জাতীয়

দেশে জঙ্গি অর্থায়নের ১৭টি তথ্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

মঙ্গলবার মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত সংস্থাটির সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

জঙ্গি অর্থায়নের এসব গোয়েন্দা তথ্যসহ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১১ ধরনের অপরাধের ৭৩টি তথ্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গত অর্থবছরে আর্থিক অনিয়ম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থাটির কাছে সবচেয়ে বেশি ৩৩৪টি আর্থিক তথ্য চেয়েছে পুলিশের সিআইডি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৫টি, দুর্নীতি দমন কমিশন ১১৪টি, পুলিশের অন্যান্য বিভাগ ৪৪টি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ৭টি তথ্য চেয়েছে। আর অন্যান্য সংস্থা চেয়েছে ৭৪০টি তথ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে বিএফআইইউ এর ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন ইউনিটটির প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস।

প্রশ্নোত্তর পর্বে ওই অর্থবছরে বাংলাদশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে জানতে চাইলে তা আইনগত কারণে জানানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ বিভিন্ন সূত্র থেকে মোট ৫ হাজার ২৮০টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পায়, যেগুলোর ৮৫ শতাংশই এসেছে ব্যাংকগুলো থেকে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় টাকার হিসাবে যা ৭৪ শতাংশ এবং সংখ্যার বিচারে ৪৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের সবগুলোই অপরাধ নয়। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সত্যিকারের অপরাধ খুঁজে বের করার কাজটি করে বিএফআইইউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ নিজেরা গবেষণা করে তিনটি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্য পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে আরও ১৪টি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্যের বিষয়ে এ ইউনিটের সাহায্য চাওয়া হয়।
আর বছরজুড়ে ৭৩ অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে ২১টি, দুর্নীতি ও ঘুষের ১৬টি, জালিয়াতির ১১টি, টাকা পাচারের ছয়টি, মানব পাচারে চারটি, কর ফাঁকির ঘটনা তিনটি বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে।

আগের বছরের তুলনায় এবার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন বাড়ার বিষয়ে বিএফআইইউ এর প্রধান মাসুদ বিশ্বস জানান, আগের চেয়ে প্রশিক্ষণ বাড়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন ধরার ক্ষমতা বেড়েছে।

তবে মাত্র ৭৩টি গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে এ ইউনিটের উপমহাব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে কাজ করা যায়নি বলে কম ‘রিপোর্ট’ করা গেছে।

আগের অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৭৫টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে মোট ১১৬টি বিভিন্ন অপরাধ খুঁজে বের করেছিল বিএফআইইউ।

জাতীয়

দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে বিদেশ থেকে তিনটি জাহাজে করে আসছে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল।

দেশের কয়েকটি শীর্ষ ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব আমদানি করেছে। দুটি জাহাজে ৩২ হাজার টন তেল এরই মধ্যে বন্দরে পৌঁছে গেছে, ৪২ হাজার টন নিয়ে আসছে আরেকটি জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অপরিশোধিত সয়াবিনের দুটি জাহাজ বন্দরের আউটারে এসেছে গত বৃহস্পতিবার। ওই দুটি থেকে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্য জাহাজটি ১৯ মার্চ আউটারে আসবে।

এসব সয়াবিন তেল পরিশোধনের পর রোজার আগেই বাজারে ঢুকবে বলে সয়াবিনের সঙ্কট থাকবে না আমদানিকারকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ‘এমটি লুকাস’ নামের একটি মাদার ট্যাংকার এনেছে ১২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন। এর মধ্যে টিকে গ্রুপের শবনম ভেজিটেবল অয়েল এনেছে পাঁচ হাজার টন, বে শিপিং করপোরেশন এনেছে ২ হাজার ৯৭৫ টন এবং সুপার রিফাইনারি এনেছে ৮ হাজার টন।

একই দিন বহির্নোঙরে আসা ‘এমটি প্যাসিফিক রুবি’তে এসেছে ২০ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এর মধ্যে রয়েছে মেঘনা গ্রুপের মেঘনা এডিবল অয়েল রিফাইনারির ৭ হাজার টন, সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন সিটি এডিবল অয়েলের ১০ হাজার টন।

