আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বৃহস্পতিবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফর চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক হবে।

তিনি বলেন, ‘এই সফর নিশ্চিতভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতায় প্রাণবন্ত প্রেরণা জোগাবে এবং চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন অর্জনে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।’

চীনের রাষ্ট্রদূত আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিসিএবি) ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন।

আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই চীনে দ্বিপাক্ষিক সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক সর্বকালের সর্বোত্তম এবং পরস্পরের কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে উন্নয়নের জন্য প্রচুর সুযোগ গ্রহণ করছে।

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চীন সফর সর্বস্তরের মানুষের কাছেই অত্যন্ত প্রত্যাশিত। এই সফরটি আগামী পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময়ে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো জোরদার করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, এই সফরটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতার জন্য একটি নতুন রূপরেখা দেবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমাদের অবস্থানগুলোকে সমন্বয় করার জন্য দুই দেশের জন্যই সুযোগ এনে দেবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, এই সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চীনের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। সফরকালে বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথি সই হবে এবং যৌথভাবে সহযোগিতার বড় অর্জনগুলো ঘোষণা করা হবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, এই সফরের মাধ্যমে উভয় পক্ষ একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন এবং সর্বস্তরে যোগাযোগ আরও জোরদার করবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা আরও গভীর, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয়কে শক্তিশালী, ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে সুসংহত এবং চীনের জাতীয় পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও বাংলাদেশের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী ভিত, গতিশীলতা ও উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে গর্ব করে। এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আমাদের দুই জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন অর্জন করেছে এবং সম্পর্কটির উন্নয়নের গতিধারা শক্তিশালীভাবে অব্যহত থাকবে।’

তিনি বলেন, চীন অবকাঠামো, ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও বাস্তব ফলাফল অর্জনে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে আগ্রহী এবং এটা বাংলাদেশকে আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কীভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উন্নীত করা যায়, বিনিময়ের পরিধি প্রসারিত করা যায়, সহযোগিতার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় এবং আমাদের দুই দেশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও ভালো, গভীর ও ঘনিষ্ঠ করে তোলা যায়- সেজন্য উভয় পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’

ইয়াও ওয়েন আরো বলেন, আসন্ন সফরের মাধ্যমে দুই পক্ষ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সমন্বয় ও সহযোগিতাকে আরও বাড়াবে, যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার বজায় রাখবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ব্রিকসের অংশীদার দেশ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তাবকে সমর্থন করে এবং আশা করে যে বাংলাদেশ দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিকসের সদস্য হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন বজায় রেখেছে এবং এর অর্থনৈতিক শক্তি দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে, এইভাবে একটি ‘বে অফ বেঙ্গল মিরাকল’ তৈরি করেছে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিক মনোভাবের প্রশংসা করে। চীন সক্রিয়ভাবে মিয়ানমার সংঘাতে জড়িত সকল পক্ষকে একটি যুদ্ধবিরতি এবং সংলাপে বসানোর জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে- যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পথ প্রশস্ত করছে।

ইয়াও আরো বলেন, ‘চীন বাংলাদেশকে বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে সমর্থন, যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের অভিন্ন মূল্যবোধ, জাতীয় স্বপ্ন ও উন্নয়নের পথ রয়েছে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাসকে সুসংহত করতে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পারস্পরিক শ্রদ্ধার মডেল ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বিজয়ী সহযোগিতার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে প্রস্তুত।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের মাধ্যমে দুই পক্ষ বাস্তবসম্মত সহযোগিতায় নতুন অগ্রগতি অর্জন করবে এবং এটা উভয় দেশের জনগণের জন্য আরও সুবিধা বয়ে আনবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে- চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু।
তিনি বলেন, আধুনিকায়নের দিকে বাংলাদেশের যাত্রা প্রসঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ভিশন-২০৪১ ও ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নের সাথে সাথে বাংলাদেশের জাতীয় অবস্থার সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং বিদেশী বিনিয়োগের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিক্যাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে জাতীয় নির্বাচনে এবার বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে থেকে লেবার পার্টি থেকে আছেন ৮ জন এবং কনজারভেটিভ থেকে ২ জন।

