জাতীয়

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যার মূল শুটার মো. মাসুম ওরফে আকাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার পাঁচদিন আগে মাসুম কাট-আউট পদ্ধতিতে টিপুকে হত্যার চুক্তি করেন।

রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, হত্যার আগের দিন টিপু রেস্টুরেন্ট থেকে বাসার উদ্দেশ্যে বের হলে রাস্তা অনুসরণ করে গুলি করার প্রস্তুতি নেন মাসুম। তবে বেশি লোকজন থাকায় সেদিন ব্যর্থ হন। ঘটনার দিন (২৪ মার্চ) এক ব্যক্তি টিপুর রেস্টুরেন্টে অবস্থান করে মাসুমকে আপডেট দিতে থাকেন।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তার সহযোগী যারা ছিল, এ ঘটনার পেছনে কারা ছিল- তাদের গ্রেফতার করবো। এছাড়া মোটরসাইকেল ও অস্ত্র উদ্ধার করবো।

টিপুকে হত্যা করতে কত টাকা কন্ট্রাক্ট হয় জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, কত টাকার বিনিময়ে তা জানা যায়নি। তবে গ্রেফতার মাসুমের নামে এলাকায় বেশকিছু মামলা রয়েছে। সেই মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য টিপুকে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টায় রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ঐদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।

জাতীয়

পথশিশুদের জন্য কাজ করতেন ডা. আহমেদ মাহী বুলবুল, স্বেচ্ছাসেবী আরও সংগঠনেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি যখন আক্রান্ত হলেন, জখম হলেন, তখন কাছের হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক হয়েও প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও তিনি পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

৩৮ বছর বয়সী এই দন্ত চিকিৎসক রোববার ভোরে শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বেরিয়ে রোকেয়া সরণীতে আক্রান্ত হন। তিনি তখন ব্যাটারিচালিত রিকশায় ছিলেন। হামলাকারীরা তার উরুতে ছুরিকাঘাত করে যায়।

বুলবুলকে তখনই কাছের আল হেলাল হাসপাতালে নিয়েছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু বেসরকারি এই হাসপাতালে তাকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।

আল হেলাল হাসপাতাল কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, বুলবুলকে তাদের হাসপাতালে নেওয়াই হয়নি।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ভিন্ন কথা।

দিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পাওয়া যায় মো. ইসমাঈল নামে স্থানীয় এক নিরাপত্তাকর্মীকে। তিনি হামলার স্থানটি দেখিয়ে বলছিলেন, এখানেই ঘটেছে ঘটনা।

মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞে চারদিক ধুলোয় ধূসর। এর মধ্যে এক কোণায় রক্তে কালচে হয়ে ছিল অনেকটা মাটি। তার কয়েকশ গজ দূরেই আল হেলাল হাসপাতাল।

ইসমাইল বলেন, আল হেলাল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল বুলবুলকে। কিন্তু ওই হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা হয়নি।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল মর্গে বন্ধুর লাশের অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদ সিরাজও বলেন, “প্রথমে সেই (আল হেলাল) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তারা পুলিশ কেস বুঝতে পেরে বুলবুলকে হাসপাতালেই ঢুকতে দেয়নি। তারা চিকিৎসা না দিয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এখানেও কিছু সময়ক্ষেপণ হয়েছে, যার কারণে অতিরিক্ত রক্তপাতেই তিনি মারা গেছেন।”

পুলিশের ভাষ্য, এই চিকিৎসকের ডান পায়ের উরুতে একটি আঘাতই করা হয়েছিল। উরুর সেই জখম থেকে অনেক রক্ত পড়ছিল।

ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাহতাব উদ্দীন বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শীদের যে বর্ণনা, সেটা হচ্ছে, তিনি চিৎকার করার কারণে ছিনতাইকারীরা চলে যায়। তিনি যখন দেখেন রক্ত পড়ছে, তখন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে আল হেলাল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

“আল হেলাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসা করতে না পেরে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যাওয়ারও অনেকক্ষণ পরে তিনি আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়েন।”

তবে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, বুলবুলকে মৃতই আনা হয়েছিল।

বুলবুলের স্ত্রী যে থানায় মামলা করেছেন, সেই মিরপুর থানার ওসি মোস্তাজিরুল ইসলাম বলেন, “সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের কাগজে লেখা রয়েছে- ‘ব্রট ডেড’।”

সোহরাওয়ার্দীতে ময়নাতদন্তের পর বিকালে বুলবুলের লাশ তার স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

ময়নাতদন্তে কী পেয়েছেন- জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সেলিম রেজা বলেন, “অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে।”

