বিনোদন

প্রথম বিয়ে টেকেনি সারিকার। নাটক ও মডেলিংয়ের জনপ্রিয় এই মুখ পাঁচ বছর পর আবারও বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ক্যালেন্ডার ঘেঁটে শুভদিন দেখেই বিয়েটা করেছিলেন সারিকা। ০২.০২.২২, মানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ। ভেবেছিলেন, মিলে যাওয়া সংখ্যার মতো জীবনসঙ্গীর সঙ্গে বাকি পথটা মিলেমিশেই চলতে পারবেন। কিন্তু তা আর হচ্ছে কই!

বিয়ের বছন না ঘুরতেই দ্বিতীয় সংসারও ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে। স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সারিকা।

নায়িকার অভিযোগ স্বামী তাকে চর্টার করত। এখন আলাদা থাকছেন তারা।

সংসার জীবনে অতিষ্ট সারিকা বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছেন।

স্বামী নির্যাতন করত জানিয়ে এই নায়িকার ভাষ্য, সে (স্বামী) আমাকে শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক-সব দিকেই টর্চার করেছে। আমি তার স্ত্রী, আমি একজন শিল্পী, আমাকে সে যেভাবে টর্চার করেছে তা সহ্য করার মতো নয়। আমাদের বিয়ের সময় ২০ লাখ টাকা দেনমহর ধার্য করা হয়। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, আসবাবসহ সাংসারিক জিনিসপত্র দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই সে আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আমার পরিবার থেকে তার জন্য টাকা আনতে বলে। আমি রাজি হইনি বলে সে আমাকে অকথ্য গালাগাল করে, মারধর করে। এ জন্যই আমি মামলা করেছি।

এ ঘটনার কারণে সংসারের ইতি টানছেন নাকি—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি আমার ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মামলা করেছি, সেটির বিচার আদালত করবেন। আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি। আদালত বিচার করার পর ইতি টানা বা অন্য কিছু নিয়ে ভাবব।

সাত বছর চুটিয়ে প্রেম করে ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা মাহিম করিমকে বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সারিকা। সেই ঘরে একটি মেয়েও আছে তার। কিন্তু ২ বছরের মাথায় সারিকার সেই সংসার ভেঙে যায়।

ডিভোর্সের পর কিছুটা ছন্নছাড়া হয়ে পড়েন সারিকা। অভিনয় থেকে কিছু সময় দূরে ছিলেন। নতুন করে কোনো সম্পর্কেও জড়াননি। পাঁচ বছর পর বিয়ে করেছিলেন।

বিনোদন

বলিউডে আইটেম গার্ল হিসেবে সবচেয়ে পরিচিত মুখ এখনো নোরা ফাতেহি। তাকে ছাড়া যেন পার্টি সংকল্পনাই করা যায় না। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কয়েকটি সুপারহিট গানে নৃত্যের ঝলক দেখিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খ্যাতি কুড়িয়েছেন এ গ্ল্যামার কুইন। আর সেই নোরা এবার পুরোনো প্রেমের কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন।

সম্প্রতি ছোটপর্দায় নাচের একটি রিয়ালিটি শোতে বিচারক হিসেবে দেখা যায় নোরাকে। সেখানে ‘বড়া পচতাওগে’ গানে পারফর্ম করেন একজন প্রতিযোগী। সেই নাচ-গান দেখেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি নোরা। ফিরে গেছেন নিজের অতীতে, করেছেন স্মৃতি রোমন্থন।

নোরা জানান, পারফরম্যান্সটি দেখে চোখ ভিজে গেছে তার। ইমোশনাল হয়ে পড়েছেন। এই গানটি যেন তারই। গানটির সঙ্গে তিনি তার অতীতকে খুঁজে পান। এ গানটি প্রেমে প্রতারিত হওয়ার কথা বলে।
গানটি শুনে কেঁদে ফেলেন নোরা, সেই গানটি প্রেমে প্রতারিত হওয়ার কথা বলে। সেই সময় অঙ্গদ বেদীর সঙ্গে প্রেম করতেন নোরা।

এ বিষয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নোরা ফাতেহি অঙ্গদ বেদীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। প্রেমের বিচ্ছেদের পর মুষড়ে পড়েছিলেন নোরা। আর এ গানে নিজের ব্যর্থ প্রেমের কষ্ট খুঁজে পান তিনি। অঙ্গদ বেদীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরপর এ গানের শুটিং করেন নোরা ফাতেহি।

বিনোদন

চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে ও সন্তান নেওয়া— সব মিলিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে শবনম বুবলী। বিয়ের ঘোষণা ও সন্তানকে প্রকাশ্যে আনা নিয়ে শাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

বুবলী দুজনের টানাপোড়েন গোপন রাখতে চাইলেও পারেননি। শাকিবের অপর নায়িকা অপু বিশ্বাসের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে।

এই তো দিন কয়েক আগে বুবলীর জন্মদিন ছিল। সেই সময় তিনি জানান, শাকিব তাকে হীরার নাকফুল উপহার দিয়েছেন। এটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশও করেন বুবলী। এতে ধারণা করা হচ্ছিল দুজনের সম্পর্কের মাঝখানে যে বরফখণ্ড জমাট বেঁধে আছে, সেটি গলতে শুরু করেছে।

