রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের জলোচ্ছ্বাস খুবই অস্বাভাবিক। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করব। আমরা চাই এ অঞ্চলের মানুষ যেন দুর্যোগ থেকে মুক্তি পায়। বারবার যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। তাছাড়া যেসব রাস্তাঘাট ও বাঁধ ভেঙে গেছে বর্ষার আগেই সেগুলো সংস্কার করব। আমার ওপর এতটুকু ভরসা রাখবেন আপনারা। ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে ভাঙা ঘর নির্মাণ ও সংস্কার করতে পারেন আমি তার পূর্ণ ব্যবস্থা করব।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে ঘূর্ণিঝড় রিমালকবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এ অঞ্চলে আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি। উপকূলের মানুষ দুর্যোগের সময় যাতে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, বেড়িবাঁধ, আশ্রয়কেন্দ্র, সাইক্লোন শেল্টার করেছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ছিন্নমূল ও অসহায় পরিবারকে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিয়েছি। আগামীতে আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বিনা খরচে দুই কাঠা জমির ওপরে দুর্যোগ সহনীয় বসতঘর তৈরি করে দেব। উপকূলের ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সবকিছু করবে।

সরকারপ্রধান বলেন, অনেক লোকই তো ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু তারা এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কিছুই করেনি। তিনি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ প্রদানে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজ দেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে। আমরা রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ নির্মাণ করে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি। এখন ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যেই সড়কপথে কলাপাড়া আসা যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। যাতে বর্ষার আগেই এগুলো পুনর্নির্মাণ করে মানুষকে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে বাঁচাতে পারা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের সঙ্গে বসে হিসাব নিরূপণ করে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে সেগুলোও সংস্কারের পদক্ষেপ নেবেন। এছাড়া তরিতরকারি ও খেতের ফসল যা নষ্ট হয়েছে কৃষকরা যেন নতুন উদ্যমে আবার চাষাবাদ করতে পারেন সেজন্য বীজ ও সার প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়ার আশ্বাস দেন।

কলাপাড়া আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্মল নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ এমপি, শাম্মি আহমেদ এমপি, হাফিজ মল্লিক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আবদুল মান্নান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন-পটুয়াখালী-১ আসনের এমপি এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি এসএম শাহাজাদা, পটুয়াখালী সাংরক্ষিত আসনের এমপি নাজনীন নাহার রশীদ, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, বাউফলের পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. সাইদুর রহমান।

রিমেলের ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীর মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটায় রিমেলের ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র পরিদর্শন করেছেন। ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে হেলিকপ্টারটি যখন ধীরগতিতে অনেক নিচু দিয়ে উড়ছিল তখন তিনি রিমেল-আক্রান্ত দুটি এলাকা প্রত্যক্ষ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কলাপাড়ার খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করে।

বাংলাদেশ আইএমওর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মেরিন স্কলারশিপ চালু করতে চায়-প্রধানমন্ত্রী : বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অরগানাইজেশনের (আইএমও) মাধ্যমে ছোট দ্বীপ ও আফ্রিকান স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য বঙ্গবন্ধুর নামে সামুদ্রিক খাতে বৃত্তি চালু করতে চায়। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আইএমওর মহাসচিব আর্সেনিও অ্যান্তোনিও ডমিনগুয়েজ তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আইএমওর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নামে ১০টি ক্যাডেট প্রশিক্ষণ বৃত্তি চালু করতে চাই।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম বলেন, আইএমও মহাসচিব প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। বৃত্তি প্রাপ্তদের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আইএমও মহাসচিব নারী মেরিনার বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জিএসপি প্লাস সুবিধা অব্যাহত রাখতে ফিনল্যান্ডের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর সমৃদ্ধির দিকে বাংলাদেশের যাত্রাকে মসৃণ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছ থেকে আরও কয়েক বছর জিএসপি প্লাস সুবিধা অব্যাহত রাখতে ফিনল্যান্ডের সহযোগিতা চেয়েছেন। বাংলাদেশে ফিনল্যান্ডের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত কিম্মো লাহদেবির্তা সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম একথা বলেন। এ সময় অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বরিশালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ : বরিশাল ব্যুরো জানায়, রিমেলে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা বিতরণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাটে সহায়তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত ১২০ মাঝি-মাল্লা এবং মুক্তিযোদ্ধা পার্কসংলগ্ন বরফকল এলাকার ৬০ পরিবারকে সহায়তা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার প্রমুখ।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তৃতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এবং ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক।

বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপের নির্বাচন পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ভোটার উপস্থিতি ৩৫ শতাংশের কিছু বেশি। আগামীকাল এটি চূড়ান্ত জানা যাবে। এই নির্বাচনে দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানির খবর নেই। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক কি না সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা তো ভেবেছিলাম ভোটার উপস্থিতি কম হবে। প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গা কিছু কিছু ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। যদিও ধান কাটা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ভোটার উপস্থিতি ৩৫ শতাংশ বা তার বেশি মোটামুটি সন্তোষজনক।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচন করাটা চ্যালেঞ্জের। নির্বাচন বিরোধীদের মিথ্যাচার ও অপপ্রচার রয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পরও বিএনপির গলাবাজিটা আগের তুলেনায় এখন অনেক বেড়ে গেছে। তাদের মাঠের আন্দোলন ব্যর্থ, নির্বাচন ঠেকাতেও ব্যর্থ। এই ব্যর্থতার কারণে তারা হতাশ ও ক্লান্ত। কর্মীদের চাঙা করতে তাদের সর্বশেষ কর্মসূচি লিফলেট বিতরণ। এখন আবার নতুন করে আন্দোলন সংগ্রামের স্বপ্নে বিভোর হয়েছে। তারা ভেবেছিলেন জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে দুর্ভিক্ষ ও প্রাণহানি হবে। তাদের সে স্বপ্ন কর্পূরের মতো উড়ে গেছে। দেশে একজনও না খেয়ে মারা যায়নি।

বেনজির, আজিজ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কোহিনূর – এরা কাদের সৃষ্টি? দুর্নীতি, লুটপাটের ভবন ‘হাওয়া ভবন’ কাদের সৃষ্টি? তাদের বিচার কি বিএনপি করেছে? শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে। সে কারণে তার জিরো টলারেন্স দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আজকে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দুইজনের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। তাদের নিশ্চয়ই কর্তব্যে কোন বিচ্যুতি ঘটেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বেনজিরের যে ক্যারিয়ার, পারসোনালিটি তাকে তো বাইরে থেকে ভাবেননি এখন যা জানছেন। আপনারা (সাংবাদিকরা) ভাবেননি, কেউ ভাবেনি। আজিজ আহমেদ অত্যন্ত বিচক্ষণ ছিলেন, তার এমন ডিগ্রি আছে যা অনেক অফিসারের ছিল না।

প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম প্রমুখ।

রাজনীতি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধুমাত্র ভাষণের মধ্য দিয়ে আসেনি। এসেছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এ দুটিই করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাও যেমন দিয়েছেন, তেমনি রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং বৃক্ষরোপণ করেন।

গয়েশ্বর রায় বলেন, জিয়াউর রহমান অনেক গুণের অধিকারী একজন নেতা ছিলেন। আমাদের তার দেশপ্রেম, সততা ও ন্যায়ের পথ অনুসরণ করতে হবে। জিয়াউর রহমানের ভাবনাকে নিজের ভাবনা হিসেবে মনে করতে হবে। যে জিয়া জনতার, সেই জিয়া মরে না।

তিনি বলেন, যারা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। তাদের কথা ভাবেন, তাদের পরিণতি এখন ভাবেন। অথচ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম শুনলে তাদের রাতে ঘুম হয় না। এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমউদ্দিন মাস্টারসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা কূটনীতিক উইলিয়াম বি মাইলাম বলেছেন, জিয়াউর রহমান যদি ১৯৮১ সালে মারা না গিয়ে ৭৫ সালে মারা যেতেন তাহলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান অথবা অফ্রিকার দেশগুলোর মতো হতো।

দেশের চলমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান একজন সফল এবং জনপ্রিয় নেতা। তার নেতৃত্বেই দেশে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেছেন। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।

একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুস সালাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামনে যেহেতু বর্ষার মৌসুম, তাই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত করতে হবে।’ তিনি জানান, পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়াতে না পারে, সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে রাতভর ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।’ তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী একনেক সভায় জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনহ সরকারের সকল সংস্থা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথেষ্ট সতর্ক থাকায় ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি কম হয়েছে।

পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার জানান, একনেক সভায় মোট ১১ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৩৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৭ হাজার ৮৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৮৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং একইসাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের দুর্যোগকালে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ল্যান্ডফোন চালু রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্টেকহোল্ডারদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে, পোর্টফোলিও নির্বিশেষে সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে প্রাণহানি ও সম্পদের কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাঁর হিসাব করতে বলেছেন এবং আগামী রোববারের মধ্যে সেটা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

একনেক সভায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে ৮ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়নে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হোস্ট অ্যান্ড ফোরসিবিলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনালস’(এফডিএমএন)/ ‘ডিসপ্লেসড রোহিঙ্গা পপুলেশন ইনহ্যান্সমেন্ট অব লিভস থ্রো এ মাল্টি-সেক্টোরাল এপ্রোচ প্রজেক্ট ইনফ্রাস্টকচার রিলেটেড’ প্রকল্প এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ৪ হাজার ৪০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরটুনিটিস ফর হোস্ট কমুনিটিজ অ্যান্ড এফডিএমএন পপুলেশন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা সচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য নেওয়া প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক এক বছরের জন্য অনুদান দেবে। এছাড়া কিছু ঋণও দেওয়া হবে। শুরুতে বিশ্বব্যাংক ও উন্নয়ন সহযোগিরা শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য দিতে চেয়েছিল, পরে আলাপ করে সেখানকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও চাওয়া হলে তা দিতে রাজি হয়েছে। এসব টাকায় যোগাযোগ তথা রাস্তা, রেলপথ নির্মাণ করা হবে। যে বন ও পাহাড় নষ্ট হয়েছে তাঁর উন্নয়ন করা হবে। এসব বাস্তবায়ন করতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগবে। রোহিঙ্গারা আসায় যে বনাঞ্চল নষ্ট হয়েছে তা উন্নয়নে কাজ করা হবে।’ সত্যজিত বলেন, এই দুই প্রকল্প প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট প্লানিং সিস্টেম (পিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনুমোদন করেছেন, যা পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে। প্রধানমন্ত্রী এই দুই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ভাবন মানসিকতা প্রদর্শন এবং আন্তরিকভাবে কাজ করতে বলেছেন।

একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার কর্ণফুলী নদী এবং সংযুক্ত খালসমূহের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। নওগাঁ জেলার মহদেবপুর উপজেলায় ৪৮০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চালের আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প- ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স ফর রিপারপাসিং অব এগ্রিকালচারাল পাবলিক সাপোর্ট টুওয়ার্ডস এ সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প।

বিআইডব্লিউটিসি’র জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি স্লিপওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা এবং বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী-রামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪ লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এ পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প।

রাজনীতি

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩৫তম বৈঠক আজ জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।

কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বৈঠকে যোগদান করেন। এছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি এবং সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের এমপি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে যোগদান করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেট পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে ৩২৪ কোটি ৬৭ লাখ ২১ হাজার টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে ৩৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা প্রস্তাবিত বাজেট প্রাক্কলন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৪২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বাজেট প্রক্ষেপণ অনুমোদন করা হয়।

বৈঠকের শুরুতে বিগত ৩৪তম সংসদ সচিবালয় কমিশন বৈঠকের কার্যবিবরণী নিশ্চিত করার পাশাপাশি গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদনের উপর আলোচনা হয়। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের চলমান প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

বৈঠকে আলোচ্যসূচী উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তদন্ত হচ্ছে মানে মামলা হলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো অপরাধী শাস্তি ছাড়া পার পাবে না শেখ হাসিনার আমলে। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ যদি অপরাধী হন তার বিরুদ্ধেও তদন্ত করতে পারবে দুদক। অপরাধী হলে অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে। তিনি যেই হোন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আজিজ-বেনজীর ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয়। কারণ, সরকারের বিচার করার সৎসাহস আছে। সরকার তাদের অপরাধ অস্বীকার করে পার পেয়ে যাবার সুযোগ দেয়নি। দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারপ্রধান আপসহীন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার মূলে তার সততা ও পরিশ্রম। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

