আন্তর্জাতিক

গাজায় অভিযান আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। শহরটির আল-শিফা হাসপাতালে ও এর আশপাশে অভিযান চালানো হচ্ছে। গাজার উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং খান ইউনিসের বিভিন্ন স্থানেও হামলা অব্যাহত রয়েছে। খবর আল-জাজিরার

এদিকে রাফা শহরে ইসরাইলি হামলা আরও সম্প্রসারিত হবে এমন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সেখানকার মানুষ। তারা আশঙ্কা করছে গাজা সিটি বা খান ইউনিসের মতো একই পরিণতি ভোগ করতে হবে রাফার মানুষদেরও। সেখানে অধিকাংশ অবকাঠামোই ধ্বংস করেছে ইসরাইল।

ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজার রাফায় আশ্রয় নেয়। এটি মিশর সীমান্তবর্তী এলাকা। এরই মধ্যে উত্তর ও মধ্য গাজাকে ধ্বংস করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এখন আন্তর্জাতিক সব চাপ উপেক্ষা করে রাফায়ও অভিযান চালাবে ইসরাইল।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি সেনাদের পরিবারের সদস্যদের বলেছেন, একমাত্র সামরিক চাপের মাধ্যমেই তাদের মুক্ত করা সম্ভব। তাছাড়া রাফায় সেনাবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি। রাফায় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে উত্তর গাজা ও খান ইউনিস জয় করেছি।

আন্তর্জাতিক চাপ এবং নানা ধরনের সমালোচনার পরেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইসরাইলকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের বোমা এবং যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। এদিকে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, গাজায় সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় তাদের ২৬ কর্মী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন যারা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

ইসরাইলি বাহিনীর চলমান হামলায় একটি ক্রীড়া কেন্দ্রে ১৫ জন নিহত হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৩২ হাজার ৬২৩ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৫ হাজার ৯২ জন।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা না পেলে ইউক্রেন বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটতে হবে।

শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটন পোস্টকে আরও বলেছেন, ‘মার্কিন সমর্থন না থাকা মানে আমাদের কাছে কোনো বিমান প্রতিরক্ষা নেই, কোনো প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র নেই, ইলেকট্রনিক যুদ্ধের জন্য কোনো জ্যামারও নেই।

এমনকি নেই কোনো ১৫৫ মিলিমিটার গোলাবারুদ। এর মানে হলো ধাপে ধাপে আমাদের পিছু হটতে হবে।’ তবে যাতে পিছু হটা না লাগে এমন কিছু উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘদিনের দরকষাকষির পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। সোমবার পাশ হওয়া এ প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির ব্যাপারটিরও উল্লেখ রয়েছে। খবর আল-জাজিরার

সোমবার প্রস্তাবটি পরিষদের বৈঠকে ভোটের জন্য তোলার পর মোট ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। তবে প্রস্তাবটির বিপক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন করেনি দেশটি।

এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত যত প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে—প্রায় প্রত্যেকটিতেই ভেটো দিয়েছে ইসরাইলের সবচেয়ে পুরনো ও পরীক্ষিত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার ৯ দিন পর, ১৬ অক্টোবর প্রথম নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি তুলেছিল রাশিয়া, কিন্তু তাতে ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। পরে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য দেশের উদ্যোগে আরও বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলা হয় পরিষদের বৈঠকে কিন্তু প্রতিবারই ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ প্রস্তাব পাশের পর জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে গাজায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং সব জিম্মির নিঃশর্ত মুক্তির প্রস্তাব পাস হলো। প্রস্তাবটি যত শিগগির সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার ব্যত্যয় হলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য।

গত নভেম্বরের শেষ দিকে অবশ্য তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের তৎপরতায় ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস এবং ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। সেই বিরতির সময় মোট ১০৮ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছিল হামাস, বিপরীতে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জনকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরাইলও।

হামাসের হাতে এখনও জিম্মি অবস্থায় রয়েছে ১৩২ জন। অন্যদিকে ত্রাণ ও খাদ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়। চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যেই কিছুদিন আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় বড় আকারের অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহু এ ঘোষণা দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নিরাপত্তা পরিষদে পাস হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব।

গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় শুরু হয় ইসরাইলের আগ্রাসন। দেশটির বর্বরতায় এ পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আহত হয়েছে ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ ও ভুটান আজ তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি নবায়ন করেছে।

নতুন সমঝোতা স্মারকগুলো হলো- কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন এবং ভোক্তা অধিকার বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।

এছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময়ের আরেকটি সমঝোতা স্মারকও নবায়ন করা হয়।

সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের রানী জেৎসুন পেমা ওয়াংচুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্তিত ছিলেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

ওয়াংচুক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকও করেন।
তাদের মাঝে একটি একান্ত বৈঠকও হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ও ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তান্দিন ওয়াংচুক থিম্পুতে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এবং ভুটানের বাণিজ্য সচিব তাশি ওয়াংমো নিজ নিজ পক্ষে কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান এবং ভুটানের বাণিজ্য সচিব তাশি ওয়াংমো ভোক্তা অধিকার বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব খলিল আহমেদ এবং ভুটানের পররাষ্ট্র সচিব পেমা চোডেন নিজ নিজ পক্ষে সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক নবায়নে স্বাক্ষর করেন।

এছাড়াও, বাংলাদেশ ভুটানি শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক মেডিকেল আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি প্রতি বছর ভুটানি ফরেন সার্ভিস অফিসারদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দুটি আসনের প্রস্তাব দিয়েছে এবং ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) ভুটানের তিন ব্যাচের কর্মকর্তাদের তিন বছরের জন্য বার্ষিক বিশেষ প্রশিক্ষণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে, সদিচ্ছা ও বন্ধুত্বের বিশেষ অঙ্গীকার হিসেবে বাংলাদেশ ভুটানের সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কম্পিউটার ও ল্যাপটপ হস্তান্তর করেছে।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের অমানবীয় অত্যাচারে দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে গাজা পরিস্থিতি। এতদিন চুপ থেকে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছে বিশ্ব। অবশেষে অবরুদ্ধ অঞ্চলটির সমর্থনে এগিয়ে এলো ইউরোপের চার দেশ।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দিয়ে সম্মত হয়েছে মাল্টা, আয়ারল্যান্ড, স্পেন এবং স্লোভানিয়া। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর এমন সমর্থনকে মেনে নিতে পারছে না ইসরাইল। এবার ইউরোপের এই চার দেশকে হুঁশিয়ারি দিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কার্টজ। তার মতে, যে দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দেবে তারা সন্ত্রাসবাদের পক্ষে। সোমবার নিজের এক্স  অ্যাকাউন্টে ক্ষিপ্ত হয়ে এ বার্তা লিখেন তিনি। রয়টার্স।

ইইউ’র শীর্ষ সম্মেলনে গত শুক্রবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দেওয়ার কথা জানায় চার দেশ। তাদের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেই ‘শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন’ সম্ভব হবে। সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে চার দেশ জানায়, ‘আমরা একসঙ্গে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছি। পরিস্থিতি যখন ঠিক হবে তখন এ বিষয়ে আমরা ইতিবাচক অবদান রাখব।’ তাদের সেই বার্তার প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবেই কার্টজ লিখেছেন, ‘৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কাছে এই বার্তাই পাঠায় যে, ইসরাইলিদের উপর হত্যাকারী সন্ত্রাসী হামলা ফিলিস্তিনিদের প্রতি রাজনৈতিক মাধ্যমে প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’ অন্যদিকে গাজায় তাৎক্ষণিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে।

রাশিয়া এবং চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত একটি পূর্ববর্তী পাঠ্য ভেটো করার পরে এ প্রস্তাবটি সামনে আসে। রাফাহ এবং গাজা উপত্যকার অন্যান্য অংশে ইসরাইলি বিমান হামলায় কয়েকডজন লোক নিহত হওয়ার পরে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ভেটোর আলোচনা হয়। নতুন পাঠ্যটিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসের জন্য ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি করে এবং একটি স্থায়ী টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যায়।’

