অর্থনীতি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হরিণী আমারাসুরিয়ার সাথে বৈঠক করেছেন।

এসময় দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধু প্রতিম দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করেছেন।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে তার দেশের প্রচেষ্টার কথা বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সংসদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য একটি নতুন আইন অনুমোদন করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কোটি কোটি ডলার ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কার সমর্থন চেয়েছেন।

দুই নেতা জুলাইয়ের বিদ্রোহের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করেন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বের উপর জোর দেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা এবং আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে তার প্রশাসনের পরিকল্পনা বর্ণনা করেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে শাক, সবজি ও মুরগির দাম কমেছে। একই সঙ্গে আলু আগের দামে বিক্রি হলেও পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

তবে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।

শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) রাজধানীর তালতলা ও শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সবজি-মুরগির দাম কমার কারণ হিসেবে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, প্রথমতো, এবার রমজানে ও ঈদে বাজার ছিল বেশ স্থিতিশীল। তার ওপর গত সোমবার (৩১ মার্চ) ছিল ঈদুল ফিতর। ঢাকা থেকে লাখ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদ উদযাপন করতে গেছেন। তাদের অনেকেই এখনো ফেরেননি। এ কারণে এখন ঢাকার বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের চাহিদা কিছুটা কম।

রাজধানীর বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে গ্রীষ্মকালীন সব ধরনের সবজি কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে।

এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কেজি প্রতি বেগুন প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৯০ টাকা, পটল কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা, কচুর লতি কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে সজনে কেজিতে ২০ টাকা কমে ১৪০ টাকা ঝিঙ্গা ৭০ টাকা, কাঁচা আম ১৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পেঁপের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে শিম ৬০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৬০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৫০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। তবে পাকা টমেটো কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, শসা কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা ১৪০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ১২০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে সব ধরনের শাকের দাম কমেছে। বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, কলমি শাক ৩ আঁটি ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাটা শাক দুই আঁটি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারগুলোতে মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। এসব বাজারে সোনালি কক মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমে ৩২০ এবং সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা এবং নাজিরশাইল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫ টাকা এবং ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে।

অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইন মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কৈ ১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা, কুড়াল মাছ ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইক্ক্যা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

অর্থনীতি

সরকার যেসব সংস্কার কমিশন করেছে, সেখানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সঠিক প্রতিনিধিত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের’ আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনের আগে পিছিয়ে পড়া মানুষের ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং তাদের ভোটের নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কের দপ্তর এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ যৌ0থভাবে ‘জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট (ভিএনআর) ২০২৫: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশার অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় ঢাকার জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান প্রমুখ।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, স্বৈরাচার ও একনায়কতন্ত্রের কারণে আমাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমাদের টুটি চেপে ধরা হয়েছিল। উন্নয়নের বয়ানের বিপক্ষে আমরা সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য কাজ করছি। মোকাবেলা করেছি নানা রকম প্রতিবন্ধকতা। সে সময় আমরা সম্মিলিত সমস্যার মোকাবেলা করেছি। জাতিসংঘ আমাদের সঙ্গে ছিল।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কিছু লোক নৈতিক খবরদারি করার দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের সংখ্যা বড় না। কিন্তু তারা কাজটা করছে বড়ভাবে।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহার তৈরি শুরু হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতিসহ সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতি আলাদা ভাবে না থাকলে তারা ইশতেহার গ্রহণ করবেন না।’

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই বললাম এই পরিবর্তন বৈষম্যবিরোধী। কিন্তু সব বৈষম্য নিয়ে কি কথা হয়? লিঙ্গ বৈষম্য, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈষম্য ও সুরক্ষা, নারীর বৈষম্য নিয়ে কি কথা হচ্ছে? হচ্ছে না।’

