রাজনীতি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণা কোনো পরিস্থিতিতেই যেন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত না হয়, সেটা নিশ্চিত করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের দশম দিনের আলোচনার শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কমিশনের সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সভায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আজ (সোমবার) জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণ- এ দুটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিদ্যমান সংবিধানের ১৪১ নং অনুচ্ছেদে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়টি আছে, যা নিয়ে অতীতে খুব বেশি আলোচনার সুযোগ ছিল না। আজ (সোমবার) এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তিনি জানান, পূর্ববর্তী আলোচনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন হতে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংশোধিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে পরবর্তী সভায় অধিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ভবিষ্যতের আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে এ ব্যাপারে কতটুকু একমত হওয়া গেছে।

আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ।

রাজনীতি

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করবে অন্তর্বর্তী সরকার— এমনটাই আশা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৭ জুলাই) সকালে সিলেটে হজরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের সঠিক পথে অগ্রযাত্রা সম্ভব।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন, বিশেষ করে জুলাইয়ের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান যে নতুন পথ দেখিয়েছে, তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সবাইকেই।

বিগত ১৫ বছরে দেশে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হাজারো প্রাণহানি ঘটেছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সহযোগিতায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া ও এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করতেই সকাল ৯টায় সিলেটে পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব।

রাজনীতি

নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন পেছাতে চায় না, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চায়।

সোমবার (৭ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সমাবেশের কেন্দ্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন৷

গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকারের ভূমিকায় জনগণ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আশ্বস্ত নয়। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন পেছাতে চায় না, বরং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চায়।

জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করার জনদাবিগুলো সরকারের সামনে উপস্থাপন করতে ১৯ জুলাই জাতীয় মহাসমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে জামায়াত।

এ সময় তিনি দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

রাজনীতি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশটা কেউ কেউ পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলছে, যার কারণে বর্তমান সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা কল্পনাও করা যায় না। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে। সেই মৌলিক সংস্কারের কথা আমরা বলেছি। আমরা মৌলিক সংস্কার করে ছাড়ব এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।

শুক্রবার বিকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটির আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জনসভায় তিনি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় বুধবার রাতে দলের দুজন আসামিকে ছিনিয়ে নিতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের থানা পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর, পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে ‘পাটগ্রামের’ কথা স্মরণ করিয়ে দেন ডা. শফিকুর রহমান।

দেশবাসীকে সতর্ক বার্তা জানিয়ে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কথা শুনতে পাচ্ছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করে দিতে চাই। কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের মতো স্বপ্ন দেখে থাকেন। তাহলে বলতে চাই, মহান আল্লাহর সাহায্যে আমরা সেই স্বপ্নকে দু:স্বপ্ন করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এমন কিছু বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। দেশে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলবে না, কালো টাকার খেলা চলবে না। প্রশাসনের ক্যু চলবে না।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কেউ যেন অপকর্ম করতে না পারে। এজন্য আমরা সজাগ রয়েছি। জনগণের ভোটে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে যারাই জয়ী হবে তাদের স্বাগত জানাতে এখন থেকেই আমরা প্রস্তুত। আমরা আরও বলতে চাই, হাসিনার হাতে সব বাহিনী ছিল। জনবিস্ফোরণের কারণে ক্ষমতা আটকাতে পারেনি তারা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদের নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমাদের জয় নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ, কারণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা কোনো মস্তানতন্ত্র বিশ্বাস করি না। আমরা জনগণের ইচ্ছা পূরণের জন্য রাজনীতি করি। মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের এই রাজনীতিতে আসা।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা মায়া কান্না করেছে, তারাই সংখ্যালঘুদের সম্পদ লুট করেছে। আমরা দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানি না। এ দেশের মাটিতে যারাই জন্ম গ্রহণ করবে, তারাই এদেশের সম্মানিত নাগরিক। আমরা কথা দিচ্ছি, সংবিধান অনুযায়ী আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াবো। ওরা মালিক হয়েছিলো জনগণের। আমরা জনগণের সেবক হব ইনশাআল্লাহ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মদিনার ছায়ার আলো এই বাংলাদেশে আমরা দেখতে চাই। শরিয়ার কথা শুনলে অনেকে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। কেননা তারা ঘুস দুর্নীতি করতে পারব না, যা ইচ্ছে তা করতে পারবে না, পর নারীর ইজ্জত লুট করলে তাদের জীবন থাকবে না, চুরি করলে তার হাত থাকবে না। এমন মদিনার ছায়া আমরা এ দেশে দেখতে চাই।