লেবার পার্টি থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটজন ব্রিটিশ নাগরিক হলেন রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক, আফসানা বেগম, রুমী চৌধুরী উইথহাম, রুফিয়া আশরাফ, নুরুল হক আলী, নাজমুল হোসাইন। তাদের মধ্যে রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক এবং আফসানা বেগম এমপি হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।

ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়নে নির্বাচনি লড়াইয়ে আছেন লন্ডনের দক্ষিণে টটেনহাম আসনে আতিক রহমান এবং ইলফোর্ড সাউথ আসনে সৈয়দ সাইদুজ্জামান। ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন থেকে ছয়জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মনোনয়ন পেয়েছেন।

ইলফোর্ড সাউথে গোলাম টিপু, বেডফোর্ডে প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, হেকনি সাউথে মোহাম্মদ সাহেদ হোসাইন, আলট্রিচহাম অ্যান্ড সেল ওয়েস্টে ফয়সাল কবির, ম্যানচেস্টার রসলমোতে মোহাম্মদ বিলাল এবং স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বো আসনে হালিমা খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইলফোর্ড সাউথ আসনে রিফর্ম পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাজ ফরহাদ।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটসের মনোনয়নে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাবিনা খান। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি থেকে নাজ আনিস মিয়া ডুনফারমলাইন অ্যান্ড ডলার আসনে লড়ছেন। গ্রিন পার্টির মনোনয়নে ইলফোর্ড সাউথে সাইদ সিদ্দিকী, ওল্ডহাম ওয়েস্ট অ্যান্ড রয়টনে সাইদ শামসুজ্জামান শামস এবং লেস্টার সাউথ আসনে শারমিন রাহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সোশ্যালিস্ট পার্টির হয়ে ফোকস্টোন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মমতাজ খানম। এছাড়াও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১১ ব্রিটিশ নাগরিক। হলবর্ন অ্যান্ড প্যানক্রাসে লড়ছেন ওয়েইছ ইসলাম। বেথনালগ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি গ্রিনে আজমাল মাশরুর, সুমন আহমেদ ও সাম উদ্দিন। পপলার অ্যান্ড লাইম হাউসে এহতেশামুল হক। স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বোতে ওমর ফারুক ও নিজাম আলী। ইলফোর্ড সাউথে নূরজাহান বেগম।

নিউক্যাসল সেন্ট্রাল অ্যান্ড ওয়েস্টে হাবিব রহমান। বেক্সিল অ্যান্ড ব্যাটেলে আবুল কালাম আজাদ। ওল্ডহাম ওয়েস্ট, চেটারটন অ্যান্ড রয়স্টোনে রাজা মিয়া। যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে ছোট-বড় প্রায় ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার মধ্য এশিয়ার একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন যা পশ্চিমা বিরোধী অসংখ্য দেশকে একত্রিত করবে।

পুতিন এবং শি নিয়মিতভাবে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) জোটের তত্ত্বাবধানে মিলিত হন। যার সর্বশেষ অধিবেশন কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই ব্লকের সাথে একটি ‘সংলাপ অংশীদার’ হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। সংস্থার পূর্ণ সদস্য সাবেক সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার দেশগুলো, ভারত, চীন, রাশিয়া এবং ইরান।

পুতিন মূল অধিবেশনের প্রাক্কালে বুধবার এরদোয়ান এবং শি’র সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। চীনা নেতাকে পুতিন বলেছেন, সাংহাই জোট ‘একটি ন্যায্য বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ’ হিসাবে তার ভূমিকাকে শক্তিশালী করছে।

রাশিয়া ও চীন উভয় দেশ বিশ্ব মঞ্চে মার্কিন নেতৃত্বকে ‘আধিপত্য’ বলে অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে।