বুলবুলের স্বজনদের দাবি, আল হেলাল হাসপাতাল যদি প্রাথমিক চিকিৎসাটা দিত, যদি রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করত, তাহলে হয়ত বুলবুলকে মরতে হত না।

বুলবুলের সঙ্গে ‘পথশিশু সেবা সংগঠনে’ যুক্ত সাখাওয়াত আলী বলেন, “বুলবুলের উরুতে যেই জখমের চিহ্ন আছে, এতটুকু জখমে কেউ মারা যেতে পারে? সেটা খুবই রহস্যজনক।”

বুলবুলের উরুতে ছুরির যে একটাই জখম ছিল, সেটা তেমন গুরুতর মনে হয়নি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও।

মাহতাব বলেন, “ডান পায়ের উরুতে আঘাতের ফলে একটা লোক মারা গেল, এটা আপনাদের মতো আমার কাছেও রহস্য। এটা রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু, না অন্য কারণে, তা ময়নাতদন্ত রিপোর্টেই উঠে আসবে।”

দুপুরে তিনি যখন একথা বলছিলেন, তখনও ময়নাতদন্ত হয়নি।

ময়নাতদন্তের পর এনিয়ে প্রশ্ন করলে সোহরাওয়ার্দীর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সেলিম রেজা বলেন, “মেজর কতগুলো রক্তনালী আছে। এগুলোর কোনটা কাটা গেলে ব্লিডিংয়ে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।”

পুলিশি ঝামেলা এড়াতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো থেকে হামলায় জখম ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো।

দুপুরে আল হেলাল হাসপাতালে গিয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি এই হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক পলাশ কান্তি বলেন, আহত বুলবুলকে তার হাসপাতালে ঢোকানোই হয়নি।

হাসপাতালে কি জরুরি বিভাগ ছিল না, কেন ঢোকানো হল না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা ডিউটি ডাক্তার বলতে পারবেন। আপনি এখন যে ডিউটি ডাক্তার, তার সঙ্গে কথা বলেন। আগের ডিউটি ডাক্তার তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে গেছেন।”

হাসপাতালের দুপুরে কর্মরত চিকিৎসক জিয়া দাবি করেন, বুলবলুকে হাসপাতালে আনাই হয়নি।

বুলবুল ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন বলে পুলিশ ধারণা করলেও তার পরিবারের ধারণা ভিন্ন।

বুলবুলের শ্বশুর ইয়াকুব আলী বলেন, “যদি টাকা আর মোবাইল দুইটাই সাথে থাকে, তাহলে এটা কীভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়?”

বুলবুলের কাছে ১২ হাজার টাকা ছিল এবং তা খোয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

বিএনপি ঘরানার চিকিৎসক বুলবুল মগবাজারে ‘রংপুর ডেন্টাল’ নামের একটি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। পাশাপাশি গত পাঁচ বছর ধরে ‘মেসার্স রংপুর ট্রেডার্স’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও চালাতেন তিনি৷

ঠিকাদারি কাজে নোয়াখালী যাওয়ার জন্য ভোরে বুলবুল বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন বলে জানান তার শ্বশুর ইয়াকুব।

তবে পুলিশ কর্মকর্তা মাহতাব বলেন, “আমরা যতদূর জানি, তিনজন ছিনতাইকারী ছিল। এরা এই ঘটনাটা ঘটিয়েছে।”

হত্যাকাণ্ডস্থলের আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তার ভিত্তিতে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তিনজন ছিনতাইকারী ঘটনার পর দুটো দলে ভাগ হয়ে হেঁটে গলির পথ ধরে চলে যায়।

জাতীয়

দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সভায় বসছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আগামী ৫ এপ্রিলের এ বৈঠকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ রোববার সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান ইসির প্রথম সভা হবে ৫ এপ্রিল। এ সভায় সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে কুমিল্লার ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে ইসি। কোনো জটিলতা না থাকলে রমজানে তফসিল দিয়ে দিতে পারে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুরোধেই আমরা স্থানীয় নির্বাচনগুলো করে থাকি। কোনো ধরনের জটিলতা না থাকলে স্থানীয় সরকার বিভাগের ক্লিয়ারেন্স পেলেই সভায় আলোচনা করে কুমিল্লা ভোটের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি জানান, রমজান মাসে ভোট হবে না। তবে মে মাসে নির্বাচন করতে হলে রমজানের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভোটের তারিখ ঈদের পরে নির্ধারণ করা হতে পারে।

২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ মে প্রথম সভা হয়।

তাই এই করপোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে এ বছরের ১৬ মে। মেয়াদ শেষের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

