অর্থনীতি

চীন সরকারের উপহার সিনোফার্মের ৬ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

এ নিয়ে সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা উপহার পেল বাংলাদেশ। এ দিয়ে সাড়ে ৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া যাবে।

এর আগে গত ১২ মে প্রথম চালানে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা এসেছিল চীন থেকে।

দ্বিতীয় চালান নিয়ে রোববার বেলা সাড়ে ৫টার দিকে বিমানবাহিনীর দুটি সি-১৩০ উড়োজাহাজ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে নামে।

টিকা নিতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক, ইপিআইয়ের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাওলা বক্স।

ডা. শামসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “এই টিকা দুই থেকে আট ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এজন্য ইপিআইয়ের কোল্ড স্টোরেজে নিয়ে রাখা হবে।”

এসব টিকা কাদের দেওয়া হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অগ্রাধিকার তালিকায় মেডিকেল শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।

“এই মুহূর্তে মেডিকেল, নার্সিং, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আছেন। কিন্তু এরা সংখ্যায় এত বেশি না। এছাড়া বিভিন্ন এক্সপোর্ট জোন, বিশেষ প্রকল্পে যারা কাজ করছেন তারাও আছেন অগ্রাধিকার তালিকায়। অগ্রাধিকার তালিকায় আগে ছিলেন, কিন্তু বাদ পড়েছেন, এমন জনগোষ্ঠীকেও এই টিকা দেওয়া হবে।”

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে বিমানবাহিনীর সি-১৩০ উড়োজাহাজে চীনের উপহার দেওয়া সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভিএই চালানে ৬ লাখ ডোজ টিকা ছাড়াও সিরিঞ্জ, ভেন্টিলেটর, মাস্কসহ আরও কিছু উপহার এসেছে বলে জানান ডা. শামসুল হক।
তিনি জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দেওয়া কিছু সুরক্ষা সামগ্রীও একই উড়োজাহাজে এসেছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, এই টিকা আনতে শনিবার বিমান বাহিনীর দুটি সি-১৩০ পরিবহন বিমান চীনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিমান বাহিনীর ২৬ জন ক্রু এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন প্রতিনিধি দুটি বিমানে ছিলেন।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে বাংলাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে।

সেরাম থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হলেও ভারত মহামারীর করাল গ্রাসে পড়লে টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। ফলে বাংলাদেশে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার পর আর পায়নি।

এরপর সরকার টিকার জন্য চীনের দিকে হাত বাড়ায়। চীন থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ৫ লাখ ডোজ টিকা থেকে ২৫ মে প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে।

অর্থনীতি

বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে হিসাব খোলা ও রক্ষণাবেক্ষণ, আমানত, ঋণ প্রদান, রেমিটেন্সসহ অন্যান্য সেবার বিনিময়ে ব্যাংক মাশুল বা চার্জ ও কমিশন হিসেবে গ্রাহকের কাছ থেকে কত টাকা নিতে পারবে সেটা বলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসব নির্দেশনা ‘অবিলম্বে’ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

এতে বিভিন্ন সময়ে জারি করা সব প্রজ্ঞাপনকে এবার একত্রিত করে একটির মধ্যে আনা হয়েছে।

‘দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায়’ আগের নির্ধারিত হার পুনঃবিশ্লেষণ করে নতুনভাবে নির্ধারণ ও পরিপালনের জন্য আগের সব নির্দেশনা একত্রে দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আমানত সংক্রান্ত হিসাব খোলা

এখন যে কোনো ব্যাংক ৫০০ টাকায় খোলা যাবে সঞ্চয়ী হিসাব। ১০০০ টাকায় খোলা যাবে চলতি হিসাব।

তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম জমার বাধ্যবাধকতা রাখা যাবে না।

এখন নতুন হিসাব খোলার জন্য অনেক ব্যাংক নিজেদের মত করে ন্যুনতম অর্থ জমা দেওয়ার নিয়ম ঠিক করে রেখেছে।

কোনো কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা ২ বা ৫ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার কিংবা ১০ লাখ টাকাও নির্ধারণ করা রয়েছে।

কিছু ব্যাংকে অবশ্য ৫০০ টাকাতেও  হিসাব চালু করা যায়।

হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি 

এসব ফি ব্যাংক ছয় মাস অন্তর গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে।