মস্কোর প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থনের জন্য পশ্চিমে সমালোচিত শি বুধবার পুতিনকে বলেছেন, তিনি তার ‘পুরনো বন্ধু’কে আবার দেখতে পেরে আনন্দিত।

এরদোয়ান বুধবার পুতিনের সাথে সাক্ষাত করেন। তাকে তুরস্কে আমন্ত্রণ জানান এবং ইউক্রেনে ‘উভয় পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারে এমন ন্যায্যতার ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

তুর্কি নেতা যুদ্ধরত দেশগুলোর মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছেন।

এসসিও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এসসিও ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি প্রাধান্য পেয়েছে। এর নয়টি পূর্ণ সদস্য দেশ হল চীন, ভারত, ইরান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান এবং তাজিকিস্তান।

এটি নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির উপর ফোকাসসহ পশ্চিমের সাথে প্রতিযোগিতায় সহযোগিতার একটি প্লাটফর্ম হওয়ার উদ্দেশ্যে এই সংস্থা গঠিত হয়েছে।

পশ্চিমা-নিষেধাজ্ঞায় থাকা ইরান এ বছর পূর্ণ সদস্য হিসাবে সম্মেলনে যোগ দেয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থন দেওয়া বেলারুশও বৃহস্পতিবার সংস্থার দশম পূর্ণ সদস্য হবে।

বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো কাজাখ মিডিয়ার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে ‘বিশ্বের কাছে প্রদর্শন করার জন্য যে বিকল্প আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, ক্ষমতার বিভিন্ন কেন্দ্র’ রয়েছে তার জন্য জোটের প্রশংসা করেছেন।

জোটটি বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ এবং তার জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করে তবে এটি আঞ্চলিক বিরোধসহ অনেক অভ্যন্তরীণ মতবিরোধসহ একটি ভিন্ন ব্লক।

যদিও রাশিয়া এবং চীন পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তারা মধ্য এশিয়ায় অর্থনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্ধী, এটি তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন পথ।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাজিলি নিবিনজায়া ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহের কিছু সুনির্দিষ্ট পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে যেকোনো ধরনের সমরাস্ত্র পাঠানো হলে শেষ পর্যন্ত সেসব ধ্বংস করা হবে, সেসব অস্ত্র যারাই পাঠাক না কেন।

নিবিনজায়া আরও বলেছেন, ইসরাইলের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে প্যাট্রিওট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহের সম্ভাবনা ইসরাইলের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

গত সপ্তাহে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল তেলআবিব থেকে আটটি প্যাট্রিওট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিয়েভকে সরবরাহের ব্যাপারে আলোচনা করছে। ওই সাময়িকী জানিয়েছে, এ প্যাট্রিওটগুলো প্রথমে পাঠানো হবে তেলআবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং এরপর সেগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া হবে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইল ইউক্রেনকে কেবল অনাক্রমণাত্মক রসদ সরবরাহ করে এসেছে।

ওদিকে রাশিয়া ইউক্রেনকে বিদেশি অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। মস্কো বলে আসছে যে কিয়েভকে বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ যুদ্ধকে কেবলই দীর্ঘ করবে এবং চূড়ান্ত ফলাফলের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

আন্তর্জাতিক

ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাসে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ভোলে বাবা নামে এক ধর্মগুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ভক্তরা।

সেখানেই ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা।

হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, তীব্র গরমের মধ্যে চলছিল সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। তখন তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই পদপিষ্টের ঘটনা।

এত মানুষের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্যান্যরা।

যে জায়গায় ভোলে বাবা নামে ওই ধর্মগুরুর ভাষণ শোনার জন্য অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, সেটি ইটাহ ও হাথরাস জেলা দুটির সীমান্তে।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিং জানান। হাথরাস জেলার মুঘলগড়ি গ্রামে ভোলে বাবার অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে।

