আন্তর্জাতিক

এবার সৌদি আরবের আমন্ত্রণে বিশ্বের ৮৮টি দেশের দুই হাজারেরও বেশি ইসলামী ব্যক্তিত্ব পবিত্র হজ করবেন।

গত মঙ্গলবার দেশটির ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

এ বছর সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের বিশেষ নিমন্ত্রণে এক হাজার ফিলিস্তিনিসহ বিশ্বের ৮৮টি দেশের দুই হাজার ৩২২ জন হজ করবেন।

সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ‘গেস্ট প্রগ্রাম ফর হজ অ্যান্ড ওমরাহ’র অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা করা হয়।

এর মধ্যে যমজ পরিবারের ২২ জন সদস্য রয়েছেন, যাদের সফল অস্ত্রোপচারে বিচ্ছেদ করা হয়, তাদেরও হজের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় হতাহত বা কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর এক হাজার ব্যক্তিকে হজ করানো হচ্ছে।

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবার বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ জনের একটি দল সৌদি সরকারের অতিথি হিসেবে হজ করবে। এরই মধ্যে রাজধানীর বারিধারায় সৌদি দূতাবাসে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কাছে ইহরামের কাপড় হস্তান্তর করা হয়।

দেশটির ইসলামবিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ আল-শেখ বলেন, প্রতিবছর সৌদি সরকারের অর্থায়নে নির্দিষ্টসংখ্যক ব্যক্তির হজের ব্যবস্থা করা হয়।

২৬ বছর আগে সৌদি আরবের বাদশাহের আমন্ত্রণে ‘গেস্ট প্রোগ্রাম ফর হজ অ্যান্ড ওমরাহ’ চালু করা হয়। এ প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি মুসলিম নারী ও পুরুষ হজ ও ওমরাহ পালন করেন।

আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে ইরান। সোমবার জাতিসংঘের পারমাণবিক শক্তি নজরদারি সংস্থা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এক গোপন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এপি, ভিওএ, রয়টার্সের।

আইএইএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে যে পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, তা ২০১৫ সালে তেহরান ও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে উপনীত চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে অন্তত ৩০ গুণ বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের পরিমাণ ৬,২১৩.৩ কিলোগ্রামের (১৩,৬৭১.৫ পাউন্ড) বেশি। ফেব্র“য়ারিতে আইএইএ-এর শেষ প্রতিবেদন দেওয়ার পর ইরান এর পরিমাণ ৬৭৫.৮ কিলোগ্রাম (১,৪৮৯.৮ পাউন্ড) বৃদ্ধি করেছে।

আইএইএ-এর পরিচালক এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত মাসে বলেছিলেন, ইরানের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এ ইউরেনিয়াম দিয়ে ইরান ইচ্ছা করলে বেশ কয়েকটি পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে। স্কাই নিউজকে তিনি এপ্রিলে বলেন, যে পর্যায়ের পরিদর্শন আমাদের প্রয়োজন, সেই পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ ইরানে করা যাচ্ছে না।

ইরানের কর্মকর্তারাও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তারা প্রয়োজনে পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারেন। তবে ইরান বরাবরই বলে আসছে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পরিদর্শনের পরিধি বাড়ানোর ব্যাপারে ২০২৩ সালে জাতিসংঘ ও ইরানের মধ্যকার চুক্তির ব্যাপারে দুপক্ষ এখনো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএইএ-এর কর্মকর্তাদের পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন প্রতিহত করার ব্যাপারে তেহরান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটা এখনো ইরান পুনর্বিবেচনা করেনি। দুই পক্ষের চলমান আলোচনার মাধ্যমে ইরান সেটা পুনর্বিবেচনা করবে বলে আইএইএ আশা করছে।

আইএইএ প্রধান সম্পর্ক উন্নয়নে এ মাসে ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর পর সেই আলোচনাও স্থবির হয়ে গেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোকে নিয়ে তেহরানের পরমাণু আলোচনা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে ইরানের সঙ্গে আইএইএ-এর টানাপোড়েন শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক

আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। স্পেনের পক্ষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, আয়ারল্যান্ডের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ও নরওয়ের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মঙ্গলবার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি বসবাস করা।

স্প্যানিশ মন্ত্রিসভায় এ বিষয়টি অনুমোদনের পর সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক ন্যায়বিচারের বিষয়’ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এ স্বীকৃতি শান্তির জন্য অপরিহার্য। আমাদের এ পদক্ষেপ ‘কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। ’

তিনি বলেন, হামাসের ৭ অক্টোবরের কর্মকাণ্ডের কারণে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়েছে। স্পেনের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধী হামাসকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

