জাতীয়

রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মামলায় কারাবন্দি প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন হিরন জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানিতে রোজিনা ইসলামের ভূমিকাকে ইতিহাসের খলনায়ক ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দেন।

রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, আমিনুল গণি টিটো প্রমুখ।

জামিন শুনানিতে এহসানুল হক সমাজী বলেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে এই মামলাটি সাজানো, মিথ্যা এবং বানোয়াট। বিগত ৫০ বছরের মধ্যে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা হয়নি। তার কাছ থেকে কী ডকুমেন্টস (নথিপত্র) জব্দ করা হয়েছে তার কোনো বর্ণনা নেই এজাহারে। তার কাছ থেকে কোনো ডকুমেন্টস উদ্ধার বা জব্দ করা হয়নি। এজাহারে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস। কিন্তু তার কোনো বর্ণনা দেওয়া নেই। তাই অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৯২৩ সালের ৩ ধারা এ ঘটনার সঙ্গে যায় না। এটা একটি জামিনযোগ্য মামলা। তিনি একজন নারী, অসুস্থ। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক। তিনি জামিনের কোনো অপব্যবহার করবেন না।

জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন হিরন বলেন, পলাশী যুদ্ধের সময় ঘসেটি বেগমরা প্রাসাদ ষড়যন্ত্র করেছিল। এবার ‘রোজিনা বেগম’ গোপন তথ্য পাচার করে একইভাবে সরকারকে উৎখাত করতে ষড়যন্ত্র করেন।

জবাবে রোজিনার আইনজীবী আমিনুল গনি টিটো বলেন, রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লেখালেখি ও ভ্যাকসিনের বিষয়ে জাতীয়ভাবে তুলে ধরার কারণে তাকে শত্রু মনে করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সব কর্মকর্তারা। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাই যে কোনো শর্তে রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করা হোক।

জামিন শুনানি শেষে আদালত আগামী রোববার আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছেন। এর আগে দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লার ভার্চুয়াল আদালতে তার জামিন শুনানি শুরু হয়। দুপুর ২টার দিকে শেষ হয় তার জামিন শুনানি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে দুপুরের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে মামলা করা হয়। মামলার বাদী হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।

পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ মে আদালতে হাজির করে। একইসঙ্গে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবীরা। ওই দিন শুনানি নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন। সেদিন আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধিতে করা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব ১৯ মে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) দেওয়া হয়েছে। ডিবি বৃহস্পতিবার (২০ মে) জানিয়েছে, রোজিনার মামলার বিষয়ে তারা কোনো চাপে নেই। স্বাধীন তদন্ত হবে।

জাতীয়

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ঘিঞ্জি ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে সুরম্য দালানের বসবাসের সুযোগ পাওয়া রোহিঙ্গারা এবার সেখান থেকেও পালাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪০-৫০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর দ্বীপের ইটের দেয়ালের ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শরণার্থী নেতারা। অনেকে স্ব-পরিবারে আবার কেউ কেউ পরিবারের অন্য সদস্যদের রেখেই ভাসানচর থেকে পালিয়েছেন। তবে পালিয়ে যাওয়াদের মাঝে ইতোমধ্যে ডজনাধিক রোহিঙ্গা ধরাও পড়েছেন। ঘিঞ্জি বাসের কথা বলে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প থেকেও নানাভাবে পালানোর চেষ্টা চালান রোহিঙ্গারা।

ভাসানচর হতে রোহিঙ্গাদের পলায়নকে ‘সুখে থাকতে ভুতে কেলায়’ প্রবাদের সাথে তুলনা করে রোহিঙ্গারা আসলেই অস্থির জনগোষ্ঠী বলে মন্তব্য করেছেন লোকাল এনজিওগুলোর সমন্বিত প্লাটফর্ম সিসিএনএফ’র ফোকাল আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা। তবে, ফিরে আসা কোন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলা সম্ভব না হওয়ায় তারা কেন পালিয়ে আসছে সে তথ্য এখনো অজানাই রয়েছে।

সূত্র মতে, ভাসানচর থেকে পালাতে শুরু করেছে কিছু রোহিঙ্গা। ১৮ মে (মঙ্গলবার) সকালে ১১ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে সন্দ্বীপ থানা পুলিশ। এছাড়া টেকনাফের উনছিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও নুরুল আমিন নামের একজন রোহিঙ্গা যুবক ভাসান চর থেকে পালিয়ে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি)।

