রাজনীতি

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এটিই এখন সময়ের দাবি। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজশাহী মহানগর আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সময় দিতে চাই। যৌক্তিক সময় দেওয়া উচিত। খুব বেশিও দেওয়া উচিত না, কম দিয়ে তাড়াহুড়োও করা উচিত না। যৌক্তিক সময় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দলীয় প্রশাসনে বসে ছিল, পুলিশে হোক, বিজিবিতে হোক, আর্মিতে হোক, বিচারালয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যেখানে যাকে যেখানে বসিয়েছিল-এই দলীয় লোকগুলোকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ লোককে বসাতে হবে।

সমাবেশে প্রধান আলোচক ছিলেন জামায়াতের রাজশাহী মহানগরের আমীর ড. কেরামত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মহানগরের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, সহসভাপতি আফাজ উদ্দিন সরকার, পবার হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ব্যবসায়ীদের সরকারের সাথে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা ব্যবহার করে আমরা অতীতের পচা বাংলাদেশ থেকে একটা নতুন তরতাজা বাংলাদেশের সৃষ্টি করতে চাই। আসুন, এ লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’

তিনি বলেন, ‘এটা কোন কল্পকাহিনী না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস- আপনারা মনস্থির করে এগিয়ে এলে খুব দ্রুত গতিতে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ন্যাশনাল বিজনেস সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি) এবং জাতীয় পর্যায়ের ১৫টি বাণিজ্যিক সংগঠন এ সংলাপের আয়োজন করে।

সবাই মিলে একজোট হয়ে কাজ করলে তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা অব্যসম্ভাবী এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, ‘ আমরা যে বড় কিছু করতে পারি তার প্রমাণ হলো ব্যবসায়ীরা। বিরাট দুঃসাহস নিয়ে আপনারা উদ্যোক্তা হয়েছেন। বাংলাদেশীদের কাছে শিল্পপতি হওয়া দুঃস্বপ্ন ছিল, কিন্তু আপনার সেটা করতে পেরেছেন। আপনারা বিশ্বমানের উদ্যোক্তা। যুবকরা যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা কাজে লাগিয়ে আপনারা স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবেন।’

তিনি বলেন, যুবকরা প্রাণের বিনিময়ে যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা জাতির জীবনে বারবার আসে না। নতুন করে যে স্বপ্ন আপনাদের মনে তারা জাগিয়ে দিয়েছে, সে স্বপ্ন যদি আপনার জীবনে রেখাপাত করে তাহলে সেই স্বপ্ন পূরণে আপনিও শরিক হবেন।

নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ সুযোগ আর কখনো আসবে কি না জানিান। এই সুযোগ যেন হারিয়ে না যায়। এই সুযোগ হারিয়ে ফেললে জাতির কাছে আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ পারস্পারিকভাবে পরিচিত এবং একজনের সঙ্গে আরেকজনের যোগসূত্র রয়েছে।

দুনিয়ায় এমন কোন দেশ পাওয়া যাবে না যেখানে পরস্পর পরস্পরের এমন ঘনিষ্ঠ। এখানে হয়তো কেই সরকারে আছেন, কেইবা সরকারের বাইরে আছেন বা ব্যবসা করছেন। অথবা কেউ আছেন বিদেশে। কিন্তু আমাদের সবার সঙ্গে একটা যোগসূত্র আােছ। পারস্পারিক এই যোগসূত্রই আমাদের বড় শক্তি যা আমাদের স্বপ্ন পূরণে ভুমিকা রাখতে পারে।

তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, ‘যে কয়টা দিন সরকারে থাকি- আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের অঙ্গীকার হলো- নতুন বাংলাদেশের জন্য যা আছে তা করবো। যেন বলে যেতে পারি- এই দেশ আমাদেরকে একটা সুযোগ দিয়েছিল, আমরা সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছি।’ স্বৈরাচার হঠাতে ছাত্রদের এবারের আন্দোলন কোনো প্রথাগত আন্দোলন ছিল না উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটা সাধারণ কোনো আন্দোলন ছিল না। যারা শহিদ হয়েছেন, তারা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় অনেকে শেষ বিদায় নিয়ে এসেছেন। তারা মনস্থির করেছিলো যে উদ্দেশে রাস্তায় নেমেছে- সে উদ্দেশে প্রাণ দিতে তারা তৈরি আছে। রাস্তায় নেমেছে তাতে প্রাণ গেলে যবে, কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে রাস্তায় নেমেছে সে লক্ষ্য অর্জন করবেই করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তরুণরা প্রাণ দিয়েছে। যে বাংলাদেশে তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তা অসহ্য হয়ে উঠেছিলো। এ কারণে যখন ছাত্রদের প্রাণ ঝরছিল- তখন সারাদেশের মানুষ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এমন কোন মানুষ ছিল না তাদের সমর্থন করিনি। তাদের প্রাণের ফলে আমরা একটা নতুন সুযোগ পেয়েছি।

তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশে যে পচন ধরেছিল, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ছাড়া সেই পচন থেকে মুক্তির কোন উপায় ছিল না। ছাত্রদের আন্দোলন হঠাৎ করে সেই অবস্থা বদলে দিয়েছে। আর কোনো পচন নয়, আমরা সুস্থ, সবল জাতি হিসেবে দাঁড়াতে চাই।

ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ড. ইউনসূ বলেন, সংস্কার কেবল সরকারের ওপর ছেড়ে দেবেন না। আসুন সবাই মিলে সংস্কার করি। যেখানে ভুল দেখবেন, আত্ম-জিজ্ঞাসা করবেন -সেখান থেকে বেরিয় আসার। ছেলেদের আত্মাহুতির দিকে তাকিয়ে ভুলপথ পরিহার করুন।

শ্রমিক-মালিকের মধ্যে সরকার সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মেয়াদেকালে আমরা শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা এখনো জেনেভা কনভেনশনে যোগ দিতে পারিনি। আমাদেরকে সাহস দিন, এগিয়ে আসুন, আমরা সবাই মিলে আইএলও কনভেনশনে স্বাক্ষর করি।’

তিনি শ্রমিকদের যা প্রাপ্য, মালিকদের তাতে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় অনেক বাধা রয়ে গেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ব্যবসায় বাধার কোন সীমা নেই। ব্যবসা করা এক মহা সংগ্রাম। তবে আমরা এসব বাধা পেরিয়ে যেতে আজ একযোগে সরকার, সরকারের বাইরে সবাই এক পরিবারের সদস্য হিসেবে কাজ করে যাবো।’

তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য-আয়ের দেশ থেকে উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা হরাবে। কিন্তু আমাদের প্রতিযোগিতায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

দেশের প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের সামাজিক ব্যবসা চালুর আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনার গ্রাম, উপজেলা কিংবা আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এলাকায় সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নমূলক সামাজিক ব্যবসা করা যেতে পারে। আপনি বিনিয়োগ করবেন মুনাফার জন্য নয়, অন্যের সহায়তা বা সুবিধার জন্য।’

সংলাপে অর্থ উপদেষ্টা ড, সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বক্তব্য রাখেন।

রাজনীতি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়েছে।

এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি ও শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, এই ফাউন্ডেশনের সাত সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এটার নিবন্ধন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাখা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে, তিনি শহিদ মুগ্ধর জমজ ভাই। ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদ হবে ২১ সদস্য বিশিষ্ট। এতে আরও ১৪ জন সাধারণ সদস্য যোগ হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর কার্যকরী পরিষদ অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, সাত সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদকে ২৪ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২৩ আগস্ট ২০২৬ তারিখ পর্যন্ত দুই বছরের জন্য অনুমোদন করা হলো।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান। এছাড়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, নূরজাহান বেগম ও শারমিন মুরশিদকে নির্বাহী সদস্য করা হয়েছে।

রাজনীতি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আশা করি রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ অতিদ্রুত শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দেবে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। সংস্কারে জনগণের চাওয়া ও প্রয়োজনকে মূল্যায়ন করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য একটি চক্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে। একইসময়ে পোশাকশিল্প খাতে একটা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।

দেশের মানুষকে এই চক্রান্ত রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ফখরুল জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য দুদিনের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করা হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে।

একই দিনে বিভাগীয় শহরগুলোতে গণতন্ত্র র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় অবহেলা করেছে। তার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সমগ্র বাংলাদেশ একটা পরিবারের মত উল্লেখ করে বলেছেন, ‘যেখানে সরকারের দায়িত্ব হলো প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা দেওয়া।’

