অর্থনীতি

বাংলাদেশে এক মাসে চায়ের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে অক্টোবরে ১ কোটি ৪৫ লাখ কেজি হয়েছে। তাই প্রথমবারের মতো চলতি বছরে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের আশা জেগেছে।

অর্থনীতি

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।‘চলতি মাসেই’ এই সমঝোতা স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরই বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।

বাগান, কৃষি, উত্পাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন, নির্মাণ এবং গৃহকর্মী নিয়োগের জন্য উন্মুক্ত হবে বলে জানান মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী।তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা সম্মত হয়েছে বিদেশি কর্মী নিয়োগে সব সেক্টরের জন্য উন্মুক্ত করতে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে শুক্রবার এক বিবৃতিতে মানবসম্পদমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কর্মীদের জন্য স্থায়ী অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) পরিমার্জন করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।এ ছাড়া নিয়োগকর্তার বুঝা থেকে অভিবাসী কর্মীদের মুক্তি দেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত নতুন পদ্ধতিতে বহুস্তর বিশিষ্ট বার্ষিক ভিসা নবায়ন বা লেভি (মাল্টি টায়ার লেভি) বাস্তবায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় দুই বছর ধরে বিদেশি কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ রেখেছে মালয়েশিয়া। যদিও বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে।

এখন দুদেশের মধ্যে কর্মীসংক্রান্ত এমওইউ স্বাক্ষর হওয়ার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোয় আর কোনো বাধা থাকবে না।

অর্থনীতি

জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহ কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) ‘টোকিও নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিট’-এ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের পুষ্টি উদ্যোগগুলোকে ব্যাপক বাধার সৃষ্টি করেছে। জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর মহামারির প্রভাবের পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার।

প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টি কর্মসূচিতে করোনা মহামারির প্রভাবসহ কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাবারের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় সহযোগিতা বাড়াতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তৃতীয় প্রস্তাবে দুযোর্গে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার কথা বলেন শেখ হাসিনা।

চতুর্থ প্রস্তাবে পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবচেয়ে ভালো চর্চা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করার কথা বলেন তিনি।

পঞ্চম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশের খাদ্য উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, জলবায়ু পরিবর্তনের এমন ঘটনাগুলোকে অভিযোজন করতে উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুত ফান্ড সরবরাহ করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সব নাগরিকের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করা একটি কঠিন কাজ। কিন্তু পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগ উচ্চ আর্থ-সামাজিক রিটার্ন তৈরি করে, যা টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে পরিচালিত করে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি এবং অভূত সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টির অবস্থা উন্নত করতে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা চালু, অসচ্ছল গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের নগদ ভাতা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য মিড-ডে মিল চালু, খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম এবং ফলের উৎপাদন বহুমুখী করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের পদক্ষেপগুলো ফল দিতে শুরু করেছে। গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানান তিনি।

উচ্চ পর্যায়ের এই ভার্চুয়াল সামিটে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশোদা ফুমিও, ডিআরসি প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স আন্তোইন শিসেকেদি শিলোম্বো, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর।

এছাড়াও সামিটে তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী তাউর মাতান রুয়াক এবং এল সালভাদরের ফার্স্ট লেডি গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।

অর্থনীতি

পড়ালেখা শেষ করে কেবল চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের পাশপাশি অন্যকে চাকরির সুযোগ করে দিতে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের তরুণ সমাজ…, তাদেরকে যেমন আমরা শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছি, কারিগরি শিক্ষা এবং ভোকেশনাল ট্রেইনিংয়েরও আমরা সুযোগ করে দিয়েছি। পাশপাশি ডিজিটাল, অর্থাৎ কম্পিউটার ট্রেইনিং, অনলাইনে সব রকম ব্যবসা বাণিজ্য যাতে করতে পারে, সেই ব্যবস্থা, সব ধরনের সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি।”

তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ যোগাতে বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখার বিষয়টি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, উদ্যোক্তা হতে চাইলে এখন ‘যে কেউ’ হতে পারে।