‘মব কালচার’ প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, দেশে ‘মব কালচার’ নতুন না। ৭২ সাল থেকেই দেশে ‘মব কালচার’ চলছে। ৭২ সালে মায়ের স্তন কেটে উল্লাস করেছে, এমন কুলাঙ্গার বাংলাদেশে আছে। সে নারী যেই হোক, সে আমার মা, সেই নারী আমার বোন, আমার মেয়ে। তার স্তন কাটার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মানুষ মারা হয়েছে। সেগুলো কি ‘মব কালচার’ ছিল না। সেগুলো ‘মব কালচার’ ছিল। তবে মব কালচারকে সমর্থন করার সুযোগ নেই আমাদের। কোন নাগরিক নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার রাখে না। দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচার তা করবে। সেই আইন দেশের সংবিধানে রয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আবু সাঈদ বিশাল আন্দোলনের ‘আইকনিক পারসন’ ছিলেন। তিনি রংপুরের গর্ব। ২৪ জুলাইয়ে যারা নিহত হয়েছে, যারা আহত হয়েছে। আহতদের এখনো সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এসবের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, এ দেশের মানুষে তাদের বিচার দেখতে চায়। যদি বিচার না হয়, তাহলে ন্যায় বিচারের সংস্কৃতির অভাবে, বাংলাদেশ জঙ্গলে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলি, অতিতে যারা অপরাধ করেছেন, তাদের বিষয়টা রাষ্ট্র দেখবেন। এখন আপনারা যারা দায়িত্বে রয়েছেন, আপনারা দায়িত্ব পালন করুন। আপনারা ন্যায়ের পক্ষে থাকবেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে আপনাদের শক্তি জোগাবে ইনশাআল্লাহ। আমরাও আপনাদের পাশে থাকব; কিন্তু অন্যায় দেখলে আমরা সবার আগে প্রতিবাদ করব। অতএব অন্যায়কারীর পক্ষ নিবেন না। জনগণের বিপক্ষে যাবেন না। জনগণের বিপক্ষে গেলে কি পরিণতি হয় সেটা ২০২৪ সালে দেখেছেন।

দীর্ঘ ১৭ পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।

জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরের আমির এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও বড়ভাই রমজান আলীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

এর আগে সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠেই দুটি জামায়াতের মাধ্যমে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন তারা।

জনসমাবেশস্থল ছাড়াও ডিসির মোড়, কাছারি বাজার, আরডিআরএস মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কখনো রোদ, কখনো ছায়া, এই রোদছায়ার লুকোচুরি আবহাওয়ার মাঝেই মাঠে বক্তব্য শোনেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।

বক্তব্যের শেষে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। সেই সঙ্গে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ছেয়ে যায় পুরো মাঠ।

রাজনীতি

শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড। পরের অংশের কৃতিত্ব বিপ্লবী ছাত্র- জনতার।

শুক্রবার (৪ জুলাই) উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

‘মেটিকুলাস ডিজাইনে সমস্যা কোথায়?’ শিরোনামে দেওয়া তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“মেটিকুলাস ডিজাইনে সমস্যা কোথায়?

পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে মেটিকুলাস ডিজাইন করে আগরতলা ষড়যন্ত্র, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান আর ’৭১ এর মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলন ও বাঙ্গালি-বিহারি দাঙ্গা সঠিক হইতে পারলে ’২৪ এর গণ-অভ্যুত্থান মেটিকুলাস ডিজাইন হইলে সমস্যা কোথায়?

দুনিয়ার কোনো অভ্যুত্থান বা বিপ্লব পরিকল্পনা না করে হয়েছে? জনগণের চৈতন্যকে ঐক্যবদ্ধ ও লক্ষ্যাভিমুখী রাখতে মেটিকুলাস ডিজাইনের বিকল্প নেই। যখন জনগণ নেতৃত্ব ও বক্তব্য পেয়ে যাবে এবং বিপ্লবের অবজেক্টিভ কন্ডিশন প্রস্তুত, তখন আর প্ল্যানের দরকার পড়ে না। কিন্তু তার আগে রাজনৈতিকভাবে জনগণকে প্রস্তুত এবং বিপ্লবী করে তোলা মেটিকুলাস ডিজাইন হলে সমস্যা কোথায়?

সিরাজুল আলম খান, তাজউদ্দিন, সিরাজ শিকদার আর ভাসানী, এমনকি খোদ শেখ মুজিব যদি পাকিস্তানকে পরাজিত করতে মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হয়ে পাপবোধ না করেন এবং আমরা তাদের নিয়ে (তাদের ভুলসহই, স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য) গর্বিত হতে পারি, তাহলে ’২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে মেটিকুলাস ডিজাইন করে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করলে কেন এ প্রজন্ম গর্বিত বোধ করবে না?

