অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনের সাথে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্টিত হয়।

সভায় ৬৯৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সভায় জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুর হতে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্য সাগর অবধি বিস্তৃত হবে। ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

এর আগে দেশে আরো দুইটি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়। সভায় জানানো হয়েছে, প্রথম সাবমেরিন কেবল এসএমডাব্লিউ-৪ এর ২০ বছরের আয়ুষ্কাল আগামী ২০২৫ সালে শেষ হবে। ইতোমধ্যে এ কেবল ১৫ বছরের পুরনো হয়ে যাওয়ায় সেবা বিঘ্নিত হওয়ার হার বেশি।

তাছাড়া তুলনামূলকভাবে পুরনো প্রযুক্তির কারণে এই কেবলের মাধ্যমে যথেষ্ট দ্রুত গতির সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে এর সংযোগ নেওয়ার আগ্রহ কম। এসব বিষয় বিবেচনা করেই বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।

অর্থনীতি

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানিয়েছেন, যে করদাতারা এখনও আয়কর রিটার্ন জমা দেননি, তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।

অর্থনীতি

চলতি বছরে বিবিসির প্রকাশিত বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় দুই বাংলাদেশিও আছেন। তারা হলেন, রিনা আক্তার ও রিমা সুলতানা।

তালিকায় ছয় নম্বরে আছেন রিনা আক্তারের নাম। বিবিসি তার সম্পর্কে জানায়, মাত্র আট বছর বয়সে তার এক আত্মীয় তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেন। এরপর সেখানে তিনি বেড়ে ওঠেন ও পরে যৌনকর্মীতে পরিণত হন।

কিন্তু এখন তিনি অন্য যৌনকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করছেন। করোনা মহামারীর সময়ে রিনা ও তার দল ঢাকায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪০০ যৌনকর্মীকে খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

মহামারীর দরুন এসব যৌনকর্মীরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। রিনা আক্তার বলেন, লোকজন আমাদের পেশাকে ছোটো করে দেখে কিন্তু আমরা কেবল খাবার কেনার জন্যই এটা করি।

এদিকে রিমা সুলতানা রিমু একজন শিক্ষক। তিনি কক্সবাজারভিত্তিক ইয়াং উইমেন লিডার্স ফর পিসের একজন সদস্য।

এ কর্মসূচি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অফ উইমেন পিসবিল্ডার্সের অংশ। যার মূল উদ্দেশ্য সংঘাতময় দেশগুলো থেকে আসা তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করা; যাতে করে তারা নেতৃত্ব দেয়া ও শান্তির এজেন্টে পরিণত হতে পারেন।

রোহিঙ্গা শরণার্থী মোকাবেলায় রিমা তার মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। রোহিঙ্গারা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যাদের শিক্ষার সুযোগ নেই; তাদের জন্য লিঙ্গ সংবেদনশীল ও বয়সভিত্তিক স্বাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি।

রেডিও ব্রডকাস্ট ও থিয়েটার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তিনি নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করেছেন তিনি।

এই শিক্ষক বলেন, আমি বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা আনতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি

বিবিসির প্রভাবশালীদের তালিকা এবারে আছেন ফিনল্যান্ডের জোট সরকার। যার প্রতিটি সদস্য নারী এবং সরকার প্রধান স্যান্না ম্যারিন।

আছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনার টিকা গবেষণা দলের প্রধান সারাহ গিলবার্টও।

পাকিস্তানী অভিনেত্রী মাহিরা খান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক বিশেষ সহকারী সানিয়া নিশতার, ভারতের নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলনে অংশ ৮২ বছর বয়সী বিলকিস বানুসহ আরও অনেকে সুপরিচিত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে এ তালিকাতেই ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশি দুই নারীর।

অর্থনীতি

 

বিশ্বব্যাপী অপেক্ষাকৃত বেশি আয়কর রয়েছে, এমন দেশ থেকে অপেক্ষাকৃত কম করের দেশে মুনাফা, সম্পদ নানা কায়দায় স্থানান্তরের মাধ্যমে কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশও ক্ষতির তালিকায় রয়েছে। কর ফাঁকি রোধে কাজ করা আন্তর্জাতিক ফোরাম ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে সম্পদ ও মুনাফা স্থানান্তরের মাধ্যমে ৭০ কোটি ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ কর হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে যুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি ও ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের একটি অংশ। বাংলাদেশ যে পরিমাণ কর আদায় করে থাকে, এটি তার প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ। অন্যদিকে হারানো কর দেশের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের প্রায় ৬২ শতাংশ। এটি ৩ লাখ ৯২ হাজার নার্সের এক বছরের বেতনের সমান অর্থ।

ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক (টিজেএন) গত শুক্রবার বিশ্বব্যাপী কর ন্যায্যতা নিয়ে প্রকাশিত ‘দ্য স্টেট অব ট্যাক্স জাস্টিস-২০২০ : ট্যাক্স জাস্টিস ইন দ্য টাইম অব কোভিড-১৯’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

টিজেএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব দেশে করহার শূন্য কিংবা একেবারেই কম, সেসব দেশে এই অর্থ চলে যায়, যা ট্যাক্স হেভেন বা করের স্বর্গ নামে পরিচিত। বছরে এই প্রক্রিয়ায় কর ফাঁকির পরিমাণ ৪২৭ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থ প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ নার্সের সারা বছরের বেতনের সমান। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এক বছরে ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি ডলারের মুনাফা তাদের মূল কোম্পানির পরিবর্তে ট্যাক্স হেভেনে স্থানান্তর করে ২৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার কর ফাঁকি দিয়েছে। ব্যক্তি করদাতারা এ প্রক্রিয়ায় ১৮ হাজার ২০০ কোটি ডলারের কর এড়াতে পেরেছেন।

টিজেএনের প্রতিবেদনে করের স্বর্গ বিবেচনায় যে ১৫টি দেশে সবচেয়ে বেশি অর্থ গিয়েছে সেগুলো হলো—কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, হংকং, ফ্রান্স, ইতালি, জার্সি, বারমুডা, সিঙ্গাপুর, পানামা ও সুইজারল্যান্ড।

অর্থনীতি

অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট।আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত তালিকা আদালতে দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে অর্থ পাচার ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া আজ থেকে অর্থ পাচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা সরকারি সংস্থা রয়েছে। আমরা সম্মিলিতভাবে দেশের জন্য কাজ করতে চাই। অর্থ পাচারকারীরা দেশ ও জাতির শত্রূ। এদেরকে ধরতে হবে।

অর্থনীতি

করযোগ্য আয় থাকলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আয়কর দেওয়া নাগরিক দায়িত্ব। এ জন্য এনবিআরের কাছে আয়কর রিটার্ন (আয় ও সম্পদের তথ্য বিবরণী) জমা দিতে হয়। তবে একেক পেশার মানুষের করযোগ্য আয় নিরূপণের হিসাব একেক রকম। আসুন দেখে নেওয়া যাক একজন শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, ব্যবসায়ী ও কৃষক কীভাবে করের হিসাব করবেন।

শিক্ষকের আয় ও করের হিসাব: ধরুন বিশাল আহমেদ বেসরকারি একটি ইংরেজি মিডিয়ামের শিক্ষক। তার একজন প্রতিবন্ধী সন্তান আছে। স্ত্রী করদাতা নন। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত তিনি প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা মূল বেতন পেয়েছেন। চিকিৎসা ভাতা পেয়েছেন এক হাজার করে। বাড়ি ভাড়া পেয়েছেন মাসে ১৫ হাজার টাকা। মূল বেতনের সমান দুটি উৎসব বোনাস পেয়েছেন। তিনি টিউশনি থেকেও উপার্জন করেন। নিজের বাসায় ছয়টি ব্যাচে ছয়জন করে শিক্ষার্থী। প্রতিজনের কাছ থেকে চার হাজার টাকা করে সম্মানী নেন।