জনগণ এতদিন বিভ্রান্তিকর উন্নয়নের বয়ানে ছিল উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখন প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার সময় এসেছে। বাংলাদেশের গড়ে উন্নতি হলেও পার্থক্য রয়ে গেছে। উন্নয়নের মধ্যে সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। সমাজের কোন অবস্থান থেকে, কোন গোত্র থেকে এসেছে তার ওপর নির্ভর করেছে কে উন্নয়নের সুবিধা পাবে, আর কে পাবে না।’

তিনি বলেন, গড় আয়ু বেড়েছে কিন্তু গরিবদের গড় আয়ু বাড়ে নাই। স্কুলের অন্তর্ভুক্তি শতভাগ হয়েছে কিন্তু গরিবদের সবাই স্কুলে যায় না। এজন্য সঠিক পরিসংখ্যান দরকার সঠিক পরিসংখ্যান না হলে সবাইকে নীতির মধ্যে আনা যাবে না।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

অর্থনীতি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। এই অর্থ ফিরিয়ে আনতে অনেকেই প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে তিনি এসব কথা জানান। নিজের প্রথম কর্মদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব কি না, সাংবাদিকরা এমনটি জানতে চান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, যেসব দেশে টাকা গিয়েছে, সেসব দেশ উপকারভোগী। যেহেতু উপকারভোগী, সেহেতু সহজে তারা ছাড়বে না। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টাকে তারাই অফার করছে এ বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য। আমরা অতি দ্রুত কাজ করছি। আশা করছি আমরা সফল হব।

কারা অফার করেছে, জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, বলা সম্ভব নয়। বললে কাজে সমস্যা হবে। কিছু তো গোপনীয়তা মানতে হবে। যারা টাকা নিয়ে গেছে তারা তো বসে নেই। এজন্যই একটা গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। যতটা বলা সম্ভব, ততটাই বলছি। এর বেশি বললে আমাদের কাজটা বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এখানে আইনের ইস্যু আছে, প্রপার আইন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে মিল রেখে। আপনি ধরলেই তো টাকা ফেরত আনতে পারবেন না। এখানে কতগুলো মাধ্যম আছে। এসব বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাচ্ছি। বিশ্বব্যাংকসহ অনেকেই কাজ করছে।

অর্থনীতি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাড়ার পর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আকুর জানুয়া‌রি-ফেব্রুয়ারি মাসের আমদানি বিল বাবদ ১৭৫ কোটি ডলার পরিশোধ করার পর ফের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়।

এখন রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৬৪ কোটি বা ১৯ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারে।

রোববার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) আকুর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বিল বাবদ ১৭৫ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১৩৯ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৬৬০ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) আকুর বিল পরিশোধের পর নিট রিজার্ভের পাশাপাশি মোট রিজার্ভও দুই হাজার ৪৮৫ কোটি এক লাখ ৪০ হাজার ডলারে নামে।

চলতি বছরের দুই দফায় আকুর বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি আকুর নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুই মাসের আমদানি বিল বাবদ ১৬৭ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। তখনো ২১ বিলিয়ন ডলার থেকে রিজার্ভ কমে। এরপর যথারীতি ‍বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সংগ্রহ করা রেমিট্যান্সের নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি, রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক ঋণ রিজার্ভে যোগ হয়ে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

আকু হলো আন্তঃদেশীয় একটি লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।

অর্থনীতি

বিগত বছরের তুলনায় এবারের রমজানে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে। এ বছর তারা বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বিশেষ করে কাঁচাবাজার ও মুদিখানার জিনিসপত্র সুলভ ও সাশ্রয়ী মূল্যে পাচ্ছে।

আজ সকালে কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও তালতলা বাজার, ফকিরাপুল বাজার, মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচা বাজার ও শান্তিনগর বাজারসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা বাজার পরিদর্শন করে বাসস প্রতিবেদক দেখতে পেয়েছে যে, ক্রেতারা সাধারণত তাদের ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের যা প্রয়োজনীয়, সেসব দ্রব্য ও পণ্য পাচ্ছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কঠোর বাজার তদারকি এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চিনি, ডাল, খেজুর, পেঁয়াজ, শসা, আলু, টমেটো, ডিম, রসুন, কাঁচা মরিচ, শুকনো মরিচ, আদা ও ইসবগুলসহ বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ২০২৪ সালের রমজানের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।

পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা নিশ্চিত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ওপর থেকে ভ্যাট তুলে নিয়েছে।

তালিকাভুক্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে- সরিষার তেল, ময়দা, সুজি, মসুর ডাল, এলপিজি, বিস্কুট, লবণ ও গরম মশলা।

এই পণ্যগুলোর উৎপাদন পর্যায়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক পর্যায়ে ভ্যাট রেয়াত দেওয়া হয়েছে।

রাজস্ব বোর্ড খেজুর, চাল, ডাল, চিনি ও তেলের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি শুল্ক শূন্যে নামিয়ে এনেছে।

সরকারি পদক্ষেপের প্রশংসা করে খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা আবু সুফিয়ান বলেন, সরবরাহ প্রচুর থাকায় বেশিরভাগ মুদি পণ্যের দাম সন্তোষজনক।

তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় আমার বাড়ির কাছে তালতলা বাজার থেকে কেনাকাটা করি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এই রমজানে সবজির দাম কম থাকায় সবাই স্বস্তি পেয়েছে।’

সুফিয়ান আরো বলেন, মাছ, মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

শহরের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, খামারের মুরগি প্রতি কেজি ১৮০-১৯০ টাকা, সোনালী ৩০০-৩১০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০-৫৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে- যা গত বছরের তুলনায় যথাক্রমে ১০-৩০ টাকা কম।

খাসি (মাংস) প্রতি কেজি প্রায় ১১০০ টাকা ও গরুর মাংস ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে- যা আগের বছরের তুলনায় ৩০-৫০ টাকা কম।

অন্যদিকে, চিনি প্রতি কেজি ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা গত বছর ছিল ১৪০-১৫০ টাকা।

সাধারণ খেজুরের দাম ২২০-২৫০ টাকা থেকে কমে ১৮০-২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে মাঝারি মানের ও প্রিমিয়াম মানের খেজুর যথাক্রমে ৪৫০-৮০০ টাকা ও ১,০০০-১,৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা গত বছরের তুলনায় ৩০-২০০ টাকা কম।

স্থানীয় পেঁয়াজ এখন ৪০-৪৫ টাকায় প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে- যা গত বছরের ১০০-১২০ টাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

আলু ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা গত বছর ছিল ২৫-৩৫ টাকা ।

এছাড়াও, শীতকালীন সবজির দাম গত রমজানের তুলনায় ৫-২০ টাকা কেজি কমেছে।

মতিঝিল এজিবি কলোনির কাঁচা বাজারের মুরগি বিক্রেতা মহসিন বলেন, সরকারের যথাযথ ও সক্রিয় তদারকি কার্যক্রমের কারণে দাম আগের বছরের তুলনায় কম।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে ক্রয়-বিক্রয় করি। খুব বেশি লাভ করার সুযোগ নেই। কৃষকরাও মোটা অঙ্কের মুনাফা পাচ্ছে না। মূলত, বড় সিন্ডিকেট মুরগির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। যারা দিন বয়সী বাচ্চা উৎপাদন করে ও মুরগির খাবার দেয়, তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার যদি সিন্ডিকেটগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাহলে মুরগির দাম আরও কমার সুযোগ রয়েছে।’

স্থানীয় রুই (১.৫ থেকে ২ কেজি জীবিত) ৩০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানি করা রুই (২ থেকে ৩ কেজি) ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফকিরাপুল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক। তবে রমজান আসার সাথে সাথে মাছের চাহিদা বেড়েছে।

তালতলা বাজারে সেনবাগ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ তারেক বলেন, সরবরাহ প্রচুর হওয়ায় বেশিরভাগ মুদি পণ্যের দাম সন্তোষজনক।

মতিঝিল এলাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এ বছর পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, কাঁচা মরিচ ও ডিমের দাম ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত।