জেলার প্রধান মেডিকেল অফিসার উমেশ কুমার বলেন, আহতদের অনেককে পার্শ্ববর্তী জেলা ইটাহ জেলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিকান্দ্রারাউ শহরের একটি ট্রমা সেন্টারে।

সেখানে নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। হতাহতদের বিভিন্ন যানে করে ট্রমা সেন্টারে নেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রমা সেন্টারের বাইরে মেঝেতে পড়ে আছে দু নারীর দেহ। ট্রমা সেন্টারের বাইরে বিশৃঙ্খলা রয়েছে এবং লোকেরা তাদের নিকটাত্মীয়দের সন্ধানে সেখানে আসছেন।

কে এই ভোলে বাবা?

ভোলে বাবা একজন ধর্মপ্রচারক। তিনি উত্তর প্রদেশের হাথরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সেখানেই মঙ্গলবার পদদলিত হয়ে শতাতিক ব্যক্তির প্রাণ যায়। আলোচিত এ ভোলে বাবা আগে রাজ্য পুলিশে চাকরি করতেন। পুলিশে তিনি প্রায় ১৮ বছর চাকরি করেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করতেন ভোলে বাবা। চাকরি ছাড়ার পর তিনি লোকজনকে উপদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য সৎসঙ্গ আয়োজন শুরু করেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। নিজেকে নারায়ণ সরকার হরি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন তিনি। তার ভক্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

এই ভোলে বাবা পাতিয়ালির বিশ্ব হরি বাবা নামে বেশি পরিচিত। জনসমক্ষে তিনি আসেন সাদা কাপড়ে। উপদেশ অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে থাকেন স্ত্রী। বাবার ভক্তদের বেশিরভাগই আসেন আগ্রা ও আলিগড় জেলা থেকে। তার ভক্তদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের।

বাবা কোনো গুরুর অনুসারী নন বলে বিশ্বাস করা হয়। তার দাবি, যেসব উপদেশ তিনি দেন, সেগুলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা।

ফেসবুকে বাবার অনুসারীর সংখ্যা তিন লাখের বেশি। তার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে অনেক সংসদ সদস্য ও বিধানসভার সদস্য যোগ দেন বলে মনে করা হয়। এ অনুষ্ঠান মঙ্গলবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

এত জনপ্রিয়তার পরও গণমাধ্যম থেকে দূরে রাখা হয় বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। বাবার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যও সামনে আসে না।

ভোলে বাবার লোকেরা গোলাপি রঙের শার্ট প্যান্ট এবং সাদা ক্যাপ পরেন। অনুষ্ঠানে ট্রাফিক সামলানো এবং আয়োজনের বিষয় তারা দেখভাল করেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) ছেড়ে যাওয়া নেতাদের ‘দলে ফেরা’ নিয়ে কমিটি গঠন করে দিলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান।

ইমরান খান কারাগার থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেবে না বলে দলত্যাগ করেছিলেন ওইসব নেতা।

সোমবার জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে গত বছরের ৯ মে এক রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের পর পিটিআই নেতাদের একটি অংশটি দলটি ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কারণ ওই সময় তাদেরকে উসকানিমূলক বক্তৃতা এবং রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

এর কয়েক মাস পর ও চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের আগে পিটিআই ছেড়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা আরও একবার দলীয় পদে যোগ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পিটিআই নেতৃত্ব তখন স্পষ্টভাবে তাদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছিল।

সম্প্রতি এ নিয়ে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশে একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটির ওপর নির্ভর করছে পিটিআই ছেড়ে যাওয়া ওইসব নেতার ভাগ্য। অর্থাৎ তারা দলে ফিরতে পারবেন কিনা, সেটা নির্ধারণ করবে কমিটি।

পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশির নেতৃত্বে এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আসাদ কায়সার, হামিদ খান, শেহরিয়ার আফ্রিদি, ব্যারিস্টার গহর এবং শিবলি ফারাজ।

কমিটি জানিয়েছে, তারা পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার কাছে চূড়ান্ত একটি তালিকা পাঠাবে এবং তিনিই (ইমরান) তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

