অর্থনীতি

দেশে বিদেশি চ্যানেল প্রচার বন্ধ থাকা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিদেশি চ্যানেলগুলোর দেশে ক্লিনফিড (বিজ্ঞাপনমুক্ত) প্রচার ইস্যুতে বন্ধ থাকায় দেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন ও সরকারের রাজস্ব ক্ষতি প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-অ্যাটকো সূত্রে জানা যায় এ তথ্য। এদিকে বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধের একদিনের মাথায় কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) পুরোপুরি ডিজিটাইজ পদ্ধতি প্রয়োগের আগ পর্যন্ত বিদেশি চ্যানেল প্রচারের অনুমতির জন্য তথ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।

শুক্রবার ভোর থেকে দেশে বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। ক্লিনফিড ছাড়া বিদেশি কোনো টিভি চ্যানেল দেশে সম্প্রচার করা যাবে না-সরকারের এমন নির্দেশনায় কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) এসব চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। এদিকে শনিবার চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি। বিদেশি চ্যানেলগুলোর যারা এজেন্ট ও অপারেটর, তারা বিজ্ঞাপনমুক্ত ফিড চালাতে পারছে না বলে সম্প্রচার বন্ধ করেছে। যেসব বিদেশি চ্যানেল বিজ্ঞাপনবিহীনভাবে সম্প্রচার করছে, তাদের চ্যানেল কিন্তু চলছে, চলতে কোনো বাধা নেই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বছরের পর বছর আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিদেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনসহ সম্প্রচার করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশ প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেই কারণে আমরা যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, সেটিকে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন, সম্প্রচার জার্নালিস্ট ফোরামসহ সবাই অভিনন্দন জানিয়েছে। আমরা আশা করব, বিদেশি চ্যানেলগুলো খুব শিগগিরই বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে বাংলাদেশে ফিড পাঠাবে।

জানতে চাইলে অ্যাটকো সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, সারা পৃথিবীতে এক দেশের চ্যানেল যখন অন্য দেশে যায়, তখন সেটা ক্লিনফিড হিসাবে যাওয়াটাই নিয়ম। আমাদের দেশের চ্যানেলগুলো যখন যুক্তরাজ্যে বা অন্য কোনো দেশে যায়, তখন ক্লিনফিড দিতে হয়। ‘ক্লিনফিড’ মানে হলো দুটো অনুষ্ঠানের মাঝখানে কোনো বিজ্ঞাপন থাকবে না। বিজ্ঞাপন না থাকার কারণ-এক দেশের বিজ্ঞাপন আরেক দেশের সাংস্কৃতিক ও সেন্সরে বিবেচনায় যথোপযুক্ত নাও হতে পারে। দ্বিতীয়ত, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো বাইরের চ্যানেগুলোয় বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশি চ্যানেলগুলোর জন্য হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টা এমন ওদের টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখালে তো এদেশের মানুষও দেখতে পায়। এতে বছরে আমাদের বিজ্ঞাপন ক্ষতি প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট, ট্যাক্স হিসাবে সরকারে ক্ষতি ২৫% হারে ৩০০ কোটি টাকা। আমরা চ্যানেলগুলো বঞ্চিত হই ৯০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে আবার বিজ্ঞাপন বাবদ সরকারকে আমরা করপোরেট ট্যাক্স দিই ৩৩%। অর্থাৎ আরও ৩০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সরকারের ক্ষতি ৬০০ কোটি টাকা। এই ৬০০ কোটি টাকা যদি বাংলাদেশের রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইনগুলো পেত, তাহলে সবাই একটি স্থিতিশীল অবস্থায় চলে আসত। বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশকদের বারবার বলেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। তারা কিন্তু ইচ্ছা করলেই ক্লিনফিড করতে পারে। বিজ্ঞাপন যখন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চালানো হয়, তখন বদলানো হয়। আমাদের দেশে আসলে বিজ্ঞাপনের জায়গায় প্রমো দিতে পারে। পরিবেশকরা যদি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে যৌক্তিকভাবে এক-দুই মাস সময় নেয়, সেটা ভাবা যায়। আমরা তাদের বলব দেশের আইন মেনে কাজ করতে।