“শুধুমাত্র একটা পাস করেই চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরা উদ্যোক্তা হওয়া এবং নিজেরাই অন্যকে চাকরি দেওয়া… আমার তরুণ সমাজের কাছে এটাই থাকবে আবেদন, যে সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।

“নিজে কাজ করবেন, অন্যকে কাজের সুযোগ দেবেন, চাকরির সুযোগ দেবেন। নিজেরা উদ্যোক্তা হবেন। আর সেই উদ্যোক্তা করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

‘ডিজিটাল’ বাংলাদেশে যোগাযোগ এখন ‘খুব সহজ হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্রয় বিক্রয়, পণ্যমান সবকিছু জানার একটা সুযোগ হচ্ছে। বাজার সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। বাজারের চাহিদা ও পণ্যের মূল্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে।

“যার ফলে আমি মনে করি, আমাদের মানুষের আর কষ্ট করার কোনো অর্থ হয় না। একটু স্ব-উদ্যোগে কাজ করলেই কিন্তু নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারেন এবং নিজেরা কাজ করতে পারেন।”

আওয়ামী লীগ প্রথমবার সরকারে আসার পর যুবকদের জন্য বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করেছিল, তা অব্যাহত রাখতে কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

“পাশপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক… কারণ যারা প্রবাসে যাচ্ছে, তারা যদি ফিরে এসে কোনো কাজ করতে চায়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে তারা ঋণ নিতে পারে। এমনকি এখানে জামানত ছাড়াও কিন্তু ঋণ দেওয়া হয়। এভাবে বহুমুখী ব্যবস্থা, সুযোগ সুবিধা আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।”

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের (এসএমইএফ) চেয়ারপার্সন মো. মাসুদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়লো আরো এক মাস। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনবিআরের জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গত ১৬ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান এ বছর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ছে না। রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বরই থাকছে।

তিনি বলেন, অন্য সব কার্যক্রম যেখানে স্বাভাবিক, তাই এবার আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ছে না। তবে আবেদন সাপেক্ষে করদাতারা চাইলেই সময় বাড়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে কর কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে, সময় বৃদ্ধির আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় দেন। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারও আয়কর মেলা হয়নি। তবে প্রতিটি কর অঞ্চল কার্যালয়ে কর মেলার সুবিধা রয়েছে। কর অফিসগুলোতেও করদাতাদের উপস্থিতি ধীরে ধীরে বাড়ছে।

জানা গেছে, করদাতারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দিতে না পারলে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে দুই থেকে চার মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নেওয়া যায়। এজন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়। তখন একজন কর কর্মকর্তা আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী জরিমানা, করের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ কিংবা করের টাকার ওপর মাসিক ২ শতাংশ হারে বিলম্ব সুদ আরোপ করতে পারবেন। আবেদন করে সময় পেলেও বিলম্ব সুদ দিতে হবে, জরিমানা দিতে হবে না।

২০১৬ সালে আয়কর অধ্যাদেশে পরিবর্তন এনে ৩০ নভেম্বর জাতীয় কর দিবসের পর রিটার্ন জমা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সময় বাড়ানোর পথটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে দেশে প্রায় ৬৮ লাখ কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাদের মধ্যে ২৫ লাখের মতো টিআইএনধারী করদাতা রিটার্ন দেন বলে জানা গেছে।

অর্থনীতি

সৌদি আরবের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, বন্দর, জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবহন ও লজিস্টিক সেবা মন্ত্রী প্রকৌশলী সালেহ বিন নাসের আল-জাসের।

রোববার (২৮ নভেম্বর) গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতকালে সৌদি মন্ত্রী এ কথা বলেন বলে প্রধানমন্ত্রী প্রেস উইং জানিয়েছে।

সাক্ষাতকালে সৌদি মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন বাদশাহ সালমানের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।এ সময় প্রধানমন্ত্রী সৌদি মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানান।

সৌদি মন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা দেখে তিনি অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছেন।বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সৌদি আরবকে বাংলাদেশের সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বিনিয়োগের দুয়ার উন্মুক্ত করেছে।সাক্ষাতকালে বাংলাদেশ সরকারের নীতির প্রশংসা করেন সৌদি মন্ত্রী।

