বিনোদন

‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হানড্রেড’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন অস্কারজয়ী কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ এ আর রহমানসহ দেশী-বিদেশি দুই শতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী।

তাদের ফি বা পারিশ্রমিকসহ বিভিন্ন খরচের ওপর প্রযোজ্য আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানা গেছে।

গত ২৮ মার্চ এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। শনিবার এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশীদের অংশগ্রহণে ২৯ মার্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানের জন্য অংশগ্রহণকারীদের ফি বা পারিশ্রমিক, আবাসন বা হোটেল ভাড়া, বিমান ভাড়া, যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচের ওপর প্রযোজ্য সব প্রকার আয়কর প্রদান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

এছাড়া অনুষ্ঠানের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুষ্ঠানের জন্য বিদেশ থেকে আমদানিতথ্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, সাউন্ড সিস্টেমস, লাইট, এলইডি স্ক্রিন, স্টেজ নির্মাণ সামগ্রী ও আতশবাজী সামগ্রীর ওপর আরোপণীয় উৎস আয়কর এবং টেলিভিশন প্রোডাকশন ব্যয়ের ওপর আরোপণী সব প্রকার আয়কর হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তবে শর্ত রয়েছে, কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত অর্থ দেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যয় করতে হবে। এ আদেশ ২৮ মার্চ থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।

বিনোদন

রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে। রোববার (২৭ মার্চ) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করে এ তথ্য নিজেই নিশ্চিত করেছেন পরী নিজেই।

ওই ছবি ক্যাপশনে পরীমনি লেখেন, একটি দুর্ঘটনা। সেখান থেকে জানা যায়, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন তিনি।

হাসপাতালের প্রশাসনিক এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শারীরিক দুর্বলতার কারণে মাথা ঘুরে হঠাৎ পড়ে যান পরীমনি। এরপর তার স্বজনরা আমাদের এখানে নিয়ে আসেন। রোববার সকাল ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শারীরিক দুর্বলতার সঙ্গে পরীমনির বমির ভাব রয়েছে। হাসপাতালটির মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিখাত শায়লা অধীনে পরীর চিকিৎসা চলছে।

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে পরীমনি অভিনীত সিনেমা ‘গুণিন’। এই সিনেমায় কাজ করতে গিয়েই চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে তার প্রেম হয় তার। এরপর ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর বিয়ে করেন তারা। কিন্তু সেই খবর প্রকাশ করেন চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি। একইসঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আনেন পরী।

বিনোদন

একাত্তরে বাংলার মুক্তির যুদ্ধ রূপ নিয়েছিল জনযুদ্ধে; অস্ত্র হাতে সবাই লড়েননি, কিন্তু নানা আঙ্গিকে লড়াই চালিয়েছেন সবাই। তাদেরই একজন তিমির নন্দী। মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে কণ্ঠ দিয়ে লড়ে গিয়েছিলেন তিনি।

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে অস্ত্র হাতেই যুদ্ধে যেতে চেয়েছিলেন তখনকার কিশোর শিল্পী তিমির নন্দী; পরে মায়ের নির্দেশে কলকাতার বালিগঞ্জে গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দিয়ে গানে গানে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়।

তার ভাষায়, তাদের সেই গান ছিল ‘বুলেটের মতো’, যা উজ্জীবিত করেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের।

তিমির নন্দীদের সংগ্রামের ফল স্বাধীন বাংলাদেশ পেরিয়ে এসেছে ৫০ বছর। ৫১তম স্বাধীনতা দিবসের ক্ষণে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বাসায় মুখোমুখি হলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে যুদ্ধদিনের স্মৃতি শোনালেন তিনি; সেই সঙ্গে জানালেন আগামীর বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান।

একাত্তরের মার্চের সেই উত্তাল দিনগুলো কেমন দেখেছিলেন ?