জানতে চাইলে কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমরা কোয়াব ঐক্য পরিষদ আজ (শনিবার) সদস্যদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেছি। দেশের আইন মেনে আমরা ব্যবসা করি। যেহেতু সরকার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেহেতু সেই অনুযায়ী অমরা যে বিদেশি চ্যানেলগুলোয় বিজ্ঞাপন আসে সেগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রেখেছি। তবে শুধু বাংলাদেশি চ্যানেল দিয়ে আমরা খুব বেশিদিন টিকে থাকতে পারব না। আমাদের অভিভাবক তথ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা অনুরোধ করেছি, অন্তত ডিজিটাল হওয়া পর্যন্ত বিদেশি এ চ্যানেলগুলো প্রচারের পুনঃআদেশ যেন দেওয়া হয়।

এদিকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্দেশনায় বিদেশি টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার বাস্তবায়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে।

শনিবার দুটি পৃথক বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব আব্দুল মজিদ এবং ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার না করার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনীতি, শিল্পী, সংস্কৃতি ও মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বছরে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে।

অর্থনীতি

অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধের প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। এরইমধ্যে খুলেও দেয়া হয়েছে বন্ধ করা সাইটগুলো। বন্ধের প্রক্রিয়া শুরুর ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই আবার তা স্থগিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গণমাধ্যমকে বলেন, বিটিআরসি তালিকা ধরে নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলো। ওই তালিকায় বেশকিছু ত্রুটি আছে। ফলে আপাতত অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধের প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। এরইমধ্যে আমরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাছে তালিকা চেয়েছি, সেই তালিকা অনুযায়ী অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করা হবে।

মন্ত্রী জানান, এই প্রক্রিয়া শুরু হলে অনেক শীর্ষস্থানীয় সাইট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পাওয়া মাত্রই আমি সেগুলো খুলে দিতে বলি। আমি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে তালিকা পাওয়া গেলে সেই তালিকা ধরে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

অর্থনীতি

কোন সঞ্চয়পত্রে কত টাকা খাটালে মেয়াদ অনুযায়ী কী পরিমাণ মুনাফা মিলবে, তার বিস্তারিত ছক একটি সার্কুলারে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

যারা ছয় ধরনের সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন, তারা মুনাফা পাবেন অন্যদের তুলনায় কম। বিনিয়োগের অংক ৩০ লাখ টাকার বেশি হলে মুনাফা আরও কমবে।

বিনিয়োগের অংকের ভিত্তিতে তিন ধাপে লাভের হার ঠিক করে অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার পুনঃবণ্টন করে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

দেশে চলমান নয়টি জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মধ্যে ছয়টিতে বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার কমিয়ে আনা হয়েছে।

এগুলো হল: ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদী হিসাব ও ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড।

তবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-সাধারণ হিসাব, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মুনাফা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

যারা নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনবেন, শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এই হার কার্যকর হবে। আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি পুনঃবিনিয়োগ করলেও নতুন হারে মুনাফা দেওয়া হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান- দুই ক্ষেত্রেই মুনাফার নতুন হার প্রযোজ্য হবে।

সঞ্চয় স্কিম

মেয়াদ

বর্তমান মুনাফার হার (%)

পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগের ওপর)