৪২ হাজার ৮৫০ টন সয়াবিন তেল নিয়ে যে ‘এমটি স্ট্যাভেঞ্জার পাইওনিয়ার’ বন্দরে আসছে, তাতে সিটি গ্রুপ ছাড়াও টিকে গ্রুপ, সেনা এডিবল অয়েল, বালাদেশ এডিবল অয়েলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তেল রয়েছে।

আমদানিকারকরা জানান, আমদানি করা অপরিশোধিত সয়াবিন শুরুতে পতেঙ্গার ট্যাংক টার্মিনালে রাখা হবে। শুল্ক কর পরিশোধন শেষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় রিফাইন করে বাজারে ছাড়বে।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে সয়াবিন তেলের নতুন নামকরণ হয়েছে। কেউ কিনতে বা জানতেই চাইলে দোকানিরা তেলকে ডাকছেন ‘সোনার হরিণ’ নামে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সয়াবিন আমদানি অব্যাহত রেখেছি। দাম বাড়তি সত্ত্বেও বিদেশ থেকে সয়াবিন এনে খালাস করা হচ্ছে। খালাস শেষে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে বাজারজাত করা হবে।”

“আসন্ন রোজায় সয়াবিন তেলের সঙ্কট হবে না,” বলেন তিনি।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টনের মতো, যার ১৮ লাখ টনই আমদানি করতে হয়। আর ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

কোভিড মহামারীর মধ্যে গত কিছু দিন ধরেই বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

যুক্তরষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড’র তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ৭৩৫ ডলার।

তিন জাহাজে করে বাংলাদেশে আমদানি করা সয়াবিন কত দরে কেন হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য জানা যায়নি।

আমদানি মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট, পরিশোধন, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ যুক্ত করে বাজারের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এরমধ্যে দাম কমাতে কয়েক পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সরকার।

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “সরকার আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমিয়েছে। এর প্রভাব হয়ত বাজারে পড়বে। তবে আমাদের আমদানি করা সয়াবিনের ভ্যাটসহ অন্যান্য কর আগেই পরিশোধ করা হয়েছে।”

জাতীয়

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের লাশ গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগীতে পৌঁছেছে।

সোমবার রাত ১০টায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি হোসনাবাদে পৌঁছলে সেখানে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।

এ সময় হাদিসুরের লাশ দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী। কফিনের ভেতর পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া হাদিসুরের দেহ দেখে চিৎকার করতে থাকেন মা-বাবা, ভাইবোনসহ স্বজনরা। স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি এলাকার নারী-পুরুষরা।

নিহত হাদিসুরের ছোটভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স জানান, আগেই দাফনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পেছনের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে হাদিসুরের লাশ দাফন করা হবে।

এর আগে হাদিসুর রহমানের লাশবাহী তুরস্ক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি সোমবার দুপুর ১২টা ৭ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

রোববার দুপুরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো বিমানে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাশটি পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু ইস্তাম্বুলে তুষারপাত থাকায় গতকাল লাশ আনা সম্ভব হয়নি।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১১২ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৩৯ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ জন।

সোমবার (১৪ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৮০৮ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৭৮টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৩৫টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৬৭টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ৪০৪টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত একজন পুরুষ এবং তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৩৪ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৫০ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৪২ হাজার ৮৫৫ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ছয় হাজার ৩৮৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩৬ হাজার ৪৭০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে ভালোভাবে নির্বাচন করা কমিশনের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা চাই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অধিক অংশগ্রহণমূলক হবে।

রোববার (১৩ মার্চ) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এ কথা বলেন। সংলাপে ৩০ জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নেন ১৩ জন।

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা লাগবে। প্রথম দিকে বলেছি, ভালো ইলেকশন করাটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। স্টেক হোল্ডার যারা আছেন, তারাও যদি সমভাবে না আসে, রাজনৈতিক আবহ অনুকূল না হয়, দলগুলোর মধ্যে যদি মোটামুটি সমঝোতা না থাকে, পক্ষগুলো যদি বিবাদমান হয়ে যায় তাহলে আমাদের পক্ষে ভালোভাবে নির্বাচন করাটা দুরুহ। ’

