অর্থনীতি

করোনা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে শিল্পের কাঁচামালের দাম অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। বাড়ছে পণ্যের দাম। জ্বালানি তেলের কারণে পণ্য পরিবহণ ব্যয়ও বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। ব্যাংকে বেড়েছে ডলারের দাম। এভাবে মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে দেশের প্রায় সব ধরনের শিল্প।

বাড়তি ব্যয়ে পণ্য উৎপাদন করতে হচ্ছে। কিন্ত হঠাৎ করে বেশি দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্পে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়লেও ক্রেতারা দাম বাড়াননি। সব মিলে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে শিল্প খাত।

এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য উদ্যোক্তারা করোনাকালীন প্রণোদনা অব্যাহত রাখা, এলসির সীমা বাড়ানো, চলতি মূলধনের ঋণসীমা বৃদ্ধির দাবি করেছেন। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের প্রণোদনার ঋণ এক দফার পরিবর্তে একাধিকবার দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। এসব বিষয়ে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বেশি সংকটে পড়েছে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প। এর মধ্যে পোশাক শিল্পের অবস্থা খুবই নাজুক। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৬ শতাংশই আসে এ খাত থেকে।  পোশাক শিল্পের অবস্থা জানিয়ে গত ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, করোনায় তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে আমদানি করা শিল্পের কাঁচামাল ও স্থানীয় কাঁচামালের মূল্য কল্পনাতীতভাবে বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী তুলার দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে নিট সুতার দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। একই কারণে ফেব্রিক্সের দাম বেড়েছে ২৫ এবং আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি বা এক্সেসরিজের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী পরিবহণ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে পণ্য পরিবহণের খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের নিজ নিজ ব্যাংক থেকে দেওয়া ক্রেডিট লিমিট বা কম্পোজিট লিমিটেডের মধ্যে কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতে পারছে না। পণ্যের দাম বাড়ায় এলসি খুলতেও বেশি ঋণ লাগছে। অনেক প্রতিষ্ঠানই ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতে গেলে ব্যাংকের দেওয়া এলসি লিমিটের অতিরিক্ত ঋণের জন্য জামানত চাওয়া হচ্ছে। ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে অতিরিক্ত ঋণের জন্য জামানত চাওয়া কোনোভাবে যুক্তিযুক্ত নয়। তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি কার্যক্রমকে নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ব্যাক টু ব্যাক এলসি ও চলতি মূলধনের চলমান সীমা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গত দুই মাসে বিশ্ব বাজারে সব ধরনের কাঁচামালের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু রপ্তানির আদেশ পাওয়া গেছে দুই মাস আগে। এখন বাড়তি দামে কাঁচামাল আমদানি করে পোশাক তৈরি করতে বেশি খরচ পড়ছে। কিন্তু ক্রেতা পণ্যের দাম বাড়াতে চাচ্ছে না। এতে করে দেশের রপ্তানি খাত নতুন সংকটে পড়েছে।

সূত্র জানায়, একই অবস্থা অন্যান্য শিল্প খাতে। শিল্পের প্রায় সব ধরনের কাঁচামালই আমদানি করতে হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে যেসব কাঁচামাল পাওয়া যায় সেগুলোর দামও বেড়েছে। এ অবস্থায় বেশি দামে কাঁচামাল কিনে আগের দামে পণ্য বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। ইচ্ছে করলে যেভাবে খরচ বেড়েছে, সেভাবে পণ্যের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে সব ধরনের পণ্যের পরিবহণ ব্যয় বেড়ে গেছে। বিশ্ব বাজারে গত বছরের এপ্রিলে জ্বালানি তেলের দাম কমে প্রতি ব্যারেল ২০ ডলারে নেমেছিল। এখন তা বেড়ে ৯০ ডলারে উঠেছে।