তিমির নন্দী: আমি তখন কিশোর ছিলাম। সাতই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেই আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। সেই সময়ে আমার ভাই তরুণ কুমার নন্দীর শ্বশুরবাড়ি কুড়িগ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম আমরা। ২৫ মার্চের কালরাত নিজের চোখে দেখা হয়নি। কুড়িগ্রামে থাকার সময় আমার বেয়াই দেবব্রত বসুর সঙ্গে কুড়িগ্রামে গান করেছিলাম। দেবব্রত কুড়িগ্রামের নামকরা গায়ক, নাট্যকার ছিলেন। আমি বয়সে কিশোর হলেও রেডিও ও টিভিতে গান করার সুবাদে মুল্যায়ন করা হয়েছিল। মার্চেই সেখানে একটি গানের দল করলাম; গণসংগীত ও দেশের গান পরিবেশন করতাম।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে হাটে, ঘাটে, মাঠে গান পরিবেশন করে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতাম। এর মাঝে পাকিস্তানি আর্মি রংপুর চলে এলো; আমাদের সেখান থেকে সরে যেতে হবে। দেবব্রতদা সিদ্ধান্ত নিলেন, তাদের গ্রামের বাড়ি বাকুয়াতে আমরা চলে যাব। পরদিন সন্ধ্যায় গাড়িতে চেপে দুই পরিবারের পরিবারের সদস্যরা বাকুয়ায় পৌঁছালাম। এত সুন্দর গ্রাম! সন্ধ্যা নামলেই সেখান থেকে আসামের গারো পাহাড় দেখা যায়, আর দেড় মাইল দূরে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ।

সেই বাকুয়া থেকেই আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। রোজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে গ্রামের মানুষ খেয়ে শুয়ে পড়ত। তার উপরও যুদ্ধের মধ্যে সবাই একটু সতর্ক ছিল। আমরা কয়েকজন যুবক ও কিশোর, দুয়েকজন মুরব্বিও ঘরের মধ্যে আস্তে ভলিয়্যুমে রেডিও ছাড়তাম। রেডিওতে কান পেতে বিবিসি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, তারপরে আকাশবাণী শুনতাম।

খবরে শুনতাম, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, শিশু থেকে বৃদ্ধ-সবাইকে তারা হত্যা করছে। এসব খবরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মনের ভেতরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল।

রেডিও শুনে ঘরে শিকল লাগিয়ে আমগাছের ডালে হ্যাজাক ঝুলিয়ে আমরা ক্যারাম খেলতাম। আর পাকিস্তানি আর্মি, রাজাকার, আল শামসদের থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করতে লাঠি নিয়ে গ্রাম পাহারা দিতাম। লাঠি হাতেই আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আমাদের কোনো অস্ত্র ছিল না। সাতই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু তো বলেই গেছেন, যার হাতে যা কিছু আছে তাই নিয়ে যুদ্ধে নামতে হবে।

এর মধ্যে একদিন মাকে বললাম, মা, আমি এইভাবে বসে থাকতে পারব না। আমি অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাব।

সেই সময় মেজ ভাই ঢাকায় ছিলেন ও মেজ বোন কুষ্টিয়ায়। তাদের কোনো খবর মিলছিল না। আগে টেলিগ্রামে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও যুদ্ধের মধ্যে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দাদা ও দিদির জন্য মায়ের মন অশান্ত থাকায় তখন মা আর কিছু বললেন না আমাকে।

কুড়িগ্রাম থেকে আসাম হয়ে কলকাতা গেলেন ?

তিমির নন্দী: হ্যাঁ। কয়েকদিন পর আবার খবর এল, পাকিস্তানি আর্মিরা তৈরি হচ্ছে; বাকুয়া গ্রামে ঢুকে পড়বে। পরে তখন ঠিক করা হল, নৌকা ভাড়া করে আসামের ধুবরিতে এক আত্মীয়ের বাসায় যাব। বিশাল একটা নৌকা ভাড়া করা হল। নৌকার মাঝ বরাবর একটা ডিভিশন দিয়ে একপাশে ছেলেরা আরেকপাশে মেয়েরা ছিল।

