আন্তর্জাতিক

ক্ষমতার মসনদে বসেই একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিশ্র“তি পূরণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল তার কণ্ঠে।

ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না করলে শুল্ক আরোপের পাশাপাশি আরও বেশি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে রাশিয়া। ফলে যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যেই চাপে থাকা রাশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে বেশ উদ্বেগেই আছেন পুতিন। রয়টার্স।

নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনকে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে না হলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বুধবার ট্রাম্প এই প্রথমবার পুতিনকে নিয়ে মুখ খুললেন।

তিনি বলেছেন, ‘এখনই মীমাংসা করুন, এই হাস্যকর যুদ্ধ থামান। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আপনি যদি চুক্তি না করেন, তাহলে রাশিয়া ও যুদ্ধে অংশ নেওয়া অন্য দেশের বিরুদ্ধে চড়া হারে কর, শুল্ক বসানো ও আরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছাড়া আমার সামনে কোনো বিকল্প থাকবে না।’

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই যুদ্ধ শুরুই হতো না। চুক্তি করার জন্য এটাই সেরা সময়। আর কোনো জীবন যেন নষ্ট না হয়। নির্বাচনি প্রচারের সময় ট্রাম্প অবশ্য বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ হবে তা তিনি বলেননি। এখন আরও নিষেধাজ্ঞা বলতে ট্রাম্প কী বোঝাচ্ছেন সেটাও স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউক্রেন অভিযানের কারণে একগাদা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত দুবছরে তেল, গ্যাস ও খনিজ রফতানি নির্ভর রুশ অর্থনীতির আকার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সামলাতে উচ্চ সুদহারে একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ ব্যবসার গতি কমে গেছে, তেমনি কর্মী সংকটে দৈনন্দিন কাজ কর্মও চালানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সোমবার হোয়াইট হাউজে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন ট্রাম্প।

প্রচারণার সময় থেকেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দ্রুত অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করে আসছেন তিনি। ট্রাম্প পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সমঝোতায় রাজি না হলে রুশ অর্থনীতি বড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।

তিনি প্রয়োজনে মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দিতে দ্বিধা করবেন না। তবে আলোচনায় বসার জন্য নির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব রাশিয়া এখনো পায়নি বলে মঙ্গলবার দাবি করেছেন ক্রেমলিনের এক কর্মী।

এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছেন পুতিন। তবে তার শর্ত হচ্ছে, পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের খায়েশ ইউক্রেনের ত্যাগ করতে হবে এবং দেশটিতে ইতোমধ্যে রাশিয়ার কব্জায় আসা এলাকার দাবি ছেড়ে দিতে হবে।

আন্তর্জাতিক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়ানো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগের সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনী ব্যক্তি এবং রাজনীতিবিদরা তার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের লাখ লাখ ডলারের সম্পদ লুট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন এই ব্যক্তিরা তাদের সম্পদ ব্যবহার করে বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে।’

নিক ক্লেগ ইংল্যান্ডের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন-বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফেসবুক বাংলাদেশে তথ্য যাচাই এবং ডিজিটাল যাচাই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের তথ্য যাচাই বন্ধের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ এবং ইউরোপের দেশগুলোতে প্রযোজ্য হবে না।

ক্লেগ আরও বলেন, ফেসবুক বাংলাদেশে তাদের ডিজিটাল যাচাই কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে এবং ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করার পথ খুঁজবে, যা উইকিপিডিয়ার কার্যক্রমের অনুরূপ।

প্রায় ত্রিশ মিনিটের এই বৈঠকে নিক ক্লেগ মেটার পক্ষ থেকে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদানের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বিপুল অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, সম্প্রতি চালু হওয়া কোম্পানির ওপেন সোর্সড লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল এআই, এলআইএএমএ স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এটি বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে এলআইএএমএ’র ওপর এক মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের তরুণদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করবে।’

বৈঠকে মেটার পলিসি প্ল্যানিং ডিরেক্টর প্রবীর মেহতা, বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

চীনে সরকারি সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন আজ ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা এবং আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংহাইয়ের সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (এসআইআইএস)-তে “শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি” শীর্ষক এক সেমিনারে মূল বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হোসেন বিশ্ব শান্তির জন্য একটি ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এবং টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে অর্থনৈতিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেন।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করে বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব যা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রতিনিধিত্বহীন গোষ্ঠী বিশেষ করে যুব ও মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর আরও বেশি জোর দেওয়ার দাবি করে।

রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে, তৌহিদ হোসেন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরির উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “সংঘাতের সমাধানে বাংলাদেশ ও চীন উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ রয়েছে এবং সমাধানে আমাদের অবশ্যই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।”

উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরেন, যা প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়েছে এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সম্পর্ক একটি গতিশীল অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের উন্নয়ন সহায়তা ও বিনিয়োগের রূপান্তরমূলক ভূমিকার উপর জোর দেন, যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

হোসেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মতো বাংলাদেশের সফল সামাজিক উদ্যোগগুলি তুলে ধরেন, যা গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন করেছে, সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তুলেছে। তিনি যুবসমাজের উন্নয়নে অনুরূপ রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য, তিনি বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালীকরণ, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদান আরও গভীর করা এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

এসআইআইএস সভাপতি ডঃ চেন ডংশিয়াওয়ের স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঐতিহাসিক ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের উপর আলোকপাত করেন। তিনি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এবং বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে দুই দেশের ভূমিকা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন পণ্ডিত, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, তরুণ গবেষক, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, এসআইআইএস-এর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ও বিশেষজ্ঞবৃন্দ এবং সাংহাই পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে মূল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এসআইআইএস -এর অ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা বোর্ডের পরিচালক ডঃ ইয়াং জিমিয়ান বক্তব্য রাখেন এবং ছয়জন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞের উপস্থাপনা ছিল উল্লেখযোগ্য।

বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। পরবর্তী অধিবেশনে সমৃদ্ধ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য হারিয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় রুশ মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনের বেশি সেনা, চারটি ট্যাংক, চারটি ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল, একটি সাঁজোয়া কর্মী পরিবহন যান, ৯টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান, ৫৭টি যানবাহন, পাঁচটি আর্টিলারি সিস্টেম, একটি মর্টার, একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ স্টেশন, একটি সাঁজোয়া পুনরুদ্ধার যান, চারটি ইউএভি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং একটি গোলাবারুদ ডিপো হারিয়েছে।

এ নিয়ে কুরস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেন মোট ৫৩,৩৩০ জনের বেশি সেনা এবং ৩০৮টি সামরিক যান হারিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এদিন আরেকটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ সামরিক অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সেনারা দুটি সম্প্রদায়কে মুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সক্রিয় যুদ্ধ অভিযানের ফলে ব্যাটলগ্রুপ ওয়েস্টের ইউনিটগুলো লুগানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের নভোয়েগোরোভকা বসতি মুক্ত করেছে। অন্যদিকে ব্যাটলগ্রুপ সেন্টারের ইউনিটগুলো শত্রুর প্রতিরক্ষার গভীরে অগ্রসর হতে থাকে এবং দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের শেভচেঙ্কোর বসতি মুক্ত করেছে। সূত্র: তাস

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আবার হোয়াইট হাউজে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

এরপর জাতির উদেশে ভাষণ ট্রাম্প। বলেন, ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রাখার কারণ আছে। তিনি বলেন, শিগগিরিই পরিবর্তন আসবে।

ট্রাম্প জানান, সোমবারই মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হবে।

প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের শপথ উপলক্ষ্যে সোমবার ওয়াশিংটনের সর্বত্রই ছিল সাজসাজ রব। নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পুরো শহর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ২৫ হাজার সদস্য এ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ বছর পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের আয়োজন খোলা স্থানেই করা হয়। কিন্তু তীব্র ঠান্ডার কারণে কংগ্রেস ভবনের ভেতরে এবার অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো কংগ্রেস ভবনের রোটুন্ডায় করা হয় পুরো আয়োজন। ভয়াবহ ঠান্ডার কারণে এমনটি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন। কংগ্রেস ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবার বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ার সুযোগ ছিল না। সেখানে মাত্র ২০ হাজার অতিথির বসার স্থান রয়েছে। যারা ভেতরে ঢোকার টিকিট পাননি, তারা ন্যাশনাল মলে বড় স্ক্রিনে অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করেছেন। শপথের পর ট্রাম্প ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউজে একটি জমকালো প্যারেডের মাধ্যমে যাত্রা করেন। ট্রাম্পের সম্মানে ক্যাপিটল রোটুন্ডায় কুচকাওয়াজও আয়োজন করা হয়। এর আগে ১৯৮৫ সালে ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পর ১২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরাজয়ের পর দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফিরলেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি : ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি ছিল বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের প্রধান নির্বাহী শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে ছিলেন। বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামাও উপস্থিত ছিলেন। অন্য প্রেসিডেন্টদের স্ত্রীরা উপস্থিত থাকলেও মিশেল ওবামা অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থি নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে।

