আন্তর্জাতিক

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে আজ। হজ পালন করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইতোমধ্যে সৌদি আরবের মিনায় পৌঁছে গেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর কেউ হেঁটে, কেউ বাহনে চড়ে সেখানে জড়ো হয়েছেন। ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ মুখরিত হবে তাঁবুর শহরখ্যাত মিনার প্রান্তর। সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এবার হজে অংশ নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ৮২ হাজার ৭৭২ জন। ৯ জিলহজ (১৫ জুন) আরাফাতের ময়দানে হজের মূলপর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনা। হজের অংশ হিসাবে আজ ৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন থাকবেন হাজিরা। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সন্ধ্যার পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা করবেন। সেখানে রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান এবং প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গতবারের মতো এবারও প্রচণ্ড গরমের ভোগান্তি সঙ্গী হচ্ছে হজযাত্রীদের। হজের সময় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছাতে পারে বলে হজযাত্রীদের সতর্ক করেছে মক্কার আবহাওয়া দপ্তর। বলা হয়েছে, এ বছর হজযাত্রীরা কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। এর মধ্যে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি অন্যতম। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-আব্দুল্লাহিল বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রা হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

চলতি বছর মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। ডিজিটাল এ নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে। হজের জন্য মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে চাইলে এ কার্ড অবশ্যই দেখাতে হবে।

সৌদি আরবে এবার হজ পালন করতে গিয়ে স্বাভাবিক কারণে এখন পর্যন্ত ১৫ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। মক্কায় মারা গেছেন ১১ জন এবং মদিনায় ৪ জন।

আন্তর্জাতিক

একদিনে আরও ৪০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ৩০ জনকে আটক করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পৃথক অভিযানে তাদের হত্যা ও আটক করা হয়। এসময় আহত হন অনেকে।

সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ১২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৭১২ জনে।

এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বহু সংখ্যক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছে, কারণ উদ্ধারকারীরা এখনো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের দীর্ঘ আট মাসে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের অবরোধের মুখে ধ্বংসস্তূপে পরিণিত হয়েছে।

ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। যার সর্বশেষ রায়ে তেল আবিবকে অবিলম্বে দক্ষিণ শহর রাফাহ-তে সমস্ত তৎপরতা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।

আন্তর্জাতিক

তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এবার মন্ত্রিসভার দফতর বণ্টন করলেন নরেন্দ্র মোদি। নতুন মন্ত্রিসভায় বড় মন্ত্রণালয়গুলোতে তেমন পরিবর্তন আসেনি।

এবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন অমিত শাহ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবারও থাকছে রাজনাথ সিংয়ের হাতে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এস জয়শঙ্করের ওপরই আবারও আস্থা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দেশটির অর্থমন্ত্রীর পদেও পরিবর্তন আসেনি। নতুন সরকারেও অর্থ মন্ত্রণালয় সামলাবেন নির্মলা সীতারমণ। আগের মতোই সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাবেন নীতীন গড়করি।

জোট শরিক হিসেবে বিহারের লোক জনশক্তি দলের (রাম বিলাস) প্রেসিডেন্ট চিরাগ পাসওয়ান পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসা চিরাগ পাসওয়ান (৪১) এবারই প্রথম ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামলাবেন। এবার এখানে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অজয় তামতা ও হর্ষ মালহোত্রা। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন শিবরাজ সিং চৌহান।

পর্যটন মন্ত্রী হয়েছেন গাজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন অশ্বিনী বৈষ্ণ, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী হয়েছেন কিনজারাপু রামমোহন নাইডু, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন অন্নপূর্ণা দেবী।

গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি।

এবার লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া বিজেপিকে গঠন করতে হয়েছে জোট সরকার। এনডিএ জোটের শরিক দলগুলোকে মন্ত্রিসভায় পদ দিতে হয়েছে তাদের।

আন্তর্জাতিক

ভারতের নতুন সরকারের শপথ শনিবার গ্রহণের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে গেছে। সব ঠিকঠাক চললে শনিবার নয়, রোববারই তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এমনটাই জানাচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

খবর সূত্রে জানা গেছে, ৯ জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে শপথ নিতে পারেন মোদি।