কিন্তু সেটি আর হলো কই। বুবলীর বক্তব্যের খবরের লিংক শেয়ার করেন শাকিবের সাবেক স্ত্রী নায়িকা অপু বিশ্বাস। সঙ্গে জুড়ে দেন তাচ্ছিল্যের হাসিমাখা মন্তব্য। এর পর বুবলীও পাল্টা জবাব দেন। অপু-বুবলীর মধ্যে এক প্রকার অন্তর্জাল যুদ্ধ লেগে গেছে।

পুরো বিষয়টি নিয়ে শাকিব খান প্রথমে চুপ ছিলেন। পরে মুখ খুলেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন— বুবলীর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগই নেই; হীরার নাকফুলের কথাও সত্য নয়। এমনকি অপুর মতো বুবলীকেও নিজের অতীত বলে মন্তব্য করেছেন ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক।

শাকিবের এ বিস্ফোরক মন্তব্যের পর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে বুবলীর। এ নায়িকা মনে করছেন, তৃতীয় কারও চাপে পড়ে শাকিব তার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে বুবলী বলেছেন, ‘প্রায় সাত বছর ধরে তার (শাকিব) সঙ্গে সম্পর্ক। এই সাত বছরে কখনো তার সম্মানহানি হয় এমন কোনো কথা কোথাও বলিনি। তার সম্মান যেন ঠিক থাকে সর্বদা সেদিকে খেয়াল করে চলেছি। তার অনুমতি নিয়েই অন্য নায়কদের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু তাতে কী হলো? সে তো একের পর এক মন্তব্য করে আমার সম্মানহানি করছে। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’

সন্তান শেহজাদ খান বীরের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবার সবার সামনে মুখ খুলবেন বলে হুশিয়ারি দিলেন বুবলী। যে কোনো সময় সংবাদ সম্মেলন করবেন।

বুবলী মনে করেন, কারও চাপে পড়ে শাকিব এমন করছেন। ‘কার কথার চাপে পড়ে এমন হয়েছে আমার জানা নেই। যখন যা ইচ্ছা করবে এটি মেনে নেব না। কাকে খুশি রাখতে এমন হচ্ছে বলতে পারব না। আমার অবস্থান পরিষ্কার করতে চাচ্ছি সবার সামনে।’

বুবলীর ভাষ্য— ‘দুদিন পর পর আমাকে নিয়ে এভাবে মন্তব্য করা তো মেনে নেওয়া যায় না। আমি তো সবকিছু ঠিক রাখতে কম চেষ্টা করিনি। যখন তার সঙ্গে যোগাযোগ থাকে, তখন একরকম। আবার একটু দূরে এলেই আরেক রকম। কিন্তু আমি তো তার সম্মানহানি হয়, এমন কিছু কখনো বলিনি, করিওনি। তা হলে আমাকে নিয়ে কেন একের পর এক এভাবে মন্তব্য! তাই ভাবছি, এখন আমার উচিত বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা। না হলে সবাই আমাকে ভুল বুঝবে।’

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ডিভোর্সের পর একই বছরের ২০ জুলাই মাসে বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান। কিন্তু বিয়ের কথা গোপন রাখেন দুজন। এই গোপনীয়তার মধ্যেই ২০২০ সালের ২১ মার্চ বুবলী মা হন। এসব তথ্য প্রকাশ্যে আনেন বুবলী চলতি বছরের অক্টোবরে। এর পর থেকেই দুজনের মধ্যে দূরত্ব প্রকাশ্যে আসে। এখন দুজন আলাদা ছাদের নিচে থাকছেন।

বিনোদন

হিরের নাকফুল আর পুরনো একটি ছবিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো বাগযুদ্ধে মেতেছেন ঢাকাই সিনেমার দুই অভিনেত্রী শবনম বুবলী ও অপু বিশ্বাস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বাকবিতণ্ডা দেখে অনেকে মন্তব্য করছেন ‘দুই সতীনের চুলোচুলি’।

এ বিষয়ে এতোদিন মুখে কুলুব এঁটে বসেছিলেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। যিনি এই দুই নায়িকাকেই বিয়ে করেছেন।

শাকিব বলেন, ‘একটা কথা নিশ্চিত করে বলতে চাই— অপু বিশ্বাস ও বুবলী দুজনেই এখন আমার কাছে অতীত। তাদের সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই আমার সম্পর্ক জোড়া লাগার সম্ভাবনা নেই।’

অপু বিশ্বাসের সঙ্গে শাকিব খানের সম্পর্ক অনেক আগেই ভেঙে গেছে, এ খবর সবাই জানেন। তবে বুবলীর সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত হতে পারছিলেন না।

শাকিব খান বলেন, ‘চলচ্চিত্রাঙ্গনে আমার অগ্রজ একজন জনপ্রিয় নায়ক, আমার প্রথম সংসারের সময়ই বলেছিলেন— আমাদের দেশে এ অঙ্গনের দুজনের মধ্যে সংসার করাটা বেশ ডিফিকাল্ট। তার পরও একটা কথা বলতে চাই— মানুষ সম্পর্ক করে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে। সংসার ভাঙার জন্য কেউ-ই সম্পর্ক করে না। আমিও তেমনটিই ভেবে করেছি। কিন্তু সম্পর্কটা করতে গিয়ে একটা সময় দেখলাম, তা আর হেলদি জায়গায় নেই। চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হলো।’

