রাজনীতি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ বলেছেন, একতাই সমবায় আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু সমবায় সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় মামলা-মোকদ্দমা আদালতে যাচ্ছে। এসব মামলা উচ্চ আদালত এমনকি আপিল বিভাগেও গেছে। সমবায়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে একত্রে কাজ করা। মামলা-মোকদ্দমা করে বিভাজন সৃষ্টি কাম্য নয়।

শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমবায় ভবনে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, দুটি মানুষ একসঙ্গে থাকলে মতবিরোধ থাকবে। প্রচলিত সমবায় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে সেই বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। নীতিগত কারণে যে বিরোধ দুটি পক্ষের মধ্যে থাকে তা আলাপ-আলোচনা বা আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু স্বার্থের সংঘাত সমবায়ে হবে, এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, একটি সমবায় আন্দোলন কতটা শক্তিশালী হতে পারে তা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে দিয়েছে। এই বিপ্লব সব ধর্ম বর্ণের মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। সমবায়কে কেন্দ্র করে বিশ্বের অনেক দেশে শতভাগ শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং শতভাগ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। বাংলাদেশেও সমবায় সমিতিগুলোর মাধ্যমে এই প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

অনুষ্ঠানে এবারের সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন বলেন, সব সমবায় সমিতি এক হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সমবায় সমিতি।

অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে ৭টি সমবায় সমিতি ও ৩ জন সমবায়ীকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। এ বছর বিশেষ ও অন্যান্য শ্রেণিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (পলওয়েল)। সমিতির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম।

রাজনীতি

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনে সমর্থনকারী এবং গত ১৫ বছরের দুর্নীতি, অনিয়ম ও টাকা পাচারকারীদের সমর্থকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

সোহেল তাজ বলেন, দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার ও কীভাবে দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। এসব বিষয়ে আমি সত্য কথা বললে, কেউ কিছু মনে করলে আমার কিছু যায় আসে না।

তিনি বলেন, যারা এগুলো দেখেও না দেখার ভান করে, তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আমি খোলামেলা মানুষ, স্পষ্টবাদী মানুষ। সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে সবাই সমান। ধনদৌলত ও প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা যায় না। চরিত্র দিয়ে মানুষকে বিচার করতে হয়। এটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমি সাদাকে সাদা বলি, কালোকে কালো বলি।

রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সে ইস্যু সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে প্রয়াত সাবিহ উদ্দিন আহমেদে দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় যোগ দিয়ে বের হওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। অযথা নানা ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সে ইস্যু সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে জাতীয় পার্টি ইস্যুতে।

এর আগে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে প্রয়াত কূটনীতিক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

স্মরণ সভায় উপস্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন সাহেবও এক সময় ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি ছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, ধারণা গভীর ছিল, সমাজটাকে পরিবর্তন করব, বদলে দেব। পরে সরকারি চাকরিতে চলে যাওয়ায় আর সম্ভব হয়নি। সরকারি চাকরিতে গিয়ে সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন সবাই।

একজন দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের মানুষ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারনের উপদেষ্টা, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত প্রয়াত সাবিহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্মরণে থাকবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের জন্য, দেশের গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন কাজ করেছেন সাবিহউদ্দিন আহমেদ। ক্রীড়া অন্তপ্রাণ মানুষ সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন অফুরান প্রাণশক্তি সম্পন্ন। সব সময় একসঙ্গেই থাকতাম। চড়াই-উৎরাই সময় পার করেছি অনেক। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখে যেতে পারলে খুশি হতেন তিনি।

স্মরণ সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ দীর্ঘদিনের সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য দেন।

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।

আগামীকাল ‘জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি আজ এ কথা বলেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে ৫৩তম ‘জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪’ পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে আমি দেশের সকল সমবায়ীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’

তিনি বলেন, অর্থনীতিকে গতিশীল করে গড়ে তুলতে সমবায় অঙ্গনেও সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের সমাজে উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য দক্ষ ও টেকসই সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এবারের জাতীয় সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘সমবায়ে গড়বো দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে অন্তর্বর্র্তী সরকার দেশের স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে সমবায়ীদের ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছে। একটি নতুন অর্থনীতির স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমবায়কে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি ৫৩তম ‘জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন

রাজনীতি

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করার কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিভক্ত জাতি কখনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়। আগামীর বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের নবনির্বাচিত আমিরের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো আর কারো ওপর বিচারের নামে জুলুম না হোক। যে যার কর্মের ফল বিচারের মাধ্যমে পেলেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে। ফলে ভুক্তভোগী মজলুম ন্যায়বিচার পাবে। আওয়ামী লীগ মানুষকে পশুর মতো হত্যা করেছে। শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ কেউ তাদের গণহত্যা থেকে রক্ষা পায়নি। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ কেবলমাত্র চারদলীয় জোটের ঐক্যের ফাটল সৃষ্টি করে নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিষ্কার করতে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে। যারা কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয় তারা নিজেদের তৈরি করা সংবিধান নিজেরাই মানেনি। কোনো হত্যা মামলা বাদীর সম্মতি ব্যতীত প্রত্যাহার বা বাতিল করার ক্ষমতা কারো নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলা বাতিল করে দিয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখান থেকেই শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতেই ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের ফ্যাসিবাদের মুখোশ উšে§াচন করেছে। শফিকুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের ভূমিকা পালন করলে কেউ জালিম হতে পারবে না।

তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন ও পরিবেশন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে। সাংবাদিকতা একটি মহান দায়িত্ব। এই দায়িত্ব জনগণের আমানত। সেজন্য জনগণের আমানত রক্ষায় সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলের হয়ে কাজ করা যাবে না। জামায়াতে ইসলামী যদি কোনো ভুল করে থাকে সেটিও তুলে ধরতে হবে। আবার জনগণের স্বার্থে যেসব কাজ করে থাকে তাও তুলে ধরতে হবে।

অনুষ্ঠানে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দ্বীনের পথে যারা থাকে তারাই পরস্পর ভাই ভাই। এই সম্পর্ক পৃথিবীর সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। আগামী দুই বছর দায়িত্বশীলদের পূর্বের সব পরীক্ষার চেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানামুখী সংকট, সংঘর্ষ, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, এই দায়িত্বশীলদেরই মোকাবিলা করতে হবে।

দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি মো. দোলোয়ার হোসেন, মু. কামাল হোসাইন, ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, কর্মপরিষদের সদস্য মো. কামাল হোসেন, মোহাম্মদ ফরিদ হোসাইন, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক এবং প্রচার ও মিডিয়ার সমন্বয়ক আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছে। আন্দোলনে নেমেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল। পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে রাষ্ট্রপতি নিজ থেকে পদত্যাগ না করলে কীভাবে অপসারণ করা হবে, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কী ভাবছে, তার ওপর ভিত্তি করে দুয়েক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ‘সিদ্ধান্ত হয়নি’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হলে তা সাংবাদিকদের জানানো হবে।

বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরাকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শফিকুল আলম।

রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্য এবং সরকারের একমত পোষণের পরবর্তী ধাপে সরকারের কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, কেউ যেন কোনোভাবে দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের সংকট তৈরির চেষ্টা করা হলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে। রাষ্ট্রপতির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি তা এড়িয়ে যান।

বিএনপি এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় না বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই বিএনপি এই মূহুর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগ করা রাষ্ট্রপতি পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন’।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র তিনি পেয়েছেন আর পরে সাংবাদিকদের বলছেন পাননি। এর অর্থ হলো এখন তিনি মিথ্যা বলছেন, যা শপথ ভঙ্গের নামান্তর। এর মাধ্যমে তিনি ওই পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন,’

গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের প্রধান অভিভাবক। কিন্তু তার ভূমিকা রাজনৈতিক ও নৈতিক স্খলনের শামিল। এমনকি শপথ লঙ্ঘনের শামিল। আমরা মনে করি তার এ পদে থাকা উচিত নয়।

বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা মনে করি এটি মীমাংসিত বিষয়। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শপথ গ্রহণ করে উপদেষ্টারা দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা মনে করি অন্তর্র্বর্তী সরকার ও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব হবে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়ে নির্বাচনে যাওয়াটা জরুরি মনে করি।

গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। তাঁরা বলেছেন, আগে রাষ্ট্রীয় ভাষণে রাষ্ট্রপতি সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কথিত পদত্যাগপত্র প্রাপ্তির কথা দেশবাসীর সামনে স্বীকার করলেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। এটা স্ববিরোধিতা এবং তাতে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, রাষ্ট্রপতি থাকবেন-কি থাকবেন না এ প্রশ্নটি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। এটি একেবারেই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

রাষ্ট্রপতিকে কীভাবে সরানো সম্ভব?