এর আগে মঙ্গলবার লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোদি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন তিনি। রাষ্ট্রপতি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেছেন। একইসঙ্গে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই পদের দায়িত্ব সামলাতে মোদিকে অনুরোধও করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু।

জানা যায়, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রোববার শপথ নিতে পারেন তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। তার আগের দিনই শপথ নেওয়ার কথা ছিল মোদির।

তবে এখন ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন মোদি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১২ জুন শপথ নিতে পারেন চন্দ্রবাবু।

বিজেপি সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী পদে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল, ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগিয়াল ওয়াংচুকসহ আরও অনেকে।

মঙ্গলবার দেশটির ৫৪৩টি আসনের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯২টি আসন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি আসন। অন্যান্য দলের প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ১৮টি।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো- এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের মতো এবার আর এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। কারণ, ৫৪৫ আসনের (দু’টি মনোনীত আসনসহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি আসন। বিজেপি এককভাবে জিতেছে ২৪০টি। তাই সরকার গঠন করতে তাদের শরিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে বুধবারই এনডিএ শরিকদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন মোদি, অমিত শাহরা। দিল্লিতেই বুধবার সন্ধ্যায় বৈঠক হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদেরও।

এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এখন এনডিএ শরিকদের ভরসায় সরকার গড়তে হবে মোদিকে। এই পরিস্থিতিতে কোনো একটি শরিক দল যদি বেঁকে বসে, তাহলে সমীকরণ বদলে যেতে পারে।

অনেকের মতে, সেই কারণেই বেশি সময় নিতে চাইছেন না মোদি। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর্যালোচনা করতে বুধবার বৈঠকে বসেন তিনি। সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক শুরু হয়। সেটিই ছিল দ্বিতীয় মোদি সরকারের মন্ত্রী পরিষদের শেষ বৈঠক। সেখানেই শপথগ্রহণের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয় বলে খবরে প্রকাশ।

যদিও বৃহস্পতিবার দুপুরেই জানা গেল শপথের দিন বদলের খবর। তবে ঠিক কি কারণে তা পেছালো- সে বিষয়ে স্পষ্ট করে জানা যায়নি কিছু। তথ্যসূত্র- এনডিটিভি।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়লে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পিছপা হবে না দেশটি। পশ্চিমা বিশ্বকে ইঙ্গিত করে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ আর্থিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। সম্প্রতি সেই অস্ত্রে রাশিয়ার ভূখণ্ডেও আঘাত হানার নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টির সমালোচনা করে পুতিন বলেন, পশ্চিমা বিশ্বকেও আঘাত করার জন্য মস্কো তার মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ করবে। বিবিসি।

একই সাক্ষাৎকারে পুতিন আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো যদি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায়, তাহলে আমাদেরও একই ধরনের আচরণ করার অধিকার রয়েছে। তবে এমনটা হলে পরিস্থিতি খুবই জটিল হবে। এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধে অস্ত্র সরবারহকারী দেশগুলোর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়াও পশ্চিমাদের মতো যুদ্ধে মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ করবে। যদিও কোন কোন দেশে এ অস্ত্র সরবরাহ করা হবে তা উল্লেখ করেননি তিনি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুতিন। এ পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি মূলত পশ্চিমা বিশ্বকে আঘাত করার জন্য মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

রাশিয়াকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য জার্মানিসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দেশগুলো ইউক্রেনকে যুদ্ধের অস্ত্র সরবরাহ করছে। অন্যদিকে রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়া এবং ইরান যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করছে বলে নিশ্চিত করেছে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ সময় জার্মানিকে উদ্দেশ করে পুতিন বলেন, ‘আমি দৃপ্তকণ্ঠে বলতে চাই, জার্মানির কোনো অস্ত্রে যদি রাশিয়ার কোনো ধরনের ক্ষতি হয় তার পরিণাম জার্মানির জন্য কখনোই সুখকর হবে না। বিশেষ করে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্রের জোগান এবং ইউক্রেনকে এ সম্পর্কে শলাপরামর্শ দেওয়াটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধে উভয়পক্ষের বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন। বহু সাজানো-গোছানো শহর ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনের একটি আদালতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিচার চলছে। আগ্নেয়াস্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলায় আদালতের শুনানিতে হান্টারের (৫৪) সাবেক বান্ধবী জোয়ে কেস্তান বলেন, হান্টার বাইডেন ২০ মিনিট পরপর কোকেন নিতেন।