রাজনীতি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঢাকায় প্রায় ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে। বহু জায়গায় প্রায় ১৫-১৬ ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ নেই। আমাদের যে মেট্রোরেল করা হয়েছে সেখানে বিদ্যুৎ দশ মিনিট পর যায় আর আসে। উন্নয়ন টেকসই হয়নি। উন্নয়নের নামে যে অনেক টাকা চুরি হয়ে গেছে, এটা এই সরকারের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা পরিষদের উদ্যোগে ‘জিয়াউর রহমান অনন্য রাষ্ট্রনায়ক’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এবং পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের মতো অনেক রূপকথার কাহিনী সরকারের কাছে আছে। দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, লুট হচ্ছে, ব্যাংক শূন্য হচ্ছে। রাজকোষ শূন্য হচ্ছে। আমরা তো শুধু দুজনের কথা শুনেছি সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশ প্রধান। তাদের যে রূপকথার কাহিনী শুনেছি, এরকম আরও যারা সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, গুম, খুন এবং নানা অত্যাচারে লিপ্ত ছিলেন, তাদের কাহিনী তো আমরা জানি না। আমরা না জানলেও কথাগুলো তো মানুষের কাছে আছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাবেক ছাত্রনেতা ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, ডিইউজের (একাংশ) সহ-সভাপতি রাশেদুল হক প্রমুখ।

রাজনীতি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য উপহারস্বরূপ মৌসুমি ফল আম ও লিচু পাঠিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সোমবার রাত ৯টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসব মৌসুমি ফল পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, জামায়তের আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে ফলগুলো গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে যান তার প্রতিনিধি গোলাম মাওলা। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষে উপহার আম ও লিচু গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু ও অ্যাডভোকেট মেহেদী।

প্রসঙ্গত, বিএনপির দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পৃথকভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছিল। তবে বিএনপির সঙ্গে যুগপতে না থাকলেও একই দিনে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াত।

বিভিন্ন সময়ে এই দুই দলের সঙ্গে নানা কারণে সম্পর্কের অবনতি হয়; কিন্তু সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রশ্নে ফের দুই দলের সম্পর্ক ঠিক হয়। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট। এ নির্বাচনে প্রথমে জামায়াত অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

সূত্রমতে, বিএনপির শীর্ষ নেতা জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এখন এই দুই দল আগের মতোই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে বলে জানা গেছে।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেন, ঢাকাবাসী যাতে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে সেজন্য তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই এলাকার বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষ উপকৃত হবে এবং তারা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে। এই প্রকল্পগুলো নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।’

প্রকল্পগুলো হচ্ছে- বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণী বিতান’, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট গেট পর্যন্ত আট সারির ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি সরণি’, ধানমন্ডি লেকে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ শীর্ষক ৪টি উন্নয়ন প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্ধিত ঢাকার জনগণ যেন যথাযথ সেবা পেতে পারে সেজন্য নগরীকে তিনি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এই দুটি অংশে ভাগ করেন। যে গুলো ইউনিয়ন ছিল সেগুলোকেও সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নিয়ে এসে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকানাবিহীন পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণে তাঁর সরকার আবাসিক ফ্ল্যাট ও সম্মানজনক পদবীর ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিমে রাস্তাই ছিল না। তাঁর সরকার সে সব রাস্তা, ওভারপাস, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, বাঁধের ওপর রাস্তা, বুড়িগঙ্গা বেড়িবাঁধ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যে গুলো বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।

তিনি বলেন, আন্তঃজেলা যোগাযোগ সহজ করতে আমরা ঢাকায় একটি রিং রোড নির্মাণ করতে চাই।

সরকার প্রধান বলেন, ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার এখান থেকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জ নেওয়া হয়েছে। পুরাতন কেন্দ্রিয় কারগারে যেখানে জাতির পিতা দীর্ঘদিন বিভিন্ন সময় বন্দি ছিছেন, যেখানে জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করা হয়েছে এবং ফাঁসির মঞ্চ যেখানে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখলের পর সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার-সৈনিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দিয়েছিল।