এদিকে শোনা যাচ্ছে, অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আপনার এখন ভালো যোগাযোগ। আপনার বাসায়ও তার নিয়মিত যাতায়াত। তার মানে কি আবার আপনারা এক হচ্ছেন— এমন প্রশ্নে শাকিব খান জানান, এমন সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

অপুর সাবেক স্বামী বলেন, ‘আব্রাম খান জয়ের বাবা যেমন আমি শাকিব খান, তেমনি মা হচ্ছেন অপু বিশ্বাস। বাবা হিসেবে সন্তানের সঙ্গে আমার দেখা হয়। জয় মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে থাকে। ওর দাদা-দাদির সঙ্গে থাকে। জয় যেহেতু ছোট, একা আসতে পারে না, তাই জয়কে আনার সুবাদে তার মা আসে। কিন্তু আমাদের মধ্যে সন্তানের বিষয়ের বাইরে আর কোনো কথা হয় না। জয়ের স্কুলেও যাওয়া হয় মাঝেমধ্যে, সেখানেও দেখা হয় আমাদের।’

ছোট ছেলে শেহজাদ খান বীর প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ‘শেহজাদ খান বীরের সঙ্গেও আমার দেখা হবে। সে আমার সঙ্গে থাকবে। এখন সে অনেক ছোট, তাই আলাদা করে আমার কাছে রাখতে পারি না। তবে শিগগিরই তারও আসা-যাওয়া হবে আমার বাড়িতে। দাদা-দাদি, ফুফা-ফুফুর আদর পাবে। শেহজাদ যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করবে, তখন তার মায়ের সঙ্গেও আমার দেখা হবে— এটি খুবই স্বাভাবিক।

বিনোদন

শরীরচর্চা করতে জিমে গিয়েছিলেন তিনি। ঘরে ফিরলেন লাশ হয়ে।

জিমে হার্ট অ্যাটাক করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভারতের টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্ধান্ত বীর সূর্যবংশী। তার বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর, শুক্রবার জিম কারার সময় অসুস্থবোধ করেন সিদ্ধান্ত। কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, পথেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে গেছে তার। ৪৫ মিনিট ধরে অভিনেতার বিকল হৃদযন্ত্র সচল করার চেষ্টা চালান চিকিৎসকরা, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অভিনেতা।

অভিনেতার মৃত্যুর পর পরই তার সহকর্মী জয় ভানুশালি সামাজিকমাধ্যমে সিদ্ধান্তের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেল’।

দীর্ঘ দুই দশক ধরে হিন্দি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন সিদ্ধান্ত। ‘কুসুম’ সিরিয়ালের মাধ্যমে অভিনয়ের পা রাখলেও প্রথম দর্শক মনে সিদ্ধান্ত নজর কাড়েন একতা কাপুরের ‘কসৌটি জিন্দেগি’র দিয়ে।

এরপর ‘কুসুম’, ‘ওয়ারিশ’, ‘সূর্যপুত্র কর্ণ’র মতো সিরিয়ালে তার অভিনয় দর্শকদের নজর কেড়েছে। ‘গৃহস্থি’, ‘ভাগ্যবিধাতা’র মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালেও কাজ করেছেন সিদ্ধান্ত।

সম্প্রতি জি টিভির সিরিয়াল ‘কিঁউ রিস্তোমে কাট্টি বাট্টি’তে প্রধান চরিত্রে দেখা গেছে সিদ্ধান্তকে। এতে তার বিপরীতে দেখা গেছে নেহা মারদারকে।

বিনোদন

ইসলাম গ্রহণ করেছেন ফরাসি টিভি তারকা ও মডেল মেরিন এল হিমার। ইসলাম গ্রহণের মুহূর্তগুলো তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া একটি পোস্টে মেরিন এল হিমার বলেন, ‘এ মুহূর্তে অনুভব করা সুখ এবং আবেগের তীব্রতা প্রকাশ করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী কোনো শব্দ আমার জানা নেই। আমি মনে করি এই আধ্যাত্মিক যাত্রা ইনশাআল্লাহ আমাকে পথ দেখাবে এবং আমার জীবনে উন্নতি বয়ে নিয়ে আসবে।’

আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়, কয়েক মাস আগে ইসলামে ধর্মান্তরিত হলেও মেরিন গত বুধবার (২ নভেম্বর) তা প্রকাশ করেন। এদিন ফ্রান্সের একটি মসজিদে ইসলাম গ্রহণের ভিডিও প্রকাশ করে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন তিনি।

মরোক্কান-মিশরীয় বংশোদ্ভূত মেরিন এল হিমার ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ ফ্রান্সের বোর্দোতে জন্মগ্রহণ করেন। ওশেন এল হিমার নামে তার একটি যমজ বোন রয়েছে। তবে হিমার তার সৎ বাবার কাছে বেড়ে উঠেছেন।