অধ্যাপক ইউনূস হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, তিনি এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান যেখানে নির্ভয়ে সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে এবং যেখানে কোনো মন্দির পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা দেওয়া এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’

সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

হিন্দু নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তারা বাংলাদেশে শান্তি-সম্প্রীতি ও এর সমৃদ্ধি এবং আন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য কামনা করে শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছেন।

হিন্দু নেতারা জানান, দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে দুর্গত এলাকাগুলোতে এবার জন্মাষ্টমী উদযাপন স্থগিত করে সেখানে খাদ্য ও ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, এই বক্তব্য দেশে আসম্প্রদায়িক সমাজ গঠন এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ভূমিকা করবে।

নেতৃবৃন্দ হিন্দু মন্দিরের জমিসহ হিন্দু জমি সম্পত্তি দখল হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।

শুভেচ্ছা বিনিময়কালে হিন্দু নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের কাজল দেবনাথ ও মনীন্দ্র কুমার নাথ, আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনা সংঘ ইসকনের চারু চরণ ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বাসুদেব ধর ও সন্তোষ শর্মা এবং ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্নধার প্রীতি চক্রবর্তী।

রাজনীতি

বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক।

সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ ও তাবিথ আউয়াল অংশ নেন।

বৈঠকে বিগত সরকারের আমলে দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কত তাড়াতাড়ি আমরা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, সেই আলোচনাও এসেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এর বাইরেও যে সম্পর্কগুলো আছে, আগামী দিনে সেগুলোকে আরও কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে যে টাকা পয়সা পাচার হয়েছে, এই টাকাগুলো ফেরত আনার বিষয়ে আমাদের দিক থেকে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কারা কত টাকা পাচার করেছে ইতিমধ্য সেইগুলো বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এসেছে। বাংলাদেশে থেকে ইউকে (যুক্তরাজ্য) একটা বড় অংশের অর্থ পাচার হয়েছে, অনেকের নামও এসেছে এই ব্যাপারে। এই টাকাগুলো ফেরত আনার ব্যাপারে তাদের (যুক্তরাজ্য) ভূমিকা ও সহযোগিতার কথা আলোচনা হয়েছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতায় যাওয়া ও জবাবদিহি সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে নির্বাচন আয়োজন করতে সময় লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে সরকার পতনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের সংখ্যা বিগত ১৫ বছরে হত্যা, গুম, নির্যাতন, মামলার বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। এই

বিষয়গুলো নিয়ে, বিচার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘ থেকে যে ডেলিগেশন দেশে আসছে এই বিষয়টি আমরা কিভাবে দেখছি তা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি জাতিসংঘের যেই টিম আসছে, এটাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা বলেছি জাতিসংঘ যে তদন্ত করবে সেটা নিরপেক্ষ হবে। তদন্ত কমিটির যে প্রতিবেদন আসবে সেটা আগামীতে বিচারকার্য পরিচালনা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

রাজনীতি

রিমান্ডে থাকা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ডিবিকে জানিয়েছেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশের সম্পদ না বানিয়ে আওয়ামী লীগের সম্পদ বানিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা ছিল শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত। তিনি নিজেকে এবং তার বাবাকে বেশি ফোকাস করতে গিয়ে জনগণের বিরাগভাজন হয়েছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রিমান্ডে থাকা সাবেক এই আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, সারা দেশে গ্রামে-গঞ্জে, জেলা-উপজেলায় শেখ মুজিবের এত ভাস্কর্য না বানিয়ে যদি একটি বা দুটি আন্তর্জাতিক মানের ভাস্কর্য বানাতেন তবে সেটা দেখতে ভিড় করতেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। এতে শেখ মুজিবের সম্মান অনেক বাড়ত।’

সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ছিলেন একজন সাইলেন্ট কিলার। অসংখ্য গুম-খুনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিতর্কিত এই সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম। একে একে বেরিয়ে আসছে তার অন্ধকার জীবনের নানা ঘটনা।