আন্তর্জাতিক

আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শুক্রবার রায়ের পরপরই গ্রেফতার করা হয় তাকে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির এ মামলায় সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানকে ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

রাওলপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকক্ষে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেও তা পেছানো হয়েছিল। আর সবশেষ এক বছর ধরে এই কারাগারেই রয়েছেন পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা।

জেলের পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে ইমরান-বুশরা দম্পতিকে। ইমরান খানকে ১০ লাখ ও বুশরাকে পাঁচ লাখ অর্থদণ্ড করা হয়েছে। জরিমানা না দিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অতিরিক্ত ছয় মাস কারাগারে থাকতে হবে। আর বুশরাকে থাকতে হবে তিন মাস।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, বাড়তি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এ রায় দেওয়া হয়। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বুশরা বিবি। রায়ের পর সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তার ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টাবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। মামলায় ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। আর সাধারণ নির্বাচনের পরপর গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন করা হয়েছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের অ্যাকাউন্টাবিলিটি আদালতে মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে শীতকালীন ছুটির কারণে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১৩ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত আদালতকক্ষে হাজির হতে পারেননি উল্লেখ করে সেদিনও রায় স্থগিত করা হয়। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

চল্লিশোর্ধ্ব বুশরা গত বছর রাজধানী ইসলামাবাদে হাজার হাজার পিটিআই সমর্থকদের একত্রিত করে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন। কঠোর নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। দেশটির পার্লামেন্টের অদূরে তিনি ডি-চকের ঐতিহাসিক চত্বরের কাছে একটি ট্রাকের ছাদ থেকে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং ইমরান খানের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান করার আহ্বান জানান।

কয়েকদিনের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পর অবশেষে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দলীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুশরা নিকটবর্তী পিটিআইয়ের শক্ত ঘাঁটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পালিয়ে যান, যেখানে তিনি শুক্রবার আদালতে হাজির হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ ১৫ মাসের যুদ্ধের পর ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি কিছুটা আশাবাদ জাগিয়েছে। এই চুক্তি ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

তবে এই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেশ কিছু বিশ্লেষক। তাদের আশঙ্কা, চুক্তিটি পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। এই বিভাজনটিই মূলত চুক্তির শর্ত ভঙ্গ বা বিশেষ করে, চুক্তি থেকে ইসরাইলের পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উস্কে দিতে পারে।

এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ৪২ দিন ধরে কারাগারে বন্দি ও জিম্মিদের মুক্তি, ইসরাইলি সৈন্যদের জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া এবং মানবিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও কিছু সংখ্যক বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত কয়েক মাস ধরেই এই যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে আসছেন। এমনকি হামাসের সঙ্গে মীমাংসা করার পরিবর্তে তাদের ধ্বংস করতে চেয়েছেন। যে কারণে তিনি বন্দিদের মুক্তির পর হয়তো হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় আক্রমণ শুরু করতে পারেন।

এছাড়া সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপটি তার রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য হতে পারে। কারণ নেতানিয়াহুর জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

রাজনৈতিক চাপ এবং নেতানিয়াহুর অবস্থান

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহু এবং তার সরকার যুদ্ধবিরতি বিরোধী পদক্ষেপ নিতে পারে। কারণ তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হতে পারে এবং ইসরাইলের ইহুদিবাদী মন্ত্রীরা, বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এই যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছেন। তারা নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সম্মত না হতে চাপ দিচ্ছেন। যার ফলে ইসরাইলে সরকার ভেঙে যেতে পারে এবং নতুন নির্বাচন হতে পারে।

যুদ্ধবিরতির শর্তে অস্পষ্টতা

এদিকে বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তির বিষয়টিকে ‘একটি তাত্ক্ষণিক বিরতি’ হিসেবে দেখছেন, যা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

ফিলিস্তিনি আইনজীবী ডায়ানা বুটু বলেছেন, চুক্তির শর্তাবলী খুবই অস্পষ্ট, বিশেষ করে গাজা থেকে ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে। একটি শর্তে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজার সীমান্ত থেকে ৩০০ মিটার দূরে সরে যাবে। কিন্তু এটি ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ফিরে যাবে কিনা, তা পরিষ্কার করা হয়নি। এ ধরনের অস্পষ্ট ভাষা ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে।