নৌকার গুন টেনে টেনে দুই দিন, দুই রাত চলে গেছে, যাত্রাপথে আমরা খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। দিনের বেলা তাও তো সামনে কী আছে, দেখা যাচ্ছিল; কিন্তু রাতের বেলা কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। রাতে সামনে কোনো নৌকা আসার শব্দ পেলে মাঝি হাঁক দিয়ে জানতে চাইছিলেন, ‘কে যায়?’ ওপাশ থেকে পালটা হাঁক আসে, ‘মানুষ যায়’।

চাল-ডাল ফুরিয়ে এল; নৌকা ভিড়িয়ে নামতে হত। পথঘাট কেউ চিনত না। এভাবে ভয়ের মধ্যে কেটেছে আমাদের দুই দিন-রাত। ধুবড়িতে পৌঁছার পর এক বাসায় আমাদের জায়গা হচ্ছিল না, কয়েকটি বাসায় মিলিয়ে আমরা রাত্রিযাপন করেছিলাম।

পরদিন শিয়ালদা এক্সপ্রেসে কলকাতা চলে গেলাম। কলকাতায় আসার পর মাকে আবার বললাম, আমি যুদ্ধে যাব। মায়ের পেছনে কয়েকদিন খুব লেগে থাকলাম।

শেষ পর্যন্ত মাকে রাজি করালেন কীভাবে ?

তিমির নন্দী: কলকাতায় যাওয়ার পর একদিন সকালে আনন্দবাজার পত্রিকা পড়তে গিয়ে একটি ছবিতে চোখ আটকে গেল। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ১৭ কিংবা ১৭ বছর বয়সী এক যুবক তার বাবার পায়ের কাছে অস্ত্র রেখে যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। ছবিটা আমাকে নাড়া দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকাটা দেখিয়ে মাকে বললাম, এই ছেলে যুদ্ধ করতে পারলে আমি কেন পারব না। তখন মা বললেন, “তুমি যখন যুদ্ধ করতে চাচ্ছ, তখন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যাও। সেখানে অনেককেই পাবে, যাদের তুমি চেন।”

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গিয়ে কাদের পেলেন ?

তিমির নন্দী: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র কোথায় সেটাই তো আমি জানতাম না। মেজ দাদা কলকাতায় এলে তার কাছে খোঁজ পেয়েছিলাম, কলকাতার বালিগঞ্জে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। দুইতলা একটি বাড়ি। প্রথমে সমর দাস দাদাকে পেলাম। তিনি মেজদার শ্বশুরের বন্ধু। পেয়েছিলাম অজিত রায়কে; তিনি আমাদের পারিবারিক বন্ধু ছিলেন। আব্দুল জব্বার, কাদেরী কিবরিয়া, অরূপ রতন চৌধুরী, সুজেয় শ্যাম, লাকী আখান্দসহ আরও অনেককে পেলাম যাদের সঙ্গে আমার পরিচিতি ছিল।

সবাই মিলে একটি মাইক্রোফোনে গান রেকর্ড করতাম। ঘাড়ে হাত দিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গান করতাম। তখন আমি আশায় থাকতাম, কখন একটি গান পাব। মুষ্টিমেয় কয়েকটি একক গান গেয়েছেন জ্যেষ্ঠ শিল্পীরা। আমি কোরাস গানগুলো করতাম।

প্রত্যেক শিল্পীই কোনো না কোনো সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। আমিও একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র যিনি পরিচালনা করতেন, মন্ত্রী আব্দুল মান্নানেরও একটি সংগঠন ছিল। কলকাতার নারকেলডাঙ্গা থেকে পরিচালিত শরণার্থী শিল্পীগোষ্ঠী নামে সেই সংগঠনের সদস্য ছিলাম আমি। মামুনুর রশিদ, মিতালী মুখার্জি, দীপা দাস, কমল সরকারসহ আরও অনেককে পেয়েছিলাম।

শরণার্থী শিল্পীগোষ্ঠীতে আপনার সেই দিনগুলো কেমন ছিল ?