আগামী সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সব দলের আস্থা অর্জন। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন তাদের নিজেদের প্রমাণ করার ক্ষেত্র হিসেবে দেখছে বিশ্লেষকরা।

জাতীয়

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের বিভীষিকাময় কালরাতের হত্যাযজ্ঞ স্মরণে আজ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ। এই ১ মিনিট অন্ধকারে ছিল পুরো দেশ।এর মাধ্যমে অর্ধশতক আগে এই রাতে নিরীহ বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর নিধনযজ্ঞের বিভীষিকার স্মৃতি স্মরণ করা হলো।

১৯৭১ সালের এই দিনে রাতের আঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। অপারেশন সার্চলাইট নামে তারা মেতে ওঠে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যায়। জাতির জীবনে আসা এই ‘ভয়াল কালরাত’-এ ঘুমন্ত বাঙালিকে নির্বিচারে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ এদিন অর্থাৎ ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। তখন থেকে দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

এই সময়টায় সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় কোনো আলোকসজ্জা করা যাবে না বলে আগেই জানিয়ে রেখেছিল সরকার। তবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনাগুলো ব্ল্যাক আউটের আওতামুক্ত রাখা হয়।

জাতীয়

‘কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/আমি আর লিখব না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা/কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস/ব্যর্থ চল্লি­শে বসে বলবেন, ‘পেয়েছি, পেয়েছি’/কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে/ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।’ কবি হেলাল হাফিজ যে পতাকা ও স্বাধীনতার কথা বলেছেন সেই স্বাধীন দেশের পতাকা, সেই স্বাধীনতা এসেছে এ বাংলায়। সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে আজ আমরা স্বাধীনতার ৫১ বছরে।

১৯৭১ সালের আজকের দিনে হাজার বছরের পরাধীনতার শেকল ভেঙে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। আর সেই ঘোষণার পথ ধরেই ৩০ লাখ শহিদ আর চার লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্জন কালের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার। এ গর্ব বাঙালির।

বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দেশ। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিশ্বের বুকে এক স্বনির্ভর রাষ্ট্র। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রতীক। শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি, মানব উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ প্রগতির মডেল। তাই স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাঙালি আজ শ্রদ্ধায় স্মরণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার দেখানো সোনার বাংলার স্বপ্নের পথ ধরেই আজকের বাংলাদেশ। যার নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজকের দিনে জাতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী বীর সন্তানদের। স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের। জাতি স্মরণ করে দেশের জন্য, বাংলা ভাষার জন্য, স্বাধিকারের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা প্রতিটি মানুষকে।

বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকরা শোষণ এবং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীনতার ঘোষক, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীরশহিদদের। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সমর্থক, বিদেশি বন্ধু এবং সর্বস্তরের জনগণকে- যারা অধিকার আদায়ে ও মুক্তিসংগ্রামে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শকে মুছে ফেলার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা চিরতরে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাঙালি বীরের জাতি। কোনো কিছুই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বরং বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন মহামৃত্যুঞ্জয়ী। তাই নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বোঝাতে হবে- আজ তারা যে পথটি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা তৈরি করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভবিষ্যতেও তার দেখানো পথই হবে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হোক, মহান স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমার প্রত্যাশা।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, দেশে উন্নয়নের যে গতি সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ অচিরেই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাণীতে তিনি সব বাংলাদেশিকে ভেদাভেদ ভুলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে লালন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।

স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা’ পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেওয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’। কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে পৃথিবীর ইতিহাসের নিষ্ঠুর গণহত্যা। সেই কালরাত থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রু সেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

আজকের দিনে সারা দেশের মানুষ বারবার স্বাধীনতার মর্মবাণীটি অনুধাবণ করবে। আরও একবার শপথ নেবে সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে চলার।

জাতীয়

করোনাভাইরাস মহামারীতে আরও একটি মৃত্যুহীন দিন পার করল বাংলাদেশ, তিন দিন পর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে এল ফের একশর নিচে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৯২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে নতুন করে কোনো কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর আসেনি।

গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শুন্য দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ শনাক্তের হার ছিল শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। এরপর শনাক্তের হার এর চেয়ে নিচে আর নামেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নতুন রোগীদের নিয়ে মহামারীর মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৭২ জন হয়েছে। নতুন কারও মৃত্যুর খবর না আসায় মহামারীতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৮ জনই আছে।

বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে ৬৭ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। আর তাদের মধ্যে ৫৬ জনই ঢাকা জেলার।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সেরে উঠেছেন আরও এক হাজার ১১৪ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

গতবছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে সংক্রমণ কমে এলেও অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের দাপটে এ বছরের শুরুতে তা আবার বেড়ে যায়। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে তা আবার কমতে শুরু করে।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বরের পর গত ১৬ মার্চ একদিনে কারও মৃত্যু না হওয়ার খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই সময় টানা তিনদিন কারও মৃত্যু হয়নি।

এরপর ১৮ মার্চ দুজন, ২০ মার্চ ৩ জনের মৃত্যুর খবর আসে করোনাভাইরাসে। সোমবার এবং মঙ্গলবার দিন কারও মৃত্যু হয়নি, বুধবার একজনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার আরও একটি দিন করোনাভাইরাসে মৃত্যুহীন কাটল।

মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৭ কোটি ৫৯ লাখের বেশি।

জাতীয়

রাজধানীর শাহজাহানপুরের রাজপথে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু মহিলা কাউন্সিল ডলির স্বামী।

বৃহস্পতিবার রাতে মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ডলি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর। নিহত জাহিদুল সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ডলির স্বামী। এছাড়া তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি আরও জানান, একদল সন্ত্রাসী রাতে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে জাহিদুল ও প্রীতি নামে এক নারী নিহত হন। এছাড়া জাহিদুলের গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিহত প্রীতির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে সিআইডি ক্রাইম সিনসহ আমরা পরিদর্শন করেছি। তদন্তের স্বার্থে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা দরকার আমরা তা করেছি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনের সড়কে দুর্বৃত্তরা টিপুকে লক্ষ্য করে এ গুলি চালায় বলে জানান স্থানীয়রা।

নিহতদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪) মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। নিহত অপরজনের নাম সামিয়া আরেফিন প্রীতি (২৪)। তিনি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী ছিলেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম মুন্না। তিনি নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর গাড়িচালক বলে জানা গেছে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এর আগে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১১৭ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১২১ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৬ জন।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৩৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ জন।

সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৭৮টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১০ হাজার ৯৭৪টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৪৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৩টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার এক দশমিক ১১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২৯ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৪৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৪৩ হাজার ২০৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ আট হাজার ৩৯৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩৪ হাজার ৮০৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন কতটা আইন ও বিধি প্রয়োগ করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দেশের কয়েকজন বিশিষ্টজন। তারা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে আগামী সংসদ নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে কয়েকজন বক্তা এসব কথা বলেন।

সংলাপে বক্তারা সিইসি ও কমিশনারদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, কমিশনারদের এখন পাওয়ার বা হারানোর কিছু নেই। সেটি বিবেচনায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিশিষ্টজনদের এসব বক্তব্যের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনারা ঠিকই বলেছেন- আমাদের হারানোর আর কিছুই নেই। যেই বয়স হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই। আমাদের পাওয়ারও কিছু নেই। আপনাদের পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এখন ইতিবাচক কিছু করতে পারি, সবার অংশগ্রহণের নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায় তাহলে সেটাই আমাদের সফলতা হতে পারে। শতভাগ সফলতা হয়ত হবে না; কেউ কেউ বলেছেন ৫০-৬০ শতাংশও যদি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে সেটাও বড় সফলতা।

সংলাপে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, এই কমিশন ওই কমিশন কোনো ফ্যাক্টর না। সবই নির্বাচন কমিশন। আমাদের ব্যর্থতা কোথায় ছিল সেটা দেখতে হবে, যাতে সেই ব্যর্থতা সামনে না আসে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবীব খান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি নেই। আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করলে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারব।’

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমার চাওয়ার, পাওয়ার ও হারানোর কিছু নেই। সততার দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে চাই।’

দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে নির্বাচন ভবনে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ সংলাপ চলে। এতে সভাপতিত্ব করেন সিইসি নিজেই। সংলাপে দেশের ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক অংশ নেন। যদিও ৩৭ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এতে তিনজন নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান দেশের বাইরে থাকায় তিনি অংশ নেননি।

এর আগে গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। ওই সংলাপে ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানালেও ১৩ জন অংশ নেন।

আজকের সংলাপে যে বিশিষ্ট নাগরিকরা অংশ নিয়েছেন, তারা হলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সেন্টার ফর আরবার স্টাডিজের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইনডিজিনাস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিনহা এমএ সাঈদ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গভর্নেন্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের প্রেসিডেন্ট জহুরুল আলম, ঢাবির অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক এসএম শামীম রেজা।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১৬ জন।

সোমবার (২১ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।