৩ তারিখের ১ দফা ঘোষণার আগে জাতিসংঘের বক্তব্য ছাড়া বিদেশি শক্তি বা সামরিক বাহিনী কারোরই বিন্দুমাত্র অংশগ্রহণ ছিল না এ গণ-অভ্যুত্থানে। ভারতের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে (যা ন্যায্য বলেই আমরা মনে করি) আগরতলা বৈঠক থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য শেখ মুজিব ও অন্যান্য জাতীয় নেতৃত্বের প্রতি যদি আমাদের শ্রদ্ধা থাকে, তাহলে কোনো বিদেশি শক্তি বা তৃতীয় শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র কিংবা সলা-পরামর্শ ছাড়াই জনগণের অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফেলার জন্য অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ এবং অংশীজনকে কেন গালি শুনতে হবে?

পুনশ্চ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের দুটি অংশ। ৫ই জুন থেকে ১৮ ই জুলাই। এ অংশে অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট এবং নেতৃত্ব তৈরি করেছিল। আর ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত সকল স্তরের ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে এবং আত্মদানে অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল।

প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড। পরের অংশের কৃতিত্ব বিপ্লবী ছাত্র- জনতার। কিন্তু, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা এবং সুনির্দিষ্ট বক্তব্য না থাকলে এ বিপ্লবী জনতা পরের অংশে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পার‍ত না। শুক্রবার দিবাগত রাত, ২রা আগস্টে এ অভ্যুত্থান বেহাত হয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের দিকে মোড় নেয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তা ঠেকাতে পেরেছিল অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব।

এ নির্দেশনা ও বক্তব্যের অবদানটুকু বাদে ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত বিদ্রোহ, প্রতিরোধ, আত্মত্যাগ আর বিপ্লবী তৎপরতার কৃতিত্ব সকল স্তরের ছাত্র-জনতার।

উপরের এ ব্যাখ্যা মওলানা ভাসানীর ’৬৮ সালের ঘেরাও আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ মিলিয়ে দেখেন, অথবা ’৭১ এর মার্চ। আপনারা মেটিকুলাস ডিজাইন ও বুঝতে পারবেন এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ, প্রতিরোধ আর বিপ্লবী তৎপরতারও হদিস পাবেন। ”

রাজনীতি

ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া আসাদুল ইসলাম ছাত্রদল সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, আপনার মন চাইলো অমনি আমাকে ‘ছাত্রলীগ’ বলে দিলেন? এতটা নিম্নপর্যায়ে কীভাবে নামা যায়? তা আমার জানা নেই। আপনার এই ভিত্তিহীন, অবমাননাকর ও মানহানিকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

ওই পোস্টে জবি শিবির সভাপতি আরও লেখেন, একটা বৃহৎ, ত্যাগী ও আদর্শভিত্তিক ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব থেকে ছাত্রসমাজ দায়িত্বশীল বক্তব্য প্রত্যাশা করে। কিন্তু যখন অযোগ্য কাউকে ধরে এনে নেতৃত্বে বসানো হয়, তখন তার কাছ থেকে দায়িত্বশীলতা আশা করাটাই বোকামি- আজ আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তা প্রমাণ করেছেন।

আসাদুল ইসলাম লিখেছেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি, এই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য আপনি অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। নিজের দল ও আদর্শ নিয়ে কিছু বলার সামর্থ্য না থাকলে, করার সামর্থ্য না থাকলে, অন্তত চুপ থাকুন। জুলাই বিপ্লবোত্তর ছাত্রসমাজ আপনার এই ঘৃণ্য ও বেপরোয়া বক্তব্য কখনোই মেনে নেবে না। দয়া করে একটি ডানপন্থি, আদর্শবাদী সংগঠনকে এভাবে সমূলে বিনাশ করবেন না।

এর আগে এদিন বিকালে জবি ছাত্রশিবির সভাপতি ও সেক্রেটারির ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টটার অভিযোগ এনে বক্তব্য দেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আয়োজিত সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এই অভিযোগ তুলেন।

এসময় ছাত্রদল সভাপতি বলেন, বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারির ছাত্রলীগ করার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সরাসরি ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল। বর্তমানে ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করতে চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে এমন করা হলে আমরা মেনে নিবো না। ছাত্রশিবিরের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছে। সে সম্ভবত ২০০৮-০৯ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার কীভাবে ছাত্রত্ব থাকে?