সূত্র জানায়, ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ১১ রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ মে সকালে নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ রওয়ানা দেয়ার চেষ্টাকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানিয়েছে, গ্রেফতার ১১ রোহিঙ্গার মধ্যে ছয়জন নারী, তিনজন শিশু ও দুইজন যুবক রয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে রহমতপুর এলাকায় স্থানীয় লোকজন তাদের দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে।

আটক রোহিঙ্গাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহে আলম জানান, কিছু দিন আগেও ভাসানচর থেকে পালানোর চেষ্টায় আটজন রোহিঙ্গাকে আটক করে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাসানচর থেকে দালালের মাধ্যমে জেলেদের ছোট নৌকায় সন্দ্বীপে আসছেন রোহিঙ্গারা। সেখান থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছেন তারা।

এদিকে কক্সবাজার ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক জানান, নুরুল আমিন (২০) নামে এক রোহিঙ্গা ১৭ মে রাতে ভাসানচর থেকে অজ্ঞাত দালালদের মাধ্যমে পালিয়ে উনচিপ্রাং ক্যাম্পে তার বাবার কাছে চলে আসে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাম্প সিআইসি পালিয়ে আসা নুরুল আমিনকে ডেকে পাঠালে তাকে না পেয়ে তার বাবাকে সিআইসি অফিসে আনা হয়।

তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ছেলে নুরুল আমিন প্রশাসনের ভয়ে বর্তমানে ক্যাম্পের বাইরে অবস্থান করছে। ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থী নুরুল আমিনের বাবাকে তার ছেলেসহ বুধবার সিআইসি অফিসে হাজির হতে বলা হয়েছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা যুবক নুরুল আমিন (২০) টেকনাফের উনছিপ্রাং ব্লক বি-৬, ঘর নং-২৮৫ এ বসবাসকারী (এফসিএন নং-২৪৩৯১০) জকির আহমেদের ছেলে। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে সিআইসি অফিসে হাজির করা সম্ভব হয়েছে কিনা জানতে চাইলেও, সে ব্যাপারে কিছুই জানাননি এসপি তারিক।

গত ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হওয়ার পর এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছান। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, সব রোহিঙ্গাই সেখানে স্বেচ্ছায় গেছেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে সেখান থেকে ৪০-৫০ জন রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন ভাসানচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের গুচ্ছগ্রামের থাকা একাধিক রোহিঙ্গারা।

তবে সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, নৌবাহিনী এবং কোস্ট গার্ডের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ভাসানচরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধি ও ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, ১২-১৩ জন পলাতক রোহিঙ্গার একটি তালিকা আমরা পেয়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি গুচ্ছগ্রামের রোহিঙ্গা নেতা সাংবাদিকদের বলেন, এখান থেকে ৪০-৫০ জন রোহিঙ্গা পালিয়েছেন। সর্বশেষ গত বুধবার বিকালে বেড়িবাঁধ থেকে পালানোর চেষ্টা করা চার রোহিঙ্গাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

গুচ্ছগ্রামের আরেক নেতার মতে, এখানে আসার পর হতে প্রায় অর্ধশত রোহিঙ্গা ভাসানচর থেকে পালিয়ে গেছেন। আরও অনেকে পালানোর চেষ্টাকালে ধরা পড়েছেন। তাদের অনেককে কারাগারেও যেতে হয়েছে। তবু পালানোর চেষ্টা থামছে না। তবে পলাতক একজন রোহিঙ্গা ফিরে আসার ঘটনা ঘটেছে। সুরম্য দালানে সবধরনের সুযোগ পেয়ে বাস করলেও কঠোর নিরাপত্তার কারণে একে বন্দী জীবন বলে অবহিত করে অনেকে আগের ক্যাম্পে ফিরতে চাচ্ছে বলে অভিমত ভাসানচরে বসবাসকারীদের।