অক্টোবরে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দামই বেড়েছে। করোনার কারণে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া হঠাৎ করে সব দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে দাম বাড়ছে। গত বছরের জুনে জ্বালানিবহির্ভূত পণ্যের দামের (শিল্পের যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, পণ্য) গড় সূচক ছিল ৭৫ ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১১০ ডলার। খাদ্য উপকরণের গড় সূচক একই সময়ে ৮০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৫ ডলার। একই সময়ে জাহাজে পণ্যের পরিবহণ ব্যয় বেড়েছে ৭৩ শতাংশ।

উদ্যোক্তারা জানান, করোনা পরিস্তিতির উন্নতি হওয়ায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হয়েছে। এ কারণে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বিশ্বের খ্যাতিমান ব্র্যান্ডগুলোর শোরুম এখন খালি। পণ্যের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেতারা জাহাজের পরিবর্তে বিমানে দ্রুত পণ্য পাঠানোর তাগিদ দিচ্ছেন। ক্রেতাদের রপ্তানির আদেশও বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্টের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাক টু ব্যাকের আওতায় নতুন এলসি খোলা বেড়েছে ৫১ দশমিক ০৮ শতাংশ। আমদানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ১২ শতাংশ। একই সময়ের ব্যবধানে শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়েছে ১১ শতাংশ, এলসি খোলা বেড়েছে ১২ শতাংশ। শিল্পের কাঁচামালের এলসি খোলা বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং আমদানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।

অর্থনীতি

গত মে মাসের পর থেকে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় ছিল অক্টোবর মাসেও। আগস্টে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৮১ কোটি ডলার। এটা সেপ্টেম্বরে কমে হয়েছে ১৭২ কোটি মা‌র্কিন ডলার। অক্টোবরে আরও কমে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের অ‌ক্টোব‌রের তুলনায় প্রবাসী আয় কম এসেছে ২২ শতাংশ। এনিয়ে টানা পাঁচ মাস প্রবাসী আয় নিম্নমুখী ধারায় রয়েছে।

সোমবার (১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার বা ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২১০ কোটি ২১ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় কমে আগস্টের তুলনায় ৯ কোটি ডলার। গত আগস্ট মাসে প্রবাসী আয় ছিল ১৮১ কোটি ডলার, যা জুলাই মাসের চেয়ে ৬ কোটি ডলার কম। জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা জুনের তুলনায় ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৪ কোটি ডলার, যা মে মাসের তুলনায় ২৩ কোটি ডলার কম।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিগত ১৬ মাসের মধ্যে অক্টোবরেই সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এলো দেশে।

বরাবরের মতো এবারও বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৪১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে আসে ১৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৮৭ লাখ ডলার এবং ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ২৬ ডলার।

বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১২৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭০ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

অর্থনীতি

গত প্রায় দুই যুগে বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ (প্রাকৃতিক বন) সম্পদের মূল্য লাফিয়ে বেড়েছে। এ খাতে সম্পদ মূল্য বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১৯টি দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। তালিকায় শীর্ষে চীন এবং ভিয়েতনাম দ্বিতীয়।

বিশ্বব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত ‘দ্য চেঞ্জিং ওয়েলথ অব নেশন-২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশের মোট সম্পদের একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৬টি দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ, মানবসম্পদ, উৎপাদিত সম্পদ ও বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্য পর্যালোচনা করে বিশ্বব্যাংক এ প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো ম্যানগ্রোভ এবং সমুদ্রের মৎস্যকে প্রাকৃতিক সম্পদে জন্য হিসাব করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ ১৯ হাজার ২৬৫ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা দরে হিসাব করলে দেশীয় মুদ্রায় তা দাঁড়ায় ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৫ টাকা।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে মাথাপিছু সম্পদের মধ্যে উৎপাদিত সম্পদের বাজারমূল্য ৫ হাজার ৩৪৬ ডলার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্য ২ হাজার ১৬৭ ডলার। এ ছাড়া বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাষযোগ্য জমি রয়েছে, তার মাথাপিছু আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৫০১ ডলার ও মানবসম্পদের মূল্য মাথাপিছু ১২ হাজার ৯৩৪ ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ম্যানগ্রোভ সম্পদের মূল্য ১৯৯৫ সালে ২০৪ কোটি ডলার থেকে ২০১৮ সালে বেড়ে এক হাজার ২২৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ২৩ বছরে এ খাতে সম্পদমূল্য বেড়েছে ৪০২ শতাংশ। একই সময়ে চীনে ম্যানগ্রোভ সম্পদের মূল্য বেড়েছে সর্বোচ্চ ৭৬৭ শতাংশ।