শুনানিতে জোয়ে বলেন, হান্টারের সঙ্গে তার প্রথম যখন দেখা হয়েছিল, তখন তাকে ২০ মিনিট পরপর কোকেন নিতে দেখেন তিনি।

জোয়ে দাবি করেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নিউইয়র্কের একটি ক্লাবে হান্টারের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল। দেখা হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে হান্টার কোকেন নিতে শুরু করেন। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক থাকাকালে হান্টারের ঘন ঘন কোকেন নেওয়ার এই প্রবণতা তিনি লক্ষ্য করেছেন। মাদকের জন্য হান্টার প্রায়ই নগদ অর্থ তুলতেন।

হান্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ সালে উইলমিংটনের আগ্নেয়াস্ত্রের একটি দোকান থেকে তিনি একটি রিভলবার কিনেছিলেন। আগ্নেয়াস্ত্রটি কেনার সময় তিনি নিজের মাদকাসক্তি নিয়ে ফেডারেল কাগজপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। হান্টার মিথ্যা দাবি করেছিলেন, তিনি মাদকাসক্ত নন; কিন্তু সেই সময় তিনি মাদক (কোকেন) ব্যবহারকারী ছিলেন। মাদকাসক্ত অবস্থায় তিনি নিজের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রেখেছিলেন।

আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন হান্টার। তার পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, আগ্নেয়াস্ত্রটি কেনার সময় তিনি আরোগ্যলাভ পর্যায়ে ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের ছেলের বিরুদ্ধে এই প্রথম ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে বিচার হচ্ছে। মামলায় হান্টারের বিরুদ্ধে তিনটি ফেডারেল অভিযোগ আনা হয়েছে। সব অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে তার ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর জনসংখ্যা যতই বাড়ুক, চিন্তা নেই। পৃথিবীর বাইরেও মানুষের থাকার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা খুঁজে পেয়ে গেছে নাসা। চাঁদের মতো এই জায়গা নিয়ে পরিশ্রম করতে হবে না। জায়গাটি আগে থেকেই নাকি মানব বসবাসের যোগ্য। আর সেই জায়গাটিই খুঁজে পেয়েছে নাসার টেলিস্কোপ! এটি ব্যবহার করেই নাকি পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডলসহ একটি এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

জানা গেছে, এই এক্সোপ্ল্যানেটটি পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা চওড়া এবং এর তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই এক্সোপ্ল্যানেটটি মাত্র কয়েক দিনেই তার নক্ষত্রকে একবার প্রদক্ষিণ করে।

জনবসতি গড়ে তোলার জন্য, এই এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা আশা করছেন, এই গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সম্ভাব্য এই নতুন গ্রহটি গ্লিস ১২বি (Gliese 12b) নামে পরিচিত, যা বিজ্ঞানীদের ভাষায় এক্সোপ্ল্যানেট। গ্লিস ১২বি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে মীন রাশিতে অবস্থিত একটি ছোট এবং শীতল লাল বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।

গ্লিস ১২বি এক্সোপ্ল্যানেটটি আবিষ্কার করেছে নাসার ট্রান্সিটিং এক্সপ্লোনেট সার্ভে স্যাটেলাইট (Transiting Exoplanet Survey Satellite/TESS)।বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই এক্সোপ্ল্যানেটের প্রস্থ পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১.১ গুণ বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই প্রস্থই এক্সোপ্ল্যানেটটিকে আমাদের গ্রহের পাশাপাশি শুক্রের মতো করে তোলে, যাকে পৃথিবীর যমজ বোন বলা হয়। গ্লিস ১২বি তার নক্ষত্রকে মাত্র ১২.৮ দিনেই একবার প্ৰদক্ষিণ করে। যেহেতু এই লাল বামন গ্লিস ১২বি সূর্যের আকারের প্রায় এক চতুর্থাংশ, তাই এটি পৃথিবীর নক্ষত্রের চেয়েও অনেক বেশি শীতল।