সরকারের কঠোর নজরদারি পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রেখেছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার করেছে। সরকারের তিনটি নিবেদিতপ্রাণ দল ঢাকা মহানগর জুড়ে সর্বক্ষণ বাজার পর্যবেক্ষণ করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জেলা ও ঢাকা মহানগর প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে পণ্য বাজার পর্যবেক্ষণ করছে।

এছাড়াও, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি) বাজারের ওপর কড়া নজর রাখছে, যাতে করে অতিমুনাফার জন্য অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে অস্থির ও অস্থিতিশীল করে তুলতে না পারে।

অর্থনীতি

ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধপথে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৯৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)।

দেশের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড এটি। এর আগে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ডিসেম্বর মাসে। সে মাসে এসেছিল ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
রোববার (২ মার্চ) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি মার্কিন ডলার; যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল এক হাজার ৪৯৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার। জানুয়া‌রিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পা‌ঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

অর্থনীতি

ডলার আয়ের চেয়ে ব্যয় কম হওয়ায় দীর্ঘ সাড়ে ৮ বছর পর বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি কমে এখন উদ্বৃত্ত হয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত এ হিসাবে ঘাটতি ছিল। ডিসেম্বরে এতে ঘাটতি কমে উদ্বৃত্ত হয়েছে। রোববার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই ডিসেম্বরে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি কমে উদ্বৃত্ত হয়েছে তিন কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর আগে চলতি অর্থবছরের গত নভেম্বর পর্যন্ত এ হিসাবে ঘাটতি ছিল ২৩ কোটি ডলার। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে এ হিসাবে টানা ঘাটতি চলে আসছে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে এ ঘাটতির কারণেই ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। বর্তমানে সংকট কিছুটা কমলেও ডলার ব্যবহারে এখনো সাশ্রয়ী নীতি অনুসরণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারের আয় ব্যয়ের চিত্র এ হিসাবে প্রতিফলিত হয়। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হলে এতে ঘাটতি দেখা দেয়। আর আয়ের চেয়ে খরচ কম হলে উদ্বৃত্ত থাকে। উদ্বৃত্ত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ে। আর ঘাটতি থাকলে রিজার্ভ কমে। তবে গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ হিসাবে ঘাটতি ছিল। তবে সরকার বৈদেশিক ঋণ নিয়ে ঘাটতি পূরণ করেছে। যে কারণে এখন ঋণের বোঝা বেড়েছে। ঋণ নিয়ে সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়েছে। যে কারণে ২০২২ সালের জুলাইয়ে ডলার সংকট শুরু হলে রিজার্ভও চাপে পড়ে।

২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে চলতি হিসাবে ঘটতি চলে আসছিল। ওই সময়ে দেশে ডলার সংকটের বার্তা পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সরকার বিষয়টিকে আমলে নেয়নি। যে কারণে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিকভাবে পণ্যের দাম বেড়ে গেলে দেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়ে ডলারের সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এতে পুরো অর্থনীতি সংকটে পড়ে। টাকার মান কমে যায়, মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়ে মানুষের ভোগান্তি তৈরি হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

গত অর্থবছরে এ হিসাবে ঘাটতি ছিল ৬৬০ কোটি ডলার। ওই বছরের জুলাই ডিসেম্বরে ঘাটতি ছিল ৩৪৭ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ হিসাবে সর্বোচ্চ ঘাটতি হয়েছিল।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ থেকে টাকা পাচার কমে যায়। পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বাড়ে। এতে ডলারের প্রবাহ বেড়ে যায়। যে কারণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে খরচ কম হচ্ছে। এ কারণেই এ হিসাবে ঘাটতি কমেছে। এতে ঘাটতি কমায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। রোববার দিনের শুরুতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৮৬ কোটি ডলার।

অর্থনীতি

ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, রিজার্ভের পতন কিছুটা হলেও থামানো গেছে।