১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে

৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে

৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে

পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র

প্রথম বছর শেষে

৯.৩৫

৯.৩৫

৮.৫৪

৭.৭১

দ্বিতীয় বছর শেষে

৯.৮০

৯.৮০

৮.৯৫

৮.০৮

তৃতীয় বছর শেষে

১০.২৫

১০.২৫

৯.৩৬

৮.৪৫

চতুর্থ বছর শেষে

১০.৭৫

১০.৭৫

৯.৮২

৮.৮৬

পঞ্চম বছর শেষে

১১.২৮

১১.২৮

১০.৩০

৯.৩০

তিনমাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র

প্রথম বছর শেষে

১০

১০

৯.০৬

৮.১৫

দ্বিতীয় বছর শেষে

১০.৫০

১০.৫০

৯.৫১

৮.৫৬

তৃতীয় বছর শেষে

১১.০৪

১১.০৪

১০

৯.০০

পেনশনার সঞ্চয়পত্র

প্রথম বছর শেষে

৯.৭০

৯.৭০

৮.৮৭

৮.০৪

দ্বিতীয় বছর শেষে

১০.১৫

১০.১৫

৯.২৮

৮.৪২

তৃতীয় বছর শেষে

১০.৬৫

১০.৬৫

৯.৭৪

৮.৮৩

চতুর্থ বছর শেষে

১১.২০

১১.২০

১০.২৪

৯.২৯

পঞ্চম বছর শেষে

১১.৭৬

১১.৭৬

১০.৭৫

৯.৭৫

পরিবার সঞ্চয়পত্র

প্রথম বছর শেষে

৯.৫০

৯.৫০

৮.৬৬

৭.৮৩

দ্বিতীয় বছর শেষে

১০.০০

১০.০০

৯.১১

৮.২৫

তৃতীয় বছর শেষে

১০.৫০

১০.৫০

৯.৫৭

৮.৬৬

চতুর্থ বছর শেষে

১১.০০

১১,০০

১০.০৩

৯.০৭

পঞ্চম বছর শেষে

১১.৫২

১১.৫২

১০.৫০

৯.৫০

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাব

৭.৫০

অপরিবর্তিত

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদী হিসাব

প্রথম বছর শেষে

১০.২০

১০.২০

৯.৩১

৮.৪১

দ্বিতীয় বছর শেষে

১০.৭০

১০.৭০

৯.৭৭

৮.৮২

তৃতীয় বছর শেষে

১১.২৮

১১.২৮

১০.৩০

৯.৩০

সঞ্চয় স্কিম

মেয়াদ

বর্তমান মুনাফার হার (%)

পুনঃনির্ধারিত মুনাফার হার (ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগের ওপর)

১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত

৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত

৩০ লাখ টাকার বেশি

৫০ লাখ টাকার বেশি

ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড

৬ থেকে ১২ মাস

৮.৭০

৮.৭০

৭.৯৮

৭.২৫

৬.৫৩

১২ থেকে ১৮ মাস

৯.৪৫

৯.৪৫

৮.৬৬

৭.৮৮

৭.০৯

১৮ থেকে ২৪ মাস

১০.২০

১০.২০

৯.৩৫

৮.৫০

৭.৬৫

২৪ থেকে ৬০ মাস

১১.২০

১১.২০

১০.২৭

৯.৩৩

৮.৪০

মেয়াদ শেষে

১২.০০

১২.০০

১১.০০

১০.০০

৯.০০

ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড

প্রথম বছর শেষে

৬.৫০

অপরিবর্তিত

দ্বিতীয় বছর শেষে

৭.০০

অপরিবর্তিত

তৃতীয় বছর শেষে

৭.৫০

অপরিবর্তিত

ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড

প্রথম বছর শেষে

৫.৫০

অপরিবর্তিত

দ্বিতীয় বছর শেষে

৬.০০

অপরিবর্তিত

তৃতীয় বছর শেষে

৬.৫০

অপরিবর্তিত

সার্কুলারে বলা হয়েছে, এই আদেশ জারির আগে যেসব সঞ্চয়পত্র কেনা হয়েছে সেগুলোতে কেনার সময়ের হারে ‍মুনাফা দেওয়া হবে। তবে মেয়াদ শেষে পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে মুনাফার নতুন হার ।

