জাতীয়

দেশে গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে; সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ১ হাজার ৭৬৫ জনের মধ্যে।

দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা ৩ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৬ মে ১ হাজার ৮২২ জন আক্রান্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর একদিনে ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল ৯ মে।

গত কয়েক দিন ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যু সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮ লাখ ২ হাজার ৩০৫ জন হয়েছে। আর করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৬৬০ জন।

সরকারি হিসাবে, আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ১ হাজার ৭৭৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৪২ হাজার ১৫১ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা আট লাখ পেরিয়ে যায় এ বছর ৩১ মে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৩৫ লাখের বেশি মানুষের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫০৩টি ল্যাবে ১৮ হাজার ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৩টি নমুনা।

মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ২৬ জন পুরুষ আর নারী ১৫ জন। তাদের ২৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ১০ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৩ জন বাড়িতে মারা যান।

তাদের মধ্যে ২৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

মৃতদের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৬ জন রাজশাহী বিভাগের,৪ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের এবং ৩ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৬৬০ জনের মধ্যে ৯ হাজার ১৩৯ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৫২১ জন নারী।

জাতীয়

ঢাকার মহাখালী আর বনানী থেকে গত দুই দিনে যে ব্যক্তির লাশের খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করা হয়েছিল, তার প্রথম স্ত্রীই তাকে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলছেন, ময়না মিয়া নামের ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় স্ত্রীর দিকে ‘বেশি মনোযোগ’ দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে তাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম শিল্পী।

“জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে হাত ও মুখ বেঁধে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর স্ত্রীই তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে ছয় টুকরা করে।”

নিহত ময়না মিয়া পেশায় ছিলেন অটোরিকশা চালক।

( নিহত ময়না মিয়া পেশায় ছিলেন অটোরিকশা চালক )

রোববার রাত ৯টার দিকে বনানী থানা এলাকার মহাখালী কাঁচা বাজারের কাছে সড়কে একটি প্লাস্টিকে ড্রাম থেকে এক ব্যক্তির হাত-পা-মাথাহীন দেহখণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা সে সময় জানিয়েছিলেন, বৃষ্টির মধ্যে ড্রামটি সেখানে ফেলে গিয়েছিল কেউ।

এরপর সোমবার ভোররাতে মহাখালী বাস টার্মিনালে একটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় চারটি খণ্ডিত হাত-পা। তখনও মাথাটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।

উদ্ধার করা ওই হাত থেকে আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইজের সঙ্গে মিলিয়ে পুলিশ জানতে পারে, নিহতের নাম ময়না মিয়া, বাড়ি কিশোরগঞ্জে।

এরপর সোমবার দুপুরে বানানীর একটি অফিস থেকে ময়না মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম শিল্পীকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যেই সোমবার বিকালে বনানী লেক থেকে ময়না মিয়ার মাথা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন বলেন, ঢাকার বানানীর টিঅ্যান্ডটি কলোনির একটি টিনশেড ঘরে প্রথম স্ত্রী ফাতেমাকে নিয়ে থাকতেন ময়না মিয়া। আর দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। ফাতেমার ঘরে ১০ ও ৬ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে ময়নার।

“জিজ্ঞাসাবাদে ফাতেমা বলেছেন, তাকে সময় না দিয়ে ময়না মিয়া দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিনকে বেশি সময় দিত। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।”

স্বামীকে খুন করার আগে ফাতেমা তার দুই সন্তানকে ময়মনসিংহে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বলে পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ময়না মিয়ার একটি অটোরিকশা আছে কিশোরগঞ্জে। তিনি সেটা নিজে চালাতেন, আবার কখনও অন্য চালককে ভাড়াও দিতেন। সেখানে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেই তিনি বেশিরভাগ সময় থাকতেন।

প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বনানী এলাকায় একটি বেসরকারি অফিসে রান্নার কাজ করেন। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই সংসার খরচের টাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সমস্যা চলছিল। গত ২৩ মে থেকে ময়না মিয়া ঢাকায় ফাতেমার সঙ্গেই ছিলেন।

ফাতেমাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলেন, “স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করার পর ফাতেমা কড়াইল এলাকা থেকে দুই পাতা ঘুমের ট্যাবলেট কিনে আনেন। শুক্রবার রাতে জুসের সাথে স্বামীকে তা খাইয়ে দেন। তাতে পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়না মিয়া ঘুমে অচেতন থাকেন।

“সন্ধ্যার দিকে কিছুটা জ্ঞান ফিরে পেয়ে তিনি স্ত্রীকে গালমন্দ করতে শুরু করেন এবং আক্রমণ করতে গিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তিনি ‘পানি পানি’ বলে আর্তনাদ করলে ফাতেমা আবারও ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুস তার মুখে ঢেলে দেন।”

ফাতেমা পুলিশকে বলেছেন, ময়না আবার নিস্তেজ হয়ে খাটে পড়ে গেলে তিনি ওড়না দিয়ে তার দুই হাত শরীরের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন এবং টেপ দিয়ে মুখ আটকে দেন।

যুগ্ম কমিশনার হারুন বলেন, “ফাতেমা একটি চাকু দিয়ে ময়নার গলা কাটা শুরু করলে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। নিজের হাত মুক্ত করে ময়না তার হাতে খামচি ও কামড় বসিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে দুজন  খাট থেকে পড়ে গেলে ফাতেমা ভিকটিমের বুকের উপরে উঠে তার গলার বাকি অংশ কেটে দেয়।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বামীকে হত্যার পর সারা রাত লাশের পাশেই ছিলেন ফাতেমা। সকালে লাশ গুম করার জন্য তিনি চাকু আর দা দিয়ে ময়নার লাশ ছয় টুকরা করেন এবং খণ্ডিত অংশ তিন ভাগ করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলেন, “১৩ শ টাকা দিয়ে রিকশা ভাড়া করে প্রথমে আমতলী এলাকায় ড্রামে ভরা শরীরের মূল অংশ ফেলে দেন ফাতেমা। পরে মহাখালীর একটি বাস কাউন্টারের সামনে দুই হাত, দুই পা ভর্তি ব্যাগ রেখে চলে যান।

“সেখান থেকে বাসায় এসে কাটা মাথা আরেকটি ব্যাগে ভরে তিনি বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্বপ্রান্তে যান। গুলশান লেকে সেই ব্যাগ ফেলে দিয়ে তিনি বাসায় ফিরে যান।”

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এ পর্যন্ত তদন্তে তারা যে তথ্য পেয়েছেন, তাতে ফাতেমা একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

রিকশা চালক কিছু জানত কি না- এই প্রশ্নে পুলিশের এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, “হয়ত কিছু বুঝতে পেরেছে। পুলিশ সেই রিকশাচালককে খুঁজছে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফাতেমার দেওয়া তথ্যে তার বোরখা, ভিকটিমের রক্তমাখা জামাকাপড়, ছুরি, দা, পেয়ালা ও  শীল-পাটা উদ্ধার করা হয়েছে।

ময়নার দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেছেন, সেখানে ফাতেমাকেই একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

জাতীয়

সতের দিনে আরও প্রায় পাঁচশ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ১২ হাজার ৫১১ জনের।

সংক্রমণের বিস্তার রোধে কঠোর লকডাউনের মধ্যেই গত ১১ মে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ১২ হাজার পেরিয়েছিল। তার সঙ্গে আরও পাঁচশ নাম যুক্ত হতে সময় লাগল ১৭ দিন।

গত এক দিনে আরও ১ হাজার ৩৫৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ জন হয়েছে।

সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ১ হাজার ৬৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন; এ পর্যন্ত সুস্থ মোট হয়েছেন ৭ লাখ ৩৬ হাজার ২২১ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৫ লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে,গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪৯৭টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৬০৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ১ হাজার ৮৭৪টি নমুনা।

শুক্রবার নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৩ লাখ ১১ হাজার ৪২২টি; বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৫২টি।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৮ জন পুরুষ আর নারী ১৩ জন। তাদের ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং একজন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তাদের মধ্যে ১৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, ১ জনের বসয় ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

মৃতদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা বিভাগের, ১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৬ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ৫১১ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৩৭ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৪৭৪ জন নারী।

জাতীয়

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচারকালে ট্রাকভর্তি সরকারি বই জব্দ করেছে থানা পুলিশ। এ সময় অমৃত মোদক (৫৬) ও মো. সেলিম মিয়া (৫২) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃস্পতিবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে ঝিনাইগাতী বাজার এলাকা থেকে ট্রাকসহ বইগুলো জব্দ করা হয়।

আটক অমৃত মোদক উপজেলার ঘোষগাঁও এলাকার মৃত হেমন্ত মোদকের ছেলে ও সেলিম মিয়া রামেরকুড়া এলাকার মৃত গোলাপ হোসেনের ছেলে। তারা দুইজনই পুরাতন ভাঙ্গারি মালামাল কেনাবেঁচা করে। জব্দ করা বইগুলো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ২০২১ সালসহ বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের এবং বিভিন্ন শ্রেণীর। জব্দ করা বইগুলোর মধ্যে বাংলা, ইংরেজী, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, আনন্দ পাঠসহ বিভিন্ন শ্রেণীর বই রয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঝিনাইগাতী বাজার এলাকা থেকে মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর (ঢাকা মেট্রো ট- ১৪-১৩০৫) ট্রাকভর্তি প্রায় ৩ হাজার ৭০০কেজি ওজনের বই পাচারের গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এলাকা ঘুরে পুরাতন ভাঙ্গারি মালামাল কেনার ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে এসব বই কিনে নিয়েছে তারা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়ে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন। পরে ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান বলেন, শিক্ষা বিভাগে বই আসার পর সেগুলো চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। সুতরাং এসব বই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্রি করা হতে পারে।

জাতীয়

আরেক দফা ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১৩ জুন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বুধবার (২৬ মে) এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী ১২ আগামী জুন পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধির ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিভিতে দেখছি ১২ জুন পর্যন্ত ছুটি বাড়লো। আবারও বলছি ১৩ জুন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কারো ছয় দিন হবে কারো একদিন দিন হবে। যারা ২০২১ সালে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তারা সপ্তাহে ছয় দিন এবং অন্য ক্লাসগুলোর একদিন ক্লাস হবে এবং পর্যায়ক্রমে এটা বাড়ানো হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েরটা সিদ্ধান্ত নেব ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে খুব শিগগিরই আলোচনা করে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে কত দ্রুত খুলে দিতে পারি, আমরা সেই চেষ্টা করব।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, আমরা স্কুলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পঞ্চম শ্রেণিগুলো সপ্তাহে ছয়দিন এবং বাকিগুলো একদিন করে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন আমরাও (প্রাথমিক) ১৩ জুন থেকে স্কুলগুলো খোলার চেষ্টা করব।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা যেন দ্রুত খুলে দিতে পারি সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেন সংক্রমণের হার না বাড়ে। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের মধ্যে এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। আমি অনুরোধ করবো সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি যাতে আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইন রেডিও এবং সংসদ টিভিতে পাঠদানের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবশেষ আগামী ২৯ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৪৫৮ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৯৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৩ জনে। মৃত ১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১০ জন ও ৭ জন নারী।
বুধবার (২৬ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৬ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৮৬টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১২৯টি, জিন এক্সপার্ট ৪২টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ৩১৫টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৬ হাজার ৩৪২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬ হাজার ৪৩৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৮ লাখ ৭১ হাজার ৩৫৩টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৯ দশমিক ১১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৪৬ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন। এছাড়া খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে ৪ জন রয়েছেন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১১ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৬ জন।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরে ঊর্ধ্বে ১১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৫৩৯ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৪৭ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ৩২ হাজার ৫৯৭ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ২০৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৩৯৩ জন।

এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত হয় সাত হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে একদিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড। আর গত ৬ এপ্রিল একদিনে করোনা শনাক্ত হয়েছিল সাত হাজার ২১৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আগামীকাল রবিবার সকালে সেটি আরো শক্তি সঞ্চয় করবে এবং পরদিন সোমবার বেশি শক্তি সঞ্চয় করে সেই নিম্নচাপ উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। আজ শনিবার (২২ মে) ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরো অগ্রসর হতে থাকবে এবং তীব্রতর হবে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ এটি পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়বে। তবে এটি কোথায় আঘাত হানবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে বাংলায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। ২৬ মে সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর ওড়িশা এবং বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে ভারতের অলিপুর আবহাওয়া অধিদফতর।

সুপার সাইক্লোন হয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে ‘যশ’। সেজন্য পুরো উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। শনিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

২৬ মে ভূমিতে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভূমিতে ওঠার সময় এর গতিবেগ হবে ১২০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। এটা বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জের কাছাকাছি আছে।

এখন পর্যন্ত এর ডিরেকশন ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে। এটি যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকে যদি সোজাসুজি আসে তবে আমাদের খুলনা বিভাগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটা জানার পর আমরা আবহাওয়া অধিদফতরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছি, বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে প্রস্তুতি সভা দিয়েছি। বিকেল প্রস্তুতি সভার পর মাঠ প্রশাসনে আমাদের নির্দেশনা পাঠিয়ে দেব। ইতিমধ্যে সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রচার কাজ শুরু হচ্ছে।

জাতীয়

জমি দখল নিয়ে বিরোধের জেরে পল্লবী এলাকায় একাধিক হত্যাকাণ্ডে সাবেক এমপি এমএ আউয়ালের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পল্লবীর সাহিনুদ্দীন হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে আছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু সাহিনুদ্দীন নয়, গত ১৫ বছরে ওই এলাকায় যে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তার বেশ কয়েকটির সঙ্গেই আওয়ালের সম্পৃক্ততার তথ্য মিলেছে। তবে ওই তথ্যগুলো এখন যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

এদিকে মাত্র একবার এমপিও হলে আউয়ালের ঘনিষ্ঠ সহকারীদের অনেকেই এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এলাকায় এখন তার সহকারীদের নিয়েই আলোচনা চলছে।

পল্লবীর সাহিনুদ্দীন (৩৩) হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে র্যাব গ্রেফতার করেছে আউয়ালকে। শনিবার ছিল ৪ দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন। একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, একাধিক হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেগুলো যাচাই বাছাই ছাড়া এখন বলা ঠিক হবে না। দ্রুত বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-৪ সাহিনুদ্দীন হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত করছে। র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, শুধু এই হত্যাকাণ্ড নয়, আরও কোনো হত্যাকাণ্ডে আউয়াল সম্পৃক্ত কি-না সেগুলোসহ সব ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি ওই এলাকায় জমি-জমা নিয়ে এতদিন যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। র্যাব প্রত্যেকটি বিষয়ে তদন্ত করছে, পাশাপাশি অপরাধীদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু সাহিনুদ্দীন নয়, গত ১৫ বছরে ওই এলাকায় জমি-জমার দখল নিয়ে বিরোধে অন্তত ৭ জন খুন হয়েছেন। সর্বশেষ গত ১৬ মে পল্লবীর ১২ নম্বর সেক্টরের ডি-ব্লকে ৩১ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে একটি গ্যারেজে স্থানীয় জয়নুদ্দিনের ছেলে সাহিনুদ্দীনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালের ১৪ মে বুড়িরটেকে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় বঙ্গবন্ধু কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র চঞ্চলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর কয়েকদিন পরই ৮ জুলাই মোহাম্মদপুর থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের টেকেরবাড়ির সামাদ বক্সের ছেলে মমিন বক্সকে। চার দিন পর কালশী ব্রিজ থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। এরপর খুন হয় পাগলা খোকন ও ডি-ব্লকের মিন্টু। গৃহায়ন প্রকল্পের মধ্যে মাছের খামারেই পাওয়া যায় পাগলা খোকনের লাশ। ২০১৪ সালে কালাপানির মুসা খুন হয়। এর আগে ডিওএইচএস সড়কে খুন হয় পাকিস্তানি মোহাম্মদ আলী। ২০০৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সিরামিকের পেছনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আব্বাস নামে এক যুবককে। এই হত্যাকাণ্ডগুলোর একটির সঙ্গে আরেকটি যোগসূত্র রয়েছে। খুনের বদলা হিসেবে এখানে পাল্টা খুন হয়েছে আরেকজন।

এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে সাবেক সংসদ আউয়ালের কী কোনো সম্পৃক্ততা আছে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (মিরপুর) মানস কুমার পোদ্দার বলেন, রিমান্ডে আউয়াল অনেক রকম তথ্য দিচ্ছে, অনেক কিছু স্বীকার করছে, আবার অনেক কিছু অস্বীকারও করছে। ফলে আমরা তার দেওয়া তথ্যগুলো এখন ভেরিফাই করছি। কোন কিছুই নিশ্চিত নয়। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডে আরও ৫ জন রিমান্ডে আছে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া একজনকে রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

জাতীয়

ঈদের পর প্রায় প্রতিদিনই দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৮ জন মারা গেছে। আর এই সময়ে নতুন শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৩৪৮ জনের। এছাড়া দেশে এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (২২ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগের দিন শুক্রবার (২১ মে) দেশে করোনায় ২৬ জন মারা যান। আর নতুন করে শনাক্ত হয় ১ হাজার ৫০৪ জন এবং শনাক্তের হার ছিল ৮.২২। সে তুলনায় আজ করোনায় মৃত্যু বেড়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৭৫৯ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৯২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তবে আগের দিনের সংগৃহীত নমুনাসহ আজ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৩৭টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ১৩ জন নারী। এদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৬ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের তিনজন, ২১ থেকে ৩১ বছরের মধ্যে দুইজন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুই মারা গেছেন।

জাতীয়

রাজধানীর পল্লবীতে চাঞ্চল্যকর সাহিনুদ্দিন হত্যায় সময় লাগে পাঁচ থেকে সাত মিনিট। ঘটনার পরপরই সাবেক এমপি ও হ্যাভেলি প্রাপার্টিজের মালিক এমএ আউয়ালকে ফোন করে মূল ঘাতক কিলার সুমন বেপারী বলে, ‘স্যার ফিনিশ’।

৪-৫ দিন আগে আউয়ালের কলাবাগানের অফিসেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এ সময় তাহের ও সুমন বাহিনীর প্রধান সুমন বেপারীসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল। হত্যা বাস্তবায়নে মূল দায়িত্ব দেওয়া হয় সুমনকে। তার নেতৃত্বে ১০-১২ জন সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল আন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আল মঈন।

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সাহিনুদ্দিন হত্যার ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- সাবেক এমপি এমএ আউয়াল, হাসান, জাহিরুল ইসলাম বাবু, সুমন বেপারী ও রকি তালুকদার। এদের মধ্যে আউয়াল, হাসান ও বাবুকে র‌্যাব এবং সুমন ও রকিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেফতার করেছে।

এর আগে র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে গ্রেফতার হয় মুরাদ ও দিপু। দুই দিনের রিমান্ড শেষে মুরাদকে বৃহস্পতিবার ফের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। দিপুকে শুক্রবার আদালতে হাজির করা হতে পারে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সুমন ও রকির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাহিনুদ্দিন হত্যাকাণ্ডে ৩০ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছে বলে র‌্যাব জানতে পেরেছে। টিটুর মাধ্যমে সুমনের কাছে টাকা আসে। ১৫ মে সুমন ও বাবুসহ কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীরা শলাপরামর্শ করে। ১৬ মে বিকালে তারা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। পূর্ব বিরোধ মীমাংসার কথা বলে সাহিনুদ্দিনকে সেখানে ডেকে আনা হয়। এ সময় সাহিনের সাত বছরের সন্তান মাশরাফিও সঙ্গে ছিল। সাহিন ঘটনাস্থলে আসার পর সুমন, মনির, মানিক, হাসান, ইকবাল ও মুরাদসহ ১০-১২ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশু সন্তানের সামনেই এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। শেষ পর্যায়ে শরীরের ওপরের অংশে মনির এবং মানিক হাঁটু ও পায়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ সময় বাবুসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে লুকআউট ম্যান হিসেবে নজরদারি করে।