কমিটির সদস্যরা আরও জানিয়েছেন, শানদানা গুলজার পিটিআইয়ের নারী কর্মীদের মামলা দেখভালের পাশাপাশি দলত্যাগী নেতাদের দল ছাড়ার কারণ সম্পর্কেও প্রতিবেদন দেবেন

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে চীনের সহায়তা চেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সমাধানের অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে খুবই চিন্তিত। কারণ এরই মধ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ছয় বছর পার হয়ে গেছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও আজ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় তিনি এই সহায়তা কামনা করেন।

সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন, এটা (রোহিঙ্গা সংকট) আমাদের জন্য খুবই হতাশা ও উদ্বেগজনক।

প্রধানমন্ত্রী চীনের মন্ত্রীকে বলেন, ‘এটি রোহিঙ্গা সংকটের সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের জন্যে আমার (প্রধানমন্ত্রীর) পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্টকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বার্তা।’

তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চীনের মন্ত্রীকে তাঁর নিজের পক্ষ থেকে এবং বাড়তি আগ্রহ নিয়ে কিছু করারও অনুরোধ করেন।’

লিউ জিয়ানচাও বলেন, চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কীভাবে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায় তা খুঁজে বের করতে মিয়ানমারের সাথে কাজ করছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুটি জটিল এবং সেখানে অভ্যন্তরীণভাবে তা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘এমনকী, মিয়ানমার সরকারেরও (এই ইস্যুটি সম্পর্কে) কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মতো অবস্থান নেই। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে (সেখানে) গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি একটি জটিল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, চীন বুঝতে পেরেছে যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক উপায়ে সহায়তা করছে বলে তার দেশ অত্যন্ত প্রশংসা করে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত এই পররাষ্ট্রনীতির প্রতি তার দেশ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, তাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র হলো দেশের গণমানুষের উন্নয়ন ও মানোন্নয়নের পাশাপাশি জনগনের খাদ্য নিরাপত্তা, ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।

আগামী মাসে শেখ হাসিনার চীন সফর প্রসঙ্গে লিউ জিয়ানচাও বলেন, এতে দুই দেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব আরও জোরদার হবে। ‘এই সফর আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।’

বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে অভিভূত হয়ছেন উল্লেখ করে চীনের মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।

বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে চীনের অর্থনৈতিক অবস্থাও মন্থর।

তিনি উল্লেখ করেন যে গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২ শতাংশ এবং চলমান অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আরও কাজ করতে হবে এবং বাংলাদেশকেও করতে হবে।

লিউ জিয়ানচাও বলেন, উন্নয়নের এক পর্যায়ে চীনের অর্থনীতি মন্থর ছিল, কিন্তু প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সে সময়ে সে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এতটা উন্নত ছিল না।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটু বেশিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমাদের পক্ষে কঠিন ছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশত বাংলাদেশ স্মার্ট প্রযুক্তি, এআই ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।’

পার্টি টু পার্টি (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগ) সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ। চীনা মন্ত্রী অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও পার্টি টু পার্টি সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন।

এম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এসময় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

নতুন সরকার গঠনের পর সোমবার ভারতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশন শুরু হয়। নতুন লোকসভায় কে হবেন স্পিকার তা এখনো স্থির হয়নি। বুধবার স্পিকার নির্বাচন করা হবে দেশটিতে। তার আগে সংসদ পরিচালনা করার জন্য বিজেপি সংসদ-সদস্য ভর্তৃহরি মহতাবকে প্রোটেম অথবা অস্থায়ী স্পিকার নির্বাচন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ নিয়েই শুরু হয় বিরোধ। নিয়ম ভেঙে ভর্তৃহরিকে নিয়োগ দেওয়ায় লোকসভার প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিনেই মোদির বিরুদ্ধে বিতর্কের ঝড় তোলেন বিরোধীরা।