তিমির নন্দী: মুক্তিযুদ্ধকালীন তহবিল সংগ্রহে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় আমরা অনুষ্ঠান করেছি, রবীন্দ্রসদনে গান করেছি; সীমান্তে এসে গান করেছি। অক্টোবরের দিকে কলকাতার এক পূজামণ্ডপে শরণার্থী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে একটি গান করেছিলাম। পরদিন সকাল পৌনে দশটায় দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকাশবাণীর সংবাদ পরিক্রমা শুনছিলাম। হঠাৎ তিনি আমার নামটি বলে সেই গানের দুই লাইন বাজালেন। আমি তো আনন্দে আত্মহারা; বাসার সবাই চমকে গেলেন। দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন নমস্য মানুষের কণ্ঠ থেকে আমার নামটি প্রকাশিত হওয়া অনেক বড় পাওয়া।

বালিগঞ্জে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ফিরি; সেখানকার দিনগুলো কেমন ছিল ?

তিমির নন্দী: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যে গানগুলো করেছি, আপনারা জানেন, গানগুলো বুলেটের মতো কাজ করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করেছে। আপেল মাহমুদ ভাইয়ের ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গানটি শুনে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, স্বাধীন বাংলা বেতারের গান শুনে মনে হত এই বাংলাদেশকে পাকিস্তানিদের হাত থেকে মুক্তি করতেই হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র যেভাবে পরিচালিত হয়েছে সারা পৃথিবীর ইতিহাসে বেতার যন্ত্র দিয়ে এমন কোনো যুদ্ধ হয়েছে কি না-আমার জানা নেই।

যাদের অস্ত্র ছিল গান

স্বাধীন বাংলা বেতারের স্লোগান, গান গেরিলা যুদ্ধের সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গেরিলা যোদ্ধাদের বলা হয়েছে, এই গানটি যখন বাজবে তখন ওই ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে হবে। এই স্লোগানটি যখন প্রচারিত হবে, তখন এই শিপটি উড়িয়ে দিতে হবে। এগুলো সিগন্যাল দেওয়া থাকত। এভাবেই মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।

যে ১০ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে ট্রান্সমিটারটা আগরতলা হয়ে কলকাতায় নিয়ে যান, আমি তাদেরকে সবসময়ই স্যালুট জানাই। তারা যদি এটি না করতেন, তাহলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্ম হত না।

স্বাধীন বাংলা বেতারের আরেকটি স্মরণীয় ঘটনা বলি। ১৬ ডিসেম্বরের সকাল থেকে একটি গানের রিহার্সেল করছিলাম; সুজেয় শ্যাম সঙ্গে ছিলেন। বেলা ২টার দিকে খবর পেলাম, ঢাকায় পাকিস্তানিরা সারেন্ডার করেছে। শুনেই আমরা উল্লাসে ফেটে পড়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকলাম। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাসছি, কাঁদছি। দেশটা স্বাধীন হয়েছে, এর জন্য আনন্দ অশ্রু ঝরেছিল। সঙ্গে স্বজন হারানোর বেদনায় কান্নাও ছুঁয়েছিল আমাদের।

আরেকটি বিষয় ছিল, তখনও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন, তাকে কীভাবে আমরা ফিরে পাব, সেটা নিয়েও বেদনা কাজ করছিল। আমরা মুক্তি পেয়ে গেলাম কিন্তু তিনি পেলেন না।

সেইদিন আমাদের আশেপাশে কলকাতাবাসীদের মধ্যে যারা ছিলেন তারাও বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে রাজপথে নেমে আসেন।

তখনই আমাদের শহিদুল ইসলাম ভাই লিখে ফেললেন, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, সুজেয় শ্যাম সুর তুললেন। ২০ মিনিটের মধ্যে গানটা রেকর্ড করলেন। গানে লিড করলেন অজিত রায়; সঙ্গে আমরা ১৭ জনের মতো গানটা রেকর্ড করলাম। বেতার কেন্দ্র থেকে কলকাতার বাসায় ফেরার পথেই শুনলাম, সেই গানটি বেজে উঠল। পরে শুনেছি, কাকতালীয়ভাবে সেই গানটি বাজার সময়ই ঢাকায় সারেন্ডার করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী।

যুদ্ধ থেকে ফিরে কেমন ঢাকা দেখেছিলেন ?