২০১৯-২০ আয় বছরে বিশাল দুই লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। ৩০ জুন তারিখে তার নিট সম্পদের পরিমাণ ছিল তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। তাহলে তার ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট আয় ও করের হিসাব হবে এভাবে- মোট বেতন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট বাড়ি ভাড়া এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া থেকে মোট বেতনের অর্ধেক বাদ দিয়ে যা থাকে সেটির ওপর কর ধার্য হয়। বাড়ি ভাড়া ও মোট বেতনের অর্ধেক যেহেতু সমান, ফলে বাড়ি ভাড়া খাতে করযোগ্য আয় শূন্য। তিনি চিকিৎসা ভাতা পান ১২ হাজার টাকা। মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা এক লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে যেটি কম তা চিকিৎসা ভাতা থেকে বাদ দেওয়ার পরে অবশিষ্ট টাকার ওপর কর ধরা হয়। মূল বেতনের ১০ শতাংশ ৩৬ হাজার টাকা। চিকিৎসা ভাতা ১২ হাজার টাকা। ফলে এ ক্ষেত্রেও করযোগ্য আয় শূন্য।

অন্যদিকে, দুটি উৎসব বোনাস পেয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। ফলে বেতন খাতে তার করযোগ্য আয় চার লাখ ২০ হাজার টাকা। টিউশনি থেকে তার আয় ১৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। তাহলে বিশাল আহমেদের মোট আয় দাঁড়াল ২১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। প্রতিবন্ধী সন্তানের পিতা হিসেবে তার করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। ফলে প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর কর শূন্য। পরের এক লাখে ৫ শতাংশ, তার পরের তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, পরের চার লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, পরের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং তার পরের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ হিসাবে কর দিতে হবে।

এ হিসাবে তার করমুক্ত আয়সীমা বাদ দেওয়ার পরে কর দাঁড়ায় তিন লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। করদাতার অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগ দুই লাখ টাকা। মোট আয় ১৫ লাখ টাকার বেশি হওয়ায় তিনি দুই লাখ টাকার ১০ শতাংশ বা ২০ হাজার টাকা কর রেয়াত পাবেন। ফলে তার কর দাঁড়াল দুই লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা। এদিকে তার তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা নিট সম্পদ রয়েছে। তিন কোটি টাকা পর্যন্ত নিট সম্পদের ক্ষেত্রে করের ওপর কোনো সারচার্জ নেই। তার নিট সম্পদ তিন কোটি টাকার বেশি হওয়ায় করের ওপর ১০ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা হবে। এতে আসবে ২৯ হাজার ৯৫০ টাকা। ফলে তার মোট কর দিতে হবে তিন লাখ ২৯ হাজার ৪৫০ টাকা। তবে যার সম্পদ তিন কোটি টাকার কম এবং পরিবারে কোনো প্রতিবন্ধী সন্তান নেই তার হিসাবে করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ ও সারচার্জ শূন্য হবে।

শিল্পীর কর: নাজিয়া নাজরিন একজন কণ্ঠশিল্পী। তার একটি গানের দল রয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের মাধ্যমে আয় করেন। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তার দল ১০ লাখ টাকা আয় করেছে। এ আয় থেকে দলের তিন সহশিল্পী, তিন যন্ত্রশিল্পী ও একজন তবলাবাদকের বেতন, যাতায়াত খরচ ও পোশাক-পরিচ্ছদ বাবদ চার লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এসব ব্যয় বাদ দিয়ে নাজিয়ার নিজের আয় হয়েছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তিনি নারী হওয়ায় তার করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ। বাকি এক লাখ ৬৫ হাজার টাকার ওপর তাকে কর দিতে হবে। প্রথম এক লাখ টাকায় ৫ শতাংশ এবং পরবর্তী ৬৫ হাজারে ১০ শতাংশ হারে মোট কর দিতে হবে ১১ হাজার ৫০০ টাকা।

চিকিৎসকের কর: একজন চিকিৎসক চাকরি ও প্রাইভেট প্র্যাকটিস থেকে যে আয় করেন সেটির পুরোটাই করযোগ্য। ধরুন ফাহাদ আল করিম একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত তিনি মাসিক ৫০ হাজার টাকা করে বেতন পেয়েছেন। বছরে বাড়ি ভাড়া ভাতা পান তিন লাখ ও চিকিৎসা ভাতা পান ২৪ হাজার টাকা। উৎসব ভাতা পান এক লাখ টাকা। মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে ভবিষ্যতহবিলে জমা দেন, তার নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানও সমপরিমাণ টাকা জমা দেয়।

