অর্থনীতি

সব সম্ভাবনা কাজে লাগানো গেলে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত বাণিজ্য প্রায় তিনগুণ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ নিয়ে মঙ্গলবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য ১৭২ শতাংশ থেকে ২৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

দুদেশের মধ্যে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন চালু হলে বাংলাদেশের জাতীয় আয়ে ১৭ শতাংশ এবং ভারতের ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে, বলছে বিশ্বব্যাংক।

‘কানেক্টিং টু থ্রাইভ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিজ অব ট্রান্সপোর্ট ইন্টিগ্রেশন ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মটর ভেহিক্যালস এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) পর্যালোচনা, আন্তর্জাতিক চর্চার সঙ্গে এর তুলনা এবং অভিন্ন আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভালো-মন্দ পর্যালোচনা করা হয়।

এতে বলা হয়, এখন বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ১০ শতাংশ এবং ভারতের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের এক শতাংশ। অথচ পূর্ব এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলের অর্থনীতিতে ক্রস বর্ডার বা আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য যথাক্রমে ৫০ শতাংশ এবং ২২ শতাংশ।

ভারতের কোনো প্রতিষ্ঠান ব্রাজিল কিংবা জার্মানির কোনো কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করতে গেলে বা বাংলাদেশের কোনো কোম্পানির তুলনায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম ব্যয়বহুল হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে ট্যারিফগুলো রয়েছে তা বিশ্বের গড় ট্যারিফের তুলনায় দ্বিগুণ।

বিশ্বব্যাংকের আগের একটি পর্যালোচনার কথা তুলে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি ১৮২ শতাংশ এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি ১২৬ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব।

তবে সর্বশেষ এই পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুই দেশের মধ্যে পণ্যপরিবহন কানেক্টিভিটি উন্নত করা গেলে বাণিজ্য আরও বাড়ানো যাবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২৯৭ শতাংশ এবং ভারতের ক্ষেত্রে ১৭২ শতাংশ বাড়ানো যাবে।

বিশ্ব ব্যাংকের দুই অর্থনীতিবিদ ম্যাটিস হ্যারেরা দেপা ও চার্স কুনাকার পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদনটি তৈরিতে নেতৃত্ব দেন।

তাদের ভাষ্য হচ্ছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ‘ট্রান্সপোর্ট ইন্ট্রিগেশন এগ্রিমেন্ট’ ও মটর ভেহিক্যাল এগ্রিমেন্ট’ সমন্বিত আন্তঃদেশীয় পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এখনকার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিতকরণ, শুদ্ধাচার ও অবকাঠামোর দুর্বলতাগুলো দূর করার মাধ্যমে এই চুক্তিগুলো আরও কার্যকর করা যায়।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের আবাসিক প্রতিনিধি মার্শিয়া টেম্বুন বলেন, ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, নেপাল, ভুটান ও অন্যান্য পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটা গেটওয়ে হিসাবে রয়েছে। বাংলাদেশ আঞ্চলিক বাণিজ্য, ট্রানজিট ও অন্যান্য লজিস্টিক নেটওয়ার্ক বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক কেন্দ্রশক্তি হিসাবে পরিচিত হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্বল পরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তকে অকেজো করে তুলছে। পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পারাপারে কয়েকদিন লেগে যায়। পূর্ব আাফ্রিকায় একই ধরেনের ট্রাফিক ও অবকাঠামো সিস্টেমের একটি বন্দরে এই পারাপারে সময় লাগে ছয় ঘণ্টা।

ভারতে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি জুনাইদ আহমাদ বলেন, এশিয়ার পূর্ব অঞ্চলটি অর্থনৈতিক উন্নতির সূচক হিসাবে আবির্ভূত হতে পারে। রেল, অভ্যন্তরীণ নদীপথ এবং সড়কপথের কানেক্টিভিটিতে বিনিয়োগ এই প্রচেষ্টায় একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে। এই ধরনের কানেক্টিভিটি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির নিশ্চিয়তা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে ভারতের ট্রাকগুলো বাংলাদেশ হয়ে কোনো ট্রানজিট সুবিধা পায়না। যার ফলে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলিয় রাজ্যগুলো দেশটির মূল ভূখন্ড থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। ২৭ কিলোমিটার শিলিগুড়ি কোরিডোর দিয়ে দুই অঞ্চল এখন যুক্ত আছে। ভৌগলিক এই পরিস্থিতি একটি লম্বা ও ব্যয়বহুল যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছে। ত্রিপুরার আগরতলা থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক শিলিগুড়ি হয়ে ১৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কলকাতায় পৌঁছে। অথচ বাংলাদেশ হয়ে গেলে সেটা ৪৫০ কিলোমিটার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো। ভারতীয় ট্রাকগুলোর জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খোলা থাকলে আগরতলা থেকে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো মাত্র ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েই চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর পেয়ে যেতো। এতে পরিবহন খরচ ৮০ শতাংশ কমে যেতো।

প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়, পূর্ণ উদ্যোমে অঞ্চলিক যোগাযোগ সৃষ্টি করতে হলে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি আরও সুদৃঢ় করতে হবে। দেশদুটিকে অবকাঠামোগত ত্রুটি, নীতি ও বিধিমালার সংস্কার, শূল্কায়ন ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করে এর সমাধান করতে হবে।

প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য পরামর্শ হচ্ছে-

* ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ভিসা ব্যবস্থার সমন্বয়।

* একটি কার্যকর আঞ্চলিক ট্রানজিট সৃষ্টি।

* আমদানি রপ্তানির কাগজপত্রগুলো যৌক্তিক ও ডিজিটাল করা।

* অবকাঠামোর নকশাগুলো আন্তর্জাতিক মানের করা।

* পরিবহন সেবার প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা।

* স্থলবন্দর ও সমুদ্র বন্দরে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি যুক্ত করা।

* বাংলাদেশ ও ভারতে অফ বর্ডার কাস্টম সুবিধা নিশ্চিত করা।

* স্থানীয় বাজারের সঙ্গে আঞ্চলিক করিডোরের সমন্বয় ঘটানো।

* রপ্তানিমুখী ভ্যালু চেইনে লজিস্টিকসের দুর্বলতাগুলো দূর করা এবং

* রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্যের ভ্যালুচেইনে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

অর্থনীতি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপি’র নেতারা ৭ মার্চ পালন করেছেন।

বিএনপি’র উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে অনুরোধ জানাবো যে, আপনারা এতোদিন ধরে যে ইতিহাস বিকৃতি করেছেন সেটার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান। আর নতুন করে ইতিহাস বিকৃত করার জন্য কোনো দিবস পালন করার ভন্ডামি দয়া করে করবেন না।’

তথ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চের ভাষণের অনন্য দিকগুলো তুলে ধরেন এবং এবছর প্রথমবারের মতো দিবসটি পালনে বিএনপি’র ঘোষণা এবং তাদের বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যখন ঘোষণা দিলো যে, তারা ৭ মার্চ পালন করবে, আমি আশা করেছিলাম ইতিহাসকে মেনে নেয়ার শর্তে এবং এতোদিন ধরে তারা যে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, সেই কলঙ্ক মোচনের স্বার্থে তারা ৭ মার্চ পালন করবে।

কিন্তু ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে যে বক্তৃতাগুলো তারা করেছেন, যেভাবে ভাষণ দিয়েছেন, তা বরং ৭ মার্চের বক্তব্যের সারমর্মকে খাটো করার জন্যই। অর্থাৎ একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা ৭ মার্চ পালন করেছেন।’

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য মিছিল করতে করতে রাস্তায় বেরিয়ে গেল এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিল। অথচ বিএনপি নেতারা বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণকে কটাক্ষ করে বক্তব্য রাখলেন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, এ ধরণের কটাক্ষ করার উদ্দেশ্য নিয়ে আপনারা দয়া করে এই সমস্ত দিবস পালন করবেন না।

‘আপনারা ক্রমাগতভাবে ইতিহাস বিকৃত করেছেন, এই ৭ মার্চের ভাষণ ২১ বছর বাজাতে দেননি। বিএনপি এবং এরশাদ সাহেবও যতদিন ক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশের রেডিও-টেলিভিশনে ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল, ভাষণ বাজাতে দেয়া হয়নি। কিন্তু এই ভাষণকে আজকে বিশ্বস্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, জাতিসংঘের দলিল হিসেবে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে’, বর্ণনা করেন মন্ত্রী।

স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের জন্য যদি কৃতিত্ব দিতে হয় তাহলে নূরুল হকের কৃতিত্ব জিয়াউর রহমানের চেয়ে অনেক বেশি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের প্রয়াত বেয়ারার নূরুল হক নিজের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার পর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি রিক্সা করে সমগ্র চট্টগ্রাম শহরে মাইকিং করেছিলেন। চট্টগ্রাম শহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তখন হত্যাকান্ড চালাচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে তার বুকে গুলি হতে পারে সেটা জেনেও সেদিনকার তরুণ নূরুল হক মানুষকে ঘোষণাটি শুনিয়েছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আর ২৬ মার্চ সকাল থেকে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান স্বাধীন বাংলা বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। আর জিয়াউর রহমান পাঠ করেছিল ২৭ মার্চ।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করার জন্য যদি কাউকে বাহবা দিতে হয়, চার দেয়ালের মধ্য থেকে পাঠকারী জিয়াউর রহমানের চেয়ে নিজের জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে মাইকিং করা নূরুল হকের কৃতিত্ব অনেক বেশি। বিএনপিকে এই সত্যগুলো মেনে নেয়ার অনুরোধ জানাবো । স্কুলের দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করবেন না, ইতিহাসকে মেনে নিয়েই রাজনীতিটা করুন, ক্রমাগতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করবেন না।

ঢাকা মহানগর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি কে এম শহিদ উল্যা’র সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, নাজমুল হক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিব মো: মাসুদ করিমসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

অর্থনীতি

তরঙ্গ নিলাম যুদ্ধে রবিকে হারিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখলো গ্রামীণফোন। নিলামে ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের শেষ একটি ব্লক নিয়ে সাড়ে ৭ ঘণ্টার যুদ্ধ শেষে জয়ী হয়েছে গ্রামীণফোন।

সোমবার দেশের শীর্ষ দুই অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি ওই ব্লকের জন্য নিলামের ডাক চালিয়ে যায় দীর্ঘ সময়। ৮০তম রাউন্ডে গিয়ে রবি সরে দাঁড়ায়। এরপর ৮১তম রাউন্ডে ৪৭ মিলিয়ন ডলার দর উঠলে দুই অপারেটরই না বলে দেয়। তখন নিয়ম অনুযায়ী আগের দরে গ্রামীণফোন এ ব্লক জিতে নেয়।

৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের ওই ব্লকের প্রতি মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য ঠিক হয়েছিল ২৭ মিলিয়ন ডলার। নিলামে ৭৩ শতাংশ বেশি দাম দিয়ে গ্রামীণফোন তা কিনেছে ৪৬ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার দরে।

এদিন বেলা দেড়টার দিকে এই ব্লকের নিলাম প্রক্রিয়ার শুরুতেই ডাক থেকে সরে যায় বাংলালিংক, আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকও বিকেল ৪টার দিকে হাল ছেড়ে দেয়।

তবে রবি ও জিপি লেগে থাকায় দর বাড়তেই থাকে। শেষ পর্যন্ত রাত ৮টা ৪০ এ শেষ হাসি হাসে গ্রাহক সংখ্যায় দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন।

শেষ ব্লকের নিলামে জয়ের মধ্য দিয়ে গ্রামীণফোন মোট তরঙ্গের পরিমাণেও চার অপারেটরের মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রাখলো।

শেষ নিলামে রবি জিতে গেলে তারাই হত সবচেয়ে বেশি তরঙ্গের মালিক। মূলত এ কারণেই শেষের ওই ৫ মেগাহার্টজের ব্লকটি বড় দুই অপারেটরের কছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

তরঙ্গ নিলাম যুদ্ধে শীর্ষস্থান ধরে রাখলো গ্রামীণফোন

বিটিআরসির হিসাবে, গ্রামীণফোনের হাতে সব মিলিয়ে মোট ৩৭ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ছিল এতদিন। সোমবারের নিলামে দুই ব্যান্ডের ১০ দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ কেনায় গ্রামীণফোনের হাতে মোট ৪৭ দশমিক ৪৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ হচ্ছে।

এয়ারটেলের সাথে একীভূত হওয়ার পর রবির মোট তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ। সোমবার আরও ৭ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ কিনে তাদের হাতে মোট তরঙ্গ দাঁড়াল ৪৪ মেগাহার্টজ।

বাংলালিংকের হাতে ছিল ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ, এখন তা বেড়ে ৪০ মেগাহার্টজ হল। আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক সোমবারের নিলাম থেকে খালি হাতে ফেরায় আগের মতই ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ থাকল তাদের।

নিলাম শেষে গ্রামীণফোনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়েন্স বেকার বলেন, ‘এই অতিরিক্ত তরঙ্গের মাধ্যমে আমরা মানুষের বাড়তে থাকা ইন্টারনেট চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবো। শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল সেবার ধারণা পৌঁছে দিতে পারব।’

রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ নিলাম অনুষ্ঠান শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘নিলামে যে পরিমাণ তরঙ্গ বরাদ্দ হয়, তা কারও জন্যই যথেষ্ট ছিল না।

‘রবির হাতে যে পরিমাণ তরঙ্গ রয়েছে, তা দিয়ে গ্রাহকদের উন্নতমানের সেবা দেওয়া সম্ভব হবে’ বলেন তিনি।

অর্থনীতি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সম্বলিত একটি এনরয়েড অ্যাপ্লিকেশন গুগল প্লে-স্টোরে যুক্ত করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি ডিভিশন)। সেভেন্থ মার্চ স্পিচ এনালাইসিস নামের এই অ্যাপ ইনস্টল করলে বিশ্লেষণসহ বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ শুনতে পারবেন যেকেউ। এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার বারেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে অ্যাপটি।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আজ রবিবার (৭ মার্চ) নিজের ভেরিফাইড পেজে অ্যাপটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্ব ইতিহাসে যুগসৃষ্টিকারী সেরা ভাষণগুলোর একটি। বাঙালির মুক্তির সড়ক নির্মাণে অনন্য-দূরদর্শী ভাষণ এটি। মাত্র ১৯ মিনিটের এ ভাষণে ভাব, ভাষা, শব্দ চয়ন মানব যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় উপাদানে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি বাক্য প্রয়োগে উঠে এসেছে একটি জাতির ইতিহাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের সংগ্রাম ও জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা। রাজনীতির এ মহাকাব্যের বিশ্লেষণধর্মী অ্যাপ ডাউনলোড করুন গুগল প্লে স্টোর থেকে।’

অর্থনীতি

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা গ্রামে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রতি মাসে ১ হাজার ১১ কোটি টাকা পাঠান। এক বছরে এর পরিমাণ ১২ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। এটি শ্রমিকদের মোট আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ। এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের প্রায় ৬২ শতাংশ শ্রমিকই গ্রামে তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠান, যার পরিমাণ শ্রমিকপ্রতি ৩ হাজার ৮৬৯ টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় বছরে এ খাতের শ্রমিকদের গড় আয় বেড়েছে ৬৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে একজন শ্রমিকের গড় আয় ছিল ৬ হাজার ৮২০ টাকা আর ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৪০২ টাকা।

গত বছরের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এ জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১৬০টি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১১৯ জন শ্রমিকের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। গতকাল শনিবার এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। জরিপের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন জরিপকারী দলের প্রধান ড. এ কে এনামুল হক। এ সময় তৈরি পোশাক শিল্পোদ্যোক্তা, অর্থনীতিবিদ ও সরকারের প্রতিনিধিরা প্রতিবেদনের ওপর তাদের মতামত তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ খাতে কারখানার সংখ্যা কমলেও শ্রমিক সংখ্যা সে হারে কমেনি। বরং অনেক কারখানা আকারে বড় হয়েছে। বর্তমানে এ খাতের শ্রমিক সংখ্যা ৪২ লাখ ২০ হাজার। তবে ধীরে ধীরে কমছে নারী শ্রমিকের হার। পাঁচ বছর আগে এ হার ৬৫ শতাংশ হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৫৯ শতাংশে। এর কারণ হিসেবে অনেক কারখানা ওভেন থেকে নিটে পরিবর্তন হওয়া এবং কারখানায় প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করা হয়েছে। অবশ্য এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আলোচকরা। অন্যদিকে ২৪২টি কারখানার তথ্য নেওয়ার জন্য জরিপকারী দল চেষ্টা চালালেও এর মধ্যে ৮২টি কারখানা তথ্য নিতে অনুমতি দেয়নি। ফলে জরিপটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আলোচকের কেউ কেউ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আবদুস সালাম কিছু কারখানা প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এ সময় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে হারে শ্রমিকের আয় বাড়ছে, তার চাইতে বেশি হারে যদি মূল্যস্ফীতি হয়, তাহলে শ্রমিকের জীবন ধারণের জন্য বাকি টাকা আসবে কোথা থেকে। এ ক্ষেত্রে তিনি শ্রমিকের লিভিং ওয়েজ বা বাঁচার মতো মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, এটাই একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক খাত, যার দিকে আঙুল তোলা যায়। গত বছর বিশ্ববাজারে পোশাকের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে প্রায় পৌনে ৫ শতাংশ। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তেরিঙ্ক, বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিআইনেন প্রমুখ।

অর্থনীতি

রেলের সুদিনের আশায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা ১০টি ইঞ্জিন ক্রয়ে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। রেলের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুকুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের শক্তিশালী তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে রেলপথ সচিব সেলিম রেজা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বুধবার জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকে রেলওয়ে মহাপরিচালকসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। ৭ মাস ধরে পড়ে থাকা এসব ইঞ্জিন সংযোজন-বিয়োজন করে কাজে লাগানো যায় কিনা সে ধরনের প্রস্তাবও দিয়েছেন পদস্থদের কেউ। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জোরালো আপত্তিও তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইঞ্জিন ক্রয়ে যে অনিয়ম হয়েছে তার শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। ইমেজ সংকটে পড়বে রেল। শেষ পর্যন্ত আরেকটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে এ কমিটি গঠনের কথা। তবে নতুন করে কমিটি গঠনকে কালক্ষেপণ হিসাবে দেখছেন বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই। কেননা এর আগে কমিটি গঠনের নির্দেশের পরও তা কার্যকর হতে ৪০ দিনের মতো লেগে যাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ হয়নি এমন অভিযোগে গঠিত একাধিক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আসছে। আমরা আরেকটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। পুরো প্রক্রিয়ায় রেলওয়ের কেউ সম্পৃক্ত থাকলে নিশ্চিত শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমরা এসব ইঞ্জিন দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রেন চালাতে চাই। ইঞ্জিন খুব প্রয়োজন, এসব ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চালানো যায় কিংবা ত্রুটি না থাকলে এগুলো দিয়ে ট্রেন চালানো হবে। তবে অনিয়ম হলে কেউ ছাড় পাবে না।

কথা হয় বৈঠকে উপস্থিত প্রকল্প পরিচালক নূর আহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, এসব ইঞ্জিন নিয়ে কোনো নয়ছয় করা হলে আমি তার প্রতিবাদ জানাব। আমি সরকারের বেতন নেই। দেশের জন্য কাজ করব। এসব ইঞ্জিন গ্রহণ করা হলে রেলের জন্য তা বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। বুধবারের বৈঠকে হুন্দাই রোটেম ও তাদের দেশীয় এজেন্টের প্রতিনিধিরা ভুল তথ্য দিয়ে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করতে বলেছিল। তখন প্রকল্পের পক্ষ থেকে চুক্তির মূল কপিসহ অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়।

বর্তমানে রেলের লোকোমোটিভের (রেল ইঞ্জিন) প্রায় ৭৮ শতাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব ইঞ্জিনে গতি না ওঠায় রেলের অনেক কিছু নতুন হলেও ট্রেন চলছে সেই পুরনো স্টাইলে- ধীরে ধীরে। রেলকে গতিশীল করতে ১২০ থেকে ১৩০ কিমি. গতিতে ট্রেন চালাতে ৭ মাস আগে ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আনা হয় ১০টি ইঞ্জিন। এগুলো নিম্নমানের এবং চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইঞ্জিন না আনায় প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করতে রাজি না হলেও রেলওয়ের শীর্ষস্থানীয় দুই কর্মকর্তার ইচ্ছায় ইঞ্জিনগুলো প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন ছাড়াই গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফারুকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। অপর দুই সদস্য হলেন, রেলের যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিকেল) তাবাসুম বিনতে ইসলাম ও বুয়েটের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে লোকোমোটিভগুলোতে দরপত্রের কারিগরি স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (ক্যাপিটাল কম্পোনেন্ট) ইঞ্জিন, অলটারনেটর ও ট্রাকশন মোটর সংযোজিত হয়নি। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী লোকোমোটিভে ইএমডিএস-৮-৭১০জি ৩ বি-টি১ মডেলের ইঞ্জিন সংযোজন করার কথা, দেওয়া হয়েছে কম ক্ষমতার ইঞ্জিন ইএমডিএস ৮-৭১০জি ৩ বি-ইএস। টিএ ১২-সিএ ৯ মডেলের অলটারনেটর সংযোজনের শর্ত ছিল, কিন্তু দেওয়া হয়েছে টিএ৯-১২সিএস৯এসই মডেলের অলটারনেটর। এ২৯০৯-৯ মডেলের ট্রাকশন মোটর সংযোজনের শর্ত ছিল, দেওয়া হয়েছে ২৯০৯ মডেলের ট্রাকশন মোটর। লোড বক্স টেস্টিং প্ল্যান্টের আওতায় ১১ ধরনের যন্ত্রাংশ সরবরাহের চুক্তি ছিল, কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। সূত্র বলছে, রেলওয়ের একটি অসাধু চক্রের অদৃশ্য সহযোগিতায় চুক্তি ভঙ্গ করে ইঞ্জিনগুলো সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক নূর আহাম্মদ আগেই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ককে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, ইঞ্জিনগুলো রেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপযোগী নয়। ঠিকাদার হুন্দাই রোটেম তাদের ইচ্ছানুযায়ী যন্ত্রাংশ সংযোজন করেছে। দরপত্রের শর্তানুযায়ী যন্ত্রাংশ সংযোজন না করা পর্যন্ত এসব ইঞ্জিন গ্রহণের সুযোগ নেই। এসব ইঞ্জিন গ্রহণ করা হলে সেটি হবে সম্পূর্ণ অনৈতিক, বেআইনি। প্রকল্প পরিচালক রেলপথ সচিবের কাছে ১৪ ডিসেম্বর লিখিতভাবে বলেছেন, এ অনিয়মের জন্য সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল আলম চৌধুরীও দায়ী। তার বিভিন্ন সময়ে তাকে চাপ সৃষ্টি করেছেন। রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এ সরকারের আমলে প্রায় ৪শ অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী কোচ আনা হয়েছে। এগুলো ১২০-১৩০ কিমি. গতিতে চালানো সম্ভব ছিল। কিন্তু শুধু নতুন ইঞ্জিনের অভাবে অত্যাধুনিক এসব কোচ দিয়ে বেশি গতিতে ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে চুক্তি ভঙ্গ করে ইঞ্জিন আনার বিষয়টি সুরাহা না হতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অবশিষ্ট টাকা তুলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, এমন প্রতারণার শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত টাকা দেয়া যায় না। আমি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে সব জানিয়েছি। টাকা ছাড় না দেয়ার জন্য বলেছি। তারপরও যদি টাকা দেয়া হয় তার দায় আমার নয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কথা হয় রেলপথ সচিব মো. সেলিম রেজার সঙ্গে। তিনি বলেন, বুধবার এ বিষয়ে বিশেষ বৈঠক হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী যে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করা হয়নি তা প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে। চুক্তির বাইরে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করা হলো কেন বা এর সঙ্গে কারা জড়িত সবই বের হবে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে তথ্য-উপাত্ত খুঁজে বের করছি। মূল্যবান ইঞ্জিনগুলো পড়ে আছে। অতি প্রয়োজন হলেও তা ব্যবহার করতে পারছি না। ইঞ্জিন ক্রয়ে অনিয়ম, সরবরাহ এবং গ্রহণে রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা থাকলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ে মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আপনার কাছে পত্র দিয়েছেন? এ নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবকিছুই দেখছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য হলে কাউকে রক্ষা করা হবে না। সবাইকে শাস্তির আওতায় আসতে হবে।

অর্থনীতি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সাপ্তাহিক পত্রিকা নিউজউইকের সর্বশেষ সংখ্যায় গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

‘বাংলাদেশ : এশিয়ার বিস্ময়কর ডিজিটাল নেতা’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে জয় বলেছেন, সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’কর্মসূচিতে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৩ লক্ষাধিক আইটি পেশাজীবী বাংলাদেশে স্থায়ী হয়েছে। পাশাপাশি ১০ হাজার আইটি উদ্যোক্তাও তৈরি হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, এক দশক আগে বাংলাদেশ ২০২১ সাল নাগাদ প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার প্রতিজ্ঞা নেয়। ২০২১ সাল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। তখন খুব বেশি লোক এটা বিশ্বাস করতে পারেনি। প্রকল্পটির প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-২০০৯ সালে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন মাত্র ২ কোটি বাংলাদেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। কিন্তু এখন ১২ কোটি বাংলাদেশি মোবাইল ব্যবহার করে। এর পাশাপাশি কয়েক লাখ বাংলাদেশির মোবাইলে উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এদের অনেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের বাসিন্দা। এর ফলে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন ঘটেছে।

পরিকল্পনামাফিক শ্রমসাধ্য, কাগজভিত্তিক সরকারি সেবাসমূহকে সহজে ব্যবহারযোগ্য ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনভিত্তিক কর্মসূচিতে রূপান্তরিত করতে ২০০৯ সালে উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, ই-সিগনেচার ও ইলেকট্রোনিক ফাইলিংও ব্যাপকভাবে চালু করা হয় ও এতে উত্সাহ দেওয়া হয়। এতে সুফল মেলে। সরকার ৮ হাজার ৫০০ ডিজিটাল সেন্টারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে, যা এখন মানুষকে কার্যত সব ধরনের অনলাইন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল সেন্টারগুলো মানুষকে অনলাইনের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন, চাকরি ও চিকিত্সাসেবা নিতে সহায়তা করছে। এমনকি অনেক জাতীয় কর্মকাণ্ডও অনলাইনে হচ্ছে। অনলাইনে এই ডিজিটাল সেবার কারণেই মূলত গত বছর করোনা ভাইরাসের সময় প্রায় নির্বিঘ্নে সরকারি সেবাসমূহ দেওয়া হয়েছে।

একটি নতুন জুডিশিয়ারি পোর্টালের সহায়তায় আদালতগুলোও তাদের কার্যাবলী অব্যাহত রাখে। কৃষকরা অনলাইনে এগ্রিকালচারাল পোর্টারের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে। নাগরিকরা এখন সহজলভ্য মোবাইল ব্যবহার করে কোভিড-১৯ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারছে। এখন অনলাইনে অনেক প্রোগ্রাম যুক্ত হয়েছে—যেগুলোর মাধ্যমে পাসপোর্ট থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যন্ত প্রায় সব সরকারি ফরম পূরণ করা যায়। মোবাইল ফোনগুলো হচ্ছে—এই বিস্ময়কর ঘটনার মূল চাবিকাঠি। বাংলাদেশে এখন জাতীয় জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ চালু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ টোল-মুক্ত।

এছাড়া সরকার আরো জবাবদিহি এবং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অনলাইন অভিযোগের প্রতিকার ব্যবস্থা বাংলাদেশিদের সহজেই সরকারি পরিষেবা বা পণ্য সম্পর্কে অনলাইনে অভিযোগ জমা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। ব্যাপক কানেকটিভিটি অর্থনীতিতেও সহায়তা করেছে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। একটি দক্ষ, ডিজিটালি প্রস্তুত শ্রমশক্তি বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং যা এখন বছরে ৫ লাখ স্নাতক কর্মী তৈরি করছে। আজ তরুণ বাংলাদেশিরা ক্রমবর্ধমান হারে শহুরে, ভ্রাম্যমাণ এবং নতুন অর্থনীতিতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত। ডিজিটালাইজেশন থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সুফল পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৩ লক্ষাধিক প্রযুক্তিবিদ বাংলাদেশকে তাদের আবাসস্থল করে তুলেছে। প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা রয়েছে। সব মিলিয়ে তারা এখন তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা থেকে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে।

বাংলাদেশ আক্ষরিক অর্থেই তারকা বনে যাচ্ছে। দেশটি ২০১৮ সালে প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু-১ উেক্ষপণ করেছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার ছিল প্রায় ৫ শতাংশ। আজ এটি ৮ শতাংশেরও ওপরে রয়েছে। এটা সহজেই উপলব্ধি করা যায়, উচ্চ গতির সংযোগ বৃদ্ধির কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে। এমন কি আমরা আমাদের ডিজিটাল দক্ষতা রপ্তানি করছি। বাংলাদেশি প্রশিক্ষকরা মালদ্বীপ, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কায় আমাদের এশীয় প্রতিবেশীদের ডিজিটালাইজেশন সম্প্রসারণে সহায়তা করছেন। এক দশক আগে কেউই এটা সম্ভব হবে বলে ভাবেননি।

অর্থনীতি

করোনা শুরু হওয়ার পরে রেমিট্যান্স কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। পরে তা বাড়তে থাকে। এখনো সে ধারা অব্যাহত আছে। মূলত, যখন থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দেওয়া শুরু হয় তারপর থেকে প্রতিমাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে ১ হাজার ৬৬৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ৮৫ টাকা ডলার হিসেবে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৪৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৩৩ শতাংশেরও বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৭৮ কোটি ডলার বা ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৪৫ কোটি ডলার।

এই হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি ডলারের দর বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। আবার এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন উপায়ে ঘরের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সুযোগও রেমিট্যান্স বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই সুবিধাভোগীকে প্রণোদনার অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এতে অনেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন। ব্যাংকার ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে মূলত দুইটি কারণে। একটি হলো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া এবং অন্যটি ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। এখন ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৯ সালের শুরুতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। এখন তা ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা দাঁড়িয়েছে। অর্থাত্ গত এক বছরে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম এক টাকার বেশি বেড়েছে।

অর্থনীতি

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ভরিতে এক হাজার ৫১৬ টাকা কমেছে। এতে ২২ ক্যারেটের ভরি প্রতি সর্বোচ্চ দাম দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ১৫০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। বুধবার থেকে নতুন দামে বিক্রি শুরু হবে অলংকার তৈরির এ ধাতু।

মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বাজুস জানিয়েছে, ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী করোনার ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হলেও এর প্রভাব এখনও পুরোপুরিভাবে অর্থনীতিতে পড়েনি। ফলে নানা জটিল সমীকরণে বিশ্ব বাজার এখনও অস্থির। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। তাই দেশীয় জুয়েলারির বাজারে অচলাবস্থা কাটাতে ও ভোক্তা সাধারণের কথা চিন্তা করে চলতি বছরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বাজুস ভরি প্রতি সোনার দাম এক হাজার ৫১৬ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩ মার্চ থেকে কার্যকর হবে এটি। তবে অপরিবর্তিত থাকবে রুপার দাম।

বাজুস নির্ধারিত নতুন মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, ৩ মার্চ থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এক হাজার ৫১৬ টাকা কমিয়ে ৭১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের সোনা ৬৮ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ৫৯ হাজার ২৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৯৩০ টাকা।

স্বর্ণের দাম কমলেও পূর্বের নির্ধারিত দাম বহাল থাকছে রুপার ক্ষেত্রে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম এক হাজার ৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক হাজার ২২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতিতে রুপার দাম ৯৩৩ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

২ মার্চ পর্যন্ত দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের সোনা ৬৯ হাজার ৫১৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৬০ হাজার ৭৬৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অর্থনীতি

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছেন, প্রকল্প পরিচালকদের নিজ নিজ প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করতে হবে এবং কাজের গতি বাড়াতে হবে। দপ্তর, সংস্থার প্রধানদের প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন কার্যক্রম বাড়াতে হবে। কোভিড-১৯ সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে যে ধীরগতি ছিল, কাজের গতি বাড়িয়ে তা পূরণ করতে হবে।

শিল্পমন্ত্রী গতকাল রবিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। শিল্পসচিব কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মোট ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। সব মিলিয়ে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অগ্রগতি ৩২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

সভায়ে আরো জানানো হয়, রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সাতটি গুদামের নির্মাণকাজ মার্চ ২০২১ সমাপ্ত হবে। এছাড়াও এ প্রকল্পের বাকি গুদামের নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। সভায় জানানো হয়, জুন ২০২১-এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মোট ৪৮টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি প্রকল্প কার্যক্রম সমাপ্ত হবে। সভায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনিটরিং টিমের পরিদর্শনকৃত চারটি প্রকল্পের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বলেন, প্রকল্পের কাজের গুণমান সঠিক রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে এবং প্রকল্পে কাজের তদারকি বাড়াতে হবে। সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য বাফার গোডাউনের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন তিনি।