এর আগে ঘোষণার বিষয়ে নিশ্চিত করেন স্প্যানিশ সরকারের মুখপাত্র পিলার আলেগ্রিয়া। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের শান্তি অর্জনে সহায়তা করা।

এর আগে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে ‘দিনটি বিশেষ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ নরওয়ে-ফিলিস্তিন সম্পর্কের জন্য বিশেষ দিন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সবচেয়ে উৎসাহী রক্ষকদের অন্যতম নরওয়ে।

আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বলেন, আয়ারল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাথে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

আমাদের সরকারের এ সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অনুমতি দেয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে আয়ারল্যান্ডে ফিলিস্তিনি মিশনের মর্যাদা দূতাবাসে উন্নীত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থেকে আয়ারল্যান্ডে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে।

মার্টিন বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি একটি প্রক্রিয়ার শেষ নয়; বরং শুরু। এটা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে।

ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। তিনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি বিশ্বকে সংকেত দিচ্ছে যে, একটি দেশ হিসেবে আপনারাও এমন একটি বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ইউরোপের এ তিন দেশ গত কয়েকদিন আগেই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেবে বলে আসছিল। এ নিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছিল ইসরায়েল। তিন দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরও ইসরায়েল এর কড়া নিন্দা জানায়। তেল আবিব বলেছে, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধের মাঝে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্ত হামাসের জন্য পুরস্কার।

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘ সাত মাস পেরিয়ে গেছে গাজা যুদ্ধ। ইসরাইলের লাগাতার হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। তবুও থামছেই না ইসরাইলের বর্বরতা। বরং দিন দিন আরও নৃশংস হয়ে উঠছে ইসরাইলি সেনারা। ইসরাইলের অবিরত হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অনেকেই। জীবন বাঁচাতে ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে। কিন্তু নিরাপত্তা নেই সেখানেও। আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবুতেও পড়ল ইসরাইলের ভয়ংকর থাবা। জীবন্ত পুড়ে ছাই হতে হলো নিরাপদ ভাবা সেই জায়গাটিতেও।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাফাহর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অস্থায়ী তাঁবু লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

রোববার রাতের (স্থানীয় সময়) হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সোমবার আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিরাপদ অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত রাফাহর তাল আস-সুলতান এলাকায় তাঁবুর ভেতরে থাকা অনেক ফিলিস্তিনি ইসরাইলের বোমার আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফাহর তাল আস-সুলতানে জাতিসংঘ মিশন ইউএন-আর-ডব্লিউর লজিস্টিক স্পেসের পাশে অস্থায়ী তাঁবু বানিয়েছিলেন ফিলিস্তিনিরা। তাদের বিশ্বাস ছিল, সেখানে থাকলে নিরাপদে থাকবেন। কিন্তু জনাকীর্ণ ওই স্থানে ৮টি শক্তিশালী বিস্ফোরক দিয়ে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। প্লাস্টিক ও কাপড়ের তৈরি তাঁবু হওয়ায় হামলার সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়।

ইসরাইলি বাহিনী হামলার পর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামাসকে উদ্দেশ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে। নিখুঁত বিমান হামলায় হামাসের দুই সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তারা। নিহত এই দুজনের মধ্যে পশ্চিম তীরে হামাসের চিফ অব স্টাফ ইয়াসিন রাবিয়াও রয়েছেন। মাত্র দুদিন আগেই আইসিজে রাফায় হামলা বন্ধে ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে এ ভয়াবহ হামলা চালাল ইসরাইল। এতে তাঁবু থাকা অনেকেই জীবন্ত পুড়ে মারা গেছেন। ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৬ হাজার ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮১ হাজার ২৬ জন আহত হয়েছেন।

ইসরাইলের বর্বরতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে আরও অনেক দেশকে রাজি করাতে প্রচেষ্টা চালানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকাম ফিদান বলেছেন, স্বীকৃতি না দিলে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং ইসরাইল গাজায় আগ্রাসন চালানোর আরও সময় পাবে। রোববার ব্রাসেলসে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে করণীয় বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন প্রথম বৈঠকে ফিলিস্তিনকে ত্রাণ সরবরাহকারী দেশ এবং সংস্থাগুলো একত্রিত হয়েছিল। দ্বিতীয় বৈঠকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে রাজনৈতিক সমাধানের প্রচেষ্টা এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপের কথা বলা হয়।

আইসিসিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসিতে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা আইসিসিতে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যা ও আহত করার দায়ে সোমবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। আরএসএফ জানিয়েছে যে, তাদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে, কিছু সাংবাদিককে স্বেচ্ছায় হত্যা করা হয়েছে এবং বাকিরা বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইডিএফের (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) নির্বিচার হামলার ভুক্তভোগী।