ডা. ফাহাদ প্রাইভেট প্র্যাকটিসও করেন। প্রতিদিন ১০ নতুন রোগী ও ৩০ পুরোনো রোগী দেখেন। নতুন রোগীর ফি ৫০০ টাকা এবং পুরোনো রোগীর ফি ৩০০ টাকা নেন। বছরে ৩০০ দিন রোগী দেখেন। তবে এ বিষয়ে কোনো খাতাপত্র সংরক্ষণ করেন না। তিনি মাসিক ছয় হাজার টাকার একটি সঞ্চয় স্কিমে টাকা জমান। শেয়ারবাজারে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন এবং পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। ২০২০-২১ আয় বছরে মূল বেতন থেকে তার মোট আয় ছয় লাখ টাকা। বাড়ি ভাড়া তিন লাখ টাকা।

মূল বেতনের অর্ধেক বাড়ি ভাড়া থেকে বাদ দিলে এ খাতে করযোগ্য আয় শূন্য। উৎসব ভাতা এক লাখ টাকা। চিকিৎসা ভাতা ২৪ হাজার টাকা। মূল বেতনের ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে চিকিৎসা ভাতা হিসাব করা হয়। এতে এ খাতেও করযোগ্য আয় শূন্য। তাহলে বেতন খাতে তার করযোগ্য আয় দাঁড়াল সাত লাখ ৬০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, প্রাইভেট প্র্যাকটিসের মাধ্যমে নতুন রোগী থেকে ১৫ লাখ এবং পুরোনো রোগী থেকে ২৭ লাখ অর্থাৎ, মোট ৪২ লাখ টাকা আয়। এর মধ্যে তার খরচ হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। নিট আয় দাঁড়াল ২৮ লাখ টাকা।

এ হিসাবে ফাহাদ আল করিমের গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে করযোগ্য আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এই আয়ের প্রথম তিন লাখ টাকার ওপর কোনো কর বসবে না। পরবর্তী এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ হারে পাঁচ হাজার টাকা কর বসবে। পরের তিন লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ হারে ৩০ হাজার টাকা, পরের চার লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ হারে ৬০ হাজার টাকা এবং পরের পাঁচ লাখ টাকার ওপর ২০ শতাংশ হারে এক লাখ টাকা কর বসবে। বাকি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার জন্য ২৫ শতাংশ হারে চার লাখ ৯০ হাজার টাকা কর হবে। সব মিলিয়ে তার করের পরিমাণ ছয় লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

তবে এত টাকা তাকে কর দিতে হবে না। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের জন্য কর ছাড়া পাবেন। মোট করযোগ্য আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগ। অর্থাৎ, তিনি আট লাখ ৯০ হাজার টাকার বিনিয়োগে ছাড় পাবেন। কিন্তু ফাহাদ আল করিম পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন ১০ লাখ টাকা, ডিপিএস করেছেন ৭২ হাজার টাকা (ডিপিএসে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার বিনিয়োগে ছাড় আছে) এবং ভবিষ্যতহবিলে জমা করেছেন ৬০ হাজার টাকা। সব মিলে তিনি ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু তিনি আট লাখ ৯০ হাজার টাকার ওপর ছাড় ১০ শতাংশ হিসাবে ৮৯ হাজার টাকা ছাড় পাবেন। ফলে তাকে কর দিতে হবে পাঁচ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।

ব্যবসায়ীর কর: ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীকে কর দিতে হয়। ধরুন ফুয়াদ হাসান একজন ব্যবসায়ী। তার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে। তিনি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক কোটি ২০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। এ থেকে পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। তার খরচ হয়েছে ১০ লাখ টাকা। ফলে নিট লাভ ৮ লাখ টাকা। এই সময়ে তিনি ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম কর পরিশোধ করেছেন। মুনাফা থেকে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন এক লাখ ২০ হাজার টাকা। তাহলে তার কর হিসাব অনুযায়ী, নিট আয় বা লাভের প্রথম তিন লাখে কোনো কর দিতে হবে না। পরের এক লাখে ৫ শতাংশ হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা। পরের তিন লাখ পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে ৩০ হাজার টাকা। এর পরের এক লাখে ১৫ শতাংশ হিসাবে কর আসে ১৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে তার মোট ৫০ হাজার টাকা কর আসে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের জন্য ১৮ হাজার টাকা কর ছাড়া পাবেন। অন্যদিকে, তার প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অগ্রিম কর ৩০ হাজার টাকা বাদ যাবে। ফলে তাকে দুই হাজার টাকা কর পরিশোধ করতে হবে।