সৌদি মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবের কিছু প্রধান কোম্পানি নির্মাণ ও বিদ্যুৎ খাতে খুব ভালো কাজ করছে। ৩০টিরও বেশি সৌদি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়।

বাংলাদেশের উন্নয়নে গতিশীল ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সৌদি মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন, বাংলাদেশে অংশগ্রহণের জন্য মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান।আগামী দিনে উভয় দেশই তাদের পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অর্থনীতি

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুমোদন পেয়েছে।

মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল।

বাংলাদেশের পাশাপাশি লাও ও নেপালও উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। জাতিসংঘের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই তিন দেশ উত্তরণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে।

সাধারণত প্রস্তুতির জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হলেও মহামারীর অভিঘাতে অর্থনৈতিক ক্ষতি সামলে উঠতে এই বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়।

সেই শর্ত পূরণ হওয়ায় চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায় বাংলাদেশ।

তখনই সিডিপি বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এখন সেই প্রস্তাব গৃহীত হল।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ঋণে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছিল, প্রস্তুতিমূলক সময়েও তা অব্যাহত থাকবে।

১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে।

সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে।

উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৮২৭ ডলার।

মানবসম্পদ সূচকে উন্নয়নশীল দেশ হতে ৬৬ পয়েন্টের প্রয়োজন; বাংলাদেশের পয়েন্ট ২০২০ সালে ছিল ৭৫.৩।

অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে কোনো দেশের পয়েন্ট ৩৬ এর বেশি হলে সেই দেশকে এলডিসিভুক্ত রাখা হয়, ৩২ এ আসার পর উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন হয়। সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট ২৫ দশমিক ২।

সাধারণ পরিষদে তিন দেশের উত্তরণের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করার স্বপ্ন দেখেছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর ভয়াবহতম সময়েও সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিনি বাংলাদেশের এই অদম্য অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার ফলে আজ রূপকল্প-২০২১ পূর্ণতা পেল।”

এলডিসি থেকে উত্তরণ পাওয়া এবং উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা কাঠামো নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্ব দেন রাবাব ফাতিমা।

উত্তরণ চ্যালেঞ্জের প্রতিটি দিক, বিশেষ করে উত্তরণ পরবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা, বাধাহীন উত্তরণ এবং এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়নের মত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরিরও আহ্বান জানান তিনি।

জাতিসংঘ ১৯৭১ সালে কিছু নির্ণায়কের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে কম উন্নত দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে পৃথকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করে।

১৯৭১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ছিল ২৫, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৬-এ। এর আগে বতসোয়ানা, কেপভার্দে, মালদ্বীপ, সামোয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি ও ভানুয়াতু স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিজেদের উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার এখন প্রায় ৪১১ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতি

আদালতের গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসের লকারগুলোর কম্বিনেশন নম্বর (পাসওয়ার্ড) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কারাগারে থাকা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের প্রতি এ নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

এ জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে কারাগারে এই দম্পতির সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করতে আইজি প্রিজন্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।

এক গ্রাহক ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইলফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। পরে পণ্য না পেয়ে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

তার আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির সব নথি আদালতে আসার পর একটি বোর্ড গঠন করে আদেশ দেন।

চেয়ারম্যান ছাড়া বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন—সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ, এফসিএ ফখরুদ্দিন আহমেদ ও অতিরিক্ত সচিব (ওএসডি) মাহবুব কবীর। মাহবুব কবীর এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আদেশে আদালত চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ডিরেক্টরস, ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে আলাদা আলাদা নির্দেশনা দেন। এছাড়া ইভ্যালির ঘটনায় উদ্ভুত ফৌজদারি মামলা আইন অনুসারে দেখভাল করতে দুদক চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোর্টের নিয়োগ করা কোম্পানিটির পরিচালনা পরিষদকে সহযোগিতা করতেও বলা হয়েছে।