অভিযোগে আরএসএফ ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০ মে’র মধ্যে নিহত আট ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের কথা উল্লেখ করে। পাশাপাশি আহত হয়ে পরবর্তী নিহত হয়েছেন- এমন একজনের কথাও বলেছে সংস্থাটি। আরএসএফের অ্যাডভোকেসি ও অ্যাসিস্ট্যান্স পরিচালক অ্যান্টন বার্নার্ড বলেছেন, যারা সাংবাদিকদের হত্যা করে, তারা জনগণের তথ্যের অধিকারের বিরুদ্ধে হামলা করছে। এই অধিকার রক্ষা করা সংঘাতের সময় অত্যন্ত জরুরি।

আন্তর্জাতিক

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ গত নির্বাচনে দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিল কর্তৃক অযোগ্য ঘোষিত হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর আগাম নির্বাচনে তার সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা জোরদার হয়েছে।

সম্প্রতি একটি ভিডিওতে তিনি ইরানের জনগণ এবং দেশের সেবা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, যেহেতু জনগণ ও দেশের সেবা করার সুযোগ আমার রয়েছে, সেই সুযোগ লুফে নিতে অবশ্যই আমি দ্বিধা করব না।

আহমাদিনেজাদ জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন কিনা তা এখনো ভাবছেন। তিনি আরও বলেন, দেশের অবস্থা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি কেবল দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে এ বিষয়ে ভাবছি। বাকী সিদ্ধান্ত আপনারা নেবেন। তবে আপনারা প্রার্থনা করবেন এই ক্ষুদ্র সেবক দেশের উপকারের জন্য যেন সেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

আহমাদিনেজাদ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর আগে তিনি তেহরানের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। এ ছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও কঠোর অবস্থানে ছিলেন তিনি।

তবে দেশটিতে ২০১৭ এবং ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বাধীন গার্ডিয়ান কাউন্সিল তার প্রার্থিতা বাতিল করেছিল। ২০১৭ সালে আহমাদিনেজাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হলে তিনি পুরো কাঠামোর সমালোচনা করেন। এমনকি প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিরও সমালোচনা করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিপুল সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগদানকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুসের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

আজ ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

এতে আরো বলা হয়, এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন উপলক্ষে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ এ সভাটি ছিল মহাপরিচালকের সাথে কোন দেশের সাথে প্রথম সভা। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে বিগত পনেরো বছরের অর্জন, করোনা অতিমারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থন ও সহযোগিতা, দক্ষিণ পূর্ব এশীয় দেশসমূহের আঞ্চলিক পরিচালক পদের নির্বাচনে সায়মা ওয়াজেদের বিপুল বিজয় ও অব্যাহত সহযোগিতার জন্য মহাপরিচালককে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ, ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট স্থাপন ও ভ্যাকসিন তৈরি, কমিউনিটি ক্লিনিককে জনস্বাস্থ্য সেবার মূল কেন্দ্রে রেখে অধিকতর শক্তিশালীকরণ, আউট অব পকেট এক্সেপেন্ডিচার কমানোসহ ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে স্বাস্থ্য খাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরো বেশি সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মহাপরিচালক বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিপুল অর্জন ও উত্তম সেবা সমূহের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তার দপ্তর থেকে সকল প্রকার সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুসকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে আগ্রহের সাথে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সাথে দ্বিপাক্ষিক এ সভার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম, জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, যুগ্ম সচিব মো: মামুনুর রশীদ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের অবিরত হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেনাদের লাগাতার বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে সব কিছু। দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট। ফুরিয়ে গেছে খাবার পানি।

চরম খাদ্য সংকটে অনাহারে ভুগছেন বাসিন্দারা। এরই মধ্যে রাফাহ ক্রসিং বন্ধ থাকায় ত্রাণের খাবারও পৌঁছাতে পারছে না ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর দুয়ারে। মিসর থেকে গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা কিছু খাবার তাদের কাছে পৌঁছানোর আগেই পচতে শুরু করেছে সেখানেই।

শনিবার রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাফায় ইসরাইলের আক্রমণ বাড়ার পর থেকে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকে রয়েছে বেশ কিছু খাবার সরবরাহের ট্রাক। সেখানেই পচে যাচ্ছে গাজার ত্রাণের খাবার।

৬ মে ইসরাইলি বাহিনী রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে এটি গাজার মানবিক ত্রাণের পাশাপাশি কিছু বাণিজ্যিক সরবরাহের প্রধান এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল।