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু রাজনৈতিক দলকে দেখছি তারা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থায় নিচ্ছে না এবং নির্বাচন থেকে দূরে থাকে তা হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না থাকে, ঘাটতি থাকে, তাহলে সে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতায় কিছুটা ভাটা পড়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করবো, আমাদের তরফ থেকে যত্ন করার জন্য। আপনারা সহযোগিতা করবেন। ’

কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য শিক্ষাবিদদের লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘ভালো নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছার অভাব হবে না। সামর্থ্যের অভাবের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের সংলাপের উদ্দেশ্যে ব্যক্ত করা হয়েছে। এই কমিশন নবগঠিত কমিশন। কমিশনের কাজ হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও লোকাল গর্ভমেন্ট নির্বাচন সম্পন্ন করা। ’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলেছেন। আগের নির্বাচন পুরো অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন কারণে হয়তো হয়নি। সেজন্য আমরা চাই নির্বাচনটা (দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন) যাতে আরো অধিক অংশগ্রহণমূলক হয়। ’

বিকেল তিনটা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে শিক্ষাবিদদের মধ্যে ড. জাফর ইকবাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন, ড. বোরহান উদ্দিন খান, অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, ড. সাদেকা হালিম, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমীন, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম মফিজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান। একজন নিজে আসতে না পারলেও তার প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।

ড. জাফর ইকবাল বলেন, ‘ইভিএম সম্পর্কে বলা হচ্ছে এটা নাকি অনেক হাই লেভেলের টেকনোলজি। আসলে তা না। এটা খুবই লো লেভেলের টেকনোলজি। এখন তো অনেক হাইটেক জিনিসপত্র আছে। আমাদের ভার্সিটির স্টুডেন্টরা ইভিএম নিয়ে প্রজেক্ট করে। ’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের সাবেক এ অধ্যাপক নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা যত ভালো কাজই করেন, গালি খেতেই হবে। গালি নিয়ে ভাববেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যেন বলতে পারেন, আমি কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ। ’

প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশেই যেন ভোট দিতে পারে, সে প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকে। তারাও দেশ নিয়ে ভাবে। তারা কীভাবে ভোট দিতে পারে সেটা দেখতে হবে। ’

জাতীয় পরিচয়পত্র প্রসঙ্গে জাফর ইকবাল বলেন, ‘ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেক জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল হচ্ছে। এটার জন্য অনেকে অনেক টাকা খরচ করেও সমাধান পাচ্ছেন না। কমিশন এটা দেখলে ও সমস্যার সমাধান করলে একটা পজিটিভ ইমপ্রেশন পড়বে। ’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার বৈঠকে বলেন, ‘বর্তমান সিস্টেমে আপনারা ভালো নির্বাচন করতে পারবেন না। হয় দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করুন, না হয় আগের কমিশনের মতো দায় নিয়ে বিদায় নেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন, সেটা হচ্ছে পদত্যাগ করে সম্মান বাঁচানো। আমরা ১৭ বার সংবিধান সংশোধন করেছি, আরেকবার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে এমন কিছু ক্ষতি হতো না। ’

ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, এই ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কারণ আমাদের দেশের ভোটারটা প্রযুক্তি সচেতন নয়। এছাড়া দেশের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল সংলাপে এসেও ইভিএম চায়নি।

তিনি এ সময় নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব না দিয়ে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়োগ করার পক্ষে মতামত দেন।

এই অধ্যাপক বলেন, নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক রদবদল অবশ্যই করতে হবে।

বৈঠকের পর অধ্যাপক সাদেকা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, এখনকার সিস্টেমে তো সবাই নিজ নিজ পদে থাকবেন। এমপিরা থাকবেন, মন্ত্রীরা থাকবেন, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এটা রেখে আমরা কীভাবে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করতে পারি তা আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে পরবর্তী নির্বাচন যেন স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক এবং অংশগ্রহণমূলক হয়, নির্বাচনে সহিংসতা যেন না হয়। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকেকে কীভাবে যুক্ত করা যায় সে কথা আমরা বলেছি।

এছাড়া নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ পূরণের ব্যবস্থা নিতেও বলেন তিনি।

ড. বোরহান উদ্দিন খান বলেন, আইনে সব আছে। নির্বাচনের ঘড়ির কাটা আপনাদের ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভারতের নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আপনারা কেন পারবেন না।

অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন বলেন, ইসির যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে। আইন দ্বারা স্বাধীনতার কোনো কমতি নাই। সেটা প্রয়োগ করতে হবে।

ইভিএম নিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা হচ্ছে। এটি আরো স্বচ্ছ করার সুযোগ আছে।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে ভোটের কিছুদিন আগে থেকে ইসির হাতে ন্যস্ত করতে হবে। সহিংসতা, ভোট জালিয়াতি এড়ানোর জন্য তড়িৎ ব্যবস্থাও নিতে হবে।

প্রবাসীদের বিষয়ে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, পোস্টাল ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটদানের বিষয়টি আরো কার্যকর করতে হবে। লাখ লাখ মানুষ বিদেশে রয়েছে। আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক অধিকার ভোট দেওয়া। প্রবাসীরা কেন এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

বৈঠকের চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সংলাপের আয়োজন করেছে।

আগামী ২২ মার্চ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এবং ৩০ মার্চ গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপে বসার কথা রয়েছে ইসির। এরপর নারী নেত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে সংস্থাটি।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ১১১ জনে।

একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৩৩ জন। এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৬ জনে। শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪১৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৬ জন।

২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৩৪৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৩৬৬টি নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের দুজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে ২ জন ঢাকার ও ১ জন রাজশাহী বিভাগের।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

জাতীয়

অবশেষে স্বাধীনতা দিবসে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-টরন্টো সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা।

সেজন্য সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে গুছিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটারে ‘বিমান হাফ-ম্যারাথন’ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আগামী ২৬ মার্চ টরন্টোতে বিমানের ফ্লাইট যাত্রা করবে।”

এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।তবে মহামারীর কারণে সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।

ঢাকা-টরন্টো সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরুর বিষয়ে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিমানের এই রুট চালু হলে কানাডার পাশাপাশি নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও উপকৃত হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০১৩ সালে এ বিষয়ে সুপারিশ করার পর তখনকার বিমানমন্ত্রী ফারুক খান কানাডার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা জানিয়েছিলেন।

২০১৭ সালে ঢাকায় কানাডার হাই কমিশনারের সঙ্গে তখনকার বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে এক বৈঠকও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু ফ্লাইট আর চালু হয়নি।

বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী শুক্রবার বলেন, “আমরা ঢাকা টু নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়েও অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। ঢাকা থেকে জাপানের নারিতাতে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সব কিছু চূড়ান্ত হয়েছে।

“শুধু করোনাভাইরাসের কারণে কার্যক্রম থেমে আছে। পৃথিবীর অন্য আন্তর্জাতিক গন্তব্যগুলোতেও বিমান অদূর ভবিষ্যতে ডানা মেলবে।”

সেবার মান নিয়ে ‘আপস করা হবে না’ মন্তব্য করে মাহবুব আলী বলেন, “বাংলাদেশের পতাকা বহন করে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমান উড়ে যায়। আমরা চাই সেই বিমান মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

“যে কোনো ধরনের অভিযোগ আমাদের জানাবেন। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিমানের সেবার মান নিয়ে আমরা কোনো আপস করবো না।”
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেছিলেন, “২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকা–টরেন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আগাচ্ছি। এই রুটে ফ্লাইট চালাতে গিয়ে ১৭টি শর্ত ছিল। এর মধ্যে ১৫টি পূরণ করা হয়েছে। বাকি দুটি শর্তপূরণের কার্যক্রম চলমান আছে। এরপর টরেন্টোতে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট যাবে।”

বিমানের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত হাফ-ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ১৮৬২ অ্যাথলেট। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিযোগী ছিলেন ২৫ জন।

প্রতিযোগিতায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার পুরুষ হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন স্নিগ্ধ, দ্বিতীয় হয়েছেন আলামিন এবং তৃতীয় হয়েছেন গোলাম রাহাত তোফায়েল।

সাড়ে ৭ কিলোমিটার নারী হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন আফসানা হালিমা, দ্বিতীয় হয়েছেন স্নেহা জান্নাত এবং তৃতীয় হয়েছেন সাদিয়া আক্তার রিনা।