এদিকে, গত শনিবার চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চৌধুরী বাজার থেকে আটক হয় ভাসানচরের তিন রোহিঙ্গা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, সাগরে তিনঘণ্টা সাঁতার কেটে সন্দ্বীপের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি জেলেরা তাদের নৌযানে তুলে সেখানে নিয়ে গেছে।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশির আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, জেলেরা সাগরে সাঁতরাতে দেখে কয়কজনকে উদ্ধার করেন। পরে জানতে পারেন তারা রোহিঙ্গা, ভাসানচর থেকে পালিয়ে এসেছেন। এরপর তাদের ট্রলারে তুলে নিয়ে এসে মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে সোপর্দ করেন জেলেরা। আটক তিন জনের নাম নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ নাসিম ও আবদুল হামিদ। তারা ভাসানচরের ৪৯ ও ৬২ নম্বর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসার কথা বলেছেন। উখিয়ার ঘিঞ্জি ক্যাম্প হতে তারা স্বেচ্ছায়ই ভাসানচরে গিয়েছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

তাদের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক সম্পর্কিত আইনে মামলা দিয়ে গত রবিবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ভাসানচর থানার ওসি মাহে আলম বলেন, ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গারা প্রায়ই পালানোর চেষ্টা করে। তবে এমন অনেক চেষ্টাই ব্যর্থ করে দিয়েছি আমরা। কারাগারে পাঠানো রোহিঙ্গাদের জামিনে মুক্ত করে পুনরায় ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

উখিয়া কুতুপালংয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্বেচ্ছায় পরিবার নিয়ে ভাসানচরে যাওয়া অনেকে পরিবার রেখে পালিয়ে এখানে ফিরে এসেছে। প্রথমে সাঁতরে, পরে জেলেদের নৌকায় সাগর পাড়ি দিচ্ছে বলে উল্লেখ করছে ফিরে আসা ব্যক্তিরা।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচর ছেড়ে পালানোর বিষয়টি অবগত থাকার কথা জানিয়ে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, পলাতকরা ভাসানচর থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে আটক হওয়া রোহিঙ্গা। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা এটা ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সাবেক কর্মকর্তা অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশ্লেষক আসিফ মুনীর মনে করেন, ভাসারচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরুর সরকারি সিদ্ধান্তে দূরদর্শিতার অভাব ছিল বলেই এমনটা ঘটছে। সরকার নিজে দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করেছে। এখন সেখান থেকে কেউ পালিয়ে গেলে তার দায়টাও সরকারের ওপরই বর্তাবে। এক্ষেত্রে সরকার হয়তো বলবে, যে পরিমাণ নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই তুলনায় পালিয়ে যাওয়ার হার খুবই কম, বেশিরভাগই ভাসানচরে ভালো আছে। কিন্তু একজন মানুষও যদি পালিয়ে থাকে সেটার কারণ খতিয়ে দেখা উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পালস্ এর প্রধান নির্বাহী, সিসিএনএফ’র ফোকাল ও কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গারা এমন একটি জনগোষ্ঠী, তাদের যেখানেই রাখা হোক না কেন তারা পালানোর বা নানা অপরাধে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে। পৃথিবীতে জোরপূর্বক উদ্বাস্তু হওয়ারা অন্য কোথাও স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত হতে পারেনি। তাছাড়া ভাসানচরের চারদিকে সমুদ্রের যে বিশাল জলরাশি, এটা রোহিঙ্গাদের জন্য সমস্যা না। রাখাইন থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারত মহাসাগর দিয়ে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা তারা যুগ যুগ ধরেই করে আসছে। নাফ নদী সাঁতরে টেকনাফে চলে আসার নজিরও আমরা দেখেছি। তাই ভাসানচরে নজরদারি বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।

ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক ও নৌবাহিনীর কমোডোর রাশেদ সাত্তারের মতে, ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি উদ্বাস্তুদের জন্য স্বর্গতুল্য। পৃথিবীর কোথাও শরণার্থীদের এত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার নজির নেই।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টে কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। এর ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। পরবর্তীতে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে। এর অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছে দালানের এক একটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়। রোজার পর সেখানে অবস্থানকারীদের জন্য উৎসবমুখর ভাবে ঈদের জামায়াত ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জাতীয়

‘বঙ্গভ্যাক্স’ হল mRNA প্রযুক্তিতে তৈরি বিশ্বের প্রথম এক ডোজের কার্যকরী টিকা যা SARS-CoV-2 ভাইরাসের বিরুদ্ধে সফলভাবে মানব কোষ এবং প্রাণীদেহে সুদৃঢ় সুরক্ষা দেখিয়েছে। বিশ্বের বিখ্যাত টিকা আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড নিজস্ব প্রযুক্তিতে এই টিকাটি তৈরি করেছে এবং বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করেছে।

বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে কাজ করার সহজাত সীমাবদ্ধতাসমূহ যেমন: কাঁচামালের ব্যবস্থাকরণ, নতুন প্রযুক্তির সাথে অভিযোজন, গবেষণা তহবিলের অভাব সত্ত্বেও ড. কাকন নাগ এবং ড. নাজনীন সুলতানার নেতৃত্বে তরুণ বিজ্ঞানীদের একটি চৌকস দল এই টিকাটি আবিষ্কার করেছে। এটির অনন্য নকশা, প্রযুক্তি ও ফর্মুলেশন প্রানিদেহে কার্যকর ফার্মাকোলোজিক্যাল প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রি-ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, এই টিকাটি মানব কোষ ও প্রাণীদেহে সহনশীল ও নিরাপদ। টিকাদান পরবর্তী ৭ম দিনে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরির প্রমাণ মিলেছে, যা ১৪তম দিনে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পাওয়া গেছে। টিকাদান পরবর্তী ৯১ দিন অবধি মেমরি কোষগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যায় পাওয়া গেছে, যা নির্দেশ করে যে এই ভ্যাকসিনটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে সক্ষম।

অন্যান্য mRNA ভ্যাকসিনের তুলনায় এই ভ্যাকসিনটি সুলভ হবে, তাই স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলির জন্য সহজেই ক্রয়যোগ্য হবে। এর মাধ্যমে এই দেশগুলির প্রায় ৫শ কোটি মানুষের mRNA ভ্যাকসিন (বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর টিকা প্রযুক্তি) পাওয়ার সুযোগ হবে। যেহেতু এটি এক ডোজের টিকা, তাই অন্যান্য টিকার তুলনায় এটি ক্রয়ের জন্য ব্যয় এবং প্রয়োগের জন্য সময় সাশ্রয়ী হবে।

প্রথমে টিকাটির টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকুয়েন্স গত ২৯ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই (NCBI) ডেটাবেসে এবং গবেষণা নিবন্ধনটি ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বায়ো-আর্কাইভ (bioRxiv) এ প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) গতবছরের ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেক কর্তৃক আবিষ্কৃত mRNA vaccine কে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। গত ডিসেম্বরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল ‘বঙ্গভ্যাক্স’ এর গবেষণাগার পরিদর্শন করে সকল তথ্য উপাত্ত ও প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নথি পত্র পর্যালোচনা করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অগ্রগতিতে সহযোগিতা করেন। এরই পরিক্রমায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (DGDA) উক্ত গবেষণাগার ও উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন সাপেক্ষে গত ২৮ ডিসেম্বর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ‘বঙ্গভ্যাক্স’ উৎপাদনের অনুমতি প্রদান করেন।

টিকাটি মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদনের জন্য গত ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে (BMRC) আবেদন করা হয়। ইথিক্যাল কমিটি প্রোটোকল পর্যালোচনা করে প্রায় শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়ে চিঠি (সূত্র: বিএমআরসি/ এনআরইসি/২০১৯-০২২/৯৯, তারিখ: ০৯/০২/২০২১) দেন এবং এর সকল প্রশ্নের যথাযথ উত্তরসহ সংশোধিত প্রোটোকল ও প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ইং তারিখে বিএমআরসিতে জমা দেয়া হয়। এরপর বিএমআরসি থেকে আর কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

টিকাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি +৪°সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক মাস এবং -২০°সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।এটি সিন্থেটিক্যালি তৈরি হওয়ায় তা ভাইরাস মুক্ত এবং শতভাগ হালাল। বর্তমানে গ্লোব বায়োটেকের উৎপাদন কেন্দ্রে প্রতিমাসে ১ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২৪৮ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬০৮ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৭ জনে। মৃত ৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন ও ১৩ জন নারী।

বুধবার (১৯ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ১২৩ জন।

সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৭৮ টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১২৯টি, জিন এক্সপার্ট ৩৭টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ৩১২টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ২০ হাজার ৪৯৮টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২০ হাজার ৫২৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪৬টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৫ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জন। খুলনা ও সিলেট বিভাগে ২ জন করে ৪ জন। এছাড়া রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে ২ জন রয়েছেন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১০ জন। আর বাড়িতে মারা গেছেন ১ জন।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরে ঊর্ধ্বে ২৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৫১১ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪০৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ২৯ হাজার ১৭৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ১৭৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬১৬ জন।

এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত হয় সাত হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে  একদিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড। আর গত ৬ এপ্রিল একদিনে করোনা শনাক্ত হয়েছিল সাত হাজার ২১৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। সেদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তত্কালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এসময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান।

দিবসটি স্মরণে যত কর্মসূচি

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘শেখ হাসিনার চার দশক : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি। এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। এছাড়া আজ ১৭ মে সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং বিকাল ৩টায় মহানগর নাট্য মঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এছাড়া সারা দেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।

টিভি পর্দায় আজ ‘হাসিনা :এ ডটারস টেল’

দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডসহ বেশ কিছু বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হবে ‘হাসিনা :এ ডটারস টেল’ ডকুড্রামাটি। বাংলাদেশ টেলিভিশনে এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ডে দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে দেখানো হবে। একই দিনে বেসরকারি বিভিন্ন চ্যানেলেও সম্প্রচার করা হবে এটি।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ১৮১ জনের।

এর আগের দিন রবিবার (১৬ মে) দেশে করোনায় ২৫ জন মারা যান, আর নতুন করে শনাক্ত হয় ৩৬৩ জন। সেই তুলনায় আজ করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে।

একই সময় দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন ৬৯৮ জন। এখন পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৫৭ জনে। সোমবার (১৭ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ১০৫৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৫০৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আর পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৩৪৭টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। এদের মধ্যে ৩০ হাসপাতালে ও দুইজন বাসায় মারা গেছেন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৭ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের তিনজন ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন মারা গেছেন।

জাতীয়

‘রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’ -এই সুরের লহরী এখন ভেসে বেড়াচ্ছে আকাশ-বাতাস মন্দ্রিত করে। মনপ্রাণ উছলে উঠছে ঈদের আনন্দ-রোশনাইয়ে। পবিত্র মাহে রমজানের সিয়াম-সাধনা শেষে খুশির সওগাত নিয়ে এলো ঈদুল ফিতর। ত্রিশ রোজা পূর্ণ হলো। সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে শাওয়ালের নতুন বাঁকা চাঁদ অবলোকন করে ঘরে ঘরে মানুষ আনন্দ উদ্বেলিত।

আজ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর।সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উত্সাহ-উদ্দীপনায় উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের নামাযে যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া এবং ঈদুল আযহার নামাযের পরে খাওয়া মুস্তাহাব। ঈদুল ফিতরের নামাযে যাওয়ার আগে কিছু খেজুর খেয়ে যাওয়া অন্যতম একটি শিষ্টাচার। যেহেতু সহিহ বুখারীতে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েকটি খেজুর খেয়ে ঈদগাহে যেতেন…। তিনি বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেতেন। [সহিহ বুখারী (৯৫৩)] নামাযে যাওয়ার আগে খাওয়া মুস্তাহাব এই কারণে যাতে করে সেই দিনে রোযা রাখা নিষিদ্ধ হওয়ার উপর তাগিদ দেওয়া যায় এবং পানাহার করা ও রোযা সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া যায়।

ঈদ উল ফিতর আরবি শব্দ। ঈদ’ অর্থ আনন্দ, উত্সব, খুশি। আর ফিতর অর্থ ভাঙা, চিড়, ভাঙন। ঈদুল ফিতর অর্থ হলো রোজা ভাঙার পর্ব বা উত্সব। ঈদের শাব্দিক অর্থ হলো ‘বারবার ফিরে আসা’।এ দিনটি বারবার ফিরে আসে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঈদ। আল্লাহ তা‘আলা এদিনে তার বান্দাকে নি‘আমাত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করে থাকেন, বারবার ইহসান করেন।

এই দিনে ধনি-গরিব, বাদশাহ-ফকির নির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করেন,একে অপরকে আলিঙ্গন করেন। পরস্পর বলবেন, ‘তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম। অর্থ, ‘আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার নেকা আমল তথা ভাল কাজগুলো কবুল করুন।’ কিংবা ঈদ মোবারক কিংবা এ ধরণের অন্য যে কোন বৈধ ভাষায় মঙ্গল কামনা করা। ঈদের শিস্টাচার হলো, ঈদ উপলক্ষে সুন্দর পোশাকাদি পরিধান করা,নামাযের জন্য এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরত আসা,ঈদের দিনে তাকবীর দেওয়া।

ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উত্সব। ঈদুল ফিতরের দিনটি প্রতিটি মুসলমান নারী ও পুরুষের জীবনে তাৎপর্যে ও মহিমায় অনন্য। এক মাস সংযম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির যে প্রচেষ্টা বিশ্বাসীগণ চালান, ঈদুল ফিতর তারই পূর্ণতার সুসংবাদ। ঈদুল ফিতর-এর তাৎপর্য হলো সিয়ামের দাবি পূর্ণ করে নতুন অবস্থায় উত্তীর্ণ হবার খুশি।

আইয়্যামে জাহেলিয়া বা ইসলাম পূর্ববর্তী যুগেও আরবে ‘নাইরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ নামে দুইটি বাত্সরিক উত্সব ছিল খুব জনপ্রিয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম মক্কা হতে মদিনায় হিজরত করে দেখতে পান যে, এই দুইটি জাতীয় উত্সবে মদিনার আবাল বৃদ্ধ বণিতা নানা প্রকার স্থূল খেলা ও উত্সবে মেতে উঠেছে। মহানবী তাদের লক্ষ্যহীন আনন্দ-উত্সবের পদ্ধতির পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির পবিত্র স্পর্শমণ্ডিত এবং বহুবিধ কল্যাণধর্মী ঈদুল ফিতরের কথা ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন, প্রত্যেক জাতির বাত্সরিক আনন্দ-ফুর্তির দিন আছে। ঈদের দিন হচ্ছে আমাদের জন্য সেই আনন্দ-উত্সবের দিন। এভাবেই হিজরি দ্বিতীয় বর্ষে মুসলিম সমাজে প্রবর্তিত হলো ঈদ।

ঈদ বাংলাদেশে সার্বজনীন উৎসব। ধর্মের গণ্ডি পার হয়ে ঈদ সাবলীল সামাজিক উত্সবে পরিণত হয়েছে। মূলত ইনসান-ই-কামিল হওয়া বা পরিপূর্ণ মনুষ্যত্ব অর্জনের মধ্যেই ঈদের সার্থকতা নিহিত। এজন্য পাড়া-প্রতিবেশী ধর্ম ও সামাজিক কাঠামোর যে শ্রেণিরই লোক হোক তাকে ঈদের আনন্দে শরিক করা কর্তব্য। একই কারণে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে যে কোনো মানুষের সঙ্গে পূর্বের শত্রুতা, বিবাদ-বিসংবাদ, মনোমালিন্য প্রভৃতি মিটিয়ে ফেলা উচিত।

ঈদের খুশি উত্সবকে যেন একেবারে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে আসে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়: ’আজি আরাফাত ময়দান পাতা গাঁয়ে-গাঁয়ে,/ কোলাকুলি করে বাদশাহ-ফকিরে, ভায়ে-ভায়ে’…. ’আজি ইসলামী ডঙ্কা গরজে ভরিজাহান/ নাই ছোট-বড় সকল মানুষ এক সমান!.. “ইসলাম বলে, সকলের তরে মোরা সবাই,/ সুখ-দুখ সমভাগ করে নেব সকলে ভাই,/ নাই অধিকার সঞ্চয়ের..।’ একমাস রোজার শেষে ঈদের আনন্দ প্রতিটি মানুষের মনে খুশির দ্যোতনা ছড়ালেও দরিদ্ররা কি সেই আনন্দে ভাসতে পারছে? কবির কণ্ঠে তাই ধ্বনিত হয়েছে: “জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসে না নিদ/ মুমূর্ষু সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ?/

মুলত যারা এক মাস সিয়াম পালন করে কষ্টকে অনুভব করেছেন, নামাজ, তারাবিহ, ইবাদত-বন্দেগি ও ইসলামের অনুশাসন পালন করেছেন, তাদের জন্য এ ঈদ আনন্দ বেশি উপভোগের, উচ্ছ্বাসের ও শান্তির। তাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের এক মহাপুরস্কার হচ্ছে ঈদ।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

ঘরবন্দি ঈদের জামাত

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণকালে এবার জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার কারণে ঈদুল ফিতরের জামাত ঈদগাহ অথবা খোলা জায়গায় না করার আহবান জানিয়েছে ধর্মমন্ত্রণালয়।সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রত্যেক মসজিদেই একাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অতিসম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সার্কুলার জারি করেছে। এ জন্য এবার রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ও দু’সিটি করপোরেশনের অধীনে কোনো খোলা জায়গা বা মাঠে ঈদ জামাত হচ্ছে না। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সকাল ৭টা থেকে এক ঘণ্টা পর পর ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়