সেনারা ক্রসিং দখলে নেওয়ার পর থেকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। মাহমুদ হুসেন নামে একজন ট্রাকচালক জানিয়েছেন, এক মাস ধরে তার গাড়িতে পণ্যবোঝাই করে রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে রোদে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছু খাদ্যসামগ্রী ফেলে দেওয়াও হচ্ছে। আবার কিছু খাবার সস্তায় বিক্রিও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হুসেন আরও বলেছেন, আপেল, ডিম, কলা, চিকেন এবং পনিরসহ অনেক কিছু পচে গেছে। কিছু জিনিস ফেরত দেওয়া হয়েছে। ৭ অক্টোবর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকে রাফাহ দিয়ে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু রাফায় ইসরাইলের হামলা জোরদার করার পর থেকে খাদ্য সরবরাহ একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে।

মিসরীয় কর্মকর্তারা শুক্রবার বলেছেন, মানবিক কার্যক্রম সামরিক কার্যকলাপের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্য ইসরাইলকে ক্রসিংটি ফিলিস্তিনিদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

মিসরীয় প্রেসিডেন্সি বলেছে, রাফাহ না খুলে দেওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের নিকটবর্তী কেরেম শালোম ক্রসিংয়ের মাধ্যমে সাহায্য পাঠাবে মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্র। এটি রাফাহ থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) পশ্চিমে মিসরীয় ক্রসিং এবং আল-আরিশ শহরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।

আন্তর্জাতিক

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রাইসির লাশ মাশহাদে ইমাম রেজার (আ.) মাজার কমপ্লেক্সে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাতে মাশহাদ পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। খবর রেডিও তেহরান, এপি, আলজাজিরার।

প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে। মৃত্যুর ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার মাশহাদেই জানাজা শেষে শিয়াদের অষ্টম ইমাম রেজার মাজারে তাকে লাশ দাফন করা হয়। ইরানে রাইসি হলেন প্রথম রাজনীতিবিদ যাকে এ মাজারে দাফন করা হলো। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টকে অভূতপূর্ব শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাইসির জানাজায় বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বও অংশ নেন। রাইসিকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই রাজধানী তেহরান থেকে ৭৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মাশহাদে জড়ো হতে থাকেন লাখো মানুষ। শহরের রাস্তায় রাইসির বড় বড় ছবি, কালো পতাকা এবং শিয়াদের নানা প্রতীক টানানো হয়।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট রাইসির মরদেহ ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে পৌঁছানোর পর শেষ বিদায় জানাতে জনসমুদ্র কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় লাখ লাখ জনতার সবার হাতে হাতে ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসির ছবি এবং বিভিন্ন বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড। শোকার্ত ইরানিরা সবাই বুক এবং মাথা চাপড়ে (আনুষ্ঠানিকভাবে শিয়াদের শোক প্রকাশ) প্রিয় নেতার জন্য শোক প্রকাশ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের বিরজান্দে নেওয়া হয় রাইসির মরদেহ। সেখানেও তাকে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ।

এছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের লাশ বৃহস্পতিবার তেহরানের অদূরে রেই শহরের ইমামজাদা আব্দুল আজিমের (আ.) মাজার এলাকায় দাফন করা হয়েছে। রেই শহরেও তার শেষবিদায় অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।

সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানী দল। দুর্ঘটনায় নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম, প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি। প্রাণ হারিয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলটও।

আন্তর্জাতিক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আগামীকাল শনিবার (২৫ মে) ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)। পরের দিন ২৬ মে (রোববার) সন্ধ্যায় রেমাল নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বৃহস্পতিবার সর্বশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণপূর্ব ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের নিম্নচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে সরে গিয়েছে এবং বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ ও পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলে অবস্থান করছে। আগামীকাল ২৫ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার কথা বলা হলেও— আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট করে বলা হচ্ছে এটি ভারতের উড়িশা অথবা বাংলাদেশের উপকূলে যেতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সংস্থা ইসিএআই এবং এনসিইপি ইঙ্গিত দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়বে।

অপরদিকে আইমডি, এনসিইউএম এবং আইএমডি এমএমই বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি সঞ্চার করে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে।

আর ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানা শুরু করতে পারে ২৬ মে বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে ২৭ মে রাত ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে।

‘রেমাল’ একটি আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ বালু। নামটি দিয়েছে ওমান। বঙ্গোপসাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে সেগুলোর নাম আগে থেকেই ঠিক করা থাকে।

২০২০ সালে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়। সেখান থেকেই এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। যখন এই ঘোষণা আসবে তখনই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ নিম্নচাপটিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল হিসেবে অভিহিত করা হবে।