আর ভিয়েতনামে ৫৯১ শতাংশ। এছাড়া জাপানে ৩১১ শতাংশ, তাইওয়ানে ২৬৭ শতাংশ, ভারতে ১৯৪ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ায় ১৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ম্যানগ্রোভের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি এ খাতে সুরক্ষার থাকা অন্যান্য সম্পদের দামও বেড়েছে। হেক্টর প্রতি বার্ষিক ম্যানগ্রোভ সম্পদের মূল্য ২৩ বছরের মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

ম্যানগ্রোভ সম্পদের মূল্য চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও তাইওয়ানে সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, এসব দেশে ম্যানগ্রোভের আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতি বর্গকিলোমিটার সংরক্ষিত সম্পদের মূল্য বেড়েছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বন্যা সুরক্ষার জন্য ম্যানগ্রোভের মূল্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে। মূল্য পরিবর্তন নির্ভর করে ম্যানগ্রোভের পরিমাণ, বন্যার ঝুঁকি এবং বন্যার কারণে ক্ষতির ঝুঁকিতে উৎপাদিত সম্পদহ বিভিন্ন কারণের ওপর।

যেমন-একটি দেশে বিস্তীর্ণ ম্যানগ্রোভ বন থাকতে পারে, কিন্তু যদি সেই বন বন্যার ঝুঁকি থেকে অনেক বেশি সম্পদ রক্ষা না করে, তবে সেটির মূল্য একটি ছোট ম্যানগ্রোভ বনের চেয়ে কম হবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপকূলীয় সুরক্ষার জন্য সামগ্রিকভাবে ম্যানগ্রোভ সম্পদের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ম্যানগ্রোভ বনগুলো উপকূলীয় উন্নয়নের জন্য হুমকির সম্মুখীন।

অর্থনীতি

এক সপ্তাহ আগের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় রাজধানীতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। একইসঙ্গে বেড়েছে চাল, চিনি ও ডিমের দামও। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল কাঁচাবাজার, পলাশী বাজার, মোহম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১০০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারভেদে দামের ভিন্নতা রয়েছে। তবে খুচরা বাজার ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে একই দাম রয়েছে।এদিকে কেজিতে ২-৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। মসলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

পলাশী বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. পান্না মিয়া জানান, বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা ও পাকিস্তানি (সোনালি) মুরগি ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে একই দামে মুরগি বিক্রি হয়েছে।

কাওরান বাজারের মিলু স্টোরের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব কুমার পাল জানান, তেলের দাম নতুন করে আর বাড়েনি। দাম যা বাড়ার গত ১৫ দিন আগে বেড়েছে। ব্র্যান্ডভেদে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে পাঁচ লিটার বোতল ৬৯০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খোলা বাজারে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. পারভেজ উদ্দিন বলে, বন্যার কারণে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে করলা ৫০ টাকা, সিম ৭০ টাকা, মরিচ ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পেঁপে ১৫ টাকা, কচুর ছড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস আকার-ভেদে ৩০-৪০ টাকা, পাতা কপি আকার ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি করছি। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ী বলেন, বন্যায় সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে।

মোহম্মদপুর কৃষি মার্কেটের আরিফ রাইস এজেন্সির মালিক ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাজারের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। আটাশ চাল ৫০ টাকা কেজি, চিনি গুড়া ৮৮ টাকা. বাসমতি ৭২ টাকা ও জিরা শাইল চাল ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করছি।