কৃষকের কর: ধরুন, ইব্রাহীম খলীল একজন কৃষক। তিনি দুই একর জমিতে ধান চাষ করেন। মোট ৯০ মণ ধান পেয়েছেন। প্রতি মণের দাম ৮০০ টাকা। ধান বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৭২ হাজার টাকা। উৎপাদন ব্যয় ৬০ শতাংশ ধরে তা হিসাব থেকে বাদ দেওয়া হয়। ফলে ইব্রাহীমের দুই একর জমি চাষের খরচ বাবদ বাদ যাবে ৪৩ হাজার ২০০ টাকা। তাহলে তার আয় দাঁড়াল ২৮ হাজার ৮০০ টাকা। কৃষি ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে আয় না থাকলে ৬৫ বছরের কম বয়সী একজন কৃষকের মোট পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে পুরুষ ও যে কোনো বয়সের নারী কৃষকের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। ফলে ২৮ হাজার ৮০০ টাকা আয় করার জন্য ইব্রাহীমকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের ক্ষেত্রে ১৫ মিনিটের প্রি ওপেনিং ও ১০ মিনিটের পোস্ট ক্লোজিং সেশন চালু হয়েছে।

বুধবার চালু হওয়া এই পদ্ধদিতে লেনদেন শুরুর নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে শেয়ার কেনাবেচার প্রস্তাব দেওয়া যাবে এবং লেনদেন শেষ হওয়ার ১০ মিনিট পর পর্যন্ত সমাপনী দরে শেয়ার লেনদেন করা যাবে।

এখন দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই লেনেদেন শুরু হয় সকাল ১০টায়, শেষ হয় দুপুর আড়াইটায়।

এর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) পাঁচ মিনিট করে প্রি ওপেনিং ও পোস্ট ক্লোজিং সেশন চালু আছে।

ডিএসইর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রি-ওপেনিং সেশনে বিনিয়োগকারীরা শুধু শেয়ার কেনা বা বেচার আদেশ দিতে পারবেন।

এই সেশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতা যে দর প্রস্তাব করবেন সেটাই হবে ওপেনিং প্রাইস বা উদ্বোধনী দর। ওপেনিং সেশনে গিয়ে ওই দরে লেনদেনটি সম্পন্ন হবে।

লেনদেন শেষ হওয়ার ১০ মিনিট অর্থাৎ ২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ক্লোজিং প্রাইস বা সমাপনী দরে কেনাবেচা সম্পন্ন করা যাবে। তবে এসময়ে কোনো দর প্রস্তাব করা যাবে না।

বিশ্বের অনেক পুঁজিবাজারে ওপেনিং ও ক্লোজিং সেশন আছে। ওপেনিং সেশনের কারণে বাজার চালুর আগে একটি শেয়ারের ওই দিনের দর কেমন হতে পারে, তার একটি ধারণা পাওয়া যায়। আবার লেনদেন শেষ হওয়ার পরও চাইলে ক্লোজিং প্রাইসে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ পাওয়া যায়।

অর্থনীতি

বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অহেতুক হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে বিধিবিধানের নামে জটিলতা সৃষ্টি করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে কোনো বাধা সৃষ্টি না করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রচলিত নিয়মকানুন মেনে গ্রাহকরা যাতে বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনতে পারেন সে জন্য ব্যাংকগুলোতে বলা হয়েছে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মঙ্গলবার একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে গ্রাহকের জমা বৈদেশিক মুদ্রার একটি অংশ রেখে বাকি অংশ দেশে আনতে চাইলে ব্যাংকগুলো নানা প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করে। এতে গ্রাহকরা বিদেশি ব্যাংকের হিসাবে থাকা আবশ্যিক স্থিতির (হিসাব চালু রাখার স্বার্থে নির্দিষ্ট অংকের বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখা) বেশি অর্থ দেশে আনতে চাইলেও পারছে না। ব্যাংকগুলো আইনকানুনের দোহাই দিয়ে নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। এ ধরনের বাধা যাতে আর সৃষ্টি না করা হয় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, প্রচলিত হিসাবে এ ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা গ্রাহককে নিজ খরচে দেশে আনতে হয়। গ্রাহক সেই খরচ বহন করে দেশে আনলে কোনো বাধা দেয়া যাবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগাম অনুমতি নেয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই এ ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনা যাবে। তবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে এর আড়ালে যাতে কোনো ধরনের মানি লন্ডারিং না হয়।

সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসলে একদিকে বাজারে এর প্রবাহ বাড়ে। অন্যদিকে বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভকে শক্তিশালী করে। এ কারণে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের বাধা না থাকে সেদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে।

বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ও বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার নীতিমালায় অনেক শিথিলতা এনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে বিশেষ করে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার প্রবণতা বেড়েছে। ফ্রিল্যান্সার, সফটওয়্যার, ডাটা অ্যান্টিসহ অনলাইনে নানাভাবে কাজ করছে অনেকে। এর মাধ্যমে তারা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও করছে। ওইসব আয় দেশে আনার নীতিমালাও সহজ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেয়া হলেও তা মানছে না ব্যাংকগুলো। এমনকি ব্যাংকাররা এসব বিষয়ে হালনাগাদ তথ্যও জানছেন না। ফলে আগের নিয়মের দোহাই দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করছে।

অর্থনীতি

ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অধিকতর সুদৃঢ় করা এবং নোট জালকরণ প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে ১০০ শতাংশ কটন কাগজ ও নতুন নিরাপত্তা সুতা সংযোজনপূর্বক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সংবলিত বিদ্যমান ডিজাইন এবং গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত ১২৩ মিমি–৬০ মিমি পরিমাপের ১০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট মুদ্রণ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস হতে এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস হতে ইস্যু করা হবে।

নতুন প্রচলিত এ নোটটিতে বিদ্যমান ১০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের রং এবং ডিজাইন অপরিবর্তিত রেখে নিরাপত্তা কাগজ ও নোটের সম্মুখভাগের বাম পাশের নিরাপত্তা সুতা পরিবর্তন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত বিদ্যমান ডিজাইনে নতুন ২০ ও ৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট নতুন স্পেসিফিকেশন সংযোজন করে পর্যায়ক্রমে বাজারে ইস্যু করা হবে।

অর্থনীতি

খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ৩৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।

এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং এর পরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগ অবকাঠামো মেরামতে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাড়ি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকের অন্যান্য মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ছিলেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানানো হয়, যাতে পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

‘খুলনা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. মামুন-আল-রশিদ বলেন, “এ প্রকল্পটির মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে খুলনা শহরের ভিতরের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সেকেন্ডারি ডাম্পিং পয়েন্ট নির্মাণ করা হবে। শহরের বর্জ্য দ্রুত সংগ্রহ করে ডাম্পিং পয়েন্টে অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হবে।”

এছাড়াও প্রকল্পটির মাধ্যমে ড্রেনে ভাসমান ময়লা নেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় ধরে রেখে পরে অপসারন, ময়ূর নদীসহ ২২টি খালের মধ্যে কচুরীপানা ও ভাসমান ময়লা অপসারণের পাশপাশি পরিবেশের উন্নয়নের জন্য শহরের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গৃহীত ৩৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি খুলনা সিটি কর্পোরেশন বাস্তবায়ন করবে। এই ব্যয়ের মধ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার জোগান দেবে, বাকী অর্থ দেবে সরকার তার নিজস্ব তহবিল থেকে।

পরিকল্পনা সচিব বলেন, বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট ৭ হাজার ৫০৫ কোটি ২৯ লাখ ব্যয়ের ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭ হাজার ৪২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা দেওয়া হবে।

ঘূর্ণিঝড়-বন্যার ক্ষত মেরামতে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্প

>> ‘যমুনা নদীর ডানতীরের ভাঙন হতে গাইবান্ধা জেলার ‍ফুলছড়ি উপজেলাধীন গোবিন্দি এবং হলদিয়া এলাকা রক্ষা’ প্রকল্প। ব্যয় ৭৯৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

>> ‘গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা’ প্রকল্প। ব্যয় ৩০৫ কোটি টাকা।

>> ‘শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণ’ প্রকল্প। ব্যয় ১০২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।