হিমার ফ্রান্সের রিয়েলিটি টেলিভিশন শো ‘লেস প্রিন্সেস অ্যাট লেস প্রিন্সেস ডি ল’আমোরে’ (প্রেমের রাজকুমারী ও রাজকুমারীরা) অংশ নিয়েছিলেন। ‘প্রিন্সেস অব লাভ’ এবং ‘মার্সেলিওনেস ইন দুবাই’ নামের টিভি রিয়েলিটি শোর মাধ্যমে ব্যাপক খ্যাতি লাভ করেন এ তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও টিকটকে তার লাখ লাখ অনুসারী।

ইসলামগ্রহণ প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, এটি আমার হৃদয় ও যুক্তির মিলিত একটি পছন্দ ছিল। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে মেরিন হিমার বলেন, আমি মনে করি এখন আমি আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিনগুলো কাটাচ্ছি।

ইসলাম ধর্মে ফেরার বিষয়ে মেরিন জানান, এক সময় তিনি তার নিজের বাবা সম্পর্কে কিছু গবেষণা করেন এবং তারা মূলত কোথা থেকে এসেছেন তা নিয়ে অনুসন্ধান করেন। এই সময়েই তিনি ইসলামের সঙ্গে পরিচিত হন এবং এক পর্যায়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।

ইনস্টাগ্রামের পোস্টে ফরাসী এ তারকা মডেল লেখেন, ‘আপনাকে একাই চলতে হবে। বন্ধু নেই, পরিবার নেই, সঙ্গীও নেই। শুধুমাত্র আপনি এবং আল্লাহ থাকবেন। আপনাদের অনেকে হয়ত বিষয়টি জানেন। অনেকে প্রশ্ন করেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো ঘোষণা করিনি যে, আমি কয়েক মাস আগে ইসলাম গ্রহণ করেছি।’

নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘আমার মূল বার্তা হলো, অন্য ধর্ম যাই হোক তা গ্রহণে লজ্জার কিছু নেই। এটি সবার মৌলিক অধিকারের অন্যতম, যা অবাধে চর্চার সুযোগ থাকা দরকার। অনেকেই লক্ষ্য করেছেন যে, গত বছর অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। আমার মধ্যেও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আমার অগ্রাধিকারের অনুভূতি পর্যালোচনা করেছি। তাছাড়া পেশাগত বা ব্যক্তিগত বিষয়ে জীবনের পছন্দ নিয়ে পুনরায় ভেবেছি। যারা এ বিষয়ে প্রশংসা করবেন বা অন্তত শ্রদ্ধা জানাবেন সবাইকে ধন্যবাদ।’

ইসলাম গ্রহণের পর সৌদি আরবের মক্কাও সফর করেন মেরিন এল হিমার। পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে হিজাব পরিহিত অবস্থায় কয়েকটি ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন তিনি।

মেরিন এল হিমারের ইসলামে আগমনকে তার অনুসারীরা ব্যাপকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। অনুসারীদের বড় একটি অংশ এই খবরে সন্তুfষ্টি প্রকাশ করেছে। তিনি তার পছন্দের পদক্ষেপকে সমর্থন করায় ভক্ত-অনুসারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিনোদন

চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি। দীর্ঘদিন তার অভিনীত নতুন সিনেমা মুক্তি না পেলেও সিনেমার শুটিং নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন। সিনেমার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন এবং ওটিটিতেও কাজ করছেন। কয়েকটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ সিনেমাগুলোর অগ্রগতি, বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি

* বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

** করোনা প্রকোপের পর থেকে এখন ভালোই যাচ্ছে ব্যস্ততা। তিনটি সিনেমার ডাবিংয়ের কিছু অংশ বাকি আছে। সেগুলো নিয়ে ব্যস্ত আছি। ‘পাপ’ ও ‘ময়ূরাক্ষী’ নামে দুটি সিনেমার সব কাজ প্রায়ই শেষ, এখন শুধু পোস্টারের শুট বাকি। শিগ্গির তা শেষ হবে।

* কিছুদিন আগে কলকাতায় গিয়েছিলেন। শুটিং নাকি সিনেমাবিষয়ক অন্য কোনো কাজে?

** তেমন কিছু না। ‘ইন্দুস ভ্যালি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ নামে একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করতে সেখানে গিয়েছিলাম। তিন সপ্তাহের মতো অবস্থান করতে হয়েছে সেখানে। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুব ভালো লেগেছে। অনেক কিছু শেখার আছে এ ফেস্টিভ্যালে, ব্যক্তিগতভাবে আমি শিখেছিও অনেক কিছু। এ ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সিনেমার কিছু কাজ ছিল সেগুলোও সেরেছি।

* নতুন সিনেমার কোনো খবর আছে?

** দুটি যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় কাজ করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে গল্প-চরিত্র নিয়ে নির্মাতার সঙ্গে কথা হয়েছে। আরেকটি সিনেমায় কাজ করার কথা মৌখিকভাবে চূড়ান্ত হয়েছে। শিগ্গির লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হব। সিনেমা তিনটি নির্মাণ করবেন এমএন রাজ। কলকাতার সুপারস্টার জিতের ‘রাবণ’ সিনেমার নির্মাতা তিনি। তিনটি সিনেমার মধ্যে একটির নায়ক অঙ্কুশ থাকবে এটি নিশ্চিত। ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ নামে একটি সিনেমাতে অনেক আগেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এটির কাজও কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে বলে শুনেছি। দেখা যাক কী হয়।

* গত কুরবানির ঈদের পর ঢালিউডে একটা উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। আপনার অনুভূতি কেমন?