অর্থাৎ যদিও গ্লিস ১২বি তার লাল বামন নক্ষত্র থেকে সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের মাত্র ৭ শতাংশ সমান দূরত্বে রয়েছে, তাই এটি এখনও বাসযোগ্য অঞ্চল। এই এলাকাটি ‘গোল্ডিলক্স জোন’ নামেও পরিচিত।

গ্লিস ১২বি সূর্য থেকে শুক্রের প্রাপ্ত বিকিরণের প্রায় ৮৫ শতাংশ গ্রহণ করে, কিন্তু শুক্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৮৬৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর তুলনায় এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বলে মনে করা হয়।

যদিও পৃথিবী এবং শুক্র উভয়ই সূর্যের বাসযোগ্য অঞ্চলে রয়েছে, একটিতে জীবন সম্ভব এবং একটি অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, অন্যটি একটি অবাসযোগ্য আগুনে পরিবেশ, যেখানে তাপমাত্রা এত গরম যে সীসাও গলে যেতে পারে।

অবশ্য গ্লিস ১২বি আবিষ্কারের পেছনে থাকা বিজ্ঞানী দল এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে, এই এক্সোপ্ল্যানেটে সত্যিই বায়ুমণ্ডল আছে কিনা। তাই পৃথিবীর মতো এটিও বাসযোগ্য হতে পারে কিনা- তা স্পষ্ট নয়। তবে গবেষকরা আশাবাদী।

আন্তর্জাতিক

চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তবে আসন্ন এ নির্বাচনের আগেই বিপাকে পড়েছেন এবারের জনপ্রিয় প্রার্থী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন রায় ঘোষণা হওয়ায় এবার প্রশ্ন উঠছে সাব্যস্ত হওয়ার পরও কি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন ট্রাম্প? চলমান নির্বাচনি প্রচারের জন্য আদালতের ঐতিহাসিক এই রায়ের অর্থ তাহলে কী হতে পারে? বৃহস্পতিবার স্কাই নিউজের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব প্রশ্নের জবাব।

প্রথমত, প্রশ্ন উঠেছে এবার নির্বাচনে কি লড়তে পারবেন ট্রাম্প? এর উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে এখনো লড়তে পারবেন ট্রাম্প। মার্কিন সংবিধানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য হতে যে তিনটি শর্ত রয়েছে এর মধ্যে দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর বিষয়ে কিছু বলা নেই।

শর্তগুলো হলো: প্রথমত, প্রার্থীদের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হতে হবে এবং তৃতীয়ত, প্রার্থীকে কমপক্ষে ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে। এলএ টাইমসকে প্রগতিশীল কনস্টিটিউশনাল একাউন্টিবিলিটি সেন্টারের সভাপতি এলিজাবেথ ওয়াইড্রা বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময় কারাগারে থাকলেও প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে এবং নির্বাচিত হতে কোনো কিছুই তাকে বাধা দিতে পারবে না।’ তবে ফোজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে এক বছর বা তারও বেশি সময় সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে মার্কিন জরিপবিদ ডগ শোয়েন বলেন, আট বছর আগের ঘটনায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নির্বাচন হবে আগামী নভেম্বরে। ততদিনে মার্কিন ভোটারদের মধ্যে বিষয়টির প্রভাব অতটা জোরালোভাবে নাও থাকতে পারে।

ভোটাররা নভেম্বরে যা ভাববেন, তা হলো মূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত পরিস্থিতি, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা, ইসরাইল ও ইউক্রেনে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে এসব বিষয়। অবশ্য রিপাবলিকান উইমেন ফর প্রোগ্রেসের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যারিয়েল হিল-ডেভিস বলেন, তিনি মনে করেন, এই বিষয়টি একজন প্রার্থী হিসাবে তার (ট্রাম্প) ওপর প্রভাব ফেলবে। তার ক্ষতির কারণ হবে। নির্বাচনের প্রভাব সম্পর্কে রিপাবলিকান পোলস্টার হুইট আইরেস বলেছিলেন, রিপাবলিকানদের এক-চতুর্থাংশই ট্রাম্পকে এড়িয়ে যাবেন বলে সন্দেহ করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে কিছু কিছু বিশ্লেষকের মতে, ট্রাম্পও বাইডেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এমনই একজন বিশ্লেষক বিল গ্যালস্টন। তার মতে, এ রায় প্রেসিডেন্ট পদের প্রতিযোগিতায় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টের নির্বাচনি প্রচারে কাজ করেছেন। গ্যালস্টন বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত, এটি যৌনতা সম্পর্কে মিথ্যা বলার সমান। আমি মনে করি, বেশির ভাগ আমেরিকানই মনে করে প্রত্যেকেই যৌনতা নিয়ে মিথ্যা বলেন।’