২১ কিলোমিটার নারী হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন নাসরিন বেগম, দ্বিতীয় হয়েছেন হামিদা আক্তার জেবা এবং তৃতীয় হয়েছেন মৌসুমি আক্তার।
২১ কিলোমিটার পুরুষ হাফ ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন আসিফ বিশ্বাস, দ্বিতীয় হয়েছেন লিউক জেনারেল শো। তিনি চীনের বেইজিং থেকে সাইকেল চালিয়ে ঢাকায় এসেছেন। তৃতীয় হয়েছেন সামির হাসান খান।

প্রতি বছর এ ম্যারাথন আয়োজন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মার্চ আমাদের অহংকারের মাস। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। সুতরাং ভিন্ন আঙ্গিকে আজকের ম্যারাথনের আয়োজন। এখন থেকে প্রতিবছর বিমানের আয়োজনে আরও বড় পরিসরে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।”

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

ভোজ্যতেল, চাল-ডাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবার আগামী ২৮ মার্চ সারা দেশে আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। অপরদিকে একইদিনে সারা দেশে আধাবেলা হরতাল ডেকেছে বাম জোট।

শুক্রবার পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বিকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের বীরউত্তম মেজর হায়দার মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে একই দিন অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এই হরতাল কর্মসূচিতে বিএনপিও সমর্থন দিতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী  বলেন, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির ১১ দিনের কর্মসূচি চলছে। বাম দলের ডাকা হরতালে সমর্থনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, গণস্বাস্থ্যের মিডিয়া কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।

এদিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘ওই দিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল হবে। কর্মসূচি সফল করতে সোমবার থেকে ২৭ মার্চ সারা দেশে সভা, সমাবেশ, পদযাত্রা, মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রচারপত্র বিলি করার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।’

মুক্তিভবনে সংবাদ সম্মেলন বাম জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক জনগণকে নিজেদের বাঁচার প্রয়োজনে দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি সফল করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সব বাম প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক দল, সংগঠন, শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও নেতাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে একইদিন হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা, সমর্থন ও বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৭ জন। মারা গেছেন তিনজন। এ সময় ছয় বিভাগে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি।

আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আগের দিন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন ৩২৩ জন ও মৃত্যু হয়েছিল ১ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৭ হাজার ১০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ১ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সবাই পুরুষ। তাঁদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে আর একজন খুলনা বিভাগে।

দেশে করোনা পরিস্থিতি প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের প্রভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার। গত ৬ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। এর দুই সপ্তাহের মাথায় ২০ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় দৈনিক রোগী শনাক্ত ১৫ হাজারের ওপরে উঠেছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা ১০ হাজারের ওপরেই ছিল। এরপর নিয়মিতভাবে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কমছে। দেশে করোনা সংক্রমণ কমায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে বিধিনিষেধ।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ২৪৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১০০ জনের। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৭৯ জন।

জাতীয়

করোনার টিকা কেনা ও টিকাদান কার্যক্রম মিলে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২ উপলক্ষে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একদিনে ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছি। যা একটি রেকর্ড। এ পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি ডোজ প্রথম, সাড়ে ৮ কোটি ডোজ দ্বিতীয় এবং ৫০ লাখ বুস্টার ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এত বড় একটি কর্মযজ্ঞে তেমন কোনো অনিয়ম বা ত্রুটি দেখা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অল্প সময়ে ২২ কোটি দিয়ে করোনা মহামারি থেকে দেশকে রুখে দেওয়ায় ব্লুমবার্গ করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে অষ্টম অবস্থানে তুলে এনেছে।করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। টিকা ক্রয় ও টিকা দান কার্যক্রম মিলে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দ্রুতই আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে।’

দেশে কিডনি বিকল রোগের ভয়াবহতা বাড়ছে মন্তব্য করে জাহিদ মালেক এখনই রোগটির বিষয়ে সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে করোনায় দিনে ২০ জন মানুষ মারা গেলে আমরা কত চিন্তায় থাকি। অথচ কিডনি বিকল হয়ে দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। ক্যান্সারে দিনে দুই থেকে তিনশ মানুষ মারা যাচ্ছে। সেগুলো নিয়ে আমরা খুব বেশি সচেতন থাকি না।’