অপরদিকে রিমান্ডে থাকা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ডিবিকে জানিয়েছেন, রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে বিভিন্ন সময়ে একগুঁয়েমি সিদ্ধান্ত নিয়ে শেখ হাসিনা তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। জিয়াউল আহসান জানান, বিভিন্ন অপারেটরের মোবাইল ফোনের সফটওয়্যারে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল এনটিএমসি।

গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি জানায়, শেখ হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার কারণেই আজ দেশের এই অবস্থা হয়েছে। তিনি কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা-নেতাদের কথা শুনতে চাইতেন না। যেভাবেই হোক তাকে ক্ষামতায় থাকতে হবে-এই মানসিকতা ছিল শেষ পর্যন্ত।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই মুহূর্তে বন্যা মোকাবিলাকে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার উল্লেখ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দেশবাসীকে বন্যা মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানন।

শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিও প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। উপকূল ও দুর্গত এলাকায় কর্মরত ৪৪টি এনজিওর কর্তাব্যাক্তিরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।

শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সরকার এই মুহূর্তে বন্যা মোকাবিলাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আমাদের অব্যশই এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সবাই মিলে এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে।

ড. ইউনূস বন্যা মোকাবিলায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘বন্যা মোকাবিলায় সরকার, এনজিওসহ যারা যারা কাজ করছেন, তাদের সবার মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। সম্ভব হলে জেলা পর্যায়েও বন্যা মোকাবিলার কাজে সমন্বিতভাবে করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোটি কোটি মানুষ বন্যায় উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসছে। তাদের মহৎ উৎসাহের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য আমাদের সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশ। বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছে ১১টি জেলা। ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ।

বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে আরও বেশি কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করে বন্যা পরবর্তী খাদ্য ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

ছাত্র-জনতার অভুত্থানের মাধ্যমে দেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণরা আমাদের জন্য মহৎ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। দ্রুত এই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে।’

সরকার প্রধান আরও বলেন, কেবল বন্যা মোকাবিলায় গুরুত্ব দিলে হবে না, কিভাবে দেশকে বন্যামুক্ত রাখা যায় সেদিকেও মনোযোগী হতে হবে।

রাজনীতি

নগরীর খালিশপুর থানার ৯নং এবং ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় আসামী করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার ভাইসহ খুলনার সাবেক এমপি ও মেয়র এবং সিটি কর্পোরেশনের একাধিক কাউন্সিলরসহ ২৭১জনকে।

মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ চাচাতো ভাই। খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বাবু, সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, কেসিসির একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

শুক্রবার রাতে খালিশপুর থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহ্বায়ক শেখ দবির ও ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মো.ইকরাম মিন্টু। দুটি মামলার বেশিরভাগ আসামি একই ব্যক্তি। শেখ দবিরের দায়ের করা মামলায় ১১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়।

ইকরাম মিন্টুর মামলায় ১০৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। খালিশপুর থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

রাজনীতি

যতদিন দেশ পুনর্গঠন না হবে ততদিন অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সাতক্ষীরার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে জেলা জামায়াত আয়োজিত দোয়া ও শহীদ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পেত্মারা বসে আছে। তাদের অপসারণ না করা পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের ওপর গুম-খুন, মিথ্যা মামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে স্বৈরাচারী সরকার।

তিনি আরও বলেন, দেশ ও জনপদকে মুক্ত করতে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছেন, তারা জাতীয় বীর। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বীর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। জামায়াতের পক্ষ হয়ে আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, খুনিদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে, আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আদালতেও এরই মধ্যেই গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের নামে মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা হিন্দু ভাইদের মন্দির, জমি জায়গা পাহারা দিয়ে শান্তির বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করেছেন। কিন্তু বিগত দিনে আওয়ামী লীগের লোকজনই হিন্দু ভাইদের ঘরবাড়ি, জায়গা জমি দখল করে লুটপাট ও মন্দির ভাঙচুর নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি রবিউল বাশারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাদ্দিস আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগরের সাবেক আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খুলনা অঞ্চলের সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা জেলা আমীর ইমরান হুসাইন, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি শেখ নুরুল হুদা, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইমামুল ইসলাম ও শহর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাতক্ষীরার শহীদ আসিফসহ চারটি পরিবারের মাঝে এক লাখ টাকা করে বিতরণ করা হয়।