট বিভাগে ২২ জন, রংপুর বিভাগে ১৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন রয়েছে। এদের মধ্যে ১৭৮ জন সরকারি, ৩৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৩ জন বাসায় মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫ হাজার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ হাজার ১২৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ৪৪ হাজার ৪৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ হাজার ৪২০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৯৯ শতাংশ কম।

এদিকে ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৩৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪১৭ জন। ঢাকায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতকাল এই জেলায় ১৪ হাজার ৯৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৩ জন। যা ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ। এই জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩৭ জন। গতকাল ৫৬ জন মারা গিয়েছিল।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৮৩ লাখ ১ হাজার ৫৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৯০ জন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১৩ হাজার ৩১৩ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৬৭৭ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ৯০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি।

করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৯৮৮ জনের। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৪৪ হাজার ৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৯৮০ টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৪৪ হাজার ৪৩০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৬৪৮ টি নমুনা বেশি পরীক্ষা হয়েছে।

জাতীয়

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আবেদনটি উত্তরা পূর্ব থানাকে মামলা হিসেবে গ্রহণের করার নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ আদেশ দেন। এর আগে একই আদালতে মামলার আবেদন করেন পুলিশের এক নারী পরিদর্শক। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে নথি পর্যালোচনায় আদেশের জন্য রেখেছিলেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান এ তথ্য জানান।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন। বাদী আগে থেকেই সেখানে কর্মরত ছিলেন। মিশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় বিভিন্ন অজুহাতে সহযোগিতার নামে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এসপি। সেখানে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আসামি বাদীর বাসায় গিয়ে তার ব্যবহৃত গাড়ির চাবি চান। বাদী চাবি ইউনিফর্মের পকেট থেকে আনতে গেলে আসামি পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে ধর্ষণ করেন। এরপর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি হুমকি-ধমকি দেন। ২২ ডিসেম্বর ক্ষমা চেয়ে আবারও তাকে ধর্ষণ করেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি মৌখিকভাবে বিয়ে করে বাদীকে আবারও ধর্ষণ করেন। এরপরও আরও কয়েক দফা বাদীকে ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন।

নিকাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে বাদীকে গ্রহণ করার তাগিদ দিলে মোক্তার হোসেন তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বাদীকে এড়িয়ে যেতে থাকেন। এ অবস্থায় গত ২১ এপ্রিল বাদী মোক্তার হোসেনের রাজারবাগের বাসায় গিয়ে আশ্বাস অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। এতে মোক্তার হোসেন অস্বীকৃতি জানান। মোক্তার হোসেন, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে বাদীকে মারধর করেন এবং হুমকি-ধামকি দেন।

করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান বাদী। গত ১০ আগস্ট বাদী উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলার করার জন্য বলে। এজন্য আদালতে এসে মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন বাদী।

এ ব্যাপারে পিপিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আইন অনুযায়ী বিষয়টি তদন্ত হবে। তদন্তেই সব জানা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যিনি মামলা করেছেন তিনি মামলা করার আগে পিবিআইতে কোনো অভিযোগ করেননি।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৩ হাজার ৩৯৮ জনে। গত ১০ আগস্টও দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

বুধবার (১১ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৪২০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪২ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ হাজার ৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এদিন পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৪৩০টি নমুনা। যেখানে শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একদিনে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৩১৩ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মারা যাওয়া ২৩৭ জনের মধ্যে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৮৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চারজন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুইজন ও এক বছরের নিচে একজন রয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৩৪ জন ও মহিলা ১০৩ জন। যাদের মধ্যে বাসায় ৩ জন ছাড়া বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। একই সময়ে বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১০৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ২০ জন, বরিশাল বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ২৩ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন মারা গেছেন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।