সব সঞ্চয় স্কিমে ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগ বিবেচনা করে প্রযোজ্য হারে মুনাফা দেওয়া হবে। এই আদেশ জারির পরে বিনিয়োগ করা অর্থের মুনাফা দেওয়ার ক্ষেত্রে আগের বিনিয়োগ বিবেচনায় নিয়ে প্রযোজ্য হারে তা দেওয়া হবে।

যৌথ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর বর্ণিত সব সঞ্চয় স্কিমে মোট বিনিয়োগের ওপর হিসাব করে ঠিক করা হবে তারা কী হারে মুনাফা পাবেন।

প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগের পরিমাণ আলাদাভাবে হিসাব করা হবে। সব সঞ্চয় স্কিমে মুনাফা দেওয়া হবে সরল হারে।

অর্থনীতি

প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে কেনাকাটাও চলছে এখন অনলাইনে। বিশেষত করোনাকালে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অনলাইন কেনাকাটায় স্বাস্থ্যসচেতন গ্রাহকদের আগ্রহ বেড়েছে। আর এই সময়ে এসে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রসার বেড়েছে বহুগুণে। প্রচার-প্রসারের পাশাপাশি বেড়েছে কিছু কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাও। গ্রাহকদের অভিযোগ,কোনো কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দেয় না। দিলেও একপণ্যের জায়গায় অন্য পণ্য দেয়। কখনো কখনো অর্ডার করা পণ্যের আংশিক সরবরাহ করে বাকি পণ্য দেয় না। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর হেল্পলাইনে অভিযোগ করলে উল্টো ভোক্তাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। সম্প্রতি এসব অনিয়ম-অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্রেফতারের পর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্রেতারা আস্থা হারাতে বসেছেন। তারা বলছেন, ‘দুষ্টচক্রের’ অসৎ উদ্দেশ্যের বলি হচ্ছে সম্ভাবনাময় এই খাত। দুষ্টচক্রের হাত থেকে ই-কমার্স খাতকে রক্ষা করতে হলে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। সঙ্গে বাড়াতে হবে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তদারকি।ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে আরেক মামলা

পণ্যের অর্ডার দিয়ে পণ্য পাননি, মূল্য ফেরত পাননি এমন গ্রাহকদের একজন দৈনিক সময়ের আলোর ক্রীড়া প্রতিবেদক রাজু আহম্মেদ। তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমি একটি মোটর সাইকেল অর্ডার করি ইভ্যালিতে। নিয়মানুযায়ী তাদের ৪৫ দিনের মধ্যে আমার পণ্য সরবরাহের কথা ছিল। কিন্তু ৮ মাস পার হয়ে গেলেও আমার পণ্যটি আমি বুঝে পাইনি। তাহলে কী করে ইকমার্সে আস্থা থাকবে?

রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী মাসুদ রানা। বর্তমান যুগে নিজেকে আপডেট রাখতেই একটি স্মার্ট ঘড়ি কেনার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন অনেক আগেই। তিনি বলেন, ‘ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় কেনা হয়নি। একদিন ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখি, প্রায় অর্ধেক দামেই অনলাইনে কেনা যাচ্ছে সেই ঘড়ি। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, কয়েকজন হাতে পেয়েছেন। আরও কয়েকজন অর্ডার করেছেন। ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে অর্ধেক দামে ঘড়ি পাওয়ার আশায় ১ হাজার ৬০০ টাকা জমা করে অর্ডার দিলাম। ৪৫ দিন দূরের কথা, ৮ মাসেও মিলছে না সেই ঘড়ি। ই-কমার্সে ভরসা করতে গিয়ে আস্থাই হারিয়ে ফেলেছি এখন।’