কমান্ডার আল মঈন জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামিদের গ্রেফতারে র‌্যাব উদ্যোগী ছিল। ১৭ মে এজাহারনামীয় আসামি দিপুকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করে পল্ল­বী থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব।

তিনি বলেন, গ্রেফতার মূল আসামি আউয়াল একজন আবাসন ও জমি ব্যবসায়ী। তার ছত্রছায়ায় সুমন সন্ত্রাসী গ্রুপ দিয়ে জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার করতো। আউয়ালের কাছ থেকে সুমনবাহিনীর সদস্যরা প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার টাকা করে মাসোয়ারা পেতো। ক্ষেত্র বিশেষ কাজ অনুযায়ী অতিরিক্ত টাকা পেতো। সুমনের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, রিকশা টোকেন বাণিজ্য, মাদক এবং জুয়াসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতো। গত দুই মাসে তাদের বিরুদ্ধে পল্ল­বী থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে এমএ আউয়াল এবং সাবেক মেজর মোস্তফা কামালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। সাহিনুদ্দিন হত্যায় দুই গ্রুপেরই যোগসাজশ থাকতে পারে। তবে মামলায় মেজর গ্রুপের কাউকে আসামি করা হয়নি।

এ বিষয়ে র‌্যাব পরিচালক কমান্ডার আল মঈন বলেন, আউয়ালসহ যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাবেক মেজর মোস্তফা কামালেরও সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে আমরা শুনেছি। তাই এ বিষয়টিও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সাহিনুদ্দিনরা ওই এলাকার স্থানীয় লোক। আউয়াল সেখানে প্রকল্প শুরুর পর ২০০৪ সাল থেকেই সাহিনুদ্দিন পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সরকারি জমি দখলের পাশাপাশি সাহিনুদ্দিন পরিবারের জমিও দখল করতে চান আউয়াল। কিন্তু সাহিন তাতে বাধা দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও কখনো কখনো তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-৪ এর অভিযানে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার রাত তিনটার দিকে ভৈরব সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমএ আউয়াল এবং বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে পটুয়াখালি থেকে জহিরুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মানস কুমার পোদ্দার জানান, সুমন বাহিনীর প্রধান সুমন বেপারী ও তার সহযোগী রকিকে বুধবার রাতে পল্ল­বী ও রায়েরবাগ থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা মিরপুর জোনাল টিম।

গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আহসান খান জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বদানকারী সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। সুমনের দেওয়া তথ্যমতে পল্ল­বী থানার স্কুল ক্যাম্প কালাপানি এলাকা থেকে অপর অভিযুক্ত রকিকে গ্রেফতার করা হয়।

সুমন বাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ১০-১২টি মামলা আছে। অর্ধশতাধিক জিডি আছে। বেশ কয়েকবার তাদের গ্রেফতার করা হলেও জামিন পেয়ে তারা আবারও অপকর্মে লিপ্ত হয়। সাহিনুদ্দিনকে কোপানোর ঘটনায় মানিক এবং মনিরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই মানিক ও মনিরকে মাদক ও ডাকাতির মামলায় তিন মাস আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সুমনকেও এক মাস আগে গ্রেফতার করা হয়ছিল। কয়েকদিন আগে সে জামিন পেয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৬ মে পল্ল­বীতে নিজ শিশু সন্তানের সামনে চাপাতি ও রামদাসহ অন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বাদী হয়ে পল্ল­বী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি, ইসলামি গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এবং তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এমএ আউয়ালসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এ ছাড়া আরও ১৪-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলায় এমএ আউয়াল ছাড়া আসামি হিসেবে অন্য যাদের নাম উল্লে­খ করা হয়েছে, তারা হলেন- আবু তাহের, সুমন, মুরাদ, মানিক, শফিক, টিটু, রাজ্জাক, শফিক (২), কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, মরণ আলী, লিটন, আবুল, ন্যাটা সুমন, কালু ওরফে কালা বাবু, বাবু ওরফে বাইট্যাব বাবু ও বাবু ওরফে ইয়াবা বাবু।