কোন সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ হাজার টাকা স্থিতি থাকলে কোনো হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি নেওয়া যাবে না।

গড়ে ১০ হাজার টাকার পর থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত টাকা নিতে পারবে ব্যাংকগুলো।

১০ লাখ টাকার বেশি গড় আমানত স্থিতিতে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নেওয়া যাবে।

চলতি হিসাবে প্রতি ষান্মাসিকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি নেওয়া যাবে।

তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাবে কোনো প্রকার হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না।

অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তর

একই ব্যাংকের অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তরের ক্ষেত্রে একই জেলায় হলে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা

এবং অন্য জেলায় সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ফি আদায় করা যাবে।

অ্যাকাউন্ট সচল করার ক্ষেত্রে কোনো ফি আদায় করা যাবে না।

হিসাব বন্ধকরণ ফি

হিসাব বন্ধ করতে সঞ্চয়ী হিসাবে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা এবং এসএনডি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করা যাবে।

এ ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব থেকে কোন ফি আদায় করা যাবে না।

অন্যান্য ফি

বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবে আরোপিত ন্যূনতম ব্যালেন্স ফি, ইনসিডেন্টাল চার্জ, লেজার ফি, সার্ভিস চার্জ, কাউন্টার ট্রানজেকশন ফি বা অনুরূপ ফি আদায় করা যাবে না।

‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব’ বলতে এখানে দেশের আর্থিক সেবাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে

কৃষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, দুঃস্থসহ পথশিশু ও স্কুল ব্যাংকিং হিসাবসহ বিভিন্ন সময়ে বিশেষ হিসেবে চিহ্নিত হিসাবকে বোঝাবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঋণ প্রদান সংক্রান্ত

ঋণ প্রসেসিং ফি ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে মোট মঞ্জুরী করা ঋণের সর্বোচ্চ দশমিক ৫০ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে এর পরিমাণ ১৫ হাজার টাকার বেশি হবে না।

৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে এই হার হবে সর্বোচ্চ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং পরিমাণ ২০ হাজার টাকার বেশি হবে না।

ঋণ আবেদন ফি নামে কোনো ফি আদায় করা যাবে না।

রপ্তানি ঋণসহ যে কোনো ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে সুদ বা মুনাফা হারের অতিরিক্ত কোনো সার্ভিস চার্জ, ঋণ ব্যবস্থাপনা ফি, মনিটরিং বা সুপারভিশন চার্জ, ঝুঁকি প্রিমিয়াম বা অনুরূপ অন্য যে কোনো নামে অতিরিক্ত কোনো চার্জ, ফি, কমিশন আরোপ বা আদায় করা যাবে না।

গ্রাহক ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদের পূর্বে পরিশোধ করতে চাইলে বকেয়া ঋণের সর্বোচ্চ দশমিক ৫০ শতাংশ ফি আদায় করা যাবে।

তবে, কটেজ, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র খাতে প্রদত্ত ঋণ এবং চলতি ঋণ বা ডিমান্ড লোনের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির আগে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে অনুরূপ ফি আদায় করা যাবে না।

আগে ব্যাংকগুলো ঋণের টাকা কেউ আগে ফেরত দিতে চাইলে বাকি টাকার উপর ২ শতাংশ পর্যন্ত ফি রাখত।

এছাড়া সার্কুলারে স্থানীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য, রেমিট্যান্স সংক্রান্ত হিসাব, চেক ফেরত, সব ধরনের সনদ, ডিমান্ড ড্রাফট, পে অর্ডারসহ সব ধরনের ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক ঘোষিত বা প্রকাশিত তালিকার বাইের কোনো মাশুল বা কমিশন নিতে পারবে না।

অর্থনীতি

কোন সেবার বিপরীতে ব্যাংক কত মাশুল নিতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী রোববার থেকে নতুন এ মাশুল কার্যকর করবে ব্যাংকগুলো।

নতুন নির্দেশনার ফলে গ্রাহকরা জানতে পারবে, কোন সেবায় কত মাশুল। এতে ব্যাংক সেবার খরচ কমবে বলেও জানা গেছে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার সময় ৫০০ টাকা জমা দিলেই হবে। চলতি হিসাব খোলার সময় জমা দিতে হবে এক হাজার টাকা। তবে কৃষক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হিসাব খোলার সময় কোনো টাকা জমা না দিলেও হিসাব খুলতে হবে। সঞ্চয়ী হিসাবে ছয় মাস পরপর মাশুল কাটতে পারবে ব্যাংক।