এর আগে রোববার উত্তর গাজায় ত্রাণের সাহায্য পৌঁছাতে বাধা দেয় ইসরাইল বাহিনী। এমন পরিস্থিতি গাজার শিশুদের আরও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে বলে সতর্ক করেছে সাহায্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর জেভিয়ের জুবার্ট বলেন, ‘শিশুরা ইতোমধ্যেই অনাহারে এবং রোগে মারা যাচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতিতে, যা রেকর্ড। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে দৃঢ় এবং অবিলম্বে কূটনীতির মাধ্যমে এমন প্রস্তাবকে পালটে দিতে হবে। সেটি হবে আইনি বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে।’

এদিকে আল শিফা থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিদের দাবি, ইসরাইলি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া বুলডোজার কমপক্ষে চারটি মৃতদেহ এবং অ্যাম্বুলেন্সের ওপর দিয়ে চালানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তীব্র গোলাগুলির কারণে তাদের মেডিকেল টিমের সদস্যরা সেখানে আটকা পড়েছেন। অন্যদিকে গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত আল-আমাল এবং নাসের হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। হাসপাতালগুলোর আশপাশে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে তারা।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে তীব্র গোলাগুলি এবং বোমা হামলার মধ্যেই আল-আমাল এবং নাসের হাসপাতালের তাদের এক কর্মী নিহত এবং একজন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আল-আমাল হাসপাতাল সম্পূর্ণ খালি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইসরাইল। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল কর্মী ও রোগীদের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত লোকজনও আশ্রয় নিয়েছে। এমনকি লোকজনকে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে ইসরাইল স্মোক বোমা ছুড়ছে।

এদিকে হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিস বলছে, আল শিফা হাসপাতালে গত সাত দিন ধরে চলা অভিযানে পাঁচ ফিলিস্তিনি চিকিৎসককে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩২,৩৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৪,৬৯৪ জন আহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, কিন্তু তা বন্ধে কেউ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

রোববার (২৪ মার্চ) গণভবনে সফররত ফিলিস্তিনের ফাতাহ আন্দোলনের (শাসক দল) মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নজরুল ইসলাম বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে নীরব অবস্থানের জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি এক ধরনের ভণ্ডামি।

মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত এবং মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা ১৯৬৭ সালে গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণ করতে বলেন, যাতে বলা হয়েছিল যে পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে।

প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ হত্যাসহ ইসরায়েলি বাহিনীর হাসপাতালে হামলার নিন্দা করেন।

তিনি গাজায় মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মিশরের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য দুই দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, আমি যেখানেই সুযোগ পেয়েছি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সবসময় আওয়াজ তুলেছি।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ফিলিস্তিনের ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার নিঃশর্ত সমর্থন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আওয়াজ তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউব বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই উদ্দেশ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।

তিনি বলেন, সেখানে খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং মানুষ অনাহারে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউব বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

আরব দেশগুলোতে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হয়ে যাবে। আরব বিশ্বের শক্তি ও সম্পদ আছে, শুধু ঐক্যই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে পারে।

ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দৃঢ় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং ঢাকায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। এই সফরে তার সঙ্গে রানি জেতসুন পেমাসহ একটি প্রতিনিধি দল থাকছে। সফরকালে রাজা ও রানি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং একটি নবায়ন হবে। আওয়ামী লীগ সরকার গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর এটি বাংলাদেশে কোনো দেশের শীর্ষ নেতার প্রথম সফর।

রোববার দুপুরে ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি জানান, বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ভুটানের রাজাকে স্বাগত জানাবেন। ভুটানের রাজার সফরে নতুন করে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। সেগুলো হলো- ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। এছাড়া সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত একটি চুক্তি আছে- সেটির নবায়ন করা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সফরের শুরুর দিন রাজা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। বাংলাদেশ সফরকালে তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রথম দিন রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২৬ মার্চ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন রাজা।

মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সফরে ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন। তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শনের জন্য বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করে তিনি সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়বেন। স্থলবন্দরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করবে। সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রাজার সফরের তাৎপর্য তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশে প্রথম কোনো উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর এটি। এ সফরে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে (বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে) ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। থিম্পুতে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বৃহত্তর কল্যাণ সাধন হবে। ট্রানজিট এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) মাধ্যমে ভুটানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ হবে। বিদ্যুৎ খাতে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হবে।

তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস কোর্সে ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হবে। প্রতি বছর ভুটানের ফরেন সার্ভিস অফিসারদের জন্য বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য দুটি আসন বরাদ্দ করা হবে।

বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দেবে। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিলে ভুটানের কৃষিবিষয়ক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মেয়াদে তিন বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সফর বাংলাদেশ-ভুটানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুপ্রতিবেশীসুলভ পররাষ্ট্রনীতির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের অবস্থান সুদৃঢ হবে।

বাংলাদেশে মহান স্বাধীনতার প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ভুটান। মহান স্বাধীনতা মাসে দেশটির রাজার এ সফর এবং স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া ভুটানের রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। সফরে ঢাকায় রাজাকে ব্যাপক উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হবে। রাজার আগমন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কে ভুটানের রাজা এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানানো হয়েছে।

বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় চিকিৎসাধীন ভুটানি তরুণী : ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে কয়েক দফা সফল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ভুটানি তরুণী কারমা দেমা (২৩)। ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও রানি জেতসুন পেমা আগামীকাল (মঙ্গলবার) তাকে হাসাপতালে দেখতে যাবেন। এরপর রাজা ও চিকিৎসকদের গ্রিন সিগনাল পেলেই দেশে ফিরতে পারবেন ক্যানসার জয়ী কারমা দেমা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল ভুটান। এবার বাংলাদেশ ভুটানের ক্যানসার আক্রান্ত একজন রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করল। দুই দেশের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এবার ভুটানে বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে দেবে বাংলাদেশ। এছাড়া দেশটির চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিতে আসতে পারবেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক দশক আগে নাকের গহ্বরে ক্যানসার ধরা পড়ে ভুটানি তরুণী কারমা দেমার। নিজ দেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হওয়ায় ছুটে যান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। সেখানকার টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে কয়েক দফা চিকিৎসা নেন। এক পর্যায়ে নাকে পচন ধরা শুরু হলে চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিয়ে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেন। পরে ওই বিদেশি নাগরিককে দেশে এনে গত ১৪ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভুটান স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এজন্য বঙ্গবন্ধু ও এদেশের মানুষ ভুটানের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভুটানকে উপহারস্বরূপ একটি বার্ন ইউনিট করে দিতে চাচ্ছেন। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমি ও দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটি সমোঝতা স্মারক স্বাক্ষর করব। ওই স্মারকের আলোকে প্রাথমিক পর্যায়ে ভুটানে ২০ শয্যার একটি বার্ন হাসপাতাল করে দেওয়া হবে। যার সব ব্যয় বহন করবে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক

মস্কোর ক্রোকাস সিটি কনসার্ট হলে হামলা চালানোর জন্য পাঁচ লাখ রুবল বা পাঁচ হাজার ৪০০ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন গ্রেফতার এক ব্যক্তি।

রোববার এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস। হামলার পর দীর্ঘ চেষ্টার শেষে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়েছে। তবে তল্লাশি অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন মস্কোর গভর্নর আন্দ্রে ভোরোবিভ। এদিকে হামলায় নিহতের ঘটনায় শোক ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্ব নেতারা। খবর বাসস, বিবিসি, আল জাজিরার।

নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি বলেছেন, ‘টাকার জন্য আমি ক্রোকাসে মানুষের ওপর গুলি ছুড়েছি। আমাকে প্রায় ৫,০০,০০০ রুবল দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দেওয়া হয়েছিল।’

তাসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য হামলায় আগেই ওই ব্যক্তিকে কার্ডে প্রতিশ্রুত অর্থের অর্ধেক অগ্রিম পরিশোধ করা হয়েছিল। এছাড়া কাজ শেষ হওয়ার পর বাকি টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল।

যদিও গ্রেফতারের আগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের হাত থেকে পালাতে গিয়ে ওই ব্যক্তি কার্ডটি হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানানো হয়েছে তাসের প্রতিবেদনে।