নতুন সরকার গঠনের পর সোমবারই সংসদে প্রথম অধিবেশন বসে। অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাকে সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান ভর্তৃহরি। তার তত্ত্বাবধানেই নবনির্বাচিত সংসদ-দসস্যরাও শপথবাক্য পাঠ করেন। লোকসভার নবনির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের শপথগ্রহণ পর্ব শেষ হলে লোকসভা স্পিকার নির্বাচন করা হবে। যতক্ষণ না নতুন স্পিকার নির্বাচিত হচ্ছেন, ততক্ষণ ভর্তৃহরি দায়িত্ব সামলাবেন। তবে তার এ নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

তাদের দাবি, নিয়ম ভেঙে সাতবারের সংসদ-সদস্য ভর্তৃহরিকে অস্থায়ী স্পিকার করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, সংসদের সবচেয়ে বর্ষীয়ান সংসদ-সদস্যকেই প্রোটেম স্পিকার করা হয়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এবারের লোকসভায় সবচেয়ে বর্ষীয়ান সংসদ-সদস্য কংগ্রেসের সুরেশ কোদিকুন্নিল। তিনি আটবারের সংসদ-সদস্য। তবে সুরেশকে বাদ দিয়ে ভর্তৃহরিকে প্রোটেম স্পিকার করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন বিরোধীরা।

কংগ্রেস সংসদ-সদস্য সুরেশ এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, এনডিএ সরকার লোকসভার নিয়ম ভেঙেছে। নিয়ম ছিল সবচেয়ে বেশিবার জেতা সংসদ-সদস্যকেই প্রোটেম স্পিকার করা। সেদিক থেকে আমি আটবারের সংসদ-সদস্য, আর ভর্তৃহরি সাতবারের। এনডিএ সরকার আবারও বিরোধী দলকে অপমান করল। তাই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সর্বসম্মতিক্রমে অধিবেশন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মোদি অবশ্য অধিবেশনের শুরুতে সহমতের কথা শুনিয়েছেন। সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দেশ চালাতে গিয়ে মতৈক্য দরকার। তাই আমি নিরন্তর চেষ্টা করব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশের সেবা করতে। আমি সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পূর্ণ করব। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই।’ তবে বিরোধীদের, বিশেষ করে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, মানুষ দায়িত্বশীল বিরোধী পক্ষ চায়। দেশবাসী সংসদে ঝগড়া দেখতে চায় না।

আন্তর্জাতিক

লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননের বনাঞ্চল লক্ষ্য করে ফসফরাস বোমা হামলা চালিয়েছে। এর ফলে সেখানে আগুন ধরে গেছে। কাফার কিলা শহরের কাছে এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে এনএনএ। খবর আল-জাজিরার

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক রামজি কাইস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জনবহুল এলাকায় ইসরাইলের এয়ারবার্স্ট সাদা ফসফরাস যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার নির্বিচারে বেসামরিক লোকজনের ক্ষতি করছে এবং অনেককে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে।

এদিকে আল-জাজিরার সানাদ ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আপার গ্যালিলির আয়েলেত হাশাহারে একটি ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা সেনাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

এক্সে ইসরাইলি আর্মি রেডিওর শেয়ার করা ফুটেজে দেখা যায়, ইসরাইলি ঘাঁটির আশপাশে সাইরেন বাজতে দেখা গেছে, সেনারা ভয়ে দৌড়াচ্ছে।

সাদা ফসফরাস কতটা ক্ষতি করে?