চাকরিজীবী খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘রোজার ঈদের কেনাকাটার জন্য আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখলাম, একটি পণ্যের ৩ হাজার টাকায় কুপন কিনে ১০ হাজার টাকার কেনাকাটা করার সুযোগ পাওয়া যাবে। নিজের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকার কারণে ব্যক্তিগত অর্থের সঙ্গে বন্ধুর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা লোন করে এপ্রিল মাসে ৬ হাজার টাকা পরিশোধ করে ২টি কুপন কিনি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কুপনের কোনো খোঁজ পাইনি। কয়েকবার যোগাযোগ করেছি সেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অফিসে। প্রতিবারই তারা সময় চেয়েছে।’

তবে ই-কমার্সে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে নতুন করে আইন না করে বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা তৈরি না করে, ভোক্তা অধিকার আইনকে সময়োপযোগী করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসেসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা আছে, তা যদি প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রতিপালন করে, তাহলে এই সেক্টরে গ্রাহকের আস্থা ফেরত আসবে। আর এটা পর্যবেক্ষণের জন্য একটা কমিটি করে দেওয়া যেতে পারে। তবে, আমি কোনোভাবেই এই খাতের জন্য নতুন করে আইন বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা করার পক্ষে না। কারণ, এটাও স্বাভাবিক বাণিজ্যিক প্রক্রিয়ার মতোই। শুধু কেনাকাটার মাধ্যম আলাদা। তাই আমাদের যেই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন আছে। সেটিকেই যদি পুনঃপর্যালোচনা করা হয়। সেখানে প্রয়োজনবোধে সময়োপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই আইন হালনাগাদ করা হয় তাতেই সমস্যা সমাধান হতে পারে।’

বেসিস সভাপতি আরও বলেন, ‘গ্রাহকরা যদি ই-কমার্স থেকে কেনাকাটা করার আগে তাদের পেমেন্ট ও ডেলিভারি সিস্টেম, টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন সম্পর্কে ভালো করে তথ্য যাচাই করে নেয়, তাহলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। আর যদি কেউ প্রতারিত হয়েই যান, তাহলে ভোক্তা অধিকারে যেন সেই গ্রাহক অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ওই প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেওয়া হবে। তাহলেই গ্রাহকের আস্থা ফিরে আসবে।’

এছাড়া, এই খাত সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে আলমাস কবীর বলেন, ‘অনলাইনেই ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দায়ের করা অনেক সহজ। এছাড়া প্রতিটি ই-কমার্সের ওয়েবসাইটে ভোক্তা অধিকারের হটলাইন নম্বরটি প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। আমি মনে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

ই-কমার্স অ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল  বলেন, ‘ই-কমার্সে গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ২২ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ৬টি প্রস্তাব দিয়েছি। যেখানে, লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ডিজিটাল কমার্স সেলকে আরও কার্যকর করার কথা ছিল। আরও বেশি লোকবল দিয়ে মনিটরিংয়ে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল। ডিজিটাল কমার্সের আদলে যেন ডিজিটাল কমার্স সেলকে পরিচালনা করা হয়। এছাড়া, এই এস্ক্রো সার্ভিস আরও দ্রুতগামী করতে হবে। গ্রাহকদের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি সেন্ট্রাল মনিটরিং সেল গঠন করা। এর পাশাপাশি একটি লজিস্টিকস এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম করার প্রস্তাব দিয়েছি। যেটি ডাক বিভাগের আওতায় পরিচালনা করা হয়।’

তমাল আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে আমাদের আরও বেশি প্রচার প্রচারণা করা উচিত। এই খাতের সব ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে গ্রাহকরা যেন ই-কমার্স থেকে কেনাকাটা করে না ঠকেন, সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা দরকার। যারা প্রতারণা করছে, তাদের জন্য দেশের ভোক্তা অধিকার অধিদফতর আছে, প্রতিযোগিতা কমিশন আছে, তারা যদি প্রতারণা করেন, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাহলেই গ্রাহকদের আস্থা ফিরে আসবে।’