** অবশ্যই আমার কাছে ভিষণ ভালো লাগছে। যে কারও সিনেমা মুক্তি দেওয়া হোক না কেন, হলে দর্শক গেলে অনেক ভালো লাগে। এবারের কুরবানির ঈদের পর দর্শকদের উচ্ছ্বাস আনন্দ দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আশা করি এমন আনন্দের জোয়ার নিয়ে আমাদের সিনেমা আরও এগিয়ে যাবে।

* সম্প্রতি ওটিটিতেও আপনাকে দেখা গেছে। এ মাধ্যমে কী নিয়মিত হবেন?

** আমি নিজে ভালোভাবে অভিনয় করার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিই। সিনেমা, ওটিটি এসব বিষয় নিয়ে সিরিয়াস চিন্তা করি না। আমি মনে করি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক বিষয় কিংবা মাধ্যমের পরিবর্তন হবে। এ পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটাই বড় বিষয়। সে দিক থেকে বলব, ওটিটিতে একটি কাজ করেছি-সাড়াও ভালো পেয়েছি। ভালো গল্প-চরিত্র পেলে ওটিটিতে আরও কাজ করতে পারি। সিনেমা ও অভিনয় আমার ভালোবাসার জায়গা। দিন শেষে আমি অভিনয়টা ঠিকঠাক করতে চেয়েছি। কতটা ভালো অভিনয় করতে পেরেছি তা দর্শকরা বলতে পারবেন। আমি এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামীতেও সেটা করব।

বিনোদন

রাজধানী নিয়ে বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প হচ্ছে, তবে উপেক্ষিত থাকছে সাংস্কৃতিক বিনোদনের বিষয়টি।

তিন দশক আগের ঢাকার সঙ্গে এখনকার তুলনা করলে দেখা যাবে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, বেড়েছে আয়তনও। কিন্তু নাটক মঞ্চায়নের স্থান বাড়েনি একটিও, কমেছে সিনেমা হল।

ঢাকার নাটক পাড়া বলে পরিচিত স্থান ছিল বেইলি রোড, সেখানে দুটি মঞ্চের একটি এখন টিকে আছে। আর মূল নাটক পাড়া সরে এসেছে সেগুন বাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে।

ফলে ১৯৯১ সালে ঢাকায় যেখানে ৬৪ লাখ মানুষের জন্য নাটক দেখার স্থান ছিল দুটি; এখন তার দ্বিগুণ মানুষের জন্য সেই স্থান দুটিই আছে।

ঢাকা দুই ভাগ হওয়ার পর শিল্পকলা একাডেমি কিংবা বেইলি রোডের মহিলা সমিতি দুটোই পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়; নিয়মিত নাটক হবে, এমন কোনো মঞ্চই নেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়। অথচ ঢাকা দক্ষিণের চেয়ে উত্তরের জনসংখ্যা ১৭ লাখ বেশি।

উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় আলাদা এক শহরই হয়ে উঠেছে উত্তরা, যেখানে ১৫ লাখের মতো মানুষের বাস, অথচ সেখানে নেই একটি সিনেমা হলও। উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে যতগুলো সিনেমা হল তিন দশক আগে ছিল, তার অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে গেছে।

উত্তরার মতো বিভিন্ন দিকে ঢাকা বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে উঁচু উঁচু দালান উঠছে, বিপণি বিতান আর রেস্তোরাঁর ভরে যাচ্ছে এলাকাগুলো, কিন্তু নগরবাসীর সাংস্কৃতিক বিনোদনের খোরাক দেওয়ার মতো কোনো স্থান গড়ে উঠছে না।

বরং যেগুলো ছিল, তা থেকে কমে যাওয়ায় এবং তার বিপরীতে মানুষ বেড়ে যাওয়ায় গড় হিসেবে ঢাকাবাসী প্রতিজনের সাংস্কৃতিক বিনোদনের সুযোগ সঙ্কুচিতই হচ্ছে।

আবার যেটুকু সুযোগ আছে, ক্রমবর্ধমান যানজট তাও নিচ্ছে কেড়ে। একসময় মিরপুর কিংবা উত্তরা কিংবা মিরপুর থেকে নাটক দেখতে শিল্পকলা একাডেমিতে আসতে তিন দশক আগে যদি এক ঘণ্টায় আসা যেত, এখন তা চিন্তাই করা যায় না।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “এখন যানজটের কারণে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া একটু কঠিনই। ফলে উত্তরার কেউ থিয়েটার দেখতে চাইলে তাকে শিল্পকলায় আসতে হয়। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আসতে পারে না।”

একই কথা মিরপুর কিংবা ডেমরা কিংবা মোহাম্মদপুরের জন্যও খাটে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, সাংস্কৃতিক বিনোদনের সুযোগ না থাকলে একটি নগর অপূর্ণাঙ্গই শুধু থাকে না, মানবিক বোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে ওঠার জন্যও অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