আর ব্রিটিশ আমল থেকেই অনেক দেশপ্রেমিককে সেখানে ফাঁসি দেওয়া হয় সেই জায়াগাটিসহ সকল স্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে স্কুল এবং পার্ক করে সৌন্দর্যবর্ধন এবং বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ঠিক একইভাবেই এই এলাকার মানুষ যাতে ভালভাবে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছি।’

শেখ হাসিনা বঙ্গবাজার পুনর্নিমাণের পর ব্যবসা চালু রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, এরআগে তিনি মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজার বাজারের ব্যবসায়ীদের অনুদান দিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের পর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকার সঙ্গে তাঁর একটা আলাদা নাড়ির টান রয়েছে। কাজেই এই অঞ্চলের মানুষরা ভাল থাকুক সেটাই তাঁর লক্ষ্য।

অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হন। তাঁর পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ঢাকায় এসে প্রথমেই তাঁরা ৮/৩ রজনীবোস লেনের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হলে মিন্টু রোডে চলে আসেন। ৯২ এর ক ধারায় জরুরী আইন জারি করা হলে ১৪ দিনের নোটিশে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ৭৯ নম্বর নাজিরা বাজারে অবিভক্ত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ফুপুর বাড়িতে তারা দীর্ঘদিন ছিলেন। মাঝে বন্যা হলে আরমানিটোলার বাঘওয়ালা বাড়িতেও (স্থানীয়রা বলতো) ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার জন্ম ঢাকার মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর ছোট ভাই শেখ রাসেলের জন্ম ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে।

সরকার প্রধান বলেন, মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের শুরুটা যেন চানখারপুল থেকে হতে পারে সরকারে আসার পর তিনিই তার ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া আজ যে প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো সেগুলো বাস্তবায়ন হলেও এলাকার মানুষই লাভবান হবে। তারা সুন্দর ভাবে বাঁচতে পারবে, চলতে পারবে।

তিনি জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় সম্পর্কে বলেন, এটি একটি প্রাইমারী স্কুল ছিল। পরে উচ্চমাধ্যমিক স্কুল এবং সেখান থেকে কলেজ হয়। আর এখন বিশ^বিদ্যালয়। এতটুকু জায়গা, বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো হোস্টেল। এগুলো সব একত্রিত করে একটি ভাল ক্যাম্পাস এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত করে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আবাসস্থল নির্মাণ করে শিক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যাম্পাস প্রতিষ্টা করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তাঁর সরকার। ইতোমধ্যে জায়গা ও নকশা করা হয়ে গেছে। সেকাজও শিগগির শুরু হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেভাবে নতুন ক্যাম্পাস আমরা করে দেব যাতে একটা সুস্থ পরিবেশে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে।’

সরকার প্রধান বলেন, ইতোমধ্যে তাঁর সরকার ঢাকার মানুষের যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে। এক সময় বিদ্যুত থাকতোনা, পানিও থাকতো না। আপনাদের মনে আছে সেই বিদ্যুত ও পানির দাবিতে মানুষের আন্দোলনে বিএনপি’র এক নেতা (স্থানীয় এমপি) জনগণের ধাওয়াও খেয়েছিল। কিন্তু তাঁর সরকার ঢাকাবাসীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন করেছে। সারাদেশে বিদ্যুত সরবরাহের উন্নয়ন ঘটিয়েছে এবং মানুষের বিদুতের ব্যাহারও বেড়েছে। তিনি এই সময় নিজ নিজ পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিস্কার রাখাসহ বাড়ির চারপাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য পানি জমে থাকা জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পানির ও বিদ্যুত ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি এই সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও সকলের সহযোগিতা চান। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার এবং সিটি কর্পোরেশনকেও তিনি দ্রুত এইগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এই সময় তিনি আসন্ন কোরবানীর ঈদে যেখানে সেখানে পশু কোরবানী না দেওয়ার জন্যও নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন. ভবিষ্যতে শুধু সিটি কর্পোরেশনে নয়, সমগ্র বাংলাদেশেই তাঁর নির্দেশ রয়েছে প্রত্যেক জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার।