এদিকে, বাজারে মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৮ শ থেকে সাড়ে ৯ শ গ্রাম সাইজের ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা। রুই আকার ভেদে ২০০ থেকে ৩২০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, কাতল আকার ভেদে ১৮০ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম কমার কারণ হিসেবে মহাখালী কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী ইয়াসিন মিয়া বলেন, বাজারে ইলিশ মাছ আসায় ও খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে।

অর্থনীতি

দক্ষিণ বাংলার মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের পায়রা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (২৪ অক্টোবর)।

উদ্বোধনের পর সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।

এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, করোনা ঝুঁকিতেও এই সেতুর কাজ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাই সচেষ্ট ছিলেন। সময় বর্ধন এবং নানাবিধ জটিলতার মধ্যেও প্রকল্পের পূর্ত কাজের চুক্তি মূল্য থেকে ৫২ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। নির্মাণশৈলীর দিক থেকে নান্দনিক শোভামণ্ডিত এই সেতুটি ইতোমধ্যে স্থানীয় মানুষের নজর কেড়েছে। প্রতিদিন অগণিত মানুষ এ সেতুটি দেখার জন্য ভিড় করছে। বিশেষ করে রাতের আলোকিত সেতু মানুষকে আকৃষ্ট করছে।

তিনি বলেন, পায়রা সেতু নির্মাণের বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে সহজসাধ্য মনে হলেও এর তলদেশে পানির স্রোত ছিলো। তীব্র এবং নদীর গতি প্রকৃতি ছিলো অভিনব। যেটিকে পদ্মার সঙ্গে তুলনা করা চলে। এছাড়া চ্যানেলের তলদেশে গভীরতা পাওয়া যায় ৪৩ মিটার। আধুনিক প্রযুক্তি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হয়েছে এ সেতু নির্মাণে। ভায়াডাক্টসহ ৩৩৮টি পাইলের মধ্যে ৪০টি পাইলের গভীরতা ১৩০ মিটার। যা এ যাবতকালের সর্বাপেক্ষা গভীর। নদীর মধ্যে পিলার-টু-পিলার বা স্প্যানের গ্যাপ রাখা হয়েছে ২শ মিটার। এটিও এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

উল্লেখ্য বরিশাল বিভাগে এই প্রথম ফোরলেন পায়রা সেতু। আর এ সেতু পারপারের টোল আদায়ে যে ডিজিটাল টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে, সেটিও প্রথমবারের মতো বিভাগের কোন সেতুতে সংযুক্ত হলো। এছাড়া এ সেতুর বরিশাল প্রান্তে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে। সেসঙ্গে দেশের কোন সেতুতে প্রথমবারের মতো ‘ব্রিজ হেলথ মনিটরিং সিস্টেম’ সংযোজন করা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দুর্যোগ বা ওভারলোডেড গাড়ি চলাচলের ফলে ব্রিজের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, তার (ক্ষতির) পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), কুয়েত ফান্ড এবং ওপেক ফান্ডের অর্থায়নে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়ে ১৪৪৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। আর সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১২৬৮ মিটার এবং প্রস্থ ২২ দশমিক ৮০ মিটার। এ সেতুতে ৩২টি স্প্যান ও ৩৩৮টি পাইল রয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর পাইল সংখ্যা ৫২টি। এছাড়া পিলার সংখ্যা ৩১টি।

অর্থনীতি

এসডিজি অর্জন ও একটি সুন্দর সবুজ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সমাজের প্রত্যেককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির।