আইএমএফের কাছ থেকে এক টাকাও আসেনি। কিন্তু রেমিট্যান্স ২৪ শতাংশ বেড়েছে, এ মাসে ৩০ শতাংশ ছাড়াবে। জুন শেষে রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ছাড়াবে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সেমিনার অন বাংলাদেশ ম্যাক্রোইকোনোমিক ল্যান্ডস্কেপ: চ্যালেঞ্জেস ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অ্যান্ড দ্য পাথ এহেড’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো ডলার এখন বিক্রি হচ্ছে না। ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের ব্যবধান নেই বললেই চলে। ডলার অর্থপাচার ঠেকানো গেছে।

রেমিট্যান্সের দর ম্যানিপুলেশন হচ্ছে না দাবি করে গভর্নর বলেন, দুবাইয়ে একটা গ্রুপ ডলার ম্যানিপুলেশন করতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা এতে প্রভাবিত হইনি।

তিনি আরও বলেন, আমানতের প্রবৃদ্ধি কমার কারণে প্রাইভেট সেক্টর ক্রেডিট গ্রোথ কমেছে। পলিসি রেট বাড়ার কারণেই যে কমেছে সেটা নয়। সরকারের ঋণ ১২ শতাংশ ছিল সেটা কমে ৯ শতাংশ হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলোকে প্রাইভেট সেক্টরে ঋণ দিতে হবে। শুয়ে শুয়ে প্রফিট করার দিন শেষ হয়ে আসছে। ঋণ দিয়ে প্রফিট করতে হবে।

এলডিসি গ্রাজুয়েশনের বয়ান পরিবর্তনের কথা বলেন গভর্নর। তিনি বলেন, আমাদের সমগোষ্ঠী কোনো দেশ এখন আর এলডিসিতে নাই। বাংলাদেশ ২০২১ সালেই এলডিসি যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্প খাতের চাপে এলডিসি উত্তরণের সময় বাড়িয়ে ২০২৬ সালে নিয়ে আসি। গ্রাজুয়েশনের অনেক ভালো দিক আছে। দরিদ্র হয়ে থাকার মধ্যে কোনো সম্মান নেই। আমরা কেন মধ্য আয়ের দেশ হতে পারব না! আমরা তো মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে আছি। কেন আমরা ট্যারিফের সুবিধার জন্য নিম্নআয়ের দেশ হয়ে থাকব।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাত হলো, ব্যাংক ও রাজস্ব খাত। তবে এনবিআরের কার্যকর সংস্কার না হলে ব্যাংক খাত এগোবে না।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন ইআরএফ এর সহ-সাধারণ সম্পাদক মানিক মুনতাসির।

অর্থনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, ব্যাংক ডাকাতরা দেশের জনগণের সম্পদ লুট করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের অর্থনীতি নিয়ে রোববার সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, এস আলম গ্রুপের সব সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানি ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১২টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা, অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ৬ মাসে দেশের অর্থনৈতিক অর্জন এবং আগামী দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান।

বৈঠকে জানানো হয়, পতিত সরকারের ফেলে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতি ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কমেছে মূল্যস্ফীতি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট (বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য) এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তবে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ বিদায়ি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।

ওই বছরের আংশিক হিসাবে যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সব বাহিনীর সমন্বয়ে রোববার ৬টা থেকেই ‘সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার’ কাজ শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং অপূর্ব জাহাঙ্গীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম বলেন, যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশ দিয়েছেন। ‘এ ব্যাপারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, তারা (ব্যাংক ডাকাতরা) যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে। যে করেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যারা ব্যাংকের টাকা লুট করেছেন, আসলে তারা দেশের সাধারণ মানুষের টাকা নিয়েছেন। তাই যেভাবে হোক তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।’