তবে ১০ হাজার টাকা আমানতে কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানতে ১০০ টাকা, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ২০ টাকা, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ২৫০ টাকা ও ১০ লাখ টাকার বেশি আমানতে ছয় মাস পরপর ৩০০ টাকা কাটা যাবে। চলতি হিসাবে প্রতি ছয় মাসে ৩০০ টাকা এবং বিশেষ নোটিশ হিসাবে ৫০০ টাকা মাশুল আদায় করা যাবে।

গ্রাহকরা এক শাখা থেকে অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তরের সময় একই জেলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা ও অন্য জেলার ১০০ টাকা মাশুল আদায় করা যাবে। বন্ধ হয়ে যাওয়া হিসাব নতুন করে চালাতে কোনো মাশুল নেওয়া যাবে না। চেক বইয়ের ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচ আদায় করা যাবে, এমনকি হারানো গেলেও কোনো অতিরিক্ত খরচ নেওয়া যাবে না।

ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল আদায় করা যাবে, তবে তা কোনোভাবেই ১৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে মাশুল হবে সর্বোচ্চ দশমিক ৩০ শতাংশ, তা কোনোভাবেই ২০ হাজার টাকার বেশি নয়। ঋণ আবেদন মাশুল নামে কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। কৃষি ও এসএমই খাতের ঋণ পুনর্গঠন মাশুল বাবদ সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে তা ১০ হাজার টাকার বেশি হবে না।

শতভাগ নগদ মার্জিনে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ, ডেফার্ড ঋণপত্রের ক্ষেত্রে দশমিক ৫০ শতাংশ, সাইট ও ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিকে দশমিক ৪০ শতাংশ মাশুল আদায় করা যাবে। বৈদেশিক মুদ্রায় ডিমান্ড ড্রাফট ও টেলিগ্রাফিক ড্রাফট ও মেইল ট্রান্সফারের নথিপত্রের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার সমপরিমাণ মুদ্রার ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, ৫ লাখ টাকার ক্ষেত্রে ২০০ টাকা, ১০ লাখ টাকার ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার বেশি হলে ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে। এসব আদেশ বাতিল হলে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা কাটা যাবে।

ব্যাংক নিজ উদ্যোগে বছরে দুবার গ্রাহকদের হিসাবের স্থিতি জানাবে। আমানত ও ঋণ হিসাব—উভয়ই এই স্থিতি নিশ্চিতকরণ সনদ পাবে। তবে গ্রাহক এর বেশি সনদ চাইলে প্রতিবার ১০০ টাকা মাশুল নিতে পারবে ব্যাংক। সচ্ছলতা সনদ দিতে ব্যাংক প্রতিবার সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নিতে পারবে।

চেক ফেরতের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নিতে পারবে। অর্থ প্রদান নির্দেশনা স্থগিত করতে প্রতিবার ১০০ টাকা ও তা বাতিল করতে ৫০ টাকা মাশুল নিতে পারবে ব্যাংকগুলো।

এক হাজার টাকা পে-অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০ টাকা, এক লাখ টাকার ক্ষেত্রে ৫০ টাকা এবং এর বেশি টাকার পে-অর্ডার ক্ষেত্রে ১০০ টাকা আদায় করা যাবে। পে-অর্ডার বাতিল করতে চাইলে ব্যাংক ৫০ টাকা মাশুল নিতে পারবে।

অর্থনীতি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশ সর্বসম্মতিক্রমে এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়। এক বছর মেয়াদের এই দায়িত্ব চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হবে। এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির পরিচায়কও নয়, বরং জঙ্গিবাদ দমনে আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রমাণও।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) এসব উল্লেখ করেছে ইকোনমিক টাইমস। বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রায়শই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের উপর জোর দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম ২০১৭তে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে হোলি আর্টিজান হামলার পর থেকে অন্তত ৭৯ সন্দেহভাজন মৌলবাদী জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে। এসময় অন্তত ১৫০ জনকে আটকও করা হয়।

অর্থনৈতিক ও জঙ্গিদমনে সাফল্যই বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছে জাতিসংঘে: ভারতীয় গণমাধ্যম
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের অঞ্চল সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা ব্যবহৃত না হতে দিতে বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে সন্ত্রাসের কোনো উপাদান আছে কিনা সেদিকেও নজর রাখছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শেখ হাসিনা। কাউন্টার টেরোরিজমের সমর্থনে ২০০৯ সালে এন্টি টেরোরিজম আইন পাশ করা হয়। পরে ২০১৩ সালে তা সংশোধিত হয়।

শেখ হাসিনার বক্তব্য অনুসারে, সরকার ছয়টি জঙ্গিবাদী দলকে নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে আছে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ, আনসার আল বাংলা টিম এবং জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ। সীমান্ত সন্ত্রাসের ইস্যু মোকাবেলায় ভারতের সাথে নির্বিঘ্নে কাজ করা হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসবাদ দূরীকরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ঢাকা।

অর্থনীতি

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ পারে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। দেশব্যাপী চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তাই আগামী অর্থবছরের ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি ও তৈরি পোশাকের রপ্তানি বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

এদিকে চলতি বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করছে। এই প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন আনেনি বিশ্বব্যাংক। গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, এ বছর ১ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। পরে গত মার্চ মাসে প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস স্প্রিং ২০২১: সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেটস’ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করে বিশ্বব্যাংক।

আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.১ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে উল্লেখ করে গত মার্চ মাসের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। অর্থনীতির এই পুনরুদ্ধার ভঙ্গুর এবং করোনার নতুন ঢেউ শঙ্কা তৈরি করছে। অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা যেমন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। আবার পরিবর্তিত করোনা পরিস্থিতিতে সরকার কী ধরনের নীতি গ্রহণ করতে হয়, তাও আরেক ধরনের অনিশ্চয়তা।

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার কারণে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমনটিই বলা হয়েছিলো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। গত ৮০ বছরের মধ্যে মন্দা–পরবর্তী সময়ে এত প্রবৃদ্ধি আর হয়নি। কারণ, বিশ্বের কয়েকটি বড় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

তবে উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনও করোনা মহামারি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসময় তিনি আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী অর্থবছরে এত প্রবৃদ্ধি হবে না বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে কারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এই সংক্রান্ত তথ্য বিরোধী দলের কারও কাছে থাকলে তা দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনায় বিরোধীদলীয় সদস্যরা অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ আনার পর পর মুস্তফা কামাল সোমবার সংসদে বলেন, “কারা টাকা নিয়ে যায়, লিস্ট আমার কাছে নেই।”

বিরোধী সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করা আমাদের জন্য সহজ হবে।”

অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকার সক্রিয় রয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখনও অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।”

এর আগে আলোচনায় বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, “বিদেশে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কত টাকা বিদেশে গেছে!”

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, “এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছে।

“দুদকের একটি অফিস কানাডায়, মালয়েশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পিকে হালদার এত টাকা নিল! নয় মিনিটের জন্য পিকে হালদারকে ধরতে পারেনি। তাহলে নয় ঘণ্টা আগে ধরতে পারলেন না কেন?”

সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে।

“আগে সিমেন্টের নাম করে বালি আসত। একটার নাম কবরে আরেকটা আসত। আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই না।”

গত বছরের ১৮ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান।

প্রাথমিকভাবে অর্থপাচারে জড়িত যাদের তথ্য পাওয়া গেছে তার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি বলে জানান তিনি। এছাড়া রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ী থাকার কথাও জানান তিনি। তবে তিনি কারও নাম প্রকাশ করেননি।

সে বক্তব্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাঙালি অধ্যুষিত কানাডার ‘বেগমপাড়া’র প্রসঙ্গ উঠে আসে।

সেসব প্রতিবেদন নজরে আসার পর গত ২২ নভেম্বর হাই কোর্ট অর্থ পাচারকারী, দুর্বৃত্তদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চায়।

তবে দুদকের দেওয়া জবাবে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

অর্থনীতি

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার কারণে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ ছাড়া সকল দেশ অর্থনীতিতে মাইনাসে আছে। অথচ আমাদের জিডিপির গড় এখনও ৬ পারসেন্ট আছে।

শনিবার (৫ জুন) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা গড়পাড়া হাইস্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের আয়োজনে প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, যাদের দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে, তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো আছে। আর যাদের করোনা নিয়ন্ত্রণে নেই, তারা বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বাস্থ্য বিভাগসহ সব বিভাগ করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। যে কারণে আমাদের দেশে ওষুধের অভাব হয়নি, খাদ্যের অভাব হয়নি। আমাদের কৃষিখাত ও শিল্পকারখানা সচল রয়েছে। আমাদের দেশের অর্থনীতি অনেক দেশের চেয়ে ভাল।

মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিকা দিয়েই শুধু করোনা নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয়, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে বাংলাদেশ থেকে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার।

অর্থনীতি

ঢাকা: বাজেট বড় ব্যবসায়ী-শিল্পপতি-আমলা ও কালো টাকার মালিকদের সহায়ক এবং ঘোষণা ও প্রয়োজনের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেট অসঙ্গতিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বাসদ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেকুজ্জামান বলেন, খাদ্য সরবরাহ, খাদ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা, শ্রমিক-কৃষক, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবীদের জীবন বাঁচাতে রেশন ব্যবস্থা চালু, শ্রমজীবীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। যে কৃষি ও কৃষক ধান, ভুট্টা, মাছ, মাংস, সবজী, ফল উৎপাদন করে করোনাকালে দেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে, ৪২ শতাংশ শ্রমজীবীর কর্ম সংস্থান করেছে সেখানে বরাদ্দ ও ভর্তুকি বাড়ানো দরকার ছিল কিন্তু বাজেটে গত তিন বছর ধরে কৃষিখাতে ভর্তুকি একই পরিমাণ রাখা হয়েছে। ফলে মুদ্রাস্ফিতির বিবেচনায় কৃষিতে ভর্তুকি কমে গেছে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জীবন ও জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে ঘোষিত বাজেট সাধারণ মানুষের জীবনের ও জীবিকার প্রয়োজনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। গত বাজেটের চেয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এই বাজেট করোনাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের জীবনমান রক্ষা ও জীবিকার নিশ্চয়তার চাইতে বৈষম্য বাড়িয়ে তুলবে।

তিনি আরও বলেন, করোনায় আগের তুলনায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে, দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা ৪২ শতাংশের বেশি হয়েছে অথচ তাদের জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় বরাদ্দ করা হয়নি। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৪ লাখ আর বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধির জন্য ১৫০০ কোটি টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য টাকার বাড়তি বরাদ্দ বাদ দিলে বাস্তবে তেমন কোন বরাদ্দই বাড়েনি। রাজস্ব আয় বাড়াতে গিয়ে জনগণের উপর বাড়তি ভ্যাটের বোঝা চাপালেও কর্পোরেট ট্যাক্স ২.৫ শতাংশ কমিয়ে দিয়ে সরকার তার ধনিক তোষণের নীতিকে অব্যাহত রেখেছে।

‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দেশের কর্ম সংস্থান ও অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। কিন্তু বাজেট ঐ খাতে বরাদ্দে প্রান্তিক পর্যায়ে। গত বাজেটে করোনাকালে প্রণোদনায় কৃষি ঋণের সুদ ৪.৫ শতাংশ অথচ গার্মেন্টসসহ শিল্পে তা ২ শতাংশ করা হয়েছিল, কৃষি ঋণের সুদ কমানোর প্রস্তাব এবারের বাজেটেও নেই। করোনায় কাজ হারিয়েছে শ্রমিক, ৬ লাখের বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে, প্রতি বছর শ্রমের বাজারে আসে ২২ লাখ তরুণ যুবক তাদের কর্মসংস্থানের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা এবারের বাজেট প্রস্তাবে নেই।

‘সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী এবং ২০ লাখের বেশি শিক্ষক করোনাকালে বিপর্যস্ত। ছাত্রদের জন্য শিক্ষা সহায়তা এবং শিক্ষকদের জন্য দুর্যোগ ভাতা প্রয়োজন থাকলেও বাজেটে তার নির্দেশনা নেই। নারী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং পাহাড় সমতলের আদিবাসী মানুষেরা করোনায় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বিপদাপন্ন হয়েছেন। তাদেরকে রক্ষায় কোনো বরাদ্দ ও নির্দেশনা বাজেট প্রস্তাবে নেই। এক্ষেত্রে গতানুগতিকভাবে দায়সারা গোছের প্রস্তাব করা হয়েছে। ‘

কালো টাকা বৈধ করার ধারাবাহিক ভুমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে কালো টাকা উৎপাদনের ব্যবস্থা বহাল আছে এবং সরকার কালো টাকার উৎপাদন বহাল রাখতে চায়। একদিকে বাজেটে জনগণের উপর কর ভ্যাট বাড়ানো, অন্যদিকে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া লুটপাটের টাকার আইনি ও রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়ার নিন্দা করে কালো টাকা বাজেয়াপ্ত এবং তা উদ্ধার করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, শিল্পখাতে বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

তিনি এই বাজেটকে ধনী-শিল্পপতি-বড়লোক বান্ধব উল্লেখ করে শ্রমিক, কৃষক, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত জনগণের স্বার্থে বাজেট সংশোধনের দাবি জানান।

অর্থনীতি

প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোকে পিছিয়ে ফেলে বাংলাদেশি পোশাক খাত আন্তর্জাতিক মান সূচকে অগ্রগামী হয়েছে। সর্বশেষ ইথিক্যাল অডিট সূচকে বাংলাদেশি পোশাক কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। প্রথম স্থানে রয়েছে তাইওয়ান। তাইওয়ানকে টপকাতে পারলে বাংলাদেশ হবে প্রথম।

বাংলাদেশের পোশাক খাতে প্রথমবারের মত এই স্বীকৃতি অর্জন রফতানি ও দেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে এবং ক্রেতাদের কাছেও কদর বাড়বে।

সূচকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম। আর চীনের অবস্থান ৭ম। সাপ্লাই চেইন কমপ্লায়েন্সসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কিউআইএমএ’র সর্বশেষ এই মান নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছে। চীন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বড় বড় ব্র্যান্ড এবং ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে সেবা সরবরাহ করে থাকে। ৮৫ দেশে কিউআইএমএ’র স্থানীয় অফিস রয়েছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের পোশাক খাত কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে বেশ এগিয়েছে এবং ক্রেতাদের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে। তবে পণ্যের দরকষাকষিতে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল ছিল। ইথিক্যাল অডিটে এগিয়ে থাকায় দরকষাকষিতে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত, ইথিক্যাল অডিট কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত হচ্ছে কি না, তা নিরীক্ষা করে। শ্রমিকের বেতন-ভাতা, কর্মপরিবেশ, সাধারণ ও মাতৃত্বকালীন ছুটি, সামাজিক ও পরিবেশগত নিরাপত্তার শর্ত এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বিশ্লেষণ করা হয়। সাধারণ আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের শর্তমেনে শ্রমঅধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি এর মাধ্যমে খোলাসা হয়ে ওঠে। এই সূচক তৈরিতে সরেজমিন কারখানা পরিদর্শন, শ্রমিকদের সাক্ষাতকার, কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়।

তথ্য অনুযায়ী গত ইথিক্যাল অডিট সূচকে ১০ পয়েন্টের মধ্যে বাংলাদেশের সূচক ৭ দশমিক ৭। ভিয়েতনামের ৭ দশমিক ৬। চীন ৭ দশমিক ৩ পয়েন্ট পেয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে।

এই অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে পোশাক শিল্প মালিকরা। বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, এটি বাংলাদেশের অনন্য অর্জন। রানা প্লাজা ধসের পর যে দুর্নাম হয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে। ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি রপ্তানি আদেশ পাওয়া যাবে।

পোশাক খাতের ইতিহাসে প্রথম এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির নেপথ্যে রানা প্লাজা ঘটনা পরবর্তী ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের কর্মতৎপরতায় কারখানার পরিবেশ উন্নয়নে যুগান্তকারী কাজ হয়। যদিও এই সংস্কারের বিষয়টি ব্যয়বহুল হওয়ায় উৎপাদকদের বাড়তি খরচ করতে হয়েছিল। তবে এই স্বীকৃতি আগামী দিনে ব্যবসা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি

রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও সাভারে ১০২৪টি দোকানে জরিপ চালিয়ে ৮৮ শতাংশেরই ভ্যাট নিবন্ধন না পাওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।