এদিকে, হামলায় নিহতদের স্মরণে রোববার রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণা অনুযায়ী, সংসদের নিন্মকক্ষ দুমাসহ রোববার সারা দেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ক্রোকাস সিটি হলের বাইরে ফুল, মোমবাতি আর বিভিন্ন ধরনের পোস্টার দিয়ে মোকার্ত রাশিয়ানরা নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রোকাস সিটি হলে কাপুরুষোচিত ও বিবেকহীন সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘এতগুলো নিরপরাধ লোকের প্রাণহানি ঘটায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। আমি নিহতদের বিদেহী আত্মার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করছি এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’ শেখ হাসিনা এ হামলায় যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। এছাড়া এ হামলায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, ন্যাটো, চীন, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশ।

বন্দুকধারীদের হামলার পর ঘটনাস্থল মস্কোর ক্রোকাস সিটিতে শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি টানা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘তাস’। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত সর্বমোট ১৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মস্কো অঞ্চলের গভর্নর আন্দ্রে ভোরোবিভ। তবে ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান শেষ হলেও আশপাশের এলাকায় অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এছাড়া হামলায় নিহত ১৩৩ ব্যক্তির মধ্যে ৫০ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাকিদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আহত ১০৭ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলার ১৪ ঘণ্টা পর রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) ১১ জনকে আটক করার কথা ঘোষণা করে জানিয়েছে, এদের মধ্যে ‘চার জন সরাসরি হামলায় জড়িত ছিল’। তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এরা বিদেশি নাগরিক। অসমর্থিত সূত্রগুলো এই ব্যক্তিদের তাজিকিস্তানের নাগরিক হিসাবে উল্লেখ করেছে। শুক্রবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে আইএস বলেছে তারাই এ হামলা চালিয়েছে। শনিবার তারা মুখে মাস্ক পরিহিত চার হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করেছে। তবে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ এ দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

আন্তর্জাতিক

বিশ্বজুড়ে সমস্ত ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে রমজান মাসটি পালন করেন মুসলমানেরা। থাকে ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণও। পুরো একমাস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খালি পেটে থাকার ধর্মীয় গুরুত্ব তো রয়েছেই, সেইসঙ্গে রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজার রয়েছে অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতাও। এটি শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক রোজা রাখলে শরীরে যেসব উপকার হয়-

▶ শরীরের কোলেস্টেরল কমে, যা হার্টের রোগীদের জন্য উপকারী।

▶ ক্ষুধার (হাংগার ) হরমোন গ্রেলিন কমে যেটা ওজন কমাতে সহায়ক।

▶ অভুক্ত থাকলে ব্রেন তার প্রোটিনগুলো ঝালাই করে। ব্রেইনে নিউরোট্রপিক হরমোন ও কোষ বাড়ে। ফলে ব্রেইন সজীব, সতেজ হয়।

▶ স্ট্রেস কম থাকার কারণে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল বাড়ে না।

▶ সারাদিন না খেয়ে থাকলে অর্থাৎ পাকস্থলী খালি থাকে। ফলে, শরীর যাবতীয় বর্জগুলোকে (টক্সিন) বার্ন করতে পারে।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিন ভূখন্ডে মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জোর তাগিদ দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার বলেছেন, গাজার সমগ্র জনসংখ্যা ‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ সম্মুখীন হচ্ছে।

ফিলিপাইনে সরকারি সফরকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘গাজার জনসংখ্যার শতভাগ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এটিই প্রথমবারের মতো পুরো জনসংখ্যাকে এত শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।’

গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট: জাতিসংঘ

উত্তর গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষ ‘সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

গুতেরেস বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলে আসন্ন দুর্ভিক্ষ একটি সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট বিপর্যয়।’

মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। এক্সের পোস্টে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন,এই অঞ্চলটিতে ‘অচিন্তনীয়, অগ্রহণযোগ্য, অযৌক্তিক কার্যকলাপগুলোকে প্রতিরোধ করতে আমাদের এখনই কাজ করতে হবে। ‘

এক আগে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে মে মাসের মধ্যে যে কোনো সময় উত্তর গাজা দুর্ভিক্ষের শিকার হতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে সতর্ক করেছিলেন গুতেরেস।