ই-কমার্সে কী করে গ্রাহকদের আস্থা ফিরবে, এমন প্রশ্নের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান  বলেন, ‘সম্প্রতি কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের হাতে বেশ কিছু গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন। আর প্রতারিত হলে সেই খাত থেকে আস্থা কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা গত ৪ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সম্পর্কে রিপোর্ট পাই ইভ্যালি সম্পর্কে। যেখানে তারা কী পরিমাণ গ্রাহক ও ভেন্ডরের কাছে দেনা আছে, কী পরিমাণ সম্পদ আছে, তার হিসাব দেওয়া আছে। এই প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করি।’

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, ‘এরআগে ৩০ জুন একটি সার্কুলার জারি করা হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয় পণ্য ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়া হবে না। এর ফলে পণ্য ডেলিভারি যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি লেনদেনও নিরাপদ হবে।’

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করতে যায়। এসময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ই-কমার্স একটি সম্ভাবনাময় খাত। কিছু সংখ্যক লোকের কারণে এই খাতটি যেন শুরুতেই মুখ থুবড়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এ খাতে প্রতারণাসহ ভোক্তার স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলো চিহ্নিত করে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।’এ সময় প্রতারণা বন্ধ করার কার্যকর উপায় বের করতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি।

অর্থনীতি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। ফলে প্রতারিত গ্রাহকরা যাতে অর্থ ফেরত পায় সে ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যেহেতু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র এই মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। ফলে তাদের দায়িত্ব বেশি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বও আছে। প্রতারিত গ্রাহকরা যাতে তাদের অর্থ ফেরত পায় সে ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে।

এর আগে বুধবার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং মোহাম্মদ কাওছার। রিটের শুনানি শেষে ইভ্যালির কোনো সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট।

অর্থনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩ কোটি টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ডা. দিলীপ কুমার ঘোষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ চেকটি হস্তান্তর করেন।

এ বছর ১১ অক্টোবর ষষ্ঠীতে দুর্গাপূজা শুরু হবে। এর মধ্যে ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী ও ১৫ অক্টোবর বিজয় দশমী।

অর্থনীতি

ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুর্গোৎসবে ভারতের বাঙালিদের এই মাছের স্বাদ দিতে আগের মতোই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক শিথিল করেছে বাংলাদেশ সরকার।

অর্থনীতি

বরগুনায় মাইকিং করে প্রতিকেজি ইলিশ ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বরগুনা পৌর মাছ বাজারের সামনে রাস্তার ধারে ৩ মাছ বিক্রেতা যৌথভাবে মাছের ডালা সাজিয়ে দুই ধরনের ইলিশ বিক্রি করছেন।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে সরেজমিন গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ইলিশের কেজি ২৬০ টাকা দরে বিক্রি বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিশ বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, দিনের বেলায় ইলিশের দাম বেশি ছিল। রাতে ক্রেতা কম থাকার কারণে ইলিশের দাম কমিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ২৬০ টাকা ইলিশের প্রত্যেক কেজিতে ৬টি মাছ পাওয়া যায় এবং ৩শ টাকা কেজির ইলিশে ৫টি মাছ পাওয়া যায়।

চলতি সপ্তাহে মাইকিং করে ইলিশ বিক্রি করতে অনেক বার দেখা গেছে। তবে, মাছ ছোট হওয়ার কারণে দাম কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

এদিকে আশ-পাশে ব্যবসায়ীরা কম দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাছের দাম প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তন হয় তবে, আমাদের মাছ আগের কেনায় বিধায় একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। যেগুলো কম দামে বিক্রি হচ্ছে গুণগত মান দিক-বিবেচনা করলে ঠিক নেই। আমাদের কেনা বেশি থাকার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই আমাদের কাছে ক্রেতা আসে না।

বরগুনা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি, তদন্ত করে দেখবো মাছের গুণগতমান কেমন। প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো তাদের বিরুদ্ধে।

বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের পরিচালক নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার এম লুৎফর রহমান বলছেন, গত মাসের শেষের দিকে সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে তাই ইলিশের দাম কমতে শুরু করেছে। গত বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম আছে।