গ্রাহকরা আগামী ছয় মাস পরিচালনা পর্ষদকে অর্থ ফেরতে চাপ দিতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে তারা সমস্যা সমাধানে ইভ্যালির হেড অফিসে যোগাযোগ করতে পারবেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আদালত ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য রেখেছিলেন।

পরে আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, ধার্য তারিখ অনুযায়ী মামলাটি কার্যতালিকায় আসে। সেখানে নতুন বোর্ড এর কার্যক্রম এর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। এরপর আদালতের গঠিত নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসের লকারগুলোর পাসওয়ার্ড নাম্বার দিতে কারাগারে থাকা ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রীর প্রতি নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করবেন।

এদিকে এই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে ৩০ জন ইভ্যালির গ্রাহক আবেদন করেন। তবে তা আদালত গ্রহণ করেননি।

আদালত বলেছেন, নতুন বোর্ডের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেন। আগের আদেশ অনুসারে ছয় মাস অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের পরে সমাধান না হলে তারা আদালতে আবেদন করতে পারবেন।

অর্থনীতি

মহামারীর মধ্যে সরকারের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

ধর্মঘটের কারণে পরিবহন সঙ্কটে সরবরাহ কমায় এবং ট্রাকের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় দুয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশের চালের অন্যতম বড় মোকাম কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় ট্রাকের ভাড়া এর মধ্যেই অন্তত ৩ হাজার টাকা বা বস্তাপ্রতি ১২ টাকা বেড়ে গেছে বলে ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকরা জানিয়েছেন।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে জনতা রাইস এজেন্সির মোহাম্মদ রাসেল রোববার বলেন, ধর্মঘটের মধ্যে শুধু কুষ্টিয়ার রশিদ রাইস মিল নিজস্ব পরিবহনে করে ঢাকায় চাল পাঠাত। কিন্তু তারা ভাড়া বাড়িয়েছে।

“প্রতি ট্রাকের ভাড়া ৩ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১৭ হাজার টাকা করা হয়েছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, এতে প্রতি বস্তায় ১২ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।”

আমন মওসুমের কারণে এখন চালের বাজার স্থিতিশীল হলেও তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাবে ‘দুয়েক দিনের মধ্যে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিতে পারে’ বলে এই পাইকারের আশঙ্কা।

বাজারে দাম বেশি বলে টিসিবির ট্রাক থেকে কম দামে চাল-ডাল কিনতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভিবাজারে দাম বেশি বলে টিসিবির ট্রাক থেকে কম দামে চাল-ডাল কিনতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
রোববার ঢাকার মিরপুরে কয়েকটি মুদি দোকান ও চালের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরু চাল প্রতি কেজি ৫৭ টাকা থেকে ৬৪ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৮ টাকা থেকে ৫৪ টাকায়। স্বর্ণা, গুটি ও হাইব্রিড ইরি জাতীয় মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

পীরেরবাগে মায়ের দোয়া বাণিজ্যালয়ের এক কর্মী বলেন, “ধর্মঘটের কারণে গত দুই দিনে নতুন করে চালের দাম বাড়েনি। তবে মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের মোকামগুলোতে খবর নিয়ে দেখেছি, তিন দিন ধরে চালের সরবরাহ কমে গেছে। সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম কিছুটা হলেও বাড়বে।”

সরকারের বিশেষ অনুমতি নিয়ে ভারত থেকে যে চাল আসছিল, এক সপ্তাহ ধরে তাও বন্ধ রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। তবে ভোক্তাদের জন্য সুখবর হলো গ্রামের হাট-বাজার আমন মওসুমের নতুন ধান উঠার অপেক্ষায় রয়েছে।

সরকার ডিজেলের দাম এক বারে ২৩ শতাংশ বাড়ানোর পর শুক্রবার সকাল থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়। নগর পরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়।

বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর যাত্রীবাহী পরিবহনের ধর্মঘট রোববার সন্ধ্যায় তুলে নেওয়া হলে পণ্য পরিবহনের ধর্মঘটে অনড় মালিক-শ্রমিকরা।