রাজনীতি

ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গাড়িবহরের একটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর ও ধাক্কা-মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে এক হোটেল কর্মচারীকে আটক করে পরে জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে শহরের টাঙ্গন ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শহরের আর্ট গ্যালারিতে দলীয় কর্মসূচি শেষে মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে পীরগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রাকালে মসজিদ থেকে কিছু দূরে টাঙ্গন ব্রিজ অতিক্রমের সময় পেছন দিক থেকে একটি আন্তঃজেলা বাস এসে তাদের বহরের একটি মাইক্রোবাসে ধাক্কা দেয়।

এতে গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং এনসিপির এক কর্মীসহ চালক সামান্য আহত হন। ঘটনার পর এনসিপি নেতাকর্মীরা গাড়ি থামিয়ে বাসচালক ও হেলপারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।

এ সময় ইরফান (২৮) নামে এক যুবক পরিস্থিতি থামাতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং এনসিপির একটি মাইক্রোবাসের চাবি খুলে নিয়ে যান। কিছু সময় পর আবার সেটি ফেরত দেন।

ইরফান বর্তমানে গাউছিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কর্মরত, তবে আগে বাসশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পুলিশ পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং এনসিপির এক নেতার জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরোয়ার আলম খান বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং ইরফান নামে এক যুবককে আটক করি। পরে এনসিপির এক নেতার জিম্মায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এনসিপির ঠাকুরগাঁও জেলা মুখপাত্র মোহাম্মদ রায়হান অপু বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। ইরফান মূলত ভুল বোঝাবুঝিতে জড়িয়ে পড়ে, পরে নিজেই বিষয়টি বুঝে চাবি ফিরিয়ে দেন।

রাজনীতি

জুলাই আন্দোলনের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী যে কর্মসূচি ঘোষণা করছি সেটা শুধু সূচনা নয় বরং একটি নতুন শপথ। গত বছরের জুলাইয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের যে ঐক্য ছিল, আমরা চাই সেই ঐক্য এই জুলাইয়ে আবারও সুসংহত হোক। কর্মসূচির মূল লক্ষ্য জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সচেতন করা, রাজনীতির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা জানানো এবং রক্তের ত্যাগ না ভোলা।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আমাদের সামনের পথ অনেক কঠিন, কিন্তু মস্তবড় সম্ভাবনাও আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জনগণ যখন জেগে উঠে কোনো শক্তিই তাকে রুখে দিতে পারে না। এই জুলাইকে সবার গণজাগরণ ও ঐক্যের মাসে পরিণত করুন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিলো ফ্যাসিবাদ বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার; যাতে স্বৈরাচার আর মাথাচাড়া না দিতে পারে।

তিনি বলেন, ১৬ বছর পর আমরা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলাম। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক আমরা আমাদের টার্গেট পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু তার প্রথমেই ছিল নতুনভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের একটি বিরাট স্বপ্ন। আমরা প্রতিবছর এই সময়টা উদযাপন করব। যাতে পরে এই দিন উদযাপনের জন্য আরও ১৬ বছর অপেক্ষা না করতে হয়। স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যাতে বিনাশ করতে পারি।

ড. ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছে। জুলাই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক অমোঘ ডাক, যার উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদের বিলুপ্ত করে জনগণের হাতে রাষ্ট্র ফিরিয়ে দেওয়া।

রাজনীতি

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ‘ঐক্য বজায় রাখার’ ডাক দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তির বিশেষ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

গুলশানের বাসা ’ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি গুম, খুন ও বিচারভহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার তাগিদ দেন।

খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে শহীদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করি। বাস্তবায়িত করি কোটি মানুষের নতুন বাংলাদেশের নির্মাণের স্বপ্নকে।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, রক্তস্নাত জুলাই-আগস্ট একবছর পর আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হত্যা ও খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসক গোষ্ঠী। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বাংলাদেশকে গড়বার।

গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা করার প্রতি জোর দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, গুম-খুন-বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার যারা হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের সন্মান এবং তাদের পুনর্বাসন এবং তাদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।

রাজনীতি

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে “স্থলবন্দরের অগ্রগতি, অর্থনীতির সমৃদ্ধি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৩০জুন ২০২৫ তারিখে সকাল ১০.০০ টায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সিনিয়র সচিব জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।

প্রধান অতিথি মাননীয় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, যা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো দেশের সীমান্তবর্তী হওয়ায় দেশের নিরাপত্তার সাথে বন্দরসমূহ সরাসরি জড়িত। এজন্য স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য নীতি নির্ধারণের বিষয়ে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে আরোও কৌশলী হতে হবে।”

আলোচনা সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ স্থলবন্দরগুলোর আধুনিকায়নে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন। এছাড়া তিনি বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে স্থলবন্দরগুলোতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

এছাড়া আলোচনা সভার সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বন্দর ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি বলেন, “আমদানি-রপ্তানি ক্ষেত্রে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণে উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।”

এছাড়া সমুদ্র বন্দরের ন্যায় স্থলবন্দরের মাধ্যমে অধিক পণ্যের আমদানি-রপ্তানি অনুমোদনের বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল, এনপিপি, এনডিসি, পিএসসি; বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সলিম উল্লাহ; বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফাসহ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।