তিমির নন্দী: তখন আমাদের বাসা ছিল লালমাটিয়ায়। ঢাকায় ফিরে দেখি, সেই বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানি আর্মি, বিহারিরা বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে। আমার ছোটবেলার ছবি, মেডেল, সার্টিফিকেটগুলো আর পাইনি। আমাদের বাসায় লুটপাট হয়েছে, বোমা ফেলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে, তার থেকে বড় কথা পুরো দেশেই এমন বর্বরতা চালিয়েছে পাকিস্তানিরা।

অনেকে আত্মীয়-স্বজন হারিয়েছেন; যাদের হারায় তারাই শুধু বোঝেন। পরে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশটিকে বিভাজন করা হয়েছে। একটি স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি আরেকটি পাকিস্তানিদের প্রেতাত্মা। প্রত্যেকটা দেশের জাতির পিতা থাকেন, যখন জাতির পিতাকে নিয়ে বিতর্ক হয় তখন আমার খুব খারাপ লাগে।

যখন দেখি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়, হিন্দু-বৌদ্ধদের সম্পদ ধ্বংস করা হয়, তখন কষ্ট লাগে। একাত্তরে সব ধর্মের মানুষই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। দেশটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবাইকে দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেরে শিল্পীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে মনে করেন ?

তিমির নন্দী: বিষয়টি নিয়ে আজকেই ভাবছিলাম। হ্যাঁ, সরকার শিল্পীদের জন্য কিছু কাজ করছে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মুষ্টিমেয় কয়েকজন, আমাদের একটা লিস্টই আছে। অনেকের নাম হয়ত নেই। কিছু শিল্পী হয়ত নিজেদের যোগ্যতায় পরিচিত পেয়েছে। আমাদের মানুষ চেনে। কিন্তু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনেককে চেনে না।

আমরা কিছু পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। আমরা দেশটা আর মানচিত্র পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করেছি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা যুদ্ধ করেছি। সরকার আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছেন; আমরা সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ।

আর হ্যাঁ, শিল্পীদের মধ্যে অনেক আছেন যারা এখনও অসচ্ছল; তাদের আরও সাহায্য করা উচিৎ। প্রতি মাসে তাদের কাছে একটি অ্যামাউন্ট যাচ্ছে। আর কীভাবে মূল্যায়ন করা যায়, সেটা জানি না।

তবে আমার একটা ইচ্ছা ছিল, দেশে সাংবাদিক কলোনি হয়, ব্যাংক কলোনি হয়, সেই রকম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের নিয়ে যদি একটা কলোনি হত। সবাই মিলে পরিবারের মতো একটা জায়গায় থাকতে পারলে ভালো হত। সেটা একটা চাওয়া ছিল। একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন। মূল্যায়ন বলতে যদি রাষ্ট্রীয় পদকের কথা বলি, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে কণ্ঠ দিয়ে তাদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত করা উচিৎ।

স্বাধীনতার পর পঞ্চাশ বছর পেরিয়েছে বাংলাদেশে; আগামীর বাংলাদেশকে আপনি কেমন দেখতে চান ?

তিমির নন্দী: প্রথমত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই।সে খাচ্ছে, আমি খাব- এই ধরনের টেন্ডেন্সি না। বলা যায়, এমন একটা মানুষ নেই যে দুর্নীতি করছে না। যে দিচ্ছে সে যেমন অপরাধী, যে খাচ্ছেও সেও অপরাধী। দুর্নীতি বন্ধ হলে ভালো হবে। অসহায় মানুষ যারা তাদের সরকারি সাহায্যের আশায় গেলেও টাকা দিতে হয়। এরকম বাংলাদেশ কিন্তু আমি চাইনি। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন। ঠিক তেমনি সোনার বাংলা দেখতে চাই। কোনো বিভাজন থাকবে না। এক নেতা, এক দেশ এবং সবাই হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। সেইভাবেই দেশ এগিয়ে যাবে। তেমনই একটা দেশ দেখতে চাই।