একশনএইড বাংলাদেশ ‘অ্যাক্ট অন এইড’ শিরোনামে শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর বনানী এলাকার একটি হোটেলে একশনএইড বাংলাদেশ ৩৮ বছরের পথচলায় গৃহীত কর্মসূচি, বিশেষ উদ্যোগ ও সাফল্যের গল্প তুলে ধরতে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ফারাহ্ কবির বলেন, একশনএইড বাংলাদেশ যেদিন ভোলার চর ফ্যাশন থেকে যাত্রা শুরু করে সেদিন কেউ চর ফ্যাশন সম্পর্কে জানত না, কিন্তু বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সহায়তার জন্য আমরা সেখানে ছিলাম। তখন থেকেই আমরা সহজে পৌঁছানো যায়না এমন জায়গার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছি।

প্রদর্শনীর পাশাপাশি একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির এর পরিচালনায় দেশের শিল্প নেতৃবৃন্দ, সমাজসেবী, সেলিব্রিটি, শিক্ষাবিদ, পরিবর্তনকামী তরুণ এবং কর্মীদের নিয়ে ‘ইনক্লোসিভ ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশীপস টুওয়ার্ডস অ্যাটেইনিং দ্যা এসডিজিস’ শিরোনামে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এ প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক ও ইউএনওয়াইএসএবি এর কো-চেয়ার নাহিম রাজ্জাক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশক ও নির্বাহী পরিচালক তারিন হোসেন, নারী উন্নয়ন সংস্থা বিন্দু এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জান্নাতুল মাওয়া, সামাজিক উদ্যোক্তা ও আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত সাদাত রহমান, রিডিকুলাস ফিউচার এর এডুকেটর, ফিউচারিস্ট এবং স্টোরিটেলার শাকিল আহমেদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স শামীমা আক্তার।

এসময় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, আমরা তরুণদের কতটুকুইবা সঠিক পথ দেখাতে পেরেছি! বর্তমান সময়ে পলিসি তৈরীর ক্ষেত্রে তরুণদের কণ্ঠ শোনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখনো একটি উন্নত ও প্রগতিশীল দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য অনুপ্রাণীত করতে পারিনি। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের অবদানও উল্লেখযোগ্য নয়। পলিসি তৈরির ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারক ও জনগনের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে তা কমিয়ে আনতে আমাদের সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব ও জনগনের সম্পৃক্ততার সমন্বয় জরুরী।

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত মানুষ কিভাবে মানুষের জন্য এগিয়ে আসবে, কিভাবে সামাজিক ন্যায়বিচার, লিঙ্গ সমতা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য একশনএইড বাংলাদেশ এর কার্যক্রমের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবে তা প্রতিফলিত হয়।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে দর্শণার্থীরা একশনএইড বাংলাদেশ এর কৌশলগত অগ্রাধিকার কর্মসূচি, বিশেষ উদ্যোগ ও পদক্ষেপসমূহ, সাফল্যের গল্প ছাড়াও ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে সম্যক ধারণা লাভ করেন। তাছাড়া প্রতিকূলতা কাটিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রার অংশীজন হয়ে নিরন্তর কাজ করে যাওয়া তরুণদের সফলতার গল্পও তোলে ধরা হয় এই প্রদর্শনীতে।

মেয়ে শিশুদের নিরাপদ আবাসন, জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাবার, স্বাস্থ্যবিধি, এবং স্যানিটেশনসহ শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, মনোঃসামাজিক পরামর্শ এবং বিনোদন নিশ্চিত করে থাকে একশনএইড বাংলাদেশ এর ‘হ্যাপি হোম’ প্রকল্প।

একশনএইড বাংলাদেশ এর ‘হ্যাপি হোম’ শুভেচ্ছাদূত অভিনেতা সুমন পাটোয়ারী; এন্টারটেনার রাবা খান, কবি এবং উন্মাদ এর নির্বাহী সম্পাদক অনিক খানসহ আরো অনেকে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্যানেল আলোচনার পর ‘হ্যাপি হোম’ এর মেয়েরা মনোমুগ্ধকর সঙ্গীত, নাচ, কবিতা এবং নাটক পরিবেশন করেন। খ্যাতিমান গায়ক বাপ্পা মজুমদার এবং দেশের প্রথম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের নিয়ে গঠিত ব্যান্ড এফ মাইনর সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এসময় বিশিষ্ট কৌতুক অভিনেতা এবং কলাম লেখক নাভিদ মাহবুবও একটি বিশেষ পরিবেশনা দিয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ্য করে তোলেন।