সাদা ফসফরাসের সংস্পর্শে এলে মানুষ তীব্র জ্বালা অনুভব করে অনেক ক্ষেত্রে এটা মানুষের হাড় পর্যন্ত পুড়িয়ে দেয় এবং এর নিরাময়ে অনেক সময় লাগে। সেসঙ্গে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে।

সাদা ফসফরাসের কারণে যদি মানুষের শরীরের মাত্র ১০ শতাংশও দগ্ধ হয়, তাহলেও তা মারাত্মক। এর সংস্পর্শে এলে মানুষের শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে এবং শরীরের অনেক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

সাদা ফসফরাস থেকে সৃষ্ট প্রাথমিক ক্ষত থেকে বেঁচে থাকা লোকেরা সারা জীবন ভোগেন।

সাদা ফসফরাসের আগুন ঘরবাড়ি এবং পাকা ভবনেরও ক্ষতি করতে পারে, ফসল ধ্বংস করতে পারে এবং গবাদি পশুর প্রাণহানীর কারণ হতে পারে।

সাদা ফসফরাস নিয়ে আইনি এবং নৈতিক উদ্বেগ

সশস্ত্র সংঘাতে সাদা ফসফরাস ব্যবহার বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোতে নিষিদ্ধ।

কনভেনশন অন কনভেনশন উইপনস (সিসিডব্লিউ) এর প্রটোকল ৩ বেসামরিক জনগোষ্ঠী বা বেসামরিক এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে সাদা ফসফরাস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।

প্রোটোকলের অধীনে, এটি কেবল আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নীতি অনুসারে সংকেত, স্ক্রিনিং এবং চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

সশস্ত্র সংঘাতে সাদা ফসফরাসের ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, কেউ কেউ বেসামরিক নাগরিক এবং পরিবেশের ক্ষতি হ্রাস করার জন্য কঠোর বিধিবিধান এবং আরো নজরদারির আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ফোর্বসের রিয়েল-টাইম বিলিয়নিয়ার তালিকায় ১১তম ধনী ব্যক্তি জেনসেন হুয়াং। এখন পর্যন্ত এটি তার সর্বোচ্চ অবস্থান। তিনি একসময় কাজ করতেন রেস্তোরাঁর ডিশওয়াশার হিসেবে, আর এখন ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানের মালিক।

জেনসেন হুয়াং জিপিইউ ও কম্পিউটার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। মাইক্রোসফট ও অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে এনভিডিয়া। এখন কোম্পানিটির বাজারমূল্য প্রায় ৩.৩৩৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

চলতি মাসে চিপমেকার প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারমূল্য ৩.৫ শতাংশ বেড়ে ১৩৫.৫৮ ডলারে পৌঁছায়। ওয়াল স্ট্রিটে সর্বাধিক ব্যবসা করা কোম্পানি এখন এনভিডিয়া, যার গড় দৈনিক টার্নওভার ৫০ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরেই এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ১৮২ ভাগ। আর গত বছর কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য বেড়েছিল তিনগুণ।

বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, হুয়াংয়ের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ এখন প্রায় ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। এ তালিকা অনুযায়ী, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং ভারতীয় ধনকুবের রতন টাটার চেয়েও বেশি ধনী গ্লোবাল এ টেক সুপারস্টার।

কে এই জেনসেন হুয়াং?

জেনসেন হুয়াং ১৯৬৩ সালে তাইওয়ানের তাইনানে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে থাইল্যান্ডে চলে আসে তার পরিবার এবং নয় বছর বয়সে তাকে এবং তার ভাইকে ওয়াশিংটনের টাকোমায় এক চাচার কাছে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠিয়ে দে্ওয়া হয়। তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা কেন্টাকির ওনিডা এলিমেন্টারি স্কুল থেকে এবং স্নাতক পোর্টল্যান্ডের কাছাকাছি আলোহা হাই স্কুল থেকে সম্পন্ন করেন।

তবে সাফল্য খুব একটা সহজে ধরা দেয়নি হুয়াংয়ের কাছে। তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বাসবয় হিসেবে। তারপর যোগ দেন ডেনি’স রেস্তোরাঁতে। প্রথমে ডিশওয়াশার এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে ওয়েটার হিসেবে কাজ করেন সেখানে।

১৯৯৩ সালে তিনি ক্রিস মালাচোস্কি এবং কার্টিস প্রাইমের সাথে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে ২৪.৬ মিলিয়ন ডলার বেতনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৬১তম সর্বোচ্চ বেতনভোগী সিইও হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।