সিনেমা হল: ছিল ১২৩৫টি, ২ যুগ পেরিয়ে কমে এখন ১২০টি

স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে ঢাকা নগরীর আয়তন ছিল ৪০ বর্গকিলোমিটার; জনসংখ্যা ছিল ১৫ লাখ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ঢাকা, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে জনসংখ্যাও।

ঢাকা সিটি করপোরেশন দুই ভাগ হওয়ার পর এখন দুটো মিলিয়ে আয়তন বেড়ে হয়েছেন ৩০৫ বর্গকিলোমিটার; আর জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ।

১৯৯০ সালের পর উত্তরা আবাসিক এলাকা গড়ে উঠতে থাকে, এখন সেখানে ১৫ লাখ মানুষের বাস। পাশাপাশি এর আশপাশেও প্রসারিত হয়েছে শহর।

কিন্তু উত্তরা এলাকায় নেই সাংস্কৃতিক বিনোদনের কোনো কেন্দ্র। কোনো সিনেমা হল সেখানে গড়ে ওঠেনি এখনও। উত্তরা থেকে কেউ সিনেমা দেখতে চাইলে তাকে আসতে হবে ১০ কিলোমিটার দূরের যমুনা ফিউচার পার্কে।

পুরান ঢাকার মানসীর মতো অনেক সিনেমা হলই গুটিয়ে গেছে

উত্তরায় বসবাসরত বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যকার অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী বলেন, “উত্তরায় ১৫ লাখেরও বেশি লোক বসবাস করে। কিন্তু এখানে কোনো নাট্যমঞ্চ নেই। গণপাঠাগার নেই। একটি মিলনায়তন আছে, সেখানে নাটক করতে হলে ১৭ হাজার টাকা ভাড়া গুণতে হয়। এত টাকা দিয়ে তো কোনো নাট্যদল এখানে নাটক করতে পারবে না।”

তবে সম্প্রতি উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ করা হয়েছে, জনবহুল উত্তরার জন্য এই একটিই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন রতন সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে মেয়র আতিক ‘বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চ’ নামে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ উদ্বোধন করেছেন। এখানে আমরা কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করি। তবে জনবহুল উত্তরার সংস্কৃতির বিকাশের জন্য এটা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। এই মুক্তমঞ্চের দেখভালের জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে যে লোকটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেও সংস্কৃতিবান্ধব নয়।”

তিন দশক আগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা হওয়ার পর কুড়িল-বাড্ডা এলাকার দৃশ্যপট গেছে বদলে। পাশেই গড়ে উঠেছে বনশ্রী ও আফতাব নগরের মতো আবাসিক এলাকা।

সব মিলিয়ে এলাকাটি হয়ে উঠেছে বহু মানুষের বাস। কিন্তু সেখানেও কোনো নাটকের কোনো মঞ্চ গড়ে ওঠেনি। রামপুরা থেকে বাড্ডা পেরিয়ে খিলক্ষেত অবধি কোনো সিনেমা হলই নেই, যমুনা ফিউচার পার্কে ব্লকবাস্টার মুভিজ ছাড়া। গুলশানে একটি সিনেমা হল ছিল, যা বন্ধ হয়েছে বহু দিন আগে।

ঢাকার পূর্বাংশে যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরা পর্যন্ত শহর প্রসারিত হচ্ছে, নতুন নতুন বাড়ি উঠছে সেখানে। কিন্তু সেখানেও কোথাও কোনো মঞ্চ হয়নি নাটকের জন্য। সিনেমা হল যতগুলো ছিল, সেগুলোরও বেশ কয়েকটি এখন বন্ধ।

পুরান ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের দিকে ঢাকা শহর ছড়াচ্ছে; কিন্তু সেখানেও অবস্থা একই রকম। গুলিস্তানে ঘটা করে মহানগর নাট্যমঞ্চ নির্মাণ করা হলেও সেখানে নাটক মঞ্চায়নের পরিবেশ না থাকায় কেউ যায়নি। এখন তার নামই বদলে গেছে, মাঝে মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি পালনে ব্যবহার হয় এই মিলনায়তন।

পশ্চিম দিকে ধানমণ্ডি পেরিয়ে মোহাম্মদপুর ছাড়িয়ে বছিলা হয়ে তুরাগ তীরে গিয়ে ঠেকেছে ঢাকা শহর। শ্যামলী থেকে মোহাম্মদপুর রিং রোডের পশ্চিম ও উত্তর পাশে গত দুই দশকে বিশাল এলাকাজুড়ে বসতি গড়ে উঠেছে, হয়েছে নিত্য নতুন বিপণি বিতান।

তবে ধানমণ্ডি-মোহাম্মদপুর এলাকাজুড়ে খুঁজলে একটি সিনেমা হলই কেবল পাওয়া যায়। রায়ের বাজারের সেই মুক্তি সিনেমা হলটিও ধুকছে। এসব এলাকার কোথাও নেই কোনো নাটকের মঞ্চ।

বিশাল মিরপুর এলাকায় এক সময় ছয়টি সিনেমা হল থাকলেও সবগুলো এখন চালু নেই। নাটক কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের একটি জায়গা ছিল টাউন হল, কিন্তু সেটাও এখন আর নেই।