অর্থনীতি

প্রায় ১৬ মাস পর বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে এশিয়ার অন্যতম দেশ মালয়েশিয়া। শুক্রবার এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংকট কাটাতে বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশে অনুমতি দিয়েছে দেশটি। তবে, সব ধরনের শ্রমিক নয়, আপাতত শুধু চাষ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকরা দেশটিতে ফিরতে পারবেন।

এছাড়াও অর্থনীতিকে চাঙা করতে নভেম্বর মাস থেকে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করছে দেশটি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ব্যাপারে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, মহামারি ব্যবস্থাপনায় গঠিত বিশেষ কমিটি আজ (২২ অক্টোবর) বিদেশি শ্রমিকদের প্রবেশের জন্য প্রস্তাবিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর নিয়ে একমত হয়েছে। বিশেষ করে চাষ খাতে শ্রমিকদের চাহিদা পূরণের জন্য এই সিদ্ধান্ত। অন্য খাতের অভিবাসী শ্রমিকদের কোটা ও প্রবেশ এখনও বাতিল রয়েছে।

গত মাসে দেশটির সরকার জানিয়েছিল, রোপণ খাতে শ্রমিক সংকট দূর করতে ৩২ হাজার শ্রমিককে ফেরানোতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ মালয়েশিয়া গ্লাভস থেকে শুরু করে আইফোনের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে ২০ লাখ নিবন্ধিত অভিবাসী শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল।

রাবার গ্লাভস খাতের পক্ষ থেকে বিদেশি শ্রমিকদের ফিরে আসার অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তাতে সরকারের সায় মেলেনি।

অর্থনীতিকে চাঙা করতে মধ্য নভেম্বর থেকে নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ছুটির দ্বীপ ল্যাংকাউই দেখার অনুমতি দেবে মালয়েশিয়া। মহামারির পর এটিই এমন প্রথম উদ্যোগ।

এক্ষেত্রে, পর্যটকদের অবশ্যই একটি নেতিবাচক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট দেখাতে হবে এবং ৮০ হাজার ডলারের ভ্রমণ বীমা থাকতে হবে।

অর্থনীতি

পেঁয়াজ, মসুর ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেলের মজুত চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বেশি আমদানি হওয়ায় মজুত বেড়েছে। যা দিয়ে আগামী ৩ মাস নির্বিঘ্নে চলবে দেশ।

এছাড়া নভেম্বর-ডিসেম্বরে বাজারে আসবে নতুন পেঁয়াজ ও ডাল। সরবরাহ ঠিক রাখতে কাস্টমস বিভাগ ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় পণ্যের পরিবহণ নির্বিঘ্ন রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরপরও নিত্যপণ্যের দাম বাগে আনতে পারছে না সরকার। কিছু ব্যবসায়ী আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাত দিয়ে অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে পণ্যের মূল্য। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা কারসাজির মাধ্যমে এসব পণ্যের মূল্য বাড়চ্ছে।

জানা গেছে, দেশে প্রতিমাসে পেঁয়াজের চাহিদা দুই লাখ টনের কিছু বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার ১২৪ টন। চিনির চাহিদা মাসে প্রায় দেড় লাখ টন। মজুত আছে সাড়ে পাঁচ লাখ টন। প্রতিমাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা এক লাখ ৬৬ হাজার টন, আছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার টন। তিন মাসে মসুর ডাল প্রয়োজন এক লাখ ২৫ হাজার টন, হাতে আছে তিন লাখ টনের বেশি। এরপর বাজারে পণ্যমূল্যের দাপটে অস্থির মানুষ।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, করোনা-পরবর্তী বিশ্বব্যাপী সবকিছু চালু হয়েছে। এ জন্য ডলারের মূল্য বেড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। অনেক দেশ নতুন করে টাকা ছাপিয়েছে। এসব কারণে বিশ্বের অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সে তুলনায় আমাদের দেশে বাড়লেও তা তুলনামূলক কম। আমরা বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে বলেছি এ ধরনের পরিস্থিতি আরও এক বছর চলবে। এরপর পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সব শ্রেণির ক্রেতা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