ইহুদিবাদী মন্ত্রীদের প্রভাব এবং ইসরাইলের রাজনৈতিক অস্থিরতা

নেতানিয়াহুর সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভিরের মতো অতি ইহুদিবাদী মন্ত্রীরা ইসরাইলের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই অবস্থান ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা আবারও যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছেন।

এর ফলে, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্থিতি রক্ষা করতে হয়তো যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হতে পারেন।

গাজার ভবিষ্যৎ এবং একক রাষ্ট্রের ধারণা

এই চুক্তির ফলে গাজার সার্বিক পরিস্থিতি কতটা পরিবর্তিত হবে, তা নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গাজার ওপর ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ থাকলে হামাস তাদের ক্ষমতা পুনর্গঠন করতে পারে। আর ইসরাইলও যেকোনো পরিস্থিতিতেই গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চাইবে।

যেমনটা নেতানিয়াহু আগেই বলেছিলেন যে, ইসরাইলকে গাজা উপত্যকায় ‘সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ রাখতে হবে। আর এটাই ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করবে।

মার্কিন পরিকল্পনা ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) ভূমিকা

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ফাতাহ তথা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) গাজায় ফিরিয়ে আনার পক্ষে কথা বলছে। যা গাজার পুনর্গঠন এবং রাজনৈতিক পুনঃসংযুক্তির দিকে একটি পদক্ষেপ হতে পারে।

তবে ইসরাইল এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। কারণ এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যা নেতানিয়াহু চান না। দখলদার ইসরাইল মনে করে, যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা ফাতাহ আবার গাজায় ফিরে আসে, তাহলে তারা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। যা ইসরাইলের জন্য চাপ সৃষ্টি করবে।

স্থায়ী শান্তির জন্য

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গাজায় একটি স্থায়ী শান্তির জন্য একটি রাজনৈতিক কাঠামোর প্রয়োজন। যা বর্তমান যুদ্ধবিরতির চুক্তি পূর্ণ করতে সাহায্য করবে। তাদের মতে, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একতরফা যুদ্ধবিরতির চেয়ে অনেক বেশি কিছু প্রয়োজন। যেমন– রাজনৈতিক সমাধান এবং দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সূত্র: আল-জাজিরা

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত সহজ করেছে বাংলাদেশ। এখন থেকে পাকিস্তানি নাগরিকরা অনলাইনেও বাংলাদেশের ভিসা পাবেন।

লাহোর চেম্বার অব কমার্স পরিদর্শনকালে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইকবাল খান এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর জিও নিউজের।

লাহোর চেম্বার অব কমার্সে দেওয়া বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত বলেন, লাহোরের সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলাদা পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো সময়ের দাবি।

পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে লাহোর চেম্বার ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানকে সম্মানের চোখে দেখে, দুই দেশকেই অর্থনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত খুব সহজ করেছে এবং এখন পাকিস্তানের নাগরিকরাও অনলাইনে বাংলাদেশের ভিসা পেতে পারেন।

লাহোর চেম্বারের সভাপতি মিয়া আবু জার শাদ বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চাই, আমাদের প্রতিনিধিদল শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে যাবে।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ দলের তিন নেতাকে আমন্ত্রণ জানানোর বার্তা দিয়েছে বিএন‌পি। তবে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস বলছে, ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ নামে কোনো অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সম্পৃক্ত নয়।

শ‌নিবার (১১ জানুয়া‌রি) রাতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইভেলি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জা‌নিয়েছেন।

স্টিফেন ইভেলি বলেন, আইআরএফ শীর্ষ স‌ম্মেলন বা ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এর আয়োজন বা অর্থায়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়। আইআরএফ শীর্ষ স‌ম্মেলনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অংশীদার সরকারগুলোর দ্বারা বার্ষিক আয়োজিত আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা মন্ত্রিসভা থেকে আলাদা, যা জার্মান সরকার বার্লিনে ১০-১১ অক্টোবর (২০২৪) আয়োজন করেছিল।

মুখপাত্র বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ দেশে ও বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষায় সরকার এবং নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানায়।

তি‌নি বলেন, মার্কিন সরকার এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট আইআরএফ সামিট বা ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এর পরিকল্পনা, আমন্ত্রণ এবং অংশগ্রহণকারীদের পরিচালনা বা প্রভাবিত করে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ আমন্ত্রণ পাওয়ার তথ‌্য শনিবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দলটি আমন্ত্রণপত্র পে‌য়ে‌ছে ব‌লে জানানো হ‌য়ে‌ছে।

শায়রুল কবির খান বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি সদস্য এবং চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস কংগ্রেশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

আন্তর্জাতিক