পরিবহন ধর্মঘটে গত তিন দিনে চালের সরবরাহ তলানিতে নেমেছে জানিয়ে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ হওয়ার পর সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। এখন পরিবহন ব্যয় বাড়ায় এর সঙ্গে ১২ থেকে ১৫ টাকা যোগ হবে।

মিরপুর শাহ আলী মোকামের পাইকারি বিক্রেতা মহিউদ্দিন হারুন বলেন, বিভিন্ন মোকাম থেকে তার দোকানে সপ্তাহে দুই/তিনটা চালান আসে। গত তিন দিন ধরে চাল আসেনি।

“আজকে এক ট্রাক চালের অর্ডার দিয়েছি রশিদ মিনিকেটের কাছে। তারা ভাড়া বাবদ ট্রাক প্রতি ৩ হাজার টাকা বেশি নির্ধারণ করেছে। এই টাকাটা তো চালের খুচরা বিক্রির ওপর প্রভাব ফেলবে।”

তার দোকানে ৫০ কেজির মিনিকেট চালের বস্তা ২৭৫০ টাকা থেকে ২৮৫০ টাকা, বিআর আটাশ ২১২০ থেকে ২২৫০ টাকা, পাইজাম ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকা। ভারতীয় পাইজাম ২১০০ টাকা, হাইব্রিড ইরি (মোটা) ১৯০০ টাকা থেকে ১৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার খাজানগরের কাবিল এগ্রো মিলে ঝোলানো চালের মূল্য তালিকা।কুষ্টিয়ার খাজানগরের কাবিল এগ্রো মিলে ঝোলানো চালের মূল্য তালিকা।
পরিবহন ধর্মঘটে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাউলের আড়ত কুষ্টিয়ার খাজানগরে আটকে পড়েছিল শত শত ট্রাক। তবে শনিবার সকালের মধ্যে সেগুলো ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ।

খাজানগর থেকে ভোরে ও রাতে বেশিরভাগ ট্রাক ছেড়ে যায়। রোববার দুপুরে খাজানগর ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মিলে ট্রাকে চাল বোঝাই করা হচ্ছে। এসব ট্রাক রাতে ছেড়ে যাবে।

চালবোঝাই করা হচ্ছে এমন এক ট্রাকের চালক সুমন মিয়া বলেন, রাতে মাদারীপুরে রওনা হবেন তিনি।

পরিবহন সঙ্কটের কারণে তার কল থেকে চাল সরবরাহ কমেছে বলে জানান খাজানগরের দাদা অটো রাইস মিলের মালিক আরশাদ আলী প্রধান।

তিনি বলেন, “আমার মিল থেকে প্রতিদিন ১০০ টনের মতো চাল সরবরাহ করা হত। ধর্মঘটের পর তা ২০ টনে নেমে এসছে।”

একই কারণে ধান কিনে চালকলে আনার পরিবহন খরচ বাড়ায় গত দুদিনে চালের দামও বেড়েছে বলে জানান আরশাদ।

তিনি  বলেন, “পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে ধানের দাম প্রতি টনে এক হাজার টাকা বেড়েছে।”

চালকল মালিক সমিতির নেতা ও স্বর্ণা অটো রাইস মিলের মালিক সামাদ বলেন, ইতোমধ্যেই ১৪ টন চাউল পরিবহনে ট্রাকের ভাড়া সাড়ে ১২ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ হাজার টাকা হয়েছে।

“আমি গত দুই দিন সরবরাহ করেছি আগের অর্ডার দেওয়া চাল। তবে নতুন অর্ডারের সময় দুই প্রান্তের ভাড়ার বিষয়টি চাউলের মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।”

আবদুস সামাদের কথাতে মিল গেইট পর্যায়ে চালের দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট।

খাজানগরের কাবিল এগ্রো মিলে রোববার মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছিল ২৮০০ টাকা এবং ২৫ কেজির বস্তা ১৪১০ টাকা। বাসমতি ২৫ কেজির বস্তা ১৬৩০ টাকা, কাটারি ২৫ কেজির বস্তা ১৪২৫ টাকা এবং কাজললতা ২৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১২৭০ টাকায়।