বিনোদন

মারা গেছেন অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।

তিন দিন ধরে তিনি পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। বুধবার (২৩ মার্চ) রিয়েলিটি শো-তে তিনি অংশও নিয়েছিলেন। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ভোরে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সাংস্কৃতিক মহল।

বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইন পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।

১৯৬৪ সালের ৩ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা পথভোলা। একটা সময়ে নিয়মিত সিনেমার কাজ করেছেন অভিষেক। তার উল্লেখ্যযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে, মায়ার বাঁধন, জয়বাবা ভোলানাথ, মায়ের আঁচল, গীত সংগীত, সুজন সখী। অল্প সময়ে দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝে কাজ থেকে দীর্ঘ বিরতি নেন। সম্প্রতি অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ফের ধারাবাহিকে কাজ শুরু করেছিলেন। ফিরে এসেই নতুন করে মন কেড়েছিলেন দর্শকদের। এর মাঝেই এলো দুঃসংবাদ !

বিনোদন

২০২০ সালের সেরা নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগমকে। অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে আসতে না পারায় তার পক্ষে পুরস্কার নেন মেয়ে চিত্রনায়িকা রোমানা ইসলাম মুক্তি।

বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার পক্ষে পুরস্কার বিতরণ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে দিন দশেক আগে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল আনোয়ারাকে। দুদিন আগে বাসায় ফিরলেও ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না তিনি, চোখেও ভালো দেখছেন না। এ কারণে চলচ্চিত্র পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি।

এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত আরেক অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। এর পর সেরা সিনেমা, সেরা নির্মাতা ও কলাকুশলীদের পুরস্কার দেওয়া হয় একে একে।
এবার অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার জন্য মোট ২৭ বিভাগে ৩২ জনকে চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার।

বিনোদন

গুরুতর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ঢাকাই ছবির বর্ষীয়ন অভিনেত্রী আনোয়ারা। কয়েকদিন আগেই ব্রেন স্ট্রোক করেন এ অভিনেত্রী। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার এতোটাই অবনতি যে, কাউকে চিনতে পারছেন না।

এই তথ্য নিশ্চিত করে আনোয়ারার মেয়ে অভিনেত্রী মুক্তি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মায়ের অবস্থা ভালো নয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটে। এর পর কাউকে চিনতে পারছিলেন না কয়েকদিন ধরে। চোখেও ঝাপসা দেখছিলেন। স্ট্রোক করেই এমনটা হয়েছে বলে ধারণা।

এদিকে বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হল অব ফেম মিলনায়তনে বসছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’–এর আসর। যেখানে চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আনোয়ারাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সশরীরে পুরস্কারটি নিতে পারছেন না এ অভিনয়শিল্পী।

জানা গেছে, গত ১১ মার্চ রাতে হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে ঢাকার রামপুরার বনশ্রীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আনোয়ারাকে। ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।

আনোয়ারার বর্তমান অবস্থার কথা জানান মুক্তি, ‘কয়েকদিন আগে ব্রেন স্ট্রোক হলে কাউকেই চিনতে পারছিলেন না আম্মা, আমাকেও না। তবে আল্লাহর রহমতে এখন একটু ভাল। এখন বাসায় চিকিৎসা চলছে। ডাক্তার বলেছেন, ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।’

বিনোদন

বলিউড সিনেমা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ মুক্তির পর পর এর সমর্থনে ও বিরোধিতা করে বক্তব্য দিচ্ছেন অনেকে। সিনেমাটি নিয়ে ভারতের রাজনীতির মাঠও উত্তপ্ত। আলোচিত ছবিটি দেখতে নিষেধ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এ সিনেমায় মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির নেতারা সিনেমার প্রশংসা করেছেন।

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমা নিয়ে খোদ বলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যেই বিভক্তি দেখা গেছে। সিনেমাটি ভারতের সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজকে ভেঙে টুকরো করে দেবে বলে অভিযোগ খ্যাতিমান অভিনেতা নানা পাটেকরের।

এরবার এই সিনেমা নিয়ে মুখ খুললেন বলিউডের প্রথম সারির নায়ক এবং প্রযোজক আমির খান। সিনেমার সমর্থনেই কথা বলেছেন মি. পারফেক্টশনিস্ট।