তাঁর সরকার ঢাকা শহরের জলাধারগুলো উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে যত্র তত্র পুকুর-খাল, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা তৈরি না করার জন্য নগর পরিকল্পনাবিদদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন। অতীতের সরকারগুলো পুকুর, খাল-বিল ভরাট করে স্থাপনা বা বক্স কালভার্ট নির্মাণ করায় খাল-বিল-পুকুরে ভরা ঢাকা শহরের বাতাসও এখন ভারী হয়ে উঠেছে, পানি সরার কোন জায়গা থাকছে না।

তিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে সকলকে দূরে থাকার এবং সিটি কর্পোরেশনের পার্কগুলো যেন মাদক সেবনে ব্যবহার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার এসে এই বাংলাদেশে অতীতে অস্ত্র চোরাকারবারির যে রুট ছিল সেটা বন্ধ করেছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে উলফা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিত সেগুলো আমরা বন্ধ করেছি। তাদেরও যাতে শান্তি আসে ওই সেভেন সিস্টারে, সেই ব্যবস্থাও কিন্তু আওয়ামী লীগ করেছে। এটা সবচেয়ে বড় কাজ।

সরকার প্রধান আরো বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের ছিটমহলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে বিনিময় করে সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। বিশাল সমুদ্র সীমা আমরা জয় করেছি। যারা আগে ক্ষমতা ছিল তারা (বিএনপি) তো এই ব্যাপারে কোন উদ্যোগই নেয়নি। জানতোই না।

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ক্ষমতায় এসেছিল লুটপাট, দুর্নীতি ও অস্ত্র চোরাকারবারি করতে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশ দুর্নীতিতে পাঁচ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে কাজেই ব্যস্ত ছিল তারা, আর মানুষ খুন করতে।

তিনি বলেন, এই দেশকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক রহমানতো অস্ত্র চোরাকারবাররি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওখানে বসে (লন্ডন) এখন নানাভাবে ওই অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা-এসব কাজ করে বেড়ায়।

টানা গত তিন মেয়াদে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে, সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাব।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের জেলে পাঠানোর এজেন্ডা আমাদের নেই।

তিনি বলেন, ‘যারা দুর্বৃত্ত, অপরাধী তাদের জেল জুলুম হবেই। কেউ অপরাধ করলে মামলা হবে, সাজা হবেই।’

সেতুমন্ত্রী আজ সকালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতারা বলেছেন, কাজী নজরুল ইসলাম তাদের আন্দোলনের বাতিঘর। কিন্তু তারা যখনই আন্দোলন-সংগ্রাম করে তখনই সরকার তাদের জেল জুলুম শুরু করে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর বিএনপি অথবা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের নির্যাতন কিংবা জেলে পাঠনোর চিন্তা করেনি আওয়ামী লীগ। কিন্তু যারা দুর্বৃত্ত, অগ্নিসন্ত্রাস, খুনি, অস্ত্র ব্যবস্থা করে, তাদের অপরাধের মানদন্ডে জেল জুলুম হয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।সে ক্ষেত্রে কোনো দল বিবেচনা করা হয় না।

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি তৎপর। সাম্প্রদায়িক বিষ বৃক্ষকে সমূলে উৎপাটন আওয়ামী লীগের আঙ্গীকার।

জাতীয় কবিকে স্মরণ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহ-বেদনার কবি, যৌবনের কবি। তিনি আমাদের জাতীয় কবি। যে কবিকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর প্রতিবেশী দেশ থেকে বাংলাদেশে এনেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনায় মৃত্যুর পর কবিকে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়। নজরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম এই মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর প্রেরণার উৎস ছিলেন কবি নজরুল ইসলাম। তার গান ও কবিতা স্বাধিকার ও স্বাধীনতার সংগ্রামে উৎসাহ জুগিয়েছে। আজ আমরা সেই কবিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি আব্দুস সবুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।