১৯৭৮ সালে তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে এবং মিরপুর উন্নয়ন কমিটির তত্ত্বাবধানে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের পাশে টাউন হল নির্মাণ করা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হতে থাকে।

টাউন হল ঘিরেই মিরপুরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছিল। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে দুই দশকেই সেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০০৩ সালে হলটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে ১৯ বছরেও আর সেই টাউন হল ফিরে পায়নি মিরপুরের বাসিন্দারা। টাউন হল পুনরুদ্ধারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মিরপুরের সংস্কৃতিকর্মীরা।

মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম শাহীন বলেন, “মিরপুরে একটি আধুনিক নাট্যমঞ্চ নির্মাণ করা আমাদের প্রাণের দাবি। যেখানে থাকবে নাটক, সংগীত, নৃত্য, চিত্রকলা আবৃত্তিসহ শিল্পের সব শাখার আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত মঞ্চ, গ্যালারি, পাঠাগার।”

এমন নগর ‘অপূর্ণাঙ্গ’

ঢাকা শহর যেমন বাড়ছে, গত এক দশকে বড় বড় পরিকল্পনায় ফ্লাইওভার, দ্বিতল সড়ক, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় অবকাঠামো গড়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নগরবাসীর সাংস্কৃতিক বিনোদনের কেন্দ্র গড়ার দিকে নীতি-নির্ধারকদের অমনোযোগে হতাশ অনেকে।

নগর ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, “গত ৩০ বছরে ঢাকা শহর বড় হয়েছে। এই সময়ে বড় বড় প্রকল্প হয়েছে, মহাপ্রকল্প হয়েছে। কিন্তু সংস্কৃতি নিয়ে তেমন একটা ভাবনা ছিল বলে মনে হয় না।

“রাজধানীকে ঘিরে যে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি করার কথা ছিল, সেখানে নগরের নীতি-নির্ধারকরা সম্ভবত খুব একটা উৎসাহিত ছিলেন না। সাংস্কৃতিক বলয় তো পরের কথা, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরির ক্ষেত্রেও তেমন একটা উৎসাহ দেখা যায়নি।”

গুরুত্ব না পাওয়া এই বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “বোধ করি, আমরা মৌলিক চাহিদা নিয়ে অনেক বেশি সচেতন ছিলাম। কিন্তু এটা সবাই বোঝে না যে তারুণ্যের সুস্থ বিকাশে শিক্ষা-সংস্কৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ দিতে না পারলে মানবিক বোধসম্পন্ন হয়ে প্রজন্ম বেড়ে উঠবে না।”

“নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক অবকাঠামো যে অপ্রতুল, এতে কোনো সন্দেহ নাই। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সিটি কর্পোরেশন এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এতে আরও অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে পারে।”

রামেন্দু মজুমদার বলেন, রাজধানীকে ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক বলয়ের পরিকল্পনা করা উচিৎ। মিরপুর, উত্তরা, ধানমণ্ডি, বনশ্রী, বাড্ডা, পুরান ঢাকা, কামরাঙ্গীরচর, বছিলাসহ পুরো রাজধানীতে সংস্কৃতিচর্চার জন্য অবকাঠামোগত পরিকল্পিত উন্নয়ন জরুরি।

কোনো উদ্যোগ কি আসছে?

নাটকের মঞ্চ সঙ্কটের কথাটি বিভিন্ন সময় কর্তৃপক্ষের নজরে আনছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ বলেন, “ঢাকায় মঞ্চ সংকটের বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দুই সিটি মেয়রই কাজ করছেন। আমাদের সাথে আলাপ হয়েছে।

“দুই সিটিতে ৮টি মঞ্চ তৈরি করা হবে। এর মধ্যে উত্তর সিটিতে হবে ৩টা মঞ্চ এবং দক্ষিণ সিটিতে হবে ৫টা মঞ্চ। এই ৮টি মঞ্চ নির্মিত হলে মঞ্চ সংকট অনেকটাই কমবে।”

শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা জেলা শিল্পকলা একাডেমির জন্য মিরপুরে একটি জায়গা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেখানে একটি ভবন করার পরিকল্পনা চলছে। যেখানে মিলনায়তন, মহড়া কক্ষসহ অন্যান্য সুবিধা থাকবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, “সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। এখন তো জায়গা খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন। মিরপুরের টাউন হলের জায়গাটির ব্যাপারে কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। এছাড়া নতুন পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।”

যে মঞ্চগুলো রয়েছে- সেগুলোকে সক্রিয় করার জন্য সাংস্কৃতিক জোট কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না- জানতে চাইলে আহকাম উল্লাহ বলেন, “পুরান ঢাকায় জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আছে। আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোট প্রতি বছর বাহাদুর শাহ পার্কে অনুষ্ঠান করে। আমরা তাদের বলেছি, এরপর যখন অনুষ্ঠান করবে, তখন যেন জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়।”

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “সংস্কৃতির তো বিকল্প কিছু নাই। আমি নিজে সংস্কৃতির মানুষ, গান আমার প্রাণ। আমি ভীষণ গানপাগল মানুষ। সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ করে দেওয়ার জন্য আমরা কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। উত্তরায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চ করেছি, মিরপুরেও মুক্তমঞ্চ করেছি।”