আবার এ রায়ের পরও এতটুকু ভাটা পড়েনি ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায়। রক্ষণশীল ভাবধারার অনেক দাতা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসাবে দেখে থাকেন। ফলে নির্বাচনে রিপাবলিকান দাতারা ট্রাম্পের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ক্যাসিনো ব্যবসায়ী মিরিয়াম অ্যাডেলসন ও হটলিয়ার রবার্ট বিগলো।

বৃহস্পতিবারের রায় ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের কিছু দাতাকেও তার পক্ষে অনুদান নিয়ে এগিয়ে আসতে প্ররোচিত করেছে। রবার্ট বিগলো সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থকদের একজন। ট্রাম্পকে সমর্থন দেওয়া একটি গোষ্ঠীকে বিগলো এরই মধ্যে ৯০ লাখ ডলারের অনুদান দিয়েছেন। বিগলো বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার চলমান প্রক্রিয়া ‘মর্যাদাহানিকর’। রয়টার্সকে বিগলো বলেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট (সাবেক) ট্রাম্পের কাছে তাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরও ৫০ লাখ ডলার পাঠাচ্ছি।’

জ্যামাইকায় ট্রাম্পের সাবেক প্রতিনিধি ডন টাপিয়া বলেছেন, তিনি, একটি ছোট পারিবারিক নেটওয়ার্ক ও বন্ধুরা নির্বাচনে ট্রাম্পকে সহায়তা করতে আড়াই লাখ ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর টাপিয়া রয়টার্সকে বলেন, তাদের লক্ষ্য, ট্রাম্প সমর্থক গ্রুপ এমএজিএ ইনকরপোরেটকে ১০ লাখ ডলারের বেশি দেওয়া। তার জন্য তারা সবকিছু করবেন। রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিলিকন ভ্যালির বিনিয়োগকারী শন ম্যাগুয়ার ট্রাম্পকে সহায়তা করতে তিন লাখ ডলার অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

সপ্তম ধাপের ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে শনিবারই শেষ হতে যাচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এদিন বিকালেই দিল্লিতে বৈঠকে বসবে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ‘ইন্ডিয়া’ জোট। কথা ছিল, এ বৈঠকেই ক্ষমতায় এলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে আলোচনা করবে দলগুলো। তবে এর আগেই ‘প্রধানমন্ত্রী মুখ’ হিসেবে রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

এনডিটিভিসহ ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার বিকালে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের পছন্দের কথা জানান খাড়গে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি রাহুল গান্ধীকেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নেতা মনে করেন।

এর আগে কংগ্রেসসহ ইন্ডিয়া জোটের নেতারা বিগত কয়েক দিন ধরেই দাবি করে আসছেন—তারাই এবার ক্ষমতায় আসবেন। বিদায় নেবেন নরেন্দ্র মোদি। এ অবস্থায় বিরোধীরা সরকার গঠন করলে স্বভাবতই প্রশ্ন চলে আসে—তাহলে প্রধানমন্ত্রী কে হবে?

এমন প্রশ্নের জবাবেই দুই দিন আগে স্বয়ং খাড়গে এবং জোটের বড় মুখ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, ভোটের ফল প্রকাশের পরই এই প্রশ্নের জবাব মিলবে। তাদের কথায় এমন মনোভাবই ফুটে উঠেছিল যে, বিরোধী জোটে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো নেতার অভাব নেই।

সর্বশেষ রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যোগ্য নেতা বলার পাশাপাশি কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে জানান, ভোটের লড়াইয়ে এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর আত্মপ্রকাশ হোক এমনটাই চেয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, গান্ধী পরিবারের পারিবারিক ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত রায়বেরেলি থেকে প্রার্থী হবেন প্রিয়াঙ্কা। এই আসন থেকে এর আগে টানা ৫ বার বিজয়ী হয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। তবে সোনিয়া এবং প্রিয়াঙ্কা কেউই এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হননি। এর বদলে তারা বিরোধী জোটের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায়ই ব্যস্ত ছিলেন এবং রায়বেরেলি থেকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হন রাহুল গান্ধী।

বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন—এই বিষয়টি নির্বাচনের আগে থেকেই বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের আলোচনায় ছিল। এই জোটের একটি বৈঠকে এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো কয়েকজন নেতা প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে খাড়গের নামই উচ্চারণ করেছিলেন। তবে সেই প্রস্তাবে সম্মতি দেয়নি কংগ্রেস। সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টি নিয়ে খাড়গের কাছে জানতে চাইলে, কথা আর বাড়াতে চাননি তিনি।

আন্তর্জাতিক

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে একটি ফোরামে আরব নেতা ও কূটনীতিকদের সাথে বক্তৃতা করার সময় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের বিষয়ে একটি শান্তি সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন।

চীন এই সপ্তাহে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং অন্যান্য আরব নেতাদের একটি ফোরাম বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে। যেখানে গাজার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিনিধিদের শি বলেন, চীন সংঘাত সমাধানের জন্য একটি ‘ব্যাপক ভিত্তিক’ শান্তি সম্মেলনকে সমর্থন করে।

শি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য উন্নয়নের জন্য বিপুল সম্ভাবনায় অঞ্চল। তবে সেখানে এখনও যুদ্ধ চলছে।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ অনির্দিষ্টকাল চলবে না। ন্যায়বিচার চিরতরে অনুপস্থিত থাকা উচিত নয়।’

শি বলেন, চীন ‘জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদকে সমর্থন করে এবং আরও বিস্তৃত, কর্তৃত্বপূর্ণ এবং কার্যকর আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন সমর্থন করে।’

ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে সুসম্পর্ক বজায় রাখা চীন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ অবসানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বলে আসছে।

বুধবার মিশরের সিসির সাথে সাক্ষাত করে শি বলেছেন, তিনি গাজার ‘অত্যন্ত গুরুতর’ পরিস্থিতির জন্য ‘গভীরভাবে ব্যথিত’।

যেখানে হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের হামলায় ৩৬,১৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।

শি বলেন, ‘এখন শীর্ষ অগ্রাধিকারের কাজ হল অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি। যাতে সংঘাতের বিস্তার এড়াতে, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব না পড়ে এবং আরও গুরুতর মানবিক সংকট রোধ করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন সমস্যার একটি প্রাথমিক, ব্যাপক, ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য’ চাপ দিতে গাজা এবং ইসরায়েলের প্রতিবেশী মিশরের সাথে কাজ করতে চীন প্রস্তুত রয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। গত বছর এটি সৌদি আরব এবং তার দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানের মধ্যে বিরোধের অবসানে মধ্যস্থতা করেছে।

চীন গত মাসে প্রতিদ্ব›দ্ধী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এবং ফাতাহকে ‘আন্তঃফিলিস্তিনি পুনর্মিলন বিষয়ে গভীর ও অকপট আলোচনার’ আয়োজন করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এই অঞ্চলে তার অবস্থানকে বাড়ানোর জন্য গাজায় যুদ্ধের সুবিধা নিতে চাইছে। কথিত মার্কিন নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের পলিসি ফেলো ক্যামিল লোন্স এএফপি’কে বলেছেন, ‘বেইজিং চলমান সংঘাতকে আন্তর্জাতিক দৃশ্যপটে পশ্চিমাদের দ্বৈত নীতির সমালোচনা করার এবং একটি বিকল্প বৈশ্বিক ব্যবস্থার আহ্বান জানানোর একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসাবে দেখছে।’

বৃহস্পতিবার শি আরব বিশ্বের সাথে তার ‘গভীর সখ্যতার’ প্রশংসা করেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এই সপ্তাহের ফোরামে যোগদানকারী আঞ্চলিক নেতা এবং কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন।

শি বলেছেন, চীন এই অঞ্চলের সাথে জ্বালানি বিষয়ে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘চীন তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে আরব পক্ষের সাথে কৌশলগত সহযোগিতা আরও বাড়াবে এবং বাজার নিরাপত্তার সাথে সরবরাহ নিরাপত্তাকে একীভূত করবে।’