সংবিধানে রাষ্ট্রপতি অভিশংসন বা পদত্যাগের বিধান রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুটি উপায়েই জটিলতা আছে। সংবিধানের ৫২(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদকে রাষ্ট্রপতির অভিশংসনের ক্ষমতা দেওয়া আছে। কিন্তু ৬ আগস্ট সংসদ বিলুপ্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সুতরাং সেখানে বাধা আছে।

অন্যদিকে সংবিধানের ৫৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি চাইলে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। তা গ্রহণের পরে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন স্পিকার।

কিন্তু গত ২ সেপ্টেম্বর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও পদত্যাগ করেছেন এবং ডেপুটি স্পিকারও কারাগারে থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণ সংবিধান অনুযায়ী হওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক।

রাজনীতি

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনার ও তার আওয়ামী লীগের জায়গা এই বাংলাদেশে আর হবে না। বাংলাদেশের জনগণ তাদের আর দেখতে চায় না, তারা দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, দেশে গণহত্যা চালিয়ে এ দেশ থেকে পালিয়েছে। তাদের জায়গা এ দেশের মাটিতে আর কখনই হবে না। আগামী দিনে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে, যে সরকার জনগণ এর কল্যাণে কাজ করবে, আওয়ামী লীগ যে অপকর্ম করেছে সেগুলো আগামী দিনে বিএনপি করবে না, বিএনপি কথা দিয়ে কথা রাখে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ইউনিয়ন মাঠে কাঁঠালিয়া বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খায়রুল কবির খোকন বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এখন জনগণের একমাত্র প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, কারণ দেশের জনগণ দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি।

কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ প্রধানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. ইসহাক মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বিজি রশিদ নওশের, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সালেহ চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য জাহিদুল কবির ভূঁইয়া, আব্দুর রউফ ফকির রনি, সিদ্দিকুর রহমান নাহিদসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

রাজনীতি

অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ সফরকারী সর্বোচ্চ পর্যায়ের অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা হিসেবে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, তার সরকার ঢাকায় আবারও ভিসা কেন্দ্র চালু এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে আলোচনা চালাতে আগ্রহী।

অধ্যাপক ইউনূস দেশের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফর এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকম পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করায় অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

বার্ক তার নিজের নির্বাচনী এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করে উল্লেখ করে বলেন, তিনি বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রেখেছিলেন এবং স্বৈরাচার পতনের পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে আনন্দ উদযাপন করেছে তা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জনমানুষের প্রত্যাশার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক আশাবাদ ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, দেশ পুনর্গঠন একটি বৃহৎ কাজ, কারণ স্বৈরাচারী শাসন সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে এবং অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ বিশাল। মানুষের প্রত্যাশা মেটানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। তবে দেশবাসী ধৈর্য ধরেছে। দেশকে পুননির্মাণ করতে হবে।’

বার্ক বাংলাদেশ থেকে অনিয়মিত অভিবাসনের বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, এই বিষয়ে তাঁর সরকার আলোচনা শুরু করতে চায়।

আলোচনার সময় বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, বিশেষ করে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের বিষয়টিও উঠে আসে। অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার বীজ এই আন্দোলন থেকেই আসে।’

ড. ইউনূস সরকার গঠিত বিভিন্ন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন, যারা স্বৈরাচারী শাসনের সময়ের শত শত গুমের ঘটনা তদন্ত করছে।

অধ্যাপক ইউনুস অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীকে গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশের শহর ও গ্রামের দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি ও ম্যুরালের সংকলন ‘আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ নামক একটি বই উপহার দেন।

অস্ট্রেলীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপহারটির প্রশংসা করেন এবং নগরীর কিছু এলাকায় গিয়ে সেসব শিল্পকর্ম নিজ চোখে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