মজুত ও সরবরাহ থাকার পরও অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট কাটছে। যে সব পণ্য আমদানি করা দরকার সেগুলো দ্রুত এনে পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য শুল্ক পরিহার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মো. আলী নামের এক ক্রেতা কারওয়ান বাজারে এসেছেন পণ্য কিনতে। তিনি বলেন, সব ধরনের পণ্যের দাম লাগাম ছাড়া। কোনো পণ্যের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। কিন্তু বাজারে কোনো সংকট নেই।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭০ টন। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজ ৯টি জেলায় মজুত আছে ৪ লাখ ২১ হাজার ৪২৪ টন। সব মিলে সরকারের হাতে এখনও ৬ লাখ ৫১২৪ টন মজুত আছে। যা দিয়ে আগামী তিন মাস চলবে। পাশাপাশি নভেম্বরে কৃষকের নতুন পেঁয়াজ আসবে বাজারে। এছাড়া আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ ও আমদানি স্বাভাবিক আছে। এরপরও দাম বাড়ছে।

বাণিজ্য সচিব তপনকান্তি ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, ভারতের বেঙ্গালুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এটা শুনেই দেশে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে পেঁয়াজের সংকট হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে তারা এটা করেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে বিশ্ববাজারের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে দেশের বাজারে যাতে বেশি না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে।

কারণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি পণ্যের মনিটরিং করা হচ্ছে। সূত্র আরও জানায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে চিনি আমদানির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ২০৭ টন। একই সময়ে চাহিদা হচ্ছে সাড়ে ৪ লাখ টন। চাহিদা পূরণ করেও ১ লাখ টনের বেশি মজুত আছে। কিন্তু এরপরও বাজারে চিনির সংকট। দাম বেড়ে ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিমাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা হচ্ছে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন। ওই হিসাবে ৩ মাসে প্রয়োজন ৫ লাখ টন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৫ হাজার টন। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টন। এছাড়া সারা বছর মসুর ডালের চাহিদা ৫ লাখ টন। ওই হিসাবে তিন মাসের চাহিদা হচ্ছে ১ লাখ ২৫ হাজার টন। এই সময়ে আমদানি হয়েছে ৬২ হাজার ১১৫ টন। দেশীয়ভাবে উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার টন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই চারটি পণ্যের মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো। কিন্তু এরপরও গত এক মাস ধরে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সীমান্ত এলাকায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে যাতে আমদানিকৃত পেঁয়াজের ট্রাকের জটলা সৃষ্টি না হয় এ জন্য স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে পেঁয়াজের ট্রাক যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে ওই চিঠিতে সে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আবুল হোসেন মিয়ার সঙ্গে মঙ্গলবার কথা হয়। তিনি বলেন খাদ্য ও সেবা পণ্য দুটোর দামই বাড়ছে। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থাসহ বাজার মনিটরিং এজেন্সিগুলোকে নিয়মিতভাবে নজর রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের এলসি করার ক্ষেত্রে নির্দেশ দিতে হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। যেসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে সেগুলোর ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

খুচরা বাজার পরিস্থিতি : খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল এখন ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে আটা ও ময়দা। প্রতি কেজি খোলা আটা ৩৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। যা এক মাস আগেও ৩৩ টাকা ছিল। খোলা ময়দা ৪৫ টাকা, এক মাস আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। লিটার প্রতি খোলা সয়াবিন ১৪০ টাকা, এক মাস আগে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৫ ও খোলা পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে সয়াবিন ও পামওয়েলে ৫ টাকা বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা মাসখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি, যা এক মাস আগে ৭০ টাকা। দেশি হলুদ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। যা এক মাস আগে ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা। যা এক মাস আগে ১৪৫ টকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি চিনি মাসের ব্যবধানে না বাড়লেও বাড়তি মূল্যে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অর্থনীতি

নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়েছে কর্ণফুলী নদীর নিচে সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেলের খননকাজ। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা প্রান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ এই চ্যানেলের খননকাজ শেষ হয়। পূর্ব ঘোষণা অনু্যায়ী, চ্যানেলটির মুখ খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে শুক্রবার।

২০২০ সালের ২ আগস্ট শুরু হয় বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রথম চ্যানেলের খননকাজ। দ্বিতীয়টির খননকাজ শুরু হয় একই বছরের ১২ ডিসেম্বর। আগেই টানেলের প্রথম চ্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া হয়েছিল। আর ১০ মাসের খনন কার্যক্রমের পর অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হয় দ্বিতীয় চ্যানেলের খননকাজ। এর মধ্যে দিয়ে টানেলের দুটি সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ করেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এরই মধ্যে কাজের গতি বাড়ানোর জন্য বাড়তি জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিতে অত্যাধুনিক নানা যন্ত্রপাতি, মেশিনারিজ সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে কাজের গতি অনেকটাই বেড়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রায় ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে দুই সুরঙ্গের খননকাজই ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। সুরঙ্গ খনন শেষ হওয়ায় আনুসাঙ্গিক বাকি কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হবে বলে আশাবাদী তারা।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, নির্মাণকাজ শেষে শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাতে বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় চ্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া হবে। আগেই টানেলের প্রথম চ্যানেলের মুখ খুলে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যে দুই চ্যানেলেরই নির্মাণকাজই শেষ হবে। এ সময় তিনি আরও জানান, আগামী বছরের ২২ ডিসেম্বর টানেল চালুর কথা ছিল। এখন মনে হচ্ছে এরও আগে এটা চালু করতে পারবো।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৩ হাজার ৫ মিটার দীর্ঘ টানেল। দেশের প্রথম টানেল প্রকল্প এটি। টানেলটি নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে অপর প্রান্তে যাবে। নদীর তলদেশে সর্বনিম্ন ৩৬ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ ফুট গভীরে স্থাপন করা হবে দু’টি টিউব। এছাড়া প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত চার লেনের ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সম্পন্ন হয়েছে।

নগরীর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম টানেলটি নির্মাণ করছে সরকার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর টানেলের বাম সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে ২০২১ সালের নভেম্বরে উভয় সড়ক এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। টানেলটি নির্মিত হলে কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, নৌ বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।

জানা গেছে, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে এই প্রকল্পের কাজ করছে। ৯ হাজার ২৯৩ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট রাস্তাসহ প্রকল্পটি দ্বিমুখী ৪ লেন মডেল অনুসরণ করে নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৩১৫ মিটার। ফ্লাইওভার ও সংযোগ সড়ক যথাক্রমে ৭২৭ মিটার এবং ৫ হাজার ৩৪১ মিটার। দুই টিউবের এই টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

অর্থনীতি

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি উড়োজাহাজের ভেতর থেকে প্রায় ১৪ কেজি ওজনের ১২০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের একটি দল।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে ওই স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। জব্দ করা স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।

শুল্ক গোয়েন্দার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে ১৪ কেজি ওজনের ১২০টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। জব্দ করা স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।এ বিষয়ে বিস্তারিত আজ বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ১২০টি স্বর্ণ বার পাওয়া যায়। যার ওজন প্রায় ১৩ কেজি ৯২ গ্রাম। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আবু হানিফ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।