সভায় অধ্যাপক ইউনূস অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, শুরুতে অর্থনীতি খুব বাজে অবস্থায় ছিল। সেই জায়গা থেকে এখন ভালো জায়গায় এসেছে। তবে আরও ভালো জায়গায় নিতে হবে। এটা সরকারের চ্যালেঞ্জ। শফিকুল আলম বলেন, বেক্সিমকোর সঙ্গে কিছু জটিলতা রয়েছে। এই জটিলতার সুষ্ঠু সমাধানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রবাসী আয়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অভিবাসন বাড়ছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এখনই এটা নিয়ে উৎসব করার কিছু নেই। এ খাতে এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস অভিবাসন বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে যেসব দেশ বর্তমানে বাংলাদেশি অভিবাসনগামীদের ভিসা বন্ধ রেখেছে, তা কীভাবে দ্রুত চালু করা যায়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, ব্যাংকের চুরি হওয়া টাকা উদ্ধারে ইতোমধ্যে এস আলম গ্রুপের সব সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নগদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট করেছেন, এমন ১২ জন অপরাধী চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কীভাবে টাকা নিয়েছেন সেগুলো বের করতে আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিচ্ছি। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সবগুলো সংস্থা এ নিয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ওই বৈঠকে আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা দিতে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ঘুরে গেছে।

সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিনিধিদলও শিগগিরই আসছে। এর বাইরে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে কথা বলছি। এক্ষেত্রে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে- গত ১৫ বছরে দেশ থেকে যে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৮ লাখ কোটি টাকা) অর্থ পাচার হয়েছে, তা দেশে ফিরিয়ে আনা। এই টাকা কারা নিয়েছেন, কোথায় গেছে- এগুলো চিহ্নিত করতে পারলে কাজ অনেক এগিয়ে যাবে। প্রথমে যে দেশে টাকা পাচার হয়েছে, সেখানে এই টাকা-সম্পদ জব্দ করতে হবে। পরে তা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা থাকবে।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে এসেছে। এখন আমরা একটা স্থিতিশীল জায়গায় আসছি। বর্তমান যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। রিজার্ভের অবস্থা সামনে আরও ভালো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম আরও বলেন, দ্রুত আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে। সব বাহিনীর সমন্বয়ে ‘সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার’ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কাজ শুরু করেছে। কমান্ড সেন্টার সমন্বয় করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেন্টারটির সঙ্গে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্ট গার্ড, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যুক্ত থাকবেন।

রাজধানীসহ দেশের কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে কমান্ড সেন্টার থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ৫ মাসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছরের জুলাইয়ে যা ছিল ১১ শতাংশ। আগামী জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি কমে ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসবে। মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চলতি বছরে নয় লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হবে।

বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া পরিশোধে ভর্তুকি ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর মাধ্যমে ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে চলতি বছরে প্রায় ১১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ১০ শতাংশ ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কূপ খনন করে দৈনিক ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

২০২৮ সালের মধ্যে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫শ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মিটিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অটোনমি (স্বায়ত্তশাসন) নিশ্চিত করতে বলেছেন।

প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে টাকা ছাপানো বন্ধ। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বন্ধ আছে। নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় অব্যাহত আছে। দেশের ১ কোটি পরিবার ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য পাচ্ছে। ১৩ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত আছে। যে পরিমাণ মজুত আছে আর আমদানি হচ্ছে তাতে পণ্যের দাম আরও কমে আসবে।

তিনি বলেন, দেশে কোরিয়ান ইপিজেড নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। জমি জটিলতার কারণে তারা বিনিয়োগ করছিল না। পতিত স্বৈরাচাররা এই সমস্যা তৈরি করেছিল। এখন এই ভূমি সমস্যার সমাধানে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কোরিয়ান ইপিজেডকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ভূমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বিনিয়োগে আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, এই ইপিজেডে কোরিয়ার অনেক বড় কোম্পানি আছে। আশা করছি, সমস্যা সমাধানের ফলে সেখানে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।

শফিকুল আলম জানান, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ মার্কিন ডলার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা আসছে। কিন্তু বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। পুলিশের তথ্য বলছে, গত ৫ বছরের মধ্যে খুন সবচেয়ে কম।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের পালিয়ে যেতে যারা সহায়তা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? জবাবে প্রেস সচিব বলেন, যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের বেশির ভাগই ৫ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে। ওই সময়ে দেশে কোনো সরকার ছিল না। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। পুলিশকে কাজে ফেরাতে অনেক সময় লেগেছে। এরপরও এ অপরাধে কারা জড়িত ছিল, তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।