রাজনীতি

রাজধানীর কচুক্ষেতে পোষাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, খুব নিকট সময়ের ভিতরেই গোপালগঞ্জের পর ঢাকার কচুক্ষেতে এই ঘটনা ঘটলো। শ্রমিকদের যদি কোনো ন্যায্য দাবি-দাওয়া থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমাধান করবেন এটাই তাদের কর্তব্য। কিন্তু বিক্ষোভকালে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এটা যদি বিশেষ কোন উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে হয়ে থাকে, দেশ এবং অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করার কোন ছক থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি হালকাভাবে দেখার কোনোই সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার কচুক্ষেত এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ-সংঘর্ষের মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এবং পুলিশের ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাজনীতি

কেন জাতীয় নির্বাচন দ্রুত চান তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন চাই এজন্য যে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণকে আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। সেজন্য আমরা মনে করি এক হচ্ছে সংস্কার করতে হবে, তা নিয়ে যাবে পার্লামেন্টে, সেভাবেই অনুমোদন করা হবে। ডিবেট করে সেখানে তা পাশ করাতে হবে এবং তাদের জনপ্রতিনিধিকে গ্রহণ করিয়ে সেটা করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে তত দেশের জন্য মঙ্গল।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত- ফাঁদ থাকলে সেখানে শত্রুরা বিপ্লবকে ব্যর্থতায় পরিণত করতে সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে। দেখবেন নানা মহল বিভিন্ন জায়গায় দাবি-দাওয়া নিয়ে আসছে। কেন তা আগে কেউ করেনি, এখন নিয়ে আসছে কেন? অপেক্ষা করেন? জনগণের সরকার আসুক। এসব বিষয় বুঝা উচিত, মাথা রাখতে হবে। অনেকে বলেন যে, এতদিন পারিনি তাই এখন দাবিগুলো নিয়ে আসছি। এটাতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।

কিছু উপদেষ্টার কথায় খটকা লাগে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা সরকারে দায়িত্ব পালন করছেন উপদেষ্টারা। তারা এমন কোনো কথা বলবেন না বা এমন কোনো কাজ করবেন না- যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হন। আমাদের সম্ভবত স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা (হাসান আরিফ) বলেছেন, চার বছর সরকারের মেয়াদ। এটা তার বলার কথা নয়। তারা কমিশন গঠন করেছেন সেই কমিশন প্রস্তাব দেবেন। জনগণ গ্রহণ করবে, তারপর না জনগণ ঠিক হবে; কিন্তু যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তিনি যদি বলেন যে, সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে তাহলে একটা চাপ পড়ে যায়। এই কাজটা হাসিনা (শেখ হাসিনা) খুব ভালোভাবে করতেন। যেকোনো মামলার রায়ের আগে বলে ফেলতেন ওইটা ওটা। এসব কখনো সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। তাই অনুরোধ করব, এমন কথা-বার্তা না বলা উচিত যেটাতে জনগণ বিভ্রান্ত হন।

বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। আমরা সব সময় সকল সম্প্রদায় একসঙ্গে কাজ করে আসছি, একসঙ্গে যুদ্ধ করেছি। ইদানীং দেখছি একটা সম্প্রদায়ের মানুষ বড় রকমের আন্দোলন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সেটা কেন জানি না, বাংলাদেশের বিপদ সম্পর্কে ভারতের যে বক্তব্য তার সঙ্গে মিলে যায়। যেটা বাংলাদেশের এই বিপ্লব, ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে যে অর্জন করা সেটাকে অনেকাংশে বিপন্ন করার চেষ্টা করছে। এই কথা বলতে আমি বাধ্য হলাম। আমাকে বিদেশের সাংবাদিকরা টেলিফোন করেন, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা, তারা বলতে চান- স্যার ড. ইউনূস কী রাষ্ট্র চালাতে পারছেন না। এ ধরনের কথাবার্তা তাদের কাছ থেকে আসে। আমি তাদের বলি প্রশ্নই উঠতে পারে না। গোটা দেশের মানুষ তার (ড. ইউনূস) ওপর আস্থাশীল। তিনি সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। যাকে মানুষ সমর্থন দিয়েছে সেখানে কোনো কিছু থাকতে পারে না।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।