আন্তর্জাতিক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিই মোহাম্মদ মোখবারের নাম ঘোষণা করেছেন।

নিয়মানুসারে ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। মোখবারকে এখন অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব সামলাবেন।

বর্তমান শাসকদের কাছে প্রাথমিকভাবে যে বিষয় গুরুত্ব পাবে তা হলো শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা। মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- তারা মানুষকে সেবা করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাবেন। কোনোরকম বিঘ্ন ছাড়াই সরকার কাজ করে যাবে বলে শপথ নিয়েছে মন্ত্রিসভা।

জার্মান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি টাইসের গবেষক হামিদরেজা আজিজি বলেছেন, ৬৯ বছর বয়সি মোখবার শিয়া ধর্মীয় নেতাদের আস্থাভাজন। তার সঙ্গে ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সম্পর্কও খুব ভালো। ফলে প্রশাসনে আইআরজিসি-র ভূমিকা আগের মতোই থাকবে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে আইআরজিসির নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়তে পারে।

রোববার আজারবাইজান সীমান্তে একটি বাঁধের উদ্বোধন করে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তেহরান ফিরছিলেন, তখনই তার হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। কোন পরিস্থিতিতে এ দুর্ঘটনা হলো, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।

হামবুর্গের থিংক ট্যাংক জার্মান ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিসের ইরান বিশেষজ্ঞ সারা বাজোবান্দি বলেছেন, এখন এ নিয়ে নানান ধরনের অনুমান ও অসমর্থিত রিপোর্ট সামনে আসবে।

তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার কারণ যান্ত্রিক হতে পারে, অর্ন্তঘাতও হতে পারে, এমনকি রাইসির রাজনৈতিক বৃত্তে থাকা কারোর হাতও থাকতে পারে। কিছুই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ইরানের মানুষ চাইবেন, এ দুর্ঘটনা নিয়ে আগামী দিনে আরও তথ্য সামনে আসুক।

কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশেষজ্ঞ করিম সাদজাদপোর বলেছেন, রাইসির মৃত্যুর ফলে ইরানে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের সংকট আসতে পারে। খুব কম মানুষই মনে করেন, স্বাভাবিক দুর্ঘটনায় রাইসির মৃত্যু হয়েছে।

রাইসির মৃত্যুর পর আরেকটি বিষয় সামনে আসতে পারে, তা হলো খামেনির উত্তরাধিকারী কে হবেন?

ইরান বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দুইজনের নাম নিয়ে আলোচনা হতো, তার মধ্যে একজন ছিলেন রাইসি এবং অন্যজন হলেন ৫৫ বছর বয়সি মোজতাবা, যিনি পর্দার পেছন থেকে এতদিন প্রভাব বিস্তার করেছেন।

অনেকে মনে করেন, মোজতাবা সর্বোচ্চ নেতা হলে ইরানের মানুষের একটা বড় অংশ খুশি হবেন না। সাজাদপোর লিখেছেন, মোজতাবা খামেনি সর্বোচ্চ নেতা হলে বিক্ষোভ হতে পারে। সেক্ষেত্রে মোজতাবা পুরোপুরি রেভলিউশনারি গার্ডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন।

কিন্তু বাজোবান্দি বলেন, নতুন করে ইরানে কোনো গণআন্দোলন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর অত্যন্ত কড়া হাতে বিক্ষোভ দমন করা হয়েছে। বিরোধীরা পুরোপুরি হতাশ হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের আমলেও কোনো দিশা পরিবর্তন হবে না। তিনিও খামেনির নির্দেশ মেনে চলবেন। পরবর্তী প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।

‘নির্বাচনে চমক প্রত্যাশিত নয়’

ইরান বিশেষজ্ঞ সারা বাজোবান্দি বলেছেন, ৫০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। এটা অনুমান করাই যায় যে, এর মধ্যে কোনো চমক থাকবে না। রাজনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎসাহ কম হতে পারে।

তিনি বলেন, মানুষ এ শাসকদের বিশ্বাস করে না। আর শাসক পরিবর্তনের আশাও তাদের নেই। অনেক নাগরিক মনে করেন, ভোট হওয়ার আগেই তারা জানেন, কে জিতবে। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ভোটে জিতে প্রেসিডেন্ট হতেই পারেন।

এখন ইরানে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ৫০ শতাংশ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া, প্রচুর মানুষ আর্থিক কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। ২০২৩ সালে সরকার ৮৫৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে। ২০১৫ সালের পর এত বেশি মৃত্যুদণ্ড কখনো কার্যকর হয়নি।