নগর কর্তৃপক্ষের নতুন এক সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন করে আমাদের যত জায়গায় মার্কেট হবে, সেখানে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রাখার ব্যাপার একটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

বিনোদন

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহীও রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন।

তিনি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে মনোনয়ন চাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। ইতোমধ্যে রাজশাহীর তানোরের নিজ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও তাতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন মাহী।

শুক্রবার বিকালে মাহিয়া মাহী তানোরের মুন্ডুমালা ফজর আলি মোল্লাহ ডিগ্রী কলেজে আয়োজিত এক কাবাডি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৪৯তম জন্মদিন উপলক্ষে মাহীর নিজের প্রতিষ্ঠান স্বপ্ন ফাউন্ডেশন ও রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা যৌথভাবে ক্রীড়া অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

মাহীর উপস্থিতির খবরে আশপাশের এলাকার হাজার হাজার উৎসুক মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন তাকে এক নজর দেখার জন্য। উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাও। ছিলেন বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা।

নায়িকা মাহী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করি, লালন করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার চলমান বিভিন্ন উন্নয়নে আমিও শরিক হতে চাই। কাজ করতে চাই এলাকার মানুষের জন্য। আমি বিনোদন জগতের মানুষ। রাজনীতি করিনি আগে। তবে এখন আমি শিখতে চাই। রাজনীতিটা শুরু করতে চাই। রাজনীতির মাধ্যমে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। আমি সেই কাজটা ভালভাবে শুরু করতে চাই। এসব মহৎ কাজের জন্য আমি তানোর গোদাগাড়ীর মানুষকে সঙ্গে পাবো বলে আশা করছি।

আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মাহী বলেন, এটা কেবল তখনই সম্ভব যদি এলাকার মানুষ সেটা চায়। এলাকার মানুষ যদি আমাকে ভালোবাসে-সেটা অবশ্যই হতে পারে ইনশাল্লাহ।

উল্লেখ্য, নায়িকা মাহির পৈতৃক নিবাস চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নাচোলে। তবে তার জন্ম হয় নাচোলের পার্শ্ববর্তী উপজেলা তানোরের মুন্ডুমালায় নানা বাড়িতে। মাঝে মাঝেই তিনি তানোরে আসেন। এর আগে মুন্ডুমালায় তিনি একটি জমকালো ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। এলাকার মানুষের মাঝে আগে কয়েকবার বিতরণ করেন শীতবস্ত্র। করোনার মধ্যে খাদ্য ও অর্থ সাহায্য দেন এলাকার মানুষকে।

জানা গেছে চিত্রনায়িকা মাহী বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তিনি এ সংগঠনের রাজশাহী বিভাগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিনোদন

ঢাকাই সিনেমার নায়িকা শবনম বুবলী ও অপু বিশ্বাসের বর্তমান সম্পর্ক ভালো না থাকলেও তাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল আছে। দুজনেই সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। দুজনেই শাকিবের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেছেন। দুজনেই শাকিবের সন্তানের মা। আবার বিয়ে ও প্রেমের বিষয়টির প্রকাশের ক্ষেত্রে দুজনের মধ্যে খুব একটা অমিল নেই।

অপু বিশ্বাস ও বুবলী দীর্ঘ বিরতির পর স্ব স্ব কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কাকতালীয়ভাবে দুজন আজ নতুন যাত্রা শুরু করেছেন।

কাকতালীয়ভাবে একই দিনে নতুন দুটি চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু হচ্ছে আলোচিত এ দুই তারকার। একজন শুটিং করবেন মানিকগঞ্জে, অন্যজন সিলেটে।

বন্ধন বিশ্বাস পরিচালিত ‘লাল শাড়ি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন অপু বিশ্বাস। অন্যদিকে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘প্রহেলিকা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন শবনম বুবলী।

অপুর বিপরীতে নায়ক সাইমন সাদিক আর বুবলীর বিপরীতে নায়ক হয়ে পর্দায় আসছেন টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ।

আজ শুরু হয়ে ‘প্রহেলিকা’ চলচ্চিত্রের শুটিং চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এর পর ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দর থেকেই তারা ছুটবেন আরেকটি শুটিং স্পটে। সব মিলিয়ে ২৮ দিন শুটিং করে ছবিটির কাজ শেষ করতে চান পরিচালক।

আজ প্রথম দৃশ্যের শুটিংয়ে অংশ নেবেন মাহফুজ আহমেদ, শবনম বুবলী ও একে আজাদ সেতু।

সংলাপের দৃশ্যধারণ দিয়ে ‘প্রহেলিকা’র শুটিং শুরু হলেও সরকারি অনুদানের ছবি ‘লাল শাড়ি’র শুটিং শুরু হবে ছবিটির টাইটেল গান ‘লাল শাড়ি’ দিয়ে। প্রথম দিনে অপু বিশ্বাস ও সাইমন সাদিক গানের দৃশ্যে অংশ নেবেন। কোনাল ও কিশোরের গাওয়া এ গানটি ‘লাল শাড়ি’ চলচ্চিত্রের টাইটেল গান বলে জানালেন পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস।