অর্থনীতি

বাক স্বাধীনতার নামে ক্ষতি করার অধিকার কারও নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিবিসির একটি প্রতিবেদন শেয়ার করে এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, কোনো দেশেই বাক স্বাধীনতা বলতে নিরঙ্কুশ কিছু নেই। কারও ক্ষতি করার অধিকার আপনার নেই।

পোস্টে তিনি বলেছেন, অনলাইনে এক পোস্টের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ফ্রান্সে বিখ্যাত এক রাজনৈতিক নেতাকে বিচারের সম্মুখিন করা হয়েছে। আমরা ফ্রান্স ও জার্মানির মতো ইউরোপীয় দেশের আদলে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করেছি।

A prominent leader of a French political party is on trial for online posts that violate their laws. We had modeled our…

জয় লিখেছেন, যারা আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন তাদের উচিত তাদের পশ্চিমা প্রভুদের কাছে কান্নাকাটি বন্ধ করা। তাদের বেশিরভাগ পশ্চিমা প্রভুর দেশে একই ধরনের আইন রয়েছে।

অর্থনীতি

উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সাইবার হামলার আশঙ্কাকে সামনে রেখে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। সার্ভার ও ডাটা সেন্টারসহ পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে আইসিটিসংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম।

গড়ে তোলা হয়েছে পৃথক মনিটরিং ইউনিট। বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ব্যাংকের বুথগুলোতে নজরদারি। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের নেয়া এসব পদক্ষেপের বিষয়টি ইতোমধ্যেই অবহিত করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

এর আগে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সাইবার হামলার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ওই চিঠির আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সাইবার হ্যাক করার চেষ্টা করছে- গোয়েন্দা সংস্থার এমন একটি রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংককে সর্তক করে দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত সব সরকারি- বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক নিজস্বভাবে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

জুলাইতে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি হবে- এমন সতর্কতা জারি করেছে একাধিক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। সেখানে উল্লেখ করা হয়, উত্তর কোরিয়ার সরকারের সঙ্গে যুক্ত এ হ্যাকাররা এটিএম বুথ ও ভুয়া লেনদেনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে।

মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এ হ্যাকার গোষ্ঠীর নাম ‘বিগল বয়েজ’। বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে তারা আবার সক্রিয় হয়েছে। তখন থেকে তারা বিভিন্ন দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় হানা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনেও সম্ভবত এ গোষ্ঠী কাজ করেছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, বিগল বয়েজ সম্ভবত বিভিন্ন হ্যাকার গোষ্ঠীর একটি প্ল্যাটফর্ম। এ সতর্কতা জারির পর ওই ‘বিগল বয়েজ’ হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশে সাইবার হামলার যে চেষ্টা করেছিল, তা ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ড রেসপন্স টিম (সার্ট)।

এখন আর ভয়ের কিছু নেই, বিপদ কেটে গেছে- বলেছেন সার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ। তার মতে, দেশের তিনটি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্কে হ্যাকার গ্রুপটির ম্যালওয়ারের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল মূলত ব্যাংক। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যাংকের অনলাইনে হানা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাইবার হামলার প্রতিরোধে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি দিয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। এরমধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ইদ্রিস এক প্রতিবেদনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সাইবার হামলা থেকে রক্ষার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- আইসিটি সিকিউরিটি পলিসি প্রণয়ণ, আইসিটি নিরাপত্তা মনিটরিং জোরদার, কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপনস টিম গঠন, ভার্চুয়াল সাইবার এবং সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ।

ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সব শাখায় আইসিটি সিকিউরিটি পলিসি গাইড অনুযায়ী সচেতনতা বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকের ডাটা সেন্টারে নিরাপত্তার জন্য সপ্তাহের ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং পদ্ধতি চালু, সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইসিটি নিরাপত্তাসংক্রান্ত গাইড অনুসরণ করা হচ্ছে।

পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর জরুরি নিরাপত্তা, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে এ কমিটি। আর হ্যাকারদের হামলা মোকাবিলায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা প্রদান করা হবে। এছাড়া ঝুঁকি নিরসনে সমন্বয় সাধনে কাজ করবে এ কমিটি।

এদিকে সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি বাণিজ্যিক মার্কেন্টাইল ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো চিঠিতে ব্যাংকটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফয়সাল হোসেন বলেন, ব্যাংকের সাইবার আক্রান্ত শনাক্ত, বিশ্লেষণ ও প্রতিরোধে সফটওয়্যার, অ্যান্টিভাইরাস ও লগ নিয়মিত পর্যবেক্ষণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা আরও জোরদারের লক্ষ্যে সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে।

ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পরিপালনের জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া হ্যাকাররা যাতে সার্ভারে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ ও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে এটিএম বুথগুলো। সেখানে আরও বলা হয়, আইসিটি সিকিউরিটি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জালিয়াতি প্রতিরোধে ডিজিটাল লেনদেন ও পেমেন্টে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অসচেতনতাই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অন্যতম দুর্বল দিক বা বাধা। ফলে সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে ‘হিউম্যান ফায়ারওয়াল’ গঠন, অভ্যন্তরীণ হুমকি হ্রাসের লক্ষ্যে ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত জিঙ্কসমৃদ্ধ চিকন চালের জাত ‘ব্রি ধান ১০০’ এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত লবণাক্ততাসহিষ্ণু দেশি পাটের জাত ‘বিজেআরআই দেশি পাট-১০’ অবমুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।

মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি মো. মেসবাহুল ইসলাম তাতে সভাপতিত্ব করেন।

ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ব্রি উদ্ভাবিত শততম জাত ‘ব্রি ধান১০০’ অবমুক্ত করবেন তারা।

নতুন এই জাতের ধান থেকে যে চাল হবে, তার প্রতি কেজিতে জিঙ্কের পরিমাণ হবে ২৫ দশমিক ৭০ মিলিগ্রাম। চাল হবে আগের জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের চেয়ে সরু, ভাত হবে ঝরঝরে।

দেশের ১০টি স্থানে ট্রায়াল করে গড় ফলন পাওয়া গেছে প্রতি হেক্টরে ৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন।

বোরো মৌসুমে চাষের জন্য অনুমোদন পাওয়া এ জাতের জীবনকাল ১৪৮ দিন। অর্থাৎ, ১৪৮ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যাবে।

শাহজাহান কবীর বলেন, ‘ব্রি ধান ১০০’ মুজিব শতবর্ষে ব্রির শততম জাত হিসেবে অবমুক্ত হওয়ায় একটি বিশেষত্ব পাবে। এ জাতের ফলন ব্রি ধান-২৯ থেকে বেশি এবং জীবনকাল ব্রিধান ২৮ -এর মত, যা আমাদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।

“আমাদের পরিকল্পনা, অতি দ্রুত এ জাতটি কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে একদিকে উৎপাদন বৃদ্ধি ও অন্যদিকে পুষ্টির যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।”

আসছে জিঙ্কসমৃদ্ধ চিকন চালের জাত ব্রি-১০০

জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি কৃষি সচিব মেসবাহুল ইসলাম বলেন, “আশা করা যায়, এটি একটি মেগা ভ্যারাইটি হবে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির অধিকাংশ ক্যালরি, প্রোটিন ও মিনারেল আসে ভাত থেকে। ভাত তাদের কাছে সহজলভ্য।”

বিজেআরআই -দেশি পাট-১০ জাতটি স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যম মাত্রার লবণাক্ততাসহিষ্ণু। এটি দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় বপন উপযোগী।

এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, গাছের বয়স ১০৫-১১৫ দিন হলেই কেটে সেই জমিতে রোপা আমন ধান লাগানো যায় এবং আমন কেটে রবি ফসল চাষ করা যায়।

খুলনা ও বরিশালে পাঁচটি ট্রায়ালে হেক্টর প্রতি আঁশের ফলন ২ দশমিক ৫৭ টন ও পাটকাঠির ফলন ৭ দশমিক ২১ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।

এদিন বীজ বোর্ডের সভায় আগামী মৌসুমের জন্য পাটবীজ আমদানির পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১-২২ উৎপাদন বর্ষে পাটবীজের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন।

বীজ ডিলার নিবন্ধন ও নবায়নের কাজটিও সহজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। এখন থেকে বীজ ডিলারদের এব বছরের পরিবর্তে একসঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হবে।

মেসবাহুল ইসলাম বলেন, “সেবা সহজীকরণের ফলে ডিলারদের প্রতিবছর নবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না। বীজ ডিলারদের হয়রানি অনেক হ্রাস পাবে।”

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বিএডিসির চেয়ারম্যন মো. সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর, বিজেআরআইর মহাপরিচালক ড. আশম আনোয়ারুল হকসহ অন্যান্য সংস্থা প্রধান ও বীজ বোর্ডের সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর ১৭ মার্চ থেকে শুরুর হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত আর তা হচ্ছে না। রোববার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমন তথ্য দিয়েছেন।

পূর্বাচলের চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এই মেলা হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, আমরা এ বছর মেলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ১৭ মার্চকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রস্তুতি এগুচ্ছিল। এ ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে একটা সম্মতিও পেয়েছিলাম।

‘কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এটাকে একটু স্লো করার জন্য। আশা করি এ বছর একটা সময়ে আমরা মেলাটা করতে পারব।’

কবে নাগাদ মেলা হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, কখন শুরু হবে তা নির্ভর করছে উপরওয়ালার ওপরে। পরবর্তীতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাগুলো পহেলা জানুয়ারিতেই শুরু হবে।

সচিবালয়ে প্রদর্শনী কেন্দ্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে কথা বলেন তিনি।

পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ২০ একর জমির ওপর ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর মেলার অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। গত বছর ৩০ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শেষ করার ঘোষণা দেয় তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে সারা বছরই এখানে মেলা, বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনী, সোর্সিং প্রোগ্রাম হবে। পাশাপাশি বছরে দুবার নিজস্ব পণ্য প্রদর্শনী করবে চীন।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানান হয়, বাণিজ্য মেলা ও প্রদর্শনীর স্থায়ী এই অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে চীন সরকার অনুদান হিসাবে দিয়েছে ৫২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ২৩১ কোটি ও ইপিবির নিজস্ব তহবিল থেকে ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে এই প্রকল্পে।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন ও ইপিবি কর্মকর্তারা সচিবালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

পরিবেশ সহনশীল গ্রিন অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরকে। এজন্য বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (সিইটিপি), ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট, স্টিম নেটওয়ার্ক, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বায়োগ্যাস প্লান্ট, ওয়েস্ট সোর্টিং ফ্যাসিলিটি, রুফটপ ও ফ্লোটিং সোলার স্থাপনসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) গত সভায় এজন্য ৪ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক ৩৯৬৭ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) চলতি বছর থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

এ বিষয়ে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’-এর আওতাধীন মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের পারিপার্শ্বিক এলাকায় অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের টেকসই ও পরিবেশ সহনীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ফলে দেশীয় ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ, দ্রুত শিল্পায়ন, পণ্যবহুমুখীকরণ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীসহ ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে বিধায় তা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে।

অর্থনীতি

নোবেল বিজয়ী ভারতীয় বাঙালী অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধর্মনিরপেক্ষতার দর্শন নিয়ে সম্প্রতি লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর এই বক্তৃতা অবলম্বনে আজ ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নীচে নিবন্ধটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-

‘‘কেন তিনি আজ এত প্রাসঙ্গিক, শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে”-অমর্ত্য সেন ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে একটা কথা মনে হচ্ছে। তিনি শুধু বাংলার বন্ধু ছিলেন না, তাঁর ভূমিকা ছিল আরও অনেক বড়, এবং অতুলনীয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মহান রাজনৈতিক নায়ক, বাংলার সবচেয়ে সমাদৃত মানুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। বাংলাদেশের জনজীবনে তাঁর প্রভাব আজও বিপুল। তাঁকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি যে এর চেয়ে বড় কোনও অভিধা চাননি, সেটা তাঁর সম্পর্কে আমাদের একটা সত্য জানায়-তিনি নাম কিনতে চাননি, মানুষ তাঁকে অন্তর থেকে ভালবাসত।

এক জন অতি চমৎকার মানুষ এবং এক মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে, তাঁর চিন্তাভাবনা কেন আজকের পক্ষেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে-বিষয়ে কিছু কথা বলা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাঁর পরিচ্ছন্ন চিন্তা ও দৃষ্টির সম্পদ কেউ আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। তাঁর সেই চিন্তাভাবনা আজ আমাদের বড় রকমের সহায় হতে পারে। উপমহাদেশ আজ আদর্শগত বিভ্রান্তির শিকার হয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে, এই দুর্দিনে পথনির্দেশ এবং প্রেরণার জন্য আমাদের বঙ্গবন্ধুর কাছে সাহায্য চাইবার যথেষ্ট কারণ আছে। শেখ মুজিবের চিন্তা এবং বিচার-বিশ্লেষণ যে সব দিক থেকে আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, এখানে তার কয়েকটির উল্লেখ করতে চাই।

প্রথমত, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা হিসেবে শেখ মুজিব ছিলেন অগ্রগণ্য। তাঁর দৃষ্টান্ত থেকে এই বিষয়ে সব দেশেরই শেখার আছে। বর্তমান ভারতের পক্ষে তো বটেই, বঙ্গবন্ধুর ধারণা ও চিন্তা উপমহাদেশের সব দেশের পক্ষেই শিক্ষণীয়। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে বাংলাদেশ অনেক উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তিনি কেমন বাংলাদেশ চান, বঙ্গবন্ধু সে কথা পরিষ্কার করে বলেছিলেন। তাই, আমরা খুব সহজেই ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারে তাঁর অবস্থানটা বুঝে নিতে পারি।

এ-কথা জোর দিয়ে বলব যে, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং লোকেদের স্বক্ষমতা-র মধ্যে যোগসূত্রটি শেখ মুজিবকে প্রভূত অনুপ্রেরণা দিত (স্বক্ষমতা শব্দটি ইংরাজি ‘ফ্রিডম’-এর প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করছি)। ইউরোপে ধর্মনিরপেক্ষতার যে ধারণা বহুলপ্রচলিত, তাতে ধর্মের প্রতি সাধারণ ভাবে একটা বিরূপতা পোষণ করা হয়ে থাকে। এই ধারায় মনে করা হয়, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র কখনও কোনও ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মকে উৎসাহ দেবে না, বা সাহায্য করবে না। আমেরিকায় মাঝেমধ্যে এই গোত্রের ধর্মনিরপেক্ষতা অনুশীলনের চেষ্টা হয়েছে, তবে সে দেশের বেশির ভাগ মানুষের মনে ঈশ্বর এবং খ্রিস্টধর্মের আসন এতটাই পাকা যে, সেই উদ্যোগ কখনওই খুব একটা এগোতে পারেনি। যে কোনও রকমের ধর্মীয় আচার থেকে রাষ্ট্রকে দূরে রাখতে ফরাসিরা তুলনায় অনেক বেশি সফল, কিন্তু ধর্মকে সম্পূর্ণ বর্জন করে চলার চরম ধর্মনিরপেক্ষতার লক্ষ্য সে দেশেও দূরেই থেকে গেছে। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা পরিষ্কার: ধর্মনিরপেক্ষতার এমন কোনও অর্থ কখনওই তাঁর চিন্তায় স্থান পায়নি, যা মানুষের ধর্মাচরণের স্বক্ষমতাকে অস্বীকার করবে। যাঁদের ধর্মবিশ্বাস গভীর, তাঁদের কাছে এই স্বক্ষমতা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই কারণেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্ম-বিরোধিতা হিসেবে দেখবার চিন্তাধারাকে মুজিবুর রহমান বিশেষ মূল্য দেননি। ধর্মীয় আচারকে এড়িয়ে চলার বা ‘ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার’ তাগিদে ধর্মাচরণের স্বক্ষমতাকে অস্বীকার করার কোনও প্রয়োজন তিনি বোধ করেননি। ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ অনুসরণ অর্থে শেখ মুজিব ঠিক কী বুঝতে চেয়েছিলেন? ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকায় বাংলাদেশের আইনসভায় সে-দিনের নবীন ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের সংবিধান গ্রহণের সময় তিনি বলেছিলেন:
‘আমরা ধর্মাচরণ বন্ধ করব না… মুসলমানরা তাঁদের ধর্ম পালন করবেন… হিন্দুরা তাঁদের ধর্ম পালন করবেন… বৌদ্ধরা তাঁদের ধর্ম পালন করবেন… খ্রিস্টানরা তাঁদের ধর্ম পালন করবেন… আমাদের আপত্তি শুধু ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারে।”
ধর্মাচরণের স্বক্ষমতাকে এখানে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যাকে বর্জন করতে বলা হচ্ছে তা হল ধর্মকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা, তাকে রাজনীতির উপকরণ বানানো। এটি এক ধরনের স্বক্ষমতা-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা রাষ্ট্রকে লোকের নিজের নিজের ধর্মাচরণে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করে। বস্তুত, আমরা আরও এক পা এগিয়ে গিয়ে বলতে পারি: মানুষকে স্ব-ইচ্ছা অনুযায়ী ধর্মাচরণের স্বক্ষমতা ভোগ করতে সাহায্য করা উচিত, কেউ যাতে কারও ধর্মাচরণে বাধা দিতে না পারে সে জন্য যা করণীয় করা উচিত। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের ভূমিকা আছে।

দুঃখের কথা হল, ইদানীং ভারতে এই নীতি ও আদর্শ বেশ বড় রকমের বাধার সম্মুখীন। বিভিন্ন ধর্মের প্রতি আচরণে প্রায়শই বৈষম্য করা হচ্ছে, হিন্দুত্বের প্রতি পক্ষপাতিত্ব সম্পন্ন কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে, এমনকি নাগরিকত্বের প্রশ্নেও, তাদের পছন্দসই ধর্মগোষ্ঠীর মানুষকে বিশেষ সুযোগসুবিধা দিচ্ছে। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিশেষ সম্প্রদায়ের (যেমন, মুসলমান, বা নিম্নবর্ণের হিন্দু বা আদিবাসী) বিশেষ বিশেষ খাদ্য (যেমন, গোমাংস) নিষিদ্ধ করার ফরমান জারি হয়েছে, যেহেতু এ ব্যাপারে অন্য ধর্মের কিছু লোকের (বিশেষত গোঁড়া হিন্দুদের) আপত্তি আছে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বিবাহে নিয়ন্ত্রণ, কখনও বা নিষেধাজ্ঞা, জারি করা হচ্ছে-সংশ্লিষ্ট ধর্মমতে এমন বিবাহ নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও। এবং, বিবাহের উদ্দেশ্যে জোর করে মেয়েদের ধর্মান্তরিত করানোর নানা কাহিনি প্রচার করা হচ্ছে, অথচ বিভিন্ন মামলার সূত্রে প্রায়শই ধরা পড়েছে যে এ-সব গল্প একেবারেই ভুয়ো।

ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে মোগল সম্রাট আকবর যথেষ্ট পরিষ্কার ধারণা নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল এই যে, লোকে নিজে যে ভাবে যে ধর্ম পালন করতে চায় তাতে কোনও বাধা দেওয়া উচিত নয়। রাষ্ট্র এই স্বক্ষমতা রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে, কিন্তু কোনও ধর্মকে বিশেষ সুবিধা দেবে না।

দেখা যাচ্ছে, এখানে ধর্মনিরপেক্ষতার দু’টি নীতি কাজ করছে: (১) বিভিন্ন ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের আচরণে কোনও ‘অ-সমতা’ থাকবে না (আকবর এই ব্যাপারটিতে জোর দিয়েছিলেন) এবং (২) ‘ধর্মকে রাজনৈতিক কারণে বা প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে না’ (বঙ্গবন্ধুর কাছে যা গুরুত্ব পেয়েছিল)। এ-দুটো ঠিক এক নয়। কিন্তু দুই আদর্শের যে কোনওটি লঙ্ঘিত হলে লোকের ধর্মীয় স্বক্ষমতা একই ধরনের বাধার সম্মুখীন হবে, কারণ সাধারণত এক ধর্মের তুলনায় অন্য ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কারণেই ধর্মীয় স্বক্ষমতা খর্ব করা হয়ে থাকে। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা লঙ্ঘনের ঘটনাগুলিতেও এর অনেক প্রমাণ মেলে।

শেখ মুজিব, এবং আকবর, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাটি যে ভাবে পরিষ্কার করেছিলেন, তা থেকে শিক্ষা নেওয়া কেবল ভারতে নয়, অনেক দেশেই গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকায় বা ইউরোপে অনুরূপ নানা বৈষম্য, যেমন জাতিগত বা নৃগোষ্ঠীগত অসাম্য বিষয়ক রাজনৈতিক আলোচনাতেও এই ধারণা প্রাসঙ্গিক। উপমহাদেশে, পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো দেশে সমকালীন নানা বিতর্কে ও বিক্ষোভে জড়িত বিভিন্ন প্রশ্নেও তা আলো ফেলতে পারে।

ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে দেখলে বোঝা যায়, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিটা বিশেষ উদ্বেগজনক, কারণ অনেকগুলো দশক ধরে এ-দেশে ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের চর্চা এই সে-দিন অবধি অনেক দেশের তুলনায় বেশ সবল ছিল। দেশের কিছু রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যেমন, পশ্চিমবঙ্গে আগামী এপ্রিল-মে মাসে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। ধর্মনিরপেক্ষতার মূল প্রশ্নগুলি নিয়ে, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু তার যে মৌলিক শর্তাবলির কথা বলেছিলেন সেই সব বিষয়ে এখন বড় রকমের আলোচনার প্রয়োজন। তার কারণ, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ মেনে চলার- এবং লঙ্ঘন করার- ব্যাপারে নানা রাজনৈতিক দলের আচরণ কিছু রাজ্যের ভোটের লড়াইয়ে বিশেষ প্রাসঙ্গিক। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার না করার যে নীতিতে বঙ্গবন্ধু জোর দিয়েছিলেন, এই প্রসঙ্গে তা অতি গুরুত্বপূর্ণ- শুধু বাংলা নয়, গোটা বিশ্বের পক্ষেই। বঙ্গবন্ধুকে তাই ‘বিশ্ববন্ধু’ হিসেবেও আমরা সম্মান জানাতে পারি।

শেখ মুজিব যে কেবল ধর্মনিরপেক্ষতাকে স্বক্ষমতা প্রসারের জায়গা থেকে দেখেছিলেন তা নয়, সাধারণ ভাবেই স্বক্ষমতার গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল। বস্তুত, যে মাতৃভাষার দাবি আদায়ের সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, স্বক্ষমতার প্রশ্নটি ছিল তার একেবারে কেন্দ্রে, মাতৃভাষা ব্যবহারের স্বক্ষমতার দাবির সঙ্গে বাঙালি জাতির ধারণাটিও ওই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।

এটা একটা প্রধান প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায় উপমহাদেশের বিভিন্ন বিষয়েই, যেমন শ্রীলঙ্কায় সিংহলি ও তামিল ভাষার আপেক্ষিক গুরুত্বের ব্যাপারে। শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক নেতারা শেখ মুজিবের ভাষা বিষয়ক চিন্তাভাবনার প্রতি মনোযোগী হলে এবং মাতৃভাষার প্রতি লোকের মমতা ও শ্রদ্ধাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন স্বীকার করলে হয়তো সে দেশের যুদ্ধ এবং বিপুল রক্তক্ষয় অনেকটাই কম হতে পারত। ভাষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সামাজিক বিশ্লেষণের যে প্রজ্ঞা, তার গুরুত্ব বাংলার সীমা ছাড়িয়ে বহু দূরে প্রসারিত।
ভারতের স্বাধীনতার অল্প কালের মধ্যেই সমস্ত প্রধান ভাষাকে দেশের সংবিধানে জাতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়ার ফলে অনেক গুরুতর সমস্যা এড়ানো গিয়েছিল। সেটা শেখ মুজিব স্বদেশের বড় নেতা হয়ে ওঠার অনেক আগেকার কথা বটে, কিন্তু তাঁর চিন্তাধারার কিছু কিছু দিক ভারতের এই ভাষা-নীতির ক্ষেত্রেও প্রাসঙ্গিক। জাতীয় ভাষার সাংবিধানিক মর্যাদা প্রধান ভাষাগুলিকে গুরুত্ব দিয়েছিল বটে, কিন্তু হিন্দি ও ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহারের ফলে অন্য প্রধান ভারতীয় ভাষাগুলির সঙ্গে তাদের একটা অসমতা তৈরি হয়, যার কিছুটা হয়তো অনিবার্য ছিল। যাঁদের মাতৃভাষা হিন্দি (বা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে, ইংরেজি), অন্যদের তুলনায় তাঁরা কিছু বাড়তি সুবিধা পেয়ে যান। সরকারি কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাষার মধ্যে সমতা বিধানের প্রশ্নটি বাস্তবের সাপেক্ষেই বিচার করতে হবে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে অসাম্যের ব্যাপারটাকে হয়তো আরও বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখার দরকার আছে।

এ-সমস্যাটা হয়তো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও কিছুটা প্রাসঙ্গিক, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে প্রশ্নটি আরও অনেক বড়। সেখানকার ভাষাগুলি সংস্কৃত থেকে আসেনি, এসেছে প্রধানত প্রাচীন তামিল থেকে। একটু অতিসরলীকরণের ঝুঁকি নিয়ে বলা যায়, শেখ মুজিব বরাবর স্বক্ষমতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, এবং মর্যাদা, স্বীকৃতি, সরকারি কাজে বা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের মতো বিষয়গুলিকে এই বৃহত্তর প্রেক্ষাপটেই দেখা দরকার।

শেষ করার আগে সমতার প্রসার বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাভাবনা নিয়ে দু’একটা কথা বলা যেতে পারে। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অবিভক্ত পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার ও স্বাধীনতার যে দাবি তোলে, তার পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছিল সমতা প্রসারের প্রশ্ন। ১৯৭০-এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের প্রচারপর্বে বিভিন্ন ভাষণে দেশের নানা বর্গের মানুষের সামনে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সমতার প্রশ্নটিকে পেশ করতে দ্বিধাবোধ করেননি। হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সমতার প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দিয়ে তার ভিত্তিতে তিনি এই নীতির উপর জোর দেন যে, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের অন্য সমস্ত নাগরিকের সমান অধিকার এবং সুযোগ ভোগ করার স্বত্ব থাকা চাই।’

পূর্ব পাকিস্তানে মুসলমানদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল, কিন্তু সমতার আদর্শ থেকে সংখ্যালঘুদের ন্যায্য অধিকারের এই দাবি ঘোষণা আওয়ামী লীগের সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি, তার একটা বড় কারণ ছিল বঙ্গবন্ধুর নীতিনিষ্ঠ সওয়াল (জাতীয় আইনসভায় পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ)। ন্যায্য লক্ষ্য পূরণের জন্য সুষ্ঠু যুক্তিপ্রয়োগ যে কার্যকর হতে পারে, বঙ্গবন্ধুর জীবনের ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নানা কাহিনিতে তার প্রমাণ আছে। সেটাও কম শিক্ষণীয় নয়।

ইতিহাসের একটি ব্যাপার উল্লেখ করে কথা শেষ করব। বঙ্গবন্ধু তাঁর নৈতিক আদর্শগুলির সঙ্গে বাংলার পুরনো মূল্যবোধের সম্পর্কের কথা অনেক বারই বলেছেন। সমতার প্রতি তাঁর আগ্রহের তেমন কোনও ঐতিহাসিক যোগসূত্র আছে কি? উত্তরে বলা যায়: হ্যাঁ, আছে। যেমন, অনেক কাল আগে থেকেই বাংলার সমাজসচেতন কবি ও চারণদের কবিতায় সমতার ধারণাটি গুরুত্ব পেয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের মতো বিদ্রোহী কবির লেখায় তো বটেই, একেবারে প্রথম যুগের বাংলা কবিতাতেও এমন সূত্রের সন্ধান আছে।

একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক। দশম শতাব্দীর বাংলা ভাষায় লেখা চর্যাপদ-এ আমরা পড়ি, বৌদ্ধ কবি সিদ্ধাচার্য ভুসুকু তাঁর নদীপথে পূর্ববঙ্গে যাওয়ার কথা লিখছেন। পূর্বগামী সেই যাত্রাপথে তাঁর নানা অভিজ্ঞতা হয়, যেমন, জলদস্যুরা তাঁর সব কিছু লুণ্ঠন করে নিয়ে যায় (ভুসুকু বলেন, তিনি সে জন্য বিলাপ করবেন না), আবার সমাজের সবচেয়ে নিম্নবর্গের এক জন নারীর-এক চন্ডালিকার সঙ্গে- তাঁর বিবাহ হয় (তিনি এই বিবাহে পুলকিত হন) এবং সিদ্ধাচার্য আজ থেকে হাজার বছর আগে সমতার বন্দনা করে লেখেন:

বাজ ণাব পাড়ী পঁউয়া খালেঁ বাহিউ।
অদঅ বঙ্গালে দেশ লুড়ি।।
আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী।নিঅ ঘরিণী চন্ডালী লেলী।।

(পেড়ে এনে বজ্রনাও পদ্মখালে বাওয়া/ লুট করে নিল দেশ অদ্বয় বঙ্গাল/ আজকে ভুসুকু হল (জাতিতে) বঙ্গালি/ চন্ডালীকে (ভুসুকুর) পত্নীরূপে পাওয়া।)

দেখা যাচ্ছে, হাজার বছর আগেও এক জন ‘যথার্থ বাঙালি’র মূল্যবোধগুলি কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হত। মনে রাখা দরকার, এই মূল্যবোধগুলোর অন্যতম ছিল সমতার সমাদর। এখানে ইতিহাসের ধারাবাহিকতার কিছু প্রমাণ আছে। সিদ্ধাচার্য যাঁদের ‘যথার্থ বাঙালি’ বলেছেন, তাঁরা যে আদর্শগুলির সমাদর করতেন, সেই ঐতিহ্যবাহিত মূল্যবোধের সঙ্গে আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের সংযোগ সাধন করা যায়, যে ধর্মনিরপেক্ষতা আজ আমাদের পক্ষে বিশেষ দরকারি। এই বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বল চিন্তাভাবনা আমাদের প্রেরণা দিতে পারে।’’

(২৭ জানুয়ারি ২০২১ লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স আয়োজিত সভায় প্রদত্ত বক্তৃতা অবলম্বনে লেখা)

অর্থনীতি

দেশের শেয়ারবাজার দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় চলছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই মূল্যসূচক বাড়ছে। একইসঙ্গে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে নতুন বিনিয়োগকারীদের বাজারের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। পুরাতনদের মধ্যে যারা নিষ্ক্রিয় ছিল তাদের অনেকেই বাজারে ফিরছেন।

সেন্ট্রাল ডিপজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) হিসাবে দেখা গেছে, গত এক মাসেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রায় ৮২ হাজার নতুন বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলেছেন। প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি যেকোনো মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য বিও অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক। বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়ার অর্থ হলো শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধসের পর থেকে বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি বাজারমুখী হতে চায়নি। এরপর মাঝে মধ্যে বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা বেশিদিন টেকসই হয়নি। ফলে গত ছয় বছরে ৯ লাখের মতো বিও অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। নিয়মানুযায়ী, প্রতি বছর জুন মাসে বিও অ্যাকাউন্ট ফি পরিশোধ না করলে অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি ৪৫০ টাকা।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শেয়ারবাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, বাংলাদেশে সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বড় পরিবর্তন, বাজারে নতুন নতুন কোম্পানির আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) অফার, ব্যাংকে সুদের হার কমে যাওয়া, করোনা ভাইরাস পরবর্তীতে অন্য ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা প্রভৃতি কারণে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। এতে পুরাতনদের পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারীরাও বাজারে ঢুকছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসাইন বলেন, বিভিন্ন কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসেন। সাধারণত বাজার যখন ভালো হয় তখন বেশি বিনিয়োগকারী আসেন। এসব বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগই হয়তো আগে ছিলেন। দীর্ঘদিন বাজার ভালো না থাকায় তারা বিও অ্যাকাউন্ট ফি বাবদ যে অর্থ দিতে হয় সেটাও জমা দেননি। ফলে তাদের অ্যাকাউন্ট ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে গিয়েছিল। তারা আবার ফিরেছেন। আবার নতুন বিনিয়োগকারীও শেয়ারবাজারে ঢুকছে।

তিনি বলেন, সাধারণত যখন ভালো আইপিও বাজারে আসে তখন নতুন বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসে। আবার পুরাতনদেরও অনেকে সক্রিয় হন। সম্প্রতি মোবাইল অপারেটর রবির আইপিও এসেছে। এটা কেনার জন্য অনেকে নতুন করে বাজারে ঢুকেছেন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের অনেক সম্ভাবনা আছে। এখনো পর্যন্ত বেশিরভাগ শেয়ারের দাম প্রকৃত দামের চেয়ে নিচে আছে। ইতিমধ্যেই মার্জিন ঋণের সুদহার কমানো হয়েছে। বাজারে তারল্য (নগদ টাকা) আছে। কোভিড পরবর্তীতে অন্য ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব চলছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, কোভিড পরবর্তীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া নতুন কমিশন এবং তাদের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সব মিলিয়ে বাজার ভালো হচ্ছে এজন্যই বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ারবাজারে আসছে।

সিডিবিএলের তথ্যমতে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৫২ হাজার ১৬৮টি। আর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯৭টি। সেই হিসেবে বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৮১ হাজার ৮২৯টি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে অবস্থানকারী বিনিয়োগকারীরা নতুন করে ৭৬ হাজার ৩৮৯টি বিও হিসাব খুলেছেন। এর মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসের শেষ দিন দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৬টি। আর জানুয়ারি মাসের শেষে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭৫টি।

জানুয়ারি মাসে বিদেশি অবস্থানকারী বিনিয়োগকারীরা নতুন করে ৫ হাজার ৫৭০টি বিও হিসাব খুলেছে। ডিসেম্বর মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৯টিতে। জানুয়ারি মাসের শেষে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪২৯টি। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিন কোম্পানি বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৮৩৫টি। আর জানুয়ারি মাসের শেষে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৩টি।

অর্থনীতি

দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাড়াতে অঞ্চলভিত্তিক কৃষি সম্ভাবনা ধরে গবেষণায় জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রকাশিত ‘১০০ কৃষি প্রযুক্তি অ্যাটলাস’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “গবেষণাকে আমরা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিই। আমি এখনো মনে করি, গবেষণাকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।”

দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য চাহিদা বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের মাটি খুব উর্বর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলতেন, ‘আমার মাটি এত উর্বর যে সেখানে একটা বীজ পড়লেই একটা গাছ হয়, গাছে ফল হয়। তাহলে এদেশের মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে কেন।’ সেই চিন্তা থেকেই তিনি সমস্ত পদক্ষেপ নিতেন। এর জন্যই গবেষণা একান্তভাবে প্রয়োজন।”

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ। তার আগে গবেষণা ছিল ‘উপেক্ষিত’।

“আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেয়। কৃষি নিয়ে গবেষণা যত বাড়বে, তত বেশি কৃষিপণ্য উৎপাদন করা যাবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের কৃষিপণ্য যাতে মানসম্মত করা যায়, সেজন্য পরীক্ষাগার আরও তৈরি করা দরকার। সেই সাথে আমাদের অঞ্চলভিত্তিক পরীক্ষাগার নির্মাণ করা প্রয়োজন। দেশের মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ বিবেচনা করে আমাদের কোন অঞ্চলে কোন ফসল সবচেয়ে ভালো এবং বেশি উৎপাদন হয় এবং উন্নত মানের উৎপাদন হতে পারে, তারও একটা জোনম্যাপ করা দরকার। এই ম্যাপিংটা খুব বেশি প্রয়োজন।”

দেশীয় বাজারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও যেন রপ্তানি করা যায়, সেটা মাথায় রেখে কৃষি পরিকল্পনা সাজানোর ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

“আমাদের মাটির উর্বরতা, সেখানকার পানির অবস্থা এবং আবহাওয়া, জলবায়ু, পরিবেশ- এগুলো বিবেচনা করে আমাদের কোন অঞ্চলে কোন ধরনের ফসল বেশি হবে, ভালো হবে, উন্নত মানের হবে, বেশি উৎপাদন হবে, অল্প খরচে উৎপাদন হবে- তার একটা… আমি মনে করি এলাকা ভাগ করে সেইভাবে আমরা যাতে উৎপাদন করতে পারি, তার উপর একটু গবেষণা করা প্রয়োজন।”

১০০ কৃষি প্রযুক্তি অ্যাটলাস

গত দশ বছরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-বিএআরসির উদ্যোগে যে ৫৯১টি প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে, তার মধ্যে থেকে ১০০টি সেরা প্রযুক্তি বাছাই করে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে ‘১০০ কৃষি প্রযুক্তি অ্যাটলাস’-এ।

জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমের (এনএআরএস) ‘অ্যাপেক্স বডি’ হিসেবে বিএআরসি ১৩টি জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ে করে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের এই কাজ করছে ২০০৯ সাল থেকে।

অ্যাটলাসে ধানের ১৪টি, পাটের ৮টি, চিনির ৪টি, গম ও ভুট্টার ৫টি, ডাল, তেলবীজ ও মশলার ৮টি, শাকসবজির ৮টি, ফলের ১০টি, চায়ের ৫টি, তুলার ৫টি, বনজ এবং বাঁশের ৫টি, রেশম চাষের ৪টি, মৃত্তিকা উন্নয়নের ৪টি, হাঁস-মুরগি ও পশুসম্পদ পালনের ৫টি, মৎস্য ও জলজ প্রাণী পালনের ৮টি, সেচ ও বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ৩টি এবং কৃষি যন্ত্রপাতি প্রযুক্তির ৪টিসহ মোট ১০০টি কৃষি প্রযুক্তি অর্ন্তভুক্ত হয়েছে।

পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহারে ২৫টি সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হয়েছে এই অ্যাটলাসে, যেখানে বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে।

বিএআরসি বলছে, খাদ্য ও পুষ্টিতে দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কৃষিতে চাহিদা পূরণেও প্রযুক্তিগুলো সহায়ক হবে।

সারা দেশে একশ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার চিন্তা আছে এটা যে ওইসব অঞ্চলে কী ধরনের কাঁচামাল আমরা উৎপাদন করতে পারি, বিশেষ করে আমার কৃষিপণ্য, সেই কৃষিপণ্যটা কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যায় বা কৃষি প্রক্রিয়াজাত করা যায়, যা আমি বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। আমি যদি সেইসব অঞ্চলে সেই ধরনের বিনিয়োগের ব্যবস্থা করি… দেশি -বিদেশি সব বিনিয়োগের, তাহলে কিন্ত বাংলাদেশের মানুষের আর কষ্ট থাকবে না, আর্থিকভাবেও আমরা আরো স্বচ্ছল হতে পারব, আর রপ্তানিযোগ্য পণ্য আমাদের বৃদ্ধি পাবে।”

দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ‘আরো উন্নত’ হচ্ছে এবং তাদের ‘ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বাভাবিকভাবে আমি যখনই যা উৎপাদন করব, আমার এটা মনে রাখতে হবে যে আমার দেশের বাজার আরো বাড়াতে হবে, অর্থাৎ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে।

“সেই ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে তাদের চাহিদা যাতে আমরা পূরণ করতে পারি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা যেন বিদেশে রপ্তানি করতে পারি, সেভাবে আমাদের পণ্য উৎপাদন করা…।

“এবং যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষির উপর নির্ভরশীল, কাজেই আমি সব সময় কৃষিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আর এই কৃষিভিত্তিক শিল্প আমাদের গড়ে তোলা একান্তভাবে প্রয়োজন এবং সেটাই আমরা করতে চাই এবং সেটাই আমরা করব।”

কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে গবেষকদের আরও বেশি সহযোগিতা করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তারা যেন নির্বিঘ্নে গবেষণা চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য তাদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ চান তিনি।

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা স্বাভাবিক রাখা এবং দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখার জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলামসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ০২বিলিয়ন ডলার। এই রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে দশ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মত ৪৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করে এক মাস না যেতেই রিজার্ভ আবার ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করল।

আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। তার আগে রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলার পেরিয়ে যাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভে ছিল ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

মহামারীর মধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।

সবমিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ২২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের ১ দশমিক ১ শতাংশ কম।

বিদেশি ঋণ-সহায়তার ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ২৮৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে এই ছয় মাসে আমদানি ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।

অর্থনীতি

‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেস রেকর্ডে উঠানো হবে। এই প্রতিকৃতি থেকে আমাদের অর্জনও আছে।

প্রায় তিন হাজার মণ ধান পাবো। এই ধান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে দেওয়া হবে।

শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ বিষয়ে আমরা ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী এই কর্ম এগিয়ে যাচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আমরা ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ শিল্প কর্মের সব তথ্য গিনেস বুকে পাঠাবো।

‘আমরা বঙ্গবন্ধুকে সারা বিশ্বে তুলে ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধু মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি তৃণমূলের প্রান্তিক মানুষের কথা বলতেন। তার জন্মশত বর্ষে এটা শ্রেষ্ট কর্ম হবে বলে আমি মনে করি। কারণ ২০১৯ সালে চীনে গড়া হয়েছিল ৭৫ বিঘা জমিতে একটি শস্যচিত্র, যার আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। আর বগুড়ার শেরপুরের বালিন্দার শস্যচিত্রের আয়তন দাঁড়াচ্ছে ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। মোট ১২০ বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে। মূল শিল্পকর্মের ক্যানভাস গড়া হচ্ছে ১০০ বিঘা জমিজুড়ে। এ ধরনের এত বড় শস্যচিত্র বিশ্বের আর কোনো স্থানে হয়নি। শস্যর ক্যানভাসে জাতির পিতার মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে দুধরনের ধানের চারা ব্যবহার হচ্ছে। ’

তিনি আরও বলেন, ধানের চারা চীন থেকে নেওয়া হয়েছে। বেগুনি ও সবুজ রঙের দুই ধরনের হাইব্রিড ধানের চারা উৎপাদন করা হয়েছে। চারা রোপনের পর থেকে ধান পাকার আগ পর্যন্ত নানা রূপ ধারণ করবে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। ১৪৫ দিনে এই ধান ঘরে ওঠবে। একটি সবুজাভ সোনালি আর অন্যটি বেগুনি রঙের। সেই সঙ্গে রচিত হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি নিয়ে এক নতুন ইতিহাস।

কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ৮ লাখ টাকা ব্যয় করে জমি লিজ নেওয়া হয়েছে।