অর্থনীতি

সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৮১ কোটি ডলারের আয় পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশের ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকার সমান।

গত বছরের আগস্টে এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে গত আগস্টে প্রবাসী আয় প্রায় ৮ শতাংশ কমেছে।

এ ছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সোয়া ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ডলার, প্রায় ১৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১৯৪ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা, যা দেশের সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।

গত জুলাই মাসে আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রবাসী আয় কমেছে। এমনকি চলতি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি ছাড়া অন্য সব মাসের চেয়ে জুলাইয়ে কম আয় এসেছে, যা পরিমাণে ১৮৭ কোটি ডলার। এই আয় আগের মাস জুনের তুলনায় ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার এবং আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ কম।

বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় আসে প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। এই আয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১ হাজার ৮০৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি।

অর্থনীতি

বিশ্বব্যাপী চলা করোনা মহামারির মধ্যে দেশগুলোর অর্থনীতি তীব্র চাপের মধ্যে পড়েছে। উত্পাদন কমে যাওয়াসহ নানা উপসর্গে ভুগছে বিশ্ব অর্থনীতি। তবে এশিয়া থেকে আমেরিকা এমনকি ইউরোপের দেশগুলো এখন ধুঁকছে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোর চাইতে এশিয়ার দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির অবস্থা কিছুটা ভালো। মূলত :বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যসহ নানা ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে জোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণত মূল্যস্ফীতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বেড়ে যাওয়ার ফলে মুল্যস্ফীতি দেখা যায়। এছাড়া বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলে উদ্যোক্তারা চাপের মুখে কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে দেন।

এজন্য উদ্যোক্তারা উত্পাদিত পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। অর্থনীতিবিদরা বলছে, বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আর সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়াই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এ বিষয়ে বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পর থেকে বাংলাদেশ খাদ্য বিশেষ করে চাল এবং গমের আমদানি বাড়িয়েছে। এ অর্থবছরে খাদ্য আমদানিতে বাংলাদেশের নির্ভরতা ছিল ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে এ আমদানির হার এসে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে।

প্রায় দুই বছর ধরে চলা করোনা মহামারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযয়ী গত জুলাইতে এটি ছিল ৫ দশমিক চার শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে খাদ্যপণ্যের মূল্য। এর বাইরে জ্বালানি, হাউজিং এবং বস্ত্রখাতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানকার মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। চিকিৎসা খাতেও এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের খরচ বেড়েছে। এসব কারণে দেশটিকে অর্থনীতিতে প্রচুর অর্থ জোগান দিতে হয়েছে। যেটি মুদ্রাস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে।

এদিকে, এশিয়ার দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও এখানকার পরিস্থিতি তেমন খারাপ নয়। তবে বাংলাদেশ এবং ভারতসহ কয়েকটি দেশে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। তবে ভারতের মূল্যস্ফীতিতে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি বেশ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশে। এশিয়ার অপরাপর যেসব দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মিয়ানমার প্রভৃতি।

অপরদিকে, ইউরোপের দেশগুলোতে চলতি সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে দুই শতাংশের ওপরে। গত এপ্রিলে দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল দুই শতাংশ। অথচ এক বছর আগে এই হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ। গ্রিস, মাল্টা এবং পর্তুগালে মূল্যস্ফীতির হার কম থাকলেও হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গে এই হার পাঁচ শতাংশের ওপরে। এছাড়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন প্রভৃতি দেশের মূল্যস্ফীতির হারও ঊর্ধ্বমুখী।

শুধু এশিয়া ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র নয়, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মূল্যস্ফীতিও গত এক বছরে বেশ বেড়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে সারা বিশ্বের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটেছে।

কার্গো বিমান এ সময় বন্ধ ছিল। এছাড়া মধ্যখানে সুয়েজ খাল বন্ধ থাকার কারণে সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে পৃথিবীব্যাপী খাদ্য ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।