সম্প্রতি দক্ষিণী পরিচালক রাজামৌলীর বিগ বাজেটের সিনেমা ‘আর আর আর’-এর সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন আমির খান।

তাকে পেয়ে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে মন্তব্য করতে অনুরোধ জানান সাংবাদিকরা।

তখন ‘পিকে’ খ্যাত তারকা বলেন, ‘এখনও দেখিনি সিনেমাটি। তবে অবশ্যই দেখব। আমার মতে, প্রত্যেক ভারতীয়ের এই ছবি দেখা উচিত। কারণ এই ছবিতে যে ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে, তা হৃদয়বিদারক। প্রত্যেক দেশবাসীর সেই ইতিহাসটি জানা উচিত। ’

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর বক্স অফিস সাফল্যে অত্যন্ত খুশি বলে জানান আমির খান।

প্রসঙ্গত, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমায় নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর থেকে কীভাবে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতাড়িত করা হয়েছিল, কীভাবে পরিবারগুলোর ওপর নিপীড়ন চলেছিল, সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, পল্লবী যোশী, দর্শন কুমারের মতো তারকারা।

মুক্তির মাত্র ৯ দিনে এর আয় প্রায় ১৫০ কোটি রুপি! মাত্র ১৪ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত একটি সিনেমার এমন অবিশ্বাস্য সাফল্য নিয়ে মশগুল বলিমহল।

বিনোদন

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা পান সিনেমার অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। চলে আসেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

এবার ভারতের কেরালা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হলে সিনেমাটি। শুক্রবার কেরালা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সিনেমাটি দেখানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী বাঁধনও।

বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বাঁধন জানালেন, বিশেষ একটি মুহূর্তের কথা তিনি ভুলবেন না কখনো। সেটি হলো – রেহানার একটি সংলাপ শুনে কেরালার হাজার দর্শক হাততালি দিয়েছিলেন।

গণমাধ্যমকে কেরালা থেকে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘তিন হাজারের বেশি দর্শক, সমালোচক ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন সেখানে। আমি ইচ্ছা করেই সিনেমাটি দর্শকদের সঙ্গে দেখেছি। সিনেমা শুরুর আগে থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরো দুই ঘণ্টা সবাই মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন। মাঝেমধ্যে তালি দিচ্ছিলেন। সিনেমার একটি জায়গায় সংলাপ আছে — ‘ছেলেদের খেলা মেয়েদের খেলা কী, খেলা তো খেলাই’। এ সংলাপ শুনে একসঙ্গে সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন। তখন নিজেকে সার্থক মনে হচ্ছিল। সরাসরি এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম হলো আমার। আমি মুগ্ধ।’

বাঁধন আরো বলেন, ‘কেরালার দর্শক রেহানাকে এতটা সম্মান দেবেন, ভাবতেই পারিনি। বাংলাদেশের কালচারের একটি সিনেমাকে এভাবে ভিন্ন দেশের কালচারের মানুষের ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এতটা কষ্ট করে এসেছি, সেটা সার্থক হয়েছে।’

২০২১ সালের মার্চে মুক্তি পায় ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটি। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। ৩৭ বছর বয়সি একজন সহকারী অধ্যাপকের জীবন সংগ্রামের গল্প নির্মিত করা হয়েছে এ সিনেমা।

বিনোদন

বৃহস্পতিবার পুয়ের্তো রিকোর রাজধানী সান হোয়ানে আয়োজিত গ্র্যান্ড ফিনালে বিলাস্কার নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ।

২০২১ সালের এ আসরে প্রথম ও দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন যথাক্রমে আইভরি কোস্টের প্রতিযোগী অলিভিয়া ইয়াসি ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগী শ্রী সাইনি।

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সান হোয়ানে গ্র্যান্ড ফিনালে আয়োজনের কয়েক ঘণ্টা আগে করোনাভাইরাসের হানায় তা স্থগিত করা হয়েছিল; তার দিন মাস পর বিজয়ীর নাম চূড়ান্ত করেছেন বিচারকরা।