গত ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত এবারের ঈদযাত্রার তিন দিনে সরকারের এক কোটি ৭৫ লাখ ৩৪২ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

ঈদের আগে তিনদিন ধরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট পার হয়েছেন ঘরমুখো মানুষ।

করোনা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য ঈদে বাড়ি ফেরা নিরুৎসাহিত করতে প্রথম দিকে দিনে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। তখন শুধুমাত্র জরুরি সেবার গাড়িগুলো পদ্মা পার করার জন্য দুই-একটি ছোট ফেরি চালু ছিল বলে দাবি বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের। এ অবস্থায় ওই ফেরিগুলোতেই হুড়োহুড়ি করে ভিড় করেন ঘরমুখো যাত্রীরা। যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে এক ট্রিপে ফেরিগুলোতে দুই-একটির বেশি জরুরি সেবার গাড়ির ঠাঁই হতো না। পরে অবস্থা বুঝে দিনেও ১৬টি ফেরি চালু রাখা হয়। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ও যাত্রীদের জন্য দিনের বেলায় ফেরি চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

প্রতি বছরের মতো এ ঈদেও পাটুরিয়া ফেরি ঘাট হয়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বা কোনো গাড়ি ছাড়াই পদ্মা পার হয়েছেন। এছাড়া সাধারণ পণ্যবোঝাই ট্রাকও পার হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) পাটুরিয়া ঘাট সূত্র মতে, ১০ মে পাটুরিয়া ঘাট হয়ে যানবাহন পার হয়েছে ৩৮৮৫টি। আর এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২৬ লাখ ৭৪ হাজর ৯৮৪ টাকা, ১১ মে যানবাহন পার হয়েছে ৪২৪২টি। আর সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ টাকা এবং ১২ মে যানবাহন পার হয়েছে ৯২৬৩টি। এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৪৯ লাখ ২৪ হাজার ২৫৪ টাকা। তবে ১৩ মে’র কোনো হিসাব এখনো দিতে পারেনি বিআইডব্লিউটিসি কতৃর্পক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ঘাটের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার যে কত যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পার হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নাই। যেসব গাড়ি টিকিট কেটে ফেরির পন্টুনে গেছে, ওই সব গাড়ির হিসাব আমাদের কাছে আছে। কিছু গাড়ির চালক হয়তো জানেন না যে টিকিট কোত্থেকে কাটতে হয়, অথবা টিকিট না কেটে নদী পথ পারাপারের অসাধু ধান্দার চালকও আছেন অনেক। গাড়ি ও যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে অনেক সময় টিকিট চেক করার সম্ভব হয় না।

বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাটের বাণিজ্য বিভাগের এজিএম নাছির মোহাম্মদ চৌধুরী জানান, এক কোটি ৭৫ লাখ ৩৪২ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত।

তিনি আরও বলেন, ১৩ মে’র হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। তবে আগামীকাল এ তথ্য আমাদের হাতে আসবে।

জাতীয়

রাত পোহালেই মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। করোনা মহামারিতেও পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়েন লাখ লাখ মানুষ। আর তাই রাজধানী ঢাকা হয়ে উঠেছে একদম ফাঁকা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) রাজধানীর সায়েদাবাদ ও গাবতলী এলাকায় গত কয়েকদিনের তুলনায় যাত্রীর চাপ অনেক কম। এদিন রাজধানীর রামপুরা, ধানমণ্ডি, মিরপুর, শ্যামলী এবং কল্যাণপুর এলাকার রাস্তাগুলো ফাঁকা দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীবাসী প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ট্রাক, পিকআপ এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে করেও ঢাকা ছেড়েছে। কিন্তু আজ যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি।

জাতীয়

বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার রমজান মাস ৩০ তিন পূর্ণ হবে। আর শুক্রবার দেশব্যাপী মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

বুধবার বাদ মাগরিব (১২ মে) বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এম.পি.।

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে বৃহস্পতিবার রমজান মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে। আগামী শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর।

সভায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্য ধর্ম সচিব মো. নুরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মুশফিকুর রহমানসহ দেশের বরেণ্য আলেমরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।