২৩ বছর বয়সী ক্যারোলিনাকে মুকুট পরিয়ে দেন ২০১৯ সালের মিস ওয়ার্ল্ড জ্যামাইকার টনি অ্যান সিং।

উচ্ছ্বসিত ক্যারোলিনা বলেন, “আমার নাম ঘোষণার পর বিস্মিত হয়েছি, আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। মিস ওয়ার্ল্ড-এর মুকুট পরে আমি সম্মানিতবোধ করছি। আমার জীবনের এই স্মরণীয় অধ্যায়কে কখনোই ভুলব না।”

এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে আয়োজকরা জানিয়েছে, ফ্যাশন মডেল হিসেবে পরিচিত ক্যারোলিনা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছেন। তিনি সাঁতার, স্কুবা ড্রাইভিং, টেনিস ও ব্যাডমিন্টন খেলতে পছন্দ করেন।

একজন অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তা হতে চান বিলাস্কা। পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে চান। করোনাভাইরাসের মধ্যে মানুষকে সহায়তার জন্য একটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

এবারের আসরে বাংলাদেশের কোনো প্রতিযোগী অংশ নেননি।

বৈশ্বিক এ আসরের বাংলাদেশি ফ্রাঞ্চাইজি অমিকন এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও পুয়ের্তো রিকোর ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বাংলাদেশে এ বছরের আয়োজন করা হয়নি।

২০২২ সালের আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

১৯৫১ সালে লন্ডন থেকে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক এরিক মার্লে। ২০০০ সালে তার মৃত্যুর পর প্রতিযোগিতার দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী জুলিয়া মার্লে।

মার্লের কাছ থেকে ২০১৭ সালে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশি ফ্রাঞ্চাইজি নেয় অন্তর শোবিজ। পরে ২০১৯ সালে অমিকন এন্টারটেইনমেন্টকে ফাঞ্চাইজি হস্তান্তর করেছে অন্তর শোবিজ।

২০১৭ সালে প্রথমবার ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হিসেবে জান্নাতুল ফেরদৌস এভ্রিলের নাম ঘোষণার পর বিয়ের তথ্য গোপনের দায়ে তাকে বাদ দিয়ে জেসিয়া ইসলামকে চীনের সানাইয়া শহরে আয়োজিত ‘মিস ওয়ার্ল্ড’র ৬৭তম আসরে পাঠানো হয়।

পরের বছর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ২০১৯ সালে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হন রাফা নানজিবা তোরসা।

বিনোদন

‘পোড়ামন-২’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করে জুটি হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিলেন সিয়াম ও পূজা চেরী। রায়হান রাফির পরিচালনায় সেই সিনেমাটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে।

এর পরপরই এম রাহিম পরিচালিত ‘শান’সিনেমায় জুটি হয়ে অভিনয় করেন এই জুটি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ঈদে।

এরই মধ্যে এটির বুকিংও শুরু হয়েছে। ঢাকার শ্যামলী, রংপুরের শাপলা, আশুলিয়ার চন্দ্রিমা, মানিকগঞ্জের নবীন, খুলনার শঙ্খ ও ময়মনসিংহের ছায়াবানী প্রেক্ষাগৃহ চূড়ান্ত হওয়ার মাধ্যমে সিনেমাটির বুকিংয়ের কাজও শুরু হলো।

এ বিষয়ে ছবিটির পরিচালক এম রাহিম বলেন, আপাতত ৬ হল বুকিংয়ের মাধ্যমে শানের ঈদের ছবির হল যাত্রা শুরু হলো। আশা করি ঈদে মুক্তির জন্য দেশের বড় বড় হলগুলো শিগগরিই চূড়ান্ত হবে।

ছবিটির গল্প আজাদ খানের। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন যৌথভাবে আজাদ খান ও নাজিম উদ দৌলা। ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, ডন, নাদের চৌধুরী, তাসকিন রহমান, সৈয়দ হাসান ইমাম, চম্পা, অরুণা বিশ্বাসসহ অনেকে।